আজকের পত্রিকা ডেস্ক
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ভোটকেন্দ্রে এখনো (৬টা ৪৫ মিনিট) ভোট গ্রহণ চলছে। লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। কেন্দ্রটিতে সকাল ১০টা থেকেই ভোটারদের লাইন ছিল।
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা জানান, ভোট দেওয়ার জন্য একজন ভোটারকে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা লাইনের দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
ভোট দেওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী বিশ্বাস মাধুর্য সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়েক ঘন্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখনো ভোট দিতে পারিনি।’
কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মীর ফেরদৌস হোসেন বলেন, ‘এই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৯৯৩। সকাল থেকে ১৬টি গোপন কক্ষের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হচ্ছে। একেক জন ভোটারকে গোপন কক্ষে ঢুকে ভোট সম্পন্ন করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। এ কারণে নির্দিষ্ট সময় বিকেল পাঁচটার মধ্যে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও যারা কেন্দ্রের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন তাদের ভোট নিতে হবে।’
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে আবাসিক হলে ভোটের কেন্দ্র রাখা হয়। মেয়েদের হলগুলোর মধ্যে বীর প্রতীক তারামন বিবি, ফজিলাতুন্নেছা হল, রোকেয়া হলে কোনো ঝামেলা ছাড়াই বোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে পাশেই থাকা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে দুপুরে কিছু সময় ভোট বন্ধ থাকে। কেন্দ্রটিতে শেষ পর্যন্ত ৫৭১ ভোটের মধ্যে ৩৫১টি ভোট পড়েছে বলে হল সূত্রে জানা যায়।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বীর প্রতীক তারামন বিবি হল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় কিছু শিক্ষার্থী লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ভোট দেওয়ার জন্য। কেন্দ্রটিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কেন্দ্রটিতে ৯৭৭ জন ভোটার রয়েছে। দিনভর কোনো ঝামেলা ছাড়াই ভোট গ্রহণ হয়েছে কেন্দ্রটিতে।
ভোট দিতে আসা কামরুন্নাহার সেতু বলেন, প্রথমবার কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছি। ভালোই লাগছে।
হল সংসদের ভিপি প্রার্থী তাইয়্যেবা রাজিয়া মুসকান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সুষ্ঠুভাবে হলের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। দিনভর কোনো ঝামেলা হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার ভোট হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হয়েছে। ঝামেলা হতে পারে আশঙ্কা করে অনেকে বাড়ি চলে গেছে।
নির্ধারিত সময় শেষে বীর প্রতীক তারামন বিবি হল কেন্দ্রে ৫৯৫ ভোট পড়েছে বলে হল সূত্রে জানা গেছে।
কেন্দ্রটির রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. আবেদা সুলতানা বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোনো ঝামেলা হয়নি। স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেয়েরা ভোট দিতে এসেছে। হলে ভোট কেন্দ্র হলেও অনেক মেয়েরা বাড়ি চলে গেছে, কেউ কেউ বাইরেও থাকে, তাই উপস্থিতি কিছুটা কম।
ফজিলতুন্নেসা হলে ৮০৩ জন ভোটার রয়েছে। বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে ৪৮৮টি ভোট পড়েছে। সকাল থেকে কেন্দ্রটিতে ছোটখাটো অভিযোগ ছাড়ায় ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান কেন্দ্রটির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু সাইফ মো. তৌহিদুল আনাম।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রটিতে সুষ্ঠুভাবেই ভোট গ্রহণ হয়েছে।
এদিকে রোকেয়া হলে মোট ভোটার ৯৫৫ জন। বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটের দিকে কেন্দ্রটিতে ভোট পড়েছে ৬৬০ টি। কেন্দ্রটির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, ভোট গ্রহণ প্রায় শেষ। কোনো ভোটার না আসলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ভোট গ্রহণ শেষ হবে।
তবে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে দুপুরে কিছু সময় ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। কেন্দ্রটিতে শেষ পর্যন্ত ৫৭১ ভোটের মধ্যে ৩৫১টি ভোট পড়েছে বলে হল সূত্রে জানা যায়।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।
ছাত্রদলের ভোট বর্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা ভোট বর্জন না করে কোনো অভিযোগ থাকলে নির্বাচন কমিশনে দিতে পারত। তবে তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা তাদের নিতান্তই দলীয় ব্যাপার।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছেন। শিগগিরই ব্যালট বক্স কেন্দ্র থেকে সিনেট ভবনে নেওয়া হবে। সেখানে পৃথকীকরণ ও গণনার কার্যক্রম চলছে।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভোট বর্জনের ঘোষণার পরপরই বিএনপিপন্থী তিন শিক্ষকও নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এই তিন শিক্ষক নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা হলেন— অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, নজরুল ইসলাম ও নাহরিন খান।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো, ভোটের দিন নতুন নতুন ভোটার সংযোজন, অমোচনীয় কলম ব্যবহার না করাসহ নানা অনিয়ম দেখেছেন তাঁরা। তাঁদের মনে হয়েছে, এটি একটি সাজানো নির্বাচন।
জাহানারা ইমাম হলে দায়িত্বে ছিলেন বলে জানান অধ্যাপক শামীমা সুলতানা।
নির্বাচনের পরিবেশ যথেষ্ট সুষ্ঠু রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
বিকেল সাড়ে ৩টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হল কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। বিস্তারিত পড়ুন
অনিয়মের অভিযোগে তুলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল। ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদী হাসান। বিস্তারিত পড়ুন
দেরিতে ভোট গ্রহণ শুরু এবং একাধিক কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া গেলেও জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বেলা ২টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি এ কথা বলেন।
মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘এরই মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার জন্য কিছু সময়ের জন্য ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। আমরা সেসব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দিষ্ট সময়ের পর ভোটার এলে কিছু সময়ের জন্য ভোট নিতে বলেছি।’
আজ সকাল ৯টা থেকে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শুরুর দিকে ভোটার উপস্থিতি বেশ কম ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে। ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন, ছাত্র ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন। ২৫টি পদে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রদলের সভাপতি সাইফ বিন মাহবুবকে আটক করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ চলাকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু হল (১০ নম্বর ছাত্র হল) কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। তবে আধা ঘণ্টা পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জাকসু নির্বাচনে শিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন হলে ছাত্রদল তাঁদের প্যানেলকে ভোট দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন, বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। এমনকি গার্ডকে পর্যন্ত মারধর করা হয়েছে। ১০ নম্বর হলে ভাসানী হল এবং ২১ নম্বর হলসহ এই হলগুলোতে ছাত্রদলের আধিপত্য লক্ষ্য করা গেছে। জাহানারা ইমাম হলের গার্ডকে মারধর করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। বিস্তারিত পড়ুন
অনিয়মের অভিযোগে দুটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে প্রায় ২৩ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। ছবিবিহীন ভোটার তালিকা এবং হাতে কালি না লাগানোর কারণে প্রার্থীদের দাবির মুখে এই ঘটনা ঘটে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রটিতে এই ঘটনা ঘটে। পরে ১২টা ১৫ মিনিটে আবার ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় এক ঘণ্টা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা হল কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান। এ সময় সব ভোটারকে এবং নারী প্রার্থীকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। এতে হলের শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানালে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। তবে দেড়টার দিকে আবার ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশপাশে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল-সমর্থিত ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদী হাসান।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদে জামায়াতে ইসলামীর কোম্পানির ছাপানো ব্যালটে ভোট গ্রহণের অভিযোগ তুলেছে ছাত্রদল।
জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেছে, ভোট কারচুপির নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে ইসলামী ছাত্রশিবির । ক্যাম্পাসে জামায়াতের লোকজনদের আনাগোনা রয়েছে বলেও অভিযোগ করে তারা। বিস্তারিত পড়ুন
একাধিক কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অনিয়মের অভিযোগে এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে তাজউদ্দীন হলের ভোটদান। বিস্তারিত পড়ুন
ভোটারদের আঙুলে কালি ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম।
তিনি অভিযোগ করেন বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল, রফিক জব্বার হল, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হলে ভোটারদের আঙুলে কালি দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা বলেছেন ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু ভোট শুরু হওয়ার আগেই এ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, সেটা করা হয়নি।’
ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকের সঙ্গে মতবিনিময় সময় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন শিবির-সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’-এর জিএস পদপ্রার্থী মাজহারুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন বলে, ভোটার সংখ্যার চেয়ে বেশি ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হয়েছে।
মাজহারুল ইসলাম আরও বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছিলাম বাড়তি ব্যালট সরানো হোক। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, প্রায় প্রতিটি হলেই অতিরিক্ত ব্যালট রাখা হয়েছে। এর কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা কমিশনের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফলতি এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি মো. শেখ সাদী হাসান।
মো. শেখ সাদী হাসান বলেন, ‘নির্দিষ্ট একটি ছাত্রসংগঠন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ এবং তার সংগঠন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে পুনর্বাসিত করে এমন একটি প্রার্থী, তাঁদের বিষয়ে প্রশাসন খুবই উদাসীন এবং তাঁদের বিভিন্নভাবে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা গতকাল থেকে প্রশাসনকে লিখিত আকারে এবং মৌখিকভাবে কয়েক দফায় জানিয়েছি যে আসলে আমরা চাই যে আমাদের ভোটটা ম্যানুয়ালি গণনা করা হোক।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমরা দেখেছি সকালবেলা কাজী নজরুল ইসলাম হলে শিবির সভাপতি ঢুকেছেন এবং শিক্ষার্থীদের ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করেছেন।’
ডাকসুর মতো ওএমআর পদ্ধতিতে নয়, জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা ম্যানুয়ালিই হবে। জাকসু নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বল হয়েছে, জাহাঈীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা কার্যক্রম ম্যানুয়ালি সম্পন্ন করা হবে।
বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে মওলানা ভাসানী হলের সামনে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে।
জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার সময় ভোটারের আঙুলে মার্কার দিয়ে দাগ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এই কেন্দ্রে এসে এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের হলে ভোট দেওয়ার সময় কোনো ভোটারের আঙুলের ওপর মার্কার দিয়ে দাগ দেওয়া হচ্ছে না। শুধু স্বাক্ষর নিয়ে ব্যালট পেপার দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে হলের পোলিং কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল বলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে তাঁদের কারও কাছে মার্কার সরবরাহ করা হয়নি।
ডাকসুতে হাতের আঙুলে দাগ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হলেও জাকসুতে তা রাখা হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিসিটিভির মাধ্যমে ভোটের নজরদারি করা হচ্ছে।
তবে ২১ নম্বর ছাত্র হলে (সাবেক শেখ রাসেল হল) হাতে মার্কারের দাগ দিয়ে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৭৩৫ জন। বেলা ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৯২টি।
এই কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোসাব্বের হোসেন বলেন, কেন্দ্রে মার্কার ব্যবহারের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা নেই। শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কার ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, সব হলেই ভোটারদের ভোট দেওয়া শেষে আঙুলে কালি দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে অমোচনীয় কালি দেওয়ার জন্য দুটি করে কলম দেওয়া হয়েছে। সব হলেই দেওয়ার কথা। ওই হলে কেন দেওয়া হচ্ছে না তিনি খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানান।
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে সকালে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম লক্ষ করা গেছে।
এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৮৯৭ জন। জাকসুর মোট ২৫টি পদের বিপরীতে ১৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া, ২১টি হল সংসদে ১৫টি করে মোট ৩১৫টি পদের বিপরীতে প্রার্থী রয়েছেন ৪৪৩ জন।
নির্বাচন সামনে রেখে মোট আটটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এর বাইরেও অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আট প্যানেলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্যানেলগুলো হলো—ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ-সমর্থিত ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুর রশিদ জিতুর নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’, প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের প্যানেল ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ এবং ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’।