Ajker Patrika

সুনাক না মরডন্ট—কে হচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানা যেতে পারে আজই

আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২২, ১৯: ১৬
সুনাক না মরডন্ট—কে হচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানা যেতে পারে আজই

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তাই কনজারভেটিভ পার্টির দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে মূল দুই প্রার্থী এখন ঋষি সুনাক এবং পেনি মরডন্ট। দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় আজ দুপুর দুইটা (বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টা) নাগাদ দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম জানা যেতে পারে। 

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, আজই কনজারভেটিভ পার্টির দলীয় প্রধান এবং ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত না হলে আগামী শুক্রবার অবধি অপেক্ষা করতে হবে। স্থানীয় সময় আজ দুপুর ২টা নাগাদ যারা দলীয় প্রধান হতে চান তাদের পক্ষে দলীয় অন্তত ১০০ জন এমপির সমর্থনসহ আবেদন দাখিল করতে হবে। 

সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এরই মধ্যে প্রায় ১৬০ জন এমপির সমর্থন লাভ করেছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী পেনি মরডন্ট অনেক পিছিয়ে থেকে মাত্র ৩০ জন এমপির সমর্থন লাভ করেছেন। তবে বরিস জনসন দলীয় প্রধান হওয়ার তালিকা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় তাঁর অনুকূলে থাকা এমপিরা পেনি মরডন্টকে সমর্থন দিতে পারেন। বরিস জনসনের শাসনামলে দলের মধ্যে জনসনের কড়া সমালোচক ছিলেন পেনি। তারপরও বরিসের অনুকূলে থাকা এমপিরা পেনিকেই সমর্থন দিতে পারেন কারণ, তাদের অনেকেই মনে করেন সুনাকই বরিসের পতনের অন্যতম মূল কুশীলব।

পেনি মরডন্ট যদি ১০০ জন এমপির সমর্থন লাভে ব্যর্থ হন এবং ঋষি সুনাকের পক্ষে যদি ১৬০ জন এমপির সমর্থন বজায় থাকে তবে আজই ঘোষিত হতে পারে কনজারভেটিভ পার্টির নতুন দলীয় প্রধান এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন দলটির ১৯২২ সদস্যের কমিটির প্রধান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডি। এই কমিটিই দলটির সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে থাকে। 

আজই ঘোষিত হতে পারে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের নতুন বাসিন্দার নামপেনি মরডন্ট যদি কোনোভাবে ১০০ জন এমপির সমর্থন লাভ করেন তবে দলীয় প্রধান নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে গড়াবে। এই ধাপে দুই প্রার্থী দলীয় এমপিদের কাছে ভোট প্রার্থনা করবেন। আজ স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। 

যাই হোক, দলীয় এমপিদের ভোটের (সমর্থনের) ব্যবধান যতই বেশি হোক না কেন তা সারা দেশের কনজারভেটিভ পার্টির দলীয় সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে দলীয় প্রধান নির্বাচনে কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না। তবে, ব্যবধান যদি বিশাল হয় তবে কম সমর্থন পাওয়া প্রার্থীর জন্য তা অবশ্যই চাপ সৃষ্টি করবে। সে ক্ষেত্রে কম সমর্থন পাওয়া প্রার্থী যদি নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন তবে আজই নতুন দলীয় প্রধান নির্বাচিত হয়ে যাবেন। এর অন্যথা হলে দলীয় সদস্যদের ভোটই হবে চূড়ান্ত ধাপ। সে ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের নাগরিকত্ব বাতিল করল মাদাগাস্কার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ক্ষমতাচ্যুত মাদাগাস্কারের সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা। ছবি: সংগৃহীত
ক্ষমতাচ্যুত মাদাগাস্কারের সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা। ছবি: সংগৃহীত

গত সপ্তাহে মাদাগাস্কারে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা। এবার তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করেছে দায়িত্ব নেওয়া নতুন সরকার।

নতুন প্রধানমন্ত্রী হেরিনৎসালামা রাজাওনারিভেলো স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, স্থানীয় আইন অনুযায়ী, যারা বিদেশি নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন তাঁরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাদাগাস্কারের নাগরিকত্ব হারাবেন।

প্রায় এক দশক আগে ফরাসি নাগরিকত্ব লাভ করেন ৫১ বছর বয়সী রাজোয়েলিনা। এ কারণে ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কয়েক মাস আগে তিনি ফরাসি নাগরিকত্বের কথা প্রকাশ করেন। সন্তানদের ফ্রান্সে পড়াশোনার সুবিধার জন্য এই নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন বলে যুক্তি দেখান তিনি। সে সময় নির্বাচনে তাঁর প্রার্থিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে সেই দাবি উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি এবং জয়ী হন।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিদ্যুৎ ও পানির সংকট নিয়ে ‘জেন জি মাদা’ নামে তরুণদের ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজোয়েলিনা প্রথমে তাঁর জ্বালানি মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন, পরে পুরো মন্ত্রিসভাকেই ভেঙে দেন। কিন্তু তাতেও তাঁর পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলন থামেনি।

বিক্ষোভকারীরা আশা করেছিলেন, রাজোয়েলিনা পদত্যাগ করবেন, যাতে দেশটি একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে এগোতে পারে।

কিন্তু তিনি ক্ষমতা ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। শেষ পর্যন্ত কর্নেল মাইকেল রান্ড্রিয়ানিরিনার নেতৃত্বে সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশটির ক্ষমতা দখল করা হয়। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান রাজোয়েলিনা।

গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজোয়েলিনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, তিনি একটি ‘নিরাপদ স্থানে’ আছেন এবং দেশের নিয়ন্ত্রণ তাঁর হাতেই আছে। তখন গুঞ্জন ওঠে, তিনি ফরাসি একটি বিমানে পালিয়ে গেছেন। বর্তমানে দেশটির অধিকাংশ নাগরিকের বিশ্বাস, রাজোয়েলিনা দুবাইয়ে আত্মগোপনে আছেন।

এই ভিডিওর ঘণ্টাকয়েক পরেই পার্লামেন্ট তাঁকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেয়। এরপর সেনারা প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে হামলা চালিয়ে সিনেট, সাংবিধানিক আদালত ও জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেয়। কেবল জাতীয় সংসদকে রেখে অন্য সব প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত করা হয়।

বর্তমানে রান্ড্রিয়ানিরিনা শপথ গ্রহণ করেছেন এবং নতুন সরকার গঠন করেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশে নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে মাদাগাস্কার অভ্যুত্থানের ইতিহাসে ভরা। ২০০৯ সালে প্রেসিডেন্টবিরোধী আন্দোলনের পর সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাজোয়েলিনাকে ক্ষমতায় আনা হয়। তিনি তখন মাত্র ৩৩ বছর বয়সী এক সাবেক ডিজে। পরে সেনাবাহিনী গঠিত একটি ট্রানজিশনাল কাউন্সিল তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপ্রধান ঘোষণা করে। ২০১৮ সালে বিরোধীদলীয় প্রার্থীদের বর্জিত এক ‘নির্বাচনে’ তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় ‘অনন্ত যুদ্ধ শুরুর কৃত্রিম পরিস্থিতি’ তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাঁর এবং তাঁর দেশের বিরুদ্ধে এক ‘যুদ্ধ শুরুর কৃত্রিম পরিস্থিতি’ সাজাচ্ছে। তিনি এমন এক সময়ে এই কথা বললেন, যার আগে ওয়াশিংটন বিশ্বের সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজটি পাঠিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশের দিকে। একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভেনেজুয়েলায় ‘স্থল অভিযানের’ ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এই যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর বিষয়টি লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির বাড়ানোর মাধ্যমে বড় ধরনের উত্তেজনা উসকে দেওয়ার পরিস্থিতি নির্দেশ করছে। জল্পনা চলছে—ওয়াশিংটন হয়তো ভেনেজুয়েলার সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করছে।

স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে জাতীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মাদুরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ‘এক নতুন চিরস্থায়ী যুদ্ধ তৈরি করছে।’ আর ঠিক তার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ভেনেজুয়েলা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এই রণতরী একসঙ্গে ৯০টি বিমান ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার বহন করতে পারে।

ট্রাম্প কোনো প্রমাণ না দিয়েই মাদুরোকে ভেনেজুয়েলাভিত্তিক অপরাধচক্র ত্রেন দে আরাগুয়ার নেতা হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন। জবাবে মাদুরো বলেন, ‘তারা এক বিকৃত জাল গল্প বানাচ্ছে—একটি অশালীন, অপরাধপ্রবণ ও সম্পূর্ণ ভুয়া বর্ণনার গল্প। ভেনেজুয়েলা এমন একটি দেশ, যেখানে কোকা পাতা উৎপন্নই হয় না।’

ত্রেন দে আরাগুয়া মূলত ভেনেজুয়েলার একটি কারাগার থেকে গড়ে ওঠা অপরাধী চক্র। বৈশ্বিক মাদক পাচারে এই গ্যাংয়ের কোনো ভূমিকা নেই; বরং এটি খুন, চাঁদাবাজি ও মানবপাচারের মতো অপরাধে জড়িত।

গত বছর ভেনেজুয়েলায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে মাদুরোকে ব্যাপকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ তার পদত্যাগের দাবি তুলেছে। এদিকে, অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে। ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএ-এর অভিযান অনুমোদন করেছেন এবং দেশটিতে অবস্থিত কথিত মাদকচক্রের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান বিবেচনা করছেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী দশটি নৌকায় বোমা হামলা চালিয়ে ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে আটটি হামলা হয়েছে ক্যারিবীয় সাগরে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এসব নৌকা দেশে মাদক পাচারে জড়িত ছিল। এসব হামলায় অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদরিনো লোপেজ শনিবার জানান, দেশটি উপকূল রক্ষার জন্য সামরিক মহড়া পরিচালনা করছে, যাতে কোনো ‘গোপন অভিযান’ প্রতিহত করা যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা ৭২ ঘণ্টা আগে শুরু করা উপকূল প্রতিরক্ষা মহড়া চালাচ্ছি—যাতে আমরা শুধু বড় সামরিক হুমকি নয়, মাদক পাচার, সন্ত্রাসবাদ ও অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা তৈরির গোপন অভিযান থেকেও নিজেদের রক্ষা করতে পারি।’

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ভেনেজুয়েলার সৈন্যরা নয়টি উপকূলীয় রাজ্যে মোতায়েন রয়েছে এবং মাদুরোর বেসামরিক মিলিশিয়ার এক সদস্যের হাতে রুশ তৈরি ইগলা-এস কাঁধে বহনযোগ্য বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। পাদরিনো বলেন, ‘সিআইএ শুধু ভেনেজুয়েলায় নয়, সারা বিশ্বেই সক্রিয়। তারা যেকোনো অঞ্চল থেকে অসংখ্য সিআইএ-সম্পৃক্ত ইউনিট পাঠাতে পারে, কিন্তু তাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।’

গত আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র আটটি নৌযান, দশটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন মোতায়েন করেছে কথিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে। তবে কারাকাসের দাবি, এই কর্মকাণ্ড আসলে সরকার উৎখাতের ছদ্মবেশী পরিকল্পনা।

শনিবার মাদুরো জানান, তিনি বিরোধী রাজনীতিক লিওপোলদো লোপেজের নাগরিকত্ব বাতিল ও পাসপোর্ট জব্দের জন্য আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তাঁর অভিযোগ, লোপেজ দেশটিতে বিদেশি আগ্রাসনকে উৎসাহিত করছেন। ২০২০ সাল থেকে স্পেনে নির্বাসিত লোপেজ প্রকাশ্যে ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ পাঠানো এবং মাদকবাহী জাহাজে হামলার সমর্থন করেছেন।

২০১৪ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পর লোপেজ তিন বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। পরে তাকে ১৩ বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয় ‘ষড়যন্ত্র ও সহিংসতা উসকে দেওয়ার’ অভিযোগে। পরে তাঁকে গৃহবন্দী করা হয়, এবং ২০২০ সালে সামরিক সহায়তায় মুক্তি পেয়ে দেশত্যাগ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরও এক শান্তিচুক্তির সাফল্য ট্রাম্পের, এবার থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্পের উপস্থিতিতে বর্ধিত শান্তিচুক্তিতে সই করেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল (মাঝে) ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত  (বামে)। ছবি: এএফপি
ট্রাম্পের উপস্থিতিতে বর্ধিত শান্তিচুক্তিতে সই করেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল (মাঝে) ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত (বামে)। ছবি: এএফপি

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে একটি বর্ধিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। ট্রাম্প এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবতরণ করেন আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে এবং এর পাশাপাশি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য বৈঠকও তত্ত্বাবধান করবেন তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত ‘Delivering Peace’—লেখা একটি ব্যানারের সামনে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এটি তিন মাস আগে হওয়া এক যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে নতুন এক সমঝোতা। এ সময় সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পও উপস্থিত ছিলেন।

হুন মানেত বলেন, ‘এই ঘোষণা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে এটি স্থায়ী শান্তির ভিত্তি তৈরি করবে। কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো—এটি দুই দেশের সম্পর্ক মেরামতের প্রক্রিয়া শুরু করবে। আমাদের সীমান্তের মানুষগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংঘাতে বিভক্ত, আর নিরীহ বেসামরিক নাগরিকেরা ভীষণ ক্ষতির মুখে পড়েছে।’

গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুই দেশের তৎকালীন নেতাদের ফোন করে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান এবং সতর্ক করেন—যুদ্ধ চলতে থাকলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত হতে পারে। ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য ও সহযোগিতা চালাবে, যতক্ষণ তারা শান্তিতে থাকে।’

দুই পক্ষই একে অপরকে অভিযুক্ত করছে রকেট ও ভারী গোলা বিনিময়ের দায়ে। এই সংঘাতে অন্তত ৪৮ জন নিহত ও প্রায় তিন লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন আরেকটু হলেই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত হতে যাচ্ছিলেন। কারণ, গত শুক্রবার দেশটির সাবেক রানি মা সিরিকিতের মৃত্যু হয়। তবে পরে তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অনুতিন বলেন, ‘দুই দেশই সীমান্ত এলাকা থেকে ভারী অস্ত্র সরিয়ে নেবে, যাতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।’ একই সঙ্গে থাইল্যান্ড ১৮ জন আটক কম্বোডিয়ার সেনাকে মুক্তি দেবে বলেও ঘোষণা দেন অনুতিন।

মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর ট্রাম্পকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঐতিহ্যবাহী নৃত্যশিল্পীরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। ট্রাম্প লালগালিচায় তাঁদের সঙ্গে নাচেন, এক হাতে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা এবং অন্য হাতে মালয়েশিয়ার পতাকা তুলে ধরেন। এরপর আনোয়ারের সঙ্গে তিনি লিমুজিনে করে শহরে প্রবেশ করেন।

ট্রাম্প যখন অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছিলেন, তখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য প্রতিনিধিরা সমান্তরাল বৈঠকে বসেন চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমনে। গতকাল শনিবার শুরু হওয়া বৈঠকে ‘রেয়ার আর্থ’ খনিজের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বাণিজ্য আলোচক জেমিসন গ্রিয়ার বলেন, আলোচনায় বিস্তৃত বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল, যার মধ্যে বাণিজ্য শুল্কে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রসঙ্গও ছিল। গ্রিয়ার বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে নেতাদের বৈঠকটি খুব ফলপ্রসূ হতে যাচ্ছে।’

বিশ্বজুড়ে ‘রেয়ার আর্থ’ খনিজের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ওয়াশিংটন সরবরাহ শৃঙ্খল বৈচিত্র্যময় করতে চায়। যুদ্ধবিরতি অনুষ্ঠানে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র খুব শিগগিরই থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদ বিষয়ে চুক্তি করবে। পাশাপাশি কম্বোডিয়ার সঙ্গে একটি বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তির কথাও চলছে।

রোববার পরে তিনি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানা গেছে। লুলা যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ককে ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যা দিয়ে তা কমানোর অনুরোধ জানাবেন। তাঁর দাবি, গত ১৫ বছরে ব্রাজিলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ৪১০ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকটি বাতিল হয়েছে। ট্রাম্প শনিবার ঘোষণা দেন, কানাডার পণ্যের ওপর বিদ্যমান শুল্কের অতিরিক্ত আরও ১০ শতাংশ বাড়ানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আসিয়ানের এগারোতম সদস্য পূর্ব তিমুর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কুয়ালালামপুরে পূর্ব তিমুরকে আনুষ্ঠানিকভাবে আসিয়ানের সদস্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ছবি: এএফপি
কুয়ালালামপুরে পূর্ব তিমুরকে আনুষ্ঠানিকভাবে আসিয়ানের সদস্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ছবি: এএফপি

এশিয়ার সবচেয়ে নবীন রাষ্ট্র পূর্ব তিমুর আজ রোববার দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের ১১ তম সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যুক্ত হয়েছে। পর্তুগিজ শাসনের সময় প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট অর্থনৈতিক মুক্তি ও আঞ্চলিক জোটভুক্ত হওয়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার পূর্ণতা মিলল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ১৪ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার পর পূর্ব তিমুরের আসিয়ানে অন্তর্ভুক্তি বাস্তবায়িত হলো। যদিও এই সদস্যপদকে কোনো বড় পরিবর্তনের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে না, তবুও এটি দেশটির প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস-হোর্তা এবং প্রধানমন্ত্রী জানানা গুসমাওয়ের জন্য এক প্রতীকী বিজয়। এই দুজনই যারা দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক।

আজ রোববার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আয়োজিত আসিয়ানের বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে পূর্ব তিমুরের পতাকা মঞ্চে স্থাপন করা হলে করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো হল। এভাবেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় তাদের নতুন অধ্যায়।

প্রধানমন্ত্রী জানান গুসমাও এই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে দেশের জন্য এক নতুন সূচনা হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই নতুন সূচনা দেশটিকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ‘অসীম সুযোগ’ এনে দেবে।

তিমুর-লেস্তে নামেও পরিচিত এই দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। এটি এশিয়ার দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি। প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের ক্ষুদ্র অর্থনীতির দেশটি এখন আশা করছে, আসিয়ানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অন্তর্ভুক্ত অর্থনৈতিক কাঠামোর সুবিধা পাবে—যার মোট আকার ৩.৮ ট্রিলিয়ন ডলার।

গুসমাও বলেন, ‘তিমুর-লেস্তের জনগণের জন্য এটি শুধু একটি স্বপ্নপূরণ নয়, বরং আমাদের দীর্ঘ যাত্রার এক শক্তিশালী স্বীকৃতি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যোগদান আমাদের জাতির মানসিকতার প্রমাণ—একটি নবীন গণতন্ত্র, যা জন্ম নিয়েছে সংগ্রামের ভেতর থেকে। এটি কোনো যাত্রার সমাপ্তি নয়।’

তিন শতাব্দী ধরে পর্তুগালের শাসনে থাকা পূর্ব তিমুর ১৯৭৫ সালে হঠাৎ করে স্বাধীন হয়, তবে পরে দেশটি প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়ার দখলে চলে যায়। দীর্ঘ ও রক্তাক্ত সংগ্রামের পর ২০০২ সালে দেশটি পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করে। ১৯৯৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ৭৫ বছর বয়সী রামোস-হোর্তা ১৯৭০-এর দশকেই পূর্ব তিমুরকে আসিয়ানে যুক্ত করার ধারণা তোলেন, যেন আঞ্চলিক সংহতির মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা যায়।

গত সেপ্টেম্বর চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রামোস-হোর্তা বলেন, পূর্ব তিমুরকে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে এবং আসিয়ানের ওপর কোনো বোঝা হয়ে ওঠা চলবে না। বরং সীমান্তবিরোধ বা দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বিরোধের মতো বিষয়গুলোয় নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে জোটকে সহায়তা করতে পারে দেশটি।

তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা যদি আসিয়ানের সংঘাত-নিরসন প্রক্রিয়াগুলোকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখতে পারি, সেটাই হবে মূল বিষয়। আসিয়ানের প্রতিটি দেশেই আমরা আলোচনার সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিতে পারি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত