Ajker Patrika

আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হলে স্ত্রী ভরণপোষণ চাইতে পারবেন না: দিল্লি হাইকোর্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং বিচারপতি হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্কর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত
বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং বিচারপতি হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্কর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী বা স্বনির্ভর হলে ভরণপোষণ বা অ্যালিমনি না দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। আদালত পর্যবেক্ষণ করে মন্তব্য করেছে, স্থায়ী ভরণপোষণ বা পার্মানেন্ট অ্যালিমনি মূলত সামাজিক ন্যায়বিচারের একটি ব্যবস্থা। আর্থিকভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের মধ্যে আর্থিক সমতা আনার বা বিত্তশালী হওয়ার হাতিয়ার নয়।

ভারতের আইনি সংবাদ ওয়েবসাইট বার অ্যান্ড বেঞ্চ-এর প্রতিবেদনের বরাতে এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।

বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং বিচারপতি হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্কর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বলেছেন, আইন অনুযায়ী ভরণপোষণ দাবি করা ব্যক্তিকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে তিনি সত্যিই আর্থিক সহায়তা পাওয়ার মতো অবস্থায় আছেন।

রায়ে আরও বলা হয়, ‘হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টের ধারা ২৫ অনুযায়ী বিচারিক ক্ষমতা এমনভাবে ব্যবহার করা যাবে না যাতে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর আবেদনকারীকে অ্যালিমনি দেওয়া হয়। এই ক্ষমতা অবশ্যই সঠিকভাবে এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে। উভয় পক্ষের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করে এবং আবেদনকারীর প্রকৃত আর্থিক দুর্বলতার প্রমাণ না থাকলে তা দেওয়া যাবে না।’

একটি ভরণপোষণের দাবি খারিজ এবং বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দিয়ে ফ্যামিলি কোর্টের আদেশ পুনর্বহাল রেখে এই পর্যবেক্ষণ জানান দিল্লির হাইকোর্ট।

স্বামী আইনজীবী এবং স্ত্রী ভারতীয় রেলওয়ে ট্রাফিক সার্ভিস কর্মকর্তা। গত ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে করেন তাঁরা। এর আগে তাঁদের দুজনেরই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল। এই বিয়ের মাত্র ১৪ মাসের মধ্যেই আলাদা হয়ে যান তাঁরা।

স্বামী অভিযোগ করেন, স্ত্রী তাঁকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন। অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেছেন, অপমানজনক মেসেজ পাঠান, দাম্পত্য অধিকার অস্বীকার এবং পেশাগত ও সামাজিকভাবে অপদস্থ করেছেন।

অন্যদিকে স্ত্রী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের পাল্টা অভিযোগ আনেন।

ফ্যামিলি কোর্ট তাদের রায়ে বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করে এবং উল্লেখ করে যে স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদে রাজি হওয়ার শর্ত হিসেবে ৫০ লাখ রুপি আর্থিক সমঝোতা দাবি করেছিলেন। এই দাবি তিনি নিজেই হলফনামা ও জেরা চলাকালীন স্বীকার করেছেন।

দিল্লি হাইকোর্টও এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত হন এবং বলেন এতে হস্তক্ষেপের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।

বেঞ্চ বলেন, ‘ফ্যামিলি কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে ভিত্তিহীন বা অযৌক্তিক বলা যায় না। আপিলকারীর (স্ত্রীর) এই মনোভাবের একটি সুস্পষ্ট আর্থিক দিক ছিল। বরং আদালতে উপস্থাপিত প্রমাণের ভিত্তিতে এটি ছিল একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।’

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, স্ত্রী তাঁর স্বামী এবং তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর ভাষা’ ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি স্বামীকে ‘অবৈধ সন্তান’ বলে আখ্যা দেন, যা আদালতের মতে মানসিক নির্যাতনের শামিল।

শেষ পর্যন্ত আদালত স্থায়ী ভরণপোষণ বা পার্মানেন্ট অ্যালিমনি দেওয়ার আবেদন নাকচ করে দেয়। কারণ হিসেবে আদালত উল্লেখ করে, ওই নারী একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা। তিনি ভালো বেতন পান এবং আর্থিকভাবে সাবলম্বী।

আপিল খারিজ করে বেঞ্চ আরও বলেন, ‘তাঁদের দাম্পত্য জীবন ছিল স্বল্পকালীন, সন্তান নেই, আপিলকারীর (স্ত্রীর) উল্লেখযোগ্য ও স্বাধীন আয় রয়েছে এবং আর্থিক সহায়তার প্রকৃত প্রয়োজনের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই। এসব বিষয় বিবেচনা করলে স্থায়ী ভরণপোষণ পাওয়ার দাবি টেকে না। তাই আমরা ফ্যামিলি কোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপের কোনো কারণ দেখি না এবং ভরণপোষণের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হলো।’

ভারতে উচ্চমূল্যের ভরণপোষণ দাবি ক্রমেই বাড়ছে। আদালতগুলোও এসব দাবি কঠোরভাবে পর্যালোচনা করছে।

গত জুলাইয়ে মুম্বাইয়ে একটি বাড়ি, ১২ কোটি টাকা ভরণপোষণ এবং একটি বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ গাড়ি চেয়ে এক নারী আদালতে আবেদন করেন। সে সময় তৎকালীন ভারতের প্রধান বিচারপতি বি. আর. গাভাই মন্তব্য করেন, ওই নারী ‘উচ্চশিক্ষিত’ এবং নিজের জীবিকা অর্জনের সক্ষমতা রাখেন।

তিনি বলেন, ‘আপ ইতনা পঢ়ি লিখি হ্যায়। আপকো খুদকো মাংনা নেহি চাহিয়ে অউর খুদকো কামা কে খানা চাহিয়ে।’ অর্থাৎ ‘আপনি এতটা শিক্ষিত। আপনাকে কারও কাছ থেকে চাইতে হবে কেন, আপনি নিজেই তো উপার্জন করে চলতে পারেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে ৪২ দেশের নাগরিকদের দিতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার ৫ বছরের রেকর্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৩
ছবি: এএফপি
ছবি: এএফপি

মার্কিন কাস্টম অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন ডিপার্টমেন্ট বা শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা দপ্তর (সিবিপি) গতকাল মঙ্গলবার একটি প্রস্তাব পেশ করেছে। প্রস্তাব অনুসারে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশ থেকে আসা পর্যটকদের অচিরেই হয়তো বিগত পাঁচ বছর পর্যন্ত তাদের সামাজিক মাধ্যমের ইতিহাস খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, এই পরিবর্তনের জেরে সেই সব পর্যটকেরা প্রভাবিত হবেন, যারা ভিসা মওকুফ কর্মসূচির যোগ্য। এই কর্মসূচি অনুযায়ী ৪২টি দেশের নাগরিকেরা ইলেকট্রনিক ভ্রমণ অনুমোদন পেলে ভিসা ছাড়াই ৯০ দিন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করতে পারেন।

ফেডারেল রেজিস্ট্রারে মঙ্গলবার পেশ করা একটি নথিতে সিবিপি জানিয়েছে, তারা আবেদনকারীদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্যের একটি লম্বা তালিকা চাইবে, যার মধ্যে থাকবে সামাজিকমাধ্যম, গত দশ বছরজুড়ে ব্যবহার করা ই–মেইল ঠিকানা এবং বাবা-মা, জীবনসঙ্গী, ভাই-বোন ও সন্তানদের নাম, জন্মতারিখ, বাসস্থান ও জন্মস্থান।

বর্তমানে ভিসা মওকুফ পাওয়া দেশগুলোর আবেদনকারীদের ইলেকট্রনিক সিস্টেম ফর ট্রাভেল অথোরাইজেশন কর্মসূচিতে নাম নথিভুক্ত করতে হয়। তাঁরা ৪০ ডলার দিয়ে একটি ই-মেইল ঠিকানা, বাড়ির ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং জরুরি যোগাযোগের তথ্য জমা দেন। এই অনুমোদনের মেয়াদ থাকে দুই বছর।

সিবিপির এই পদক্ষেপ মার্কিন সরকারের পূর্বের অনুরূপ কার্যক্রমের মতোই। সরকার ইতিমধ্যে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য এইচ১–বি ভিসা এবং শিক্ষার্থী ও গবেষক ভিসার আবেদনকারীদের জন্য সামাজিকমাধ্যম পর্যালোচনার ব্যবস্থা চালু করেছে। এ ছাড়া সরকারের একটি নতুন ২৫০ ডলারের ভিসা ইনটিগ্রিটি ফি সংগ্রহের পরিকল্পনা আছে, যা অনেক ভ্রমণকারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে, যদিও ভিসা মওকুফ পাওয়া দেশের ভ্রমণকারীরা সেই ফি থেকে ছাড় পাবেন।

ভিসা ইনটিগ্রিটি ফি নিয়ে ট্রাভেল বা পর্যটন শিল্প আপত্তি জানিয়েছে। গত নভেম্বরে ২০ টিরও বেশি পর্যটন ও ভ্রমণ ব্যবসার একটি জোট বিরোধিতা করে একটি চিঠি স্বাক্ষর করে। তাঁদের উদ্বেগের কারণ, এই ফি আরোপের ফলে আগামী বছরের বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইচ্ছুক কোটি কোটি আন্তর্জাতিক পর্যটককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করবে।

এক পর্যটন কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রেখে কথা বলেছেন, সিবিপি এই পরিকল্পনা নিয়ে শিল্পের অংশীজনদের কিছু জানায়নি। তিনি একে যাত্রী যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এক ‘গুরুত্বপূর্ণ বাড়াবাড়ি’ বলে অভিহিত করেছেন। নোটিশে সিবিপি জানিয়েছে যে, তারা এই প্রস্তাবের ওপর ৬০ দিনের জন্য জনসাধারণের মন্তব্য গ্রহণ করবে।

যদি এই পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়, তবে সিবিপি কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসের মধ্যে ধাপে ধাপে পরিবর্তনগুলি কার্যকর করতে পারে, এমনটাই জানিয়েছে ইমিগ্রেশন আইন সংস্থা ফ্রাগোমেন (Fragomen) . ফ্রাগোমেন-এর অংশীদার বো কুপার সরকারের সামাজিক মাধ্যম পর্যালোচনার নতুন এই পদ্ধতিকে ‘প্যারাডাইম শিফট বা ধারণার আমূল পরিবর্তন’ বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ এর আগে সংস্থাগুলি নির্দিষ্ট তথ্য, যেমন অপরাধমূলক কার্যকলাপ, যাচাইয়ের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করত।

কুপার বলেন, ‘নতুন পদ্ধতিতে অনলাইন আলাপ-আলোচনা দেখা হবে এবং কী ধরনের কথা বলা হয়েছে সে বিষয়ে নিজস্ব বিবেচনা ও নীতির ভিত্তিতে ভ্রমণ বাতিল করা হবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘পর্যটন সংখ্যা কেমন থাকে, তা দেখতে বেশ আগ্রহ থাকবে।’

ডিজিটাল অধিকার গোষ্ঠী ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্টাফ অ্যাটর্নি সোফিয়া কোপ বিবৃতিতে বলেন, সামাজিক মাধ্যমের বাধ্যতামূলক প্রকাশ ও নজরদারি ‘নাগরিক স্বাধীনতার ক্ষতিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদী এবং অন্যান্য বাজে লোককে খুঁজে বার করতে এটা কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়নি। তবে এটি নিরপরাধ ভ্রমণকারী এবং তাদের আমেরিকান পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের বাক্‌স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করেছে এবং তাদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছে।’

সিবিপি এই বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া দেয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওর মুখ ও ঠোঁট সুন্দর, মেশিনগানের মতো—প্রেস সেক্রেটারি লেভিট সম্পর্কে ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাঁর প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটের ‘সুন্দর মুখ’ আর ‘ঠোঁট’-এর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। এক অর্থনৈতিক কর্মসূচির প্রচারের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সেখানেই এহেন মন্তব্য করেন ট্রাম্প। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

খবরে বলা হয়েছে, পেনসিলভানিয়ায় এক জনসভায় ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনের অর্থনৈতিক সফলতার কথা বলছিলেন। তখনই মূল বিষয় থেকে সরে গিয়ে তাঁর ২৮ বছর বয়সী প্রেস সেক্রেটারি কত ‘চমৎকার’ তা নিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা আমাদের সুপারস্টার ক্যারোলিনকে পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। সে কি দারুণ না? ক্যারোলিন কি অসাধারণ?’ উল্লসিত জনতাকে তিনি প্রশ্ন করেন।

এরপর তিনি লেভিটের শারীরিক সৌন্দর্য ও আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করতে শুরু করেন। লেভিট তাঁর চেয়ে ৫০ বছরেরও বেশি ছোট। ট্রাম্প বলেন, ‘যখন সে ফক্সের টেলিভিশন চ্যানেলে যায়, সেখানে সে দাপিয়ে বেড়ায়, দাপিয়ে বেড়ায়...সে যখন মঞ্চে ওঠে তাঁর ওই সুন্দর মুখ আর সেই ঠোঁট নিয়ে, যা থামে না, যেন একটা ছোট্ট মেশিনগান।’

ট্রাম্প বলেন, ‘তাঁর কোনো ভয়ডর নেই...কারণ আমাদের নীতি সঠিক। আমাদের এখানে নারীদের খেলায় পুরুষেরা অংশ নেয় না...আমাদের সবাইকে রূপান্তরকামী হতে বাধ্য করতে হয় না, আর আমাদের উন্মুক্ত সীমান্ত নীতিও নেই যেখান থেকে গোটা বিশ্ব—জেলখানা ও অন্য সব জায়গা থেকে—আমাদের দেশে ঢুকতে পারবে, তাই ওর কাজটা একটু সহজ। আমি তো অন্য পক্ষের প্রেস সেক্রেটারি হতে চাইতাম না।’

এই রিপাবলিকান নেতা আগস্টে নিউজম্যাক্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও লেভিটকে নিয়ে একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন। তিনি সে সময় বলেছিলেন, ‘ওই মুখটা, ওই মস্তিষ্কটা, ওই ঠোঁট, যেভাবে চলে। মনে হয় যেন সে একটা মেশিনগান। আমার মনে হয় না ক্যারোলিনের চেয়ে ভালো প্রেস সেক্রেটারি আর কারও হয়েছে।’

লেভিট ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসনে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সহকারী প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করেছিলেন। নিউ হ্যাম্পশায়ারের বাসিন্দা লেভিট ৬০ বছর বয়সী রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার নিকোলাস রিক্কিও’র সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ এবং তাঁদের নিকো নামে একটি পুত্র সন্তান আছে। কংগ্রেস নির্বাচনে জিততে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি জানুয়ারি মাসে আবারও হোয়াইট হাউসে ফিরে আসেন এবং ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রেস সেক্রেটারি হন। ট্রাম্পের পঞ্চম প্রেস সেক্রেটারি তিনি এবং তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম প্রেস সেক্রেটারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোশ্যাল মিডিয়া খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র, ভারতীয়দের এইচ-১বি ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সোশ্যাল মিডিয়া খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র, ভারতীয়দের এইচ-১বি ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত

এইচ-১বি ভিসা প্রার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্ট যাচাই-বাছাই করবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই নতুন সোশ্যাল মিডিয়া নীতিতে আটকে গেল ভারতের আবেদনকারীদের ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা দিয়েছে ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস। সেখানে বলা হয়, ভিসা আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকারের তারিখ আগামী বছরে পেছানো হয়েছে।

দূতাবাসের বার্তায় আরও বলা হয়, যদি আপনি আপনার ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে ইমেইল পেয়ে থাকেন, তবে মিশন ইন্ডিয়া আপনার নতুন অ্যাপয়েন্টমেন্ট তারিখে নিতে সহায়তা করতে আগ্রহী।’

বার্তায় সতর্ক করে দূতাবাস আরও জানায়, পুনর্নির্ধারণের নোটিফিকেশন পাওয়ার পরও আগের নির্ধারিত তারিখে উপস্থিত হলে দূতাবাস বা কনস্যুলেটে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শেষভাগে যেসব সাক্ষাৎকার নির্ধারিত ছিল, সেগুলো আগামী বছরের মার্চে নেওয়া হচ্ছে। তবে ঠিক কতগুলো অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত হয়েছে, তা জানা যায়নি।

শীর্ষ ব্যবসায়িক অভিবাসন আইন প্রতিষ্ঠানের অ্যাটর্নি স্টিভেন ব্রাউন বলেন, ‘মিশন ইন্ডিয়া যা নিশ্চিত করেছে, তা-ই আমরা শুনছিলাম। সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ের কারণে তারা আগামী কয়েক সপ্তাহের বেশ কিছু অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করে মার্চে পুনর্নির্ধারণ করেছে।’

এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারী ও এইচ-৪ নির্ভরশীলদের জন্য স্ক্রিনিং ও যাচাই–বাছাইয়ের পরিধি বাড়িয়েছে মার্কিন সরকার। নতুন নির্দেশনায় আবেদনকারীদের সব সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের প্রাইভেসি সেটিং ‘পাবলিক’ রাখতে বলা হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য বা জাতীয় নিরাপত্তা কিংবা জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারেন কি না তা চিহ্নিত করতে ১৫ ডিসেম্বর থেকে কর্মকর্তারা তাঁদের অনলাইন উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। তবে শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের আবেদনকারীরা আগে থেকেই এমন পর্যবেক্ষণের আওতায় ছিলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, প্রতিটি ভিসার ক্ষেত্রেই জাতীয় নিরাপত্তার কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের অন্যতম প্রধান পথ এইচ-১বি ভিসা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নিয়মকানুনের সর্বশেষ আঘাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি। গত সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন এইচ-১বি ভিসার ওপর একবারের জন্য ১ লাখ ডলারের অতিরিক্ত ফি আরোপ করেন। এর কিছুদিন পর, আফগান বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তির গুলিতে ন্যাশনাল গার্ড সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র ১৯টি দেশকে ‘উদ্বেগজনক দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করে আবেদনকারীদের গ্রিন কার্ড, মার্কিন নাগরিকত্ব ও অন্যান্য অভিবাসন প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনের আগেই চুক্তি চান ট্রাম্প, প্রস্তাব মানতে জেলেনস্কিকে আলটিমেটাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বলেছেন, বর্তমান রণক্ষেত্র অনুসারেই যুদ্ধবিরতিতে যেতে। ছবিতে, হালকা গোলাপী রঙে চিহ্নিত অঞ্চলটি রাশিয়া দখলে যাওয়া ইউক্রেনীয় অঞ্চল। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বলেছেন, বর্তমান রণক্ষেত্র অনুসারেই যুদ্ধবিরতিতে যেতে। ছবিতে, হালকা গোলাপী রঙে চিহ্নিত অঞ্চলটি রাশিয়া দখলে যাওয়া ইউক্রেনীয় অঞ্চল। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সময় বেঁধে দিয়েছেন, তাঁর প্রস্তাবিত শান্তিচুক্তি মেনে নিতে। কারণ, ট্রাম্প আগামী বড় দিন অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বরের আগেই একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে চান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার ফিন্যান্সিয়াল টাইমস নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তবে বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, মার্কিন আলোচকেরা ইউক্রেনের নেতা ভ্লাদিমির জেলেনস্কিকে শান্তি প্রস্তাবের জবাব দেওয়ার জন্য কয়েক দিন সময় দিয়েছেন। এই প্রস্তাবে কিয়েভকে কিছু অনির্দিষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিনিময়ে রাশিয়ার কাছে ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বড়দিনের আগেই একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা করছেন। খবরে বলা হয়েছে, জেলেনস্কি মার্কিন দূতদের বলেছেন—কিয়েভের ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য তাঁর সময়ের প্রয়োজন।

যদিও ট্রাম্প গত মাসে বলেছিলেন, তিনি থ্যাঙ্কসগিভিংয়ের মধ্যে একটি চুক্তি দেখতে চান, পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে তাঁর কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নভেম্বরে এক শান্তি পরিকল্পনা উত্থাপন করেন, যাতে ইউক্রেনকে দনবাসের সেই অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানানো হয়েছিল, যা বর্তমানে দেশটির নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি বিস্তৃত যুদ্ধবিরতির জন্য মস্কোর অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল।

সোমবার লন্ডন সফরকালে জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে ‘একটি বড় ধরনের বাধার’ মুখে ঠেলে দিচ্ছে, তবে তিনি যোগ করেছেন যে—ভূখণ্ড নিয়ে কোনো চুক্তি হয়নি। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, ইউক্রেন লড়াই না করে কোনো জমি ছেড়ে দিতে রাজি নয়।

রাশিয়ার সৈন্যরা ফ্রন্ট লাইনের বিভিন্ন অংশে দৃঢ়ভাবে অগ্রগতি অর্জন করে চলেছে, আর ইউক্রেনীয় কমান্ডাররা বলছেন—তাদের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র নেই এবং নতুন সৈন্যদের দিয়ে যুদ্ধের ক্ষতি পূরণ করতে তারা সংগ্রাম করছেন। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ক্রাসনোয়ার্মেইস্ক (পোকরোভস্ক) শহর মুক্তির ঘোষণা করে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দনবাসের এই শহরটিকে পরবর্তী আক্রমণের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ‘সেতুবন্ধন’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

এদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ক্রমেই নাকাল হয়ে পড়ছে। এই সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে সেনাবাহিনী থেকে সদস্যদের পলায়ন ও অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতি। সরকারি হিসাব অনুসারে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ সেনা অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত বা পলাতক; এবং সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

অক্টোবরে ইউক্রেনীয় কৌঁসুলিরা জানান, রাশিয়া ২০২২ সালে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার সেনা অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত রয়েছেন এবং প্রায় ৫৪ হাজার সেনা পলায়ন করেছেন। গত বছর থেকে এই সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতি ১ লাখ ৭৬ হাজার এবং পলায়নের ২৫ হাজার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত