Ajker Patrika

সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী 
Thumbnail image

গতকাল ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। পায়ে-পায়ে ৭৫ বছরে পদার্পণ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ থিম নিয়ে এবার এই দিবস পালন করা হচ্ছে। 
দিবসটি হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠা দিবস।  

করোনা মহামারি আমাদের বুঝিয়ে দিল আমাদের সবার জন্য শারীরিক আর মানসিক সুস্বাস্থ্য বড় জরুরি। স্বাস্থ্য সম্পদ এই আপ্ত বাক্য কেবল কথার কথা নয়। একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনে দরকার সুস্থ–সবল নাগরিক। তাই স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ সুস্থ জাতি গঠনে বিনিয়োগ। কল্যাণকামী রাষ্ট্রে এই বিষয়টি অনুধাবন করেন শাসকেরা। তবে এ ক্ষেত্রে নাগরিকদের দায়িত্বও কম নয়। মানুষের কাজ হলো সুষম পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম, আর নিয়মিত হেলথ চেকআপ করানো। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে এই ব্যাপারে সচেতনতা ছড়ানোই হলো মূল কাজ। 

কেন চাই সবার জন্য সুস্বাস্থ্য? এক শান্তিময়, সমৃদ্ধ, টেকসই পৃথিবীতে সবার জন্য দরকার পরিপূর্ণ জীবন। এখনো বিশ্বের পূর্ণ জনগোষ্ঠীর ৩০ শতাংশের অত্যাবশ্যকীয় স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার সুযোগ নেই। আজ এই দিবসে সবাইকে মনে করিয়ে দিতে হবে আবার, স্বাস্থ্য হলো সবার জন্য মৌলিক অধিকার, 
সবার জন্য থাকা উচিত গ্রহণযোগ্য আর সাশ্রয়ী স্বাস্থ্য সেবা। এ জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা সবার জন্য নিশ্চিত করা হবে প্রথম কাজ। অতিমারি কোভিড ১৯ সবাইকে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এমন ধারণা অভিমুখী করেছে। এমন জরুরি স্বাস্থ্য সংকট, মানবিক সংকট আর পরিবেশ সংকট তখন একীভূত হয়েছিল। তখন এসেছিল নতুন উপলব্ধি ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ হতে হবে অগ্রাধিকার। অর্থনৈতিক অবস্থা যাই হোক, বিশ্বের সব মানুষের জন্য চাই স্বাস্থ্য অভিগম্যতা। 

আমাদের স্বাস্থ্য খাতে আছে অনেক অগ্রগতি। চিকিৎসা আর প্রযুক্তি কিছু অগ্রসর বটে। তবে জনসংখ্যা অনুপাতে জনবল কম। চিকিৎসক, নার্স মেডিকেল ল্যাব প্রযুক্তিবিদ কম। 

আমাদের অবকাঠামো ভালো হলেও এখন সবার কাছে স্বাস্থ্য সুবিধা অভিগম্য হয়নি। এখনো সাধারণ মানুষ নিজের স্বাস্থ্য রক্ষা, চিকিৎসা রোগ নির্ণয়ে নিজের পকেট থেকে অনেক অর্থ ব্যয় করে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা উচ্চমূল্য আর সেই সেবা নিতে গিয়ে নিজের সম্পদ বিক্রি করে অনেককে নিঃস্ব হতে হয়। 
বাংলাদেশ সরকার এই ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছে। তারা প্রাতিষ্ঠানিক বিশেষজ্ঞ সেবা আর সাধারণ চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস কম মূল্যে দেবে জনসাধারণকে। এখন রোগ নির্ণয় সেবা সাশ্রয়ী করলে আর সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারিত করলে অনেক বদল আসবে বর্তমানের স্বাস্থ্য সেবায়। 

আমাদের যে অনেকগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক আছে এগুলোকে আরও সমৃদ্ধ, প্রযুক্তি বান্ধব, সেবা প্রদানে যত্নশীল আর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে জোরদার করতে হবে। এতে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য কল্যাণ হবে। আমাদের স্বাস্থ্য বাজেট বাড়িয়ে মানুষের দুয়ারে সরকারি পর্যায়ে মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা হতে হবে সম্প্রসারিত। এখনো বেসরকারি সেবা বেশি। এতে আনতে হবে সমতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত