Ajker Patrika

আদালতে প্রথম হাজিরা দিলেন এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী ইমামোগলু

অনলাইন ডেস্ক
কারাগারের বাইরে ইমামোগলুর সমর্থনে ভিড় জমান হাজারো মানুষ। ছবি: ইপিএ
কারাগারের বাইরে ইমামোগলুর সমর্থনে ভিড় জমান হাজারো মানুষ। ছবি: ইপিএ

গ্রেপ্তারের প্রায় এক মাস পর ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে প্রথমবারের মতো আদালতে হাজির করা হয়েছে। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা করার অভিযোগে তাঁকে উচ্চ নিরাপত্তার একটি কারাগারে রাখা হয়েছে। ইমামোগলু প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের পরই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। গত এক দশকের মধ্যে এত বড় বিক্ষোভ দেখেনি দেশটি।

তবে শুক্রবার ইমামোগলুকে একটি ভিন্ন মামলায় সিলিভরি কারাগারের বিশেষ আদালতে হাজির হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মামলায় ইমামোগলুর বিরুদ্ধে ইস্তাম্বুলের প্রধান প্রসিকিউটরকে ভয় দেখানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।

ইমামোগলু আদালতে বলেন, ‘আজ আমি এখানে, কারণ আমি ইস্তাম্বুলে তিনবার জিতেছি। এরদোয়ানের ইস্তাম্বুলে যে জিতবে, তুরস্কেও সেই জিতবে, এ ধারণা থেকেই আমাকে বন্দী করা হয়েছে।’

তুরস্কের বিরোধী দলগুলো ইমামোগলুর গ্রেপ্তারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছে। কারাগারের বাইরে ইমামোগলুর সমর্থনে ভিড় জমান হাজারো মানুষ। ইউরোপের একটি সংগঠন তুরস্কের সরকারকে ইমামোগলুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তুলে নিয়ে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

কিন্তু তুরস্কের সরকার বলছে, এই মামলায় রাজনীতির কোনো হাত নেই। তুরস্কের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে।

৫৩ বছর বয়সী ইমামোগলুকে শুক্রবার দুটি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। এসব মামলায় তাঁর জেল ও রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করার মতো শাস্তি হতে পারে।

প্রথম মামলায় ইমামোগলুকে ইস্তাম্বুলের প্রধান প্রসিকিউটর আকিন গুরলেকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। তবে মামলা জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। গুরলেক এরদোয়ানের সরকারে উপমন্ত্রী ছিলেন। বিরোধীরা তাঁকে এরদোয়ানের পক্ষে কাজ করা ‘মোবাইল গিলোটিন’ বা প্রতিপক্ষের মাথা কাটার অস্ত্র বলে সমালোচনা করে।

অন্যদিকে গত ১৯ মার্চ তাঁকে যে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তা করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় তার শুনানি হয়নি। সরকারি আইনজীবীরা গুরলেকের মামলায় ইমামোগলুর সাত বছর চার মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড চেয়েছেন।

ইমামোগলুর স্ত্রী দিলেক ও এক সন্তান শুনানির সময় উপস্থিত ছিলেন। দিলেক তাঁর স্বামীর গ্রেপ্তারের পর থেকে প্রতিবাদে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আগামী দিনে তাঁদের আরও প্রতিবাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রতিবাদে ইতিমধ্যে প্রায় ২ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে গত দুই দিনে ইস্তাম্বুলের আদালত ১৮৫ জন প্রতিবাদকারীকে জামিনে ছেড়েছেন।

এ ছাড়া, বিরোধী দলের দুই সাংবাদিককেও জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। তাঁরা একটি টিভি চ্যানেল বিক্রির তদন্ত করছিলেন। বিরোধী সংবাদপত্র কুমহুরিয়েত বলছে, এই গ্রেপ্তারগুলো সরকারের সমালোচকদের ভয় দেখানোর পরিকল্পনা। বিরোধীরা বলছেন, সরকার নির্বাচিত নেতাদের টার্গেট করে তাদের দমন করতে চায়।

২০২৮ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। সংবিধান অনুযায়ী এরদোয়ান আর নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। তবে পার্লামেন্ট চাইলে আগেভাগে নির্বাচন ডাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিনি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত