Ajker Patrika

রুগ্‌ণ ক্যানসার চিকিৎসা

সম্পাদকীয়
রুগ্‌ণ ক্যানসার চিকিৎসা

প্রতিদিন ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটে উপস্থিত হয় শত শত সংকটাপন্ন রোগী। এটা দেশের একটি বিশেষায়িত ক্যানসার চিকিৎসার প্রতিষ্ঠান। দিন শেষে অসংখ্য রোগীকে ফিরে যেতে হয় নিরাশ হয়েই। কেউ আবার পৃথিবী থেকেই বিদায় নেয় চিকিৎসা না পেয়ে। দুই বছর ধরে ছয় বিকিরণ যন্ত্রের মধ্যে পাঁচটিই অকেজো হয়ে পড়ে ছিল। এর মধ্যে দুই বছর ধরে একটি যন্ত্র দিয়ে থেমে থেমে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

আরেকটি যন্ত্র মেরামতের পর তিন সপ্তাহ ধরে সেবা পাওয়া যাচ্ছে। যন্ত্রের অভাবে দুই বছর ধরে রোগীদের টিকিটে ‘যন্ত্রের স্বল্পতায় সেবা দেওয়া সম্ভব নয়’ লেখাসংবলিত সিল মেরে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর প্রতিদিন চারটি যন্ত্র নষ্ট থাকায় সেবা বঞ্চিত হচ্ছে ৪৫০-৫৫০ জন রোগী। আর আগে ছয়টি যন্ত্রে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ জন রোগী সেবা পেত।

এমনিতেই আমাদের দেশের চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা অপ্রতুল। যেখানে ক্যানসারের মতো রোগের চিকিৎসা করতে ধনী ব্যক্তিদের হিমশিম খেতে হয়। অনেকে এই রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। তারপরও তাঁরা বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে যেতে বাধ্য হয়। কিন্তু গরিবদের অবস্থা কী দাঁড়ায় এ রোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে? ক্যানসারের মতো রোগের ব্যয়বহুল চিকিৎসা করার সামর্থ্য দরিদ্র মানুষদের থাকে না। তাই তাদের শেষ ভরসার জায়গা সরকারি হাসপাতাল। কিন্তু এখানেও তারা শুধু চিকিৎসাযন্ত্রের অভাবে চিকিৎসাসেবা পায় না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ হলো ক্যানসার। প্রতিবছর প্রতি ছয়জনে একজনের মৃত্যু হয় জটিল এই রোগের কারণে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, উচ্চ আয়ের দেশে প্রতি এক লাখ মানুষের বিপরীতে অন্তত একটি রেডিওথেরাপির যন্ত্র থাকতে হবে। মধ্যম আয়ের দেশে প্রতি ১০ লাখে একটি ও নিম্ন আয়ের দেশের ক্ষেত্রে প্রতি ৫০ লাখে একটি। অথচ সাড়ে ১৬ কোটির বাংলাদেশে রয়েছে ৫০টিরও কম যন্ত্র।

বেশির ভাগ ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে সঠিক চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপির পাশাপাশি রেডিওথেরাপি দিতে হয়। যেমন স্তন ক্যানসার, জরায়ু ক্যানসারের জন্য আক্রান্ত রোগীকে রেডিওথেরাপি দেওয়া আবশ্যক। অনেক ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসা শুধু কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি দিয়েই সম্পন্ন করা সম্ভব।

দুই বছর কম সময় নয়। গুরুত্বপূর্ণ ক্যানসার রোগের চিকিৎসার জন্য এত দিন ধরে কীভাবে যন্ত্রগুলো পড়ে থাকতে পারে? সেটা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। কিন্তু যন্ত্রগুলো মেরামতের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো তাগিদ আছে বলে মনে হচ্ছে না। যদিও দুটি বিকিরণ যন্ত্র কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেগুলো কবে পাওয়া যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তাই সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে যন্ত্রগুলো মেরামত করা বা নতুনভাবে কেনার কোনো বিকল্প নেই।

এ ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা, উদাসীনতা ও গাফিলতির বিষয়টি স্পষ্ট। তাই কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহির মধ্যে আনা অতি জরুরি। তাহলেই কেবল এখানে চিকিৎসাসেবায় গতি ত্বরান্বিত হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে বর খুন, নিখোঁজ নববধূকে উদ্ধারে নেমেছে ড্রোন

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার ও কিছু প্রশ্ন

ইরান-ইসরায়েলের সম্ভাব্য মুখোমুখি সংঘর্ষের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফিরোজায় বিএনপি নেতাদের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত