Ajker Patrika

সব রাজ্যে ডিটেনশন সেন্টার গড়ার নির্দেশ অমিত শাহর

কলকাতা প্রতিনিধি  
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই

অমিত শাহর নেতৃত্বে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে একটি করে ডিটেনশন সেন্টার গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছে। তবে রাজনৈতিক মহলে অভিযোগ উঠেছে, অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশিদের ধরার নাম করে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশে হিন্দুত্ববাদ কায়েম করতে চাইছে।

সম্প্রতি অমিত শাহর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রণালয় একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, সন্দেহভাজন বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর আগে এ ডিটেনশন শিবিরে আটকে রাখা হবে। একই সঙ্গে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালকে আরও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা যেকোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরেই ডিটেনশন সেন্টারে পাঠাতে পারে। যদি কেউ দাবি করেন তিনি বিদেশি নন, কিন্তু তাঁর পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে না পারেন কিংবা আদালত থেকে জামিন নিতে না পারেন, তবে তাঁকেও এ ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে। অর্থাৎ নাগরিকত্বের নথি নিয়ে সামান্য অস্পষ্টতা থাকলেই মানুষকে বন্দী করা হতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিদেশিদের ভারতের কোনো পর্বতশৃঙ্গে ওঠার জন্য কেন্দ্রের অনুমোদন নিতে হবে। গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত বিদেশিদের জন্য ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এ পদক্ষেপগুলো অভিবাসন ও বিদেশি আইন, ২০২৫-এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর করা হচ্ছে। সরকারের দাবি, অবৈধভাবে বসবাসকারীদের নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ফেরত পাঠানোই এর মূল উদ্দেশ্য।

কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, এ একপ্রকার রাজনৈতিক চাল। অবৈধ নাগরিক চিহ্নিতকরণের নামে সাধারণ মানুষ, বিশেষত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে ভয় ও আতঙ্কে রাখা হচ্ছে। বিজেপি যে দীর্ঘদিন ধরে নাগরিকত্ব ইস্যুকে সামনে এনে হিন্দুত্ববাদের রাজনীতি করছে, এ পদক্ষেপকে সে কৌশলের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষকে ফেরত পাঠানোও হচ্ছে। এর ফলে বাংলাভাষী মানুষকে ভিনরাজ্যে হেনস্তার অভিযোগও উঠছে। এ নিয়ে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাভাষী ও সংখ্যালঘুদের টার্গেট করছে।

অন্যদিকে বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে ভোটার তালিকা নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন জানিয়েছে, এসআইআর শেষ হলে নতুন প্রযুক্তিভিত্তিক ভোটার পরিচয়পত্র ভোটারদের হাতে দেওয়া হবে। ১ আগস্ট প্রকাশিত খসড়া তালিকা অনুযায়ী, বিহারে ভোটার সংখ্যা ৭ দশমিক ২৪ কোটি। নতুন কার্ডের ফলে ভোটার তালিকা হবে আরও সঠিক ও নির্ভুল, ভুয়া ভোটার ঠেকানো যাবে সহজে। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নাগরিকত্ব আর পরিচয়পত্র নিয়ে এ সময়ে জোর দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে বিজেপির কৌশল। একদিকে ডিটেনশন সেন্টার তৈরি, অন্যদিকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার ভয়—সব মিলিয়ে দেশজুড়ে এক অস্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত