Ajker Patrika

ধ্বংসের পথে ৬০০ বছরের শংকরপাশা শাহি মসজিদ

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৫২
ধ্বংসের পথে ৬০০ বছরের  শংকরপাশা শাহি মসজিদ

প্রায় ৬০০ বছর ঐতিহ্যের ধারক হয়ে আছে হবিগঞ্জের উচাইল শংকরপাশা শাহি মসজিদ। অপরূপ সৌন্দর্যের পুরাকীর্তিতে সাজানো মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন পর্যটকেরা। কিন্তু বহু বছর সংস্কার না হওয়ায় প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে মসজিদটি। প্রশাসন বলছে, মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতায় থাকায় সংস্কারকাজ চালাতে পারছেন না তাঁরা।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের উচাইল গ্রামের একটি টিলার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় শংকরপাশা শাহি মসজিদ। দূর থেকে নজর কাড়ে লাল টকটকে মসজিদটি। প্রাচীন আমলের কারুকার্য-নকশায় সাজানো মসজিদের ভেতর ও বাইরের দেয়াল। নকশার মাঝে মাঝে আরবি হরফের বিভিন্ন লেখা। তবে সংস্কারের অভাবে এসব লেখার অনেকাংশই এখন অস্পষ্ট। আগাছা জন্মেছে মসজিদের বাইরের দেয়ালে।

বর্গাকৃতির মসজিদটির মূল ভবনের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ২১ ফুট ৬ ইঞ্চি করে এবং সামনের বারান্দার প্রস্থ তিন ফুটের সামান্য বেশি। চার গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির মূল ভবনের ওপর একটি বিশাল গম্বুজ এবং বাকি তিনটি গম্বুজ বারান্দার ওপর। অনন্য নির্মাণশৈলীর এই মসজিদে মোট ১৫টি দরজা ও জানালা রয়েছে। দরজা এবং জানালাগুলো আকার-আকৃতি প্রায় সমান।

ঠিক কত বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সে বিষয়ে নেই সঠিক কোনো তথ্য। স্থানীয়দের ধারণা, ৫০০ থেকে ৬০০ বছর আগে স্বাধীন সুলতানি আমলে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ মসজিদটি নির্মাণ করে। ধারণা করা হয়, ১৪৯১ থেকে ১৫১৯ সালের মধ্যে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। আবার অনেকে এটিকে ‘গায়েবি মসজিদ’ও বলেন।

মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের দাবি—এরশাদ সরকারের আমলে মসজিদটিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে নেওয়া হয়। সে সময় সামান্য সংস্কার হলেও এরপর আর কোনো সংস্কার হয়নি। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

মসজিদের ইমাম মো. ফজলুল হক বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে কিন্তু তারপরও সংস্কার করা হচ্ছে না। আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি।’

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা মসজিদের সামনে একটি দৃষ্টিনন্দন অজুখানা তৈরি করেছি। তবে মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতায় থাকায় এটি আমরা সংস্কার করতে পারছি না। আমরা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে মসজিদ এবং সংলগ্ন রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আবেদন জানিয়েছি। আশা করি, শিগগিরই এটিকে সংস্কারের মাধ্যমে আরও দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত