Ajker Patrika

‘অনেকেই বলে, আমরা লোভী’

মীর রাকিব হাসান
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২১, ১৩: ৫৫
‘অনেকেই বলে, আমরা লোভী’

সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো। লকডাউনে শুটিং থেকে বিরতি নিয়ে ঘরে আছেন। তারও আগে শেষ করেছেন ঈদের একাধিক নাটকের কাজ। এই অবসরে ফোনালাপে বললেন অনেক কিছুই।

যখন কাজ বন্ধ রাখছি, তখনো কথা পিছু ছাড়ছে না’

সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো। লকডাউনে শুটিং থেকে বিরতি নিয়ে ঘরে আছেন। তারও আগে শেষ করেছেন ঈদের একাধিক নাটকের কাজ। লকডাউনের অবসরে ফোনালাপে বলেছেন না বলা অনেক কথা।

লকডাউনেও শুটিং করতে বাধ্য হচ্ছেন কেউ কেউ। আপনার কী অবস্থা?

শুনেছি। আমারও বেশ কিছু কাজ আটকে ছিল। কিন্তু করোনার প্রকোপ যেভাবে বাড়ছে, তাতে মনে হচ্ছে না আর এই মাসে কাজ করতে পারব। গত মাসের ২৮ তারিখ থেকে শুটিং করছি না। সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় শুটিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে ঈদের জন্য বেশ কিছু কাজ আগেই শেষ করেছি। এর মধ্যে রয়েছে: ‘আপন’, ‘পুনর্জন্ম’, ‘কায়কোবাদ’, ‘চিরকাল আজ’, ‘হ্যালো শুনছেন’, ‘আন রোমান্টিক হাজবেন্ড’, ‘প্লাস ফোর পয়েন্ট ফাইভ’। গত ঈদের আগেও শুটিং করতে পারিনি। আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকে কাজ বন্ধ রেখেছি।

আফরান নিশোশুটিং না করায় নাকি সমালোচনা শুনতে হয়েছিল?

একটা মানুষের তো দায়িত্ববোধ আছে। কে কার জায়গা থেকে কতটা কষ্টে আছি, সেটা তো বলে বোঝানো যাবে না। অনেকেই বলে, কাজ না করলে খাব কী? কাজ না করলে লাইটের ছেলেপেলে খাবে কী? তবে এটাও তো অস্বীকার করার উপায় নেই, এই করোনায় মৃত্যুঝুঁকিও আছে। লকডাউন দেওয়া হয়েছে, মানুষ যেন ঘর থেকে বের না হয়। একে অপরের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে পারে। আমাদের শুটিং করতে হয় কমপক্ষে ১৫-২০ জনের একটা টিম নিয়ে। সেখানে সব সময় দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করা সম্ভব হয় না। তাই আমার পরিবারের কথা চিন্তা করেই আপাতত শুটিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আবার বেশি কাজের জন্যও তো সমালোচনা শুনতে হয়?

হ্যাঁ, শুনতে হয়। অনেকেই বলে, আমরা লোভী। আমরাই শুধু কাজ করি। এমন অনেক কথা। ডাটাটা কিন্তু এরকম নয়। একটু বিশ্লেষণ করে দেখুন। সব মিলিয়ে প্রতিবছর ২ হাজারের মতো নাটক নির্মিত হয়। এর মধ্যে আমরা প্রমিনেন্ট যদি সাত–আটজন থাকি, বছরে বড়জোর ৫০০ নাটক করতে পারি। এই ৫০০ নাটকের বেশির ভাগই হয়তো ভিউ হয়, মুনাফা হয়। কিছু একটা হয়। এর বাইরেও কিন্তু দেড় হাজার নাটক নির্মাণ হচ্ছে। এগুলো কারা করছেন? সে নাটকগুলো কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে? সেখান থেকে কতটা মুনাফা হয়? সেটাও তো প্রশ্ন। এসব নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। উল্টো আমাদের দোষারোপ করা হয়। আমি হয়তো প্রতিবছর ১০০ নাটকে অভিনয় করতে পারি। এই ১০০ নাটক করতে তো ২০০ দিনের বেশি লেগে যায়। বাকি দিনগুলো পরিবারকে দিই। আবার এখন যখন কাজ বন্ধ রাখছি, তখনো কথা পিছু ছাড়ছে না।

আফরান নিশোওয়েব সিরিজ ‘মরীচিকা’ প্রচারের অপেক্ষায়। শোনা যাচ্ছে মডেল তিন্নি হত্যার আসামি ‘অভি’র চরিত্র করেছেন?

আমার চরিত্রটা পুরোদস্তুর নেগেটিভ, এটা ঠিক। একজন পুলিশ আমাকে তাড়া করে বেড়ায়, এটাও ঠিক। এই সিরিজে একজন মডেলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মাহিয়া মাহি। সে ক্যারিয়ারে অনেক ওপরে উঠতে চায়। তাই বলে মানুষ যদি এটা কারও সঙ্গে মিলিয়ে ফেলে, তাহলে কিছু করার নেই। রিয়েল লাইফের সঙ্গে মিলিয়ে কেউ কেউ আনন্দ পেলে তো করার কিছু নেই। তবে রিয়েল লাইফের কোনো সাজেশন ধরে আমি অভিনয় করিনি। আমি স্ক্রিপ্ট পেয়েছি। সে অনুযায়ী নিজের চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।

‘মরীচিকা’র শুটিং শুরুর আগে তো আপনার বাবা মারা গিয়েছিলেন?

শুটিং শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই বাবা মারা গেছেন। কিন্তু কাজ শুরু করতে হয়েছে। এ ছাড়া উপায় ছিল না। একটা কাজের সঙ্গে অনেকগুলো মানুষ জড়িয়ে থাকে। চাইলেও তাই বাতিল করা যায় না। কারণ, শোকটা শুধু আমার ব্যক্তিগতই ছিল।

নতুন কাজের খবর?

কথা চলছে। লকডাউন শেষ হোক। পরিস্থিতি বুঝে কাজের আলাপ চূড়ান্ত করব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত