Ajker Patrika

ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন: আ.লীগে ৬ প্রার্থী, সুযোগ নিতে চায় একক জাপা

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন: আ.লীগে ৬ প্রার্থী, সুযোগ নিতে চায় একক জাপা

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নির্বাচন আগামী ৯ মার্চ। তফসিল ঘোষণার পরপরই সম্ভাব্য প্রার্থীরা কৌশলী প্রচারে নেমেছেন। তাঁরা ভোটারদের নিজের বলয়ে টানার চেষ্টা করছেন। 

এদিকে ১৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল শেষ হয়েছে। দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাচ্ছেন। আওয়ামী লীগেরই ছয় নেতা মেয়র প্রার্থী হওয়ায় সুযোগ নিতে চান জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী।

ময়মনসিংহ পৌরসভা ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর সিটি করপোরেশনে উন্নীত হয়। ২০১৯ সালের ৫ মে প্রথম সিটির ভোট গ্রহণ হয়। তবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইকরামুল হক টিটু মেয়র নির্বাচিত হন। ভোট হয় কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে।

এবার মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সদ্য সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলম, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিলু, নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট ফারমার্জ আল নূর রাজীব, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য ড. মো. রেজাউল হক এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল। 

এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬৪ এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। যাচাই-বাছাই শেষে ২৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার।

সময় যত যাচ্ছে, ততই বাড়ছে প্রার্থীদের তৎপরতা। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ইতিমধ্যে গণসংযোগ শুরু করেছেন। পোস্টার সাঁটানোর পাশাপাশি ফেসবুকে তাঁরা জানান দিচ্ছেন সিটিকে তিলোত্তমা করে গড়ে তোলার। ভোটাররাও ভেবেচিন্তে নগরপিতা নির্বাচনের কথা জানিয়েছেন। 

মহানগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার এলাকার ভোটার শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই সহিংসতামুক্ত উৎসবমুখর ভোট। মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁকে যোগ্য মনে হবে, তাঁকেই ভোট দেব।’ 

নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই নগরীতে শান্তিতে বাস করতে; নির্বিঘ্নে চলাচল করতে। বিগত সময়ে যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসন হয়নি। সে ক্ষেত্রে যে ভালো কাজ করবে, তাঁকেই ভোট দেব।’ 

ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ একেবারেই তলানিতে উল্লেখ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) মহানগর শাখার সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, ‘আমরা চাই, ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক। এতে নির্বাচনও জমজমাট হবে। ভোটারদের মধ্যে ভোট নিয়ে আগ্রহ তৈরি হবে। সাধারণ ভোটারদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।’ 

গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন আশা করে সদ্য সাবেক মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘আমি যেভাবে কাজ করেছি এবং সব সময় মানুষের পাশে থেকেছি, নগরবাসী আমাকে আবারও সুযোগ দিলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখব। চলমান কাজ সম্পন্ন হলে সাধারণ মানুষ নগরীকে নতুন রূপে দেখবে।’ 

বিগত সময়ে দুর্ভোগ ছাড়া মানুষ তেমন কোনো উন্নয়ন পায়নি। জয়ী হলে অপরিকল্পিত নগরীকে ঢেলে সাজিয়ে এবং সব নাগরিক দুর্ভোগ দূর করা হবে বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলম। 

যানজট, জলাবদ্ধতা দূর করতে সুপরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং কর কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু। 

জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র প্রার্থী শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘ময়মনসিংহে জাতীয় পার্টির একটি ভোটব্যাংক রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় মানুষ জাতীয় পার্টিকেই বেছে নেবে। আর সুষ্ঠু নির্বাচন হলে অবশ্যই আমি বিজয়ী হব। বিজয়ী হলে অবহেলিত ময়মনসিংহ নগরীকে ঢেলে সাজাব সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত