Ajker Patrika

পড়াশোনায় কার্যকরী ফল অর্জনের বৈজ্ঞানিক কৌশল

সাদিয়া আফরিন হীরা
পড়াশোনায় কার্যকরী ফল অর্জনের বৈজ্ঞানিক কৌশল

পর্যাপ্ত পড়াশোনা করার পরও পরীক্ষায় অনেক সময় শিক্ষার্থীরা আশানুরূপ ফল পায় না। এর পেছনে কারণ হতে পারে সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও কৌশলগত দুর্বলতা। তাই সঠিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে দুর্বলতা কাটিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানো ও কার্যকরী ফল অর্জনের পাঁচটি বৈজ্ঞানিক কৌশল নিয়ে আজকের আয়োজন।  

স্পেসড রিপিটেশন 
পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানোর একটি নির্ভরযোগ্য কৌশল হলো স্পেসড রিপিটেশন। জার্মান মনোবিজ্ঞানী হারমান এবিংহাউসের দীর্ঘদিনের গবেষণার ফল এই কৌশল। স্পেসড রিপিটেশন মূলত আপনাকে দীর্ঘদিন পড়া মনে রাখতে সাহায্য করবে। ধরুন, বইয়ের একটি বিষয় আপনি মুখস্থ করলেন। এক মাস পর সেই বিষয় থেকে আপনাকে প্রশ্ন করা হলে সঠিক উত্তর দেওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। দীর্ঘ বিরতির কারণে ভুলে যাওয়াই স্বাভাবিক। এই ভুলে যাওয়া এড়াতে শেখা বিষয়টি স্বল্প বিরতি দিয়ে বারবার পড়তে হবে, যার মধ্য দিয়ে আপনার পড়া মনে রাখার প্রবণতা বাড়বে; পাশাপাশি কার্যকরী ফল অর্জন করা হবে খুব সহজ।

পিকিউ ফোর আর মেথড 
পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানোর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হলো পিকিউ ফোর আর পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য প্রথমে পড়তে চাওয়া বিষয়টি ভালোভাবে দেখে নিন। এরপর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন করে নিজেকে যাচাই করুন। যাচাই শেষে আবার পড়ার উৎসে ফিরে যান। তবে পুরো বিষয়টি একবারে পড়া যাবে না। ছোট ছোট অংশে ভাগ করে পড়ুন। পড়া শেষে নিজেকে করা সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর আত্মস্থ করে নিন। তবে আপনার সমস্যা ও উত্তরগুলো স্পষ্ট হয়ে যাবে। পরের ধাপে সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে নিজের মতো করে একটি সারসংক্ষেপ লিখুন ও শব্দ করে পড়ুন। সবশেষে বিষয়টি আরেকবার পড়ে প্রস্তুতি পোক্ত করে রাখুন, যার মধ্য দিয়ে বিষয়টি ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যাবে।  

ফাইনম্যান টেকনিক
পড়া মনে রাখার জন্য বেশ জনপ্রিয় একটি পদ্ধতির নাম ফাইনম্যান কৌশল। এটি সম্পন্ন হয় মোট চারটি ধাপে। সহজ ভাষায় বললে, নিজে পড়ে, অন্যকে পড়ানোর কৌশলই হলো ফাইনম্যান পদ্ধতি। কৌশলটি প্রয়োগ করতে প্রথমেই আপনি কোন বিষয়টি পড়বেন, তা নির্ধারণ করে ফেলুন। তারপর সময় নিয়ে বিষয়টি আত্মস্থ করুন। দ্বিতীয় ধাপে বিষয়টি নিজেকে খুব সহজভাবে বোঝানোর চেষ্টা করুন। দেখা যাবে, এই প্রক্রিয়ায় আপনি অনেক তথ্যই ভুলে যাবেন বা অন্যকে বোঝাতে ব্যর্থও হতে পারেন। ঠিক তখনই শুরু করবেন তৃতীয় ধাপের কাজ। তৃতীয় ধাপে আপনি কোথায় আটকে গেলেন ও কী ধরনের বাধার শিকার হলেন, তা নোট করে রাখুন এবং পুনরায় পড়ার উৎসে ফিরে যান। চাইলে অন্য বই বা ইন্টারনেটের আনুষঙ্গিক সাহায্যও নিতে পারেন। মোদ্দা কথা, নিজের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে শেষ ধাপে আবারও নিজেকে বা অন্যকে শেখানোর চেষ্টা করতে হবে। 

অ্যাকটিভ রিকল 
খাতায় নোট করে একটি বিষয় বারবার মুখস্থ করার প্রবণতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে খুব বেশি। কিন্তু এটি বাস্তবে কতটা কার্যকর? উত্তরে বিজ্ঞান বলে, পদ্ধতিটি খুব বেশি ফলপ্রসূ নয়। বরং একটি বিষয় ভালোভাবে পড়ার পর বই বন্ধ করে বা না দেখে যদি সেই বিষয়টি মনে করার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনার শেখার মাত্রা বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। অ্যাকটিভ রিকল পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য যেকোনো বিষয় ভালো করে পড়ে নিন। পড়া শেষে বই অথবা নোটখাতা বন্ধ করুন। এখন নিজেকে সেই বিষয় থেকে প্রশ্ন করুন। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় পরীক্ষার হলের মতো করে সাজিয়ে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন। দেখা যাবে, প্রথমবারেই হয়তো আপনি সব সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না। তাই বিষয়টি আবারও পড়ে নিজেকে ঝালিয়ে নিন।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত