Ajker Patrika

নতুন সৈন্য পাচ্ছে না মিয়ানমারের জান্তা

নতুন সৈন্য পাচ্ছে না মিয়ানমারের জান্তা

নতুন করে সৈন্য নিয়োগ দিতে পারছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তাৎমাদাও নামে দেশটিতে বহুল পরিচিত জান্তাবাহিনী নিয়োগের ক্ষেত্রে নানাভাবে প্রলুব্ধ করে এমনকি নগদ টাকা দিয়েও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ সৈনিক ভর্তি করতে পারছে না। এতে করে জান্তা বাহিনীর ঊর্ধ্ব পর্যায়েও কর্মকর্তা সংকট দেখা দিয়েছে। দেখা দিয়েছে তাৎমাদাওয়ের চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ার আশঙ্কা। 

থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরুণদের সেনাবাহিনীতে আকৃষ্ট করতে নগদ টাকা প্রদানের লোভের পাশাপাশি নানা ধরনের চটকদার স্লোগানও প্রচার করছে দেশজুড়ে। যেমন—একটি স্লোগানে বলা হয়েছে, ‘তোমাকেই খুঁজছে তাৎমাদাও’। আরেক স্লোগানে সেনাবাহিনীকে দেশবাসীর আত্মীয় বলে আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘মহান তাৎমাদাওকে শক্তিশালী হতে সাহায্য করো। আমাদের কখনই সেই কমরেডদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যারা আমাদের আত্মীয়।’ এসব স্লোগান ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং বেতারে। 

কিন্তু এসব প্রচার খুব একটা কাজে দিচ্ছে না। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই জান্তা বাহিনী এই সংকটের মুখোমুখি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সংকট কাটিয়ে উঠতে নগদ টাকাসহ নানা ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তাৎমাদাও। 

তাৎমাদাও ত্যাগকারীদের অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই ইরাবতীকে জানিয়েছেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রত্যেক ব্যাটালিয়নকে নতুন সৈন্যদের দলে টানতে ৫ লাখ কিয়াত করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও খুব একটা সাড়া মেলেনি। পরে এপ্রিলে পরিমাণ বাড়িয়ে তা ১৫ লাখ কিয়াত করা হলেও পরিস্থিতি যা ছিল তাই থেকে যায়। এই বিষয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন লিন হিয়েত অং বলেন, ‘এরই মধ্যে সেই পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। আমি শুনেছি, অনেক ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩০ লাখ কিয়াত নগদ দিয়েও নতুনদের রিক্রুট করা যাচ্ছে না।’ 

নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বামার জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকা এবং রাখাইন রাজ্য ছিল তাৎমাদাওয়ের সৈন্য সংগ্রহের অন্যতম শক্তিশালী জায়গা। কিন্তু বর্তমানে এসব এলাকায় বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। 

সাধারণত মিয়ানমারের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা হলো ১৮ বছর থেকে ২৫ বছর। পড়ালেখা থাকতে হবে অন্তত দেশটির মানদণ্ডে সিক্সথ গ্রেড পর্যন্ত এবং অতীতের কোনো অপরাধ কার্যক্রম জড়িত থাকার রেকর্ড থাকা যাবে না। তবে অফিসারদের ক্ষেত্রে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। তবে সেনা সংকট দেখা দেওয়ার পর থেকে এসব শর্ত প্রতিপালন করা হচ্ছে খুবই শিথিলভাবে। মাদক, ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে যুক্ত থাকাদেরও টার্গেট করে ভর্তি করা হচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীতে। 

এই বিষয়ে ক্যাপ্টেন লিন হিয়েত অং বলেন, ‘ব্যাটালিয়ন কমান্ডারদের ওপর নির্দেশ আছে প্রতি মাসে অন্তত ১ জন করে হলেও রিক্রুট করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ঋণগ্রস্তদের বাছাই করে এবং ঋণ পরিশোধ করে দেওয়ার বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে নাম লিখিয়ে নেয়।’ এ সময় লিন হিয়েত সেনাবাহিনীতে ভর্তির ক্ষেত্রে ১৩টি দৃশ্যমান শর্ত যা কঠোরভাবে মানার কথা সেগুলো মানা হচ্ছে না বলেও জানান। 

গ্লোবাল ফায়ার–পাওয়ার ওয়েবসাইট অনুসারে, ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীতে সৈন্য সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ১৫ হাজার। ২০২১ সালের প্রথম দিকে সেই সংখ্যা ছিল ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখের মধ্যে। যার মধ্যে ১ লাখ সৈন্য সরাসরি যুদ্ধ জড়িত হয়ে পড়ায় সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় মাত্র ২ লাখের কাছাকাছি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তামিম কি তাহলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হবেন

‘আমি আধুনিক পুলিশ, সাংবাদিকদের ভয় করে চলি না’

লন্ডনের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা, ফ্লাইট বাতিলে ভোগান্তিতে হাজারো যাত্রী

নারীর ‘বগলের গন্ধ’ পুরুষের মানসিক চাপ কমায়, তবে কি মানুষেরও আছে ফেরোমোন!

মহড়া দিয়ে রাকসু দখলের স্বপ্ন না দেখার পরামর্শ ছাত্রদল নেতার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত