Ajker Patrika

মালদিনি-জাদুতে এসি মিলানের সিংহাসনে ফেরা

সাহিদ রহমান অরিন, ঢাকা
Thumbnail image

ফোরজা মিলান, ফোরজা মিলান (এগিয়ে চলো মিলান)…। মিলান নগরীর প্রাণকেন্দ্র পিয়াৎসা দুয়োমোয় এখন শুধু একটিই কলরব। আট থেকে আশি সেখানে মিলেমিশে একাকার। বলতে গেলে পুরো উৎসবের রংটাই হয়ে গেছে এসি মিলানের ঐতিহ্যবাহী লাল।

হবে না-ই বা কেন? পাক্কা ১১ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে পরশু রাতে ইতালিয়ান সিরি ‘আ’-এর শিরোপা (স্কুদেত্তো নামে পরিচিত) ঘরে তুলেছে এসি মিলান। ইউরোপের অন্যতম সেরা ক্লাবটি আবার বসেছে নিজ দেশের সিংহাসনে।

ফুটবলে কোনো দল চ্যাম্পিয়ন হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কৃতিত্বটা দেওয়া হয় কোচদের। কিন্তু মিলানের বেলায় স্তুতি গাওয়া হচ্ছে পাওলো মালদিনির। হ্যাঁ, কিংবদন্তি মালদিনি।

সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার মালদিনি তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনে অনেক নামীদামি ক্লাবের প্রস্তাব পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছেন। সারা জীবন থেকে গেছেন প্রাণের ক্লাব এসি মিলানে। ২৫ বছরে দলটির হয়ে ৯০২ ম্যাচ খেলা মালদিনি জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ, স্কুদেত্তোসহ বহু শিরোপা। কিন্তু ২০০৯ সালে তিনি অবসর নেওয়ার পর থেকে চুপসে যেতে থাকে মিলান। গত দশকে বড় শিরোপা বলতে শুধু একটি স্কুদেত্তো।

 এককালের রাজার ভিখারি হওয়ার দশা দেখে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারেননি মালদিনি। ক্লাবের ডাকে সাড়া দিয়ে ২০১৯ সালে হন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (প্রযুক্তিগত পরিচালক)।

মালদিনির পরামর্শে কয়েক দিনের মধ্যেই কোচ করে আনা হয় স্টেফানো পিওলোকে। সেই পিওলোর প্রশিক্ষণে মিলান খেতাব জিতলেও আড়াল থেকে আসল কাজটা করেছেন মালদিনিই।

২০১৮-১৯ মৌসুমে এসি মিলানের পারিশ্রমিক বিল ছিল ১৪২.৭ মিলিয়ন ইউরো। সেবার তারা লিগ শেষ করেছিল পাঁচ নম্বরে থেকে। সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ ৫ লিগে যে দলগুলো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তাদের মধ্যে মিলানের বিলই সবচেয়ে কম—১০০ মিলিয়ন ইউরো। খেলোয়াড়ের পেছনে এত কম অর্থ ঢেলেও সেরাটা বের করে আনার পুরো কৃতিত্বই ৫৩ বছর বয়সী মালদিনির। কারণ, তিন বছর আগে তিনি পরিচালক হয়ে আসার পর মূল লক্ষ্য ছিল ক্লাবের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা। পাশাপাশি দলকে শক্তিশালী করে যেকোনো প্রতিযোগিতায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা। এবার মিলানের চ্যাম্পিয়নস লিগে ফেরা সেটিরই জানান দেয়।

কোনো খেলোয়াড়ই যে ক্লাবের চেয়ে বড় হতে পারেন না, সেটিও মালদিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন অতিরিক্ত বেতন দাবি করা হাকান চালহানগ্লু, জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মাদের মতো তারকাদের বিনা মূল্যে ছেড়ে দিয়ে। এ দুজনের বর্তমান বাজার দর ১০০ মিলিয়নেরও বেশি। তবু মালদিনি তাঁদের প্রশ্রয় দেননি। তাতে সাময়িক অসুবিধা মনে হলেও মালদিনি খুঁজে বের করেছেন আরও ভালো মানের বিকল্প।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত