Ajker Patrika

কপ-২৮ সম্মেলনে এবার নজর তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর ভূমিকায়

কপ-২৮ সম্মেলনে এবার নজর তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর ভূমিকায়

জলবায়ু পরিবর্তনে জ্বালানির ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার তীরটা প্রথমে আসে পশ্চিমা বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানিগুলোর দিকে। তবে এ ক্ষেত্রে বরাবরই আড়ালে থেকে যায় জ্বালানিশিল্পকে নিয়ন্ত্রণ করা শক্তিশালী রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি কোম্পানিগুলো। এমন এক বাস্তবতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮। এবারের সম্মেলনের সভাপতি আমিরাতের সুলতান আল জাবের, যিনি নিজেও দেশটির জাতীয় তেল ও গ্যাস কোম্পানি অ্যাডনকের প্রধান নির্বাহী। 

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই সপ্তাহব্যাপী এ সম্মেলনের আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে ভবিষ্যতে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উত্তরণ। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী, বৈশ্বিক উষ্ণতা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই লক্ষ্য পূরণে ধীরে ধীরে তেল, গ্যাস ও কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনার ব্যাপারে দেশগুলো সম্মত হয়েছে। ফলে দেশগুলোয় এটা নিয়ে একধরনের চাপ রয়েছে। 

গত সপ্তাহে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বরাবরই সাতটি বড় আন্তর্জাতিক জ্বালানি কোম্পানির ভূমিকার দিকে দৃষ্টি দেওয়া হয়। অথচ তাদের নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক তেল-গ্যাস উৎপাদন এবং মজুতের ১৩ শতাংশের কম হিস্যা রয়েছে। 

অন্যদিকে প্যারিসভিত্তিক তদারকি প্রতিষ্ঠানের তথ্য বলছে, জাতীয় তেল কোম্পানিগুলো (এনওসি) বৈশ্বিক উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি করে এবং তাদের হিস্যায় বিশ্বের প্রায় ৬০ শতাংশ তেল ও গ্যাসের মজুত রয়েছে। তবে সেগুলো অনেকটা দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। 

আইইএ বলেছে, ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টায় এওসি এবং বিপি, শেভরন, এক্সনমবিল, শেল ও টোটাল এনার্জির মতো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্রচেষ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি বা এনওসিগুলোর মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি সৌদি আরামকো, রাশিয়ার রোসেনেফট, চীনের সিএনওওসি এবং ব্রাজিলের পেট্রোব্রাসের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ কোম্পানিগুলো রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক প্রভাবশালী। 

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) জলবায়ু ও জ্বালানি নিরাপত্তাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ ফেলো বেন সাহিল বলেন, এসব কোম্পানির (এনওসি) নিয়ন্ত্রণে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে। সাহিল আরও বলেন, সাধারণত কোম্পানিগুলোর উৎপাদন ব্যয় কম। মূলত নিম্ন ব্যয়ের সম্পদ থাকায় তারা দীর্ঘদিন ধরে তেল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারে। কাজেই সৌদি আরব কিংবা রাশিয়ার মতো দেশের কোম্পানিগুলোর বিশ্বে তেলের দামে বড় ধরনের প্রভাব আছে। এর কারণ তারা ওপেক প্লাস জোটের মাধ্যমে উৎপাদন কমাতে বা বাড়াতে পারে। 

গ্রিনহাউস নিঃসরণে এনওসি কার্যক্রম ও জ্বালানি পণ্যগুলো বড় মাত্রায় দায়ী। তবে জাতীয় এই কোম্পানিগুলোর খুব কমসংখ্যকই তাদের জলবায়ু টার্গেট ঘোষণা করেছে। 

এদিকে জলবায়ু বিপর্যয় কমাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও নতুন হাইড্রোকার্বন উন্নয়নের কথা বলা হলেও গত দুই বছরে বিশ্বব্যাপী ৪০০-এর বেশি তেল ও গ্যাসভিত্তিক প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। 

অলাভজনক রিক্লেইম ফিন্যান্সের তথ্যানুযায়ী, ৫৮টি দেশে ব্যক্তি খাত ও রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের অন্তত ২০০ কোম্পানি জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক ৪৩৭টি নতুন প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এ তথ্য আসলে বৈশ্বিক উষ্ণতা সীমিত রাখার লক্ষ্যের সঙ্গে বড় ধরনের অসংগতিই তুলে ধরে। রিক্লেইম ফিন্যান্সের লুসিও পিনসন বলেন, ‘আমরা পরিবেশগত জরুরি অবস্থা এবং আইপিসিসির বিজ্ঞানীদের সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে অস্বীকৃতির মধ্যে রয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ুদূষণ বাড়ছে ঢাকায়, ঝুঁকিতে শিশু-বয়স্কদের স্বাস্থ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ২০
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানী শহর ঢাকায় দূষণ কমছেই না। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে ঢাকা। প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।

একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ৩৮০ একিউআই স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।

আজ সকাল ৮টা ২০ মিনিটে আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১০ দূষিত শহরের তালিকার বাকি শহরগুলো হলো —

(বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র‍্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে)

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (২৯১, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। তৃতীয় স্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ (১৭৫, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ঢাকা এবং পঞ্চম স্থানে পাকিস্তানের করাচি (১৬১,সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:

৬. কায়রো, মিসর (১৫৮)

৭. বাকু, আজারবাইজান (১৫৭)

৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৫২)

৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৪৯)

১০. কলকাতা, ভারত (১৪৩)

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিম্নচাপ শক্তিশালী হয়ে রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে, ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ২২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টির প্রবণতা কমে এসেছে। ফলে আবহাওয়া শুষ্ক, বেড়েছে তাপমাত্রা। তবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে নিম্নচাপ। এটি গভীর নিম্নচাপ থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে ২৮ অক্টোবর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিণে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আজ রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ সারা দেশে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কাল সোমবার থেকে আবহাওয়া প্রায় একই রকম থাকবে। তবে ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম ছাড়াও রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

বৃষ্টির এই ধারা ২৯ অক্টোবরও অব্যাহত থাকতে পারে। ৩০ অক্টোবর থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে গভীর নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও এটির বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। আজ সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় যা-ই হোক না কেন, আপাতত এর গতিবিধিতে মনে হচ্ছে এটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টির দেখা মিলবে না

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ শনিবার ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজকের আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকতে পারে এবং আকাশ থাকবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্তমানে রাজধানী এবং এর আশপাশ এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।

আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ।

আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে গতকালকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় কোনো বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়নি, যার ফলে আবহাওয়া শুষ্ক থাকার প্রবণতা বজায় রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুষ্ক দিন শুরু: সকাল থেকেই ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৫৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।

একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, লাহোর (পাকিস্তান) ৩৬০ একিউআই স্কোর নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। এরপরে রয়েছে ভারতের দিল্লি ও কলকাতা।

শীর্ষ দূষণের ১০ শহর:

আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টার কাছাকাছি সময়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের তালিকা নিচে দেওয়া হলো (বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র‍্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে) :

তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (৩৬০, বিপজ্জনক), এরপরে আছে ভারতের দুটি শহর—দিল্লি (২৭০, খুবই অস্বাস্থ্যকর) এবং কলকাতা (১৮৯, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। এরপর ১৭৮ নিয়ে চীনের রাজধানী বেইজিং রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে।

শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:

৫. ঢাকা, বাংলাদেশ (১৬৯)

৬. তাশকেন্ত, উজবেকিস্তান (১৫৬)

৭. করাচি, পাকিস্তান ( ১৫৪)

৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৩৯)

৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত ( ১২৯)

১০. কুয়েত সিটি, কুয়েত (১১৭)

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত