১৯৮৯ সালের ২৭ নভেম্বর, সোমবার। এক শিক্ষক গনজালো রোজাসকে যখন ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে এলেন, তখন তিনি কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটার একটি স্কুলে পড়েন। ছোট্ট রোজাসের জন্য অপেক্ষা করছিল এক হৃদয়বিদারক খবর—তার বাবা সিনিয়র গনজালো রোজাস বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
মাত্র ১০ বছর বয়সে বাবাকে হারানো রোজাস সেই মুহূর্তটিকে আজও ভুলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমি যখন বেরিয়ে এলাম, দেখি মা আর দাদি দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। এটা ছিল সত্যিই এক কঠিন দুঃখের দিন।’
বিমানটি ছিল অ্যাভিয়াঙ্কা ফ্লাইট-২০৩। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এটি বিস্ফোরণে বিস্ফোরিত হয়েছিল। বিমানটিতে থাকা ১০৭ জন যাত্রী ও ক্রু নিহত হন। পাশাপাশি এটির ধ্বংসাবশেষের আঘাতে নিচে আরও তিনজন প্রাণ হারান। কিন্তু এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না—এটি ছিল পাবলো এস্কোবার ও তাঁর মেডেলিন কার্টেলের পরিকল্পিত একটি বোমা হামলা!
আজকের দিনে কলম্বিয়ায় এস্কোবারের সময়ের ভয়ংকর মাদক যুদ্ধ, বোমা হামলা ও অসংখ্য হত্যার ঘটনা অনেকটাই অতীত হয়ে গেছে। কিন্তু তার প্রভাব এখনো রয়ে গেছে।
এস্কোবার ১৯৯৩ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি এক রহস্যময় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। অসংখ্য বই, গান, এমনকি ‘নারকোস’-এর মতো নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজের মধ্য দিয়ে তাঁর নামটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে কলম্বিয়া থেকে এস্কোবারের নাম-ছবি ব্যবহৃত পণ্য নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিবিসি জানিয়েছে, কংগ্রেসের নতুন একটি বিল এস্কোবারের নাম-ছবি ব্যবহৃত অসংখ্য স্মারক পণ্য—যেমন মগ, চাবির রিং, টি-শার্ট ইত্যাদি নিষিদ্ধ করতে চাইছে। শুধু এস্কোবার নয়, সব দোষী সাব্যস্ত অপরাধীর স্মারক পণ্যই নিষিদ্ধ করতে চায় এই আইন।
বিলটির অন্যতম প্রণেতা সাংসদ জুয়ান সেবাস্তিয়ান গোমেজ বলেন, ‘আমাদের দেশের ইতিহাসের কঠিন অধ্যায়গুলোকে টি-শার্ট বা স্টিকারের মাধ্যমে স্মরণ করা উচিত নয়।’
নতুন আইনের অধীনে শুধুমাত্র বিক্রি নয়, বরং এস্কোবার-সংক্রান্ত পোশাক পরা ও বহন করাও নিষিদ্ধ হবে। নিয়ম ভঙ্গকারীদের জন্য জরিমানা ও ব্যবসায় সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। এই বিলের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এটি তাঁদের জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
মেডেলিন শহরের জনপ্রিয় একটি পর্যটন এলাকায় পাবলো এস্কোবারের স্মারক পণ্য বিক্রি করেন জোয়ানা মনটোয়া। বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ভয়ংকর! আমাদেরও তো কাজ করার অধিকার আছে। পাবলো টি-শার্টগুলো খুব ভালো বিক্রি হয়।’
১৯৮০ ও ৯০-এর দশকে কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরকে কেন্দ্র করেই অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন কোকেন সম্রাট পাবলো এস্কোবার। বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হয়েও তিনি কলম্বিয়ার আইনপ্রণেতা বনে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ারও স্বপ্ন দেখছিলেন। তবে এর আগ মুহূর্তেই তাঁর অপরাধের সাম্রাজ্য ভেঙে পড়তে শুরু করে। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী থেকে রাতারাতি ফেরারি জীবন শুরু হয় তাঁর। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি। এক সময় সরকারের সঙ্গে আপস করে তিনি আত্মসমর্পণ করলেও বন্দী ছিলেন নিজের তৈরি করা কারাগারে। সব ধরনের আয়েশি জীবনের সুযোগ থাকা বিলাসবহুল সেই কারাগার পাহারা দিত এস্কোবারের সৈনিকেরাই। কারাগারের ভেতরে থাকা ফুটবল মাঠে তখনকার সময়ের বিশ্বখ্যাত ফুটবলারেরাও গোপনে খেলে আসতেন।
বলা হয়ে থাকে, নিজের আমলে এস্কোবার ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ধনি ব্যক্তি। ১৯৮৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল। কিন্তু তাঁর সম্পদের পরিমাণ কত ছিল, তা তিনি নিজেও জানতেন না। পালিয়ে থাকার দিনগুলোতে এক রাতে মেয়ের শীত নিবারণের জন্য ঘর উষ্ণ রাখতে তিনি লাখ লাখ ডলারের অসংখ্য বান্ডিল পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এস্কোবারের মেডেলিন ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শহর। কিন্তু এখন এটি উদ্ভাবন ও পর্যটনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। অসংখ্য ব্যবসায়ী পর্যটকদের কাছে এস্কোবারের স্মারক বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিছু বিক্রেতা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাঁদের মোট বিক্রির ৬০ শতাংশই আসে এস্কোবারের পণ্য বিক্রি করে।
এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিলটি পাস হলে ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হবে নতুন নিয়মের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। সাংসদ গোমেজ বলেন, ‘আমরা চাই, কলম্বিয়া যেন কেবল মাদক সম্রাটদের দেশ হিসেবে পরিচিত না হয়। এস্কোবারের কারণে দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে কলঙ্কিত হয়েছে।’
অনেক টি-শার্টেই লেখা থাকে এস্কোবারের সেই কুখ্যাত উক্তি—‘প্লাতা ওর প্লামো?’ বা ‘সিলভার নাকি সিসা?’ অর্থাৎ—ঘুষ খাবে নাকি গুলি?
এস্কোবার একসময় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ৮০ ভাগ কোকেনের নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর দানশীলতা অনেককে প্রভাবিত করেছিল। তবে অনেকেই মনে করেন, এটি ছিল তাঁর জনগণের আনুগত্য কেনার কৌশল। এই কৌশলেই তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলেন।
নতুন বিলের বিষয়ে সেদিনের সেই গনজালো রোজাস বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত—আমরা পাবলো এস্কোবারের ছবি বাণিজ্যিকভাবে প্রচার করে যাবো, নাকি এটি সংশোধন করব?’
বিলটি এখন চারটি ধাপ পেরোলেই আইন হিসেবে কার্যকর হবে। সাংসদ গোমেজ বলেন, ‘জার্মানিতে হিটলারের ছবি বিক্রি করা হয় না, ইতালিতে মুসোলিনির স্টিকার পাওয়া যায় না, চিলিতে পিনোশের আইডি কার্ড বিক্রি হয় না।’
মেডেলিনের মেয়র—যিনি ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীও ছিলেন—বিলটির পক্ষে। তিনি বলেন, ‘এই স্মারক বিক্রি শহর, দেশ ও ভুক্তভোগীদের জন্য অপমানজনক।’
মেডেলিনের একটি অভিজাত এলাকায় তিন আমেরিকান পর্যটক এস্কোবারের একটি ক্যাপ কিনছিলেন। তাদের একজন বলেন, ‘আমি ইতিহাসের একটি অংশ সংগ্রহ করতে চাই।’
তবে বিলের পক্ষে থাকা কলম্বিয়ানরা মনে করেন, স্মারক বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া মানে ইতিহাস মুছে ফেলা নয়, বরং এস্কোবারের মিথ নির্মূল করা। এর মাধ্যমে এস্কোবারের ভুক্তভোগীদের সম্মান জানানো হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যন্ত্রণার স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
১৯৮৯ সালের ২৭ নভেম্বর, সোমবার। এক শিক্ষক গনজালো রোজাসকে যখন ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে এলেন, তখন তিনি কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটার একটি স্কুলে পড়েন। ছোট্ট রোজাসের জন্য অপেক্ষা করছিল এক হৃদয়বিদারক খবর—তার বাবা সিনিয়র গনজালো রোজাস বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
মাত্র ১০ বছর বয়সে বাবাকে হারানো রোজাস সেই মুহূর্তটিকে আজও ভুলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমি যখন বেরিয়ে এলাম, দেখি মা আর দাদি দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। এটা ছিল সত্যিই এক কঠিন দুঃখের দিন।’
বিমানটি ছিল অ্যাভিয়াঙ্কা ফ্লাইট-২০৩। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এটি বিস্ফোরণে বিস্ফোরিত হয়েছিল। বিমানটিতে থাকা ১০৭ জন যাত্রী ও ক্রু নিহত হন। পাশাপাশি এটির ধ্বংসাবশেষের আঘাতে নিচে আরও তিনজন প্রাণ হারান। কিন্তু এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না—এটি ছিল পাবলো এস্কোবার ও তাঁর মেডেলিন কার্টেলের পরিকল্পিত একটি বোমা হামলা!
আজকের দিনে কলম্বিয়ায় এস্কোবারের সময়ের ভয়ংকর মাদক যুদ্ধ, বোমা হামলা ও অসংখ্য হত্যার ঘটনা অনেকটাই অতীত হয়ে গেছে। কিন্তু তার প্রভাব এখনো রয়ে গেছে।
এস্কোবার ১৯৯৩ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি এক রহস্যময় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। অসংখ্য বই, গান, এমনকি ‘নারকোস’-এর মতো নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজের মধ্য দিয়ে তাঁর নামটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে কলম্বিয়া থেকে এস্কোবারের নাম-ছবি ব্যবহৃত পণ্য নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিবিসি জানিয়েছে, কংগ্রেসের নতুন একটি বিল এস্কোবারের নাম-ছবি ব্যবহৃত অসংখ্য স্মারক পণ্য—যেমন মগ, চাবির রিং, টি-শার্ট ইত্যাদি নিষিদ্ধ করতে চাইছে। শুধু এস্কোবার নয়, সব দোষী সাব্যস্ত অপরাধীর স্মারক পণ্যই নিষিদ্ধ করতে চায় এই আইন।
বিলটির অন্যতম প্রণেতা সাংসদ জুয়ান সেবাস্তিয়ান গোমেজ বলেন, ‘আমাদের দেশের ইতিহাসের কঠিন অধ্যায়গুলোকে টি-শার্ট বা স্টিকারের মাধ্যমে স্মরণ করা উচিত নয়।’
নতুন আইনের অধীনে শুধুমাত্র বিক্রি নয়, বরং এস্কোবার-সংক্রান্ত পোশাক পরা ও বহন করাও নিষিদ্ধ হবে। নিয়ম ভঙ্গকারীদের জন্য জরিমানা ও ব্যবসায় সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। এই বিলের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এটি তাঁদের জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
মেডেলিন শহরের জনপ্রিয় একটি পর্যটন এলাকায় পাবলো এস্কোবারের স্মারক পণ্য বিক্রি করেন জোয়ানা মনটোয়া। বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ভয়ংকর! আমাদেরও তো কাজ করার অধিকার আছে। পাবলো টি-শার্টগুলো খুব ভালো বিক্রি হয়।’
১৯৮০ ও ৯০-এর দশকে কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরকে কেন্দ্র করেই অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন কোকেন সম্রাট পাবলো এস্কোবার। বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হয়েও তিনি কলম্বিয়ার আইনপ্রণেতা বনে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ারও স্বপ্ন দেখছিলেন। তবে এর আগ মুহূর্তেই তাঁর অপরাধের সাম্রাজ্য ভেঙে পড়তে শুরু করে। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী থেকে রাতারাতি ফেরারি জীবন শুরু হয় তাঁর। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি। এক সময় সরকারের সঙ্গে আপস করে তিনি আত্মসমর্পণ করলেও বন্দী ছিলেন নিজের তৈরি করা কারাগারে। সব ধরনের আয়েশি জীবনের সুযোগ থাকা বিলাসবহুল সেই কারাগার পাহারা দিত এস্কোবারের সৈনিকেরাই। কারাগারের ভেতরে থাকা ফুটবল মাঠে তখনকার সময়ের বিশ্বখ্যাত ফুটবলারেরাও গোপনে খেলে আসতেন।
বলা হয়ে থাকে, নিজের আমলে এস্কোবার ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ধনি ব্যক্তি। ১৯৮৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল। কিন্তু তাঁর সম্পদের পরিমাণ কত ছিল, তা তিনি নিজেও জানতেন না। পালিয়ে থাকার দিনগুলোতে এক রাতে মেয়ের শীত নিবারণের জন্য ঘর উষ্ণ রাখতে তিনি লাখ লাখ ডলারের অসংখ্য বান্ডিল পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এস্কোবারের মেডেলিন ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শহর। কিন্তু এখন এটি উদ্ভাবন ও পর্যটনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। অসংখ্য ব্যবসায়ী পর্যটকদের কাছে এস্কোবারের স্মারক বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিছু বিক্রেতা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাঁদের মোট বিক্রির ৬০ শতাংশই আসে এস্কোবারের পণ্য বিক্রি করে।
এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিলটি পাস হলে ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হবে নতুন নিয়মের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। সাংসদ গোমেজ বলেন, ‘আমরা চাই, কলম্বিয়া যেন কেবল মাদক সম্রাটদের দেশ হিসেবে পরিচিত না হয়। এস্কোবারের কারণে দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে কলঙ্কিত হয়েছে।’
অনেক টি-শার্টেই লেখা থাকে এস্কোবারের সেই কুখ্যাত উক্তি—‘প্লাতা ওর প্লামো?’ বা ‘সিলভার নাকি সিসা?’ অর্থাৎ—ঘুষ খাবে নাকি গুলি?
এস্কোবার একসময় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ৮০ ভাগ কোকেনের নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর দানশীলতা অনেককে প্রভাবিত করেছিল। তবে অনেকেই মনে করেন, এটি ছিল তাঁর জনগণের আনুগত্য কেনার কৌশল। এই কৌশলেই তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলেন।
নতুন বিলের বিষয়ে সেদিনের সেই গনজালো রোজাস বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত—আমরা পাবলো এস্কোবারের ছবি বাণিজ্যিকভাবে প্রচার করে যাবো, নাকি এটি সংশোধন করব?’
বিলটি এখন চারটি ধাপ পেরোলেই আইন হিসেবে কার্যকর হবে। সাংসদ গোমেজ বলেন, ‘জার্মানিতে হিটলারের ছবি বিক্রি করা হয় না, ইতালিতে মুসোলিনির স্টিকার পাওয়া যায় না, চিলিতে পিনোশের আইডি কার্ড বিক্রি হয় না।’
মেডেলিনের মেয়র—যিনি ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীও ছিলেন—বিলটির পক্ষে। তিনি বলেন, ‘এই স্মারক বিক্রি শহর, দেশ ও ভুক্তভোগীদের জন্য অপমানজনক।’
মেডেলিনের একটি অভিজাত এলাকায় তিন আমেরিকান পর্যটক এস্কোবারের একটি ক্যাপ কিনছিলেন। তাদের একজন বলেন, ‘আমি ইতিহাসের একটি অংশ সংগ্রহ করতে চাই।’
তবে বিলের পক্ষে থাকা কলম্বিয়ানরা মনে করেন, স্মারক বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া মানে ইতিহাস মুছে ফেলা নয়, বরং এস্কোবারের মিথ নির্মূল করা। এর মাধ্যমে এস্কোবারের ভুক্তভোগীদের সম্মান জানানো হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যন্ত্রণার স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
১৯৮৯ সালের ২৭ নভেম্বর, সোমবার। এক শিক্ষক গনজালো রোজাসকে যখন ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে এলেন, তখন তিনি কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটার একটি স্কুলে পড়েন। ছোট্ট রোজাসের জন্য অপেক্ষা করছিল এক হৃদয়বিদারক খবর—তার বাবা সিনিয়র গনজালো রোজাস বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
মাত্র ১০ বছর বয়সে বাবাকে হারানো রোজাস সেই মুহূর্তটিকে আজও ভুলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমি যখন বেরিয়ে এলাম, দেখি মা আর দাদি দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। এটা ছিল সত্যিই এক কঠিন দুঃখের দিন।’
বিমানটি ছিল অ্যাভিয়াঙ্কা ফ্লাইট-২০৩। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এটি বিস্ফোরণে বিস্ফোরিত হয়েছিল। বিমানটিতে থাকা ১০৭ জন যাত্রী ও ক্রু নিহত হন। পাশাপাশি এটির ধ্বংসাবশেষের আঘাতে নিচে আরও তিনজন প্রাণ হারান। কিন্তু এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না—এটি ছিল পাবলো এস্কোবার ও তাঁর মেডেলিন কার্টেলের পরিকল্পিত একটি বোমা হামলা!
আজকের দিনে কলম্বিয়ায় এস্কোবারের সময়ের ভয়ংকর মাদক যুদ্ধ, বোমা হামলা ও অসংখ্য হত্যার ঘটনা অনেকটাই অতীত হয়ে গেছে। কিন্তু তার প্রভাব এখনো রয়ে গেছে।
এস্কোবার ১৯৯৩ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি এক রহস্যময় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। অসংখ্য বই, গান, এমনকি ‘নারকোস’-এর মতো নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজের মধ্য দিয়ে তাঁর নামটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে কলম্বিয়া থেকে এস্কোবারের নাম-ছবি ব্যবহৃত পণ্য নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিবিসি জানিয়েছে, কংগ্রেসের নতুন একটি বিল এস্কোবারের নাম-ছবি ব্যবহৃত অসংখ্য স্মারক পণ্য—যেমন মগ, চাবির রিং, টি-শার্ট ইত্যাদি নিষিদ্ধ করতে চাইছে। শুধু এস্কোবার নয়, সব দোষী সাব্যস্ত অপরাধীর স্মারক পণ্যই নিষিদ্ধ করতে চায় এই আইন।
বিলটির অন্যতম প্রণেতা সাংসদ জুয়ান সেবাস্তিয়ান গোমেজ বলেন, ‘আমাদের দেশের ইতিহাসের কঠিন অধ্যায়গুলোকে টি-শার্ট বা স্টিকারের মাধ্যমে স্মরণ করা উচিত নয়।’
নতুন আইনের অধীনে শুধুমাত্র বিক্রি নয়, বরং এস্কোবার-সংক্রান্ত পোশাক পরা ও বহন করাও নিষিদ্ধ হবে। নিয়ম ভঙ্গকারীদের জন্য জরিমানা ও ব্যবসায় সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। এই বিলের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এটি তাঁদের জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
মেডেলিন শহরের জনপ্রিয় একটি পর্যটন এলাকায় পাবলো এস্কোবারের স্মারক পণ্য বিক্রি করেন জোয়ানা মনটোয়া। বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ভয়ংকর! আমাদেরও তো কাজ করার অধিকার আছে। পাবলো টি-শার্টগুলো খুব ভালো বিক্রি হয়।’
১৯৮০ ও ৯০-এর দশকে কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরকে কেন্দ্র করেই অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন কোকেন সম্রাট পাবলো এস্কোবার। বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হয়েও তিনি কলম্বিয়ার আইনপ্রণেতা বনে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ারও স্বপ্ন দেখছিলেন। তবে এর আগ মুহূর্তেই তাঁর অপরাধের সাম্রাজ্য ভেঙে পড়তে শুরু করে। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী থেকে রাতারাতি ফেরারি জীবন শুরু হয় তাঁর। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি। এক সময় সরকারের সঙ্গে আপস করে তিনি আত্মসমর্পণ করলেও বন্দী ছিলেন নিজের তৈরি করা কারাগারে। সব ধরনের আয়েশি জীবনের সুযোগ থাকা বিলাসবহুল সেই কারাগার পাহারা দিত এস্কোবারের সৈনিকেরাই। কারাগারের ভেতরে থাকা ফুটবল মাঠে তখনকার সময়ের বিশ্বখ্যাত ফুটবলারেরাও গোপনে খেলে আসতেন।
বলা হয়ে থাকে, নিজের আমলে এস্কোবার ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ধনি ব্যক্তি। ১৯৮৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল। কিন্তু তাঁর সম্পদের পরিমাণ কত ছিল, তা তিনি নিজেও জানতেন না। পালিয়ে থাকার দিনগুলোতে এক রাতে মেয়ের শীত নিবারণের জন্য ঘর উষ্ণ রাখতে তিনি লাখ লাখ ডলারের অসংখ্য বান্ডিল পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এস্কোবারের মেডেলিন ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শহর। কিন্তু এখন এটি উদ্ভাবন ও পর্যটনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। অসংখ্য ব্যবসায়ী পর্যটকদের কাছে এস্কোবারের স্মারক বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিছু বিক্রেতা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাঁদের মোট বিক্রির ৬০ শতাংশই আসে এস্কোবারের পণ্য বিক্রি করে।
এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিলটি পাস হলে ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হবে নতুন নিয়মের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। সাংসদ গোমেজ বলেন, ‘আমরা চাই, কলম্বিয়া যেন কেবল মাদক সম্রাটদের দেশ হিসেবে পরিচিত না হয়। এস্কোবারের কারণে দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে কলঙ্কিত হয়েছে।’
অনেক টি-শার্টেই লেখা থাকে এস্কোবারের সেই কুখ্যাত উক্তি—‘প্লাতা ওর প্লামো?’ বা ‘সিলভার নাকি সিসা?’ অর্থাৎ—ঘুষ খাবে নাকি গুলি?
এস্কোবার একসময় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ৮০ ভাগ কোকেনের নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর দানশীলতা অনেককে প্রভাবিত করেছিল। তবে অনেকেই মনে করেন, এটি ছিল তাঁর জনগণের আনুগত্য কেনার কৌশল। এই কৌশলেই তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলেন।
নতুন বিলের বিষয়ে সেদিনের সেই গনজালো রোজাস বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত—আমরা পাবলো এস্কোবারের ছবি বাণিজ্যিকভাবে প্রচার করে যাবো, নাকি এটি সংশোধন করব?’
বিলটি এখন চারটি ধাপ পেরোলেই আইন হিসেবে কার্যকর হবে। সাংসদ গোমেজ বলেন, ‘জার্মানিতে হিটলারের ছবি বিক্রি করা হয় না, ইতালিতে মুসোলিনির স্টিকার পাওয়া যায় না, চিলিতে পিনোশের আইডি কার্ড বিক্রি হয় না।’
মেডেলিনের মেয়র—যিনি ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীও ছিলেন—বিলটির পক্ষে। তিনি বলেন, ‘এই স্মারক বিক্রি শহর, দেশ ও ভুক্তভোগীদের জন্য অপমানজনক।’
মেডেলিনের একটি অভিজাত এলাকায় তিন আমেরিকান পর্যটক এস্কোবারের একটি ক্যাপ কিনছিলেন। তাদের একজন বলেন, ‘আমি ইতিহাসের একটি অংশ সংগ্রহ করতে চাই।’
তবে বিলের পক্ষে থাকা কলম্বিয়ানরা মনে করেন, স্মারক বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া মানে ইতিহাস মুছে ফেলা নয়, বরং এস্কোবারের মিথ নির্মূল করা। এর মাধ্যমে এস্কোবারের ভুক্তভোগীদের সম্মান জানানো হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যন্ত্রণার স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
১৯৮৯ সালের ২৭ নভেম্বর, সোমবার। এক শিক্ষক গনজালো রোজাসকে যখন ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে এলেন, তখন তিনি কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটার একটি স্কুলে পড়েন। ছোট্ট রোজাসের জন্য অপেক্ষা করছিল এক হৃদয়বিদারক খবর—তার বাবা সিনিয়র গনজালো রোজাস বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
মাত্র ১০ বছর বয়সে বাবাকে হারানো রোজাস সেই মুহূর্তটিকে আজও ভুলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমি যখন বেরিয়ে এলাম, দেখি মা আর দাদি দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। এটা ছিল সত্যিই এক কঠিন দুঃখের দিন।’
বিমানটি ছিল অ্যাভিয়াঙ্কা ফ্লাইট-২০৩। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এটি বিস্ফোরণে বিস্ফোরিত হয়েছিল। বিমানটিতে থাকা ১০৭ জন যাত্রী ও ক্রু নিহত হন। পাশাপাশি এটির ধ্বংসাবশেষের আঘাতে নিচে আরও তিনজন প্রাণ হারান। কিন্তু এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না—এটি ছিল পাবলো এস্কোবার ও তাঁর মেডেলিন কার্টেলের পরিকল্পিত একটি বোমা হামলা!
আজকের দিনে কলম্বিয়ায় এস্কোবারের সময়ের ভয়ংকর মাদক যুদ্ধ, বোমা হামলা ও অসংখ্য হত্যার ঘটনা অনেকটাই অতীত হয়ে গেছে। কিন্তু তার প্রভাব এখনো রয়ে গেছে।
এস্কোবার ১৯৯৩ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি এক রহস্যময় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। অসংখ্য বই, গান, এমনকি ‘নারকোস’-এর মতো নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজের মধ্য দিয়ে তাঁর নামটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে কলম্বিয়া থেকে এস্কোবারের নাম-ছবি ব্যবহৃত পণ্য নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিবিসি জানিয়েছে, কংগ্রেসের নতুন একটি বিল এস্কোবারের নাম-ছবি ব্যবহৃত অসংখ্য স্মারক পণ্য—যেমন মগ, চাবির রিং, টি-শার্ট ইত্যাদি নিষিদ্ধ করতে চাইছে। শুধু এস্কোবার নয়, সব দোষী সাব্যস্ত অপরাধীর স্মারক পণ্যই নিষিদ্ধ করতে চায় এই আইন।
বিলটির অন্যতম প্রণেতা সাংসদ জুয়ান সেবাস্তিয়ান গোমেজ বলেন, ‘আমাদের দেশের ইতিহাসের কঠিন অধ্যায়গুলোকে টি-শার্ট বা স্টিকারের মাধ্যমে স্মরণ করা উচিত নয়।’
নতুন আইনের অধীনে শুধুমাত্র বিক্রি নয়, বরং এস্কোবার-সংক্রান্ত পোশাক পরা ও বহন করাও নিষিদ্ধ হবে। নিয়ম ভঙ্গকারীদের জন্য জরিমানা ও ব্যবসায় সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। এই বিলের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এটি তাঁদের জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
মেডেলিন শহরের জনপ্রিয় একটি পর্যটন এলাকায় পাবলো এস্কোবারের স্মারক পণ্য বিক্রি করেন জোয়ানা মনটোয়া। বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ভয়ংকর! আমাদেরও তো কাজ করার অধিকার আছে। পাবলো টি-শার্টগুলো খুব ভালো বিক্রি হয়।’
১৯৮০ ও ৯০-এর দশকে কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরকে কেন্দ্র করেই অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন কোকেন সম্রাট পাবলো এস্কোবার। বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হয়েও তিনি কলম্বিয়ার আইনপ্রণেতা বনে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ারও স্বপ্ন দেখছিলেন। তবে এর আগ মুহূর্তেই তাঁর অপরাধের সাম্রাজ্য ভেঙে পড়তে শুরু করে। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী থেকে রাতারাতি ফেরারি জীবন শুরু হয় তাঁর। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তিনি। এক সময় সরকারের সঙ্গে আপস করে তিনি আত্মসমর্পণ করলেও বন্দী ছিলেন নিজের তৈরি করা কারাগারে। সব ধরনের আয়েশি জীবনের সুযোগ থাকা বিলাসবহুল সেই কারাগার পাহারা দিত এস্কোবারের সৈনিকেরাই। কারাগারের ভেতরে থাকা ফুটবল মাঠে তখনকার সময়ের বিশ্বখ্যাত ফুটবলারেরাও গোপনে খেলে আসতেন।
বলা হয়ে থাকে, নিজের আমলে এস্কোবার ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ধনি ব্যক্তি। ১৯৮৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল। কিন্তু তাঁর সম্পদের পরিমাণ কত ছিল, তা তিনি নিজেও জানতেন না। পালিয়ে থাকার দিনগুলোতে এক রাতে মেয়ের শীত নিবারণের জন্য ঘর উষ্ণ রাখতে তিনি লাখ লাখ ডলারের অসংখ্য বান্ডিল পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এস্কোবারের মেডেলিন ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শহর। কিন্তু এখন এটি উদ্ভাবন ও পর্যটনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। অসংখ্য ব্যবসায়ী পর্যটকদের কাছে এস্কোবারের স্মারক বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিছু বিক্রেতা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাঁদের মোট বিক্রির ৬০ শতাংশই আসে এস্কোবারের পণ্য বিক্রি করে।
এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিলটি পাস হলে ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হবে নতুন নিয়মের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। সাংসদ গোমেজ বলেন, ‘আমরা চাই, কলম্বিয়া যেন কেবল মাদক সম্রাটদের দেশ হিসেবে পরিচিত না হয়। এস্কোবারের কারণে দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে কলঙ্কিত হয়েছে।’
অনেক টি-শার্টেই লেখা থাকে এস্কোবারের সেই কুখ্যাত উক্তি—‘প্লাতা ওর প্লামো?’ বা ‘সিলভার নাকি সিসা?’ অর্থাৎ—ঘুষ খাবে নাকি গুলি?
এস্কোবার একসময় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ৮০ ভাগ কোকেনের নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর দানশীলতা অনেককে প্রভাবিত করেছিল। তবে অনেকেই মনে করেন, এটি ছিল তাঁর জনগণের আনুগত্য কেনার কৌশল। এই কৌশলেই তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলেন।
নতুন বিলের বিষয়ে সেদিনের সেই গনজালো রোজাস বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত—আমরা পাবলো এস্কোবারের ছবি বাণিজ্যিকভাবে প্রচার করে যাবো, নাকি এটি সংশোধন করব?’
বিলটি এখন চারটি ধাপ পেরোলেই আইন হিসেবে কার্যকর হবে। সাংসদ গোমেজ বলেন, ‘জার্মানিতে হিটলারের ছবি বিক্রি করা হয় না, ইতালিতে মুসোলিনির স্টিকার পাওয়া যায় না, চিলিতে পিনোশের আইডি কার্ড বিক্রি হয় না।’
মেডেলিনের মেয়র—যিনি ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীও ছিলেন—বিলটির পক্ষে। তিনি বলেন, ‘এই স্মারক বিক্রি শহর, দেশ ও ভুক্তভোগীদের জন্য অপমানজনক।’
মেডেলিনের একটি অভিজাত এলাকায় তিন আমেরিকান পর্যটক এস্কোবারের একটি ক্যাপ কিনছিলেন। তাদের একজন বলেন, ‘আমি ইতিহাসের একটি অংশ সংগ্রহ করতে চাই।’
তবে বিলের পক্ষে থাকা কলম্বিয়ানরা মনে করেন, স্মারক বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া মানে ইতিহাস মুছে ফেলা নয়, বরং এস্কোবারের মিথ নির্মূল করা। এর মাধ্যমে এস্কোবারের ভুক্তভোগীদের সম্মান জানানো হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যন্ত্রণার স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর পরবর্তী বৈঠক হবে হাঙ্গেরিতে। বৈঠকের আয়োজক হাঙ্গেরির রুশপন্থী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ইউরোপজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার...
৬ মিনিট আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় নতুন বলরুম নির্মাণের জন্য হোয়াইট হাউসের পূর্ব দিকের অংশ (ইস্ট উইং) ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক এক মার্কিন আইনপ্রণেতা তো এটিকে ‘স্রেফ ধ্বংসযজ্ঞ’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগেবিরল মৃত্তিকা ধাতু ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ বাড়াতে নতুন এক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। বিরল খনিজের বাজারে চীনের একক নিয়ন্ত্রণ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের কৌশলের অংশ হিসেবেই এই চুক্তি করেছে।
২ ঘণ্টা আগেদক্ষিণ কোরিয়ার এক তরুণী তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্টেই আগুন লাগিয়ে ফেলেছেন। ভয়ংকর এই আগুনে প্রাণ গেছে তাঁরই এক প্রতিবেশীর। ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ওসান শহরে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর পরবর্তী বৈঠক হবে হাঙ্গেরিতে। বৈঠকের আয়োজক হাঙ্গেরির রুশপন্থী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ইউরোপজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার ব্যাপারে মস্কোর অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানানোয় এই উদ্বেগ।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে এক বন্ধুত্বপূর্ণ ফোনালাপে বুদাপেস্টে বৈঠকের বিষয়টি নির্ধারিত হয়। এর পরদিনই ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে মস্কোর দাবির কাছে নতি স্বীকারে চাপ দেন। বৈঠকের স্থান হিসেবে হাঙ্গেরি নির্বাচিত হওয়ায় ‘ক্ষুব্ধ’ হয়েছে কিয়েভসহ ইউরোপের বহু দেশ। কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ন্যাটোর সদস্য হয়েও অরবান দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইউরোপের সমালোচক।
এক ইইউ কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইউরোপীয় নেতাদের ‘কেউই খুশি নন। সবাই কেবল জোর করে মুখে হাসি ধরে আছেন, যেন সব ঠিক আছে।’ জার্মানির ইইউ বিষয়কমন্ত্রী গুন্থার ক্রিশবাউম সোমবার বলেন, ‘এখনই আমাদের আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন, কীভাবে এই যুদ্ধ থামানো যায়।’ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেনকে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে রাখতে হবে, না হলে এটি ব্যর্থ চুক্তি হবে।’
এই বৈঠকের সমালোচনা করে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি মনে করি না, বুদাপেস্ট এই বৈঠকের উপযুক্ত স্থান।’ কারণ, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নরম করার চেষ্টা করেছেন এবং ইউক্রেনের সামরিক সহায়তারও বিরোধিতা করেছেন। জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘যে প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেনকে সব জায়গায় বাধা দেন, তিনি ইউক্রেনের পক্ষে কোনো ইতিবাচক কিছু করতে পারবেন না বা নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে পারবেন না।’ তবে তিনি জানান, চাইলে বুদাপেস্টে ট্রাম্পের সঙ্গে একটি পৃথক বৈঠকে অংশ নিতে রাজি আছেন।
বুদাপেস্টে ট্রাম্প–পুতিনের বৈঠক আয়োজনের ক্ষেত্রে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আংশিকভাবে দায় দেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে। কারণ, তিনিই হাঙ্গেরিকে বৈঠকের স্থান হিসেবে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, ভ্যাটিকান, সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক—এর মতো আরও অনেক ভালো বিকল্প ছিল।’
পুতিনকে আতিথ্য দেওয়া হাঙ্গেরির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সমস্যাজনক হতে পারে। কারণ, রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। হাঙ্গেরি ঘোষণা দিয়েছে, তারা আইসিসি থেকে বেরিয়ে যাবে, তবে আগামী গ্রীষ্ম পর্যন্ত আদালতের নিয়ম মানতে বাধ্য। এর আগে অরবান গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকেও আতিথ্য দিয়েছেন।
ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাইয়া ক্যালাস বলেন, ‘আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত একজন ব্যক্তিকে ইউরোপে স্বাগত জানানো ভালো বিষয় নয়।’ লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেস্তুতিস বুদ্রিস বলেন, ‘পুতিনের ইউরোপে একমাত্র জায়গা হলো দ্য হেগের আদালতের সামনে, আমাদের কোনো রাজধানীতে নয়।’
ট্রাম্প গত সপ্তাহে অরবানকে ফোনে প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি এমন একজন নেতা যাকে আমরা পছন্দ করি। পুতিনও তাঁকে পছন্দ করে, আমিও করি। হাঙ্গেরি নিরাপদ দেশ, তিনি খুব ভালো আয়োজক হবেন।’
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার বলেন, বৈঠকের প্রস্তুতি এখনো শুরু হয়নি, তবে অরবান ট্রাম্প ও পুতিন—দুজনের সঙ্গেই উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। রাশিয়া আশা করছে, এই বৈঠক ইউক্রেন ইস্যুতে শান্তির পথ তৈরিতে সহায়ক হবে এবং একই সঙ্গে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হবে।
এক জার্মান কর্মকর্তা জানান, আশা করা হচ্ছে—অরবান ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের আগে তাঁর পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করবেন, যার মধ্যে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের একটি বৈঠকও থাকতে পারে। তবে এখনো কিছু নিশ্চিত হয়নি। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ৩০ অক্টোবর বুদাপেস্টে আসবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইইউ নেতারা বৈঠকে বসবেন। সেখানে রাশিয়ার স্থগিত সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনকে ১৪০ বিলিয়ন ইউরোর ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব এবং নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে। নেতারা আশা করছেন, জাতীয় দিবস উদ্যাপন শেষে অরবান দেরিতে বৈঠকে যোগ দিলে সমঝোতায় পৌঁছানো সহজ হবে।
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক নিয়ে অরবান বলেন, ‘আমরা শুধু আয়োজক নই। এটা রাজনৈতিক সাফল্য যে এখনো বুদাপেস্ট শান্তি বৈঠক আয়োজনের যোগ্য স্থান।’ তিনি ইউরোপীয় নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপের পথ বন্ধ করেছে অথচ ইউক্রেনকে অস্ত্র দিচ্ছে।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ডিফেন্স প্রায়োরিটিজের বিশ্লেষক জেনিফার কেভানাহ বলেন, ‘এটা অরবানের জন্য বড় জয়। এত দিন তাঁকে ইইউ-তে একঘরে করা হয়েছিল, এবার তিনি সেটার পাল্টা জবাব দিলেন।’ তিনি মনে করেন, এই বৈঠক হাঙ্গেরির রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ আগামী বসন্তে নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা অরবান এবার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।
হাঙ্গেরির ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক বোতন্ড ফেলেদি বলেন, ‘এটি অরবান ধাঁচের সাফল্য। কিন্তু এতে ইউরোপীয় ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা শুরু থেকেই ইউরোপ এড়াতে চেয়েছিল।’ তাঁর ভাষায়, ‘এ ধরনের বৈঠক ব্যক্তিগত সম্পর্ককে রাজনীতির ওপরে তুলে ধরে, যা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার হয়ে ওঠে। কোনো ইউরোপীয় দেশেরই এতে সহায়তার আগ্রহ থাকা উচিত নয়।’
বুদাপেস্টের প্রতীকী তাৎপর্য ইউক্রেনের কাছে গভীর। কারণ, ১৯৯৪ সালে এখানেই রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ইউক্রেন, যেখানে তারা পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের বিনিময়ে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে পুতিন ক্রিমিয়া দখল করেন এবং ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ হামলা চালিয়ে সেই চুক্তি ভঙ্গ করেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘আরেকটি বুদাপেস্ট চুক্তি ইউক্রেনের জন্য শুভ হবে না। তবে যদি সত্যিকারের শান্তি আসে, তাহলে স্থান ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
সোমবার লুক্সেমবার্গে ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে কয়েকজন কূটনীতিক বলেন, ‘ইতিহাস নিজেকে পুনরাবৃত্তি করতে চায়। একবার বুদাপেস্টে একটি চুক্তি হয়েছিল, যার ফল ইউক্রেনের জন্য ভালো হয়নি।’
তথ্যসূত্র: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর পরবর্তী বৈঠক হবে হাঙ্গেরিতে। বৈঠকের আয়োজক হাঙ্গেরির রুশপন্থী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ইউরোপজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার ব্যাপারে মস্কোর অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানানোয় এই উদ্বেগ।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে এক বন্ধুত্বপূর্ণ ফোনালাপে বুদাপেস্টে বৈঠকের বিষয়টি নির্ধারিত হয়। এর পরদিনই ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে মস্কোর দাবির কাছে নতি স্বীকারে চাপ দেন। বৈঠকের স্থান হিসেবে হাঙ্গেরি নির্বাচিত হওয়ায় ‘ক্ষুব্ধ’ হয়েছে কিয়েভসহ ইউরোপের বহু দেশ। কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ন্যাটোর সদস্য হয়েও অরবান দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইউরোপের সমালোচক।
এক ইইউ কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইউরোপীয় নেতাদের ‘কেউই খুশি নন। সবাই কেবল জোর করে মুখে হাসি ধরে আছেন, যেন সব ঠিক আছে।’ জার্মানির ইইউ বিষয়কমন্ত্রী গুন্থার ক্রিশবাউম সোমবার বলেন, ‘এখনই আমাদের আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন, কীভাবে এই যুদ্ধ থামানো যায়।’ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেনকে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে রাখতে হবে, না হলে এটি ব্যর্থ চুক্তি হবে।’
এই বৈঠকের সমালোচনা করে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি মনে করি না, বুদাপেস্ট এই বৈঠকের উপযুক্ত স্থান।’ কারণ, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নরম করার চেষ্টা করেছেন এবং ইউক্রেনের সামরিক সহায়তারও বিরোধিতা করেছেন। জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘যে প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেনকে সব জায়গায় বাধা দেন, তিনি ইউক্রেনের পক্ষে কোনো ইতিবাচক কিছু করতে পারবেন না বা নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে পারবেন না।’ তবে তিনি জানান, চাইলে বুদাপেস্টে ট্রাম্পের সঙ্গে একটি পৃথক বৈঠকে অংশ নিতে রাজি আছেন।
বুদাপেস্টে ট্রাম্প–পুতিনের বৈঠক আয়োজনের ক্ষেত্রে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আংশিকভাবে দায় দেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে। কারণ, তিনিই হাঙ্গেরিকে বৈঠকের স্থান হিসেবে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, ভ্যাটিকান, সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক—এর মতো আরও অনেক ভালো বিকল্প ছিল।’
পুতিনকে আতিথ্য দেওয়া হাঙ্গেরির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সমস্যাজনক হতে পারে। কারণ, রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। হাঙ্গেরি ঘোষণা দিয়েছে, তারা আইসিসি থেকে বেরিয়ে যাবে, তবে আগামী গ্রীষ্ম পর্যন্ত আদালতের নিয়ম মানতে বাধ্য। এর আগে অরবান গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকেও আতিথ্য দিয়েছেন।
ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাইয়া ক্যালাস বলেন, ‘আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত একজন ব্যক্তিকে ইউরোপে স্বাগত জানানো ভালো বিষয় নয়।’ লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেস্তুতিস বুদ্রিস বলেন, ‘পুতিনের ইউরোপে একমাত্র জায়গা হলো দ্য হেগের আদালতের সামনে, আমাদের কোনো রাজধানীতে নয়।’
ট্রাম্প গত সপ্তাহে অরবানকে ফোনে প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি এমন একজন নেতা যাকে আমরা পছন্দ করি। পুতিনও তাঁকে পছন্দ করে, আমিও করি। হাঙ্গেরি নিরাপদ দেশ, তিনি খুব ভালো আয়োজক হবেন।’
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার বলেন, বৈঠকের প্রস্তুতি এখনো শুরু হয়নি, তবে অরবান ট্রাম্প ও পুতিন—দুজনের সঙ্গেই উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। রাশিয়া আশা করছে, এই বৈঠক ইউক্রেন ইস্যুতে শান্তির পথ তৈরিতে সহায়ক হবে এবং একই সঙ্গে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হবে।
এক জার্মান কর্মকর্তা জানান, আশা করা হচ্ছে—অরবান ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের আগে তাঁর পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করবেন, যার মধ্যে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের একটি বৈঠকও থাকতে পারে। তবে এখনো কিছু নিশ্চিত হয়নি। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ৩০ অক্টোবর বুদাপেস্টে আসবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইইউ নেতারা বৈঠকে বসবেন। সেখানে রাশিয়ার স্থগিত সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনকে ১৪০ বিলিয়ন ইউরোর ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব এবং নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে। নেতারা আশা করছেন, জাতীয় দিবস উদ্যাপন শেষে অরবান দেরিতে বৈঠকে যোগ দিলে সমঝোতায় পৌঁছানো সহজ হবে।
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক নিয়ে অরবান বলেন, ‘আমরা শুধু আয়োজক নই। এটা রাজনৈতিক সাফল্য যে এখনো বুদাপেস্ট শান্তি বৈঠক আয়োজনের যোগ্য স্থান।’ তিনি ইউরোপীয় নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপের পথ বন্ধ করেছে অথচ ইউক্রেনকে অস্ত্র দিচ্ছে।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ডিফেন্স প্রায়োরিটিজের বিশ্লেষক জেনিফার কেভানাহ বলেন, ‘এটা অরবানের জন্য বড় জয়। এত দিন তাঁকে ইইউ-তে একঘরে করা হয়েছিল, এবার তিনি সেটার পাল্টা জবাব দিলেন।’ তিনি মনে করেন, এই বৈঠক হাঙ্গেরির রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ আগামী বসন্তে নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা অরবান এবার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।
হাঙ্গেরির ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক বোতন্ড ফেলেদি বলেন, ‘এটি অরবান ধাঁচের সাফল্য। কিন্তু এতে ইউরোপীয় ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা শুরু থেকেই ইউরোপ এড়াতে চেয়েছিল।’ তাঁর ভাষায়, ‘এ ধরনের বৈঠক ব্যক্তিগত সম্পর্ককে রাজনীতির ওপরে তুলে ধরে, যা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার হয়ে ওঠে। কোনো ইউরোপীয় দেশেরই এতে সহায়তার আগ্রহ থাকা উচিত নয়।’
বুদাপেস্টের প্রতীকী তাৎপর্য ইউক্রেনের কাছে গভীর। কারণ, ১৯৯৪ সালে এখানেই রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ইউক্রেন, যেখানে তারা পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের বিনিময়ে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে পুতিন ক্রিমিয়া দখল করেন এবং ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ হামলা চালিয়ে সেই চুক্তি ভঙ্গ করেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘আরেকটি বুদাপেস্ট চুক্তি ইউক্রেনের জন্য শুভ হবে না। তবে যদি সত্যিকারের শান্তি আসে, তাহলে স্থান ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
সোমবার লুক্সেমবার্গে ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে কয়েকজন কূটনীতিক বলেন, ‘ইতিহাস নিজেকে পুনরাবৃত্তি করতে চায়। একবার বুদাপেস্টে একটি চুক্তি হয়েছিল, যার ফল ইউক্রেনের জন্য ভালো হয়নি।’
তথ্যসূত্র: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস
১৯৮৯ সালের ২৭ নভেম্বর, সোমবার। এক শিক্ষক গনজালো রোজাসকে যখন ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে এলেন, তখন তিনি কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটার একটি স্কুলে পড়েন। ছোট্ট রোজাসের জন্য অপেক্ষা করছিল এক হৃদয়বিদারক খবর—তার বাবা সিনিয়র গনজালো রোজাস বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় নতুন বলরুম নির্মাণের জন্য হোয়াইট হাউসের পূর্ব দিকের অংশ (ইস্ট উইং) ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক এক মার্কিন আইনপ্রণেতা তো এটিকে ‘স্রেফ ধ্বংসযজ্ঞ’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগেবিরল মৃত্তিকা ধাতু ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ বাড়াতে নতুন এক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। বিরল খনিজের বাজারে চীনের একক নিয়ন্ত্রণ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের কৌশলের অংশ হিসেবেই এই চুক্তি করেছে।
২ ঘণ্টা আগেদক্ষিণ কোরিয়ার এক তরুণী তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্টেই আগুন লাগিয়ে ফেলেছেন। ভয়ংকর এই আগুনে প্রাণ গেছে তাঁরই এক প্রতিবেশীর। ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ওসান শহরে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় নতুন বলরুম নির্মাণের জন্য হোয়াইট হাউসের পূর্ব দিকের অংশ (ইস্ট উইং) ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক এক মার্কিন আইনপ্রণেতা তো এটিকে ‘স্রেফ ধ্বংসযজ্ঞ’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইংয়ের একটি অংশ ভাঙার কাজ শুরু হয়। পত্রিকাটি ভাঙচুরের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে ভবনের বাইরের অংশে নির্মাণকাজের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। নিউইয়র্ক পোস্টেও অনুরূপ কিছু ছবি প্রকাশিত হয়েছে।
সোমবার নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, ‘হোয়াইট হাউসে নতুন বলরুম নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আমি গর্বিত যে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বহু প্রতীক্ষিত এ প্রকল্পটি শুরু করতে পারলাম—করদাতাদের একটা পয়সা অপচয় ছাড়াই! এটি সম্পূর্ণভাবে অর্থায়ন করছে কিছু দেশপ্রেমিক, বড় আমেরিকান কোম্পানি এবং আমিও।’
সেদিনই ওয়াশিংটন ডিসিতে এনসিএএ চ্যাম্পিয়ন লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির বেসবল দলকে সংবর্ধনা দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সুন্দর বলরুম তৈরি করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতাম না যে এখন আমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকব। কারণ, ঠিক পাশেই নির্মাণকাজ চলছে—আপনারা হয়তো মাঝেমধ্যে শব্দ শুনতে পাবেন।’
হোয়াইট হাউসে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের বিশাল বলরুম তৈরির পরিকল্পনা গত জুলাইয়ে সামনে। এটি হবে শতাব্দীর মধ্যে হোয়াইট হাউসের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছিলেন, ৯০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই বলরুমে একসঙ্গে ৬৫০ জন অতিথি বসতে পারবেন। কর্মকর্তারা বলেন, প্রকল্পটির অর্থায়ন করবেন ট্রাম্প ও কিছু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দাতা।
তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘গত ১৫০ বছর ধরে হোয়াইট হাউসে বলরুম চাওয়া হয়েছে। কোনো প্রেসিডেন্টই বলরুম তৈরিতে ভালো ছিলেন না। আমি নির্মাণে পারদর্শী। সুন্দর, সময়মতো ও মানসম্মতভাবে কাজটি শেষ করব।’
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ট্রাম্প দাবি করেছেন, নতুন কাঠামোটি বর্তমান ভবনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে না। তিনি বলেন, ‘এটি কাছেই থাকবে, কিন্তু ছুঁয়ে যাবে না। বর্তমান ভবনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই নির্মাণ করা হবে। এটি আমার প্রিয় জায়গা, সবচেয়ে ভালো লাগে হোয়াইট হাউসকেই।’ ২০২৯ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কাজটি শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে নতুন বলরুমের দাতাদের জন্য এক ডিনার আয়োজন করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি অতিথিদের জানান, নতুন বলরুমে থাকবে বুলেটপ্রুফ কাচ, ১ হাজার অতিথির ধারণক্ষমতা এবং প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজনের উপযোগী অবকাঠামো। সেই ডিনারে আমাজন, অ্যাপল, মেটা, গুগল, মাইক্রোসফট, প্যালান্টির ও লকহিড মার্টিনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ট্রাম্পের এই উদ্যোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা চলছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান মার্ক তাকানো একটি বিল প্রস্তাব করেছেন, যাতে বলা হয়েছে—সরকারি কার্যক্রম বন্ধ থাকলে (শাটডাউন পরিস্থিতিতে) হোয়াইট হাউসে কোনো নির্মাণ বা সংস্কারকাজে ফেডারেল তহবিল ব্যবহার করা যাবে না, যদি না তা স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত হয়। সোমবার ছিল সরকার শাটডাউনে থাকার ২০তম দিন।
সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো ওয়ালশ এক্সে লিখেছেন, ‘এটি জনগণের বাড়ির এক ভয়াবহ বিকৃতি। আমি যদি ২০২৮ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হই, প্রথম প্রতিশ্রুতিই হবে ওই বলরুম বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমেরিকানদের আমন্ত্রণ জানাব, যেন তারা সাপ্তাহিক ছুটিতে নিজ নিজ হাতুড়ি আর ক্রোবার নিয়ে এসে এই বিকৃত স্থাপনাটি ভেঙে ফেলেন।’
মানবাধিকার আইনজীবী কাসিম রশিদ এক্সে লিখেছেন, ‘আমেরিকায় আয় ও সম্পদের বৈষম্য এখন রেকর্ড পর্যায়ে, কিন্তু আমরা ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করছি একটি অহংকারমূলক প্রকল্পে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় নতুন বলরুম নির্মাণের জন্য হোয়াইট হাউসের পূর্ব দিকের অংশ (ইস্ট উইং) ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক এক মার্কিন আইনপ্রণেতা তো এটিকে ‘স্রেফ ধ্বংসযজ্ঞ’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইংয়ের একটি অংশ ভাঙার কাজ শুরু হয়। পত্রিকাটি ভাঙচুরের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে ভবনের বাইরের অংশে নির্মাণকাজের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। নিউইয়র্ক পোস্টেও অনুরূপ কিছু ছবি প্রকাশিত হয়েছে।
সোমবার নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, ‘হোয়াইট হাউসে নতুন বলরুম নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আমি গর্বিত যে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বহু প্রতীক্ষিত এ প্রকল্পটি শুরু করতে পারলাম—করদাতাদের একটা পয়সা অপচয় ছাড়াই! এটি সম্পূর্ণভাবে অর্থায়ন করছে কিছু দেশপ্রেমিক, বড় আমেরিকান কোম্পানি এবং আমিও।’
সেদিনই ওয়াশিংটন ডিসিতে এনসিএএ চ্যাম্পিয়ন লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির বেসবল দলকে সংবর্ধনা দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সুন্দর বলরুম তৈরি করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতাম না যে এখন আমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকব। কারণ, ঠিক পাশেই নির্মাণকাজ চলছে—আপনারা হয়তো মাঝেমধ্যে শব্দ শুনতে পাবেন।’
হোয়াইট হাউসে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের বিশাল বলরুম তৈরির পরিকল্পনা গত জুলাইয়ে সামনে। এটি হবে শতাব্দীর মধ্যে হোয়াইট হাউসের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছিলেন, ৯০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই বলরুমে একসঙ্গে ৬৫০ জন অতিথি বসতে পারবেন। কর্মকর্তারা বলেন, প্রকল্পটির অর্থায়ন করবেন ট্রাম্প ও কিছু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দাতা।
তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘গত ১৫০ বছর ধরে হোয়াইট হাউসে বলরুম চাওয়া হয়েছে। কোনো প্রেসিডেন্টই বলরুম তৈরিতে ভালো ছিলেন না। আমি নির্মাণে পারদর্শী। সুন্দর, সময়মতো ও মানসম্মতভাবে কাজটি শেষ করব।’
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ট্রাম্প দাবি করেছেন, নতুন কাঠামোটি বর্তমান ভবনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে না। তিনি বলেন, ‘এটি কাছেই থাকবে, কিন্তু ছুঁয়ে যাবে না। বর্তমান ভবনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই নির্মাণ করা হবে। এটি আমার প্রিয় জায়গা, সবচেয়ে ভালো লাগে হোয়াইট হাউসকেই।’ ২০২৯ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কাজটি শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে নতুন বলরুমের দাতাদের জন্য এক ডিনার আয়োজন করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি অতিথিদের জানান, নতুন বলরুমে থাকবে বুলেটপ্রুফ কাচ, ১ হাজার অতিথির ধারণক্ষমতা এবং প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজনের উপযোগী অবকাঠামো। সেই ডিনারে আমাজন, অ্যাপল, মেটা, গুগল, মাইক্রোসফট, প্যালান্টির ও লকহিড মার্টিনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ট্রাম্পের এই উদ্যোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা চলছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান মার্ক তাকানো একটি বিল প্রস্তাব করেছেন, যাতে বলা হয়েছে—সরকারি কার্যক্রম বন্ধ থাকলে (শাটডাউন পরিস্থিতিতে) হোয়াইট হাউসে কোনো নির্মাণ বা সংস্কারকাজে ফেডারেল তহবিল ব্যবহার করা যাবে না, যদি না তা স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত হয়। সোমবার ছিল সরকার শাটডাউনে থাকার ২০তম দিন।
সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো ওয়ালশ এক্সে লিখেছেন, ‘এটি জনগণের বাড়ির এক ভয়াবহ বিকৃতি। আমি যদি ২০২৮ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হই, প্রথম প্রতিশ্রুতিই হবে ওই বলরুম বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমেরিকানদের আমন্ত্রণ জানাব, যেন তারা সাপ্তাহিক ছুটিতে নিজ নিজ হাতুড়ি আর ক্রোবার নিয়ে এসে এই বিকৃত স্থাপনাটি ভেঙে ফেলেন।’
মানবাধিকার আইনজীবী কাসিম রশিদ এক্সে লিখেছেন, ‘আমেরিকায় আয় ও সম্পদের বৈষম্য এখন রেকর্ড পর্যায়ে, কিন্তু আমরা ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করছি একটি অহংকারমূলক প্রকল্পে।’
১৯৮৯ সালের ২৭ নভেম্বর, সোমবার। এক শিক্ষক গনজালো রোজাসকে যখন ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে এলেন, তখন তিনি কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটার একটি স্কুলে পড়েন। ছোট্ট রোজাসের জন্য অপেক্ষা করছিল এক হৃদয়বিদারক খবর—তার বাবা সিনিয়র গনজালো রোজাস বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর পরবর্তী বৈঠক হবে হাঙ্গেরিতে। বৈঠকের আয়োজক হাঙ্গেরির রুশপন্থী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ইউরোপজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার...
৬ মিনিট আগেবিরল মৃত্তিকা ধাতু ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ বাড়াতে নতুন এক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। বিরল খনিজের বাজারে চীনের একক নিয়ন্ত্রণ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের কৌশলের অংশ হিসেবেই এই চুক্তি করেছে।
২ ঘণ্টা আগেদক্ষিণ কোরিয়ার এক তরুণী তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্টেই আগুন লাগিয়ে ফেলেছেন। ভয়ংকর এই আগুনে প্রাণ গেছে তাঁরই এক প্রতিবেশীর। ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ওসান শহরে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
বিরল মৃত্তিকা ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ বাড়াতে নতুন এক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। বিরল খনিজের বাজারে চীনের একক নিয়ন্ত্রণ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের কৌশলের অংশ হিসেবেই এই চুক্তি করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে—অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানিয়েছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ‘রেডি-টু-গো’ প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের পথ খুলবে, যা অস্ট্রেলিয়ার খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সক্ষমতা আরও বাড়াবে।
চুক্তির আওতায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া যৌথভাবে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে ফ্রেমওয়ার্কে উল্লেখ করা হয়েছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকেই দেশ দুটি এই খনিজ সহযোগিতা নিয়ে কাজ করে আসছে। তবে আলবানিজ বলেছেন, এই নতুন চুক্তি সম্পর্ক ‘আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত রোববার ‘অকাস’ নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ সাবমেরিন প্রকল্প নিয়েও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এটা পুরো গতিতেই এগোচ্ছে।’ এর আগে চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন এই প্রকল্প পর্যালোচনার ঘোষণা দিয়েছিল, যাতে দেখা হয় যে—এটি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না। এতে আশঙ্কা দেখা দেয়, অস্ট্রেলিয়া হয়তো পুরোনো সাবমেরিন বহর প্রতিস্থাপনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিন পাবে না। তবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘না, তারা সাবমেরিনগুলো পাচ্ছে।’
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বিরল ধাতু আহরণের ৭০ শতাংশ এবং এসব ধাতুর প্রক্রিয়াজাতকরণের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে চীন। এই ধাতুগুলো প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কম্পিউটার চিপ ও গাড়িতেও ব্যবহৃত হয়। চীনের এই প্রভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো অনেকাংশে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এদিকে চীন যখন নতুন মার্কিন শুল্কের জবাবে সরবরাহ সীমিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন এই নির্ভরতা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ঘোষণার পর মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার বিরল ধাতু খনন কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য বেড়ে যায়। পার্থভিত্তিক আরাফুরা রেয়ার আর্থসের শেয়ার প্রায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। অপর একটি বড় প্রতিষ্ঠান ইলুকা রিসোর্সেসের শেয়ার বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি।
আলবানিজ বলেছেন, চুক্তির লক্ষ্য তিন ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগ দ্রুত করা, যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগও থাকবে। দুটি দেশ মূল্য নির্ধারণ, অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং খনিজ খাতে কোম্পানি ও প্রকল্প বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি পর্যালোচনার নিয়ম নিয়েও একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র আলাদাভাবে জানিয়েছে, তারা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় বছরে ১০০ টন ক্ষমতার উন্নত গ্যালিয়াম রিফাইনারি নির্মাণে বিনিয়োগ করবে এবং এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ প্রকল্পগুলোতে।
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের এমপি ম্যাটেরিয়ালস, কানাডার ট্রিলজি মেটালস ও লিথিয়াম আমেরিকাসের মতো কোম্পানিতে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, যেগুলোর প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রেই চলছে। এই বিনিয়োগের বিনিময়ে প্রশাসন ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশীদারত্বও অর্জন করেছে।
এই বৈঠকের আগেই অস্ট্রেলিয়ার লাইনাস রেয়ার আর্থসসহ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারমূল্য বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর কয়েক বছর আগে লাইনাসকে একটি চুক্তি দিয়েছিল, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি টেক্সাসে একটি প্রকল্পে কাজ করছে।
হোয়াইট হাউস প্রকাশিত ফ্রেমওয়ার্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি, যা ইঙ্গিত দেয় আলোচনাটি বেশ সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে। অস্ট্রেলিয়া গুরুত্বপূর্ণ খনিজের বড় উৎস হলেও দেশটি এখনো চীনের ওপর নির্ভরশীল, কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো মূলত চীনের হাতেই রয়েছে—যেমনটা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও দেখা যায়।
বিরল মৃত্তিকা ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ বাড়াতে নতুন এক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। বিরল খনিজের বাজারে চীনের একক নিয়ন্ত্রণ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের কৌশলের অংশ হিসেবেই এই চুক্তি করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে—অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানিয়েছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ‘রেডি-টু-গো’ প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের পথ খুলবে, যা অস্ট্রেলিয়ার খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সক্ষমতা আরও বাড়াবে।
চুক্তির আওতায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া যৌথভাবে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে ফ্রেমওয়ার্কে উল্লেখ করা হয়েছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকেই দেশ দুটি এই খনিজ সহযোগিতা নিয়ে কাজ করে আসছে। তবে আলবানিজ বলেছেন, এই নতুন চুক্তি সম্পর্ক ‘আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত রোববার ‘অকাস’ নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ সাবমেরিন প্রকল্প নিয়েও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এটা পুরো গতিতেই এগোচ্ছে।’ এর আগে চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন এই প্রকল্প পর্যালোচনার ঘোষণা দিয়েছিল, যাতে দেখা হয় যে—এটি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না। এতে আশঙ্কা দেখা দেয়, অস্ট্রেলিয়া হয়তো পুরোনো সাবমেরিন বহর প্রতিস্থাপনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিন পাবে না। তবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘না, তারা সাবমেরিনগুলো পাচ্ছে।’
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বিরল ধাতু আহরণের ৭০ শতাংশ এবং এসব ধাতুর প্রক্রিয়াজাতকরণের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে চীন। এই ধাতুগুলো প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কম্পিউটার চিপ ও গাড়িতেও ব্যবহৃত হয়। চীনের এই প্রভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো অনেকাংশে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এদিকে চীন যখন নতুন মার্কিন শুল্কের জবাবে সরবরাহ সীমিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন এই নির্ভরতা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ঘোষণার পর মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার বিরল ধাতু খনন কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য বেড়ে যায়। পার্থভিত্তিক আরাফুরা রেয়ার আর্থসের শেয়ার প্রায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। অপর একটি বড় প্রতিষ্ঠান ইলুকা রিসোর্সেসের শেয়ার বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি।
আলবানিজ বলেছেন, চুক্তির লক্ষ্য তিন ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগ দ্রুত করা, যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগও থাকবে। দুটি দেশ মূল্য নির্ধারণ, অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং খনিজ খাতে কোম্পানি ও প্রকল্প বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি পর্যালোচনার নিয়ম নিয়েও একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র আলাদাভাবে জানিয়েছে, তারা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় বছরে ১০০ টন ক্ষমতার উন্নত গ্যালিয়াম রিফাইনারি নির্মাণে বিনিয়োগ করবে এবং এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ প্রকল্পগুলোতে।
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের এমপি ম্যাটেরিয়ালস, কানাডার ট্রিলজি মেটালস ও লিথিয়াম আমেরিকাসের মতো কোম্পানিতে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, যেগুলোর প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রেই চলছে। এই বিনিয়োগের বিনিময়ে প্রশাসন ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশীদারত্বও অর্জন করেছে।
এই বৈঠকের আগেই অস্ট্রেলিয়ার লাইনাস রেয়ার আর্থসসহ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারমূল্য বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর কয়েক বছর আগে লাইনাসকে একটি চুক্তি দিয়েছিল, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি টেক্সাসে একটি প্রকল্পে কাজ করছে।
হোয়াইট হাউস প্রকাশিত ফ্রেমওয়ার্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি, যা ইঙ্গিত দেয় আলোচনাটি বেশ সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে। অস্ট্রেলিয়া গুরুত্বপূর্ণ খনিজের বড় উৎস হলেও দেশটি এখনো চীনের ওপর নির্ভরশীল, কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো মূলত চীনের হাতেই রয়েছে—যেমনটা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও দেখা যায়।
১৯৮৯ সালের ২৭ নভেম্বর, সোমবার। এক শিক্ষক গনজালো রোজাসকে যখন ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে এলেন, তখন তিনি কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটার একটি স্কুলে পড়েন। ছোট্ট রোজাসের জন্য অপেক্ষা করছিল এক হৃদয়বিদারক খবর—তার বাবা সিনিয়র গনজালো রোজাস বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর পরবর্তী বৈঠক হবে হাঙ্গেরিতে। বৈঠকের আয়োজক হাঙ্গেরির রুশপন্থী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ইউরোপজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার...
৬ মিনিট আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় নতুন বলরুম নির্মাণের জন্য হোয়াইট হাউসের পূর্ব দিকের অংশ (ইস্ট উইং) ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক এক মার্কিন আইনপ্রণেতা তো এটিকে ‘স্রেফ ধ্বংসযজ্ঞ’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগেদক্ষিণ কোরিয়ার এক তরুণী তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্টেই আগুন লাগিয়ে ফেলেছেন। ভয়ংকর এই আগুনে প্রাণ গেছে তাঁরই এক প্রতিবেশীর। ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ওসান শহরে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
দক্ষিণ কোরিয়ার এক তরুণী তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে আগুন লাগিয়ে ফেলেছেন। ভয়ংকর এই আগুনে প্রাণ গেছে তাঁরই এক প্রতিবেশীর। ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ওসান শহরে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ওই তরুণী গত সোমবার বিকেলে লাইটার আর দাহ্য স্প্রে একসঙ্গে ব্যবহার করে তেলাপোকা পোড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। অর্থাৎ তিনি নিজের ঘরেই বানিয়েছিলেন একধরনের অস্থায়ী ফ্লেমথ্রোয়ার। আগেও নাকি এমনভাবে তেলাপোকা মারার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার ভাগ্য সহায় হয়নি। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ধরে যায় তাঁর ঘরের আসবাবে, তারপর তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো অ্যাপার্টমেন্টে।
দমকল বিভাগ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তবে ততক্ষণে আগুনের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। আতঙ্কে বাসিন্দারা ছোটাছুটি শুরু করেন। ভবনের পঞ্চম তলায় থাকা এক চীনা দম্পতি প্রথমে জানালা খুলে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। তাঁরা তাদের দুই মাস বয়সী শিশুটিকে পাশের ভবনের এক প্রতিবেশীর হাতে জানালা দিয়ে তুলে দিতে সক্ষম হন। এরপর নিজেরাও পালানোর চেষ্টা করেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ধোঁয়ায় ভরে যাওয়ায় সিঁড়ি দিয়ে নামার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তাই তাঁরা জানালা দিয়েই পাশের ভবনে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্বামী কোনোভাবে পাশের ভবনের দেয়াল ধরে উঠতে সক্ষম হলেও তাঁর স্ত্রী হাত ফসকে নিচে পড়ে যান। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা যান ওই নারী।
মারা যাওয়া ওই নারী ছিলেন ৩০ বছর বয়সী চীনা নাগরিক। তিনি স্বামী ও নবজাতক শিশুসহ ওসান শহরের ওই ভবনে বসবাস করতেন। ওসান পুলিশ জানিয়েছে, আগুন লাগানোর ঘটনায় ২০ বছরের বেশি বয়সী ওই তরুণীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে অসাবধানতাবশত আগুন লাগানো এবং তাতে মৃত্যুর কারণ হওয়ার অভিযোগ আনা হতে পারে।
আগুন লাগার পর ভবনের নিচতলায় থাকা দোকানগুলোতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিচতলায় বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক দোকান এবং ওপরের তলাগুলোতে ৩২টি ফ্ল্যাট রয়েছে। দমকলের সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় নেয়। ততক্ষণে ভবনের ভেতরের অন্তত আটজন বাসিন্দা ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ওই তরুণী লাইটার ও স্প্রে একসঙ্গে ব্যবহার করে তেলাপোকা মারার চেষ্টায় এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে লাইটার, স্প্রে এবং দাহ্য পদার্থের বেশ কিছু অবশিষ্ট অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ফ্লেমথ্রোয়ার’ বা আগুন নিক্ষেপ যন্ত্র দিয়ে তেলাপোকা মারার ভিডিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই এই ভিডিও দেখে একইভাবে পোকামাকড় মারার চেষ্টা করছেন। অথচ এই কায়দায় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায়ও এক ব্যক্তি কীটনাশক স্প্রে ও আগুনের মিশ্রণে বানানো ফ্লেমথ্রোয়ার দিয়ে তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের রান্নাঘর জ্বালিয়ে ফেলেছিলেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার এক তরুণী তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে আগুন লাগিয়ে ফেলেছেন। ভয়ংকর এই আগুনে প্রাণ গেছে তাঁরই এক প্রতিবেশীর। ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ওসান শহরে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ওই তরুণী গত সোমবার বিকেলে লাইটার আর দাহ্য স্প্রে একসঙ্গে ব্যবহার করে তেলাপোকা পোড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। অর্থাৎ তিনি নিজের ঘরেই বানিয়েছিলেন একধরনের অস্থায়ী ফ্লেমথ্রোয়ার। আগেও নাকি এমনভাবে তেলাপোকা মারার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার ভাগ্য সহায় হয়নি। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ধরে যায় তাঁর ঘরের আসবাবে, তারপর তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো অ্যাপার্টমেন্টে।
দমকল বিভাগ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তবে ততক্ষণে আগুনের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। আতঙ্কে বাসিন্দারা ছোটাছুটি শুরু করেন। ভবনের পঞ্চম তলায় থাকা এক চীনা দম্পতি প্রথমে জানালা খুলে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। তাঁরা তাদের দুই মাস বয়সী শিশুটিকে পাশের ভবনের এক প্রতিবেশীর হাতে জানালা দিয়ে তুলে দিতে সক্ষম হন। এরপর নিজেরাও পালানোর চেষ্টা করেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ধোঁয়ায় ভরে যাওয়ায় সিঁড়ি দিয়ে নামার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তাই তাঁরা জানালা দিয়েই পাশের ভবনে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্বামী কোনোভাবে পাশের ভবনের দেয়াল ধরে উঠতে সক্ষম হলেও তাঁর স্ত্রী হাত ফসকে নিচে পড়ে যান। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা যান ওই নারী।
মারা যাওয়া ওই নারী ছিলেন ৩০ বছর বয়সী চীনা নাগরিক। তিনি স্বামী ও নবজাতক শিশুসহ ওসান শহরের ওই ভবনে বসবাস করতেন। ওসান পুলিশ জানিয়েছে, আগুন লাগানোর ঘটনায় ২০ বছরের বেশি বয়সী ওই তরুণীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে অসাবধানতাবশত আগুন লাগানো এবং তাতে মৃত্যুর কারণ হওয়ার অভিযোগ আনা হতে পারে।
আগুন লাগার পর ভবনের নিচতলায় থাকা দোকানগুলোতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিচতলায় বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক দোকান এবং ওপরের তলাগুলোতে ৩২টি ফ্ল্যাট রয়েছে। দমকলের সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় নেয়। ততক্ষণে ভবনের ভেতরের অন্তত আটজন বাসিন্দা ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ওই তরুণী লাইটার ও স্প্রে একসঙ্গে ব্যবহার করে তেলাপোকা মারার চেষ্টায় এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে লাইটার, স্প্রে এবং দাহ্য পদার্থের বেশ কিছু অবশিষ্ট অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ফ্লেমথ্রোয়ার’ বা আগুন নিক্ষেপ যন্ত্র দিয়ে তেলাপোকা মারার ভিডিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই এই ভিডিও দেখে একইভাবে পোকামাকড় মারার চেষ্টা করছেন। অথচ এই কায়দায় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায়ও এক ব্যক্তি কীটনাশক স্প্রে ও আগুনের মিশ্রণে বানানো ফ্লেমথ্রোয়ার দিয়ে তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের রান্নাঘর জ্বালিয়ে ফেলেছিলেন।
১৯৮৯ সালের ২৭ নভেম্বর, সোমবার। এক শিক্ষক গনজালো রোজাসকে যখন ক্লাস থেকে ডেকে নিয়ে এলেন, তখন তিনি কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটার একটি স্কুলে পড়েন। ছোট্ট রোজাসের জন্য অপেক্ষা করছিল এক হৃদয়বিদারক খবর—তার বাবা সিনিয়র গনজালো রোজাস বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর পরবর্তী বৈঠক হবে হাঙ্গেরিতে। বৈঠকের আয়োজক হাঙ্গেরির রুশপন্থী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ইউরোপজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার...
৬ মিনিট আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় নতুন বলরুম নির্মাণের জন্য হোয়াইট হাউসের পূর্ব দিকের অংশ (ইস্ট উইং) ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক এক মার্কিন আইনপ্রণেতা তো এটিকে ‘স্রেফ ধ্বংসযজ্ঞ’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগেবিরল মৃত্তিকা ধাতু ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ বাড়াতে নতুন এক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। বিরল খনিজের বাজারে চীনের একক নিয়ন্ত্রণ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের কৌশলের অংশ হিসেবেই এই চুক্তি করেছে।
২ ঘণ্টা আগে