সাহস মোস্তাফিজ
গর্বের পদ্মা সেতু আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু তৈরি হয়েছে অনেক বাধা পেরিয়ে। একদিকে প্রমত্তা পদ্মার অস্বাভাবিক স্রোত এই সেতু নির্মাণকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে; অন্যদিকে সেতুর অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের ‘না’ ও বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র সেতুর নির্মাণযজ্ঞকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে বারবার। ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য এক সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।
উত্তাল পদ্মার বুকে চিরে পারাপারের জন্য এতদিন ২১টি জেলার মানুষকে নির্ভর করতে হতো নৌপথের ওপর। ফেরি, স্পিডবোট, নৌকা, ট্রলারযোগে পদ্মা পেরোতে কখনো কখনো পুরো একটা দিন লেগে যেত। তীব্র শীতে, প্রবল বর্ষায়, কালবৈশাখী ঝড়ে, ঈদে মানুষের যাতায়াত হয়ে পড়ত অনিশ্চিত। ছয় ঘণ্টার পথ পেরোতে কখনো কখনো লেগে যেত ২৪ ঘণ্টারও বেশি। মরদেহ পরিবহন, অসুস্থ রোগী কিংবা শিশুদের ভোগান্তি ছিল অবর্ণনীয়।
দীর্ঘ নির্মাণযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে এই সেতুকে লড়তে হয়েছে গুজবের সঙ্গেও। আর সেই গুজবের বলি হয়ে প্রাণ দিয়েছেন অনেকেই।
গুজব: পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজে মানুষের কাটা মাথা লাগবে
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই তথ্য প্রচার করা হচ্ছিল। এ বিষয়ে ম্যাসেঞ্জারে ইনবক্স করে একে অপরকে সতর্ক করছিলেন নেটিজেনরা। বেশির ভাগ মানুষই না বুঝে এ রকম কুসংস্কারে গা ভাসিয়েছেন। ২০১৯ সালে ‘ছেলেধরা’ গুজবে সারা দেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচজন।
২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে মূলত ব্যাপকভাবে এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গুজবকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটে। এ সময় সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছিলেন অভিভাবকেরা। ছেলেধরা সন্দেহে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। মোহাম্মদপুরে এক নারীকে একই সন্দেহে বেদম মারধর করা হয়। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলার দালাল বাজারে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় জনতা। নেত্রকোনায় এক শিশুকে গলা কেটে হত্যা করে ব্যাগে করে মাথা নিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহভাজন যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। আর এই খবর গণমাধ্যমে আসার পর নতুন করে শুরু হয় অপপ্রচার।
২০১৯ সালের ২০ জুলাই রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় এক নারীকে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। ওই দিন সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মেয়েকে ভর্তি করানোর তথ্য জানতে স্থানীয় একটি স্কুলে যান তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। এ সময় তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়।
একই সময়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়। পুলিশের ভাষ্য, রসুলপুর গ্রামে শরীফ মিয়ার বাড়ির সামনে দুই যুবক ঘোরাফেরা করতে থাকেন। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তাঁদের ঘোরাফেরার কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়। দুই যুবক ঠিকঠাক উত্তর দিতে না পারায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের পিটুনি দেয়। তাঁদের একজন মারা যান।
রাজশাহীতে নিজের ঘরে কাচের আঘাতে এক শিশুর গলায় আঘাত পাওয়ার পর এ নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তির পরপর গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, তার মাথা কেটে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
যেভাবে গুজব ছড়ায়
২০১৫ সালের ১ মার্চ নদীতে পশুর রক্ত ঢেলে পদ্মা সেতুর ভিত্তি স্থাপনকাজের উদ্বোধন করে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় মূল সেতুর পরীক্ষামূলক ভিত্তি স্থাপনের সময় নদীতে গরু ও খাসির রক্ত ঢালতে দেখা যায় চাইনিজ ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের। ভাসিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি মুরগিও। তাদের বিশ্বাস, বড় কাজের শুরুতে পশু উৎসর্গের মাধ্যমে স্রষ্টার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, এড়ানো যায় বড় দুর্ঘটনা।
তখন গণমাধ্যমেও এ নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময়ের রক্তের ছবিই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছিল অসাধু ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। মূল তথ্য আড়াল করে পুরোনো সেই ছবিকে মানুষের রক্তের ছবি বলে প্রচার করতে থাকে তারা।
গুজব কেন ছড়িয়েছে
পদ্মা সেতু নিয়ে বিভিন্ন সময়ে যেসব গুজব ছড়িয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই বিশ্বাসযোগ্য দলিল ছাড়াই ছড়িয়েছে। এর পেছনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করেছে। তবে এসব গুজব ছড়ানোর জন্য আবহমান কাল ধরে চলে আসা জনশ্রুতি এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন গল্পের ওপর বিশ্বাস করার প্রবণতাও দায়ী।
এই যেমন কথিত আছে, ১৫৮০ সালের দিকে মৌলভীবাজারে কমলার দিঘি তৈরি করার সময় দিঘিতে যখন পানি উঠছিল না, তখন রাজা স্বপ্নে দেখেন যে, তাঁর স্ত্রী দিঘিতে আত্মবিসর্জন দিলে পানি উঠবে। পরে রাজার স্ত্রী আত্মাহুতি দেওয়ার ফলেই ওই দিঘিতে পানি ওঠে। দিনাজপুরের রামসাগর নিয়েও একই ধরনের কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে।
এসব ঘটনার কোনো প্রামাণিক দলিল বা সুনিশ্চিত ঐতিহাসিক প্রমাণ না থাকলেও শত শত বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে চলে আসার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ধরনের গল্পের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা
পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও ভবিষ্যতেও এ রকম গুজব ছড়াতে পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু নিয়ে যেকোনো গুজব ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কঠোর নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গত ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিরাপত্তাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
গর্বের পদ্মা সেতু আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু তৈরি হয়েছে অনেক বাধা পেরিয়ে। একদিকে প্রমত্তা পদ্মার অস্বাভাবিক স্রোত এই সেতু নির্মাণকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে; অন্যদিকে সেতুর অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের ‘না’ ও বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র সেতুর নির্মাণযজ্ঞকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে বারবার। ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য এক সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।
উত্তাল পদ্মার বুকে চিরে পারাপারের জন্য এতদিন ২১টি জেলার মানুষকে নির্ভর করতে হতো নৌপথের ওপর। ফেরি, স্পিডবোট, নৌকা, ট্রলারযোগে পদ্মা পেরোতে কখনো কখনো পুরো একটা দিন লেগে যেত। তীব্র শীতে, প্রবল বর্ষায়, কালবৈশাখী ঝড়ে, ঈদে মানুষের যাতায়াত হয়ে পড়ত অনিশ্চিত। ছয় ঘণ্টার পথ পেরোতে কখনো কখনো লেগে যেত ২৪ ঘণ্টারও বেশি। মরদেহ পরিবহন, অসুস্থ রোগী কিংবা শিশুদের ভোগান্তি ছিল অবর্ণনীয়।
দীর্ঘ নির্মাণযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে এই সেতুকে লড়তে হয়েছে গুজবের সঙ্গেও। আর সেই গুজবের বলি হয়ে প্রাণ দিয়েছেন অনেকেই।
গুজব: পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজে মানুষের কাটা মাথা লাগবে
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই তথ্য প্রচার করা হচ্ছিল। এ বিষয়ে ম্যাসেঞ্জারে ইনবক্স করে একে অপরকে সতর্ক করছিলেন নেটিজেনরা। বেশির ভাগ মানুষই না বুঝে এ রকম কুসংস্কারে গা ভাসিয়েছেন। ২০১৯ সালে ‘ছেলেধরা’ গুজবে সারা দেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচজন।
২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে মূলত ব্যাপকভাবে এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গুজবকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটে। এ সময় সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছিলেন অভিভাবকেরা। ছেলেধরা সন্দেহে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। মোহাম্মদপুরে এক নারীকে একই সন্দেহে বেদম মারধর করা হয়। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলার দালাল বাজারে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় জনতা। নেত্রকোনায় এক শিশুকে গলা কেটে হত্যা করে ব্যাগে করে মাথা নিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহভাজন যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। আর এই খবর গণমাধ্যমে আসার পর নতুন করে শুরু হয় অপপ্রচার।
২০১৯ সালের ২০ জুলাই রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় এক নারীকে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। ওই দিন সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মেয়েকে ভর্তি করানোর তথ্য জানতে স্থানীয় একটি স্কুলে যান তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। এ সময় তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়।
একই সময়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়। পুলিশের ভাষ্য, রসুলপুর গ্রামে শরীফ মিয়ার বাড়ির সামনে দুই যুবক ঘোরাফেরা করতে থাকেন। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তাঁদের ঘোরাফেরার কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়। দুই যুবক ঠিকঠাক উত্তর দিতে না পারায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের পিটুনি দেয়। তাঁদের একজন মারা যান।
রাজশাহীতে নিজের ঘরে কাচের আঘাতে এক শিশুর গলায় আঘাত পাওয়ার পর এ নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তির পরপর গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, তার মাথা কেটে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
যেভাবে গুজব ছড়ায়
২০১৫ সালের ১ মার্চ নদীতে পশুর রক্ত ঢেলে পদ্মা সেতুর ভিত্তি স্থাপনকাজের উদ্বোধন করে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় মূল সেতুর পরীক্ষামূলক ভিত্তি স্থাপনের সময় নদীতে গরু ও খাসির রক্ত ঢালতে দেখা যায় চাইনিজ ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের। ভাসিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি মুরগিও। তাদের বিশ্বাস, বড় কাজের শুরুতে পশু উৎসর্গের মাধ্যমে স্রষ্টার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, এড়ানো যায় বড় দুর্ঘটনা।
তখন গণমাধ্যমেও এ নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময়ের রক্তের ছবিই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছিল অসাধু ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। মূল তথ্য আড়াল করে পুরোনো সেই ছবিকে মানুষের রক্তের ছবি বলে প্রচার করতে থাকে তারা।
গুজব কেন ছড়িয়েছে
পদ্মা সেতু নিয়ে বিভিন্ন সময়ে যেসব গুজব ছড়িয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই বিশ্বাসযোগ্য দলিল ছাড়াই ছড়িয়েছে। এর পেছনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করেছে। তবে এসব গুজব ছড়ানোর জন্য আবহমান কাল ধরে চলে আসা জনশ্রুতি এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন গল্পের ওপর বিশ্বাস করার প্রবণতাও দায়ী।
এই যেমন কথিত আছে, ১৫৮০ সালের দিকে মৌলভীবাজারে কমলার দিঘি তৈরি করার সময় দিঘিতে যখন পানি উঠছিল না, তখন রাজা স্বপ্নে দেখেন যে, তাঁর স্ত্রী দিঘিতে আত্মবিসর্জন দিলে পানি উঠবে। পরে রাজার স্ত্রী আত্মাহুতি দেওয়ার ফলেই ওই দিঘিতে পানি ওঠে। দিনাজপুরের রামসাগর নিয়েও একই ধরনের কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে।
এসব ঘটনার কোনো প্রামাণিক দলিল বা সুনিশ্চিত ঐতিহাসিক প্রমাণ না থাকলেও শত শত বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে চলে আসার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ধরনের গল্পের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা
পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও ভবিষ্যতেও এ রকম গুজব ছড়াতে পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু নিয়ে যেকোনো গুজব ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কঠোর নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গত ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিরাপত্তাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
সাহস মোস্তাফিজ
গর্বের পদ্মা সেতু আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু তৈরি হয়েছে অনেক বাধা পেরিয়ে। একদিকে প্রমত্তা পদ্মার অস্বাভাবিক স্রোত এই সেতু নির্মাণকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে; অন্যদিকে সেতুর অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের ‘না’ ও বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র সেতুর নির্মাণযজ্ঞকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে বারবার। ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য এক সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।
উত্তাল পদ্মার বুকে চিরে পারাপারের জন্য এতদিন ২১টি জেলার মানুষকে নির্ভর করতে হতো নৌপথের ওপর। ফেরি, স্পিডবোট, নৌকা, ট্রলারযোগে পদ্মা পেরোতে কখনো কখনো পুরো একটা দিন লেগে যেত। তীব্র শীতে, প্রবল বর্ষায়, কালবৈশাখী ঝড়ে, ঈদে মানুষের যাতায়াত হয়ে পড়ত অনিশ্চিত। ছয় ঘণ্টার পথ পেরোতে কখনো কখনো লেগে যেত ২৪ ঘণ্টারও বেশি। মরদেহ পরিবহন, অসুস্থ রোগী কিংবা শিশুদের ভোগান্তি ছিল অবর্ণনীয়।
দীর্ঘ নির্মাণযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে এই সেতুকে লড়তে হয়েছে গুজবের সঙ্গেও। আর সেই গুজবের বলি হয়ে প্রাণ দিয়েছেন অনেকেই।
গুজব: পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজে মানুষের কাটা মাথা লাগবে
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই তথ্য প্রচার করা হচ্ছিল। এ বিষয়ে ম্যাসেঞ্জারে ইনবক্স করে একে অপরকে সতর্ক করছিলেন নেটিজেনরা। বেশির ভাগ মানুষই না বুঝে এ রকম কুসংস্কারে গা ভাসিয়েছেন। ২০১৯ সালে ‘ছেলেধরা’ গুজবে সারা দেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচজন।
২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে মূলত ব্যাপকভাবে এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গুজবকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটে। এ সময় সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছিলেন অভিভাবকেরা। ছেলেধরা সন্দেহে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। মোহাম্মদপুরে এক নারীকে একই সন্দেহে বেদম মারধর করা হয়। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলার দালাল বাজারে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় জনতা। নেত্রকোনায় এক শিশুকে গলা কেটে হত্যা করে ব্যাগে করে মাথা নিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহভাজন যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। আর এই খবর গণমাধ্যমে আসার পর নতুন করে শুরু হয় অপপ্রচার।
২০১৯ সালের ২০ জুলাই রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় এক নারীকে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। ওই দিন সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মেয়েকে ভর্তি করানোর তথ্য জানতে স্থানীয় একটি স্কুলে যান তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। এ সময় তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়।
একই সময়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়। পুলিশের ভাষ্য, রসুলপুর গ্রামে শরীফ মিয়ার বাড়ির সামনে দুই যুবক ঘোরাফেরা করতে থাকেন। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তাঁদের ঘোরাফেরার কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়। দুই যুবক ঠিকঠাক উত্তর দিতে না পারায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের পিটুনি দেয়। তাঁদের একজন মারা যান।
রাজশাহীতে নিজের ঘরে কাচের আঘাতে এক শিশুর গলায় আঘাত পাওয়ার পর এ নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তির পরপর গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, তার মাথা কেটে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
যেভাবে গুজব ছড়ায়
২০১৫ সালের ১ মার্চ নদীতে পশুর রক্ত ঢেলে পদ্মা সেতুর ভিত্তি স্থাপনকাজের উদ্বোধন করে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় মূল সেতুর পরীক্ষামূলক ভিত্তি স্থাপনের সময় নদীতে গরু ও খাসির রক্ত ঢালতে দেখা যায় চাইনিজ ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের। ভাসিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি মুরগিও। তাদের বিশ্বাস, বড় কাজের শুরুতে পশু উৎসর্গের মাধ্যমে স্রষ্টার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, এড়ানো যায় বড় দুর্ঘটনা।
তখন গণমাধ্যমেও এ নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময়ের রক্তের ছবিই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছিল অসাধু ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। মূল তথ্য আড়াল করে পুরোনো সেই ছবিকে মানুষের রক্তের ছবি বলে প্রচার করতে থাকে তারা।
গুজব কেন ছড়িয়েছে
পদ্মা সেতু নিয়ে বিভিন্ন সময়ে যেসব গুজব ছড়িয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই বিশ্বাসযোগ্য দলিল ছাড়াই ছড়িয়েছে। এর পেছনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করেছে। তবে এসব গুজব ছড়ানোর জন্য আবহমান কাল ধরে চলে আসা জনশ্রুতি এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন গল্পের ওপর বিশ্বাস করার প্রবণতাও দায়ী।
এই যেমন কথিত আছে, ১৫৮০ সালের দিকে মৌলভীবাজারে কমলার দিঘি তৈরি করার সময় দিঘিতে যখন পানি উঠছিল না, তখন রাজা স্বপ্নে দেখেন যে, তাঁর স্ত্রী দিঘিতে আত্মবিসর্জন দিলে পানি উঠবে। পরে রাজার স্ত্রী আত্মাহুতি দেওয়ার ফলেই ওই দিঘিতে পানি ওঠে। দিনাজপুরের রামসাগর নিয়েও একই ধরনের কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে।
এসব ঘটনার কোনো প্রামাণিক দলিল বা সুনিশ্চিত ঐতিহাসিক প্রমাণ না থাকলেও শত শত বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে চলে আসার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ধরনের গল্পের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা
পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও ভবিষ্যতেও এ রকম গুজব ছড়াতে পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু নিয়ে যেকোনো গুজব ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কঠোর নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গত ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিরাপত্তাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
গর্বের পদ্মা সেতু আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু তৈরি হয়েছে অনেক বাধা পেরিয়ে। একদিকে প্রমত্তা পদ্মার অস্বাভাবিক স্রোত এই সেতু নির্মাণকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে; অন্যদিকে সেতুর অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের ‘না’ ও বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র সেতুর নির্মাণযজ্ঞকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে বারবার। ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য এক সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।
উত্তাল পদ্মার বুকে চিরে পারাপারের জন্য এতদিন ২১টি জেলার মানুষকে নির্ভর করতে হতো নৌপথের ওপর। ফেরি, স্পিডবোট, নৌকা, ট্রলারযোগে পদ্মা পেরোতে কখনো কখনো পুরো একটা দিন লেগে যেত। তীব্র শীতে, প্রবল বর্ষায়, কালবৈশাখী ঝড়ে, ঈদে মানুষের যাতায়াত হয়ে পড়ত অনিশ্চিত। ছয় ঘণ্টার পথ পেরোতে কখনো কখনো লেগে যেত ২৪ ঘণ্টারও বেশি। মরদেহ পরিবহন, অসুস্থ রোগী কিংবা শিশুদের ভোগান্তি ছিল অবর্ণনীয়।
দীর্ঘ নির্মাণযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে এই সেতুকে লড়তে হয়েছে গুজবের সঙ্গেও। আর সেই গুজবের বলি হয়ে প্রাণ দিয়েছেন অনেকেই।
গুজব: পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজে মানুষের কাটা মাথা লাগবে
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই তথ্য প্রচার করা হচ্ছিল। এ বিষয়ে ম্যাসেঞ্জারে ইনবক্স করে একে অপরকে সতর্ক করছিলেন নেটিজেনরা। বেশির ভাগ মানুষই না বুঝে এ রকম কুসংস্কারে গা ভাসিয়েছেন। ২০১৯ সালে ‘ছেলেধরা’ গুজবে সারা দেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচজন।
২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে মূলত ব্যাপকভাবে এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গুজবকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটে। এ সময় সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছিলেন অভিভাবকেরা। ছেলেধরা সন্দেহে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। মোহাম্মদপুরে এক নারীকে একই সন্দেহে বেদম মারধর করা হয়। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলার দালাল বাজারে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় জনতা। নেত্রকোনায় এক শিশুকে গলা কেটে হত্যা করে ব্যাগে করে মাথা নিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহভাজন যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। আর এই খবর গণমাধ্যমে আসার পর নতুন করে শুরু হয় অপপ্রচার।
২০১৯ সালের ২০ জুলাই রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় এক নারীকে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। ওই দিন সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মেয়েকে ভর্তি করানোর তথ্য জানতে স্থানীয় একটি স্কুলে যান তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। এ সময় তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়।
একই সময়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়। পুলিশের ভাষ্য, রসুলপুর গ্রামে শরীফ মিয়ার বাড়ির সামনে দুই যুবক ঘোরাফেরা করতে থাকেন। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তাঁদের ঘোরাফেরার কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়। দুই যুবক ঠিকঠাক উত্তর দিতে না পারায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের পিটুনি দেয়। তাঁদের একজন মারা যান।
রাজশাহীতে নিজের ঘরে কাচের আঘাতে এক শিশুর গলায় আঘাত পাওয়ার পর এ নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তির পরপর গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, তার মাথা কেটে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
যেভাবে গুজব ছড়ায়
২০১৫ সালের ১ মার্চ নদীতে পশুর রক্ত ঢেলে পদ্মা সেতুর ভিত্তি স্থাপনকাজের উদ্বোধন করে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় মূল সেতুর পরীক্ষামূলক ভিত্তি স্থাপনের সময় নদীতে গরু ও খাসির রক্ত ঢালতে দেখা যায় চাইনিজ ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের। ভাসিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি মুরগিও। তাদের বিশ্বাস, বড় কাজের শুরুতে পশু উৎসর্গের মাধ্যমে স্রষ্টার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, এড়ানো যায় বড় দুর্ঘটনা।
তখন গণমাধ্যমেও এ নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময়ের রক্তের ছবিই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছিল অসাধু ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। মূল তথ্য আড়াল করে পুরোনো সেই ছবিকে মানুষের রক্তের ছবি বলে প্রচার করতে থাকে তারা।
গুজব কেন ছড়িয়েছে
পদ্মা সেতু নিয়ে বিভিন্ন সময়ে যেসব গুজব ছড়িয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই বিশ্বাসযোগ্য দলিল ছাড়াই ছড়িয়েছে। এর পেছনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করেছে। তবে এসব গুজব ছড়ানোর জন্য আবহমান কাল ধরে চলে আসা জনশ্রুতি এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন গল্পের ওপর বিশ্বাস করার প্রবণতাও দায়ী।
এই যেমন কথিত আছে, ১৫৮০ সালের দিকে মৌলভীবাজারে কমলার দিঘি তৈরি করার সময় দিঘিতে যখন পানি উঠছিল না, তখন রাজা স্বপ্নে দেখেন যে, তাঁর স্ত্রী দিঘিতে আত্মবিসর্জন দিলে পানি উঠবে। পরে রাজার স্ত্রী আত্মাহুতি দেওয়ার ফলেই ওই দিঘিতে পানি ওঠে। দিনাজপুরের রামসাগর নিয়েও একই ধরনের কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে।
এসব ঘটনার কোনো প্রামাণিক দলিল বা সুনিশ্চিত ঐতিহাসিক প্রমাণ না থাকলেও শত শত বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে চলে আসার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ধরনের গল্পের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা
পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও ভবিষ্যতেও এ রকম গুজব ছড়াতে পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু নিয়ে যেকোনো গুজব ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কঠোর নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গত ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিরাপত্তাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।
সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।
সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।
২০১৯ সালে ‘ছেলে ধরা’ গুজবে সারা দেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচজন। গুজবকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ‘ছেলে ধরা’ সন্দেহে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটে। এ সময় সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছিলেন অভিভাবকেরা।
২৪ জুন ২০২২গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫বাসস
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’
২০১৯ সালে ‘ছেলে ধরা’ গুজবে সারা দেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচজন। গুজবকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ‘ছেলে ধরা’ সন্দেহে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটে। এ সময় সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছিলেন অভিভাবকেরা।
২৪ জুন ২০২২একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।
২০১৯ সালে ‘ছেলে ধরা’ গুজবে সারা দেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচজন। গুজবকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ‘ছেলে ধরা’ সন্দেহে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটে। এ সময় সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছিলেন অভিভাবকেরা।
২৪ জুন ২০২২একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণী হাত বাঁধা অবস্থায় কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে আছেন। পাশেই একজন মধ্যবয়সী তরুণীটির বাবা পরিচয়ে আর্তনাদ করছেন। তাঁকে আরেকজন যুবক সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুলিশের পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি তরুণীকে ঘিরে পর্যবেক্ষণ করছেন। ভিডিওর শেষাংশে পুলিশকে তরুণীর মরদেহ ব্যাগে ভরতে দেখা যায়।
‘Md Nishad Hossain’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ক্যাপশনে লেখা, ‘আহারে নির্মমতা এবং একজন বাবার আর্তনাদ। বাংলাদেশ ২০২৪’র আগস্ট মাস থেকে সারা দেশে নারী ধর্ষণ করেই চলছে বিএনপি জামাতের মব সন্ত্রাসীরা। একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে রেখে গেছে। মেয়ের পিতার আহাজারী কে শুনবে দেশে এখন বিচার নাই। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হায়ানারা যা যা করছে ২০২৪ ’র বাংলাদেশে বিএনপি জামাত তার চেয়ে বেশি করছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভিডিওটি ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৫১৫টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। এতে ৫৬টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১৮৫ বার।
এসব কমেন্টে অনেকে ভিডিওটি নাটক উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে সত্য মনে করেও কমেন্ট করেছে। Shilvi Akther নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘আহারে জীবন! মানুষ কিভাবে এতো নির্মম হয়? একজন বাবার আর্তনাদ কি কারো মনকে মর্মাহত করে না?’ (বানান অপরিবর্তিত) Narayon Saha লিখেছে,’ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বাবার কান্দে সন্তানের লাশ হায়রে দুনিয়া।’ (বানান অপরিবর্তিত)
S M Salam Patwari, গর্জে ওঠো আরেকবার বাংলাদেশ এবং গাজীপুর জেলা যুবলীগ শাখা নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ‘Short Film BD’ নামে একটি লোগো লক্ষ করা যায়। এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Short Film BD’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ২০ জুনে প্রকাশিত। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মেঝেতে পড়ে থাকা তরুণী, পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি, আহাজারি করা ব্যক্তি ও আশপাশের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘মৌসুমীর সাথে কি হলো।’ ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে বোঝা যায়, এটি একটি নাটিকার দৃশ্য।
Short Film BD নামে ফেসবুক পেজটিতে একই তারিখে একই ভিডিও প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘মেয়ের কি হইছে জানতে চায় অসহায় বাবা।’ (বানান অপরিবর্তিত)
Short Film BD ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বিভিন্ন ধরনের নাটিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে অভিনয় করা একাধিক ব্যক্তিকে অন্যান্য ভিডিওতেও (১, ২) দেখা গেছে।
এ ছাড়া এই পেজের ইন্ট্রোতে লেখা, ‘শর্টফিল্ম ও নাটক দেখুন এবং উপভোগ করুন। আমাদের সঙ্গেই থাকুন।’ (ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত)
সুতরাং, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি প্রকৃতপক্ষে একটি নাটক।
বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণী হাত বাঁধা অবস্থায় কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে আছেন। পাশেই একজন মধ্যবয়সী তরুণীটির বাবা পরিচয়ে আর্তনাদ করছেন। তাঁকে আরেকজন যুবক সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুলিশের পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি তরুণীকে ঘিরে পর্যবেক্ষণ করছেন। ভিডিওর শেষাংশে পুলিশকে তরুণীর মরদেহ ব্যাগে ভরতে দেখা যায়।
‘Md Nishad Hossain’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ক্যাপশনে লেখা, ‘আহারে নির্মমতা এবং একজন বাবার আর্তনাদ। বাংলাদেশ ২০২৪’র আগস্ট মাস থেকে সারা দেশে নারী ধর্ষণ করেই চলছে বিএনপি জামাতের মব সন্ত্রাসীরা। একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে রেখে গেছে। মেয়ের পিতার আহাজারী কে শুনবে দেশে এখন বিচার নাই। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হায়ানারা যা যা করছে ২০২৪ ’র বাংলাদেশে বিএনপি জামাত তার চেয়ে বেশি করছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভিডিওটি ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৫১৫টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। এতে ৫৬টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১৮৫ বার।
এসব কমেন্টে অনেকে ভিডিওটি নাটক উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে সত্য মনে করেও কমেন্ট করেছে। Shilvi Akther নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘আহারে জীবন! মানুষ কিভাবে এতো নির্মম হয়? একজন বাবার আর্তনাদ কি কারো মনকে মর্মাহত করে না?’ (বানান অপরিবর্তিত) Narayon Saha লিখেছে,’ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বাবার কান্দে সন্তানের লাশ হায়রে দুনিয়া।’ (বানান অপরিবর্তিত)
S M Salam Patwari, গর্জে ওঠো আরেকবার বাংলাদেশ এবং গাজীপুর জেলা যুবলীগ শাখা নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ‘Short Film BD’ নামে একটি লোগো লক্ষ করা যায়। এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Short Film BD’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ২০ জুনে প্রকাশিত। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মেঝেতে পড়ে থাকা তরুণী, পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি, আহাজারি করা ব্যক্তি ও আশপাশের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘মৌসুমীর সাথে কি হলো।’ ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে বোঝা যায়, এটি একটি নাটিকার দৃশ্য।
Short Film BD নামে ফেসবুক পেজটিতে একই তারিখে একই ভিডিও প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘মেয়ের কি হইছে জানতে চায় অসহায় বাবা।’ (বানান অপরিবর্তিত)
Short Film BD ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বিভিন্ন ধরনের নাটিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে অভিনয় করা একাধিক ব্যক্তিকে অন্যান্য ভিডিওতেও (১, ২) দেখা গেছে।
এ ছাড়া এই পেজের ইন্ট্রোতে লেখা, ‘শর্টফিল্ম ও নাটক দেখুন এবং উপভোগ করুন। আমাদের সঙ্গেই থাকুন।’ (ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত)
সুতরাং, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি প্রকৃতপক্ষে একটি নাটক।
২০১৯ সালে ‘ছেলে ধরা’ গুজবে সারা দেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচজন। গুজবকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ‘ছেলে ধরা’ সন্দেহে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটে। এ সময় সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছিলেন অভিভাবকেরা।
২৪ জুন ২০২২একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫