Ajker Patrika

বিচারকের সাজায় ক্ষোভ, প্রোফাইলে কালো রং

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিচারকের সাজায় ক্ষোভ, প্রোফাইলে কালো রং

আদালত অবমাননার মামলায় কুমিল্লার সাবেক মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. সোহেল রানাকে হাইকোর্টে সাজার ঘটনায় নিম্ন আদালতের বিচারকেরা ক্ষুদ্ধ। তাঁদের সংগঠন এ নিয়ে আইনমন্ত্রীর কাছেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং উচ্চ আদালতে ডেকে নিয়ে বিচারকদের ভর্ৎসনা বন্ধের দাবি জানিয়েছে। ওই ঘটনার পর অনেক বিচারক তাঁদের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল কালো রঙে ঢেকে দিয়েছেন। স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।

হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার সকালে আদালত অবমাননার মামলায় সোহেল রানাকে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন। তবে এর তিন ঘণ্টা পর তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বেঞ্চ তাঁকে ৩০ দিনের জামিন দেন। পরে বিকেলে চেম্বার আদালত সাজার রায় আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেন।

এ ঘটনায় নিম্ন আদালতের বিচারকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবারই নিম্ন আদালতের অনেক বিচারক নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল কালো রঙে ঢেকে দেন। কারণ জানতে চাইলে একজন বিচারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এটা শোকের প্রতীক। একজন বিচারককে সাজা দেওয়ায় তাঁরা শোকের প্রতীক ফেসবুকে ব্যবহার করছেন। ওই ঘটনায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। 

গাজীপুরের একজন বিচারক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘মাঝে মাঝে রক্তক্ষরণ হয়। জুডিশিয়াল অফিসার্স প্রোটেকশন অ্যাক্ট নীরবে উপহাস করছে আমাদের।’

ঢাকার একজন বিচারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশ প্রশাসনের না মানার অনেক নজির আছে। কিন্তু এ জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দণ্ড দেননি হাইকোর্ট। অথচ একজন বিচারককে সাজা দেওয়া হলো। এ জন্য বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ।

সূত্র বলেছে, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতের বৈঠকে ওই ঘটনার ব্যাপারে নিম্ন আদালতের বিচারকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। রাজধানীর বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের সংগঠন জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে মন্ত্রীর ওই বৈঠকে রাজধানী ও আশপাশে কর্মরত বিচার বিভাগীয় প্রায় আড়াই শ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা উচ্চ আদালতে ডেকে ভর্ৎসনা বন্ধের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কখনো কখনো তাঁদের ভুলভ্রান্তি হয়। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের ভুলগুলো সংশোধনের সুযোগ দেবেন, সেটাই প্রত্যাশা করেন।

সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে একজন বিচারক বলেন, জুডিশিয়াল অফিসার প্রোটেকশন অ্যাক্ট থাকলেও বিচারকদের হয়রানির ক্ষেত্রে তা মানা হয় না। বৈঠকে বিচারকেরা যুগ্ম জজ পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের গাড়ি সুবিধা দিতে আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আইনমন্ত্রী বৈঠকে ওঠা প্রস্তাবগুলো প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করার আশ্বাস দেন।

বৈঠকে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান, মহাসচিব ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান বিচারকদের নেতৃত্ব দেন। আইনসচিব মো. গোলাম সারওয়ার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবের মোবাইল ফোনে কল করলে তাঁরা ধরেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিচারক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কুমিল্লার একটি ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে বিচারক সোহেল রানা মামলার বিচারকাজ চালিয়ে যান। এতে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেন ওই মামলার আসামি। সোহেল রানা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে সংযুক্ত আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত