আজকের পত্রিকা ডেস্ক
গত কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রাজনৈতিক পালাবদলের হাওয়া বইছে। গত চার বছরে গণ-আন্দোলনের মুখে সরকার পতন হয়েছে তিনটি দেশে। বড় ধরনের আন্দোলন দেখেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গও। বিক্ষোভ হয়েছে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমারেও।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, আন্দোলনগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সবগুলো আন্দোলনের ধরনই প্রায় এককরকম। প্রথমে নির্দিষ্ট কোনো একটি দাবি আন্দোলন শুরু হয়। তারপর সেই দাবি মেনে না নেওয়া, আন্দোলন দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর মোতায়েন, সরকারের দায়িত্বশীলদের বেফাঁস মন্তব্যের জেরে তা বড় হয়ে রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। ফলস্বরূপ সরকার কিংবা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পতন হয়।
অনেকেই দক্ষিণ এশিয়ার এই সরকার পতন কিংবা সরকারবিরোধী আন্দোলনের ঢেউকে আরব বসন্তের সঙ্গে তুলনা করতে চান। দক্ষিণ এশিয়ার এই আন্দোলনের ঢেউ শুরু হয়েছিল ২০২২ সালে দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা থেকে। হাজার হাজার ক্ষুব্ধ জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ফেলে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট। মাত্র তিন বছর পর একই ধরনের আন্দোলন শুরু হয় বাংলাদেশেও। শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেফাঁস মন্তব্য আর শত শত ছাত্র-জনতার মৃত্যুতে সেই আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। ফলে পতন হয় সরকারের।
বর্তমানে নেপালেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের জেরে শুরু হয় আন্দোলন। আন্দোলনের প্রথম দিনই ১৯ জন নিহত হলে আরও বড় আকার ধারণ করে তা।
পর্যবেক্ষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার তরুণ প্রজন্ম এখন শুধু সরকারের পদত্যাগ নয়, বরং নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি চায়। তারা বলেন, প্রতিটি আন্দোলন শুরু হয়েছিল নির্দিষ্ট কোনো ইস্যু বা অসন্তোষকে কেন্দ্র করে। কিন্তু পরিণতিতে জনগণের ক্ষোভ গিয়ে ঠেকেছে শাসকগোষ্ঠী ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি সার্বিক অবিশ্বাসে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীনরা বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি, বৈষম্য আর অদক্ষ শাসনব্যবস্থা টিকিয়ে রেখেছে, ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।
তরুণদের নেতৃত্বে হওয়া এসব আন্দোলন অনেক সময় ভয়াবহ সহিংসতার রূপ নিয়েছে, প্রাণহানি ঘটেছে শত শত মানুষের। আর সরকার পতনের পর দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক শূন্যতা, যেখানে অনির্বাচিত নেতৃত্ব ও দুর্বল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নতুন করে সংকট তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ড এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘শাসক শ্রেণিকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও অদক্ষ হিসেবে দেখার যে ধারণা তৈরি হয়েছে, সেটিই বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটের ভিত্তি তৈরি করেছে।’
নেপালে গত সোমবার বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীসহ তিন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপরও এখনো শান্ত হয়নি পরিস্থিতি। পার্লামেন্ট ভবন, রাষ্ট্রপতি ভবনসহ বিভিন্ন মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করছে বিক্ষোভকারীরা। চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রাসাদ ওলি পদত্যাগ করলেও নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত তিনিই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, নতুন সরকারের কাঠামো এবং ক্ষমতার বিতরণ এখনো অনিশ্চিত। দেশবাসীর মধ্যে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে যে প্রথাগত রাজনৈতিক শাসকশ্রেণীই পুনরায় ক্ষমতায় আসতে দর-কষাকষি শুরু করতে পারে। ২০১৫ সালের সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর থেকেই নেপালে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সাধারণ চিত্র হয়ে উঠেছে। এবং এখন পর্যন্ত কোনো প্রধানমন্ত্রীই এক থেকে দুই বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি।
এর আগে, ২০০৬ সালেও এক সহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে শেষ হয় নেপালের রাজতন্ত্র।
চলমান আন্দোলন নিয়ে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ পল স্ট্যানিল্যান্ড মন্তব্য করেছেন, ‘এই সহিংসতা নতুন সরকার গঠন প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে। এখন প্রধান প্রশ্ন হলো, নেপালে পুনরায় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে কি না এবং একটি স্থিতিশীল ও কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা গঠন করা সম্ভব হবে কি না।’
নেপালের জনগণ যদি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার থেকে দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা পেতে চায় তবে তাদের হতাশই হতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, দুই দেশেই সরকার পতনের পর অস্থিরতা বেড়েছে। সমস্যাগুলো আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
বাংলাদেশে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স এক বছরের বেশি হয়ে গেলেও এখনো দেশে শৃঙ্খলা পুরোপুরিভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচন কবে হবে তা নিয়েও কোনো তথ্য নিশ্চিত নয়। এ ছাড়া, দেশজুড়ে মব, বিশৃঙ্খলা তো রয়েছেই।
শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালে রাজাপক্ষে পরিবারের পতনের পর প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমেসিংহে দেশকে নেতৃত্ব দেন। পরবর্তীতে গত বছর দেশটিতে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন মার্ক্সিস্ট আইনপ্রণেতা অণুরা কুমারা দিসানায়েক। তিনি জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, সরকারি দুর্নীতি নির্মূল এবং ক্ষমতাধর দুর্নীতিবাজদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রায় এক বছর হয়ে এলেও দেশটির রাজনৈতিক-সামাজিক অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। দেশবাসী এখনো অর্থনৈতিক সংকট, মানবাধিকার সমস্যা এবং বৈদেশিক ঋণের সঙ্গে লড়াই করে চলেছেন। কলম্বোর রাজনৈতিক বিশ্লেষক ভিরাগাথি থানাবালাসিংহম শ্রীলঙ্কা সম্পর্কে বলেন, ‘প্রতিবাদকারীরা যে পরিবর্তনের আশা করেছিলেন, বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি।’
নেপালের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং যুব নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, প্রতিবেশী দেশের অভিজ্ঞতা নির্দেশ করে যে দ্রুত সমাধান বা স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সহজ হবে না।
সাম্প্রতিক গণ-আন্দোলন কেবল নেপাল, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় সীমাবদ্ধ নয়; অঞ্চলটিতে অন্যান্য দেশেও জনবিক্ষোভের তরঙ্গ লক্ষ্য করা গেছে। সংসদ সদস্যদের সুবিধা ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইন্দোনেশিয়ায়ও বড় বিক্ষোভ হয়েছে। ওই বিক্ষোভে নিহত হয়েছেন অন্তত সাতজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা মন্ত্রীদের পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় দেশটির প্রেসিডেন্ট।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ পল স্ট্যানিল্যান্ড মন্তব্য করেছেন, ‘অধিকাংশ আন্দোলন কোনো বড় পরিবর্তন ছাড়াই শেষ হয়, তবে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতিতে ছোট ভুল বা অপ্রত্যাশিত ঘটনা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। আমি মনে করি, নেপাল দক্ষিণ এশিয়ার নতুন রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হবে।’
গত কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রাজনৈতিক পালাবদলের হাওয়া বইছে। গত চার বছরে গণ-আন্দোলনের মুখে সরকার পতন হয়েছে তিনটি দেশে। বড় ধরনের আন্দোলন দেখেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গও। বিক্ষোভ হয়েছে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমারেও।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, আন্দোলনগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সবগুলো আন্দোলনের ধরনই প্রায় এককরকম। প্রথমে নির্দিষ্ট কোনো একটি দাবি আন্দোলন শুরু হয়। তারপর সেই দাবি মেনে না নেওয়া, আন্দোলন দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর মোতায়েন, সরকারের দায়িত্বশীলদের বেফাঁস মন্তব্যের জেরে তা বড় হয়ে রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। ফলস্বরূপ সরকার কিংবা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পতন হয়।
অনেকেই দক্ষিণ এশিয়ার এই সরকার পতন কিংবা সরকারবিরোধী আন্দোলনের ঢেউকে আরব বসন্তের সঙ্গে তুলনা করতে চান। দক্ষিণ এশিয়ার এই আন্দোলনের ঢেউ শুরু হয়েছিল ২০২২ সালে দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা থেকে। হাজার হাজার ক্ষুব্ধ জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ফেলে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট। মাত্র তিন বছর পর একই ধরনের আন্দোলন শুরু হয় বাংলাদেশেও। শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেফাঁস মন্তব্য আর শত শত ছাত্র-জনতার মৃত্যুতে সেই আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। ফলে পতন হয় সরকারের।
বর্তমানে নেপালেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের জেরে শুরু হয় আন্দোলন। আন্দোলনের প্রথম দিনই ১৯ জন নিহত হলে আরও বড় আকার ধারণ করে তা।
পর্যবেক্ষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার তরুণ প্রজন্ম এখন শুধু সরকারের পদত্যাগ নয়, বরং নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি চায়। তারা বলেন, প্রতিটি আন্দোলন শুরু হয়েছিল নির্দিষ্ট কোনো ইস্যু বা অসন্তোষকে কেন্দ্র করে। কিন্তু পরিণতিতে জনগণের ক্ষোভ গিয়ে ঠেকেছে শাসকগোষ্ঠী ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি সার্বিক অবিশ্বাসে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীনরা বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি, বৈষম্য আর অদক্ষ শাসনব্যবস্থা টিকিয়ে রেখেছে, ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।
তরুণদের নেতৃত্বে হওয়া এসব আন্দোলন অনেক সময় ভয়াবহ সহিংসতার রূপ নিয়েছে, প্রাণহানি ঘটেছে শত শত মানুষের। আর সরকার পতনের পর দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক শূন্যতা, যেখানে অনির্বাচিত নেতৃত্ব ও দুর্বল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নতুন করে সংকট তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ড এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘শাসক শ্রেণিকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও অদক্ষ হিসেবে দেখার যে ধারণা তৈরি হয়েছে, সেটিই বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটের ভিত্তি তৈরি করেছে।’
নেপালে গত সোমবার বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীসহ তিন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপরও এখনো শান্ত হয়নি পরিস্থিতি। পার্লামেন্ট ভবন, রাষ্ট্রপতি ভবনসহ বিভিন্ন মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করছে বিক্ষোভকারীরা। চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রাসাদ ওলি পদত্যাগ করলেও নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত তিনিই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, নতুন সরকারের কাঠামো এবং ক্ষমতার বিতরণ এখনো অনিশ্চিত। দেশবাসীর মধ্যে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে যে প্রথাগত রাজনৈতিক শাসকশ্রেণীই পুনরায় ক্ষমতায় আসতে দর-কষাকষি শুরু করতে পারে। ২০১৫ সালের সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর থেকেই নেপালে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সাধারণ চিত্র হয়ে উঠেছে। এবং এখন পর্যন্ত কোনো প্রধানমন্ত্রীই এক থেকে দুই বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি।
এর আগে, ২০০৬ সালেও এক সহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে শেষ হয় নেপালের রাজতন্ত্র।
চলমান আন্দোলন নিয়ে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ পল স্ট্যানিল্যান্ড মন্তব্য করেছেন, ‘এই সহিংসতা নতুন সরকার গঠন প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে। এখন প্রধান প্রশ্ন হলো, নেপালে পুনরায় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে কি না এবং একটি স্থিতিশীল ও কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা গঠন করা সম্ভব হবে কি না।’
নেপালের জনগণ যদি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার থেকে দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা পেতে চায় তবে তাদের হতাশই হতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, দুই দেশেই সরকার পতনের পর অস্থিরতা বেড়েছে। সমস্যাগুলো আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
বাংলাদেশে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স এক বছরের বেশি হয়ে গেলেও এখনো দেশে শৃঙ্খলা পুরোপুরিভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচন কবে হবে তা নিয়েও কোনো তথ্য নিশ্চিত নয়। এ ছাড়া, দেশজুড়ে মব, বিশৃঙ্খলা তো রয়েছেই।
শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালে রাজাপক্ষে পরিবারের পতনের পর প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমেসিংহে দেশকে নেতৃত্ব দেন। পরবর্তীতে গত বছর দেশটিতে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন মার্ক্সিস্ট আইনপ্রণেতা অণুরা কুমারা দিসানায়েক। তিনি জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, সরকারি দুর্নীতি নির্মূল এবং ক্ষমতাধর দুর্নীতিবাজদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রায় এক বছর হয়ে এলেও দেশটির রাজনৈতিক-সামাজিক অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। দেশবাসী এখনো অর্থনৈতিক সংকট, মানবাধিকার সমস্যা এবং বৈদেশিক ঋণের সঙ্গে লড়াই করে চলেছেন। কলম্বোর রাজনৈতিক বিশ্লেষক ভিরাগাথি থানাবালাসিংহম শ্রীলঙ্কা সম্পর্কে বলেন, ‘প্রতিবাদকারীরা যে পরিবর্তনের আশা করেছিলেন, বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি।’
নেপালের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং যুব নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, প্রতিবেশী দেশের অভিজ্ঞতা নির্দেশ করে যে দ্রুত সমাধান বা স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সহজ হবে না।
সাম্প্রতিক গণ-আন্দোলন কেবল নেপাল, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় সীমাবদ্ধ নয়; অঞ্চলটিতে অন্যান্য দেশেও জনবিক্ষোভের তরঙ্গ লক্ষ্য করা গেছে। সংসদ সদস্যদের সুবিধা ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইন্দোনেশিয়ায়ও বড় বিক্ষোভ হয়েছে। ওই বিক্ষোভে নিহত হয়েছেন অন্তত সাতজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা মন্ত্রীদের পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় দেশটির প্রেসিডেন্ট।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ পল স্ট্যানিল্যান্ড মন্তব্য করেছেন, ‘অধিকাংশ আন্দোলন কোনো বড় পরিবর্তন ছাড়াই শেষ হয়, তবে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতিতে ছোট ভুল বা অপ্রত্যাশিত ঘটনা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। আমি মনে করি, নেপাল দক্ষিণ এশিয়ার নতুন রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হবে।’
গত ৭২ ঘণ্টায় ছয় দেশে একযোগে হামলা চালিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। কাতার থেকে শুরু করে লেবানন, সিরিয়া, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন ও গাজায় নির্বিচার বোমাবর্ষণ করে দেশটি মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন করে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরণের আক্রমণ আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে
১ ঘণ্টা আগেপুলিশ জানিয়েছে, রেণু আগরওয়াল নামের ৫০ বছর বয়সী ওই নারীকে হাত-পা বেঁধে প্রথমে প্রেশার কুকার দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়। পরে ছুরি ও কাঁচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর বাসা থেকে সোনা ও নগদ টাকা লুট করে পালায় খুনিরা।
১ ঘণ্টা আগেপুরো ফ্রান্স গতকাল বুধবার দিনভর বিক্ষোভে উত্তাল ছিল। ২ লাখের বেশি বিক্ষোভকারী মহাসড়ক অবরোধ করে, ব্যারিকেডে আগুন ধরিয়ে এবং পুলিশের সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাদের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, রাজনৈতিক অভিজাত শ্রেণি এবং সরকারের কঠোর ব্যয় সংকোচন পরিকল্পনা।
২ ঘণ্টা আগে২০২৩ সালে বন্দুক সহিংসতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে একে ‘গ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছিলেন কার্ক। তার ভাষ্য—মার্কিন সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী অনুযায়ী, নাগরিকদের অস্ত্র রাখার অধিকার হরণ করা যাবে না। সংবিধানের এই সংশোধনীকে রক্ষা করার জন্য প্রতিবছর বন্দুক সহিংসতায় কিছু মৃত্যু মেনে নেওয়া যেতেই পারে!
২ ঘণ্টা আগে