Ajker Patrika

জলবায়ু সংকটে ২০২৪ সালে দেশে সাড়ে ৩ কোটি শিশুর শিক্ষা ব্যাহত: ইউনিসেফ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ০১
জলবায়ু সংকটে ২০২৪ সালে দেশে সাড়ে ৩ কোটি শিশুর শিক্ষা ব্যাহত: ইউনিসেফ

বৈরী আবহাওয়ার কারণে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ৩ কোটি ৩০ লাখ শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফ। সংস্থাটি বলছে, ২০২৪ সালে তাপপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং খরার মতো জলবায়ুজনিত বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৭৭টি দেশের অন্তত ২৪ কোটি ৭০ লাখ শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল ছিল দক্ষিণ এশিয়া, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

আজ শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। ‘লার্নিং ইন্টারাপটেড: গ্লোবাল স্ন্যাপশট অব ক্লাইমেট-রিলেটেড স্কুল ডিসরাপশন ইন ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেদন তুলে ধরে বলা হয়, বাংলাদেশে এপ্রিল-মে মাসে তাপপ্রবাহের কারণে শিশুরা পানিশূন্যতা এবং হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিতে পড়ে, যার ফলে দেশব্যাপী দুই সপ্তাহ স্কুল বন্ধ রাখতে হয়। মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমাল এবং জুন মাসে ভয়াবহ বন্যা দেশের শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও বিপর্যস্ত করে। বন্যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে সিলেট জেলায়। তীব্র বন্যায় সেখানে ব্যাপকভাবে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয় যার ফলে ছয় লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়েছে। ইউনিসেফ বাংলাদেশের হিসেবে গত বছর ১২ মাসের মধ্যে জলবায়ুজনিত কারণে সিলেট অঞ্চলে শিশুরা সব মিলিয়ে আট সপ্তাহ পর্যন্ত স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আর খুলনা, চট্টগ্রাম ও রংপুর–এই প্রত্যেক জেলায় শিশুরা ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত স্কুল দিবস হারিয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জলবায়ু সংকটের কারণে বাংলাদেশে শিখন দারিদ্র্য বাড়ছে। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অর্ধেকই ক্লাস অনুযায়ী তাদের কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না।

ইউনিসেফ আরও জানিয়েছে, জলবায়ুজনিত কারণে শিশুদের স্কুল থেকে ঝরে পড়ার পাশাপাশি কন্যাশিশুদের বাল্যবিবাহের ঝুঁকিও বাড়ছে। বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যে রয়েছে, যেখানে বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি।

জলবায়ুর অভিঘাত থেকে শিশুদের সুরক্ষায় শিক্ষা খাতে জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো তৈরি এবং শিশু-কেন্দ্রিক নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ‘চরম আবহাওয়ার ঘটনা বারবার আঘাত হানার কারণে বাংলাদেশের শিশুরা তাদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু শিক্ষা নয়, চরম তাপমাত্রা ও দুর্যোগ শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।’

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ‘শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নীতিনির্ধারকদের কাছে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের এই দাবিকে নীতির কেন্দ্রে রাখতে হবে।’

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জলবায়ু সংকট শিশুদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্ক বার্তা দিয়েছে ইউনিসেফ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দূষণ বাড়ছে বাতাসে, যেসব সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।

আজ সকাল ৮টা ৪৩ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৫৮, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। শহরটির বায়ুমান ৩৪৬, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— পাকিস্তানের করাচি, কুয়েতের কুয়েত সিটি, মিশরের কায়রো ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২০১, ১৮৯, ১৮৯ ও ১৮১।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় তাপমাত্রা কমতে পারে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

অগ্রহায়ণের বিদায়বেলায় আজ সোমবার সকালবেলা রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন রোববার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকাল ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৪ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিলুপ্তি থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঘের ফিরে আসার গল্পটি রুদ্ধশ্বাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সাইবেরিয়ান বাঘ। ছবি: নিও সায়েন্টিস্ট
সাইবেরিয়ান বাঘ। ছবি: নিও সায়েন্টিস্ট

রাশিয়ার আমুর বা সাইবেরিয়ান বাঘ রক্ষার দীর্ঘ ও নাটকীয় সংগ্রামের ভেতরের গল্পটি তুলে ধরেছে নতুন একটি বই। ‘টাইগার্স বিটুইন এম্পায়ার্স’ নামের এই বইটি লিখেছেন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী জনাথন স্ল্যাগট। এতে উঠে এসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম বাঘ গবেষণা কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত ‘সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট’–এর ইতিহাস, সাফল্য ও সংকট।

বইটি লেখার প্রেক্ষাপট নিয়ে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সিএনএন লিখেছে—২৫ বছরের বন্ধুত্বে সহকর্মী ডেল মিকুয়েলের মুখে ‘একদিন এ নিয়ে বই লিখব’ কথাটি বহুবার শুনেছিলেন স্ল্যাগট। কিন্তু সেই বই আর লেখা হয়নি। অবশেষে ২০২১ সালে স্ল্যাগট নিজেই উদ্যোগ নেন। চার বছর পর ৫১২ পৃষ্ঠার এই বইয়ে তিনি তুলে ধরেন কীভাবে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমুর বাঘকে বিলুপ্তির হাত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হয়েছে।

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে রাশিয়ায় প্রায় তিন হাজার বাঘ থাকলেও ১৯৩০-এর দশকে সেই সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ৩০ টিতে। পরে শিকার নিষেধাজ্ঞা ও সংরক্ষিত এলাকা গড়ে ওঠায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়। তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর দারিদ্র্য ও অবৈধ শিকারের কারণে আবারও বাঘের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। ঠিক সেই সময় শুরু হয় সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট।

এই প্রকল্পে মার্কিন বিজ্ঞানীরা অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তা দেন, আর রুশ সংরক্ষণবিদেরা মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগান। রেডিও ও জিপিএস কলার ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো বাঘের চলাচল, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনচক্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। প্রকল্প চলাকালে ১১৪টি বাঘ ধরা ও ছাড়া হয়। এর মধ্যে ‘ওলগা’ নামের একটি বাঘকে ১৩ বছর ধরে অনুসরণ করা হয়—যা গবেষকদের কাছে তাকে শুধু গবেষণার নম্বর নয়, এক জীবন্ত চরিত্রে পরিণত করে।

দেখা গিয়েছিল—প্রকল্পটির প্রথম এক দশকে যতগুলো বাঘ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল, তার ৭৫ শতাংশই ছিল চোরাশিকারের ফল। স্ল্যাগট লিখেছেন, বাঘের জীবন মোটেও শান্ত বা রোমান্টিক নয়—বরং সহিংস জীবন তাদের।

ওই প্রকল্পের গবেষণার ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছিল নতুন সংরক্ষিত এলাকা। এর ফলে সুরক্ষিত বনভূমির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়। তবে ২০১০ সালের পর বিদেশি সংস্থার ওপর রুশ সরকারের সন্দেহ বাড়তে থাকে। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের পর অনেক আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংস্থা দেশটিতে নিষিদ্ধ হয়।

রাশিয়ার সরকার বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি করলেও আইইউসিএন-এর হিসাব অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক বাঘের সংখ্যা এখন ২৬৫ থেকে ৪৮৬-এর মধ্যে, যা স্থিতিশীল হলেও ঝুঁকিমুক্ত নয়। স্ল্যাগটের মতে, পুরোপুরি সমাধান হয়ে গেছে, বিষয়টি এমন নয়। তবে এটি একটি সাফল্য, যা টিকিয়ে রাখতে হলে নিয়মিত নজরদারি ও আন্তর্দেশীয় সহযোগিতা অপরিহার্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা চাইলেন পরিবেশ উপদেষ্টা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাফিক বিভাগকে সাউন্ড লেভেল মিটার তুলে দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: পিআইডি
ট্রাফিক বিভাগকে সাউন্ড লেভেল মিটার তুলে দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: পিআইডি

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন জারি করা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এক দিকনির্দেশনামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর অডিটরিয়ামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত এই কর্মশালায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৬০ জন ট্রাফিক সার্জেন্ট, বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচজন কর্মকর্তা, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট, পরিবেশ অধিদপ্তরের মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা অংশ নেন।

কর্মশালায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এবং সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান (এনডিসি)।

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ট্রাফিক সার্জেন্টদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাথে নিয়ে ভলান্টিয়ারদের সম্পৃক্ত করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পেইন শুরু করব। কয়েকটি নীরব এলাকাকে এবার আমরা শব্দ দূষণমুক্ত করতে চাই।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে চলেন আমরা হর্নের বিরুদ্ধে অভিযান এবং সচেতনতা একসাথে পরিচালনা করি এবং এটা চলমান রাখতে হবে। কারণ, আমাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে—সেটা এক দিনে হবে না, কিন্তু চেষ্টাটা চালিয়ে যেতে হবে।’ এই বিধিমালা বাস্তবায়নে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রকল্প পরিচালক ফরিদ আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া কর্মশালায় শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ নিয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু। তিনি জানান, হালনাগাদ বিধিমালায় প্রথমবারের মতো পুলিশকে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত আছেন ৪ হাজার ১০৫ জন। এই জনবল দিয়ে দুই কোটি মানুষের ঢাকা শহরকে ট্রাফিকিং করা খুবই চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু তারপরও ডিএমপির ট্রাফিক সদস্যগণ নিরলসভাবে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে।’

আনিছুর রহমান আরও বলেন, এই বিধিমালায় যেহেতু ট্রাফিক সার্জেন্টদের ক্ষমতায়িত করা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোতে ৯৮০ জন ট্রাফিক পুলিশ রয়েছেন—তাঁদের দিয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘ট্রাফিক সার্জেন্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগ পাওয়া যায় না। এই যে উনারা রাত-দিন, ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করেন, তাঁর কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগটুকু যেহেতু পেয়েছি, কাজেই সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’

নিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, ‘পরিবেশর সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টিকে আমাদের সবার চর্চার মধ্যে আনতে হবে। একটু একটু করে করতে থাকলে একদিন নিশ্চয়ই একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।’

সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এনডিসি কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিধিমালা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানমও বক্তব্য দেন।

কর্মশালায় বিগত থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকার জন্য উপাচার্যকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রকল্পের পক্ষ থেকে ডিএমপিকে ৫০টি সাউন্ড লেভেল মিটার দেওয়া হয়, যার একটি ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারের হাতে তুলে দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত