Ajker Patrika

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান: বাস্তবায়নের উপায় জানালেন ডেভিড ক্যামেরনের আইনজীবী 

আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩: ১৯
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান: বাস্তবায়নের উপায় জানালেন ডেভিড ক্যামেরনের আইনজীবী 

একটি কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র তৈরি করতে ও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন করতে হলে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরে থাকা সাত লাখ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে প্রায় দুই লাখকেই স্থানান্তরিত করতে হবে। এমনটাই জানিয়েছেন ড্যানিয়েল সাইডম্যান নামে এক ইসরায়েলি আইনজীবী। ইসরায়েল সফরে তাঁর কাছ থেকেই পরামর্শ নেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। 

গত সপ্তাহে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসের সিলেক্ট কমিটিকে ক্যামেরন বলেন, তাঁর মনে হচ্ছে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের বাস্তবায়ন জটিল হবে। তবে দুই দেশের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে কার্যকর পদ্ধতি কী হতে পারে তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। দুটি ভিন্ন রাষ্ট্র স্থাপন করতে হলে বিপুলসংখ্যক ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদেরও সম্মত করতে হবে। সে সময় তিনি ইসরায়েলি আইনজীবী ড্যানিয়েল সাইডম্যানের কাছে নিজের ঋণ স্বীকার করেন। জেরুজালেম সফরে গেলেই তিনি ড্যানিয়েলের পরামর্শ নেন বলেও উল্লেখ করেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাইডম্যান বলেন, ‘ইসরায়েলের যদি পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম থেকে দুই লাখ বসতি স্থাপনকারী স্থানান্তরিত করার ইচ্ছা ও ক্ষমতা থাকে তবেই দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে। তবে ইসরায়েলের যদি ইচ্ছাই না থেকে তবে কোনো সমাধান সম্ভব নয়।’ 

এ সময় সাইডম্যান আরও বলেন, ‘আপনি যদি ধীরে ধীরে দখল করতে পারেন, তবে আপনি ধীরে ধীরে বেদখলও করতে পারবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বসতি স্থাপনকারীরা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে অদলবদলকৃত অঞ্চলে থাকবে। বসতি স্থাপনকারীদের ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্বের অধীনে রাখতে সম্মত হবে না কোনো পক্ষই।’

সাইডম্যান ও ডেভিড ক্যামেরনের প্রথম দেখা হয় ২০০৭ সালে। তখন ডেভিড ক্যামেরন ব্রিটেনের তৎকালীন বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ছিলেন। তাঁরা প্রায়ই পশ্চিম তীর দেখার জন্য মাউন্ট অব অলিভসে বা জয়তুন পাহাড়ে যেতেন। পশ্চিম তীরে রয়েছে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের শহর মাআলে আদুমিম। সেখানে প্রায় ৪০ হাজার বসতি স্থাপনকারীর বাস। 

ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক ক্যামেরন ইসরায়েলের বিভিন্ন ব্যক্তি থেকেই পরামর্শ নিলেও সাইডম্যানের সঙ্গে তাঁর বারবার আলোচনা থেকে বোঝা যায় তিনি ৭০ বছর বয়সী এ আইনজীবীর কাছ থেকেই নির্দেশনা নিতে ইচ্ছুক। ক্যামেরনের সঙ্গে প্রথম বৈঠকের সময় সাইডম্যান বলেছিলেন, মাত্র এক লাখ বসতি স্থাপনকারীকে স্থানান্তর করতে হবে। এ ছাড়া তিনি পশ্চিমা সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোও সমর্থন করেন বলে উল্লেখ করেন।

সে সময় সাইডম্যান আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় না, ইসরায়েল এ বিষয়ে বশ্যতা স্বীকার করবে। তবে ইসরায়েল এর সংযুক্ত হওয়ার নীতিগুলোর মধ্যে পরিবর্তন আনছে, যাতে কখনো আত্মধ্বংসাত্মক কোনো নীতি গ্রহণ করলে এর পরিণতি কী হতে পারে তা বুঝতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমার মনে হয় না, ইসরায়েলের একজন বসতি স্থাপনকারীও স্থানান্তর করার ইচ্ছা আছে যদিও তার ক্ষমতা আছে।’

দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানকে বাস্তবসম্মত কোনো সমাধান হিসেবে দেখছেন না সাইডম্যান। তিনি বলেন, ‘বাস্তবসম্মত সমাধান হলো—দখলদারি এমনভাবে শেষ করা, যেন তা উভয় পক্ষের জন্যই সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। যদি দখলদারি শেষ না হয়, তবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন কোনো পক্ষের জন্যই তা ভালো হবে না। দখলদারি শেষ করার একমাত্র উপায় হলো, সীমানা দেওয়া। আরও উপায় থাকলে ভালো হতো, তবে তা নেই।’  

সাইডম্যানের মতে, আরেকটি সমস্যা হলো—বিচ্ছিন্ন বসতি স্থাপন অঞ্চলে কট্টর মতাদর্শী এবং সহিংস বসতি স্থাপনকারীরা থাকেন। যারা স্থানান্তরিত হতে ইচ্ছুক, তাদের স্থানান্তরিত হওয়ার প্রয়োজন নেই; আর যাদের স্থানান্তরিত হওয়া প্রয়োজন, তারা স্থানান্তরিত হতে ইচ্ছুক নন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারত এখন বৈশ্বিক পরাশক্তি: ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার। ছবি: সংগৃহীত

ভারতকে একটি ‘বৈশ্বিক পরাশক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার। তিনি বলেছেন, ভারত-ইসরায়েল সম্পর্ক এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ‘অধিক দৃঢ়’। আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক প্রতিরক্ষা, উদ্ভাবন, বাণিজ্য থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার মতো নানা ক্ষেত্রে বিস্তৃত।

সম্প্রতি, ভারত সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পর এনডিটিভিকে দেওয়া একমাত্র সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ভারতের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা ভুলব না—ওই ভয়াবহ দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই ছিলেন প্রথম বিশ্বনেতা, যিনি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ফোন করেছিলেন। ভারত আমাদের পাশে ছিল এবং আমরা তা স্মরণে রাখব।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন বলেন, ‘আমরা ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছি। ভারতের বন্ধুত্বের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’ তিনি জানান, দুই দেশ শিগগিরই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা-বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গাজা ইস্যুতে শান্তি আলোচনার স্থবিরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনাকে একমাত্র বাস্তব কাঠামো হিসেবে ধরে রাখা। এটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য ও বাস্তবসম্মত একটি পরিকল্পনা। বিশ্বের অনেক দেশ যখন এই পরিকল্পনা থেকে সরে যেতে চাইছে, তখন ভারত বৈশ্বিক পরাশক্তি হিসেবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’

দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান প্রসঙ্গে সার বলেন, ‘বর্তমানে এমন একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব নয়, যা আমাদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে।’ তিনি দাবি করেন, মধ্যপ্রাচ্যে এখনো গাজা, লেবানন ও ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ সক্রিয়।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনা বলছে না যে অবশ্যই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র থাকতে হবে—এই বিষয়টি পরিস্থিতি-নির্ভর। অতীতের ভুল থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি এবং তার পুনরাবৃত্তি করব না।’

হামাস প্রসঙ্গে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হামাসের সামরিক ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং গাজায় তাদের শাসনের অবসান ঘটানো। হামাস আজও প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রকাশ্যে হত্যা করে ভয় ছড়াচ্ছে। আমরা চাই গাজায় অন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে উঠুক—যাতে এই সন্ত্রাসী শাসনের চিরতরে ইতি টানা যায়।’

গিডিওন সার বলেন, ভারত ও ইসরায়েল ‘একই রকম বেদনা ও অভিজ্ঞতা’ বহন করে। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ এখন সর্বত্র। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারতের মানুষও এর ভয়াবহতা জানে। আমরা লস্কর-ই-তাইয়েবার মতো সংগঠনকে সন্ত্রাসী ঘোষণা করেছি এবং গোয়েন্দা, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে পরস্পরকে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করছি।’

ইসরায়েলি মন্ত্রী আরও জানান, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা বিনিময়ের নতুন কাঠামো তৈরি হচ্ছে, যা উভয়ের মধ্যে ‘বাস্তব কৌশলগত অংশীদারত্ব’ প্রতিফলিত করছে।

অর্থনীতি ও যোগাযোগ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে গিডিওন সার বলেন, ‘ইসরায়েল “ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডর” পুনরায় সক্রিয় করতে প্রস্তুত। যুদ্ধের কারণে প্রকল্পটি কিছুদিন স্থগিত ছিল, তবে আমরা আবার এটি এগিয়ে নিতে প্রস্তুত।’

হাইফা বন্দরে আদানি গ্রুপের বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের পারস্পরিক আস্থার প্রতীক। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আমাদের দেশ ও এখানে হওয়া বিনিয়োগকে সুরক্ষা দেয়। আমরা আদানির বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই—এটি দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরও বলেন, ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালুর মাধ্যমে পর্যটন, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানে নতুন গতি আসবে।

সাক্ষাৎকারের শেষ অংশে গিডিওন সার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি ও নেতানিয়াহুর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও গভীর করছে। তাদের আলোচনা সব সময় খোলামেলা ও কৌশলগত বিষয়কেন্দ্রিক। আমি আশা করি, তাঁরা শিগগিরই সাক্ষাৎ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ, বহু হতাহতের আশঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দুর্ঘটনার ফলে যাত্রীবাহী ট্রেনের একটি বগি মালবাহী ট্রেনের ওপর উঠে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
দুর্ঘটনার ফলে যাত্রীবাহী ট্রেনের একটি বগি মালবাহী ট্রেনের ওপর উঠে গেছে। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ছত্তিশগড়ের বিলাসপুর জেলায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সংঘর্ষে কমপক্ষে চারজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে জয়রাম নগর স্টেশনের কাছে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে একটি মালবাহী ট্রেনের ধাক্কা লাগে। যাত্রীবাহী ট্রেনটি কোরবা থেকে বিলাসপুর যাচ্ছিল।

জেলা কালেক্টর সঞ্জয় আগরওয়াল দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

দুর্ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, যাত্রীবাহী ট্রেনের একটি বগি মালবাহী ট্রেনের ওপর উঠে গেছে। দুর্ঘটনাস্থলে প্রচুর লোক জড়ো হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের নেতৃত্বে ২ বছরের জন্য গাজার শাসনক্ষমতা চায় যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩৯
যুক্তরাষ্ট্র চায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি ‘শান্তি পরিষদ’ আগামী দুই বছর গাজা শাসন করুক। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র চায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি ‘শান্তি পরিষদ’ আগামী দুই বছর গাজা শাসন করুক। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা অন্তত দুই বছরের জন্য গাজা শাসনের দায়িত্ব নিতে চায়। একই সঙ্গে গাজায় কোনো শান্তিরক্ষী বাহিনী নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক বলপ্রয়োগকারী বাহিনী মোতায়েন করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। এ বিষয়ে দেশটি এর মধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কয়েকটি সদস্য দেশের কাছে একটি খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস মার্কিন প্রশাসনের এক ক্ল্যাসিফায়েড বা গোপন নথির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র গতকাল সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রকে গাজায় অন্তত দুই বছরের জন্য একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

ওই খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে গাজা শাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত বিস্তৃত ম্যান্ডেট দেওয়া হবে। প্রয়োজনে এই সময়সীমা বাড়ানো সম্ভব হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছেন, এই খসড়ার ভিত্তিতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের আলোচনা চলবে। লক্ষ্য হলো—আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভোটের মাধ্যমে প্রস্তাবটি গৃহীত করা এবং জানুয়ারির মধ্যে গাজায় প্রথম সেনা মোতায়েন করা।

মার্কিন ওই কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী বা আইএসএফ (International Security Force) একটি ‘বলপ্রয়োগকারী বাহিনী’, শান্তিরক্ষী বাহিনী নয়। এ বাহিনীতে বিভিন্ন দেশের সৈন্য থাকবে এবং তা গঠিত হবে গাজার ‘বোর্ড অব পিস বা শান্তি পরিষদের’ পরামর্শে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, এ বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনিই দায়িত্ব নেবেন।

খসড়ায় বলা হয়েছে, বোর্ড অব পিস অন্তত ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। খসড়ার তথ্য অনুযায়ী, আইএসএফের দায়িত্ব থাকবে ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে গাজার সীমান্ত নিরাপদ রাখা, সাধারণ মানুষের সুরক্ষা ও মানবিক সহায়তার করিডর রক্ষা করা এবং নতুন ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। এই নতুন পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে তারা কাজ করবে।

এ ছাড়া আইএসএফের দায়িত্ব থাকবে গাজার নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা। অর্থাৎ গাজা উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করা। এর মধ্যে সামরিক, সন্ত্রাসী ও আক্রমণাত্মক অবকাঠামো ধ্বংস ও তা পুনর্গঠন রোধ করা এবং অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর অস্ত্র স্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয় করা।

এর মানে দাঁড়ায়, হামাস যদি স্বেচ্ছায় নিরস্ত্রীকরণে রাজি না হয়, তাহলে বাহিনী জোরপূর্বক তাদের নিরস্ত্রীকরণের দায়িত্ব নেবে। খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, প্রয়োজন হলে গাজা চুক্তি বাস্তবায়নে আইএসএফ অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবে। এ বাহিনী গাজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এমন এক অন্তর্বর্তী সময়ে, যখন ইসরায়েল ধীরে ধীরে গাজার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সরে আসবে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিজেদের সংস্কার সম্পন্ন করে দীর্ঘ মেয়াদে গাজার প্রশাসন গ্রহণের প্রস্তুতি নেবে।

অ্যাক্সিওসের আগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়া, আজারবাইজান, মিসর ও তুরস্ক এই বাহিনীতে সৈন্য পাঠাতে আগ্রহ দেখিয়েছে। খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আইএসএফ বোর্ড অব পিসের কাছে গ্রহণযোগ্য একীভূত কমান্ড কাঠামোর অধীনে গাজায় মোতায়েন হবে। এতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, বাহিনী গঠন ও এর কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে ‘মিসর ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ পরামর্শ ও সহযোগিতার ভিত্তিতে’।

বাহিনীকে ‘আন্তর্জাতিক আইন, বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আওতায় তাদের ম্যান্ডেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা’ দেওয়া হবে। খসড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, বোর্ড অব পিসকে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে ক্ষমতায়িত করা হবে। এ প্রশাসন গাজার পুনর্গঠনের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করবে এবং অর্থ সংগ্রহ করবে। এ দায়িত্ব তারা পালন করবে যতক্ষণ না ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিজেদের সংস্কার কর্মসূচি সন্তোষজনকভাবে শেষ করে এবং বোর্ড অব পিস তার অনুমোদন দেয়।

প্রস্তাব অনুযায়ী, বোর্ড অব পিসকে গাজার স্থানীয় যোগ্য, অরাজনৈতিক ও টেকনোক্র্যাট ফিলিস্তিনি নাগরিকদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি তদারক করবে ও সহায়তা দেবে। এই কমিটি গাজার বেসামরিক প্রশাসনের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই কমিটি গঠনের আগেই বোর্ড অব পিস কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, মানবিক সহায়তা বিতরণ করবে সেসব সংস্থা, যারা বোর্ড অব পিসের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। এসব সংস্থার মধ্যে রয়েছে—জাতিসংঘ, রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট। কোনো সংস্থা যদি সাহায্য অপব্যবহার করে বা অন্যদিকে সরিয়ে নেয়, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ১৪
৬ মাস আগে বিয়ে করেন এই দম্পতি। ছবি: এনডিটিভি
৬ মাস আগে বিয়ে করেন এই দম্পতি। ছবি: এনডিটিভি

স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভারতের বেঙ্গালুরুর এক সার্জনের বিরুদ্ধে। ছয় মাস আগে ঘটে যাওয়া এ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে সম্প্রতি তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত বছরের ২৬ মে বিয়ে করেন সার্জন মহেন্দ্র রেড্ডি ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কৃতিকা রেড্ডি। দুজনেই বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।

মহেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কৃতিকা অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে না নিয়ে ঘরেই অ্যানেস্থেটিক ওষুধ প্রোপোফল দেন মহেন্দ্র। যার মাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এরপর কৃতিকা আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দ্রুত নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

সম্প্রতি এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করার সময় পুলিশ দেখতে পায়, অভিযুক্ত সার্জন এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন। যেখানে লেখা, ‘তোমার জন্য আমি আমার স্ত্রীকে খুন করেছি।’

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত চিকিৎসক মহেন্দ্র রেড্ডি জেনারেল সার্জন হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি এক নারীর সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন। হত্যার পর সেই অ্যাপের মাধ্যমেই তিনি ওই নারীকে এ বার্তা পাঠান। তাঁর ফোনের ফরেনসিক বিশ্লেষণের সময় পুলিশ বার্তাটি খুঁজে পায়।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।

পরে ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (এফএসএল) প্রতিবেদনে কৃতিকার দেহে প্রোপোফলের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। এতে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর চেয়ে হত্যার আশঙ্কা স্পষ্ট হয়। ঘটনার তদন্তে তাঁদের বাসা থেকে ক্যানোলা সেট, ইনজেকশন টিউবসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।

এই প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর কৃতিকার বাবা মহেন্দ্রের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ সন্দেহ করে, নিজের চিকিৎসাজ্ঞান ব্যবহার করে মহেন্দ্র ঘটনাটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন।

অবশেষে ১৫ অক্টোবর তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং বলেন, এ পর্যন্ত সংগৃহীত প্রমাণগুলো স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে যে, অপরাধে স্বামীর ভূমিকা ছিল। তিনিই প্রথম স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু তখন এমন কিছু উল্লেখ করেননি, যা সন্দেহজনক হতে পারত।

পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘মহেন্দ্র দাবি করেছিলেন, কৃতিকা অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এখন আমরা জেনেছি, তাঁকে সিডেটিভ ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল, যা থেকে হত্যার উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত