Ajker Patrika

ওয়াগনারের নিয়ন্ত্রণ চায় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রিগোজিনের ‘না’

আপডেট : ১২ জুন ২০২৩, ১১: ৪৭
ওয়াগনারের নিয়ন্ত্রণ চায় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রিগোজিনের ‘না’

রাশিয়া ওয়াগনার বাহিনীকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে ওয়াগনার ও রুশ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব চলার মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর দিল। 

গত শনিবার রুশ উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী নিকোলাই পানকভ বলেছেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন’কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি স্বাক্ষর করতে বলা হবে। রুশ উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী এমন অস্পষ্ট বার্তা ওয়াগনারকে উদ্দেশ্য করেই বলেছেন বলে ধারণা করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিতে গেলে ওয়াগনারের কলকাঠি আর প্রিগোজিনের হাতে থাকবে না। 

তবে গতকাল রোবরার এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেছেন, তাঁর বাহিনী চুক্তিগুলো বয়কট করবে। 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ওয়াগনার মুখ্য ভূমিকা রেখে আসছে। তাঁরা অসংখ্য ইউক্রেনীয় অঞ্চল দখলে রুশ বাহিনীকে সহায়তা করেছে। তবে সংগঠনটির মালিক প্রিগোজিনের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ রয়েছে। তিনি বেশ কয়েকবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্জেই শোইগু এবং সেনাবাহিনীর প্রধান ভ্যালেরি জেরাসিমভের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়েছেন। তিনি বারবার এই দুজনকে অযোগ্য এবং ইউক্রেনে যুদ্ধরত ওয়াগনার ইউনিটকে ইচ্ছাকৃতভাবে কম অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করার অভিযোগ করেছেন। 

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রিগোজিন বিবিসিকে বলেছেন, ‘ওয়াগনার শোইগুর সঙ্গে কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন না। শোইগু সঠিকভাবে সামরিক বাহিনী পরিচালনা করতে পারে না।’ 

এর আগে তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘তার দলটি রুশ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে। তবে সব বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে রিপোর্ট করার ফলে ওয়াগনারের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ 

যদিও শনিবারের ঘোষণায় সরাসরি ওয়াগনার বা অন্য কোনো আধাসামরিক গোষ্ঠীর উল্লেখ করা হয়নি তবে রুশ মিডিয়া বলেছে, নতুন চুক্তি প্রিগোজিন এবং তার বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে আনার একটি পদক্ষেপ। 

কিন্তু রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ ইউনিটগুলোর ‘কার্যকারিতা বাড়াতে’ এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ওই বিবৃতিতে আরও বলেছে, এটি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলোকে প্রয়োজনীয় আইনি মর্যাদা দেবে, লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যাপক সমর্থন ও সহজ উপায় বের করবে। আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে স্বাক্ষর করতে হবে। 

ওয়াগনার গ্রুপ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান উত্তেজনা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চরম রূপ ধারণ করেছে। গত সপ্তাহে বাখমুতের কাছে ওয়াগনারের গাড়িতে গুলি চালানোর অভিযোগে সিনিয়র রুশ সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল রোমান ভেনিভিতিনকে ‘অপহরণ’ করে। ছাড়া পাওয়ার পর ওই সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওয়াগনার রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর অস্ত্র চুরি করছে এবং সেনা কর্মকর্তাদের চাপ দিচ্ছে আরও অস্ত্র পাওয়ার চুক্তিতে সই করার জন্য। 

গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, ইউক্রেনে ওয়াগনারের ৫০ হাজার ভাড়াটে সেনা রয়েছে। এই ভাড়াটে গোষ্ঠী ক্রমশ বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় শক্তির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। সংগঠনটির সেনারা বর্তমানে মালি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, সুদান এবং লিবিয়াতে মোতায়েন করা হয়েছে বলে মনে করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত