Ajker Patrika

নেচারে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন

৭ জেলায় মুরগির খামারে চলছে নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার, মারাত্মক ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১১: ২৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাণিজ্যিক মুরগির খামারের ওপর পরিচালিত এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মুরগি পালনে ব্যাপক হারে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে। এই খাতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে, বিশেষ করে মাংসের জন্য পালিত মুরগির মধ্যে।

সমীক্ষা অনুযায়ী, ব্রয়লার (সাদা ব্রয়লার) খামারগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার গড়ে ৭৮ শতাংশ এবং সোনালি মুরগির খামারগুলোতে এই হার ৬৭ শতাংশ এবং ডিম পাড়া মুরগির (লেয়ার) খামারে এই হার ৪১ শতাংশ।

বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে মুরগির মধ্যে তৈরি হওয়া অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বা জীবাণুনাশক ওষুধে প্রতিরোধ ক্ষমতা মানুষ ও প্রাণী—উভয়ের জন্য একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। এ কারণে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বাংলাদেশের মুরগির খামারে এএমইউ ধরন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হয়েছে।

যৌথভাবে গবেষণাটি পরিচালনা করেছে বাংলাদেশের ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর), অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল সেন্টার ফর এপিডেমোলজি অ্যান্ড পপুলেশন হেলথ, বাংলাদেশের আইসিডিডিআর, বি—এর ইনফেকশাস ডিজিজ ডিভিশন, যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া টেকের ডিপার্টমেন্ট অব ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স ইউনিভার্সিটির ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগ। এ ছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার গাটুনের ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড, কুইন্সল্যান্ড অ্যালায়েন্স ফর ওয়ান হেলথ সায়েন্স, স্কুল অব ভেটেরিনারি সায়েন্স ও অস্ট্রেলিয়ার চার্লস স্টুর্ট ইউনিভার্সিটির গুলবালি ইনস্টিটিউটও এই গবেষণায় যুক্ত ছিল।

নেচারে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশের সাতটি জেলার ৩৪০টি বাণিজ্যিক মুরগির খামারে একটি ‘ক্রস-সেকশনাল’ সমীক্ষা চালানো হয়। এর মধ্যে ব্রয়লার খামার ছিল ১০৯ টি, লেয়ার খামার ১০৯টি এবং সোনালি মুরগির খামার ১২২টি।

গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী ৯৩ দশমিক ২ শতাংশ খামারে (অর্থাৎ, ৩৪০টি খামারের মধ্যে ৩১৭ টিতে) উৎপাদন চক্রে অন্তত একবার হলেও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়েছে। জরিপ শুরুর আগের ১৪ দিনে ৬৭ শতাংশ খামারি মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছেন। মাংস উৎপাদনকারী মুরগির খামারে—যেমন ব্রয়লারের ক্ষেত্রে ৭৮ শতাংশ ও সোনালি মুরগির ক্ষেত্রে ৬৭ দশমিক ২ শতাংশ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহার করা হয়েছিল। অন্যদিকে ডিম উৎপাদনকারী লেয়ার মুরগির খামারে এই হার ছিল ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ।

গবেষণায় বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্পে নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের চিত্র উঠে এসেছে। এর ফলে, মাংসে ওষুধের অবশিষ্টাংশ থেকে শুরু করে জীবাণুনাশক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই খামারিদের এই ধরনের ওষুধ ব্যবহার সম্পর্কিত জ্ঞান, মনোভাব ও অনুশীলন (কেএএপি) উন্নয়নে প্রশিক্ষণ জরুরি, যাতে প্রাণীর স্বাস্থ্য, মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে যা জানা গেল

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে কী ধরনের পণ্য থাকে

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত