আজকের পত্রিকা ডেস্ক

অনেক ভারতীয় সুস্বাস্থ্যের আশায় নিজের মূত্র পান করে থাকেন। আবার অনেকে গো-মূত্রও পান করেন। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই দাবি করতেন, প্রতিদিন এক গ্লাস করে নিজের মূত্রপান অনেক রোগ সারিয়ে তোলে ও দীর্ঘজীবন লাভে সহায়তা করে।
তবে কেবল মোরারজি দেশাইয়ের মতো ভারতীয়রাই নন, পশ্চিমা দুনিয়াতেও নিজের মূত্রপানের বিষয়টি বেশ পরিচিত। জনপ্রিয় টিভি তারকা বেয়ার গ্রিলস বলেন, তিনি বেঁচে থাকার জন্য মূত্রপান করেন। পাশাপাশি, তিনি তাঁর রিয়্যালিটি শো’র প্রতিযোগীদেরও এটি শেখান। মেক্সিকোর বক্সার হুয়ান ম্যানুয়েল মার্কেজ ২০০৯ সালে ফ্লয়েড মেওয়েদারের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রশিক্ষণের সময় এই থেরাপি অনুশীলন করেছিলেন। তবে মার্কেজ হেরে গিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা পরেশ রাওয়ালও মূত্রপান করে আলোচনায় এসেছে। তিনি সম্প্রতি পায়ের চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক অজয় দেবগনের বাবা বীরু দেবগন। তিনি পরেশ রাওয়ালকে মূত্রপানের পরামর্শ দেন।
এই বিষয়ে পরেশ বলেন, ‘আমার হাঁটুর চোটের কথা জানার পর তিনি (বীরু) আমাকে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে নিজের মূত্র পান করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সব যোদ্ধারা এটা করে। এই অভ্যাস করতে পারলে জীবনে কখনোই আর চোটজনিত কোনো সমস্যা ভোগাতে পারবে না। এ ছাড়া তিনি আমাকে অ্যালকোহল, রেড মিট আর তামাক পরিহারের পরামর্শ দেন।’
পরেশ আরও বলেন, ‘আমি নিজের প্রস্রাব বিয়ারের মতো করে পান করেছি। টানা ১৫ দিন এই পথ্য চলেছে। এরপর চিকিৎসকেরা আমার এক্স–রে রিপোর্ট দেখে একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন!’ তাঁর ভাষ্যমতে, এ চোট সারতে আড়াই মাসের মতো লাগবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মূত্র পানের ফলে সেরে গেছে মাত্র ১৫ দিনে!
যাই হোক, এই তারকারা যে থেরাপি অনুশীলন করেন—তার নাম ইউরোফাজিয়া, যা মূত্র থেরাপি নামেও পরিচিত। এটি হলো প্রস্রাব পানের অভ্যাস। নিজের, অন্যের বা পশুর প্রস্রাব যাই হোক না কেন, মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে ওষুধ হিসেবে এটি পান করে আসছে। মূত্র থেরাপির উপকারিতা সম্পর্কে বেশির ভাগ দাবিই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা প্রাচীন লেখার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত, যার কোনো জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
তবে প্রস্রাব পানে বেশ কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে, যার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হাঁপানি, অ্যালার্জি, বদহজম, ত্বক কুঁচকে যাওয়া এবং এমনকি ক্যানসারের চিকিৎসায়ও প্রস্রাব ব্যবহৃত হতো। রোমান কবি ক্যাটুলাস বিশ্বাস করতেন, প্রস্রাব দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে—সম্ভবত এর অ্যামোনিয়া উপাদানের কারণে।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের একটি প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে ডাক্তাররা প্রস্রাবের স্বাদ নিতেন এটি কতটা মিষ্টি তা জানার জন্য। এখন অবশ্য প্রস্রাবে গ্লুকোজ পরীক্ষার জন্য ইউরিন টেস্ট স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ নেচারোপ্যাথ জন ডব্লিউ আর্মস্ট্রং ‘দ্য ওয়াটার অব লাইফ: এ ট্রিটিজ অন ইউরিন থেরাপি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন, নিজের প্রস্রাব পান করলে এবং ত্বকে মালিশ করলে বড় ধরনের অসুস্থতাও নিরাময় হতে পারে।
ঐতিহাসিকভাবে, চিকিৎসার বিকল্পের অভাবে অসুস্থতা নিরাময়ে প্রস্রাব পান হয়তো যুক্তিসংগত ছিল। কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের পরও উল্লিখিত প্রস্রাব পানকারী তারকাদের মতো অনেকের মাঝেই আজও এই অভ্যাস প্রচলিত। নাইজেরিয়ায় শিশুদের খিঁচুনির ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে প্রস্রাব ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। চায়না ইউরিন থেরাপি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে, প্রস্রাব পান করা হলে এবং তা দিয়ে ত্বক ধৌত করা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ত্বকের ঘা সারাতে পারে।
শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য প্রস্রাব তৈরি হয়। এর বেশির ভাগটাই পানি (প্রায় ৯৫ শতাংশ) এবং কয়েকটি বর্জ্য পদার্থ—যার মধ্যে যকৃতে প্রোটিন ভাঙার পর তৈরি হওয়া ইউরিয়া (২ শতাংশ), মাংসপেশির শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার পর অবশিষ্ট থাকা ক্রিয়েটিনিন এবং লবণ। এখন প্রশ্ন হলো—প্রস্রাব যদি কেবল বর্জ্যই হয়, তাহলে এটি পান করা উপকারী হতে পারে কীভাবে?
কিডনি ছাঁকনির মতো কাজ করে—কেবল বিষাক্ত পদার্থই নয়, শরীরের অপ্রয়োজনীয় সবকিছুই এটি বের করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিন যা প্রয়োজন নেই তা প্রস্রাবে পাওয়া যায়। প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এই ভিটামিন এবং খনিজগুলো নষ্ট না হয়ে পুনর্ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া প্রস্রাবে পাওয়া অন্যান্য হরমোন, প্রোটিন এবং অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। তবে এক গ্লাস প্রস্রাবে এই পদার্থগুলোর পরিমাণ উপকারী হওয়ার মতো যথেষ্ট নয়, বরং এর চেয়ে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট বেশি কার্যকর হতে পারে।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, এটি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করতে এবং অটোইমিউন (স্ব-রোগপ্রতিরোধ) অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। প্রস্রাবে থাকা অ্যান্টিবডিগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে বলে মনে করা হয়।
প্রস্রাব পানের দাবি করা অন্যান্য আধুনিক ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে শরীর পরিষ্কার এবং ডিটক্সিফিকেশন। কিছু লোক দাবি করেছেন, নিয়মিত রিসাইকেল করা প্রস্রাব পান করলে প্রস্রাব এবং রক্ত আরও পরিষ্কার হয়, বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। তবে, এই দাবিগুলোর স্বপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
কিছু সামাজিক মাধ্যম ইনফ্লুয়েন্সার দাবি করেন, প্রস্রাবের নিরাময় ক্ষমতা আছে এবং এটি পান করলে বা ত্বকে লাগালে ব্রণ ও সংক্রমণের মতো ত্বকের সমস্যা ভালো হয়। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রস্রাবে ইউরিয়া থাকে। আর প্রায়শই ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকের পরিচর্যা পণ্যগুলোতে ইউরিয়া যোগ করা হয়। কিন্তু প্রস্রাবে ইউরিয়ার ঘনত্ব এত বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই যে এটি কার্যকর হবে।
প্রস্রাবে ডিহাইড্রোপিয়ান্ড্রোস্টেরনও থাকে। এটি শরীরের তৈরি একটি স্টেরয়েড হরমোন যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। এটিকে অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসেবে বাজারজাত করা হয়েছে। তবে এর কার্যকারিতা প্রদর্শনের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, প্রস্রাব জীবাণুমুক্ত। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রস্রাবে প্রাকৃতিকভাবেই কম মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে এবং প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার সময় ব্যাকটেরিয়া দিয়ে আরও দূষিত হতে পারে। তাই প্রস্রাব পান করলে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশ করতে পারে এবং পাকস্থলী সংক্রমণের মতো আরও অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার পর আরও ঘনীভূত হয়। ফলে কেউ যদি প্রস্রাব পান করে তাহলে কিডনিকে অতিরিক্ত পদার্থ পরিস্রাবণ করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হতে পারে, যা সেগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এই লবণগুলো প্রক্রিয়াজাত করার জন্য কিডনির পানির প্রয়োজন হয়।
এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে পুনরায় প্রস্রাব পান করার মাধ্যমে এই ওষুধগুলোর বিষাক্ত মাত্রা শরীরে জমা হতে পারে।
মূলধারার চিকিৎসা সমাজ মূত্র থেরাপিকে সমর্থন করে না। কারণ, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অল্প পরিমাণে প্রস্রাব পান করা সম্ভবত ক্ষতিকর নয়। তবে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে এমন অন্যান্য থেরাপি গ্রহণ করাই ভালো।
লেখক: যুক্তরাজ্যের কিংস্টোন ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি প্র্যাকটিস বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক দীপা কামদার। লিখেছেন বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য কনভারসেশনে।

অনেক ভারতীয় সুস্বাস্থ্যের আশায় নিজের মূত্র পান করে থাকেন। আবার অনেকে গো-মূত্রও পান করেন। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই দাবি করতেন, প্রতিদিন এক গ্লাস করে নিজের মূত্রপান অনেক রোগ সারিয়ে তোলে ও দীর্ঘজীবন লাভে সহায়তা করে।
তবে কেবল মোরারজি দেশাইয়ের মতো ভারতীয়রাই নন, পশ্চিমা দুনিয়াতেও নিজের মূত্রপানের বিষয়টি বেশ পরিচিত। জনপ্রিয় টিভি তারকা বেয়ার গ্রিলস বলেন, তিনি বেঁচে থাকার জন্য মূত্রপান করেন। পাশাপাশি, তিনি তাঁর রিয়্যালিটি শো’র প্রতিযোগীদেরও এটি শেখান। মেক্সিকোর বক্সার হুয়ান ম্যানুয়েল মার্কেজ ২০০৯ সালে ফ্লয়েড মেওয়েদারের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রশিক্ষণের সময় এই থেরাপি অনুশীলন করেছিলেন। তবে মার্কেজ হেরে গিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা পরেশ রাওয়ালও মূত্রপান করে আলোচনায় এসেছে। তিনি সম্প্রতি পায়ের চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক অজয় দেবগনের বাবা বীরু দেবগন। তিনি পরেশ রাওয়ালকে মূত্রপানের পরামর্শ দেন।
এই বিষয়ে পরেশ বলেন, ‘আমার হাঁটুর চোটের কথা জানার পর তিনি (বীরু) আমাকে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে নিজের মূত্র পান করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সব যোদ্ধারা এটা করে। এই অভ্যাস করতে পারলে জীবনে কখনোই আর চোটজনিত কোনো সমস্যা ভোগাতে পারবে না। এ ছাড়া তিনি আমাকে অ্যালকোহল, রেড মিট আর তামাক পরিহারের পরামর্শ দেন।’
পরেশ আরও বলেন, ‘আমি নিজের প্রস্রাব বিয়ারের মতো করে পান করেছি। টানা ১৫ দিন এই পথ্য চলেছে। এরপর চিকিৎসকেরা আমার এক্স–রে রিপোর্ট দেখে একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন!’ তাঁর ভাষ্যমতে, এ চোট সারতে আড়াই মাসের মতো লাগবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মূত্র পানের ফলে সেরে গেছে মাত্র ১৫ দিনে!
যাই হোক, এই তারকারা যে থেরাপি অনুশীলন করেন—তার নাম ইউরোফাজিয়া, যা মূত্র থেরাপি নামেও পরিচিত। এটি হলো প্রস্রাব পানের অভ্যাস। নিজের, অন্যের বা পশুর প্রস্রাব যাই হোক না কেন, মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে ওষুধ হিসেবে এটি পান করে আসছে। মূত্র থেরাপির উপকারিতা সম্পর্কে বেশির ভাগ দাবিই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা প্রাচীন লেখার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত, যার কোনো জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
তবে প্রস্রাব পানে বেশ কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে, যার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হাঁপানি, অ্যালার্জি, বদহজম, ত্বক কুঁচকে যাওয়া এবং এমনকি ক্যানসারের চিকিৎসায়ও প্রস্রাব ব্যবহৃত হতো। রোমান কবি ক্যাটুলাস বিশ্বাস করতেন, প্রস্রাব দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে—সম্ভবত এর অ্যামোনিয়া উপাদানের কারণে।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের একটি প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে ডাক্তাররা প্রস্রাবের স্বাদ নিতেন এটি কতটা মিষ্টি তা জানার জন্য। এখন অবশ্য প্রস্রাবে গ্লুকোজ পরীক্ষার জন্য ইউরিন টেস্ট স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ নেচারোপ্যাথ জন ডব্লিউ আর্মস্ট্রং ‘দ্য ওয়াটার অব লাইফ: এ ট্রিটিজ অন ইউরিন থেরাপি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন, নিজের প্রস্রাব পান করলে এবং ত্বকে মালিশ করলে বড় ধরনের অসুস্থতাও নিরাময় হতে পারে।
ঐতিহাসিকভাবে, চিকিৎসার বিকল্পের অভাবে অসুস্থতা নিরাময়ে প্রস্রাব পান হয়তো যুক্তিসংগত ছিল। কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের পরও উল্লিখিত প্রস্রাব পানকারী তারকাদের মতো অনেকের মাঝেই আজও এই অভ্যাস প্রচলিত। নাইজেরিয়ায় শিশুদের খিঁচুনির ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে প্রস্রাব ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। চায়না ইউরিন থেরাপি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে, প্রস্রাব পান করা হলে এবং তা দিয়ে ত্বক ধৌত করা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ত্বকের ঘা সারাতে পারে।
শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য প্রস্রাব তৈরি হয়। এর বেশির ভাগটাই পানি (প্রায় ৯৫ শতাংশ) এবং কয়েকটি বর্জ্য পদার্থ—যার মধ্যে যকৃতে প্রোটিন ভাঙার পর তৈরি হওয়া ইউরিয়া (২ শতাংশ), মাংসপেশির শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার পর অবশিষ্ট থাকা ক্রিয়েটিনিন এবং লবণ। এখন প্রশ্ন হলো—প্রস্রাব যদি কেবল বর্জ্যই হয়, তাহলে এটি পান করা উপকারী হতে পারে কীভাবে?
কিডনি ছাঁকনির মতো কাজ করে—কেবল বিষাক্ত পদার্থই নয়, শরীরের অপ্রয়োজনীয় সবকিছুই এটি বের করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিন যা প্রয়োজন নেই তা প্রস্রাবে পাওয়া যায়। প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এই ভিটামিন এবং খনিজগুলো নষ্ট না হয়ে পুনর্ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া প্রস্রাবে পাওয়া অন্যান্য হরমোন, প্রোটিন এবং অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। তবে এক গ্লাস প্রস্রাবে এই পদার্থগুলোর পরিমাণ উপকারী হওয়ার মতো যথেষ্ট নয়, বরং এর চেয়ে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট বেশি কার্যকর হতে পারে।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, এটি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করতে এবং অটোইমিউন (স্ব-রোগপ্রতিরোধ) অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। প্রস্রাবে থাকা অ্যান্টিবডিগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে বলে মনে করা হয়।
প্রস্রাব পানের দাবি করা অন্যান্য আধুনিক ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে শরীর পরিষ্কার এবং ডিটক্সিফিকেশন। কিছু লোক দাবি করেছেন, নিয়মিত রিসাইকেল করা প্রস্রাব পান করলে প্রস্রাব এবং রক্ত আরও পরিষ্কার হয়, বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। তবে, এই দাবিগুলোর স্বপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
কিছু সামাজিক মাধ্যম ইনফ্লুয়েন্সার দাবি করেন, প্রস্রাবের নিরাময় ক্ষমতা আছে এবং এটি পান করলে বা ত্বকে লাগালে ব্রণ ও সংক্রমণের মতো ত্বকের সমস্যা ভালো হয়। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রস্রাবে ইউরিয়া থাকে। আর প্রায়শই ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকের পরিচর্যা পণ্যগুলোতে ইউরিয়া যোগ করা হয়। কিন্তু প্রস্রাবে ইউরিয়ার ঘনত্ব এত বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই যে এটি কার্যকর হবে।
প্রস্রাবে ডিহাইড্রোপিয়ান্ড্রোস্টেরনও থাকে। এটি শরীরের তৈরি একটি স্টেরয়েড হরমোন যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। এটিকে অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসেবে বাজারজাত করা হয়েছে। তবে এর কার্যকারিতা প্রদর্শনের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, প্রস্রাব জীবাণুমুক্ত। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রস্রাবে প্রাকৃতিকভাবেই কম মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে এবং প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার সময় ব্যাকটেরিয়া দিয়ে আরও দূষিত হতে পারে। তাই প্রস্রাব পান করলে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশ করতে পারে এবং পাকস্থলী সংক্রমণের মতো আরও অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার পর আরও ঘনীভূত হয়। ফলে কেউ যদি প্রস্রাব পান করে তাহলে কিডনিকে অতিরিক্ত পদার্থ পরিস্রাবণ করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হতে পারে, যা সেগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এই লবণগুলো প্রক্রিয়াজাত করার জন্য কিডনির পানির প্রয়োজন হয়।
এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে পুনরায় প্রস্রাব পান করার মাধ্যমে এই ওষুধগুলোর বিষাক্ত মাত্রা শরীরে জমা হতে পারে।
মূলধারার চিকিৎসা সমাজ মূত্র থেরাপিকে সমর্থন করে না। কারণ, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অল্প পরিমাণে প্রস্রাব পান করা সম্ভবত ক্ষতিকর নয়। তবে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে এমন অন্যান্য থেরাপি গ্রহণ করাই ভালো।
লেখক: যুক্তরাজ্যের কিংস্টোন ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি প্র্যাকটিস বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক দীপা কামদার। লিখেছেন বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য কনভারসেশনে।

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১০ ঘণ্টা আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
২৮ এপ্রিল ২০২৫
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১০ ঘণ্টা আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১০ ঘণ্টা আগেমো. ইকবাল হোসেন

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
২৮ এপ্রিল ২০২৫
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১ ঘণ্টা আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১০ ঘণ্টা আগেডা. অবন্তি ঘোষ

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
২৮ এপ্রিল ২০২৫
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১০ ঘণ্টা আগেডা. কাকলী হালদার

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
২৮ এপ্রিল ২০২৫
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১০ ঘণ্টা আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে