Ajker Patrika

জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ সীমার কিনারে বিশ্ব

জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ সীমার কিনারে বিশ্ব

ঢাকা: ২০১৫ সালে ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তিতে ক্ষতিকর গ্যাসের নিঃসরণ কমানো এবং বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে সম্মত হয় বিশ্ব নেতারা। গুরুত্বপূর্ণ এ চুক্তি সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির বদলে দেশে দেশে বিভিন্ন সাংঘর্ষিক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ায় বরফের স্তর দ্রুত গলছে। ফলে পানির স্তর বাড়ছে, যা সমুদ্রের স্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

জার্মানির পোটসডাম জলবায়ুর প্রভাব গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (পিআইকে) সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের বিপৎসীমায় পৌঁছেছে। পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ায় বরফ স্তর ও সমুদ্র স্রোতের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে, যা ডোমিনো ইফেক্ট বা স্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্থাৎ, দীর্ঘদিনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের বিপৎসীমার কিনারে চলে এসেছে।

ইউরোপের পিয়ার–রিভিউ জার্নাল ‘আর্থ সিস্টেম ডাইনামিকসে’ প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে এ গবেষণার ধরন সম্পর্কে বলা হয়, এখানে একটি নতুন ধরনের জলবায়ু মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। প্রচলিত মডেলগুলো অনেক জটিল এবং এসব ক্ষেত্রে অনেক বেশি শক্তিশালী কম্পিউটার দরকার হয়। তা ছাড়া এসব মডেল অনেক ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ।

তো এসব মডেলের বদলে আমাদের গবেষণায় এমন একটি মডেল ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে ব্যবহৃত ৩ এম সিমুলেশনের কম্পিউটারগুলোর একেকটা সিস্টেম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপৎসীমার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার বিভিন্ন ধাপগুলো চিহ্নিত করা যায়।

গবেষণায় পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা, গ্রিনল্যান্ড, আটলান্টিকের উষ্ণ অঞ্চলের উপসাগরের স্রোত এবং আমাজন রেইনফরেস্টের বিভিন্ন বরফ স্তর ৩ এম কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়েছে। এসব অঞ্চলের এক–তৃতীয়াংশের বরফে ডোমিনো ইফেক্ট পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, এখানকার সঞ্চিত বরফের একটা বড় অংশ দ্রুত গলছে, যা ঠেকানো প্রায় অসম্ভব। এটি মানব সভ্যতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।

নিজেদের গবেষণা সম্পর্কে পিআইকের অধ্যাপক রিকার্ডা ভিনকেলমান বলেন, ‘আমাদের গবেষণা কোনো পূর্বাভাস নয়, বরং এটা এক ধরনে ঝুঁকি বিশ্লেষণ।’

তবে গবেষণায় যা পাওয়া গেছে তা বেশ উদ্বেগজনক জানিয়ে এ অধ্যাপক বলেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের হাতে বেশি সময় নেই। তবে এখনই যদি বৈশ্বিক পর্যায়ে সমন্বিতভাবে গুরুত্বসহকারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপৎসীমার দিকে আমাদের এ যাত্রা ঠেকানো গেলেও যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত