Ajker Patrika

বিনা রোগে মৃত্যুর ৫৪ শতাংশই অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যায়

মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ১১
বিনা রোগে মৃত্যুর ৫৪ শতাংশই অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যায়
প্রতীকী ছবি

দেশে প্রতিদিন প্রায় অর্ধলাখ মানুষ নানাভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। কারও আঘাত মৃদু, কারও মাঝারি, আবার কারও আঘাত মারাত্মক হয়। মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রায় ৪০০ জন আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করেন, আর মারা যান আড়াই শতাধিক। আঘাতের কারণে যাঁরা মারা যান তাঁদের অর্ধেকেরই মৃত্যুর কারণ তিনটি অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা। আর তা হলো আত্মহত্যা, পানিতে ডুবে মৃত্যু এবং পড়ে গিয়ে মৃত্যু।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণা প্রতিবেদনটি ‘প্রিভেলেন্স অ্যান্ড রিস্ক ফ্যাক্টরস ফর মর্টালিটি অ্যান্ড মোরবিডিটি ইন রিলেশন টু ন্যাশনাল হেলথ ইনজুরি সার্ভে অব বাংলাদেশ ২০২২-২৩’ শিরোনামে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।

গবেষণায় যেসব অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা উঠে এসেছে, তা সমাজে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান থাকলেও এসব সমস্যা রোধে প্রয়োজনীয় মনোযোগ ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ফলে এসব সমস্যা স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর বাড়তি চাপ যেমন সৃষ্টি করছে, তেমনি বেড়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্য ব্যয়। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক মানুষ চিরতরে কর্মক্ষমতা হারাচ্ছেন এসব কারণে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে প্রতিবছর ১ কোটি ৬০ লাখের বেশি মানুষ নানাভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। সে হিসাবে দৈনিক ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ আঘাত পান। মারাত্মক আঘাতে বছরে প্রায় ১ লাখ মানুষ মারা যান। অর্থাৎ দৈনিক মারা যান গড়ে ২৬৮ জন। একইভাবে প্রতিবছর ১ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি এবং দৈনিক ৩৮০ জন আজীবনের জন্য পক্ষাঘাতগ্রস্ত হন।

মারাত্মক আঘাতে প্রাণ হারানোদের মধ্যে প্রতিবছর সাড়ে ২০ হাজারই আত্মহত্যার কারণে মারা যান, যার দৈনিক গড় ৫৬ জন। এ ছাড়া পানিতে ডুবে মারা যান বছরে ১৮ হাজারের বেশি মানুষ, দৈনিক গড়ে ৫০ জন। গাছ বা অন্যান্য উঁচু স্থান থেকে পড়ে বছরে সোয়া ১৪ হাজার এবং দিনে গড়ে ৩৯ জন মানুষ মারা যান। এ ছাড়া যন্ত্রপাতির আঘাত, ধারালো বস্তুতে কেটে যাওয়া, দুর্ঘটনার কারণে শ্বাসরোধ, দগ্ধ হওয়া, ভোঁতা বস্তুর আঘাত, প্রাণী বা কীটপতঙ্গের কামড়, সহিংসতা, বিদ্যুতায়িত হওয়া এবং সড়ক দুর্ঘটনার কারণেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে এই ১২ ধরনের আঘাতের কারণে দেশে প্রতিবছর মোট ৯৮ হাজার ৪২২ জন মানুষ মারা যান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিআইপিআরবির গবেষণায় উঠে আসা যে বিষয়টি আলাদা করে উল্লেখ করার মতো তা হলো, আঘাতের কারণে দৈনিক মোট মৃত্যুর ৫৪ শতাংশেরই কারণ আত্মহত্যা, পানিতে ডুবে যাওয়া এবং উঁচু স্থান থেকে পড়ে যাওয়া। এই তিন কারণে সৃষ্ট আঘাতে দিনে গড়ে ১৪৫ জন মানুষ মারা যান। এসব বিষয়কে অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), আন্তর্জাতিক ও দেশীয় স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আত্মহত্যা, পানিতে ডুবে মৃত্যু এবং পড়ে যাওয়া—এই তিনটি স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধযোগ্য। তবে গবেষণা, নীতি ও অর্থায়নে যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়ায় এগুলোকে অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা হয়। এ ছাড়া থেলাসেমিয়া, কুষ্ঠরোগ, সাপের দংশনসহ বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগকেও এভাবে বিবেচনা করা হয়।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘অসংক্রামক রোগ ও অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যাগুলো নিয়ে ৩৫টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সরকার ইতিমধ্যে বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিয়েছে এবং পানিতে ডুবে মৃত্যু, আত্মহত্যা ইত্যাদির মতো সমস্যাগুলো চিহ্নিত করছে। এসব সমস্যায় প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম এখনো সীমিত। এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ চলছে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতাও নেওয়া হয়েছে।’

ডব্লিউএইচওর ২০১০, ২০২১ ও ২০২৩ সালের তিনটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি ও সমস্যা এখনো অবহেলিত রয়ে গেছে। সংস্থাটির ভাষায়, অবহেলাজনিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হলো এমন সমস্যা, যা মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলে। কিন্তু বৈশ্বিক ও জাতীয় নীতি, গবেষণা, অর্থায়ন কিংবা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপে তা যথেষ্ট গুরুত্ব পায় না। অনেক সময় এসব সমস্যা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য আলোচনায়ও স্থান পায় না। আক্রান্ত জনগোষ্ঠী সাধারণত দরিদ্র ও প্রান্তিক শ্রেণির হওয়ায় তাদের কণ্ঠস্বর নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে শোনা যায় না। তা ছাড়া সামাজিক কলঙ্ক, রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে কার্যকর প্রতিরোধব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও এগুলো প্রায়ই উপেক্ষিত থেকে যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, আত্মহত্যায় বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর সোয়া ৭ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। এটি ১৫-২৯ বছর বয়সী তরুণদের মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর একটি। তবে সামাজিক কলঙ্ক, আইনি জটিলতার কারণে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও নীতি-উদ্যোগ সীমিত থেকে যাচ্ছে।

অন্যদিকে, পানিতে ডুবে মৃত্যু নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। প্রতিবছর এ কারণে মারা যান ৩ লাখ মানুষ। বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণও এটি। সাঁতার শেখানো কিংবা পানিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মতো কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও নীতি পর্যায়ে এ বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয় না। একইভাবে উঁচু স্থান থেকে পড়ে যাওয়া বা ফ্যালস বিশ্বের দ্বিতীয় প্রধান অনিচ্ছাকৃত আঘাতই মৃত্যুর কারণ। প্রতিবছর ৬ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ এ ধরনের আঘাতে প্রাণ হারান। বিশেষত বয়স্কদের জন্য এটি বড় ঝুঁকি হলেও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও বিনিয়োগ এখনো সীমিত।

আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে বড়সংখ্যক মানুষের মৃত্যু এবং লক্ষাধিক মানুষ আজীবনের জন্য পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়াটা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেন, ‘অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যাগুলো নিয়ে দেশে কাজ কম। এ বিষয়ে রেফারেন্স বা প্রমাণও সীমিত। ফলে সরকারের মনোযোগও কম। দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন খরচসাপেক্ষ এবং ফলও দ্রুত পাওয়া যায় না, তাই অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা মূলত চিকিৎসাকেন্দ্রিক। যাঁরা আঘাতপ্রাপ্ত বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হন, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষ। ফলে তাঁদের সমস্যাকে যথাযথভাবে বিবেচনা করা হয় না।’

সিআইপিআরবির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম ফজলুর রহমান বলেন, আঘাতজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে তাঁদের গবেষণা প্রতিবেদনটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। গবেষণা জরিপে দেখা গেছে, পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা কমলেও, আত্মহত্যা বেড়েছে। এসব সমস্যা ‘অবহেলিত’ হিসেবে ধরা হয়, কারণ এ বিষয়ে যথেষ্ট আলোচনা বা কার্যক্রম নেই। তিনি বলেন, ‘সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, তবে অন্য ক্ষেত্রগুলোতে তা হয়নি। ক্ষতির মুখে পড়ছে প্রধানত দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। এসব আঘাত এবং মৃত্যু প্রায় অদৃশ্য বা ‘ইনভিজিবল ইনজুরি অ্যান্ড ডেথ’ হিসেবে রয়ে যাচ্ছে।’

ওই গবেষণাটিতে বহুধাপী ক্লাস্টার নমুনা গ্রহণ পদ্ধতি (মাল্টিস্টেজ ক্লাস্টার স্যাম্পলিং) ব্যবহার করা হয়েছে। গ্রামীণ ও শহরভিত্তিক স্তরীকরণ করা হয় এবং দেশের সব ৬৪ জেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। জরিপে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক সদ্য উন্নত প্রাইমারি স্যাম্পলিং ইউনিট (পিএসইউ) ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মোট ৪ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি মানুষের (প্রায় সোয়া এক লাখ পরিবার) তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ৫২ শতাংশ মানুষ ফার্মেসি বা ওষুধের দোকানে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায় ১৫ শতাংশ, বেসরকারি হাসপাতালে ৯ শতাংশ, জেলা হাসপাতালে ৯ শতাংশ, চিকিৎসকের চেম্বারে ৬ শতাংশ, বিশেষায়িত হাসপাতালে ৪ শতাংশ। কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে যায় মাত্র ১ শতাংশ।

পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেকট) অধ্যাপক আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘আত্মহত্যা, পানিতে ডুবে মৃত্যু এবং উঁচু থেকে পড়ে যাওয়া নেগলেকটেড পাবলিক হেলথ ইস্যু, কারণ এগুলো সাধারণ মৃত্যুর তুলনায় ব্যতিক্রম এবং যথেষ্ট আলোচনায় আসে না। তথ্যও সঠিকভাবে রিপোর্ট হয় না। গবেষণার ফলে আমরা জানতে পেরেছি কত মানুষ আহত, পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা মারা যান। এখন এই গবেষণার ফল ব্যবহার করে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুরুষদের টাক সমস্যার সমাধান মিলল ৫ বছর আগের এক ব্রণের ওষুধে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
অনুমোদন পেলে এটি হবে গত ৩০ বছরে প্রথম কার্যকর টাক প্রতিরোধের ওষুধ। ছবি: সংগৃহীত
অনুমোদন পেলে এটি হবে গত ৩০ বছরে প্রথম কার্যকর টাক প্রতিরোধের ওষুধ। ছবি: সংগৃহীত

টাকের সমস্যা বা অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেশিয়া বিশ্বজুড়ে পুরুষদের মধ্যে দেখা দেওয়া সবচেয়ে সাধারণ চুল পড়ার সমস্যা। সাধারণত ২০ বছর বয়সের শেষ ভাগ বা ৩০-এর শুরুর দিকে অনেক পুরুষই এ সমস্যায় ভোগেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক বলছে, মাথার স্ক্যাল্প বা ত্বকে চুল ঝরে পড়ার পর সেই চুল আর স্বাভাবিকভাবে ফিরে আসে না। ধীরে ধীরে চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, কপালের দুপাশ থেকে হেয়ারলাইন পিছিয়ে যাওয়া—সবই টাকের লক্ষণ।

চুল পড়া রোধে নানা গবেষণা হয়েছে, বাজারে এসেছে বহু ওষুধ। কিন্তু এত দিন কোনো চিকিৎসাই উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখাতে পারেনি। অবশেষে ‘ক্লাসকোটেরন’ (clascoterone) নামের একটি ওষুধে আশার আলো দেখছেন গবেষকেরা। প্রায় পাঁচ বছর আগে ব্রণ চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে এটি অনুমোদন পেয়েছিল।

আইরিশভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কসমো ফার্মাসিউটিক্যালস নভেম্বরে ওষুধটির দুটি (ফেজ-৩) ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশ করে। এতে মোট ১ হাজার ৫০০ পুরুষ অংশ নেন। এক দলকে দেওয়া হয় প্লাসেবো, অন্য দল ব্যবহার করে ক্লাসকোটেরন।

প্রথম ট্রায়ালে দেখা গেছে, ক্লাসকোটেরন ব্যবহারে চুল ফিরে আসার ক্ষেত্রে ৫৩৯ শতাংশ উন্নতি ঘটেছে। দ্বিতীয় ট্রায়ালে এই উন্নতির হার ছিল ১৬৮ শতাংশ।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ওষুধটি নিরাপদ ও সহনীয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। কোম্পানির সিইও জিওভান্নি দি নাপোলি বলেন, ‘এটি চুল পড়া রোগীদের জন্য চিকিৎসার এক নতুন যুগের দরজা খুলে দেবে।’

এই আশাব্যঞ্জক ফলের কারণে ওষুধটি আগামী বছর ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদন পেতে পারে। অনুমোদন পেলে এটি হবে গত ৩০ বছরে প্রথম কার্যকর টাক প্রতিরোধের ওষুধ। উল্লেখ্য, এফডিএ ২০২০ সালে এই ওষুধকে ব্রণের চিকিৎসার জন্য অনুমোদন দিয়েছিল। ওষুধটি তৈরি করেছে ক্যাসিওপিয়া নামের একটি প্রতিষ্ঠান, যা এখন কসমোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

পুরুষদের টাক কীভাবে বাড়ে—

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক বলছে, পুরুষদের টাক ধীরে ধীরে সাতটি ধাপে বাড়ে।

ধাপ ১: মাথায় খুব কম বা কোনো চুল পড়া দেখা যায় না।

ধাপ ২: কপালের দুপাশ (টেম্পল) এবং কানের পেছন থেকে চুল কমতে থাকে।

ধাপ ৩: কপালের পাশে গভীর হেয়ারলাইন রিসেশন হয়, হেয়ারলাইনের আকৃতি ‘M’ বা ‘U’-এর মতো হয়।

ধাপ ৪: মাথার ওপরের অংশ (ক্রাউন) থেকে চুল পড়া শুরু হয়।

ধাপ ৫: কপালের রিসেশন ধীরে ধীরে ক্রাউনের টাক জায়গার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়।

ধাপ ৬: টেম্পল ও ক্রাউনের মাঝের অংশ থেকেও চুল উধাও হতে থাকে।

ধাপ ৭: মাথার ওপরে একেবারেই চুল থাকে না, শুধু চারপাশে পাতলা একটি রিংয়ের মতো চুল থাকে।

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্লাসকোটেরন অনুমোদন পেলে অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেশিয়ায় বা টাকের সমস্যায় ভোগা কোটি মানুষের জন্য এটি হবে যুগান্তকারী চিকিৎসা। যাঁরা এখনো চুল ফিরিয়ে আনার জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করছেন, তাঁরা প্রথমবারের মতো কার্যকর সমাধান পেতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওষুধ খাতে এপিআই নীতি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

অ্যালায়েন্স ফর হেলথ রিফর্মস বাংলাদেশ (এএইচআরবি) ওষুধশিল্পকে কৌশলগতভাবে শক্তিশালী ও জাতীয় স্বাস্থ্যনিরাপত্তা জোরদার করতে অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) নীতি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো খোলাচিঠিতে এই নীতিকে ‘জাতীয় স্বার্থে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ হিসেবে বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও এএইচআরবির আহ্বায়ক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ এবং স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন।

চিঠিতে বলা হয়, দেশে এখন প্রায় সব ধরনের ওষুধ উৎপাদন সম্ভব হলেও এপিআইয়ের বড় অংশই আমদানির ওপর নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেই উৎপাদনব্যবস্থা ও জাতীয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তাঝুঁকিতে পড়ে। করোনাকালে এই দুর্বলতা বিশেষভাবে প্রকাশ পেয়েছিল। স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এপিআই, ভ্যাকসিন, আইভিডি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদনে দ্রুত দেশীয় সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। এ জন্য গবেষণা–উন্নয়নে বিনিয়োগ, প্রণোদনা ও উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে ধাপে ধাপে আমদানি সীমিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতির সফল বাস্তবায়ন উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, কঠোর তদারকি ও দৃঢ় রাজনৈতিক নেতৃত্বে বড় নীতি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জ্ঞানভিত্তিক শিল্পে রূপান্তর না ঘটলে দেশের ট্যাক্স–জিডিপি অনুপাত ৭ শতাংশের নিচে থাকবে। ফার্মাসিউটিক্যাল খাত এই রূপান্তরের বড় সুযোগ তৈরি করতে পারে। ভারতে মোট রপ্তানির ৫ শতাংশ আসে ওষুধশিল্প থেকে, যেখানে বাংলাদেশে তা মাত্র ০.৫ শতাংশ। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোয়েল মকিয়ের উদ্ধৃত করে চিঠিতে বলা হয়, ‘জ্ঞানই আধুনিক অর্থনীতির প্রধান চালক।’ তাই খাতটিকে টেকসই জ্ঞানভিত্তিক শিল্পে রূপান্তরিত করা জরুরি।

এপিআই নীতি কার্যকর করতে পাঁচটি জরুরি পদক্ষেপ উল্লেখ করা হয়েছে—প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত বাধা দূর করা, আকর্ষণীয় প্রোডাকশন লিংকড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিম চালু করা, আর অ্যান্ড ডি-তে ধারাবাহিক সরকারি অনুদান, একাডেমিয়া–ইন্ডাস্ট্রি সহযোগিতা জোরদার এবং নির্দিষ্ট সময়সীমায় বাস্তবায়নের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত স্থায়ী টাস্কফোর্স গঠন।

চিঠিতে বলা হয়, এ নীতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে এগোবে না। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা ও দ্রুত তদারকি নিশ্চিত করলে এপিআই নীতি কাগুজে অবস্থায় আটকে থাকবে না। আমদানিনির্ভরতা কমবে, বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে, রপ্তানি বাড়বে, দক্ষ কর্মসংস্থান বাড়বে এবং ট্যাক্স–জিডিপি অনুপাত উন্নত হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এটি কেবল প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা, সক্ষমতা ও জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত কৌশলগত রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশে এ বছর ৪ কোটি ২৫ লাখ শিশু টাইফয়েড টিকা পেয়েছে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স জানিয়েছেন, দেশে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন ২০২৫ উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৪ কোটি ২৫ লাখের বেশি শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যা মোট লক্ষ্য শিশুর ৯৭ শতাংশের বেশি।

আজ রোববার (৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে রানা ফ্লাওয়ার্স এ তথ্য জানান।

বিবৃতিতে রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, এই অর্জন প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ সরকার শিশুদের প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে সুরক্ষা এবং পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক ও মানসিক চাপ কমাতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি উল্লেখ করেন, টিসিভি চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশ টাইফয়েড প্রতিরোধে বিশ্বের অষ্টম দেশ হিসেবে অগ্রগামী অবস্থানে এসেছে।

এই টিকা কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়ন শিশুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিসেফের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) করা সর্বশেষ মাল্টিপল ইনডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভেতে (এমআইসিএস) দেখা গেছে, বাংলাদেশে মাত্র ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষের নিরাপদ ব্যবস্থাপনার আওতায় পানি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, পানির সব ধরনের উৎসের প্রায় অর্ধেক (৪৭ দশমিক ২ শতাংশ) এবং প্রতি ১০টির মধ্যে আটটি পরিবারে ব্যবহৃত পানির নমুনায় (৮৪ দশমিক ৯ শতাংশ) ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়া দূষণ রয়েছে। এসব সংখ্যা এটাই বোঝায় যে, লাখ লাখ শিশুর জন্য টাইফয়েডের মতো অসুখে আক্রান্ত হওয়া খুবই সহজ। তারা প্রতিটি দিন এই ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে এবং সাধারণ এক গ্লাস পানিই তাদের জন্য ভয়ানক বিপদ নিয়ে আসতে পারে।

রানা ফ্লাওয়ার্স আরও বলেন, ‘এ কারণে ইউনিসেফ এ ক্যাম্পেইন শুরু করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে জরুরিভাবে সহায়তা করে। প্রতিটি পরিবারের জন্য পরিষ্কার ও নিরাপদ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার আগপর্যন্ত শিশুদের গুরুতর অসুস্থতা থেকে সুরক্ষা দেওয়া, তাদের ভবিষ্যতের সুরক্ষা এবং বাবা-মায়েদের দুশ্চিন্তামুক্ত রাখার জন্য আমরা সবচেয়ে শক্তিশালী যেসব সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা দিতে পারি, তার মধ্যে টিসিভি টিকা অন্যতম।’

রানা ফ্লাওয়ার্স জানান, ক্যাম্পেইন সফল করতে ইউনিসেফ ৫ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিসিভি সরবরাহ করেছে, নতুন কোল্ড রুম স্থাপন ও ভ্যাক্সইপিআই (VaxEPI) প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা উন্নত করেছে। পাশাপাশি দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বাড়াতেও সহায়তা করেছে সংস্থাটি।

রানা ফ্লাওয়ার্স অভিভাবক ও স্থানীয় কমিউনিটির সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, জনসম্পৃক্ততা ও সচেতনতা তৈরিতে ইউনিসেফ ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সহযোগীকে নিয়ে ১২ কোটির বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, দেশের সব অঞ্চলের শিশুকে—জলাভূমি, পাহাড়ি এলাকা, উপকূলীয় অঞ্চল, ভ্রাম্যমাণ জনগোষ্ঠী, আদিবাসী সম্প্রদায়, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, চা-বাগানের শ্রমিকদের সন্তান এবং রোহিঙ্গা শিবিরে থাকা ৪ লাখ ২৪ হাজার শিশুকে—এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আনা হয়েছে।

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিকে (ইপিআই) তাদের নেতৃত্ব ও নিরলস প্রচেষ্টার জন্য আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের সহায়তার কারণেই একসময় দেশের সব শিশুকে টিকা দেওয়ার এই কর্মসূচি নেওয়া সম্ভব হয়েছে। এই ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য আমাদের পাশে থাকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও অন্য অংশীজনদের ভূমিকাও আমরা স্মরণ করছি।’

রানা ফ্লাওয়ার্স গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ভুল তথ্যের যুগে গণমাধ্যম পরিবারগুলোকে আস্থাপূর্ণ তথ্য দিয়ে টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

বাংলাদেশ ইউনিসেফের প্রতিনিধি আরও বলেন, ‘আমাদের শিশুদের জন্য ভালো কিছু করার যেসব প্রতিশ্রুতি আমরা করতে পারি, তার মধ্যে টিকা প্রদান সবচেয়ে শক্তিশালী—এটি কেবল টিকার নয়, বরং স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও আশার প্রতিশ্রুতি। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিটি শিশুর জন্য টাইফয়েডমুক্ত ভবিষ্যতের দিকে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ নিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ থেকে 
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৮
ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে তর্কাতর্কির ঘটনার পর সেই চিকিৎসককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসদাচরণ করায়’ তাঁকে শোকজ নোটিশও দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে হবে।

আজ শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিকেল ৪টার দিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস।

ওই চিকিৎসককে জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মাইনউদ্দিন খান। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা সরকারি চাকরি বিধিমালার পরিপন্থী।

উল্লেখ্য, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে আসেন স্বাস্থ্যের ডিজি মো. আবু জাফর। সেমিনারে যোগ দেওয়ার আগে তিনি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটার পরিদর্শনে গিয়ে ডিজি কক্ষের ভেতরে টেবিল থাকার কারণ জানতে চান চিকিৎসকদের কাছে। এ সময় জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ধনদেব চন্দ্র বর্মণ উত্তর দিতে গেলে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।

প্রসঙ্গত, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ সার্ভিসের ইনচার্জ হিসেবে ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট থেকে দায়িত্ব পালন করছেন ধনদেব চন্দ্র বর্মণ। চলতি বছরের জুলাই মাসে আবাসিক সার্জন থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান তিনি।

মমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের ইনচার্জ ও সহকারী অধ্যাপক ডা. ধনদেব বর্মণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি চাকরির শেষ বয়সে চলে এসেছি। আমার বন্ধুবান্ধব সবাই অধ্যাপক পদে রয়েছেন। আমাকে সারাজীবন লেকচারার হিসেবেই থাকতে হয়েছে। স্বাস্থ্যের ডিজি আমার সমবয়সী হবেন। আমি হাসপাতালের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা বলেছি তাঁকে। এটি শুনে তিনি রেগে গেছেন। রোগী ও ডাক্তারদের সামনে আমার সঙ্গে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি ডিজি তাই আমার সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।’

ধনদেব বর্মণ আরও বলেন, ‘আমাকে নাকি শোকজ করা হয়েছে। আমি আর চাকরি করব না। নিজে থেকেই চলে যাব দু-এক দিনের মধ্যে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত