Ajker Patrika

যুদ্ধবিরতির সর্বসম্মত প্রস্তাবে নীরব, নতুন বায়না নেতানিয়াহুর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ৩৭
গাজায় অনেকগুলো বহুজাতিক কোম্পানি ইসরায়েলি গণহত্যায় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ছবি: আনাদুলু
গাজায় অনেকগুলো বহুজাতিক কোম্পানি ইসরায়েলি গণহত্যায় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ছবি: আনাদুলু

মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিসরের পক্ষ থেকে পাঠানো সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব হামাস মেনে নিয়েছে। কিন্তু প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ইসরায়েল কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করছেন, তিনি সব জিম্মিকে মুক্ত ও যুদ্ধ শেষ করতে ‘অবিলম্বে’ আলোচনা শুরু করছেন।

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, এ নীরবতা ইসরায়েলের দৃষ্টিভঙ্গিতে একটি মৌলিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। মধ্যস্থতাকারী ও জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা নেতানিয়াহুর এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক হয়েছেন। জিম্মিদের পরিবারগুলো নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তাদের প্রিয়জনদের পরিত্যাগ করা ও ঝুঁকির মুখে ফেলার অভিযোগ এনেছে।

১৮ মাস ধরে শুধু আংশিক ও ধাপে ধাপে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পর নেতানিয়াহু এখন একটি বিস্তৃত চুক্তির দাবি করছেন। এ চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলের শর্তে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে এবং সম্পূর্ণরূপে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে। এ নীতিগত পরিবর্তন এমন সময়ে এসেছে, যখন নেতানিয়াহু একই সঙ্গে গাজা সিটিতে বড় ধরনের সামরিক হামলার পরিকল্পনাও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিচ্ছেন। এটি একধরনের দ্বৈত কৌশল, যেখানে তাঁর ভাষায়, ‘হামাসকে পরাজিত করার’ লক্ষ্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আলোচনাও করছেন।

গত বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন, তিনি তাঁর দলকে অবিলম্বে সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার ও গাজার যুদ্ধ শেষ করার জন্য আলোচনা শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে তিনি বর্তমান প্রস্তাবটির কথা একবারও উল্লেখ করেননি। এ প্রস্তাবে অর্ধেক জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। এ সর্বশেষ প্রস্তাব গত মাসে নেতানিয়াহুর সম্মত হওয়া ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির মতোই। যদিও হামাস বন্দীদের সংখ্যা ও নিরাপত্তা পরিধির বিষয়ে নমনীয়তা দেখানোয় এর শর্তগুলো ইসরায়েলের জন্য আরও অনুকূল ছিল।

একই সময়ে নেতানিয়াহু ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) গাজা সিটিতে ব্যাপক সামরিক হামলা ও দখলের পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন। ইসরায়েল মনে করে, হামাসের এ নমনীয়তার কারণ হলো গাজা সিটিতে আইডিএফের আসন্ন হামলার হুমকি। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন, ব্যাপক সামরিক চাপের এ নতুন হুমকি হামাসকে আরও নমনীয় করে তুলবে এবং যুদ্ধের অবসানের জন্য ইসরায়েলের শর্ত মেনে নিতে বাধ্য করবে।

ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, সামরিক চাপ হামাসকে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করবে। তবে প্রায় দুই বছর ধরে যুদ্ধ চলা সত্ত্বেও সংগঠনটি এখনো পুরোপুরি পরাজিত হয়নি।

নেতানিয়াহু আংশিক থেকে বিস্তৃত আলোচনার কাঠামোতে তাঁর এ নাটকীয় পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করেননি। তাঁর মিশ্র বার্তা ইসরায়েল ও বিদেশের বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। দেড় বছর ধরে ইসরায়েল সরকার যুদ্ধ শেষ করার আলোচনায় রাজি ছিল না এবং শুধু ধাপে ধাপে ও আংশিক যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হচ্ছিল। এখন নেতানিয়াহু শুধু একটি ব্যাপক চুক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সে সঙ্গে হামাসের নেওয়া মধ্যস্থতাকারীদের সর্বশেষ প্রস্তাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর একজন সিনিয়র সদস্য বাসেম নায়েম এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য যা যা প্রয়োজন, আন্দোলন (হামাস) তার সবই দিয়েছে এবং এখনো সম্পূর্ণ জাতীয় দায়িত্ববোধ ও খোলা মন নিয়ে তা করতে প্রস্তুত। নায়েম আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেতানিয়াহু একটি ‘সবুজসংকেত’ পেয়েছেন, যা তাঁকে একটি ‘নোংরা খেলা’ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন যেসব প্রশ্ন তুলল, সর্বশেষ যা জানা গেল

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

শাহজালাল বিমানবন্দরে নাশকতার প্রমাণ পেলে ‘কঠোর ব্যবস্থা নেবে’ সরকার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত