ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রাচীনতম শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ‘স্যাকুলার শিক্ষাব্যবস্থায় নবম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে কবি শাহ মুহাম্মদ সগীরের “বন্দনা” কবিতার প্রথম দুই লাইন বাদ দিয়ে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কবিতাটির প্রথম দুই লাইন, “প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।”’
ফেসবুকে ভাইরাল এমন একটি পোস্ট শেয়ার করেছে ‘Tasbeeh’ নামের ১ লাখ ৫৬ হাজার ফলোয়ারের একটি পেজ। পোস্টটি শেয়ার করে পেজটি লেখা হয়েছে, ‘কী ভয়ংকর প্রতারণা! বর্তমানে পাঠ্যপুস্তক ভারত থেকে ছাপানো হয়। আমি ছেলেবেলায় কবিতাটা যেভাবে পড়েছি, সেটার প্রথম দুই লাইন ওরা কেটে দিয়েছে।’
‘বাঁশের কেল্লা’ নামের আরেকটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘বন্দনা’ কবিতার পাঠ্যবইয়ের ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘কবিতার প্রথম দুই লাইন গেল কোথায়? প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।।’
দাবিটি যেভাবে ছড়াল
দাবিটির সূত্রপাত অনুসন্ধানে ফেসবুকে কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে ‘নূরে আলম মাসুদ’ নামের একটি পেজে সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। গতকাল শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ৪৩ মিনিটে পেজটিতে শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতার পাঠ্যবইয়ের ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘ক্লাস নাইন টেন–এর বাংলা বই। ছোটবেলায় আমরাও এটা পড়েছি। আমরা ভাবতাম, কবিতা শুরুই হয়েছে বোধ হয় “দ্বিতীয়ে প্রণাম করো” এই কথা দিয়ে। কিন্তু একদিন ভাবলাম, দ্বিতীয়তে যদি বাবা–মাকে প্রণাম করতে হয়, তাহলে প্রথমে কাকে প্রণাম করতে হবে? কবি সেইটা লেখে নাই কেন? আসলে কবি লিখেছে, “প্রথমে প্রণাম করি এক করতার (স্রষ্টা)। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।।” কিন্তু পাঠ্যক্রমকে সেক্যুলারাইজ করার অংশ হিসেবে আল্লাহকে সেজদা করার কথাটা বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা ঘটেছে বহুযুগ আগেই। ঠিক কত বছর আগে, কার হাত দিয়ে, তা অবশ্য জানি না।’
তবে পেজটি থেকে আজ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পোস্টটি সম্পাদনা করে লেখা হয়, ‘ক্লাস নাইন টেনের বাংলা বই। ছোটবেলায় আমরাও এটা পড়েছি। আমরা ভাবতাম, কবিতা শুরুই হয়েছে বোধহয় “দ্বিতীয়ে প্রণাম করো” এই কথা দিয়ে। কিন্তু একদিন ভাবলাম, দ্বিতীয়তে যদি বাবা–মাকে প্রণাম করতে হয়, তাহলে প্রথমে কাকে প্রণাম করতে হবে? কবি সেইটা লেখে নাই কেন? আসলে কবি লিখেছে, “প্রথমে প্রণাম করো পরবর্দিগার (পরওয়ারদিগার)। যে আল্লা বকশিন্দা খোদা করিম ছত্তার।।” এটা হলো কবিতার প্রথম সেকশন “আল্লাহ ও রসুল বন্দনা” থেকে। দ্বিতীয় সেকশন হলো, “মাতাপিতা ও গুরুজন বন্দনা।” কিন্তু পাঠ্যক্রমকে সেক্যুলারাইজ করার অংশ হিসেবে “আল্লাহ ও রসুল বন্দনা” গোটা সেকশনটাই বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে।’
অর্থাৎ নূরে আলম মাসুদ নামের পেজটি প্রথমে দাবি করে, ‘বন্দনা’ কবিতাটির প্রথম দুই লাইন ‘প্রথমে প্রণাম করি এক করতার (স্রষ্টা)। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।’ পরে এই দাবি সংশোধন করে লেখা হয় এই দুই লাইন নয়, ‘বন্দনা’ কবিতার প্রথম অংশ— ‘প্রথমে প্রণাম করো পরবর্দিগার (পরওয়ারদিগার)। যে আল্লা বকশিন্দা খোদা করিম ছত্তার।’ ...পাঠ্যক্রমকে ‘সেক্যুলারাইজ’ করার অংশ হিসেবে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
আসলে কী ছিল পাঠ্যপুস্তকে?
দাবিগুলোর সত্যতা যাচাইয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যক্রম বোর্ডের (এনসিটিবি) ওয়েবসাইট থেকে নবম–দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক খুঁজে দেখে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পৃষ্ঠাটিতে বইয়ের সংস্করণ উল্লেখ আছে ২০২১। এই সূত্রে এনসিটিবির ওয়েবসাইট থেকে ২০২১ সালের নবম–দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে বাংলা সাহিত্য বইটি বের করা হয়। বইটির ১৮৯ নম্বর পৃষ্ঠায় কবি শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতাটি আছে। বইয়ের ছবির সঙ্গে ফেসবুকে ভাইরাল পৃষ্ঠার মিল আছে। অর্থাৎ কবিতাটি মা–বাবাকে প্রণাম করতে বলার মাধ্যমে শুরু হয়েছে।
কবিতাটির পাঠ পরিচিতিতে বলা আছে, শাহ মুহম্মদ সগীরের ‘ইউসুফ জোলেখা’ কাব্যের ‘বন্দনা’ পর্ব থেকে গৃহীত এই কবিতাংশ ‘বন্দনা’ নামে সংকলিত হয়েছে। ‘বন্দনা’ পর্ব যথেষ্ট বড়, এখানে শুধু গুরুজনদের প্রতি ‘বন্দনা’র অংশটুকু স্থান পেয়েছে। কবি তাঁর মূল কাব্যের প্রারম্ভে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রশংসা করেছেন। সংকলিত এই কবিতাংশে জন্মদাতা পিতা–মাতার ও জ্ঞানদাতা শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। পিতামাতা অশেষ দুঃখ কষ্ট স্বীকার করে পরম যত্নে সন্তানকে বড় করে তোলেন। শিক্ষক জ্ঞানদান করে তাকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। তাই তাঁদের প্রতি অফুরন্ত শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। কবি তাঁর কাব্য রচনায় সাফল্য লাভের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন।

ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক সম্পাদিত শাহ মুহম্মদ সগীর বিরচিত ‘ইউসুফ জোলেখা’ কাব্য থেকে পাঠ্যপুস্তকে পাঠ পরিচিতির এই তথ্যের সত্যতা রয়েছে। বইটির ১১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় শাহ মুহম্মদ সগীরের লেখা ইউসুফ জোলেখা কবিতাটি পাওয়া যায়। কবিতাটির ‘বন্দনা’ পর্ব তিনটি অংশে বিভক্ত। প্রথম পর্বে আল্লাহ ও রাসূলের (সা.) বন্দনা করা হয়েছে, এখানে পঙক্তি আছে ৩৬টি। দ্বিতীয় পর্বে মা–বাবা ও গুরুজনের বন্দনা করা হয়েছে এবং তৃতীয় পর্বে রাজ প্রশস্তি বা রাজার প্রশংসা করা হয়েছে। এই দুই পর্বের মোট পঙক্তি ৪২টি।
বইয়ে কবিতাটির পরেই মহাকবি আলাওলের ‘হামদ’ কবিতাটি আছে। কবিতাটি কবি আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের শুরুতে মহান আল্লাহর প্রশংসাসূচক পংক্তি রয়েছে। ‘হামদ’ কবিতাটির শুরুর লাইনগুলো হলো, ‘বিছমিল্লা প্রভুর নাম আরম্ভ প্রথম। আদ্যমূল শির সেই শোভিত উত্তম॥ প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভু জীবদানে স্থাপিল সংসার।’
নতুন পাঠ্যক্রমে ‘বন্দনা’ কবিতাটি নেই
ফেসবুকের পোস্টগুলোতে প্রচারিত দাবির সূত্রে এনসিটিবির ২০২৪ সালের নতুন পাঠ্যক্রমের নবম শ্রেণির বাংলা বইটিতে ‘বন্দনা’ কবিতাটি আছে কি না খুঁজে দেখা হয়। ২০২৩ সাল থেকে দেশে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ওই বছরের জানুয়ারি থেকে ১ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়। ২০২৪ সাল থেকে ২য়, ৩য়, ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এতে দেখা যায়, নবম শ্রেণির বাংলা বইয়ে মোট ৭টি কবিতা আছে। এই কবিতাগুলোর মধ্যে ‘বন্দনা’ কবিতাটি নেই। এ ছাড়া অন্যান্য শ্রেণির বাংলা বইয়েও কবিতাটি পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতাটি পুরোনো পাঠ্যপুস্তকে ছিল। বর্তমানে নতুন শিক্ষাক্রমের বাংলা বইয়ে কবিতাটি নেই।
বাদ দেওয়া হয়েছে দাবিকৃত অংশটি কোন কবিতার?
জাতীয় শিক্ষক বাতায়নের ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ‘প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার’ লাইন দুটি শাহ মুহাম্মদ সগীরের লেখা ‘বন্দনা’ কবিতার বলে দাবি করা হয়েছে। যেমন, ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক বাতায়নে কবিতাটি নিয়ে একটি কনটেন্ট পোস্ট করেন সহকারী শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম প্রধান। ওই পোস্টে তিনি পংক্তিগুলোকে ‘বন্দনা’ কবিতার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন।
২০২১ সালের নবম–দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক সূত্রে জানা যায়, ‘প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার’ লাইন দুটি মহাকবি আলাওলের ‘হামদ’ কবিতার অংশ। কবিতাটি আলাওলের পদ্মাবতী কাব্য থেকে নেওয়া।
তথ্যটির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে বাংলা ১৩৩৮ সালে প্রকাশিত পদ্মাবতী বইটি খুঁজে পাওয়া যায়। বইটি ছাপা ও প্রকাশ হয় হবিবী প্রেস থেকে। বইটির শুরুতেই ‘হামদো খোদা’ কবিতার শুরুতেই ‘বিছমিল্লা প্রভুর নাম আরম্ভ প্রথমে। আদ্য মুল শ্রীর সেই শোভিত উত্তমে। প্রথমে প্রণাম করি এক করতার॥ যেই প্রভু জীবদানে স্থাপিল সংসার’ পংক্তিগুলো আছে। অপরদিকে শাহ মুহাম্মদ সগীরের লেখা ‘বন্দনা’ কবিতা শুরু হয়েছে ‘প্রথম প্রণাম করোঁ পরবর্দিগার। যে আল্লা বকশিন্দা খোদা করিম ছত্তার’ পংক্তি দিয়ে।
অর্থাৎ ‘প্রথমে প্রণাম করি এক করতার॥ যেই প্রভু জীবদানে স্থাপিল সংসার’ পংক্তি দুটি কবি আলাওলের। আর আগের পাঠ্যপুস্তকে শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কাব্যের অংশ বিশেষ থেকে আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) বন্দনার অংশটি বাদ দেওয়ার তথ্যও সঠিক নয়। বরং কবিতার মাঝের অংশ বিশেষ পাঠপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাঠ পরিচিতিতে স্পষ্ট করা হয়েছে।

পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রাচীনতম শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ‘স্যাকুলার শিক্ষাব্যবস্থায় নবম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে কবি শাহ মুহাম্মদ সগীরের “বন্দনা” কবিতার প্রথম দুই লাইন বাদ দিয়ে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কবিতাটির প্রথম দুই লাইন, “প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।”’
ফেসবুকে ভাইরাল এমন একটি পোস্ট শেয়ার করেছে ‘Tasbeeh’ নামের ১ লাখ ৫৬ হাজার ফলোয়ারের একটি পেজ। পোস্টটি শেয়ার করে পেজটি লেখা হয়েছে, ‘কী ভয়ংকর প্রতারণা! বর্তমানে পাঠ্যপুস্তক ভারত থেকে ছাপানো হয়। আমি ছেলেবেলায় কবিতাটা যেভাবে পড়েছি, সেটার প্রথম দুই লাইন ওরা কেটে দিয়েছে।’
‘বাঁশের কেল্লা’ নামের আরেকটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘বন্দনা’ কবিতার পাঠ্যবইয়ের ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘কবিতার প্রথম দুই লাইন গেল কোথায়? প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।।’
দাবিটি যেভাবে ছড়াল
দাবিটির সূত্রপাত অনুসন্ধানে ফেসবুকে কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে ‘নূরে আলম মাসুদ’ নামের একটি পেজে সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। গতকাল শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ৪৩ মিনিটে পেজটিতে শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতার পাঠ্যবইয়ের ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘ক্লাস নাইন টেন–এর বাংলা বই। ছোটবেলায় আমরাও এটা পড়েছি। আমরা ভাবতাম, কবিতা শুরুই হয়েছে বোধ হয় “দ্বিতীয়ে প্রণাম করো” এই কথা দিয়ে। কিন্তু একদিন ভাবলাম, দ্বিতীয়তে যদি বাবা–মাকে প্রণাম করতে হয়, তাহলে প্রথমে কাকে প্রণাম করতে হবে? কবি সেইটা লেখে নাই কেন? আসলে কবি লিখেছে, “প্রথমে প্রণাম করি এক করতার (স্রষ্টা)। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।।” কিন্তু পাঠ্যক্রমকে সেক্যুলারাইজ করার অংশ হিসেবে আল্লাহকে সেজদা করার কথাটা বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা ঘটেছে বহুযুগ আগেই। ঠিক কত বছর আগে, কার হাত দিয়ে, তা অবশ্য জানি না।’
তবে পেজটি থেকে আজ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পোস্টটি সম্পাদনা করে লেখা হয়, ‘ক্লাস নাইন টেনের বাংলা বই। ছোটবেলায় আমরাও এটা পড়েছি। আমরা ভাবতাম, কবিতা শুরুই হয়েছে বোধহয় “দ্বিতীয়ে প্রণাম করো” এই কথা দিয়ে। কিন্তু একদিন ভাবলাম, দ্বিতীয়তে যদি বাবা–মাকে প্রণাম করতে হয়, তাহলে প্রথমে কাকে প্রণাম করতে হবে? কবি সেইটা লেখে নাই কেন? আসলে কবি লিখেছে, “প্রথমে প্রণাম করো পরবর্দিগার (পরওয়ারদিগার)। যে আল্লা বকশিন্দা খোদা করিম ছত্তার।।” এটা হলো কবিতার প্রথম সেকশন “আল্লাহ ও রসুল বন্দনা” থেকে। দ্বিতীয় সেকশন হলো, “মাতাপিতা ও গুরুজন বন্দনা।” কিন্তু পাঠ্যক্রমকে সেক্যুলারাইজ করার অংশ হিসেবে “আল্লাহ ও রসুল বন্দনা” গোটা সেকশনটাই বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে।’
অর্থাৎ নূরে আলম মাসুদ নামের পেজটি প্রথমে দাবি করে, ‘বন্দনা’ কবিতাটির প্রথম দুই লাইন ‘প্রথমে প্রণাম করি এক করতার (স্রষ্টা)। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।’ পরে এই দাবি সংশোধন করে লেখা হয় এই দুই লাইন নয়, ‘বন্দনা’ কবিতার প্রথম অংশ— ‘প্রথমে প্রণাম করো পরবর্দিগার (পরওয়ারদিগার)। যে আল্লা বকশিন্দা খোদা করিম ছত্তার।’ ...পাঠ্যক্রমকে ‘সেক্যুলারাইজ’ করার অংশ হিসেবে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
আসলে কী ছিল পাঠ্যপুস্তকে?
দাবিগুলোর সত্যতা যাচাইয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যক্রম বোর্ডের (এনসিটিবি) ওয়েবসাইট থেকে নবম–দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক খুঁজে দেখে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পৃষ্ঠাটিতে বইয়ের সংস্করণ উল্লেখ আছে ২০২১। এই সূত্রে এনসিটিবির ওয়েবসাইট থেকে ২০২১ সালের নবম–দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে বাংলা সাহিত্য বইটি বের করা হয়। বইটির ১৮৯ নম্বর পৃষ্ঠায় কবি শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতাটি আছে। বইয়ের ছবির সঙ্গে ফেসবুকে ভাইরাল পৃষ্ঠার মিল আছে। অর্থাৎ কবিতাটি মা–বাবাকে প্রণাম করতে বলার মাধ্যমে শুরু হয়েছে।
কবিতাটির পাঠ পরিচিতিতে বলা আছে, শাহ মুহম্মদ সগীরের ‘ইউসুফ জোলেখা’ কাব্যের ‘বন্দনা’ পর্ব থেকে গৃহীত এই কবিতাংশ ‘বন্দনা’ নামে সংকলিত হয়েছে। ‘বন্দনা’ পর্ব যথেষ্ট বড়, এখানে শুধু গুরুজনদের প্রতি ‘বন্দনা’র অংশটুকু স্থান পেয়েছে। কবি তাঁর মূল কাব্যের প্রারম্ভে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রশংসা করেছেন। সংকলিত এই কবিতাংশে জন্মদাতা পিতা–মাতার ও জ্ঞানদাতা শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। পিতামাতা অশেষ দুঃখ কষ্ট স্বীকার করে পরম যত্নে সন্তানকে বড় করে তোলেন। শিক্ষক জ্ঞানদান করে তাকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। তাই তাঁদের প্রতি অফুরন্ত শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। কবি তাঁর কাব্য রচনায় সাফল্য লাভের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন।

ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক সম্পাদিত শাহ মুহম্মদ সগীর বিরচিত ‘ইউসুফ জোলেখা’ কাব্য থেকে পাঠ্যপুস্তকে পাঠ পরিচিতির এই তথ্যের সত্যতা রয়েছে। বইটির ১১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় শাহ মুহম্মদ সগীরের লেখা ইউসুফ জোলেখা কবিতাটি পাওয়া যায়। কবিতাটির ‘বন্দনা’ পর্ব তিনটি অংশে বিভক্ত। প্রথম পর্বে আল্লাহ ও রাসূলের (সা.) বন্দনা করা হয়েছে, এখানে পঙক্তি আছে ৩৬টি। দ্বিতীয় পর্বে মা–বাবা ও গুরুজনের বন্দনা করা হয়েছে এবং তৃতীয় পর্বে রাজ প্রশস্তি বা রাজার প্রশংসা করা হয়েছে। এই দুই পর্বের মোট পঙক্তি ৪২টি।
বইয়ে কবিতাটির পরেই মহাকবি আলাওলের ‘হামদ’ কবিতাটি আছে। কবিতাটি কবি আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের শুরুতে মহান আল্লাহর প্রশংসাসূচক পংক্তি রয়েছে। ‘হামদ’ কবিতাটির শুরুর লাইনগুলো হলো, ‘বিছমিল্লা প্রভুর নাম আরম্ভ প্রথম। আদ্যমূল শির সেই শোভিত উত্তম॥ প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভু জীবদানে স্থাপিল সংসার।’
নতুন পাঠ্যক্রমে ‘বন্দনা’ কবিতাটি নেই
ফেসবুকের পোস্টগুলোতে প্রচারিত দাবির সূত্রে এনসিটিবির ২০২৪ সালের নতুন পাঠ্যক্রমের নবম শ্রেণির বাংলা বইটিতে ‘বন্দনা’ কবিতাটি আছে কি না খুঁজে দেখা হয়। ২০২৩ সাল থেকে দেশে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ওই বছরের জানুয়ারি থেকে ১ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হয়। ২০২৪ সাল থেকে ২য়, ৩য়, ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এতে দেখা যায়, নবম শ্রেণির বাংলা বইয়ে মোট ৭টি কবিতা আছে। এই কবিতাগুলোর মধ্যে ‘বন্দনা’ কবিতাটি নেই। এ ছাড়া অন্যান্য শ্রেণির বাংলা বইয়েও কবিতাটি পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতাটি পুরোনো পাঠ্যপুস্তকে ছিল। বর্তমানে নতুন শিক্ষাক্রমের বাংলা বইয়ে কবিতাটি নেই।
বাদ দেওয়া হয়েছে দাবিকৃত অংশটি কোন কবিতার?
জাতীয় শিক্ষক বাতায়নের ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ‘প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার’ লাইন দুটি শাহ মুহাম্মদ সগীরের লেখা ‘বন্দনা’ কবিতার বলে দাবি করা হয়েছে। যেমন, ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক বাতায়নে কবিতাটি নিয়ে একটি কনটেন্ট পোস্ট করেন সহকারী শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম প্রধান। ওই পোস্টে তিনি পংক্তিগুলোকে ‘বন্দনা’ কবিতার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন।
২০২১ সালের নবম–দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক সূত্রে জানা যায়, ‘প্রথমে প্রণাম করি এক করতার। যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার’ লাইন দুটি মহাকবি আলাওলের ‘হামদ’ কবিতার অংশ। কবিতাটি আলাওলের পদ্মাবতী কাব্য থেকে নেওয়া।
তথ্যটির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে বাংলা ১৩৩৮ সালে প্রকাশিত পদ্মাবতী বইটি খুঁজে পাওয়া যায়। বইটি ছাপা ও প্রকাশ হয় হবিবী প্রেস থেকে। বইটির শুরুতেই ‘হামদো খোদা’ কবিতার শুরুতেই ‘বিছমিল্লা প্রভুর নাম আরম্ভ প্রথমে। আদ্য মুল শ্রীর সেই শোভিত উত্তমে। প্রথমে প্রণাম করি এক করতার॥ যেই প্রভু জীবদানে স্থাপিল সংসার’ পংক্তিগুলো আছে। অপরদিকে শাহ মুহাম্মদ সগীরের লেখা ‘বন্দনা’ কবিতা শুরু হয়েছে ‘প্রথম প্রণাম করোঁ পরবর্দিগার। যে আল্লা বকশিন্দা খোদা করিম ছত্তার’ পংক্তি দিয়ে।
অর্থাৎ ‘প্রথমে প্রণাম করি এক করতার॥ যেই প্রভু জীবদানে স্থাপিল সংসার’ পংক্তি দুটি কবি আলাওলের। আর আগের পাঠ্যপুস্তকে শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কাব্যের অংশ বিশেষ থেকে আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) বন্দনার অংশটি বাদ দেওয়ার তথ্যও সঠিক নয়। বরং কবিতার মাঝের অংশ বিশেষ পাঠপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাঠ পরিচিতিতে স্পষ্ট করা হয়েছে।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রাচীনতম শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ‘স্যাকুলার শিক্ষাব্যবস্থায় নবম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে কবি শাহ মুহাম্মদ সগীরের “বন্দনা” কবিতার প্রথম দুই লাইন বাদ দিয়ে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫বাসস

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’

পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রাচীনতম শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ‘স্যাকুলার শিক্ষাব্যবস্থায় নবম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে কবি শাহ মুহাম্মদ সগীরের “বন্দনা” কবিতার প্রথম দুই লাইন বাদ দিয়ে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।

রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।

পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রাচীনতম শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ‘স্যাকুলার শিক্ষাব্যবস্থায় নবম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে কবি শাহ মুহাম্মদ সগীরের “বন্দনা” কবিতার প্রথম দুই লাইন বাদ দিয়ে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণী হাত বাঁধা অবস্থায় কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে আছেন। পাশেই একজন মধ্যবয়সী তরুণীটির বাবা পরিচয়ে আর্তনাদ করছেন। তাঁকে আরেকজন যুবক সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুলিশের পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি তরুণীকে ঘিরে পর্যবেক্ষণ করছেন। ভিডিওর শেষাংশে পুলিশকে তরুণীর মরদেহ ব্যাগে ভরতে দেখা যায়।
‘Md Nishad Hossain’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ক্যাপশনে লেখা, ‘আহারে নির্মমতা এবং একজন বাবার আর্তনাদ। বাংলাদেশ ২০২৪’র আগস্ট মাস থেকে সারা দেশে নারী ধর্ষণ করেই চলছে বিএনপি জামাতের মব সন্ত্রাসীরা। একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে রেখে গেছে। মেয়ের পিতার আহাজারী কে শুনবে দেশে এখন বিচার নাই। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হায়ানারা যা যা করছে ২০২৪ ’র বাংলাদেশে বিএনপি জামাত তার চেয়ে বেশি করছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভিডিওটি ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৫১৫টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। এতে ৫৬টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১৮৫ বার।
এসব কমেন্টে অনেকে ভিডিওটি নাটক উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে সত্য মনে করেও কমেন্ট করেছে। Shilvi Akther নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘আহারে জীবন! মানুষ কিভাবে এতো নির্মম হয়? একজন বাবার আর্তনাদ কি কারো মনকে মর্মাহত করে না?’ (বানান অপরিবর্তিত) Narayon Saha লিখেছে,’ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বাবার কান্দে সন্তানের লাশ হায়রে দুনিয়া।’ (বানান অপরিবর্তিত)
S M Salam Patwari, গর্জে ওঠো আরেকবার বাংলাদেশ এবং গাজীপুর জেলা যুবলীগ শাখা নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ‘Short Film BD’ নামে একটি লোগো লক্ষ করা যায়। এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Short Film BD’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ২০ জুনে প্রকাশিত। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মেঝেতে পড়ে থাকা তরুণী, পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি, আহাজারি করা ব্যক্তি ও আশপাশের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘মৌসুমীর সাথে কি হলো।’ ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে বোঝা যায়, এটি একটি নাটিকার দৃশ্য।
Short Film BD নামে ফেসবুক পেজটিতে একই তারিখে একই ভিডিও প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘মেয়ের কি হইছে জানতে চায় অসহায় বাবা।’ (বানান অপরিবর্তিত)

Short Film BD ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বিভিন্ন ধরনের নাটিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে অভিনয় করা একাধিক ব্যক্তিকে অন্যান্য ভিডিওতেও (১, ২) দেখা গেছে।
এ ছাড়া এই পেজের ইন্ট্রোতে লেখা, ‘শর্টফিল্ম ও নাটক দেখুন এবং উপভোগ করুন। আমাদের সঙ্গেই থাকুন।’ (ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত)

সুতরাং, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি প্রকৃতপক্ষে একটি নাটক।
বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণী হাত বাঁধা অবস্থায় কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে আছেন। পাশেই একজন মধ্যবয়সী তরুণীটির বাবা পরিচয়ে আর্তনাদ করছেন। তাঁকে আরেকজন যুবক সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুলিশের পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি তরুণীকে ঘিরে পর্যবেক্ষণ করছেন। ভিডিওর শেষাংশে পুলিশকে তরুণীর মরদেহ ব্যাগে ভরতে দেখা যায়।
‘Md Nishad Hossain’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ক্যাপশনে লেখা, ‘আহারে নির্মমতা এবং একজন বাবার আর্তনাদ। বাংলাদেশ ২০২৪’র আগস্ট মাস থেকে সারা দেশে নারী ধর্ষণ করেই চলছে বিএনপি জামাতের মব সন্ত্রাসীরা। একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে রেখে গেছে। মেয়ের পিতার আহাজারী কে শুনবে দেশে এখন বিচার নাই। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হায়ানারা যা যা করছে ২০২৪ ’র বাংলাদেশে বিএনপি জামাত তার চেয়ে বেশি করছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভিডিওটি ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৫১৫টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। এতে ৫৬টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১৮৫ বার।
এসব কমেন্টে অনেকে ভিডিওটি নাটক উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে সত্য মনে করেও কমেন্ট করেছে। Shilvi Akther নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘আহারে জীবন! মানুষ কিভাবে এতো নির্মম হয়? একজন বাবার আর্তনাদ কি কারো মনকে মর্মাহত করে না?’ (বানান অপরিবর্তিত) Narayon Saha লিখেছে,’ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বাবার কান্দে সন্তানের লাশ হায়রে দুনিয়া।’ (বানান অপরিবর্তিত)
S M Salam Patwari, গর্জে ওঠো আরেকবার বাংলাদেশ এবং গাজীপুর জেলা যুবলীগ শাখা নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ‘Short Film BD’ নামে একটি লোগো লক্ষ করা যায়। এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Short Film BD’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ২০ জুনে প্রকাশিত। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মেঝেতে পড়ে থাকা তরুণী, পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি, আহাজারি করা ব্যক্তি ও আশপাশের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘মৌসুমীর সাথে কি হলো।’ ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে বোঝা যায়, এটি একটি নাটিকার দৃশ্য।
Short Film BD নামে ফেসবুক পেজটিতে একই তারিখে একই ভিডিও প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘মেয়ের কি হইছে জানতে চায় অসহায় বাবা।’ (বানান অপরিবর্তিত)

Short Film BD ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বিভিন্ন ধরনের নাটিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে অভিনয় করা একাধিক ব্যক্তিকে অন্যান্য ভিডিওতেও (১, ২) দেখা গেছে।
এ ছাড়া এই পেজের ইন্ট্রোতে লেখা, ‘শর্টফিল্ম ও নাটক দেখুন এবং উপভোগ করুন। আমাদের সঙ্গেই থাকুন।’ (ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত)

সুতরাং, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি প্রকৃতপক্ষে একটি নাটক।

পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রাচীনতম শাহ মুহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ‘স্যাকুলার শিক্ষাব্যবস্থায় নবম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে কবি শাহ মুহাম্মদ সগীরের “বন্দনা” কবিতার প্রথম দুই লাইন বাদ দিয়ে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫