Ajker Patrika

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) কী ও কারা?

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) হলো একটি দেওবন্দি জিহাদি জঙ্গি গোষ্ঠী। তারা পাকিস্তানি তালেবান নামেও পরিচিত। এটি মূলত আফগান-পাকিস্তান সীমান্তের উভয় পাশজুড়ে সক্রিয়। ২০০৭ সালে গঠিত এ গোষ্ঠীকে আন্তর্জাতিকভাবে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

সম্প্রতি বাংলাদেশের মাদারীপুরের এক যুবক দুবাইয়ে যাওয়ার কথা বলে পাকিস্তানে যান। এরপর যোগ দেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানে (টিটিপি)। গত শুক্রবার সংগঠনটির হয়ে লড়তে গিয়ে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সে দেশের সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হন ফয়সাল মোড়ল (২১) নামের ওই যুবক। এ ঘটনার পর টিটিপি নিয়ে বাংলাদেশে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

তবে বাংলাদেশি হিসেবে টিটিপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। এর আগে চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল উত্তর ওয়াজিরিস্তানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বোমা হামলায় টিটিপির ৫৪ জন সদস্যের সঙ্গে আহমেদ জোবায়ের নামের এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছিলেন। গত এক বছরের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে অন্তত চারজন বাংলাদেশি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনার পর পাকিস্তানের টিটিপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে অন্তত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)

২০০৭ সালের ডিসেম্বরে বাইতুল্লাহ মেহসুদের নেতৃত্বে পাকিস্তানের ফেডারেল শাসিত উপজাতি এলাকার (এফএটিএ) বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীকে একত্র করে টিটিপি গঠিত হয়। আল-কায়েদা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এর জন্ম। এই গোষ্ঠীর প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল—পাকিস্তান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং শরিয়া আইনের চরমপন্থী ব্যাখ্যা অনুযায়ী একটি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।

মার্কিন ড্রোন হামলায় বেশ কয়েকজন বড় নেতার মৃত্যুর পর গোষ্ঠীটি একসময় দুর্বল হয়ে যায়। তবে বর্তমান নেতা নুর ওয়ালি মেহসুদের নেতৃত্বে ২০২০ সাল থেকে তারা আবার ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করে। এর ফলে জামাত-উল-আহরারের মতো দলগুলো পুনরায় টিটিপিতে যোগ দেয়, যা তাদের শক্তি ও হামলার সক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।

এদিকে ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় ফিরে আসার পর টিটিপি আরও শক্তিশালী হয়। পরে তালেবান সরকার পাকিস্তান ও টিটিপির মধ্যে শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতা করে। এর মাধ্যমে একটি স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হয় এবং টিটিপির বন্দীরা পাকিস্তান থেকে মুক্তি পান। তবে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর টিটিপি আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা বাড়িয়ে দেয়।

টিটিপির মূল লক্ষ্য হলো পাকিস্তানের সরকারকে সরিয়ে তাদের নিজস্ব মতাদর্শে একটি ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। এই উদ্দেশ্যে টিটিপি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর প্রায়ই হামলা চালায়।

চাঁদা, অপহরণ, প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও অনুদানের মাধ্যমে টিটিপি তাদের অর্থ সংগ্রহ করে। সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে টিটিপি আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের পশতুন উপজাতিদের টার্গেট করে, তবে তারা পাকিস্তানের অন্যান্য অঞ্চল থেকেও সদস্য আকর্ষণ করে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও তারা সদস্য সংগ্রহ করে বলে জানা গেছে।

মতাদর্শগত মিল থাকলেও টিটিপি ও আফগানিস্তানের তালেবান দুটি আলাদা সংগঠন। আফগান তালেবান টিটিপিকে আশ্রয় দিয়েছে, যা আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া আল-কায়েদার সঙ্গেও টিটিপির দীর্ঘদিনের আদর্শগত ও অপারেশনাল সম্পর্ক রয়েছে। প্রশিক্ষণ, আক্রমণের পরিকল্পনা ও অর্থ ভাগাভাগির ব্যাপারটি আল-কায়েদা ও টিটিপি একসঙ্গে করে বলেই জানা গেছে।

২০১৪ সালের শেষ দিকে টিটিপির কিছু কমান্ডার ইসলামিক স্টেট খোরাসানে (আইএসআইএস-কে) যোগ দেন। তবে উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিযোগিতা ও সংঘাত রয়েছে।

২০২১ সালের শেষ দিকে যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর টিটিপি বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে হামলা বাড়িয়েছে। ২০২৪ সালে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টিটিপির হামলার সংখ্যা বেড়েছে। নুর ওয়ালি মেহসুদের নেতৃত্বে টিটিপি ইসলামাবাদ, করাচি ও কোয়েটার মতো বড় শহরগুলোতেও তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে।

তবে সম্প্রতি পাকিস্তান সরকার পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে কিছু অভিযান চালিয়েছে। এতে টিটিপির বেশ কিছু সদস্য নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযানে টিটিপির ১৭ জন সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই অভিযানেই বাংলাদেশের মাদারীপুরের যুবক ফয়সাল মোড়ল (২১) নিহত হন।

তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, সাউথ এশিয়ান টেররিজম পোর্টাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ আফ্রিকায় হোস্টেলে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি, নিহত অন্তত ১১

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকায় এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় ভোরের দিকে রাজধানী প্রিটোরিয়ার পশ্চিমে সলসভিল টাউনশিপের একটি হোস্টেলে বন্দুকধারীরা এ হামলা চালায়। এতে আহত হয় আরও ১৪ জন। নিহতদের মধ্যে তিন বছরের একটি শিশুও রয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

পুলিশের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার আথলেন্দা ম্যাথে বলেন, ‘ওই হোটেলে একদল লোক মদ্যপান করছিল। হঠাৎ তিনজন অজ্ঞাত বন্দুকধারী হোস্টেলে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে।’

তিনি নিশ্চিত করেছেন, মোট ২৫ জনকে গুলি করা হয়েছিল। এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই ১০ জন এবং হাসপাতালে আরও একজন মারা যায়। আহত ১৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে এবং ১৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।

ব্রিগেডিয়ার আথলেন্দা ম্যাথে হোস্টেলটিকে ‘অবৈধ মদ বিক্রির আস্তানা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এসএবিসিকে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের অবৈধ এবং লাইসেন্সবিহীন মদের দোকান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। এসব স্থানে প্রায়ই এমন গুলির ঘটনা ঘটে, তখন নিরীহ মানুষজনও ক্রসফায়ারে পড়ে যায়।’

তিনি জানান, হামলার উদ্দেশ্য এখনো জানা যায়নি। কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অপরাধে জর্জরিত দক্ষিণ আফ্রিকায় গণগুলির ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার সর্বশেষ ঘটনা এটি।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ-সংক্রান্ত অফিসের ২০২৩-২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বের সর্বোচ্চ হত্যার হার রয়েছে (প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যায় ৪৫ জন)। দেশটির পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬৩ জন নিহত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৭
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান ‘সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’। তিনি যে পরিস্থিতির কারণে ভারতে এসেছেন, সেটি এ বিষয়ে প্রভাব ফেলছে। আজ শনিবার এইচটি লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও ও প্রধান সম্পাদক রাহুল কানওয়ালের প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর এসব কথা বলেন।

জয়শঙ্কর বলেন, তিনি (হাসিনা) একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ভারতে এসেছেন। সেই পরিস্থিতি তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপকে প্রভাবিত করছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত তাঁকেই নিতে হবে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর তিনি ভারতে এসে আশ্রয় নেন। ওই সহিংসতায় শতাধিক মানুষ নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হন। গত মাসে ৭৮ বছর বয়সী হাসিনাকে ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল তাঁর সরকারের দমনপীড়ন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

জয়শঙ্করের কাছে প্রশ্ন ছিল, শেখ হাসিনা কি ‘যত দিন চাইবেন’ ভারতে থাকতে পারবেন? জবাবে তিনি সরাসরি হ্যাঁ—না না বলে পরিস্থিতিনির্ভর ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এটি ভিন্ন বিষয়। তিনি একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এখানে এসেছেন, এবং আমি মনে করি সেই পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে এখন তাঁর ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে। তবে আবারও বলছি, এটি এমন একটি বিষয় যেখানে শেষ পর্যন্ত তাঁকেই নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হবে।’

আলাপচারিতায় জয়শঙ্কর দুই দেশের সম্পর্ক প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যাঁরা এখন ক্ষমতায় আছেন, তাঁদের পূর্ববর্তী নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ ছিল। সে ক্ষেত্রে নতুন করে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর ভারত সব সময়ই গুরুত্ব দিয়েছে।

জয়শঙ্কর বলেন, যদি সমস্যা নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে হয়, তাহলে প্রথম কাজ হওয়া উচিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা। তিনি আরও বলেন, ভারত তার প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের মঙ্গল চায় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা রাখে।

জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো থাকুক। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা চাই, জনগণের ইচ্ছা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রতিফলিত হোক।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আর আমি নিশ্চিত, যে সরকারই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবে, তারা ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিণত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইন্ডিগোর শত শত ফ্লাইট বাতিল, তবু চড়া দামে টিকিট বিক্রি!

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৫
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়। ছবি: পিটিআই
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়। ছবি: পিটিআই

ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর শত শত ফ্লাইট বাতিলের কারণে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে হাজারো যাত্রী। দেশটির আকাশপথে দেখা দিয়েছে বড় রকমের শিডিউল বিপর্যয়। এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা গেছে, ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এত ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

কিন্তু এই বিপর্যয় সত্ত্বেও ইন্ডিগো তাদের পুরো বিমানবহর গ্রাউন্ড করেনি বা প্রতিদিন পরিচালিত ২ হাজার ২০০-এর বেশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট বাতিলও করেনি। ফলে বিলম্ব ও বিঘ্নের কারণে গতকাল শুক্রবার ১ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়।

বাতিলের তালিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল দিল্লি থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো। কলকাতা-গুয়াহাটি, চেন্নাই-কোয়েম্বাটুর রুট এবং যেসব রুট নন-মেট্রো শহরগুলোকে যুক্ত করে যেসব ফ্লাইট রুট রয়েছে, সেগুলো চলছে। তবে সেগুলোতে কমেছে ফ্লাইটের সংখ্যা, বেড়েছে বিলম্ব।

এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে প্রতিদিন এত ফ্লাইট বাতিলের পরও তারা কেন এবং কীভাবে এত টিকিট বিক্রি করছে আর ভাড়াই বা এত বেশি কেন?

সাধারণত এয়ারলাইনসগুলো প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই ফ্লাইট বাতিল করে না, যদি না পুরো সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইন্ডিগোর ক্ষেত্রে এই বিঘ্নগুলো দৈনন্দিন ভিত্তিতে সামলানো হচ্ছে। অর্থাৎ আজকের ফ্লাইট বাতিল হতে পারে, কিন্তু তিন দিন বা এমনকি দুই দিন পরের ফ্লাইটগুলোর বুকিং খোলা আছে, এই আশায় যে ওই সময়ের মধ্যে কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

ইন্ডিগো জানিয়েছে, ফ্লাইটগুলো বাতিল করা ছিল এককালীন ‘সিস্টেম রিবুট’-এর অংশ, যাতে বিমান ও ক্রু পুনর্বিন্যস্ত করা যায় এবং নিয়মিত সময়সূচি পুনরায় চালু করা যায়। তারা আশা করছে, ধাপে ধাপে অপারেশন স্বাভাবিক হবে এবং ১০-১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

ভারতের বাণিজ্যিক অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহন বাজারের অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে ইন্ডিগো। কিছু হিসাবে ৬০ শতাংশের বেশি। তাই বিপুলসংখ্যক ফ্লাইট বাতিলের ফলে মুহূর্তেই সব এয়ারলাইনসের মোট আসনের সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু যাত্রীদের চাহিদা একই রয়ে গেছে।

আর চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে এই আকস্মিক ও চরম বৈপরীত্যের কারণে টিকিটের মূল্যও উচ্চ হারে বাড়ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লি-মুম্বাই ওয়ান-ওয়ে ভাড়া বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা আর রিটার্ন ভাড়া ছুঁয়েছে ৬০ হাজার। অন্যদিকে দিল্লি-বেঙ্গালুরু টিকিটের দাম ১ লাখ টাকায় পৌঁছে যায়। বেঙ্গালুরু-মুম্বাই সর্বোচ্চ ভাড়া থাকে প্রায় ৭ হাজার টাকা, যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার টাকায়।

এ অবস্থায় অনেকেই বলছেন, এখন মনে হচ্ছে দিল্লি-লন্ডন টিকিটই যেন সস্তা!

নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলছেন, সংকট বা জরুরি অবস্থার সময়ে এয়ারলাইন ও সরকার কি এসব অ্যালগরিদম নিষ্ক্রিয় করবে না? যাত্রীদের কাছ থেকে আরও বেশি টাকা আদায় করার বদলে যারা ইতিমধ্যে অর্থ প্রদান করেছেন তাদের পরিস্থিতি বিবেচনা করা কি জরুরি নয়?

বিঘ্নের সময়ে কোনো ফ্লাইটে ক্রু পুনর্বিন্যাস চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বা বিমান ঘুরে আসার (aircraft rotation) প্রক্রিয়া ব্যর্থ না হওয়া পর্যন্ত এয়ারলাইনস সেই ফ্লাইটের সিট বিক্রি চালিয়ে যেতে পারে। শুধু এসব নিশ্চিত হওয়ার পরই ফ্লাইটটিকে ‘বাতিল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ফলস্বরূপ এয়ারলাইনের সিস্টেম এমনভাবে তৈরি, যদি না পরিচালনা করা যাবে না এমন নিশ্চিত হওয়া যায় ততক্ষণ পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলে। টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হবে কেবল তখনই, যদি ইন্ডিগো নিজে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় বা বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ সেবা স্থগিতের নির্দেশ দেয়। যার কোনোটিই এখনো ঘটেনি।

ইন্ডিগো জানিয়েছে, শনিবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা হচ্ছে, তবে পুরোপুরি স্থিতিশীল হতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩০
তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়েছে। ছবি: এনডিটিভি
তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়েছে। ছবি: এনডিটিভি

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় নতুন করে ‘বাবরি মসজিদ’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবির। আজ শনিবার এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা রয়েছে। এ আয়োজনে সৌদি আরব থেকে আলেমদের নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ আয়োজনকে ঘিরে ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না করা হচ্ছে বিরিয়ানি।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেস ও বিজেপি ঘুরে তৃণমূলে আসেন মুর্শিদাবাদের প্রভাবশালী নেতা। গত বৃহস্পতিবার দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যেই তিনি এই মসজিদ নিয়ে উঠেপড়ে লেগে আছেন। বহিষ্কার নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া বা প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে কোনোভাবেই বিচলিত নন এই নেতা।

হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের জানান, শনিবার মোরাদিঘির কাছে ২৫ বিঘা জায়গাজুড়ে প্রায় ৩ লাখ মানুষ জড়ো হবে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত হবে এখানে।

হুমায়ুন কবির আরও জানান, সকালে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিশেষ কনভয়ে করে সৌদি আরব থেকে দুজন আলেম আসবেন।

রাজ্যের একমাত্র উত্তর-দক্ষিণ মহাসড়ক এনএইচ-১২ লাগোয়া বিশাল এক এলাকায় চলছে এই আয়োজন। মুর্শিদাবাদের সাতটি কেটারিং প্রতিষ্ঠানকে শাহি বিরিয়ানি রান্নার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হুমায়ুন কবিরের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী জানান, অতিথিদের জন্য প্রায় ৪০ হাজার প্যাকেট এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য আরও ২০ হাজার প্যাকেট তৈরি করা হচ্ছে। শুধু খাবারের ব্যয়ই ৩০ লাখ রুপির বেশি হয়ে যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে আয়োজনের বাজেট ৬০-৭০ লাখ রুপিতে পৌঁছাবে বলে জানান তিনি।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের জন্য ধানখেতের ওপর ১৫০ ফুট লম্বা ও ৮০ ফুট চওড়া এক বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। এ মঞ্চে প্রায় ৪০০ অতিথির বসার ব্যবস্থা থাকবে। এর নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ রুপি।

আয়োজকেরা জানান, প্রায় ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে ২ হাজার জন শুক্রবার ভোর থেকেই কাজ শুরু করেছেন। তাঁরা এই বড় জনস্রোত নিয়ন্ত্রণ, প্রবেশপথ সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা ও এনএইচ-১২-তে যাতে জ্যাম না লেগে যায়, সেই বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।

হুমায়ুন কবির জানান, সকাল ১০টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হবে। এরপর দুপুর ১২টায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠিত হবে।

হুমায়ুন কবির আরও বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকতা দুই ঘণ্টা আগে থেকেই শুরু হবে। পুলিশি নির্দেশনা অনুযায়ী বিকেল ৪টার মধ্যে মাঠ খালি করা হবে।’

এদিকে এত বিশাল আয়োজন প্রশাসনের উদ্বেগও বাড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশনার পর জেলা পুলিশ হুমায়ুন কবিরের দলের সঙ্গে এক দফা আলোচনায় বসে। জনশৃঙ্খলা বজায় এবং এনএইচ-১২–তে যান চলাচল ঠিক রাখতে বৈঠক করে তারা।

একজন জ্যেষ্ঠ জেলা পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বেলডাঙা ও রানীনগর থানার আওতাজুড়ে প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান উদ্বেগ হচ্ছে জাতীয় মহাসড়ক সচল রাখা। সদর দপ্তর থেকে অতিরিক্ত ফোর্স এসে গেছে। একাধিক ডাইভারশন পরিকল্পনা প্রস্তুত আছে।’

মুর্শিদাবাদের অন্যতম বড় মহাসড়ক এনএইচ-১২-তে এই বিশাল আয়োজনের কারণে যানজট ও জনজট তৈরি হতে পারে—এ আশঙ্কায় আছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

বলা হচ্ছে, এই মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ তৃণমূল কংগ্রেসের ভেতরে অস্বস্তি তৈরি করছে। হুমায়ুন কবিরের জন্য এই আয়োজন একদিকে যেমন জনসমাবেশ গঠনের পরীক্ষা, তেমনি একপ্রকার প্রতিরোধ প্রদর্শনও।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া এবং নিরাপত্তাবলয়ের চিন্তা উড়িয়ে দিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘মানুষ আসবে, কারণ এটি এই এলাকার জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত