বিদ্যুৎ সরকার

দেবব্রত বিশ্বাস ওরফে জর্জ। সংগীতজনের কাছে তিনি পরিচিত ‘জর্জ দা’ নামে। কিশোরগঞ্জে থাকাকালে আরও দুটো নাম ছিল তাঁর—দেবু এবং খোকা। সেখানে পরিচিতদের অনেকেই এই দুই নামের কোনো একটি দিয়েই চিনতেন বা ডাকতেন তাঁকে। পরে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে পূর্ববঙ্গ ছেড়ে কলকাতায় যাওয়ায় তাঁর দেবু ও খোকা নাম ধীরে ধীরে মানুষ ভুলে যায়। কলকাতার মানুষের কাছে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন পিতা দেবেন্দ্রকিশোর বিশ্বাসের ইংরেজপ্রীতির নিদর্শন হিসেবে পাওয়া জর্জ নামে। ১৯১১ সালের ২২ আগস্ট তাঁর জন্মের কয়েক দিন আগে ইংল্যান্ডের রাজা হন পঞ্চম জর্জ। ইংরেজদের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও অতিভক্তি বশত তাঁর বাবা-মা আদর করে তাঁকে ডাকতেন জর্জ নামে। দেবব্রত বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত এই জর্জ থেকে ‘জর্জ দা’ নামেই সংগীত সমাজে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
দেবব্রত বিশ্বাসের বাবা ছিলেন গোঁড়া ব্রাহ্ম। সিনেমা, থিয়েটার, যাত্রাগানের প্রতি তাঁর ছিল ঘোর অমত। তবে ব্রাহ্ম হওয়ায় বাড়িতে প্রতি সন্ধ্যায় প্রার্থনা হিসেবে মায়ের সঙ্গে দেবব্রত বিশ্বাস গাইতেন ব্রহ্মসংগীত। এই প্রার্থনা থেকেই তাঁর গাওয়ার শুরু। এ ছাড়া মায়ের কাছ থেকে শুনে শুনে আরও কিছু গান শিখে নিয়েছিলেন তিনি। ময়মনসিংহ ব্রাহ্মসমাজের মাঘোৎসবের গানের দলে প্রতি বছর মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনিও। বাড়িতে হারমোনিয়াম, অর্গান ছিল। বলা যায়, শৈশব থেকেই তিনি পেয়েছিলেন সংগীত-সহায়ক এক পরিবেশ।
স্কুলে পড়ার সময় কংগ্রেস ভলান্টিয়ার হয়ে সমবয়সী কয়েকজনকে নিয়ে দেশাত্মবোধক গানও গেয়েছেন বিভিন্ন স্বদেশি সভায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহের কনক দাস ছিলেন তার মাসি (বড় মামির বোন)। তাঁর সঙ্গে অনুষ্ঠানে গানও গেয়েছেন দেবব্রত বিশ্বাস। ১৯২৮-২৯ সালে কলকাতায় কলেজে পড়াকালীন সুর সাগর হিমাংশু দত্ত, শৈলেশ দত্তগুপ্ত, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় ও সন্তোষ সেনগুপ্তের মতো সংগীতগুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। বিশেষ করে হিমাংশু দত্তের কাছ থেকে এ সময় বেশ কিছু গান শিখে নেন দেবব্রত বিশ্বাস। পরে সেই গানগুলো ১৯৩৩ সালে শান্তিনিকেতনের সংগীতভবনের অধ্যক্ষ হেমেন্দ্রলাল রায়কে শুনিয়ে তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লাভ করেছিলেন তিনি। কাজী নজরুল ইসলামও সেনোলা রেকর্ড কোম্পানির হয়ে তাঁকে দিয়ে দুটি গান রেকর্ড করিয়েছিলেন। বোঝা যায়, সংগীত সম্পর্কে যেখানে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, শিখে নিয়েছেন।
তবে মাঝেমধ্যে দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গান গাইলেও রবি ঠাকুরের গানের প্রতিই ছিল তাঁর অতলান্ত ভালোবাসা। বিশেষ করে মায়ের কাছে শেখা ও কলকাতায় ব্রাহ্মমন্দিরে শোনা ব্রহ্মসংগীতগুলো সব সময় তাঁকে আলোড়িত করেছে। এ গান সম্পর্কে তিনি বলছেন, ‘সেই সব আধ্যাত্মিক গানগুলোর মধ্যে কী যেন একটা মাধুর্য ছিল, যা আমার হৃদয়কে অত্যন্ত গভীরভাবে নাড়া দিত।’ বড় হতে হতে রবীন্দ্রসংগীত হয়ে ওঠে তাঁর যাপিত জীবনের আশ্রয়। সেটা আরও পাকাপোক্ত হয় ১৯৩৫ সালের দিকে ইন্দিরা দেবীর সান্নিধ্যে এসে। এ ছাড়া অনাদিকুমার দস্তিদারের কাছ থেকেও অনেক গান শেখেন তিনি। সিনেমার গানের প্রয়োজনে তিনি পঙ্কজ মল্লিকের সাহচর্য পেয়েছেন। শেখার ব্যাপারে দেবব্রত বিশ্বাস ছিলেন মুক্তমনা। যখন যেখানে যার কাছে সুযোগ পেয়েছেন, শিখেছেন তিনি।
সংগীত, বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে অভিজ্ঞ এবং জনপ্রিয় হওয়ার পরেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছ থেকে তিনি হয়েছিলেন বৈষম্যের শিকার। এক প্রকার ব্রাত্য করেই রাখা হয়েছিল তাঁকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারত, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে নামী-অনামী অনেক শিল্পীই বহু প্রচারিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিংবা বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে প্রাণভরে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। ভাব ও সুরের সমন্বয় সেখানে যে সব সময় রক্ষা হয়, তা জোর গলায় বলা যায় না। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন রবীন্দ্রসংগীতের রেকর্ড কেউ বের করতে চাইলে তাঁকে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের অনুমোদন নিতে হতো। কোনো শিল্পীর সুর-বাজনা-গায়নভঙ্গি একটু এদিক-ওদিক হলেই তাঁর রেকর্ডটি প্রকাশের অনুমতি দিতে বোর্ড কার্পণ্য করত।
তবে এই কৃপণতার মাত্রা সবার ক্ষেত্রে এক রকম ছিল না। বলা যায়, সবচেয়ে বেশি ছিল দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি। কেউ কেউ সঠিকভাবে না গেয়েও রেকর্ড বের করার অনুমতি পেয়ে যেতেন। কিন্তু দেবব্রত বিশ্বাস সহজে অনুমতি পেতেন না। কারণ তিনি রবীন্দ্রসংগীতের গায়নে অনুভূতি সঞ্জাত নতুনত্ব আনার চেষ্টা করতেন। ফলে, গানের কথা অনুযায়ী ভাব সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে সৃষ্ট মিউজিক ব্যবহার করতেন তিনি। এ জন্য শান্তিনিকেতনি সুর ও পরিবেশনারীতির কিছু ব্যত্যয়ও ঘটাতেন দেবব্রত।
রবীন্দ্রনাথের সংগীতচিন্তা সম্পর্কে দেবব্রত বিশ্বাসের ছিল সুস্পষ্ট ধারণা। ভরাট কণ্ঠ, নতুন গায়নভঙ্গি ও বাণীবাহিত ভাবকে শ্রুতিনন্দনভাবে উপস্থাপনার কারণে শ্রোতারা তাঁকে ভালোবেসেছিল অকৃত্রিম হৃদয়াবেগ দিয়েই। সে সময় দেবব্রত বিশ্বাসের জনপ্রিয়তার একটা প্রমাণ পাওয়া যায় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কথায়। তিনি আমার গানের স্বরলিপি বইয়ে জানাচ্ছেন, ‘শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীতে আমার ধারণা জর্জদারই হাইয়েস্ট। একবার ওঁর বিক্রির স্টেটমেন্ট দেখেছিলুম। ভাবা যায় না। শুধু রবীন্দ্রসংগীত বেচে এত টাকা। না, না ওই জর্জদারই ম্যাক্সিমাম। তারপর আমার।’
সংগীতানুরাগীদের কাছে প্রিয় হলেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ড রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে দেবব্রত বিশ্বাসের ভাবনাকে গ্রহণ করতে পারেনি। এ নিয়ে ১৯৬৪ সাল থেকে তাঁর সঙ্গে বোর্ডের বিবাদ শুরু হয়। এ সময় তাঁর গাওয়া চারটি রবীন্দ্রসংগীতের (১. শুধু যাওয়া আসা, ২. এসেছিলে তবু আস নাই, ৩. মেঘ বলেছে যাব যাব, ৪. গোধূলিগগনে মেঘে ঢেকেছিল তারা) রেকর্ড মিউজিক বোর্ড প্রকাশ করতে বাধা দেয়। শান্তিদেব ঘোষ যে গানকে প্রকাশযোগ্য বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, বোর্ডের কর্মকর্তারা সে মতও গ্রহণ করেননি।
এর পর থেকে মাঝে মাঝেই দেবব্রত বিশ্বাস বোর্ড কর্মকর্তাদের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন। বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের এই খবরদারিমূলক আচরণের প্রতিবাদে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থাতেই তিনি রবীন্দ্রসংগীত রেকর্ড বন্ধ করে দেন। অনেকের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি সংগীত থেকে ধীরে-ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। ১৯৭১ সালের পর কোনো রবীন্দ্রসংগীত তিনি আর রেকর্ড করেননি। এ কারণে কারও-কারও কাছে তিনি পেয়েছেন অতি-অভিমানী কিংবা চরম জেদির তকমা। কিন্তু একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, এই অতি-অভিমান কিংবা চরম জেদের মূলে রয়েছে শিল্পীর স্বাধীনতা ও অধিকার আদায় এবং তাকে সমুন্নত রাখার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা।
রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে যথেষ্ট না জানা, অনভিজ্ঞ ও কম বয়সী সনদধারী কিছু মানুষের ক্ষমতাচর্চা ও ঈর্ষাজাত সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর কাছে শুধু গাওয়ার বিষয় ছিল না। দৈনন্দিন যাপনে তা ছিল আত্মচেতনা ও সম্মানবোধকে শাণিত করার মন্ত্র।
শুধু শ্রোতার কাছেই নন, শিল্পীদের কাছেও তিনি ছিলেন শ্রদ্ধেয়, বরণীয়। দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের সে আচরণ অন্যান্য শিল্পীকেও ব্যথিত করেছিল–লজ্জিতও। মান্না দে তাঁর আত্মজীবনী জীবনের জলসাঘরে জানাচ্ছেন, ‘কিছু সুরহীন মানুষ রবীন্দ্রসংগীতের অভিভাবক সেজে রবীন্দ্রসংগীতকে আটকে রেখেছেন তাঁদের নিজস্ব আঙিনায়, নিজস্ব বেড়াজালে। কখনো তাকে হয়ে উঠতে দেননি জনগণের সংগীত। প্রাণের গানকে আবদ্ধ রেখেছেন প্রাণহীন এক বিচিত্র স্বঘোষিত রাবীন্দ্রিক ঢঙে। এ অন্যায়, এ ঘোরতর এক অন্যায়। প্রাণ ঢেলে হৃদয়ের সুরে আবেগমথিত কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন জর্জদা। আহা! কী গান গাইতেন উনি। এক-একটা গানের এক-একটা জায়গায় ওঁর সুর লাগানো শুনে বুকের ভেতর একটা ভালো লাগার অনুভূতি আমার চোখে আবেগ আপ্লুত জল এনে দিত। সেই জর্জদার গান গাওয়া ওরা বন্ধ করে দিল।’
শিল্পীর অর্থনৈতিক অধিকার নিয়েও সচেতন ছিলেন দেবব্রত বিশ্বাস। সে সময় অন্যান্য কণ্ঠশিল্পীরা বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ নিজের কাঁধে নিয়ে এইচএমভি ও কলাম্বিয়াতে রেকর্ড করে রয়্যালটি পেতেন মাত্র পাঁচ শতাংশ। দেবব্রত বিশ্বাস সেখানে দশ শতাংশ রয়্যালটি ও বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ কোম্পানিকে বহনের দাবি করেন। জনমানসে গ্রহণযোগ্যতার কারণে কোম্পানি তাঁকে এক হাজার কপি বিক্রি হওয়ার শর্তে এই দাবি মেনে নেয়। উল্লেখ্য, তাঁর এক শ’র বেশি গানের মধ্যে এমন কোনো গান নেই যে তিনি রয়্যালটি পাননি। বলা যায়, বিত্ত ও চিত্ত সংকীর্ণতার বেড়াজাল ছিঁড়ে রবীন্দ্রসংগীতকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য তিনজনের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। অন্য দুজন হলেন পঙ্কজ কুমার মল্লিক ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
এই প্রতিবাদী চেতনা তিনি মূলত পেয়েছিলেন আইপিটিএ তথা ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে। সাম্যবাদে আস্থাবান এ শিল্পী ১৯৪০ এর দশকের শুরুতে আইপিটিএর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের গান, বিশেষত তাঁর স্বদেশপ্রেমমূলক গানগুলো গাওয়া শুরু করেন। দেবব্রত বিশ্বাসের দরাজ কণ্ঠ ও স্বতন্ত্র গায়কির কারণে শ্রোতারা আবিষ্কার করলেন নতুন এক রবীন্দ্রনাথকে। রবীন্দ্রসংগীত যে এভাবে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেও গাওয়া যেতে পারে, তা দেবব্রত বিশ্বাসের আগে কোনো শিল্পী কল্পনা করেননি।
এ সম্পর্কে হেমাঙ্গ বিশ্বাস বলছেন, ‘রবীন্দ্রসঙ্গীতের সবল উদ্দীপক ধারার সঙ্গে গণসঙ্গীতকে মিশিয়ে দিলেন জর্জদা। রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্পর্কে আমাদের অর্থাৎ গণসঙ্গীত গাইয়েদের মনোভাবকে সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করলেন যেমন, তেমনি রবীন্দ্রসংগীতকে মোহান্তদের বিরুদ্ধতা সত্ত্বেও মন্দিরের বেদি থেকে গণসঙ্গীতের প্রান্তরে নামিয়ে আনলেন। এই দুই ধারার সমন্বয়ে জর্জদা যেমন শ্রেষ্ঠ গণসঙ্গীত শিল্পী, তেমনি শ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রসংগীত গায়ক। এখানেই জর্জদার যুগান্তকারী ভূমিকা। এখানেই তিনি মহান গণসঙ্গীতশিল্পী।’ এ সময় ‘নবান্ন’, ‘রক্তকরবী’র মতো অবিস্মরণীয় নাটকে অভিনয়ও করেন তিনি।
জন্মভূমি পূর্ববাংলার প্রতি তাঁর ছিল গভীর মমত্ববোধ ও ভালোবাসা। হেমাঙ্গ বিশ্বাসের বক্তব্য থেকে জানা যায়, পূর্ববাংলাকে দেবব্রত বিশ্বাস বলতেন ‘মা’ আর পশ্চিমবঙ্গকে বলতেন ‘বিমাতা’। মায়ের রাতারাতি বিদেশ হয়ে যাওয়াকে তিনি কোনো দিন মেনে নিতে পারেননি। আমৃত্যু বয়ে বেড়িয়েছেন দেশভাগের সেই ক্ষত। হয়েছেন যন্ত্রণায় কাতর। তবে দেশভাগ তাঁকে মর্মাহত করলেও জন্মভূমির প্রতি দায়িত্ববোধ সম্পর্কে তিনি ছিলেন সচেতন। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ ও সহানুভূতি আদায় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য তিনি সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিঠি দিয়ে দুটি গান লিখে স্বরলিপিসহ পাঠানোর অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসার এ কথা জানা যায় তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘ব্রাত্যজনের রুদ্ধসংগীত’ থেকে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার জন্মভূমি পূর্ববঙ্গের অর্থাৎ বাংলাদেশের আমার ভাই-বোনেরা জীবন-মরণ পণে যে মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন সেই লড়াইকে তিনি সমর্থন করেন কিনা জানতে চাইলাম। যদি সেই লড়াই-এর প্রতি তাঁর সামান্য একটু সমর্থন থাকে তাহলে ওদের মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে দুটি গান আমায় লিখে পাঠাতে অনুরোধ জানালাম, যাতে সেই গান দুটির রেকর্ড প্রকাশ করে এবং নানা অনুষ্ঠানে গেয়ে এপার বাংলার জনসাধারণকে বাংলাদেশের আমার ভাইবোনদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল করে তুলতে পারি।’ সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কথা রেখেছিলেন। কয়েক দিন পরে দুটো গান লিখে ও স্বরলিপি করে তিনি পাঠিয়েছিলেন দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে।
শান্তিনিকেতনি গায়ন পদ্ধতি অনুসরণ না করে সুর কাঠামো বজায় রেখে আত্মোপলব্ধি দিয়ে স্বাধীনভাবে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার কারণে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছে তিনি ব্রাত্য হয়েছেন বটে। কিন্তু সংগীতামোদী মানুষের কাছে পেয়েছেন অফুরান ভালোবাসা। এখনো রবীন্দ্রসংগীতের অন্যতম জনপ্রিয় ও অনুসরণীয় শিল্পী তিনি। তাঁর ভরাট গলায় গাওয়া ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’, ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার’, ‘মহারাজ একি সাজে’ কিংবা ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ সিনেমায় গাওয়া ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’সহ অসংখ্য গান আজও শ্রোতাকে মুগ্ধ করে। শিল্পীর স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্য আমৃত্যু চেষ্টা তাঁকে শিল্পীদের মণিকোঠায় স্থান করে দিয়েছে।
১৯৮০ সালের ১৮ আগস্ট তাঁর চলে যাওয়া বাংলার সংগীতানুরাগী সাধারণ মানুষকেও করেছিল শোকাহত। তাঁর মৃত্যু নিয়ে তাঁর এক সময়ের কক্ষসঙ্গী ও শিল্পী সন্তোষ সেনগুপ্ত লিখছেন, “আমাদের দুর্ভাগ্য, সারা দেশের দুর্ভাগ্য যে দেবব্রত বিশ্বাস আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। কিন্তু কী সে যাওয়া-কী সে মহিমান্বিত নিষ্ক্রমণ-অগণিত জনতার আকুল ক্রন্দনধ্বনি-আকুল হাহাকার যেন তারই গানের রূপ নিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। ”
বিদ্যুৎ সরকার: শিক্ষক ও সংগীত শিল্পী

দেবব্রত বিশ্বাস ওরফে জর্জ। সংগীতজনের কাছে তিনি পরিচিত ‘জর্জ দা’ নামে। কিশোরগঞ্জে থাকাকালে আরও দুটো নাম ছিল তাঁর—দেবু এবং খোকা। সেখানে পরিচিতদের অনেকেই এই দুই নামের কোনো একটি দিয়েই চিনতেন বা ডাকতেন তাঁকে। পরে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে পূর্ববঙ্গ ছেড়ে কলকাতায় যাওয়ায় তাঁর দেবু ও খোকা নাম ধীরে ধীরে মানুষ ভুলে যায়। কলকাতার মানুষের কাছে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন পিতা দেবেন্দ্রকিশোর বিশ্বাসের ইংরেজপ্রীতির নিদর্শন হিসেবে পাওয়া জর্জ নামে। ১৯১১ সালের ২২ আগস্ট তাঁর জন্মের কয়েক দিন আগে ইংল্যান্ডের রাজা হন পঞ্চম জর্জ। ইংরেজদের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও অতিভক্তি বশত তাঁর বাবা-মা আদর করে তাঁকে ডাকতেন জর্জ নামে। দেবব্রত বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত এই জর্জ থেকে ‘জর্জ দা’ নামেই সংগীত সমাজে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
দেবব্রত বিশ্বাসের বাবা ছিলেন গোঁড়া ব্রাহ্ম। সিনেমা, থিয়েটার, যাত্রাগানের প্রতি তাঁর ছিল ঘোর অমত। তবে ব্রাহ্ম হওয়ায় বাড়িতে প্রতি সন্ধ্যায় প্রার্থনা হিসেবে মায়ের সঙ্গে দেবব্রত বিশ্বাস গাইতেন ব্রহ্মসংগীত। এই প্রার্থনা থেকেই তাঁর গাওয়ার শুরু। এ ছাড়া মায়ের কাছ থেকে শুনে শুনে আরও কিছু গান শিখে নিয়েছিলেন তিনি। ময়মনসিংহ ব্রাহ্মসমাজের মাঘোৎসবের গানের দলে প্রতি বছর মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনিও। বাড়িতে হারমোনিয়াম, অর্গান ছিল। বলা যায়, শৈশব থেকেই তিনি পেয়েছিলেন সংগীত-সহায়ক এক পরিবেশ।
স্কুলে পড়ার সময় কংগ্রেস ভলান্টিয়ার হয়ে সমবয়সী কয়েকজনকে নিয়ে দেশাত্মবোধক গানও গেয়েছেন বিভিন্ন স্বদেশি সভায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহের কনক দাস ছিলেন তার মাসি (বড় মামির বোন)। তাঁর সঙ্গে অনুষ্ঠানে গানও গেয়েছেন দেবব্রত বিশ্বাস। ১৯২৮-২৯ সালে কলকাতায় কলেজে পড়াকালীন সুর সাগর হিমাংশু দত্ত, শৈলেশ দত্তগুপ্ত, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় ও সন্তোষ সেনগুপ্তের মতো সংগীতগুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। বিশেষ করে হিমাংশু দত্তের কাছ থেকে এ সময় বেশ কিছু গান শিখে নেন দেবব্রত বিশ্বাস। পরে সেই গানগুলো ১৯৩৩ সালে শান্তিনিকেতনের সংগীতভবনের অধ্যক্ষ হেমেন্দ্রলাল রায়কে শুনিয়ে তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লাভ করেছিলেন তিনি। কাজী নজরুল ইসলামও সেনোলা রেকর্ড কোম্পানির হয়ে তাঁকে দিয়ে দুটি গান রেকর্ড করিয়েছিলেন। বোঝা যায়, সংগীত সম্পর্কে যেখানে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, শিখে নিয়েছেন।
তবে মাঝেমধ্যে দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গান গাইলেও রবি ঠাকুরের গানের প্রতিই ছিল তাঁর অতলান্ত ভালোবাসা। বিশেষ করে মায়ের কাছে শেখা ও কলকাতায় ব্রাহ্মমন্দিরে শোনা ব্রহ্মসংগীতগুলো সব সময় তাঁকে আলোড়িত করেছে। এ গান সম্পর্কে তিনি বলছেন, ‘সেই সব আধ্যাত্মিক গানগুলোর মধ্যে কী যেন একটা মাধুর্য ছিল, যা আমার হৃদয়কে অত্যন্ত গভীরভাবে নাড়া দিত।’ বড় হতে হতে রবীন্দ্রসংগীত হয়ে ওঠে তাঁর যাপিত জীবনের আশ্রয়। সেটা আরও পাকাপোক্ত হয় ১৯৩৫ সালের দিকে ইন্দিরা দেবীর সান্নিধ্যে এসে। এ ছাড়া অনাদিকুমার দস্তিদারের কাছ থেকেও অনেক গান শেখেন তিনি। সিনেমার গানের প্রয়োজনে তিনি পঙ্কজ মল্লিকের সাহচর্য পেয়েছেন। শেখার ব্যাপারে দেবব্রত বিশ্বাস ছিলেন মুক্তমনা। যখন যেখানে যার কাছে সুযোগ পেয়েছেন, শিখেছেন তিনি।
সংগীত, বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে অভিজ্ঞ এবং জনপ্রিয় হওয়ার পরেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছ থেকে তিনি হয়েছিলেন বৈষম্যের শিকার। এক প্রকার ব্রাত্য করেই রাখা হয়েছিল তাঁকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারত, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে নামী-অনামী অনেক শিল্পীই বহু প্রচারিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিংবা বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে প্রাণভরে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। ভাব ও সুরের সমন্বয় সেখানে যে সব সময় রক্ষা হয়, তা জোর গলায় বলা যায় না। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন রবীন্দ্রসংগীতের রেকর্ড কেউ বের করতে চাইলে তাঁকে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের অনুমোদন নিতে হতো। কোনো শিল্পীর সুর-বাজনা-গায়নভঙ্গি একটু এদিক-ওদিক হলেই তাঁর রেকর্ডটি প্রকাশের অনুমতি দিতে বোর্ড কার্পণ্য করত।
তবে এই কৃপণতার মাত্রা সবার ক্ষেত্রে এক রকম ছিল না। বলা যায়, সবচেয়ে বেশি ছিল দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি। কেউ কেউ সঠিকভাবে না গেয়েও রেকর্ড বের করার অনুমতি পেয়ে যেতেন। কিন্তু দেবব্রত বিশ্বাস সহজে অনুমতি পেতেন না। কারণ তিনি রবীন্দ্রসংগীতের গায়নে অনুভূতি সঞ্জাত নতুনত্ব আনার চেষ্টা করতেন। ফলে, গানের কথা অনুযায়ী ভাব সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে সৃষ্ট মিউজিক ব্যবহার করতেন তিনি। এ জন্য শান্তিনিকেতনি সুর ও পরিবেশনারীতির কিছু ব্যত্যয়ও ঘটাতেন দেবব্রত।
রবীন্দ্রনাথের সংগীতচিন্তা সম্পর্কে দেবব্রত বিশ্বাসের ছিল সুস্পষ্ট ধারণা। ভরাট কণ্ঠ, নতুন গায়নভঙ্গি ও বাণীবাহিত ভাবকে শ্রুতিনন্দনভাবে উপস্থাপনার কারণে শ্রোতারা তাঁকে ভালোবেসেছিল অকৃত্রিম হৃদয়াবেগ দিয়েই। সে সময় দেবব্রত বিশ্বাসের জনপ্রিয়তার একটা প্রমাণ পাওয়া যায় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কথায়। তিনি আমার গানের স্বরলিপি বইয়ে জানাচ্ছেন, ‘শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীতে আমার ধারণা জর্জদারই হাইয়েস্ট। একবার ওঁর বিক্রির স্টেটমেন্ট দেখেছিলুম। ভাবা যায় না। শুধু রবীন্দ্রসংগীত বেচে এত টাকা। না, না ওই জর্জদারই ম্যাক্সিমাম। তারপর আমার।’
সংগীতানুরাগীদের কাছে প্রিয় হলেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ড রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে দেবব্রত বিশ্বাসের ভাবনাকে গ্রহণ করতে পারেনি। এ নিয়ে ১৯৬৪ সাল থেকে তাঁর সঙ্গে বোর্ডের বিবাদ শুরু হয়। এ সময় তাঁর গাওয়া চারটি রবীন্দ্রসংগীতের (১. শুধু যাওয়া আসা, ২. এসেছিলে তবু আস নাই, ৩. মেঘ বলেছে যাব যাব, ৪. গোধূলিগগনে মেঘে ঢেকেছিল তারা) রেকর্ড মিউজিক বোর্ড প্রকাশ করতে বাধা দেয়। শান্তিদেব ঘোষ যে গানকে প্রকাশযোগ্য বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, বোর্ডের কর্মকর্তারা সে মতও গ্রহণ করেননি।
এর পর থেকে মাঝে মাঝেই দেবব্রত বিশ্বাস বোর্ড কর্মকর্তাদের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন। বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের এই খবরদারিমূলক আচরণের প্রতিবাদে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থাতেই তিনি রবীন্দ্রসংগীত রেকর্ড বন্ধ করে দেন। অনেকের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি সংগীত থেকে ধীরে-ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। ১৯৭১ সালের পর কোনো রবীন্দ্রসংগীত তিনি আর রেকর্ড করেননি। এ কারণে কারও-কারও কাছে তিনি পেয়েছেন অতি-অভিমানী কিংবা চরম জেদির তকমা। কিন্তু একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, এই অতি-অভিমান কিংবা চরম জেদের মূলে রয়েছে শিল্পীর স্বাধীনতা ও অধিকার আদায় এবং তাকে সমুন্নত রাখার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা।
রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে যথেষ্ট না জানা, অনভিজ্ঞ ও কম বয়সী সনদধারী কিছু মানুষের ক্ষমতাচর্চা ও ঈর্ষাজাত সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর কাছে শুধু গাওয়ার বিষয় ছিল না। দৈনন্দিন যাপনে তা ছিল আত্মচেতনা ও সম্মানবোধকে শাণিত করার মন্ত্র।
শুধু শ্রোতার কাছেই নন, শিল্পীদের কাছেও তিনি ছিলেন শ্রদ্ধেয়, বরণীয়। দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের সে আচরণ অন্যান্য শিল্পীকেও ব্যথিত করেছিল–লজ্জিতও। মান্না দে তাঁর আত্মজীবনী জীবনের জলসাঘরে জানাচ্ছেন, ‘কিছু সুরহীন মানুষ রবীন্দ্রসংগীতের অভিভাবক সেজে রবীন্দ্রসংগীতকে আটকে রেখেছেন তাঁদের নিজস্ব আঙিনায়, নিজস্ব বেড়াজালে। কখনো তাকে হয়ে উঠতে দেননি জনগণের সংগীত। প্রাণের গানকে আবদ্ধ রেখেছেন প্রাণহীন এক বিচিত্র স্বঘোষিত রাবীন্দ্রিক ঢঙে। এ অন্যায়, এ ঘোরতর এক অন্যায়। প্রাণ ঢেলে হৃদয়ের সুরে আবেগমথিত কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন জর্জদা। আহা! কী গান গাইতেন উনি। এক-একটা গানের এক-একটা জায়গায় ওঁর সুর লাগানো শুনে বুকের ভেতর একটা ভালো লাগার অনুভূতি আমার চোখে আবেগ আপ্লুত জল এনে দিত। সেই জর্জদার গান গাওয়া ওরা বন্ধ করে দিল।’
শিল্পীর অর্থনৈতিক অধিকার নিয়েও সচেতন ছিলেন দেবব্রত বিশ্বাস। সে সময় অন্যান্য কণ্ঠশিল্পীরা বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ নিজের কাঁধে নিয়ে এইচএমভি ও কলাম্বিয়াতে রেকর্ড করে রয়্যালটি পেতেন মাত্র পাঁচ শতাংশ। দেবব্রত বিশ্বাস সেখানে দশ শতাংশ রয়্যালটি ও বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ কোম্পানিকে বহনের দাবি করেন। জনমানসে গ্রহণযোগ্যতার কারণে কোম্পানি তাঁকে এক হাজার কপি বিক্রি হওয়ার শর্তে এই দাবি মেনে নেয়। উল্লেখ্য, তাঁর এক শ’র বেশি গানের মধ্যে এমন কোনো গান নেই যে তিনি রয়্যালটি পাননি। বলা যায়, বিত্ত ও চিত্ত সংকীর্ণতার বেড়াজাল ছিঁড়ে রবীন্দ্রসংগীতকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য তিনজনের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। অন্য দুজন হলেন পঙ্কজ কুমার মল্লিক ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
এই প্রতিবাদী চেতনা তিনি মূলত পেয়েছিলেন আইপিটিএ তথা ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে। সাম্যবাদে আস্থাবান এ শিল্পী ১৯৪০ এর দশকের শুরুতে আইপিটিএর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের গান, বিশেষত তাঁর স্বদেশপ্রেমমূলক গানগুলো গাওয়া শুরু করেন। দেবব্রত বিশ্বাসের দরাজ কণ্ঠ ও স্বতন্ত্র গায়কির কারণে শ্রোতারা আবিষ্কার করলেন নতুন এক রবীন্দ্রনাথকে। রবীন্দ্রসংগীত যে এভাবে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেও গাওয়া যেতে পারে, তা দেবব্রত বিশ্বাসের আগে কোনো শিল্পী কল্পনা করেননি।
এ সম্পর্কে হেমাঙ্গ বিশ্বাস বলছেন, ‘রবীন্দ্রসঙ্গীতের সবল উদ্দীপক ধারার সঙ্গে গণসঙ্গীতকে মিশিয়ে দিলেন জর্জদা। রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্পর্কে আমাদের অর্থাৎ গণসঙ্গীত গাইয়েদের মনোভাবকে সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করলেন যেমন, তেমনি রবীন্দ্রসংগীতকে মোহান্তদের বিরুদ্ধতা সত্ত্বেও মন্দিরের বেদি থেকে গণসঙ্গীতের প্রান্তরে নামিয়ে আনলেন। এই দুই ধারার সমন্বয়ে জর্জদা যেমন শ্রেষ্ঠ গণসঙ্গীত শিল্পী, তেমনি শ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রসংগীত গায়ক। এখানেই জর্জদার যুগান্তকারী ভূমিকা। এখানেই তিনি মহান গণসঙ্গীতশিল্পী।’ এ সময় ‘নবান্ন’, ‘রক্তকরবী’র মতো অবিস্মরণীয় নাটকে অভিনয়ও করেন তিনি।
জন্মভূমি পূর্ববাংলার প্রতি তাঁর ছিল গভীর মমত্ববোধ ও ভালোবাসা। হেমাঙ্গ বিশ্বাসের বক্তব্য থেকে জানা যায়, পূর্ববাংলাকে দেবব্রত বিশ্বাস বলতেন ‘মা’ আর পশ্চিমবঙ্গকে বলতেন ‘বিমাতা’। মায়ের রাতারাতি বিদেশ হয়ে যাওয়াকে তিনি কোনো দিন মেনে নিতে পারেননি। আমৃত্যু বয়ে বেড়িয়েছেন দেশভাগের সেই ক্ষত। হয়েছেন যন্ত্রণায় কাতর। তবে দেশভাগ তাঁকে মর্মাহত করলেও জন্মভূমির প্রতি দায়িত্ববোধ সম্পর্কে তিনি ছিলেন সচেতন। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ ও সহানুভূতি আদায় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য তিনি সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিঠি দিয়ে দুটি গান লিখে স্বরলিপিসহ পাঠানোর অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসার এ কথা জানা যায় তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘ব্রাত্যজনের রুদ্ধসংগীত’ থেকে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার জন্মভূমি পূর্ববঙ্গের অর্থাৎ বাংলাদেশের আমার ভাই-বোনেরা জীবন-মরণ পণে যে মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন সেই লড়াইকে তিনি সমর্থন করেন কিনা জানতে চাইলাম। যদি সেই লড়াই-এর প্রতি তাঁর সামান্য একটু সমর্থন থাকে তাহলে ওদের মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে দুটি গান আমায় লিখে পাঠাতে অনুরোধ জানালাম, যাতে সেই গান দুটির রেকর্ড প্রকাশ করে এবং নানা অনুষ্ঠানে গেয়ে এপার বাংলার জনসাধারণকে বাংলাদেশের আমার ভাইবোনদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল করে তুলতে পারি।’ সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কথা রেখেছিলেন। কয়েক দিন পরে দুটো গান লিখে ও স্বরলিপি করে তিনি পাঠিয়েছিলেন দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে।
শান্তিনিকেতনি গায়ন পদ্ধতি অনুসরণ না করে সুর কাঠামো বজায় রেখে আত্মোপলব্ধি দিয়ে স্বাধীনভাবে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার কারণে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছে তিনি ব্রাত্য হয়েছেন বটে। কিন্তু সংগীতামোদী মানুষের কাছে পেয়েছেন অফুরান ভালোবাসা। এখনো রবীন্দ্রসংগীতের অন্যতম জনপ্রিয় ও অনুসরণীয় শিল্পী তিনি। তাঁর ভরাট গলায় গাওয়া ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’, ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার’, ‘মহারাজ একি সাজে’ কিংবা ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ সিনেমায় গাওয়া ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’সহ অসংখ্য গান আজও শ্রোতাকে মুগ্ধ করে। শিল্পীর স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্য আমৃত্যু চেষ্টা তাঁকে শিল্পীদের মণিকোঠায় স্থান করে দিয়েছে।
১৯৮০ সালের ১৮ আগস্ট তাঁর চলে যাওয়া বাংলার সংগীতানুরাগী সাধারণ মানুষকেও করেছিল শোকাহত। তাঁর মৃত্যু নিয়ে তাঁর এক সময়ের কক্ষসঙ্গী ও শিল্পী সন্তোষ সেনগুপ্ত লিখছেন, “আমাদের দুর্ভাগ্য, সারা দেশের দুর্ভাগ্য যে দেবব্রত বিশ্বাস আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। কিন্তু কী সে যাওয়া-কী সে মহিমান্বিত নিষ্ক্রমণ-অগণিত জনতার আকুল ক্রন্দনধ্বনি-আকুল হাহাকার যেন তারই গানের রূপ নিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। ”
বিদ্যুৎ সরকার: শিক্ষক ও সংগীত শিল্পী
বিদ্যুৎ সরকার

দেবব্রত বিশ্বাস ওরফে জর্জ। সংগীতজনের কাছে তিনি পরিচিত ‘জর্জ দা’ নামে। কিশোরগঞ্জে থাকাকালে আরও দুটো নাম ছিল তাঁর—দেবু এবং খোকা। সেখানে পরিচিতদের অনেকেই এই দুই নামের কোনো একটি দিয়েই চিনতেন বা ডাকতেন তাঁকে। পরে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে পূর্ববঙ্গ ছেড়ে কলকাতায় যাওয়ায় তাঁর দেবু ও খোকা নাম ধীরে ধীরে মানুষ ভুলে যায়। কলকাতার মানুষের কাছে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন পিতা দেবেন্দ্রকিশোর বিশ্বাসের ইংরেজপ্রীতির নিদর্শন হিসেবে পাওয়া জর্জ নামে। ১৯১১ সালের ২২ আগস্ট তাঁর জন্মের কয়েক দিন আগে ইংল্যান্ডের রাজা হন পঞ্চম জর্জ। ইংরেজদের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও অতিভক্তি বশত তাঁর বাবা-মা আদর করে তাঁকে ডাকতেন জর্জ নামে। দেবব্রত বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত এই জর্জ থেকে ‘জর্জ দা’ নামেই সংগীত সমাজে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
দেবব্রত বিশ্বাসের বাবা ছিলেন গোঁড়া ব্রাহ্ম। সিনেমা, থিয়েটার, যাত্রাগানের প্রতি তাঁর ছিল ঘোর অমত। তবে ব্রাহ্ম হওয়ায় বাড়িতে প্রতি সন্ধ্যায় প্রার্থনা হিসেবে মায়ের সঙ্গে দেবব্রত বিশ্বাস গাইতেন ব্রহ্মসংগীত। এই প্রার্থনা থেকেই তাঁর গাওয়ার শুরু। এ ছাড়া মায়ের কাছ থেকে শুনে শুনে আরও কিছু গান শিখে নিয়েছিলেন তিনি। ময়মনসিংহ ব্রাহ্মসমাজের মাঘোৎসবের গানের দলে প্রতি বছর মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনিও। বাড়িতে হারমোনিয়াম, অর্গান ছিল। বলা যায়, শৈশব থেকেই তিনি পেয়েছিলেন সংগীত-সহায়ক এক পরিবেশ।
স্কুলে পড়ার সময় কংগ্রেস ভলান্টিয়ার হয়ে সমবয়সী কয়েকজনকে নিয়ে দেশাত্মবোধক গানও গেয়েছেন বিভিন্ন স্বদেশি সভায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহের কনক দাস ছিলেন তার মাসি (বড় মামির বোন)। তাঁর সঙ্গে অনুষ্ঠানে গানও গেয়েছেন দেবব্রত বিশ্বাস। ১৯২৮-২৯ সালে কলকাতায় কলেজে পড়াকালীন সুর সাগর হিমাংশু দত্ত, শৈলেশ দত্তগুপ্ত, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় ও সন্তোষ সেনগুপ্তের মতো সংগীতগুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। বিশেষ করে হিমাংশু দত্তের কাছ থেকে এ সময় বেশ কিছু গান শিখে নেন দেবব্রত বিশ্বাস। পরে সেই গানগুলো ১৯৩৩ সালে শান্তিনিকেতনের সংগীতভবনের অধ্যক্ষ হেমেন্দ্রলাল রায়কে শুনিয়ে তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লাভ করেছিলেন তিনি। কাজী নজরুল ইসলামও সেনোলা রেকর্ড কোম্পানির হয়ে তাঁকে দিয়ে দুটি গান রেকর্ড করিয়েছিলেন। বোঝা যায়, সংগীত সম্পর্কে যেখানে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, শিখে নিয়েছেন।
তবে মাঝেমধ্যে দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গান গাইলেও রবি ঠাকুরের গানের প্রতিই ছিল তাঁর অতলান্ত ভালোবাসা। বিশেষ করে মায়ের কাছে শেখা ও কলকাতায় ব্রাহ্মমন্দিরে শোনা ব্রহ্মসংগীতগুলো সব সময় তাঁকে আলোড়িত করেছে। এ গান সম্পর্কে তিনি বলছেন, ‘সেই সব আধ্যাত্মিক গানগুলোর মধ্যে কী যেন একটা মাধুর্য ছিল, যা আমার হৃদয়কে অত্যন্ত গভীরভাবে নাড়া দিত।’ বড় হতে হতে রবীন্দ্রসংগীত হয়ে ওঠে তাঁর যাপিত জীবনের আশ্রয়। সেটা আরও পাকাপোক্ত হয় ১৯৩৫ সালের দিকে ইন্দিরা দেবীর সান্নিধ্যে এসে। এ ছাড়া অনাদিকুমার দস্তিদারের কাছ থেকেও অনেক গান শেখেন তিনি। সিনেমার গানের প্রয়োজনে তিনি পঙ্কজ মল্লিকের সাহচর্য পেয়েছেন। শেখার ব্যাপারে দেবব্রত বিশ্বাস ছিলেন মুক্তমনা। যখন যেখানে যার কাছে সুযোগ পেয়েছেন, শিখেছেন তিনি।
সংগীত, বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে অভিজ্ঞ এবং জনপ্রিয় হওয়ার পরেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছ থেকে তিনি হয়েছিলেন বৈষম্যের শিকার। এক প্রকার ব্রাত্য করেই রাখা হয়েছিল তাঁকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারত, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে নামী-অনামী অনেক শিল্পীই বহু প্রচারিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিংবা বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে প্রাণভরে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। ভাব ও সুরের সমন্বয় সেখানে যে সব সময় রক্ষা হয়, তা জোর গলায় বলা যায় না। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন রবীন্দ্রসংগীতের রেকর্ড কেউ বের করতে চাইলে তাঁকে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের অনুমোদন নিতে হতো। কোনো শিল্পীর সুর-বাজনা-গায়নভঙ্গি একটু এদিক-ওদিক হলেই তাঁর রেকর্ডটি প্রকাশের অনুমতি দিতে বোর্ড কার্পণ্য করত।
তবে এই কৃপণতার মাত্রা সবার ক্ষেত্রে এক রকম ছিল না। বলা যায়, সবচেয়ে বেশি ছিল দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি। কেউ কেউ সঠিকভাবে না গেয়েও রেকর্ড বের করার অনুমতি পেয়ে যেতেন। কিন্তু দেবব্রত বিশ্বাস সহজে অনুমতি পেতেন না। কারণ তিনি রবীন্দ্রসংগীতের গায়নে অনুভূতি সঞ্জাত নতুনত্ব আনার চেষ্টা করতেন। ফলে, গানের কথা অনুযায়ী ভাব সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে সৃষ্ট মিউজিক ব্যবহার করতেন তিনি। এ জন্য শান্তিনিকেতনি সুর ও পরিবেশনারীতির কিছু ব্যত্যয়ও ঘটাতেন দেবব্রত।
রবীন্দ্রনাথের সংগীতচিন্তা সম্পর্কে দেবব্রত বিশ্বাসের ছিল সুস্পষ্ট ধারণা। ভরাট কণ্ঠ, নতুন গায়নভঙ্গি ও বাণীবাহিত ভাবকে শ্রুতিনন্দনভাবে উপস্থাপনার কারণে শ্রোতারা তাঁকে ভালোবেসেছিল অকৃত্রিম হৃদয়াবেগ দিয়েই। সে সময় দেবব্রত বিশ্বাসের জনপ্রিয়তার একটা প্রমাণ পাওয়া যায় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কথায়। তিনি আমার গানের স্বরলিপি বইয়ে জানাচ্ছেন, ‘শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীতে আমার ধারণা জর্জদারই হাইয়েস্ট। একবার ওঁর বিক্রির স্টেটমেন্ট দেখেছিলুম। ভাবা যায় না। শুধু রবীন্দ্রসংগীত বেচে এত টাকা। না, না ওই জর্জদারই ম্যাক্সিমাম। তারপর আমার।’
সংগীতানুরাগীদের কাছে প্রিয় হলেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ড রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে দেবব্রত বিশ্বাসের ভাবনাকে গ্রহণ করতে পারেনি। এ নিয়ে ১৯৬৪ সাল থেকে তাঁর সঙ্গে বোর্ডের বিবাদ শুরু হয়। এ সময় তাঁর গাওয়া চারটি রবীন্দ্রসংগীতের (১. শুধু যাওয়া আসা, ২. এসেছিলে তবু আস নাই, ৩. মেঘ বলেছে যাব যাব, ৪. গোধূলিগগনে মেঘে ঢেকেছিল তারা) রেকর্ড মিউজিক বোর্ড প্রকাশ করতে বাধা দেয়। শান্তিদেব ঘোষ যে গানকে প্রকাশযোগ্য বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, বোর্ডের কর্মকর্তারা সে মতও গ্রহণ করেননি।
এর পর থেকে মাঝে মাঝেই দেবব্রত বিশ্বাস বোর্ড কর্মকর্তাদের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন। বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের এই খবরদারিমূলক আচরণের প্রতিবাদে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থাতেই তিনি রবীন্দ্রসংগীত রেকর্ড বন্ধ করে দেন। অনেকের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি সংগীত থেকে ধীরে-ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। ১৯৭১ সালের পর কোনো রবীন্দ্রসংগীত তিনি আর রেকর্ড করেননি। এ কারণে কারও-কারও কাছে তিনি পেয়েছেন অতি-অভিমানী কিংবা চরম জেদির তকমা। কিন্তু একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, এই অতি-অভিমান কিংবা চরম জেদের মূলে রয়েছে শিল্পীর স্বাধীনতা ও অধিকার আদায় এবং তাকে সমুন্নত রাখার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা।
রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে যথেষ্ট না জানা, অনভিজ্ঞ ও কম বয়সী সনদধারী কিছু মানুষের ক্ষমতাচর্চা ও ঈর্ষাজাত সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর কাছে শুধু গাওয়ার বিষয় ছিল না। দৈনন্দিন যাপনে তা ছিল আত্মচেতনা ও সম্মানবোধকে শাণিত করার মন্ত্র।
শুধু শ্রোতার কাছেই নন, শিল্পীদের কাছেও তিনি ছিলেন শ্রদ্ধেয়, বরণীয়। দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের সে আচরণ অন্যান্য শিল্পীকেও ব্যথিত করেছিল–লজ্জিতও। মান্না দে তাঁর আত্মজীবনী জীবনের জলসাঘরে জানাচ্ছেন, ‘কিছু সুরহীন মানুষ রবীন্দ্রসংগীতের অভিভাবক সেজে রবীন্দ্রসংগীতকে আটকে রেখেছেন তাঁদের নিজস্ব আঙিনায়, নিজস্ব বেড়াজালে। কখনো তাকে হয়ে উঠতে দেননি জনগণের সংগীত। প্রাণের গানকে আবদ্ধ রেখেছেন প্রাণহীন এক বিচিত্র স্বঘোষিত রাবীন্দ্রিক ঢঙে। এ অন্যায়, এ ঘোরতর এক অন্যায়। প্রাণ ঢেলে হৃদয়ের সুরে আবেগমথিত কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন জর্জদা। আহা! কী গান গাইতেন উনি। এক-একটা গানের এক-একটা জায়গায় ওঁর সুর লাগানো শুনে বুকের ভেতর একটা ভালো লাগার অনুভূতি আমার চোখে আবেগ আপ্লুত জল এনে দিত। সেই জর্জদার গান গাওয়া ওরা বন্ধ করে দিল।’
শিল্পীর অর্থনৈতিক অধিকার নিয়েও সচেতন ছিলেন দেবব্রত বিশ্বাস। সে সময় অন্যান্য কণ্ঠশিল্পীরা বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ নিজের কাঁধে নিয়ে এইচএমভি ও কলাম্বিয়াতে রেকর্ড করে রয়্যালটি পেতেন মাত্র পাঁচ শতাংশ। দেবব্রত বিশ্বাস সেখানে দশ শতাংশ রয়্যালটি ও বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ কোম্পানিকে বহনের দাবি করেন। জনমানসে গ্রহণযোগ্যতার কারণে কোম্পানি তাঁকে এক হাজার কপি বিক্রি হওয়ার শর্তে এই দাবি মেনে নেয়। উল্লেখ্য, তাঁর এক শ’র বেশি গানের মধ্যে এমন কোনো গান নেই যে তিনি রয়্যালটি পাননি। বলা যায়, বিত্ত ও চিত্ত সংকীর্ণতার বেড়াজাল ছিঁড়ে রবীন্দ্রসংগীতকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য তিনজনের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। অন্য দুজন হলেন পঙ্কজ কুমার মল্লিক ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
এই প্রতিবাদী চেতনা তিনি মূলত পেয়েছিলেন আইপিটিএ তথা ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে। সাম্যবাদে আস্থাবান এ শিল্পী ১৯৪০ এর দশকের শুরুতে আইপিটিএর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের গান, বিশেষত তাঁর স্বদেশপ্রেমমূলক গানগুলো গাওয়া শুরু করেন। দেবব্রত বিশ্বাসের দরাজ কণ্ঠ ও স্বতন্ত্র গায়কির কারণে শ্রোতারা আবিষ্কার করলেন নতুন এক রবীন্দ্রনাথকে। রবীন্দ্রসংগীত যে এভাবে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেও গাওয়া যেতে পারে, তা দেবব্রত বিশ্বাসের আগে কোনো শিল্পী কল্পনা করেননি।
এ সম্পর্কে হেমাঙ্গ বিশ্বাস বলছেন, ‘রবীন্দ্রসঙ্গীতের সবল উদ্দীপক ধারার সঙ্গে গণসঙ্গীতকে মিশিয়ে দিলেন জর্জদা। রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্পর্কে আমাদের অর্থাৎ গণসঙ্গীত গাইয়েদের মনোভাবকে সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করলেন যেমন, তেমনি রবীন্দ্রসংগীতকে মোহান্তদের বিরুদ্ধতা সত্ত্বেও মন্দিরের বেদি থেকে গণসঙ্গীতের প্রান্তরে নামিয়ে আনলেন। এই দুই ধারার সমন্বয়ে জর্জদা যেমন শ্রেষ্ঠ গণসঙ্গীত শিল্পী, তেমনি শ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রসংগীত গায়ক। এখানেই জর্জদার যুগান্তকারী ভূমিকা। এখানেই তিনি মহান গণসঙ্গীতশিল্পী।’ এ সময় ‘নবান্ন’, ‘রক্তকরবী’র মতো অবিস্মরণীয় নাটকে অভিনয়ও করেন তিনি।
জন্মভূমি পূর্ববাংলার প্রতি তাঁর ছিল গভীর মমত্ববোধ ও ভালোবাসা। হেমাঙ্গ বিশ্বাসের বক্তব্য থেকে জানা যায়, পূর্ববাংলাকে দেবব্রত বিশ্বাস বলতেন ‘মা’ আর পশ্চিমবঙ্গকে বলতেন ‘বিমাতা’। মায়ের রাতারাতি বিদেশ হয়ে যাওয়াকে তিনি কোনো দিন মেনে নিতে পারেননি। আমৃত্যু বয়ে বেড়িয়েছেন দেশভাগের সেই ক্ষত। হয়েছেন যন্ত্রণায় কাতর। তবে দেশভাগ তাঁকে মর্মাহত করলেও জন্মভূমির প্রতি দায়িত্ববোধ সম্পর্কে তিনি ছিলেন সচেতন। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ ও সহানুভূতি আদায় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য তিনি সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিঠি দিয়ে দুটি গান লিখে স্বরলিপিসহ পাঠানোর অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসার এ কথা জানা যায় তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘ব্রাত্যজনের রুদ্ধসংগীত’ থেকে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার জন্মভূমি পূর্ববঙ্গের অর্থাৎ বাংলাদেশের আমার ভাই-বোনেরা জীবন-মরণ পণে যে মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন সেই লড়াইকে তিনি সমর্থন করেন কিনা জানতে চাইলাম। যদি সেই লড়াই-এর প্রতি তাঁর সামান্য একটু সমর্থন থাকে তাহলে ওদের মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে দুটি গান আমায় লিখে পাঠাতে অনুরোধ জানালাম, যাতে সেই গান দুটির রেকর্ড প্রকাশ করে এবং নানা অনুষ্ঠানে গেয়ে এপার বাংলার জনসাধারণকে বাংলাদেশের আমার ভাইবোনদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল করে তুলতে পারি।’ সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কথা রেখেছিলেন। কয়েক দিন পরে দুটো গান লিখে ও স্বরলিপি করে তিনি পাঠিয়েছিলেন দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে।
শান্তিনিকেতনি গায়ন পদ্ধতি অনুসরণ না করে সুর কাঠামো বজায় রেখে আত্মোপলব্ধি দিয়ে স্বাধীনভাবে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার কারণে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছে তিনি ব্রাত্য হয়েছেন বটে। কিন্তু সংগীতামোদী মানুষের কাছে পেয়েছেন অফুরান ভালোবাসা। এখনো রবীন্দ্রসংগীতের অন্যতম জনপ্রিয় ও অনুসরণীয় শিল্পী তিনি। তাঁর ভরাট গলায় গাওয়া ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’, ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার’, ‘মহারাজ একি সাজে’ কিংবা ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ সিনেমায় গাওয়া ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’সহ অসংখ্য গান আজও শ্রোতাকে মুগ্ধ করে। শিল্পীর স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্য আমৃত্যু চেষ্টা তাঁকে শিল্পীদের মণিকোঠায় স্থান করে দিয়েছে।
১৯৮০ সালের ১৮ আগস্ট তাঁর চলে যাওয়া বাংলার সংগীতানুরাগী সাধারণ মানুষকেও করেছিল শোকাহত। তাঁর মৃত্যু নিয়ে তাঁর এক সময়ের কক্ষসঙ্গী ও শিল্পী সন্তোষ সেনগুপ্ত লিখছেন, “আমাদের দুর্ভাগ্য, সারা দেশের দুর্ভাগ্য যে দেবব্রত বিশ্বাস আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। কিন্তু কী সে যাওয়া-কী সে মহিমান্বিত নিষ্ক্রমণ-অগণিত জনতার আকুল ক্রন্দনধ্বনি-আকুল হাহাকার যেন তারই গানের রূপ নিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। ”
বিদ্যুৎ সরকার: শিক্ষক ও সংগীত শিল্পী

দেবব্রত বিশ্বাস ওরফে জর্জ। সংগীতজনের কাছে তিনি পরিচিত ‘জর্জ দা’ নামে। কিশোরগঞ্জে থাকাকালে আরও দুটো নাম ছিল তাঁর—দেবু এবং খোকা। সেখানে পরিচিতদের অনেকেই এই দুই নামের কোনো একটি দিয়েই চিনতেন বা ডাকতেন তাঁকে। পরে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে পূর্ববঙ্গ ছেড়ে কলকাতায় যাওয়ায় তাঁর দেবু ও খোকা নাম ধীরে ধীরে মানুষ ভুলে যায়। কলকাতার মানুষের কাছে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন পিতা দেবেন্দ্রকিশোর বিশ্বাসের ইংরেজপ্রীতির নিদর্শন হিসেবে পাওয়া জর্জ নামে। ১৯১১ সালের ২২ আগস্ট তাঁর জন্মের কয়েক দিন আগে ইংল্যান্ডের রাজা হন পঞ্চম জর্জ। ইংরেজদের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও অতিভক্তি বশত তাঁর বাবা-মা আদর করে তাঁকে ডাকতেন জর্জ নামে। দেবব্রত বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত এই জর্জ থেকে ‘জর্জ দা’ নামেই সংগীত সমাজে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
দেবব্রত বিশ্বাসের বাবা ছিলেন গোঁড়া ব্রাহ্ম। সিনেমা, থিয়েটার, যাত্রাগানের প্রতি তাঁর ছিল ঘোর অমত। তবে ব্রাহ্ম হওয়ায় বাড়িতে প্রতি সন্ধ্যায় প্রার্থনা হিসেবে মায়ের সঙ্গে দেবব্রত বিশ্বাস গাইতেন ব্রহ্মসংগীত। এই প্রার্থনা থেকেই তাঁর গাওয়ার শুরু। এ ছাড়া মায়ের কাছ থেকে শুনে শুনে আরও কিছু গান শিখে নিয়েছিলেন তিনি। ময়মনসিংহ ব্রাহ্মসমাজের মাঘোৎসবের গানের দলে প্রতি বছর মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনিও। বাড়িতে হারমোনিয়াম, অর্গান ছিল। বলা যায়, শৈশব থেকেই তিনি পেয়েছিলেন সংগীত-সহায়ক এক পরিবেশ।
স্কুলে পড়ার সময় কংগ্রেস ভলান্টিয়ার হয়ে সমবয়সী কয়েকজনকে নিয়ে দেশাত্মবোধক গানও গেয়েছেন বিভিন্ন স্বদেশি সভায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহের কনক দাস ছিলেন তার মাসি (বড় মামির বোন)। তাঁর সঙ্গে অনুষ্ঠানে গানও গেয়েছেন দেবব্রত বিশ্বাস। ১৯২৮-২৯ সালে কলকাতায় কলেজে পড়াকালীন সুর সাগর হিমাংশু দত্ত, শৈলেশ দত্তগুপ্ত, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় ও সন্তোষ সেনগুপ্তের মতো সংগীতগুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। বিশেষ করে হিমাংশু দত্তের কাছ থেকে এ সময় বেশ কিছু গান শিখে নেন দেবব্রত বিশ্বাস। পরে সেই গানগুলো ১৯৩৩ সালে শান্তিনিকেতনের সংগীতভবনের অধ্যক্ষ হেমেন্দ্রলাল রায়কে শুনিয়ে তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লাভ করেছিলেন তিনি। কাজী নজরুল ইসলামও সেনোলা রেকর্ড কোম্পানির হয়ে তাঁকে দিয়ে দুটি গান রেকর্ড করিয়েছিলেন। বোঝা যায়, সংগীত সম্পর্কে যেখানে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, শিখে নিয়েছেন।
তবে মাঝেমধ্যে দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গান গাইলেও রবি ঠাকুরের গানের প্রতিই ছিল তাঁর অতলান্ত ভালোবাসা। বিশেষ করে মায়ের কাছে শেখা ও কলকাতায় ব্রাহ্মমন্দিরে শোনা ব্রহ্মসংগীতগুলো সব সময় তাঁকে আলোড়িত করেছে। এ গান সম্পর্কে তিনি বলছেন, ‘সেই সব আধ্যাত্মিক গানগুলোর মধ্যে কী যেন একটা মাধুর্য ছিল, যা আমার হৃদয়কে অত্যন্ত গভীরভাবে নাড়া দিত।’ বড় হতে হতে রবীন্দ্রসংগীত হয়ে ওঠে তাঁর যাপিত জীবনের আশ্রয়। সেটা আরও পাকাপোক্ত হয় ১৯৩৫ সালের দিকে ইন্দিরা দেবীর সান্নিধ্যে এসে। এ ছাড়া অনাদিকুমার দস্তিদারের কাছ থেকেও অনেক গান শেখেন তিনি। সিনেমার গানের প্রয়োজনে তিনি পঙ্কজ মল্লিকের সাহচর্য পেয়েছেন। শেখার ব্যাপারে দেবব্রত বিশ্বাস ছিলেন মুক্তমনা। যখন যেখানে যার কাছে সুযোগ পেয়েছেন, শিখেছেন তিনি।
সংগীত, বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে অভিজ্ঞ এবং জনপ্রিয় হওয়ার পরেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছ থেকে তিনি হয়েছিলেন বৈষম্যের শিকার। এক প্রকার ব্রাত্য করেই রাখা হয়েছিল তাঁকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারত, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে নামী-অনামী অনেক শিল্পীই বহু প্রচারিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিংবা বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে প্রাণভরে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। ভাব ও সুরের সমন্বয় সেখানে যে সব সময় রক্ষা হয়, তা জোর গলায় বলা যায় না। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন রবীন্দ্রসংগীতের রেকর্ড কেউ বের করতে চাইলে তাঁকে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের অনুমোদন নিতে হতো। কোনো শিল্পীর সুর-বাজনা-গায়নভঙ্গি একটু এদিক-ওদিক হলেই তাঁর রেকর্ডটি প্রকাশের অনুমতি দিতে বোর্ড কার্পণ্য করত।
তবে এই কৃপণতার মাত্রা সবার ক্ষেত্রে এক রকম ছিল না। বলা যায়, সবচেয়ে বেশি ছিল দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি। কেউ কেউ সঠিকভাবে না গেয়েও রেকর্ড বের করার অনুমতি পেয়ে যেতেন। কিন্তু দেবব্রত বিশ্বাস সহজে অনুমতি পেতেন না। কারণ তিনি রবীন্দ্রসংগীতের গায়নে অনুভূতি সঞ্জাত নতুনত্ব আনার চেষ্টা করতেন। ফলে, গানের কথা অনুযায়ী ভাব সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে সৃষ্ট মিউজিক ব্যবহার করতেন তিনি। এ জন্য শান্তিনিকেতনি সুর ও পরিবেশনারীতির কিছু ব্যত্যয়ও ঘটাতেন দেবব্রত।
রবীন্দ্রনাথের সংগীতচিন্তা সম্পর্কে দেবব্রত বিশ্বাসের ছিল সুস্পষ্ট ধারণা। ভরাট কণ্ঠ, নতুন গায়নভঙ্গি ও বাণীবাহিত ভাবকে শ্রুতিনন্দনভাবে উপস্থাপনার কারণে শ্রোতারা তাঁকে ভালোবেসেছিল অকৃত্রিম হৃদয়াবেগ দিয়েই। সে সময় দেবব্রত বিশ্বাসের জনপ্রিয়তার একটা প্রমাণ পাওয়া যায় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কথায়। তিনি আমার গানের স্বরলিপি বইয়ে জানাচ্ছেন, ‘শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীতে আমার ধারণা জর্জদারই হাইয়েস্ট। একবার ওঁর বিক্রির স্টেটমেন্ট দেখেছিলুম। ভাবা যায় না। শুধু রবীন্দ্রসংগীত বেচে এত টাকা। না, না ওই জর্জদারই ম্যাক্সিমাম। তারপর আমার।’
সংগীতানুরাগীদের কাছে প্রিয় হলেও বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ড রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে দেবব্রত বিশ্বাসের ভাবনাকে গ্রহণ করতে পারেনি। এ নিয়ে ১৯৬৪ সাল থেকে তাঁর সঙ্গে বোর্ডের বিবাদ শুরু হয়। এ সময় তাঁর গাওয়া চারটি রবীন্দ্রসংগীতের (১. শুধু যাওয়া আসা, ২. এসেছিলে তবু আস নাই, ৩. মেঘ বলেছে যাব যাব, ৪. গোধূলিগগনে মেঘে ঢেকেছিল তারা) রেকর্ড মিউজিক বোর্ড প্রকাশ করতে বাধা দেয়। শান্তিদেব ঘোষ যে গানকে প্রকাশযোগ্য বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, বোর্ডের কর্মকর্তারা সে মতও গ্রহণ করেননি।
এর পর থেকে মাঝে মাঝেই দেবব্রত বিশ্বাস বোর্ড কর্মকর্তাদের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন। বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের এই খবরদারিমূলক আচরণের প্রতিবাদে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থাতেই তিনি রবীন্দ্রসংগীত রেকর্ড বন্ধ করে দেন। অনেকের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি সংগীত থেকে ধীরে-ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। ১৯৭১ সালের পর কোনো রবীন্দ্রসংগীত তিনি আর রেকর্ড করেননি। এ কারণে কারও-কারও কাছে তিনি পেয়েছেন অতি-অভিমানী কিংবা চরম জেদির তকমা। কিন্তু একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, এই অতি-অভিমান কিংবা চরম জেদের মূলে রয়েছে শিল্পীর স্বাধীনতা ও অধিকার আদায় এবং তাকে সমুন্নত রাখার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা।
রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে যথেষ্ট না জানা, অনভিজ্ঞ ও কম বয়সী সনদধারী কিছু মানুষের ক্ষমতাচর্চা ও ঈর্ষাজাত সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর কাছে শুধু গাওয়ার বিষয় ছিল না। দৈনন্দিন যাপনে তা ছিল আত্মচেতনা ও সম্মানবোধকে শাণিত করার মন্ত্র।
শুধু শ্রোতার কাছেই নন, শিল্পীদের কাছেও তিনি ছিলেন শ্রদ্ধেয়, বরণীয়। দেবব্রত বিশ্বাসের প্রতি বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের সে আচরণ অন্যান্য শিল্পীকেও ব্যথিত করেছিল–লজ্জিতও। মান্না দে তাঁর আত্মজীবনী জীবনের জলসাঘরে জানাচ্ছেন, ‘কিছু সুরহীন মানুষ রবীন্দ্রসংগীতের অভিভাবক সেজে রবীন্দ্রসংগীতকে আটকে রেখেছেন তাঁদের নিজস্ব আঙিনায়, নিজস্ব বেড়াজালে। কখনো তাকে হয়ে উঠতে দেননি জনগণের সংগীত। প্রাণের গানকে আবদ্ধ রেখেছেন প্রাণহীন এক বিচিত্র স্বঘোষিত রাবীন্দ্রিক ঢঙে। এ অন্যায়, এ ঘোরতর এক অন্যায়। প্রাণ ঢেলে হৃদয়ের সুরে আবেগমথিত কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন জর্জদা। আহা! কী গান গাইতেন উনি। এক-একটা গানের এক-একটা জায়গায় ওঁর সুর লাগানো শুনে বুকের ভেতর একটা ভালো লাগার অনুভূতি আমার চোখে আবেগ আপ্লুত জল এনে দিত। সেই জর্জদার গান গাওয়া ওরা বন্ধ করে দিল।’
শিল্পীর অর্থনৈতিক অধিকার নিয়েও সচেতন ছিলেন দেবব্রত বিশ্বাস। সে সময় অন্যান্য কণ্ঠশিল্পীরা বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ নিজের কাঁধে নিয়ে এইচএমভি ও কলাম্বিয়াতে রেকর্ড করে রয়্যালটি পেতেন মাত্র পাঁচ শতাংশ। দেবব্রত বিশ্বাস সেখানে দশ শতাংশ রয়্যালটি ও বাদ্যযন্ত্রীদের খরচ কোম্পানিকে বহনের দাবি করেন। জনমানসে গ্রহণযোগ্যতার কারণে কোম্পানি তাঁকে এক হাজার কপি বিক্রি হওয়ার শর্তে এই দাবি মেনে নেয়। উল্লেখ্য, তাঁর এক শ’র বেশি গানের মধ্যে এমন কোনো গান নেই যে তিনি রয়্যালটি পাননি। বলা যায়, বিত্ত ও চিত্ত সংকীর্ণতার বেড়াজাল ছিঁড়ে রবীন্দ্রসংগীতকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য তিনজনের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। অন্য দুজন হলেন পঙ্কজ কুমার মল্লিক ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
এই প্রতিবাদী চেতনা তিনি মূলত পেয়েছিলেন আইপিটিএ তথা ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে। সাম্যবাদে আস্থাবান এ শিল্পী ১৯৪০ এর দশকের শুরুতে আইপিটিএর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের গান, বিশেষত তাঁর স্বদেশপ্রেমমূলক গানগুলো গাওয়া শুরু করেন। দেবব্রত বিশ্বাসের দরাজ কণ্ঠ ও স্বতন্ত্র গায়কির কারণে শ্রোতারা আবিষ্কার করলেন নতুন এক রবীন্দ্রনাথকে। রবীন্দ্রসংগীত যে এভাবে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেও গাওয়া যেতে পারে, তা দেবব্রত বিশ্বাসের আগে কোনো শিল্পী কল্পনা করেননি।
এ সম্পর্কে হেমাঙ্গ বিশ্বাস বলছেন, ‘রবীন্দ্রসঙ্গীতের সবল উদ্দীপক ধারার সঙ্গে গণসঙ্গীতকে মিশিয়ে দিলেন জর্জদা। রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্পর্কে আমাদের অর্থাৎ গণসঙ্গীত গাইয়েদের মনোভাবকে সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করলেন যেমন, তেমনি রবীন্দ্রসংগীতকে মোহান্তদের বিরুদ্ধতা সত্ত্বেও মন্দিরের বেদি থেকে গণসঙ্গীতের প্রান্তরে নামিয়ে আনলেন। এই দুই ধারার সমন্বয়ে জর্জদা যেমন শ্রেষ্ঠ গণসঙ্গীত শিল্পী, তেমনি শ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রসংগীত গায়ক। এখানেই জর্জদার যুগান্তকারী ভূমিকা। এখানেই তিনি মহান গণসঙ্গীতশিল্পী।’ এ সময় ‘নবান্ন’, ‘রক্তকরবী’র মতো অবিস্মরণীয় নাটকে অভিনয়ও করেন তিনি।
জন্মভূমি পূর্ববাংলার প্রতি তাঁর ছিল গভীর মমত্ববোধ ও ভালোবাসা। হেমাঙ্গ বিশ্বাসের বক্তব্য থেকে জানা যায়, পূর্ববাংলাকে দেবব্রত বিশ্বাস বলতেন ‘মা’ আর পশ্চিমবঙ্গকে বলতেন ‘বিমাতা’। মায়ের রাতারাতি বিদেশ হয়ে যাওয়াকে তিনি কোনো দিন মেনে নিতে পারেননি। আমৃত্যু বয়ে বেড়িয়েছেন দেশভাগের সেই ক্ষত। হয়েছেন যন্ত্রণায় কাতর। তবে দেশভাগ তাঁকে মর্মাহত করলেও জন্মভূমির প্রতি দায়িত্ববোধ সম্পর্কে তিনি ছিলেন সচেতন। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ ও সহানুভূতি আদায় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য তিনি সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিঠি দিয়ে দুটি গান লিখে স্বরলিপিসহ পাঠানোর অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসার এ কথা জানা যায় তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘ব্রাত্যজনের রুদ্ধসংগীত’ থেকে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার জন্মভূমি পূর্ববঙ্গের অর্থাৎ বাংলাদেশের আমার ভাই-বোনেরা জীবন-মরণ পণে যে মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন সেই লড়াইকে তিনি সমর্থন করেন কিনা জানতে চাইলাম। যদি সেই লড়াই-এর প্রতি তাঁর সামান্য একটু সমর্থন থাকে তাহলে ওদের মুক্তিযুদ্ধ সম্বন্ধে দুটি গান আমায় লিখে পাঠাতে অনুরোধ জানালাম, যাতে সেই গান দুটির রেকর্ড প্রকাশ করে এবং নানা অনুষ্ঠানে গেয়ে এপার বাংলার জনসাধারণকে বাংলাদেশের আমার ভাইবোনদের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল করে তুলতে পারি।’ সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কথা রেখেছিলেন। কয়েক দিন পরে দুটো গান লিখে ও স্বরলিপি করে তিনি পাঠিয়েছিলেন দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে।
শান্তিনিকেতনি গায়ন পদ্ধতি অনুসরণ না করে সুর কাঠামো বজায় রেখে আত্মোপলব্ধি দিয়ে স্বাধীনভাবে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার কারণে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছে তিনি ব্রাত্য হয়েছেন বটে। কিন্তু সংগীতামোদী মানুষের কাছে পেয়েছেন অফুরান ভালোবাসা। এখনো রবীন্দ্রসংগীতের অন্যতম জনপ্রিয় ও অনুসরণীয় শিল্পী তিনি। তাঁর ভরাট গলায় গাওয়া ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’, ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার’, ‘মহারাজ একি সাজে’ কিংবা ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ সিনেমায় গাওয়া ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’সহ অসংখ্য গান আজও শ্রোতাকে মুগ্ধ করে। শিল্পীর স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্য আমৃত্যু চেষ্টা তাঁকে শিল্পীদের মণিকোঠায় স্থান করে দিয়েছে।
১৯৮০ সালের ১৮ আগস্ট তাঁর চলে যাওয়া বাংলার সংগীতানুরাগী সাধারণ মানুষকেও করেছিল শোকাহত। তাঁর মৃত্যু নিয়ে তাঁর এক সময়ের কক্ষসঙ্গী ও শিল্পী সন্তোষ সেনগুপ্ত লিখছেন, “আমাদের দুর্ভাগ্য, সারা দেশের দুর্ভাগ্য যে দেবব্রত বিশ্বাস আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। কিন্তু কী সে যাওয়া-কী সে মহিমান্বিত নিষ্ক্রমণ-অগণিত জনতার আকুল ক্রন্দনধ্বনি-আকুল হাহাকার যেন তারই গানের রূপ নিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। ”
বিদ্যুৎ সরকার: শিক্ষক ও সংগীত শিল্পী

চার্লস ডিকেন্সের ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ অবলম্বনে তানিম নূর বানিয়েছিলেন ‘উৎসব’। এবার হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করছেন তিনি। নাম ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। আগেই জানা গিয়েছিল, এতে অভিনয় করবেন মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ ও সাবিলা নূর।
৫ ঘণ্টা আগে
২০২৩ সালে আরটিভি ইয়াং স্টার প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন গীতিকার কবির বকুল, সুরকার ইমন সাহা ও কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। বিচারকের আসনে বসে তাঁরা বলেছিলেন প্রতিযোগিতার শীর্ষ শিল্পীদের সুযোগ করে দিতে কাজ করবেন, তাদের নিয়ে গান বানাবেন।
৫ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম বানিয়েছেন ‘দেলুপি’। যেখানে রাজনীতি আছে, ভালোবাসা আছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে, যাত্রাশিল্পীদের সংগ্রাম আছে; আর আছে জীবন বদলানোর গল্প।
৫ ঘণ্টা আগে
‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’–এর অংশ হিসেবে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি এখন ভারতে। গতকাল শনিবার এসেছিলেন কলকাতায়। অংশ নেন একটি বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে। এ সময় কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভার্চুয়ালি উন্মোচন করা হয়েছে মেসির বিশাল ৭০ ফুট উচ্চতার মূর্তি।
৫ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

চার্লস ডিকেন্সের ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ অবলম্বনে তানিম নূর বানিয়েছিলেন ‘উৎসব’। এবার হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করছেন তিনি। নাম ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। আগেই জানা গিয়েছিল, এতে অভিনয় করবেন মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ ও সাবিলা নূর। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলো অভিনয়শিল্পীদের। এতে আরও আছেন আজমেরি হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, ইন্তেখাব দিনার ও শ্যামল মাওলা।
হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাসে অসুস্থ মামাকে দেখতে ট্রেনে করে দিনাজপুর যাচ্ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী চিত্রা। তার সেই ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতা নিয়েই এগিয়ে যায় কাহিনি। নির্মাতা সেই গল্পই পর্দায় তুলে ধরবেন, তবে সিনেমার প্রয়োজনে থাকবে কিছু সংযোজন-পরিমার্জন। থাকবে নতুন চমক। তবে কী সেই চমক, তা জানা যাবে বনলতা এক্সপ্রেস মুক্তির পর। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামীকাল থেকে ঢাকায় শুরু হবে শুটিং। চিত্রা চরিত্রে থাকছেন সাবিলা নূর। আগামী রোজার ঈদে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
পারিবারিক গল্পের উৎসব সিনেমায় অভিনয় করেছেন একঝাঁক তারকা। এবারও তারকাসমৃদ্ধ পারিবারিক গল্পের সিনেমা দিয়ে দর্শকের সামনে আসার পরিকল্পনা নির্মাতার। বনলতা এক্সপ্রেস প্রসঙ্গে নির্মাতা তানিম নূর বলেন, ‘উৎসব শেষ করার পর নতুন সিনেমা নিয়ে যখন পরিকল্পনা করছিলাম, অনেকে পরামর্শ দিল আরেকটা পারিবারিক গল্প নিয়ে কাজ করতে। তখন ভাবলাম, হুমায়ূন আহমেদের কোনো গল্প নিয়ে কাজ করা যায়। সেই ভাবনা থেকেই কিছুক্ষণ উপন্যাস নিয়ে বনলতা এক্সপ্রেস নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু।’
অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেন, ‘চরিত্রের প্রেমে পড়েই এই সিনেমায় যুক্ত হওয়া। সিনেমার চিত্রনাট্য ও সংলাপ দারুণ লেগেছে। এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসটি আমার পড়া, সেটার প্রতিও ভালো লাগা আছে। বনলতা এক্সপ্রেসে আমার সহশিল্পী যাঁরা আছেন, তাঁরা আমার অনেক দিনের সঙ্গী। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’
চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘তানিম নূরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সিনেমাটি সবার ভালো লাগবে। হুমায়ূন আহমেদের গল্প থেকে সিনেমা এই বিষয়টি যেমন দর্শকের আলাদা আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। তেমনি অভিনেতা হিসেবে আমরাও একটি ভালো সিনেমার অংশ হতে অধীর হয়ে আছি।’
আজমেরী হক বাঁধন বলেন, ‘এই সিনেমার নির্মাতা ও সহশিল্পীরা আমার ভীষণ পছন্দের। তানিম নূর যখন এই চরিত্রের কথা বলল, তখন আমার মেয়ে বলেছে, তুমি এটি করো। কারণ আমাকে নাকি সব সময় সিরিয়াস আর অবসাদগ্রস্ত চরিত্রে দেখা যায়। আর হুমায়ূন আহমেদ যে আমার কত পছন্দের, সেটা সবাই জানে। অনেক বছর পর তাঁর গল্পে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। এটা আমার কাছে বিশেষ কিছু।’
জাকিয়া বারী মম বলেন, ‘বনলতা এক্সপ্রেসে উঠে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, এর ড্রাইভার তানিম নূর। এ ছাড়া যাত্রাপথে সহযাত্রীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমার সহযাত্রীরা সবাই দুর্দান্ত। আশা করি দারুণ একটি যাত্রা হবে আমাদের।’

চার্লস ডিকেন্সের ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ অবলম্বনে তানিম নূর বানিয়েছিলেন ‘উৎসব’। এবার হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করছেন তিনি। নাম ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। আগেই জানা গিয়েছিল, এতে অভিনয় করবেন মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ ও সাবিলা নূর। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলো অভিনয়শিল্পীদের। এতে আরও আছেন আজমেরি হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, ইন্তেখাব দিনার ও শ্যামল মাওলা।
হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাসে অসুস্থ মামাকে দেখতে ট্রেনে করে দিনাজপুর যাচ্ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী চিত্রা। তার সেই ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতা নিয়েই এগিয়ে যায় কাহিনি। নির্মাতা সেই গল্পই পর্দায় তুলে ধরবেন, তবে সিনেমার প্রয়োজনে থাকবে কিছু সংযোজন-পরিমার্জন। থাকবে নতুন চমক। তবে কী সেই চমক, তা জানা যাবে বনলতা এক্সপ্রেস মুক্তির পর। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামীকাল থেকে ঢাকায় শুরু হবে শুটিং। চিত্রা চরিত্রে থাকছেন সাবিলা নূর। আগামী রোজার ঈদে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
পারিবারিক গল্পের উৎসব সিনেমায় অভিনয় করেছেন একঝাঁক তারকা। এবারও তারকাসমৃদ্ধ পারিবারিক গল্পের সিনেমা দিয়ে দর্শকের সামনে আসার পরিকল্পনা নির্মাতার। বনলতা এক্সপ্রেস প্রসঙ্গে নির্মাতা তানিম নূর বলেন, ‘উৎসব শেষ করার পর নতুন সিনেমা নিয়ে যখন পরিকল্পনা করছিলাম, অনেকে পরামর্শ দিল আরেকটা পারিবারিক গল্প নিয়ে কাজ করতে। তখন ভাবলাম, হুমায়ূন আহমেদের কোনো গল্প নিয়ে কাজ করা যায়। সেই ভাবনা থেকেই কিছুক্ষণ উপন্যাস নিয়ে বনলতা এক্সপ্রেস নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু।’
অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেন, ‘চরিত্রের প্রেমে পড়েই এই সিনেমায় যুক্ত হওয়া। সিনেমার চিত্রনাট্য ও সংলাপ দারুণ লেগেছে। এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসটি আমার পড়া, সেটার প্রতিও ভালো লাগা আছে। বনলতা এক্সপ্রেসে আমার সহশিল্পী যাঁরা আছেন, তাঁরা আমার অনেক দিনের সঙ্গী। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’
চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘তানিম নূরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সিনেমাটি সবার ভালো লাগবে। হুমায়ূন আহমেদের গল্প থেকে সিনেমা এই বিষয়টি যেমন দর্শকের আলাদা আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। তেমনি অভিনেতা হিসেবে আমরাও একটি ভালো সিনেমার অংশ হতে অধীর হয়ে আছি।’
আজমেরী হক বাঁধন বলেন, ‘এই সিনেমার নির্মাতা ও সহশিল্পীরা আমার ভীষণ পছন্দের। তানিম নূর যখন এই চরিত্রের কথা বলল, তখন আমার মেয়ে বলেছে, তুমি এটি করো। কারণ আমাকে নাকি সব সময় সিরিয়াস আর অবসাদগ্রস্ত চরিত্রে দেখা যায়। আর হুমায়ূন আহমেদ যে আমার কত পছন্দের, সেটা সবাই জানে। অনেক বছর পর তাঁর গল্পে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। এটা আমার কাছে বিশেষ কিছু।’
জাকিয়া বারী মম বলেন, ‘বনলতা এক্সপ্রেসে উঠে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, এর ড্রাইভার তানিম নূর। এ ছাড়া যাত্রাপথে সহযাত্রীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমার সহযাত্রীরা সবাই দুর্দান্ত। আশা করি দারুণ একটি যাত্রা হবে আমাদের।’

বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছ থেকে দেবব্রত বিশ্বাস হয়েছিলেন বৈষম্যের শিকার। অথচ রবীন্দ্রসংগীতকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য তিনজনের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
২২ আগস্ট ২০২১
২০২৩ সালে আরটিভি ইয়াং স্টার প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন গীতিকার কবির বকুল, সুরকার ইমন সাহা ও কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। বিচারকের আসনে বসে তাঁরা বলেছিলেন প্রতিযোগিতার শীর্ষ শিল্পীদের সুযোগ করে দিতে কাজ করবেন, তাদের নিয়ে গান বানাবেন।
৫ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম বানিয়েছেন ‘দেলুপি’। যেখানে রাজনীতি আছে, ভালোবাসা আছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে, যাত্রাশিল্পীদের সংগ্রাম আছে; আর আছে জীবন বদলানোর গল্প।
৫ ঘণ্টা আগে
‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’–এর অংশ হিসেবে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি এখন ভারতে। গতকাল শনিবার এসেছিলেন কলকাতায়। অংশ নেন একটি বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে। এ সময় কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভার্চুয়ালি উন্মোচন করা হয়েছে মেসির বিশাল ৭০ ফুট উচ্চতার মূর্তি।
৫ ঘণ্টা আগেবিজয় দিবসের আয়োজন
বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

২০২৩ সালে আরটিভি ইয়াং স্টার প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন গীতিকার কবির বকুল, সুরকার ইমন সাহা ও কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। বিচারকের আসনে বসে তাঁরা বলেছিলেন প্রতিযোগিতার শীর্ষ শিল্পীদের সুযোগ করে দিতে কাজ করবেন, তাদের নিয়ে গান বানাবেন। কথামতো সেই প্রতিযোগিতার শীর্ষ দশের ছয় প্রতিযোগীকে নিয়ে গান বানালেন তাঁরা। বিজয় দিবস উপলক্ষে তৈরি গানটি আজ বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে লিজার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হবে। ‘আমরা সবাই বাংলাদেশ’ শিরোনামের গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন লিজা এবং ইয়াং স্টার ২০২৩-এর জাহিদ অন্তু, অনিক, অরিন্দল, আদিবা, অঙ্কিতা ও দীপান্বিতা। সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন ইমন সাহা। ‘আমার মুখে বাংলাদেশ, আমার বুকে বাংলাদেশ, সুখে দুঃখে আমার বাংলাদেশ... আমরা সবাই বাংলাদেশ’—এমন কথায় গানটি লিখেছেন কবির বকুল।
আমরা সবাই বাংলাদেশ গানটির সার্বিক আয়োজন ও প্রযোজনা করেছেন লিজা। গানের ভিডিও নির্দেশনা দিয়েছেন রাজ বিশ্বাস শংকর। শুটিং হয়েছে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি উদ্যান, শিখা চিরন্তনসহ বিভিন্ন লোকেশনে।
কবির বকুল বলেন, ‘মূলত গানটির উদ্যোক্তা কণ্ঠশিল্পী লিজা। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি সুন্দর একটি দেশের গান উপহার দেওয়ার। এই সুন্দর দেশটার সঙ্গে প্রতিটি মানুষের যে আত্মিক টান, আবেগমাখা সম্পর্ক, দেশের প্রতি আমাদের যে ভালোবাসা—তা-ই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি গানের কথায়।’
সুরকার ইমন সাহা বলেন, ‘প্রতিযোগিতার সময় থেকেই আমাদের ইচ্ছা ছিল নতুনদের নিয়ে গান করার। সেই ইচ্ছার প্রতিফলন এই গান। সবাই মিলে একটি সুন্দর দেশের গান উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস গানটি ভালো লাগবে সবার।’
কণ্ঠশিল্পী লিজা বলেন, ‘আমি নিজেও রিয়েলিটি শো থেকে এসেছি। শো শেষে আমাদের বাকি জার্নিটা কিন্তু সলো হয়, দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ থাকে না। নিজের জীবন থেকেই উপলব্ধি করেছি, শুধু নতুন শিল্পী খুঁজে বের করলেই হবে না, তাঁদের প্রপার গাইড করতে হবে। তাঁদের পাশে থাকতে হবে। তাই বিচারকের আসনে থাকার সময়ই বলেছিলাম, নতুনদের জন্য কাজ করব, শুধু কাভার সং নয়, প্রতিটি নতুন শিল্পীর মৌলিক গান হওয়া প্রয়োজন। তাই ইয়াং স্টারদের নিয়ে আমাদের এই দেশের গান। চেষ্টা করেছি একটি সুন্দর গান উপহার দিতে। আমরা চাই গানটি সব শ্রোতার কাছে পৌঁছে যাক, তাই আমার চ্যানেল থেকে প্রকাশ করা হলেও, কোনো ধরনের কপিরাইট রেসট্রিকশন রাখছি না। যে কেউ চাইলে যেকোনো চ্যানেলে গানটি প্রকাশ করতে পারবেন।’

২০২৩ সালে আরটিভি ইয়াং স্টার প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন গীতিকার কবির বকুল, সুরকার ইমন সাহা ও কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। বিচারকের আসনে বসে তাঁরা বলেছিলেন প্রতিযোগিতার শীর্ষ শিল্পীদের সুযোগ করে দিতে কাজ করবেন, তাদের নিয়ে গান বানাবেন। কথামতো সেই প্রতিযোগিতার শীর্ষ দশের ছয় প্রতিযোগীকে নিয়ে গান বানালেন তাঁরা। বিজয় দিবস উপলক্ষে তৈরি গানটি আজ বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে লিজার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হবে। ‘আমরা সবাই বাংলাদেশ’ শিরোনামের গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন লিজা এবং ইয়াং স্টার ২০২৩-এর জাহিদ অন্তু, অনিক, অরিন্দল, আদিবা, অঙ্কিতা ও দীপান্বিতা। সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন ইমন সাহা। ‘আমার মুখে বাংলাদেশ, আমার বুকে বাংলাদেশ, সুখে দুঃখে আমার বাংলাদেশ... আমরা সবাই বাংলাদেশ’—এমন কথায় গানটি লিখেছেন কবির বকুল।
আমরা সবাই বাংলাদেশ গানটির সার্বিক আয়োজন ও প্রযোজনা করেছেন লিজা। গানের ভিডিও নির্দেশনা দিয়েছেন রাজ বিশ্বাস শংকর। শুটিং হয়েছে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি উদ্যান, শিখা চিরন্তনসহ বিভিন্ন লোকেশনে।
কবির বকুল বলেন, ‘মূলত গানটির উদ্যোক্তা কণ্ঠশিল্পী লিজা। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি সুন্দর একটি দেশের গান উপহার দেওয়ার। এই সুন্দর দেশটার সঙ্গে প্রতিটি মানুষের যে আত্মিক টান, আবেগমাখা সম্পর্ক, দেশের প্রতি আমাদের যে ভালোবাসা—তা-ই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি গানের কথায়।’
সুরকার ইমন সাহা বলেন, ‘প্রতিযোগিতার সময় থেকেই আমাদের ইচ্ছা ছিল নতুনদের নিয়ে গান করার। সেই ইচ্ছার প্রতিফলন এই গান। সবাই মিলে একটি সুন্দর দেশের গান উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস গানটি ভালো লাগবে সবার।’
কণ্ঠশিল্পী লিজা বলেন, ‘আমি নিজেও রিয়েলিটি শো থেকে এসেছি। শো শেষে আমাদের বাকি জার্নিটা কিন্তু সলো হয়, দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ থাকে না। নিজের জীবন থেকেই উপলব্ধি করেছি, শুধু নতুন শিল্পী খুঁজে বের করলেই হবে না, তাঁদের প্রপার গাইড করতে হবে। তাঁদের পাশে থাকতে হবে। তাই বিচারকের আসনে থাকার সময়ই বলেছিলাম, নতুনদের জন্য কাজ করব, শুধু কাভার সং নয়, প্রতিটি নতুন শিল্পীর মৌলিক গান হওয়া প্রয়োজন। তাই ইয়াং স্টারদের নিয়ে আমাদের এই দেশের গান। চেষ্টা করেছি একটি সুন্দর গান উপহার দিতে। আমরা চাই গানটি সব শ্রোতার কাছে পৌঁছে যাক, তাই আমার চ্যানেল থেকে প্রকাশ করা হলেও, কোনো ধরনের কপিরাইট রেসট্রিকশন রাখছি না। যে কেউ চাইলে যেকোনো চ্যানেলে গানটি প্রকাশ করতে পারবেন।’

বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছ থেকে দেবব্রত বিশ্বাস হয়েছিলেন বৈষম্যের শিকার। অথচ রবীন্দ্রসংগীতকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য তিনজনের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
২২ আগস্ট ২০২১
চার্লস ডিকেন্সের ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ অবলম্বনে তানিম নূর বানিয়েছিলেন ‘উৎসব’। এবার হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করছেন তিনি। নাম ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। আগেই জানা গিয়েছিল, এতে অভিনয় করবেন মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ ও সাবিলা নূর।
৫ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম বানিয়েছেন ‘দেলুপি’। যেখানে রাজনীতি আছে, ভালোবাসা আছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে, যাত্রাশিল্পীদের সংগ্রাম আছে; আর আছে জীবন বদলানোর গল্প।
৫ ঘণ্টা আগে
‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’–এর অংশ হিসেবে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি এখন ভারতে। গতকাল শনিবার এসেছিলেন কলকাতায়। অংশ নেন একটি বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে। এ সময় কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভার্চুয়ালি উন্মোচন করা হয়েছে মেসির বিশাল ৭০ ফুট উচ্চতার মূর্তি।
৫ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম বানিয়েছেন ‘দেলুপি’। যেখানে রাজনীতি আছে, ভালোবাসা আছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে, যাত্রাশিল্পীদের সংগ্রাম আছে; আর আছে জীবন বদলানোর গল্প। এটি নির্মাতার প্রথম সিনেমা। গত ৭ নভেম্বর খুলনায় মুক্তি পেয়েছিল দেলুপি। পরের সপ্তাহে দেশব্যাপী মুক্তি পায়। প্রথম সিনেমাতেই প্রশংসা পাচ্ছেন তাওকীর। এখনো সিনেমাটি চলছে প্রেক্ষাগৃহে। এর মধ্যে জানা গেল নেদারল্যান্ডসের ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামে জায়গা করে নিয়েছে দেলুপি। এই উৎসবে আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হবে সিনেমাটির।
আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। যেখানে বিশ্বের সেরা নির্মাতা, উদীয়মান প্রতিভা ও আর্টহাউস সিনেমার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। উৎসবের ‘ব্রাইট ফিউচার’ বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেলুপি। এই বিভাগে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বানানো প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমা নির্বাচিত হয়।
রটারড্যামে দেলুপির যাত্রা নিয়ে উচ্ছ্বসিত পুরো টিম। পরিচালক তাওকীর বলেন, ‘রটারড্যাম থেকে আমরা যখন প্রথম মেইল পেয়ে জানতে পারি, তারা সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার করতে চায়। সে সময় একটু বিপাকেই পড়ে গিয়েছিলাম। কেননা আমরা সিনেমা বানানোর সময় দেলুটি ইউনিয়নের মানুষদের কথা দিয়েছিলাম, সিনেমাটা প্রথমে তাঁদের দেখাব। আমাদের এই ইচ্ছা ফেস্টিভ্যালের অর্গানাইজারদের জানিয়েছিলাম। তারা ইতিবাচক সাড়া দেয়। আমরা সিনেমাটি আগে খুলনায় রিলিজ দিই। এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের দর্শকেরা দেলুপি দেখতে পারবেন। তাই আমরা আনন্দিত।’
দেলুপি সিনেমায় যাঁরা অভিনয় করেছেন, তাঁরা সবাই খুলনার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা। অভিনয় করেছেন চিরনজিৎ বিশ্বাস, অদিতি রায়, রুদ্র রায়, মো. জাকির হোসেনসহ অনেকে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফুটপ্রিন্ট ফিল্ম প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম বানিয়েছেন ‘দেলুপি’। যেখানে রাজনীতি আছে, ভালোবাসা আছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে, যাত্রাশিল্পীদের সংগ্রাম আছে; আর আছে জীবন বদলানোর গল্প। এটি নির্মাতার প্রথম সিনেমা। গত ৭ নভেম্বর খুলনায় মুক্তি পেয়েছিল দেলুপি। পরের সপ্তাহে দেশব্যাপী মুক্তি পায়। প্রথম সিনেমাতেই প্রশংসা পাচ্ছেন তাওকীর। এখনো সিনেমাটি চলছে প্রেক্ষাগৃহে। এর মধ্যে জানা গেল নেদারল্যান্ডসের ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামে জায়গা করে নিয়েছে দেলুপি। এই উৎসবে আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হবে সিনেমাটির।
আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। যেখানে বিশ্বের সেরা নির্মাতা, উদীয়মান প্রতিভা ও আর্টহাউস সিনেমার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। উৎসবের ‘ব্রাইট ফিউচার’ বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেলুপি। এই বিভাগে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বানানো প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমা নির্বাচিত হয়।
রটারড্যামে দেলুপির যাত্রা নিয়ে উচ্ছ্বসিত পুরো টিম। পরিচালক তাওকীর বলেন, ‘রটারড্যাম থেকে আমরা যখন প্রথম মেইল পেয়ে জানতে পারি, তারা সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার করতে চায়। সে সময় একটু বিপাকেই পড়ে গিয়েছিলাম। কেননা আমরা সিনেমা বানানোর সময় দেলুটি ইউনিয়নের মানুষদের কথা দিয়েছিলাম, সিনেমাটা প্রথমে তাঁদের দেখাব। আমাদের এই ইচ্ছা ফেস্টিভ্যালের অর্গানাইজারদের জানিয়েছিলাম। তারা ইতিবাচক সাড়া দেয়। আমরা সিনেমাটি আগে খুলনায় রিলিজ দিই। এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের দর্শকেরা দেলুপি দেখতে পারবেন। তাই আমরা আনন্দিত।’
দেলুপি সিনেমায় যাঁরা অভিনয় করেছেন, তাঁরা সবাই খুলনার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা। অভিনয় করেছেন চিরনজিৎ বিশ্বাস, অদিতি রায়, রুদ্র রায়, মো. জাকির হোসেনসহ অনেকে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফুটপ্রিন্ট ফিল্ম প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।

বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছ থেকে দেবব্রত বিশ্বাস হয়েছিলেন বৈষম্যের শিকার। অথচ রবীন্দ্রসংগীতকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য তিনজনের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
২২ আগস্ট ২০২১
চার্লস ডিকেন্সের ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ অবলম্বনে তানিম নূর বানিয়েছিলেন ‘উৎসব’। এবার হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করছেন তিনি। নাম ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। আগেই জানা গিয়েছিল, এতে অভিনয় করবেন মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ ও সাবিলা নূর।
৫ ঘণ্টা আগে
২০২৩ সালে আরটিভি ইয়াং স্টার প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন গীতিকার কবির বকুল, সুরকার ইমন সাহা ও কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। বিচারকের আসনে বসে তাঁরা বলেছিলেন প্রতিযোগিতার শীর্ষ শিল্পীদের সুযোগ করে দিতে কাজ করবেন, তাদের নিয়ে গান বানাবেন।
৫ ঘণ্টা আগে
‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’–এর অংশ হিসেবে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি এখন ভারতে। গতকাল শনিবার এসেছিলেন কলকাতায়। অংশ নেন একটি বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে। এ সময় কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভার্চুয়ালি উন্মোচন করা হয়েছে মেসির বিশাল ৭০ ফুট উচ্চতার মূর্তি।
৫ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’–এর অংশ হিসেবে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি এখন ভারতে। গতকাল শনিবার এসেছিলেন কলকাতায়। অংশ নেন একটি বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে। এ সময় কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভার্চুয়ালি উন্মোচন করা হয়েছে মেসির বিশাল ৭০ ফুট উচ্চতার মূর্তি। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান।
মেসির সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসবেন, এ কথা নিজেই জানিয়েছিলেন বলিউড কিং শাহরুখ খান। কথামতোই মেসির সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসেন অভিনেতা। এ সময় শাহরুখের সঙ্গে ছিল তাঁর ছোট ছেলে আব্রাম খান। সংবাদ সংস্থা পিটিআই প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, মেসির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন শাহরুখ ও আব্রাম। ফুটবল তারকার সঙ্গে আব্রামের সহজ-স্বাভাবিক মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শাহরুখ প্রথমে করমর্দন করেন উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ ও আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার রদ্রিগো দি পলের সঙ্গে। এরপর এগিয়ে যান মেসির দিকে। দুজন হাত মেলান, কথা বলেন, ছবি তোলেন। সেই সময় মেসি আলাদাভাবে ছবি তোলেন আব্রামের সঙ্গেও।
মেসির সঙ্গে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছিলেন শাহরুখ। কিন্তু তেমনটা আর হয়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী হোটেলে অনুষ্ঠান শেষ করে স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টার দিকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পৌঁছান মেসি। মিনিট ১৫ ছিলেন মাঠে। এর পরই বেরিয়ে যান মাঠ ছেড়ে। মেসিকে দেখতে না পাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভক্তরা। চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় মাঠজুড়ে। খবর যায় শাহরুখের কাছেও। তাই যুবভারতীতে না গিয়ে শাহরুখ রওনা দেন বিমানবন্দরের দিকে।
জানা গেছে, অব্যবস্থাপনায় আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে যুবভারতী স্টেডিয়াম রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। এই ঘটনায় মেসির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’–এর অংশ হিসেবে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি এখন ভারতে। গতকাল শনিবার এসেছিলেন কলকাতায়। অংশ নেন একটি বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে। এ সময় কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভার্চুয়ালি উন্মোচন করা হয়েছে মেসির বিশাল ৭০ ফুট উচ্চতার মূর্তি। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান।
মেসির সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসবেন, এ কথা নিজেই জানিয়েছিলেন বলিউড কিং শাহরুখ খান। কথামতোই মেসির সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসেন অভিনেতা। এ সময় শাহরুখের সঙ্গে ছিল তাঁর ছোট ছেলে আব্রাম খান। সংবাদ সংস্থা পিটিআই প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, মেসির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন শাহরুখ ও আব্রাম। ফুটবল তারকার সঙ্গে আব্রামের সহজ-স্বাভাবিক মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শাহরুখ প্রথমে করমর্দন করেন উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ ও আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার রদ্রিগো দি পলের সঙ্গে। এরপর এগিয়ে যান মেসির দিকে। দুজন হাত মেলান, কথা বলেন, ছবি তোলেন। সেই সময় মেসি আলাদাভাবে ছবি তোলেন আব্রামের সঙ্গেও।
মেসির সঙ্গে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছিলেন শাহরুখ। কিন্তু তেমনটা আর হয়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী হোটেলে অনুষ্ঠান শেষ করে স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টার দিকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পৌঁছান মেসি। মিনিট ১৫ ছিলেন মাঠে। এর পরই বেরিয়ে যান মাঠ ছেড়ে। মেসিকে দেখতে না পাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভক্তরা। চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় মাঠজুড়ে। খবর যায় শাহরুখের কাছেও। তাই যুবভারতীতে না গিয়ে শাহরুখ রওনা দেন বিমানবন্দরের দিকে।
জানা গেছে, অব্যবস্থাপনায় আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে যুবভারতী স্টেডিয়াম রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। এই ঘটনায় মেসির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের কাছ থেকে দেবব্রত বিশ্বাস হয়েছিলেন বৈষম্যের শিকার। অথচ রবীন্দ্রসংগীতকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য তিনজনের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
২২ আগস্ট ২০২১
চার্লস ডিকেন্সের ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ অবলম্বনে তানিম নূর বানিয়েছিলেন ‘উৎসব’। এবার হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করছেন তিনি। নাম ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। আগেই জানা গিয়েছিল, এতে অভিনয় করবেন মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ ও সাবিলা নূর।
৫ ঘণ্টা আগে
২০২৩ সালে আরটিভি ইয়াং স্টার প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন গীতিকার কবির বকুল, সুরকার ইমন সাহা ও কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। বিচারকের আসনে বসে তাঁরা বলেছিলেন প্রতিযোগিতার শীর্ষ শিল্পীদের সুযোগ করে দিতে কাজ করবেন, তাদের নিয়ে গান বানাবেন।
৫ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম বানিয়েছেন ‘দেলুপি’। যেখানে রাজনীতি আছে, ভালোবাসা আছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে, যাত্রাশিল্পীদের সংগ্রাম আছে; আর আছে জীবন বদলানোর গল্প।
৫ ঘণ্টা আগে