Ajker Patrika

মিয়ানমারে অর্থনৈতিক দুরবস্থা, ৬০ % কমেছে কিয়েতের মান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯: ২২
মিয়ানমারে অর্থনৈতিক দুরবস্থা, ৬০ % কমেছে কিয়েতের মান

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারের মুদ্রা ‘কিয়েতে’র মান ধারাবাহিকভাবে কমছিল। তবে গত চার সপ্তাহে মার্কিন ডলারের বিপরীতে মুদ্রাটির মান ৬০ শতাংশ কমেছে। ফলে গত আট মাসে নিত্য পণ্য ও জ্বালানির দাম দ্বিগুণ বা তার বেশি বেড়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার ১ ডলার ভাঙিয়ে পাওয়া গেছে ২ হাজার ৭০০ কিয়েত। চলতি মাসের ১ তারিখ তা ছিল ১ হাজার ৬৯৫ কিয়েত। অর্থাৎ এক মাসের কম সময়ে কিয়েতের মান ৬০ শতাংশের বেশি কমেছে। অন্যদিকে অভ্যুত্থানের দিন ১ ডলারের বিপরীতে পাওয়া যেত ১ হাজার ৩৯৫ কিয়েত। বর্তমানে ডলারে ৮৫ টাকা হিসেবে, ১ টাকা ভাঙিয়ে পাওয়া যাবে প্রায় ৩২ কিয়েত।

ডলারের বিপরীতে যখন স্থানীয় মুদ্রার মান কমে তখন নানামুখী সমস্যা হয়। আমদানি ব্যয় ও নিত্য পণ্যের দাম বাড়ে, শেয়ারবাজার অস্থির হয়ে পড়ে। 

গত সপ্তাহে দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের খুচরা বাজারে ৪৮ কেজির একটি চালে বস্তা বিক্রি হয়েছে ৪৮ হাজার কিয়েতে। ফেব্রুয়ারির পর পণ্যটির দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। অথচ মিয়ানমার বিশ্বের অন্যতম চাল রপ্তানিকারক দেশ। আর একই সময়ে বাজারটিতে পেট্রলের দাম দ্বিগুণ হয়ে লিটারে ১ হাজার ৪৪৫ কিয়েতে পৌঁছেছে।

দেশটির বিরাজমান অর্থনৈতিক দুরবস্থার সঙ্গে রাজনৈতিক কারণ সরাসরি যুক্ত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, রাজনৈতিক অবস্থা যত খারাপ হবে, মুদ্রার মান তত কমবে। 

বাজারের স্থিতিশীলতাসহ সার্বিক অর্থনীতি স্বাভাবিক করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হয়। কিন্তু দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। 

বরং উল্টো হয়েছে। নিয়ন্ত্রিত শেয়ারবাজার পরিচালনার যে কৌশল ছিল তা চলতি মাস থেকে তা বাদ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশ্লেষকদের ধারণা, দেশটির রিজার্ভ প্রায় শুকিয়ে গেছে। বিশ্বব্যাংকের হিসেব মতে ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ৭৬৭ কোটি ডলার। 

সম্প্রতি দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোর জোট জাতীয় ঐক্য সরকার (নাগ) দেশব্যাপী বিদ্রোহের ডাক দিয়েছে। ফলে শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সরকারি বাহিনী ও জান্তাবিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেড়েছে। অনেক সরকারি বাহিনীর সদস্য জান্তাবিরোধীদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন। পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য, অভ্যুত্থানের পর সেখানে অন্তত ১ হাজার ১৩৯ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। বন্দী রয়েছেন বা হুলিয়া জারি করা হয়েছে ৬ হাজার ৮৯১ জনের বিরুদ্ধে। 

পাশাপাশি শিগগির সেখানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেখা দিতে পারে, যা স্বাস্থ্যসহ সার্বিক অবস্থাকে আরও খারাপ করবে। এ পরিস্থিতিতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সেখানে ৩০ লাখ মানুষের জরুরি খাদ্য সহায়তা লাগবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক কার্যক্রম বিষয়ক দপ্তর। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত