Ajker Patrika

সরকারি পরিত্যক্ত ভবন, নামমাত্র মূল্যে নিলাম

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

রংপুরের বদরগঞ্জে দুটি সরকারি পরিত্যক্ত ভবন নামমাত্র মূল্যে নিলাম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যথাযথ প্রচার না চালিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের পরিত্যক্ত দুটি দ্বিতল ভবন প্রকাশ্যে নিলামের আয়োজন করা হয়। এ-সংক্রান্ত কমিটিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ সভাপতি ও উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বাপ্পি সদস্যসচিব ছিলেন।

অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা প্রকৌশলী নিলামে অংশ নেওয়া পাঁচজনের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেন। পরে পাঁচজন ২৬ জনের নামে ব্যাংক পে-অর্ডার করে গ্রাম থেকে লোকজন নিয়ে এসে নিলাম ডাকে অংশ নেন।

গত সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে নিলাম হয়। সেখানে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস সর্দার ৮১ হাজার এবং ঠিকাদার আমিনুল ইসলাম ৯০ হাজার টাকায় একটি করে ভবনের ডাক পান।

কাঁচাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘ভবন দুটির মূল্য ১৩ লাখ টাকা। তবে উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান নিলাম ডাকে সর্বনিম্ন মূল্য ধরেন ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।’

পৌর শহরের পকিহানা গ্রামের সজিব অভিযোগ করেন, সরকারি পরিত্যক্ত ভবন নিলাম হলো; কিন্তু মাইকিং করা হলো না। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়নি। এতে সরকার কয়েক লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে।

উপজেলা পরিষদ মার্কেটের ব্যবসায়ী রুবেল আহম্মেদ বলেন, ‘সারা দিন উপজেলা পরিষদের সামনে ব্যবসা করি অথচ এত বড় দুটি ভবনের নিলাম জানলাম না। উপজেলা প্রকৌশলীর পছন্দের লোকেরা আগের দিন ব্যাংক ড্রাফট করে সকালে নিলাম ডাকে অংশ নেন।’

পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক আবু তালহা বলেন, ‘সরকারিভাবে নিলামে ওই দুটি ভবন নামমাত্র টাকায় নেওয়ার পর তাঁরা (নিলাম পাওয়া) তাৎক্ষণিক ৯ লাখ টাকায় অন্যের কাছে বিক্রি করে দেন। যিনি ৯ লাখ টাকায় নিয়েছেন, তিনি নিজে না ভেঙে অন্যের কাছে বিক্রি করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জনপ্রতিনিধি জানান, পৌর শহরে মাইকিং করা হলে আরও অনেক মানুষ নিলামে অংশ নিতে পারতেন। এতে সিন্ডিকেট করে কম দরে ভবন নেওয়ার সুযোগ থাকত না।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নিলাম কমিটির সভাপতি ইউএনও। প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। বিধি মেনেই দুটি ভবন নিলাম দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক পে-অর্ডারের মাধ্যমে নিলাম ডাকে অংশ নেন ২৬ জন। সর্বোচ্চ দুজন দরদাতাকে ভবন দুটি দেওয়া হয়।’ 
যোগাযোগ করা হলে ইউএনও দাবি করেন, নিলামে কোনো ধরনের অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়নি।

ভবন দুটির সর্বনিম্ন দরের বিষয়ে ইউএনও আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই পরিত্যক্ত ভবন দেখে সর্বনিম্ন নিলাম ডাকের মাস্টারপ্ল্যান করেন উপজেলা প্রকৌশলী। সেখানে আমার কোনো হাত নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত