Ajker Patrika

অস্ত্র কেনায় শীর্ষ ১০ দেশ, শীর্ষ রপ্তানিকারক যারা

অস্ত্র কেনায় শীর্ষ ১০ দেশ, শীর্ষ রপ্তানিকারক যারা

ভূরাজনীতির ভারসাম্যে পরিবর্তন আসছে। ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে বৈশ্বিক ক্ষমতাবলয়ের মেরু পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। এর মধ্যে বাড়ছে অস্ত্রের মজুত। সমরাস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে অনেক দেশ। বড় অস্ত্রাগারের মালিক হয়ে উঠছে নতুন নতুন দেশ। বর্তমানে অস্ত্র আমদানিতে শীর্ষে অবস্থান করছে ভারত ও সৌদি আরব। 

ভারতের বিজেপি সরকার বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রতিরক্ষা খাতে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’–এর বিজ্ঞাপন করে যাচ্ছে। অর্জন হিসেবে সরকার দেশে ‘নির্মিত’ যুদ্ধবিমান, ট্যাংক ও সাবমেরিনের কথা বলছে। শিগগিরই রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষাও প্রকাশ করেছে। 

অথচ নরেন্দ্র মোদির আমলে (২০১৮–২০২২ সাল) সমরাস্ত্রের মোট বৈশ্বিক আমদানির ১১ শতাংশই ভারতের। সে হিসাবে ভারত এখনো বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এই ‘অর্জনে’ মোদি সরকার কৌশলগতভাবে দুর্বল এবং বিব্রতকর অবস্থানে চলে গেছে। 

গত ১৩ মার্চ স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) প্রকাশিত আন্তর্জাতিক অস্ত্র স্থানান্তরের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮–২০২২ সময়সীমার মধ্যে ভারত মোট আমদানির ৪৫ শতাংশই করেছে রাশিয়া থেকে। অর্থাৎ ভারতে রাশিয়ার হিস্যা কিছুটা কমলেও এখনো দেশটিতে বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী তারা। 

এরপরের অবস্থানেই আছে ফ্রান্স। ভারতের মোট আমদানির ২৯ শতাংশ হিস্যা ফ্রান্সের। মূলত দিল্লি ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ৫৯ হাজার কোটি রুপির চুক্তি করায় ভারতে অস্ত্র সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে গেছে ফ্রান্স। উল্লেখিত সময়ে ভারতের মোট আমদানির ১১ শতাংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। 

 ২০১৮–২২ সাল পর্যন্ত হিসাবে অস্ত্র আমদানিতে ভারতের পরেই সৌদি আরবের অবস্থান। সমরাস্ত্রের বৈশ্বিক আমদানির ৯ দশমিক ৬ শতাংশ কিনেছে সৌদি আরব। এরপরেই আছে যথাক্রমে—কাতার (৬.৪ %), অস্ট্রেলিয়া (৪.৭ %), চীন (৪.৬%), মিশর (৪.৫%), দক্ষিণ কোরিয়া (৩.৭%) এবং পাকিস্তান (৩.৭%)। 

তবে স্ট্যাটিস্টার সর্বশেষ (১০ মার্চ, ২০২৩) তথ্য অনুযায়ী, শীর্ষ দশ অস্ত্র আমদানিকারক দেশের মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে যৌথভাবে ভারত ও সৌদি আরব। বৈশ্বিক অস্ত্র রপ্তানির ১১ শতাংশই কেনে এই দুই দেশ। এরপরেই রয়েছে যথাক্রমে—মিসর (৫.৭ শতাংশ), অস্ট্রেলিয়া (৫.৪ %), চীন (৪.৮ শতাংশ), কাতার (৪.৬ শতাংশ), দক্ষিণ কোরিয়া (৪.১ শতাংশ), পাকিস্তান (৩ %), সংযুক্ত আরব আমিরাত (২.৮ %) এবং জাপান (২.৬ %)। 

আর শীর্ষ ১০ অস্ত্র রপ্তানিকারকদের মধ্যে রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র (৪০ %), রাশিয়া (১৬ %), ফ্রান্স (১১ %), চীন (৫.২ %), জার্মানি (৪.২ %), ইতালি (৩.৮ %), যুক্তরাজ্য (৩.২ %), স্পেন (২.৬ %), দক্ষিণ কোরিয়া (২.৪ %) এবং ইসরায়েল (২.৩ %)। উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো, পাকিস্তানের আমদানির ৭৭ শতাংশই সরবরাহ করেছে চীন। 

বর্তমানে শীর্ষ ১০ সমরাস্ত্র আমদানিকারক দেশ। সূত্র: স্ট্যাটিস্টাএদিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের পরেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সামরিক বাজেট এখন ভারতের। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে ‘আঁত্‌মানির্ভারতা’ (স্বনির্ভরতা) অর্জনের দিকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। এর মধ্যে রয়েছে চারটি ‘ইতিবাচক স্বদেশীকরণ তালিকা’ এবং এফডিআই (বিদেশি বিনিয়োগ) সীমা বাড়ানো থেকে শুরু করে ভারতীয় বিক্রেতাদের জন্য ‘একটি অনুকূল পরিবেশ’ তৈরি করার উদ্যোগ। পাশাপাশি ২০২৩–২৪ সালে দেশীয় শিল্প থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহে এ খাতের বাজেটের ৭৫ শতাংশ ব্যয় করার একটা উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনাও রয়েছে। 

গত ১৩ মার্চ এই প্রতিবেদন প্রকাশের দিন ভারতের জুনিয়র প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অজয় ভাট রাজ্যসভাকে বলেন, বিদেশি উৎস থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহের ব্যয় ২০১৮–১৯ সালের ৪৬ শতাংশ থেকে কমে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত উপাত্ত অনুযায়ী ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন নীতি কৌশলের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। 

এসআইপিআরআই–এর তথ্য অনুসারে, ভারত ১৯৯৩ সাল থেকে বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক। প্রতিবেদনে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা-শিল্প ভিত্তি তৈরিতে ভারতের ক্রমাগত ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। 

সংস্থাটির ডেটায় দেখা যাচ্ছে, ভারতের অস্ত্র আমদানি ২০১৩–২০১৭ এবং ২০১৮–২২ সালের মধ্যে ১১ শতাংশ কমেছে। এই হ্রাস ভারতের ধীর এবং জটিল অস্ত্র সংগ্রহের প্রক্রিয়া, অস্ত্র সরবরাহকারীদের মধ্যে বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টা এবং দেশীয়ভাবে ডিজাইন করা ও উৎপাদিত প্রধান অস্ত্র দিয়ে আমদানি নির্ভরতা কমানোর প্রচেষ্টাসহ বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। 

এদিকে ২০১৩–১৭ এবং ২০১৮–২২ উভয় সময়েই ভারতে বৃহত্তম সরবরাহকারী ছিল রাশিয়া। কিন্তু ভারতের মোট অস্ত্র আমদানিতে রাশিয়ার অংশ এখন ৬৪ শতাংশ থেকে কমে ৪৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এর কারণ হিসেবে সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে রাশিয়ার অবস্থান অন্যান্য সরবরাহকারী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতার মুখে পড়া, ভারতীয় অস্ত্র উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ২০২২ সাল থেকে ইউক্রেন হামলার কারণে রাশিয়ার অস্ত্র রপ্তানি প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে হত্যায় অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২০২২ সালে পশ্চিম জাপানের নারা শহরে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ছবি: বিবিসি
২০২২ সালে পশ্চিম জাপানের নারা শহরে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ছবি: বিবিসি

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত তেতসুয়া ইয়ামাগামি আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। টোকিওতে সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিচার শুরুর প্রথম দিনেই আদালতকে তিনি বলেন, ‘সবকিছু সত্যি।’

২০২২ সালে পশ্চিম জাপানের নারা শহরে একটি নির্বাচনী প্রচারসভায় ঘরে তৈরি বন্দুক দিয়ে শিনজো আবেকে গুলি করেন ৪৫ বছর বয়সী ইয়ামাগামি। গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই দিনই হাসপাতালে মারা যান জাপানের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। তাঁর মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল।

‘আবেনোমিকস’ নামে পরিচিত অর্থনৈতিক নীতির প্রণেতা এবং কট্টর পররাষ্ট্রনীতির জন্য খ্যাত শিনজো আবেকে হত্যার পর রাজনৈতিকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঘটনাটির পর প্রকাশ্যে আসে শাসক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও ইউনিফিকেশন চার্চের (যা ‘মুনিজ’ নামেও পরিচিত) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

ইয়ামাগামি তদন্তকারীদের জানান, তিনি আবেকে গুলি করেছিলেন কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন, আবে ওই ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়েছেন, যার কারণে তাঁর মা ও পরিবার আর্থিকভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। ইয়ামাগামির অভিযোগ, ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রমাণ হিসেবে তাঁর মা ওই চার্চে প্রায় ১০ কোটি ইয়েন (প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার) দান করেছিলেন।

এই অভিযোগের পর চার্চের কর্মকাণ্ড নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিষ্ঠিত এবং গণবিবাহের জন্য পরিচিত এই সংগঠনটির বিরুদ্ধে তদন্তের একপর্যায়ে জাপানের চার মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের মার্চে টোকিও আদালত ইউনিফিকেশন চার্চকে বিলুপ্তির আদেশ দেন, তাদের করমুক্তির সুবিধা বাতিল করেন এবং সম্পত্তি বিক্রির নির্দেশ দেন।

জাপান টাইমসের বরাতে সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিবিসি জানিয়েছে, এত কিছুর পরও ইয়ামাগামির মা তাঁর বিশ্বাস থেকে সরে আসেননি। তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড আমার বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছে।’

ইয়ামাগামির বিচার আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তিনি অস্ত্র আইন ভঙ্গের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর আইনজীবীর দাবি, অভিযুক্তের তৈরি বন্দুকটি জাপানের প্রচলিত অস্ত্র সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না।

জাপানে অস্ত্র সহিংসতার ঘটনা খুবই কম। শিনজো আবে হত্যার পর থেকে দেশটিতে ঘরে তৈরি বন্দুকের ওপর আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পারমাণবিক শক্তি থেকে ক্যানসার চিকিৎসা—দুটি সুপার কম্পিউটার বানাবে যুক্তরাষ্ট্র, প্রযুক্তি সহায়তায় এএমডি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সুপার কম্পিউটারগুলো ব্যবহৃত হবে পারমাণবিক শক্তি, ক্যানসার চিকিৎসা ও জাতীয় নিরাপত্তাসহ জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণায়। ছবি: সংগৃহীত
সুপার কম্পিউটারগুলো ব্যবহৃত হবে পারমাণবিক শক্তি, ক্যানসার চিকিৎসা ও জাতীয় নিরাপত্তাসহ জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণায়। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেসের (এএমডি) সঙ্গে এক বিলিয়ন ডলারের অংশীদারত্বে দুটি সুপার কম্পিউটার নির্মাণ করছে দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয়। এই সুপার কম্পিউটারগুলো ব্যবহৃত হবে পারমাণবিক শক্তি, ক্যানসার চিকিৎসা ও জাতীয় নিরাপত্তাসহ জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণায়।

এই নতুন অংশীদারত্বের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানিমন্ত্রী ক্রিস রাইট ও এএমডির প্রধান নির্বাহী লিসা সু নিশ্চিত করেছেন বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়।

রাইট জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো এমন পর্যাপ্ত সুপার কম্পিউটার তৈরি করা, যা ক্রমবর্ধমান জটিল বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনায় সক্ষম হবে। এসব মেশিন বিপুল পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ করে নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের গতি বহু গুণে বাড়িয়ে তুলবে।

তাঁর ভাষ্য, এই সিস্টেমগুলো পারমাণবিক শক্তি ও ফিউশন এনার্জি, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি এবং নতুন ওষুধ উদ্ভাবনে ‘অভূতপূর্ব গতি’ আনবে।

বিজ্ঞানীরা এখন সূর্যের জ্বালানি উৎপাদন প্রক্রিয়া অর্থাৎ ফিউশন বিক্রিয়া পৃথিবীতে পুনরুৎপাদনের চেষ্টা করছেন। এর জন্য তাঁরা তীব্র তাপ ও চাপে হালকা পরমাণুগুলোকে একত্র করে বিপুল শক্তি উৎপাদনের চেষ্টা করছেন।

রাইট বলেন, ‘আমরা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি, কিন্তু প্লাজমা অত্যন্ত অস্থিতিশীল। আমাদের সূর্যের কেন্দ্রের মতো পরিবেশ পৃথিবীতে তৈরি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই এআই-চালিত সুপার কম্পিউটারগুলোর মাধ্যমে আমাদের অগ্রগতি অনেক দ্রুত হবে। আমি বিশ্বাস করি, আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ফিউশন শক্তি ব্যবহারযোগ্য করে তোলার বাস্তব পথ আমরা খুঁজে পাব।’

রাইট জানান, সুপার কম্পিউটারগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করবে এবং ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন ওষুধ উদ্ভাবনের গতি বাড়াবে; অণুস্তরে রোগ নিরাময়ের সম্ভাব্য উপায়গুলো সিমুলেশন করে।

তাঁর আশা, ‘আগামী পাঁচ থেকে আট বছরের মধ্যে আমরা এমন একপর্যায়ে পৌঁছাব, যেখানে আজ যেসব ক্যানসার মৃত্যুদণ্ডের সমান মনে করা হয়, সেগুলোর অনেকগুলোই নিয়ন্ত্রণযোগ্য দীর্ঘস্থায়ী রোগে পরিণত হবে।’

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হ্যারিকেন মেলিসা: বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়ের প্রভাব উপকূলে, জ্যামাইকায় প্রাণহানি ৩

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ক্যারিবীয় অঞ্চলে ধেয়ে আসছে হ্যারিকেন মেলিসা। ছবি: সংগৃহীত
ক্যারিবীয় অঞ্চলে ধেয়ে আসছে হ্যারিকেন মেলিসা। ছবি: সংগৃহীত

ক্যারিবীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে চলা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের বিধ্বংসী প্রভাব ইতিমধ্যেই জ্যামাইকায় অনুভূত হতে শুরু করেছে। দেশটির স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ মন্ত্রণালয় স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতির সময়ই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এটিকে চলতি বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বলা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে জনগণকে চরম সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে যে, ঘূর্ণিঝড়ের সময় ছাদের ওপর ওঠা, বালুর বস্তা জড়ো করা বা গাছ কাটার মতো কাজগুলো আপাতদৃষ্টিতে সহজ মনে হলেও, সামান্য ভুলও মারাত্মক আঘাত বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, জলমগ্ন রাস্তা বা আবর্জনাপূর্ণ এলাকায় গাড়ি চালানো অত্যন্ত বিপজ্জনক। যদিও বর্তমানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে, তবে হাসপাতালগুলো খোলা আছে এবং ঘূর্ণিঝড়-সম্পর্কিত আঘাতের চিকিৎসা দিচ্ছে।

জ্যামাইকার পানি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ম্যাথিউ সামুদা বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের ‘নিউজডে’ অনুষ্ঠানে দেশের পরিস্থিতিকে ‘ভীতিকর’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, জ্যামাইকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ সমুদ্র থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে বসবাস করে। এই ঘূর্ণিঝড় রাজধানী কিংস্টন, ওল্ড হারবার বে, রকি পয়েন্ট এবং সেন্ট এলিজাবেথের মতো বেশ কয়েকটি নিচু উপকূলীয় অঞ্চলে সরাসরি প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সামুদা জানান, কর্তৃপক্ষ এক সপ্তাহ ধরে দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করেছে এবং বন্যার হাত থেকে নিজেদের ঘরবাড়ি বাঁচাতে বালুর বস্তা ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে।

তবে, তিনি স্বীকার করেছেন যে জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বহু মানুষ তাদের ‘জীবন রক্ষার চেয়ে সম্পত্তি রক্ষা করাকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন’, এটি কর্তৃপক্ষের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ।

মন্ত্রী সামুদা এই পরিস্থিতিতে বিদেশে বসবাসরত জ্যামাইকান প্রবাসীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন: ‘সময় শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই’ যেন তাঁরা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ফোনকল করে খোঁজ নেন এবং তাঁদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে উৎসাহিত করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

হারিকেন মেলিসা স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৮২ কিলোমিটার বেগে স্থায়ী বাতাস নিয়ে জ্যামাইকার দিকে ধেয়ে যাচ্ছিল। ধীর গতিতে অগ্রসরমাণ এই ক্যাটাগরি–৫ ঘূর্ণিঝড়টি দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঝড় হিসেবে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মার্কিন ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি) তথ্য অনুযায়ী, গ্রিনিচ মান সময় বিকেল ৬টা (বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত ১২ টা) পর্যন্ত মেলিসাকে ‘বিপর্যয়কর’ ঝড় হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এটি স্যাফির-সিম্পসন স্কেলের সর্বোচ্চ স্তর, অর্থাৎ ক্যাটাগরি–৫ হারিকেন।

এনএইচসি জানায়, মেলিসা সোমবার গভীর রাতে বা মঙ্গলবার ভোরে জ্যামাইকার ওপর দিয়ে বয়ে যাবে। মঙ্গলবার রাতে পূর্ব কিউবা অতিক্রম করে বুধবারের মধ্যে বাহামা ও টার্কস অ্যান্ড কাইকোস দ্বীপপুঞ্জের দিকে অগ্রসর হবে। ক্যারিবীয় সাগরের অস্বাভাবিক উষ্ণ জলে ধীর গতিতে অগ্রসর হওয়ায় মেলিসার আকার ও শক্তি বেড়ে গেছে বলে এনএইচসি–এর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এর ফলে জ্যামাইকা একাধিক দিনের নজিরবিহীন ঝোড়ো বাতাস ও প্রায় তিন ফুট বৃষ্টিপাতের মুখে পড়তে পারে।

বর্তমানে মেলিসার বাতাসের পরিধি জ্যামাইকার দৈর্ঘ্যের চেয়েও বেশি। কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের সমান আকারের এই দ্বীপটির প্রধান বিমানবন্দরগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি অবস্থিত—যা বিপদের আশঙ্কা আরও বাড়িয়েছে। দক্ষিণ জ্যামাইকার কিছু অংশে, বিশেষ করে ঐতিহাসিক বন্দরনগর পোর্ট রয়্যালে বাধ্যতামূলক সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারি করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে আবেদন জানান। তিনি সতর্ক করেন, ঘূর্ণিঝড়টি কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, সেতু, সড়ক, বন্দর ও বিমানবন্দরের মতো অবকাঠামোর ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে।

সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও অনেক স্থানীয় বাসিন্দা রয়টার্সকে জানান, লুটপাটের আশঙ্কায় তারা ঘর ছাড়তে চান না। কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় ২৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হোলনেস বলেন, ‘এই অঞ্চলের কোনো অবকাঠামোই ক্যাটাগরি–৫ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত সহ্য করতে পারবে না।’

স্যাফির–সিম্পসন স্কেল অনুযায়ী, ক্যাটাগরি–৫ হলো সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের ধাপ। এই স্কেল ঘূর্ণিঝড়ের স্থায়ী বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগের ওপর নির্ভর করে এবং সম্ভাব্য সম্পত্তি ক্ষতির মাত্রা অনুমান করতে ব্যবহৃত হয়। ক্যাটাগরি–৩ বা তদূর্ধ্ব ঘূর্ণিঝড়কে ‘মেজর হারিকেন’ বা বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ধরা হয়।

ক্যাটাগরি–৫ বলতে ঘণ্টায় ২৫২ কিলোমিটার বা তার বেশি বেগের ঝড়কে বোঝানো হয়। এমন ঝড়ে অধিকাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, ছাদ উড়ে যেতে পারে, দেয়াল ধসে পড়তে পারে, গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়তে পারে। এই স্কেলে ঝড়ের সঙ্গে আসা জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, ভূমিধস বা টর্নেডোর মতো অন্যান্য প্রাণঘাতী ঝুঁকি বিবেচনা করা হয় না।

এনএইচসি ১৯৭৩ সাল থেকে এই স্কেল ব্যবহার করছে। এটি প্রণয়ন করেন প্রকৌশলী হারবার্ট স্যাফির ও আবহাওয়াবিদ রবার্ট সিম্পসন। হোলনেস জানান, তাঁর সরকার যতটা সম্ভব প্রস্তুতি নিয়েছে। ৩৩ মিলিয়ন ডলারের জরুরি বাজেট রাখা হয়েছে, পাশাপাশি গত বছরের ভয়াবহ হারিকেন বেরিলের ক্ষতির চেয়েও বেশি পরিমাণে বিমা ও ঋণ সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে।

বেরিল ছিল আটলান্টিক মহাসাগরে রেকর্ড করা সবচেয়ে দ্রুতগতির ক্যাটাগরি–৫ পর্যায়ে পৌঁছানো হারিকেন। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘূর্ণিঝড়গুলো আগের চেয়ে অনেক দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

অ্যাকুওয়েদার–এর প্রধান আবহাওয়াবিদ জোনাথন পোর্টার বলেন, ‘দশ হাজারেরও বেশি পরিবার ঘণ্টায় ১০০ মাইলের বেশি গতির প্রবল দমকা হাওয়ার মুখে পড়বে এবং কয়েক দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ তিনি আরও বলেন, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে ত্রাণ পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে।

পশ্চিম ক্যারিবীয় অঞ্চলের উষ্ণ জলবায়ুর কারণে জ্যামাইকা প্রতি বছরই উষ্ণমণ্ডলীয় ঝড় ও হারিকেনের মুখোমুখি হয়। জ্যামাইকার হারিকেন মৌসুম জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়, যার চূড়ান্ত সময় অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধে। সাধারণত প্রতি বছর দ্বীপটি দুই থেকে তিনটি ট্রপিক্যাল ঝড় বা হারিকেনের প্রভাব অনুভব করে, তবে সরাসরি আঘাতের ঘটনা বিরল। ১৯৮৮ সালের পর থেকে জ্যামাইকাকে সরাসরি আঘাত করেছে মাত্র তিনটি বড় হারিকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত