Ajker Patrika

বিশ্বে ই-সিগারেট সেবনকারী ১০ কোটির বেশি, দেড় কোটিই অপ্রাপ্তবয়স্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ০৪
গড় হিসেবে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ৯ গুণ বেশি ই-সিগারেট ব্যবহার করে। ছবি: সংগৃহীত
গড় হিসেবে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ৯ গুণ বেশি ই-সিগারেট ব্যবহার করে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে বেড়েছে ই-সিগারেট ব্যবহারের প্রবণতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ১০ কোটির বেশি মানুষ বর্তমানে ই-সিগারেট ব্যবহার করে। এর মধ্যে অন্তত ১ কোটি ৫০ লাখ অপ্রাপ্তবয়স্ক। গড় হিসেবে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ৯ গুণ বেশি ই-সিগারেট ব্যবহার করে।

ডব্লিউএইচও কর্মকর্তা ড. এতিয়েন ক্রুগ বলেন, ই-সিগারেট নিকোটিন আসক্তির ‘নতুন ঢেউ’ সৃষ্টি করছে। এসব পণ্যকে ক্ষতি কমানোর উপায় হিসেবে বাজারজাত করা হলেও বাস্তবে এগুলো শিশুদের নিকোটিনে আসক্ত করছে এবং বহু বছরের অর্জিত অগ্রগতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।

তামাক শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা তরুণদের লক্ষ্য করে ‘আগ্রাসীভাবে’ বিপণন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস।

তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে অধিকাংশ দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের ফলে কোটি কোটি মানুষ তামাক ব্যবহার বন্ধ করছে কিংবা শুরু করছে না। এই অগ্রগতির মধ্যে তামাক শিল্প ই-সিগারেটের মতো নতুন নিকোটিনযুক্ত পণ্য বাজারে নিয়ে এসেছে। আর তারা বলা যায় পাল্টা লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। কেন না তারা বিশেষ করে তরুণদের লক্ষ্য করে প্রচারণা চালাচ্ছে।

দেশগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা আরও দ্রুত ও দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত বলে মনে করেন ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক।

তবে বিশ্বজুড়ে ই-সিগারেট ব্যবহারের সংখ্যা এখনো অনুমানভিত্তিক। কারণ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশসহ এখনো ১০৯টি দেশ আছে, যেগুলো এ-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে না।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, অন্তত ৮ কোটি ৬০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ই-সিগারেট ব্যবহারকারী রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ উচ্চ আয়ের দেশগুলোর নাগরিক।

১২৩টি দেশের জরিপ অনুসারে, ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী অন্তত ১ কোটি ৫০ লাখ কিশোর-কিশোরী ইতিমধ্যে ই-সিগারেট বা ভ্যাপ ব্যবহার করে।

স্বাস্থ্য দাতব্য সংস্থা অ্যাকশন অন স্মোকিং অ্যান্ড হেলথের (এএসএইচ) ২০২৫ সালের একটি জরিপ অনুসারে, যুক্তরাজ্যের ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের প্রায় ২০ শতাংশ একবার হলেও ভ্যাপ ব্যবহার করেছে এবং ৭ শতাংশ নিয়মিত ভ্যাপ ব্যবহার করে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অনেক দেশ শিশুদের ভ্যাপিং মোকাবিলায় ই-সিগারেট সংক্রান্ত নিয়মাবলি প্রণয়নের উদ্যোগ নিলেও ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ এখনো কোনো নীতিমালা কার্যকর করা হয়নি এবং ৭৪টি দেশে ই-সিগারেট কেনার ন্যূনতম বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়নি।

এদিকে সিগারেট বা তামাক ব্যবহার কমছে। ২০০০ সালে তামাক সেবন করত আনুমানিক ১৩৮ কোটি মানুষ। ২০২৪ সালে তা নেমে এসেছে ১২০ কোটিতে। এর মধ্যে নারীদের তামাক ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি হ্রাস পেয়েছে। ২০১০ সালে ১১ শতাংশ নারী তামাক গ্রহণ করত। ২০২৪ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশে।

পুরুষদের মধ্যে এই হার ২০১০ সালের ৪১ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমে ২০২৪ সালে ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে।

তবু বিশ্বজুড়ে প্রতি পাঁচ প্রাপ্তবয়স্কের একজন এখনো তামাক ব্যবহার করেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্যাপিং বা ই-সিগারেট ব্যবহার সাধারণ সিগারেটের তুলনায় অনেক কম ক্ষতিকর এবং এটি ধূমপান ছাড়তে সহায়তা করতে পারে। তবে অধূমপায়ীদের জন্য এটি একেবারেই সুপারিশ করা হয় না। ই-সিগারেটে তামাক পোড়ানো হয় না এবং এতে তামাকের ধোঁয়ায় থাকা দুটি সবচেয়ে ক্ষতিকারক উপাদান টার বা কার্বন মনোক্সাইড তৈরি হয় না। তবে এতে নিকোটিন থাকে, যা আসক্তি তৈরি করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের হারে বাংলাদেশের বিদায়, হামজার হতাশা

এবার দলগুলো পেল চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও স্বাক্ষরের আমন্ত্রণপত্র

সেনা কর্মকর্তাদের জন্য ‘সাবজেল’ ঘোষণার যৌক্তিকতা কী, টিআইবির প্রশ্ন

ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করলেন হাবিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত