Ajker Patrika

পরিচয় লুকিয়ে পাহাড়ে পাওয়া বিপুল সোনা জমা দিয়ে গেলেন দুই পর্বতারোহী

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২১ মে ২০২৫, ২০: ০৬
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

চেক প্রজাতন্ত্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ক্রকোনোশে পর্বতমালায় হাইকিং করতে গিয়ে রহস্যময় এক স্বর্ণভান্ডারের খোঁজ পেলেন দুই পর্বতারোহী। তাঁদের যাত্রাপথে পাহাড়ের পাথুরে দেয়ালের ফাঁক থেকে উঁকি দিচ্ছিল অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি একটি বাক্স। কৌতূহলবশত তাঁরা এটি খুলে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান।

বাক্সটির ভেতর পাওয়া গেছে ১০টি সোনার ব্রেসলেট, ১৭টি সিগারেট কেস, একটি আয়না ও চিরুনি এবং ৫৯৮টি স্বর্ণমুদ্রা। সব মিলিয়ে প্রায় ৩ কেজি ৭০০ গ্রাম সোনা। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী, এই সোনার মূল্য আনুমানিক ৩ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বেশি।

বুধবার সিএনএন জানিয়েছে, পর্বতারোহীরা তাঁদের পরিচয় গোপন রেখে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে খুঁজে পাওয়া স্বর্ণ হস্তান্তর করেন। পরে এগুলোকে হরাডেক ক্রালোভে শহরের ‘মিউজিয়াম অব ইস্টার্ন বোহেমিয়া’য় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান মিরোস্লাভ নোভাক জানিয়েছেন, তাঁরা একজন মুদ্রা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে প্রথমে যোগাযোগ করেন। এরপর পুরো ঘটনাটি বিশ্লেষণে নেমেছে প্রত্নতাত্ত্বিক দল।

নোভাক বলেন, ‘এই সম্পদ শত বছরের বেশি পুরোনো নয়। কারণ, একটি মুদ্রায় ১৯২১ সালের ছাপ পাওয়া গেছে। তবে কে বা কারা এই ধনসম্পদ এখানে লুকিয়েছিল, তা নিয়ে রয়েছে নানা জল্পনা। সবচেয়ে সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হলো, এটি হয়তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ঘটেছিল কিংবা ১৯৪৫ সালে জার্মানদের এই অঞ্চল ত্যাগের সময় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।’

রহস্যময় এই আবিষ্কার নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে নানা গুঞ্জন ও তত্ত্ব। অবাক করা বিষয় হলো, এত মূল্যবান সম্পদের ভেতরে একটিও স্থানীয় মুদ্রা নেই। এর অর্ধেকই বলকান অঞ্চলের এবং বাকিগুলো ফরাসি। সাধারণত বিশ শতকের চেক অঞ্চলে পাওয়া যায় জার্মান ও চেকোস্লোভাক মুদ্রা। কিন্তু এখানে সেগুলোর কোনো চিহ্ন পর্যন্ত নেই।

জনসাধারণের মধ্যে কেউ কেউ ধারণা করছেন, এটি হয়তো ওই অঞ্চলে বসবাসকারী কোনো ধনী পরিবারের জমা করা সম্পদ। হতে পারে এগুলো কুকস এস্টেটের মালিক স্বির্টস-স্পর্ক পরিবারের। আবার কেউ বলছেন, এটি হয়তো চেকোস্লোভাক লিজিওনারদের যুদ্ধলব্ধ সম্পদ।

এই ধরনের রত্ন খুঁজে পাওয়ার ঘটনা ওই অঞ্চলটিতে বিরল নয়। এক দশক আগেই দশ কিলোমিটার দূরের আরেকটি এলাকায় ১২ শতকের ২ হাজার ৭০০টি রৌপ্যমুদ্রা পাওয়া গিয়েছিল। ২০ শতকে এই অঞ্চল থেকে বহু মানুষ চলে যাওয়ায় এখানে বহু পরিত্যক্ত খামার আছে। এসব খামারে লুকিয়ে রাখা আরও সম্পদ থাকতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯২১ সালটি ছিল চেকোস্লোভাকিয়ার জন্য আর্থিক সংকটের সময়। সেই সময়ে কেউ ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার কথা ভেবে এই রত্নভান্ডার লুকিয়ে রাখতে পারেন। কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ মেরি হেইম্যান মনে করেন, ওই সময়টি ছিল সোভিয়েত-পোলিশ যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক দুরবস্থার যুগ। সীমান্ত অঞ্চল ও জাতিগতভাবে বিভক্ত এলাকাগুলোতে তখন নিরাপত্তাহীনতা বেশি ছিল।

মিউজিয়ামের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে এই সম্পদের ওপর আরও ধাতব বিশ্লেষণ করা হবে এবং পরে এগুলো সংরক্ষিত হবে মুদ্রা সংগ্রহশালায়। আসন্ন শরতে এই সম্পদ প্রদর্শনের জন্য একটি ক্ষুদ্র প্রদর্শনীর পরিকল্পনাও রয়েছে।

চেক আইনের অধীনে, এ ধরনের প্রত্নসম্পদ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক প্রশাসনের মালিকানায় আসে। তবে যেহেতু আবিষ্কারকারীরা সঠিকভাবে এটি জমা দিয়েছেন, তাঁরা এর মূল্য অনুসারে এককালীন পুরস্কার পেতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনা যাঁকে ঢাকায় ‘হত্যা করলেন’, তিনি ময়মনসিংহে জীবিত!

চরফ্যাশন থেকে গেটিসবার্গ কলেজ

জীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলায় সাক্ষীও দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

নগদে স্ত্রীর চাকরি, স্বার্থের সংঘাতে জড়ালেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক মুর্শেদ

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত