Ajker Patrika

বাশারকে আশ্রয় দেওয়া রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ‘নবসংজ্ঞায়ন’ চায় আল–শারার সিরিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ক্রেমলিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল–শারা। ছবি: এএফপি
ক্রেমলিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল–শারা। ছবি: এএফপি

সিরিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক বাশার আল–আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল রাশিয়া। তাঁর পতনের পর তাঁকে আশ্রয়ও দেয় রাশিয়া। তবে তারপরও দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক ‘পুনরুদ্ধার ও নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত’ করতে চায় আহমেদ আল–শারার নেতৃত্বাধীন সিরিয়া। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আহমেদ আল-শারা জানিয়েছেন, তিনি মস্কোর সঙ্গে দামেস্কের সম্পর্ক ‘পুনরুদ্ধার ও নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত’ করতে চান। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন। রাশিয়া উৎখাত হওয়া সাবেক সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল।

বুধবার প্রথম সরকারি সফরে মস্কোয় গিয়ে ক্রেমলিনে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের সময় আল-শারা এ মন্তব্য করেন। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যার আগে প্রায় ১০ মাস ধরে আসাদকে রাশিয়াই আশ্রয় দিচ্ছে।

আল-শারা বলেন, ‘আমরা এই সম্পর্কগুলো পুনর্গঠন করতে চাই এবং নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে চাই—যাতে সিরিয়া স্বাধীন ও সার্বভৌম থাকে, তার ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।’ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আশ্বস্ত করেন যে, দামেস্ক মস্কোর সঙ্গে আগের সব চুক্তি মেনে চলবে। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে করা সব চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপি সিরিয়ার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আল-শারা এই সফরে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বাশার আল-আসাদকে রাশিয়ার কাছ থেকে হস্তান্তরের অনুরোধ জানাবেন। যদিও সিরিয়ার ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে রাশিয়া ও আল-শারার গোষ্ঠী বিপরীত পক্ষে ছিল, নতুন সরকার এখন বাস্তববাদী কূটনৈতিক নীতি নিয়েছে। তারা শুধু রাশিয়ার সঙ্গেই নয়, অন্যান্য বিদেশি শক্তির সঙ্গেও সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে।

দামেস্কের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতেও রাশিয়ার সহায়তা চায়। এর আগে, মার্কিন টেলিভিশন সিবিএস–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আল-শারা বলেছিলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে সিরিয়ার দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তা রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে জ্বালানি ও খাদ্য খাতে, যেগুলোর জন্য সিরিয়া আংশিকভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। এর সঙ্গে কিছু পুরোনো কৌশলগত স্বার্থও আছে।’

অন্যদিকে রাশিয়া এখনো সিরিয়া উপকূলে তাদের বিমান ও নৌঘাঁটিতে অবস্থান ধরে রেখেছে। ক্রেমলিন জানিয়েছে, এই ঘাঁটিগুলো রাখার বিষয়ে তারা একটি চুক্তি করার আশায় আছে। এ ছাড়া রাশিয়া সিরিয়ায় তেল পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলেও জানা গেছে। তবে আল-শারার সংক্ষিপ্ত টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে আসাদ ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

আল-শারাকে স্বাগত জানিয়ে পুতিন বলেন, দুই দেশের মধ্যে ‘বিশেষ সম্পর্কের’ দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যা সব সময় সিরিয়ার জনগণের স্বার্থে পরিচালিত হয়েছে। তিনি জানান, রাশিয়া এই সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণে আগ্রহী। পুতিন সিরিয়ার সাম্প্রতিক পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রশংসা করেন, যা আসাদের পতনের পর প্রথম নির্বাচন। তিনি বলেন, ‘এটি আপনার জন্য একটি বড় অর্জন, কারণ এটি সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করবে। সিরিয়া বর্তমানে কঠিন সময় পার করলেও এই নির্বাচন দেশটির সব রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সম্পর্ক ও সহযোগিতা আরও দৃঢ় করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত