Ajker Patrika

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৬১,৩৬৯, অনাহারে মৃত্যু ২১২ জনের

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৫, ০৯: ৫১
গাজায় অনেকগুলো বহুজাতিক কোম্পানি ইসরায়েলি গণহত্যায় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ছবি: আনাদুলু
গাজায় অনেকগুলো বহুজাতিক কোম্পানি ইসরায়েলি গণহত্যায় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ছবি: আনাদুলু

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক হামলা থামার কোনো লক্ষণ নেই। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬১ হাজার ৩৬৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আহত হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৫০ জনের বেশি মানুষ। এ সময়ে গাজায় নতুন করে অনাহারে মারা গেছে অন্তত ১১ ফিলিস্তিনি।

গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল ৩৯ জনের মরদেহ নিয়েছে। একই সময়ে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪৯১ জন আহত হয়েছে। এখনো অসংখ্য লাশ ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় পড়ে রয়েছে, কিন্তু অব্যাহত হামলার কারণে উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।

এ ছাড়া মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ২১ জন নিহত ও ৩৪১ জন আহত হয়েছে। চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৪৩ জনে এবং আহত হয়েছে ১২ হাজার ৫৯০ জনের বেশি।

এদিকে গাজায় দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যুও দ্রুত বাড়ছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে আরও ১১ জন মারা গেছে, যাদের মধ্যে কয়েকটি শিশু। এ নিয়ে দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১২ জনে, এর মধ্যে ৯৮ জন শিশু। অধিকাংশ মৃত্যু ঘটেছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, কারণ, ইসরায়েল মে মাসের শেষের দিকে আংশিক অবরোধ শিথিল করলেও ত্রাণ প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ অব্যাহত রেখেছে।

উত্তর গাজার আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া সতর্ক করে বলেন, শিশু ও প্রবীণদের মধ্যে দুর্ভিক্ষ এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, অপুষ্টি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং মৃত্যু ডেকে আনে।

মার্চের ১৮ তারিখ থেকে ইসরায়েলি সেনারা নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করেন। তখন থেকে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ৮৬২ জন নিহত এবং ৪০ হাজার ৮০৯ জন আহত হয়েছে। এতে জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি কার্যত ভেঙে গেছে।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ জোরালো হচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এ ছাড়া গণহত্যার দায়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলার মুখোমুখি হচ্ছে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার প্রায় সব অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। পানি, খাদ্য, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকটে ২৩ লাখেরও বেশি মানুষ চরম মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে। বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা ইসরায়েলকে অবরোধ ও হামলা বন্ধ করে অবিলম্বে পূর্ণ মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানালেও এখনো বাস্তব কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চীন–রাশিয়া থেকে ভারতকে দূরে রাখতে কয়েক দশকের মার্কিন প্রচেষ্টা ভেস্তে দিচ্ছেন ট্রাম্প: জন বোল্টন

স্ত্রীকে মেরে ফেলেছি, আমাকে নিয়ে যান—৯৯৯–এ স্বামীর ফোন

ডিটারজেন্ট, তেল ও সোডা দিয়ে ভেজাল দুধ তৈরি, সরবরাহ মিল্ক ভিটায়

১৫৮ বছর আগে হারানো আলাস্কাতেই কি ইউক্রেনের জমি লিখে নেবে রাশিয়া

‘হানি ট্র্যাপের’ ঘটনা ভিডিও করায় খুন হন সাংবাদিক তুহিন: পুলিশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত