সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন
পত্রিকা হাতে নিয়েই মনটা ভালো হয়ে গেল, প্রধানমন্ত্রী ওদের বকে দিয়েছেন। ওরা কারা? ওরা হলো তাঁর আদরের ছাত্রলীগের কর্মীরা! বেশ করেছেন। মাস্ক ছাড়া কেন কোনো ‘গ্যাদারিং’-এ যাবে এখন? সময়টা করোনার। তার ওপর ওমিক্রন-আতঙ্ক।
সেদিন ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল। ছাত্রলীগের হাজার হাজার কর্মী র্যালি বের করেছিলেন রাজধানীজুড়ে। সেটাকে আনন্দ মিছিল বলা ভালো অবশ্য। পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এক বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এবং সেই বক্তব্যেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের খানিকটা আদরের সঙ্গেই শাসন করে দিলেন তিনি, ‘চমৎকার র্যালি করেছো তোমরা, একটু খুঁত আছে। কারও মুখে মাস্ক ছিল না।’
পরবর্তী সময়ে যেন এই ভুল না হয়, এমনভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা, শিক্ষার আদর্শ নিয়ে সততার সঙ্গে প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে হবে, যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন। আমরা সাধারণ জনগণও আশা করি, ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর কথা রাখবেন।
আহা, যদি তাঁদের এই আনন্দ শোভাযাত্রায় ঢাকা শহরের কয়েকটা রাস্তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে না থাকত, তবে কতই না ভালো হতো। সন্ধ্যায় অফিসফেরত যাত্রীদের জ্যামে বসে থাকতে হতো না, বেশির ভাগ যাত্রীকে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হতো না কিংবা রিকশা-অটোরিকশার চালকেরা মাঝ রাস্তায় যাত্রী নামিয়ে দিতেন না। জ্যামে আটকে থাকা অ্যাম্বুলেন্সটাও প্যাঁ পোঁ প্যাঁ পোঁ করতে করতে ক্লান্তিতে চুপ হয়ে যেত না!
আমার ঘটনাটাই বলি। বনশ্রী থেকে রওনা হয়েছি বংশাল যাব। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠে বসেছি। বেইলি রোডের কাছাকাছি আসার পর চালক আর যেতে চাইলেন না। সামনে বিশাল জ্যাম। সব দিকের রাস্তা বন্ধ। সারি সারি যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। সিএনজিচালিত অটোচালকের সঙ্গে তর্কযুদ্ধে পরাজিত হয়ে কাকরাইল মোড়ের আগেই নেমে যেতে হলো। আমি একা না, অসংখ্য মানুষ এদিক-ওদিক হাঁটছে। মোটামুটি সবাই যে অফিসফেরত মানুষ, তা বোঝা সহজ। জ্যাম ঠেলে হাঁটতে হাঁটতে শিল্পকলার কাছাকাছি এলাম। সেখানে একটামাত্র রিকশা পেলাম, যেটার আসন শূন্য। চালকের হয়তো মায়াই হলো, নিতে চাইলেন; তবে প্রেসক্লাব পর্যন্ত।
এরপর আর যাওয়া সম্ভব না। ঠিক আছে বলে রিকশায় চড়লাম। হ্যাঁ, ঠিক প্রেসক্লাবের সামনে নেমে আর যাওয়ার কোনো পথ নেই। অপর পাশ থেকে ছাত্রলীগের কর্মীদের আনন্দ মিছিল চলছে রাস্তা আটকে। সাধারণ যানবাহন আটকা পড়েছে। পাশাপাশি ছাত্রলীগ কর্মীদের ইয়া বড় বড় ট্রাক মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাকে আর রাস্তায় কর্মীদের আনন্দ চলছে গানের তালে। সব ট্রাকে বিশাল বিশাল সাউন্ড বক্স থেকে গানের আওয়াজ ঠিকরে বের হচ্ছে। কোনোটা থেকে বাংলা, কোনোটা থেকে হিন্দি আবার কোনোটা থেকে ইংরেজি গানের দমদম-গমগম আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তাঁদের আনন্দ দেখে আমার কী যে ভালো লাগল! মনকে বোঝালাম, ‘ঠিক আছে ভাইয়েরা, তোমরা আনন্দ করো। আমি বরং হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার মনোবল জোগাই!’
মনোবল জুগিয়ে হাঁটা ধরলাম। ভাইদের ঠেলে ঠেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে বিন্দুমাত্র কোনো আনন্দ খুঁজে পেলাম না। ভাগ্যিস শীতের সময়। গরমকাল হলে মাথাটা ঠান্ডা রাখা কঠিন হয়ে যেত! দোয়েল চত্বর দিয়ে যত দূর চোখ গেল, এই আনন্দ শোভাযাত্রার আভাস পাওয়া গেল। সেদিকে না গিয়ে বঙ্গবাজারের পথে হাঁটা শুরু করলাম। হাঁটছে আরও মানুষ। শেষ পর্যন্ত হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলাম।
ভাবি, যাঁরা জ্যামে বসে ছিলেন, তাঁরা কত বোকা! হাঁটলে কিন্তু স্বাস্থ্য ভালো থাকে। হাঁটবেন, ঠিক আছে?
ইয়ে মানে, প্রধানমন্ত্রী যদি আরেকটু কড়া করে বকে দিয়ে বলতেন, ‘করোনার এই সময়টায় এমন “পাবলিক গ্যাদারিং” না করলেই ভালো হতো। রাস্তা আটকে মানুষকে বিরক্ত করে নিজেরা আনন্দ করা শোভন নয়।’
পত্রিকা হাতে নিয়েই মনটা ভালো হয়ে গেল, প্রধানমন্ত্রী ওদের বকে দিয়েছেন। ওরা কারা? ওরা হলো তাঁর আদরের ছাত্রলীগের কর্মীরা! বেশ করেছেন। মাস্ক ছাড়া কেন কোনো ‘গ্যাদারিং’-এ যাবে এখন? সময়টা করোনার। তার ওপর ওমিক্রন-আতঙ্ক।
সেদিন ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল। ছাত্রলীগের হাজার হাজার কর্মী র্যালি বের করেছিলেন রাজধানীজুড়ে। সেটাকে আনন্দ মিছিল বলা ভালো অবশ্য। পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এক বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এবং সেই বক্তব্যেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের খানিকটা আদরের সঙ্গেই শাসন করে দিলেন তিনি, ‘চমৎকার র্যালি করেছো তোমরা, একটু খুঁত আছে। কারও মুখে মাস্ক ছিল না।’
পরবর্তী সময়ে যেন এই ভুল না হয়, এমনভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা, শিক্ষার আদর্শ নিয়ে সততার সঙ্গে প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে হবে, যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন। আমরা সাধারণ জনগণও আশা করি, ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর কথা রাখবেন।
আহা, যদি তাঁদের এই আনন্দ শোভাযাত্রায় ঢাকা শহরের কয়েকটা রাস্তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে না থাকত, তবে কতই না ভালো হতো। সন্ধ্যায় অফিসফেরত যাত্রীদের জ্যামে বসে থাকতে হতো না, বেশির ভাগ যাত্রীকে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হতো না কিংবা রিকশা-অটোরিকশার চালকেরা মাঝ রাস্তায় যাত্রী নামিয়ে দিতেন না। জ্যামে আটকে থাকা অ্যাম্বুলেন্সটাও প্যাঁ পোঁ প্যাঁ পোঁ করতে করতে ক্লান্তিতে চুপ হয়ে যেত না!
আমার ঘটনাটাই বলি। বনশ্রী থেকে রওনা হয়েছি বংশাল যাব। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠে বসেছি। বেইলি রোডের কাছাকাছি আসার পর চালক আর যেতে চাইলেন না। সামনে বিশাল জ্যাম। সব দিকের রাস্তা বন্ধ। সারি সারি যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। সিএনজিচালিত অটোচালকের সঙ্গে তর্কযুদ্ধে পরাজিত হয়ে কাকরাইল মোড়ের আগেই নেমে যেতে হলো। আমি একা না, অসংখ্য মানুষ এদিক-ওদিক হাঁটছে। মোটামুটি সবাই যে অফিসফেরত মানুষ, তা বোঝা সহজ। জ্যাম ঠেলে হাঁটতে হাঁটতে শিল্পকলার কাছাকাছি এলাম। সেখানে একটামাত্র রিকশা পেলাম, যেটার আসন শূন্য। চালকের হয়তো মায়াই হলো, নিতে চাইলেন; তবে প্রেসক্লাব পর্যন্ত।
এরপর আর যাওয়া সম্ভব না। ঠিক আছে বলে রিকশায় চড়লাম। হ্যাঁ, ঠিক প্রেসক্লাবের সামনে নেমে আর যাওয়ার কোনো পথ নেই। অপর পাশ থেকে ছাত্রলীগের কর্মীদের আনন্দ মিছিল চলছে রাস্তা আটকে। সাধারণ যানবাহন আটকা পড়েছে। পাশাপাশি ছাত্রলীগ কর্মীদের ইয়া বড় বড় ট্রাক মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাকে আর রাস্তায় কর্মীদের আনন্দ চলছে গানের তালে। সব ট্রাকে বিশাল বিশাল সাউন্ড বক্স থেকে গানের আওয়াজ ঠিকরে বের হচ্ছে। কোনোটা থেকে বাংলা, কোনোটা থেকে হিন্দি আবার কোনোটা থেকে ইংরেজি গানের দমদম-গমগম আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তাঁদের আনন্দ দেখে আমার কী যে ভালো লাগল! মনকে বোঝালাম, ‘ঠিক আছে ভাইয়েরা, তোমরা আনন্দ করো। আমি বরং হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার মনোবল জোগাই!’
মনোবল জুগিয়ে হাঁটা ধরলাম। ভাইদের ঠেলে ঠেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে বিন্দুমাত্র কোনো আনন্দ খুঁজে পেলাম না। ভাগ্যিস শীতের সময়। গরমকাল হলে মাথাটা ঠান্ডা রাখা কঠিন হয়ে যেত! দোয়েল চত্বর দিয়ে যত দূর চোখ গেল, এই আনন্দ শোভাযাত্রার আভাস পাওয়া গেল। সেদিকে না গিয়ে বঙ্গবাজারের পথে হাঁটা শুরু করলাম। হাঁটছে আরও মানুষ। শেষ পর্যন্ত হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলাম।
ভাবি, যাঁরা জ্যামে বসে ছিলেন, তাঁরা কত বোকা! হাঁটলে কিন্তু স্বাস্থ্য ভালো থাকে। হাঁটবেন, ঠিক আছে?
ইয়ে মানে, প্রধানমন্ত্রী যদি আরেকটু কড়া করে বকে দিয়ে বলতেন, ‘করোনার এই সময়টায় এমন “পাবলিক গ্যাদারিং” না করলেই ভালো হতো। রাস্তা আটকে মানুষকে বিরক্ত করে নিজেরা আনন্দ করা শোভন নয়।’
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫