Ajker Patrika

অস্কারের ৯৫ বছর: সোনায় মোড়া ট্রফির নামটি যেভাবে এল

আপডেট : ১৬ মে ২০২৪, ১৯: ০৭
অস্কারের ৯৫ বছর: সোনায় মোড়া ট্রফির নামটি যেভাবে এল

১৯২৯ সালের আজকের এই দিনে শুরু হয়েছিল অস্কারের যাত্রা। প্রথমে ছোটখাটো আয়োজন দিয়ে সাজানো থাকলেও এটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র সম্মাননা। প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে অস্কারের আসর বসে। এই আসরে সেরাদের সোনালি রঙের মানব আকৃতি একটি ট্রফি দেওয়া হয়। প্রায় ৩ দশমিক ৬ কেজি ওজনের এই ট্রফির দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৩ ইঞ্চি। গত ৯৫ বছরে মোট ৩ হাজার ১৪০টি ট্রফি বিতরণ করা হয়। 

এখন অস্কার অনুষ্ঠান দেখতে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি দর্শক টিভি সেটের সামনে বসে থাকে। অস্কার পুরস্কার গ্রহণ করা যে কোনো পরিচালক, অভিনয়শিল্পী ও চলচ্চিত্র নির্মাণে যুক্ত সবার জন্য বিশেষ একটি মুহূর্ত। তবে শুরুতেই এই পুরস্কারের নাম অস্কার ছিল না। এই নামকরণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মজার এক গল্প।

একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস পুরস্কারটি চালুর ১০ বছর পর ট্রফির অস্কার নামকরণ হয়।  

ইতিহাস: যেভাবে অস্কার এল 
চলচ্চিত্র বিষয়ক বিজ্ঞান ও শিল্পকলার উন্নয়নের লক্ষে ১৯২৭ সালের ১১ মে একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস গঠন করা হয়। এর গঠনের কিছুদিন পরেই, নতুন সংগঠনটি তাদের লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য লস অ্যাঞ্জেলেসের বিল্টমোর হোটেলের ক্রিস্টাল বলরুমে একটি নৈশভোজের আয়োজন করে। সেই রাতে আলোচিত বিষয়গুলির মধ্যে ছিল কীভাবে অসামান্য চলচ্চিত্র নির্মাণের কৃতিত্বকে সর্বোত্তম সম্মান দেওয়া যায়। সেখানেই সর্বসম্মতিক্রমে বার্ষিক পুরস্কারের প্রস্তাবনা পাশ হয়। 

 ১৯২৯ সালের ১৬ মে হলিউড বুলভার্ডের হোটেল রুজভেল্টে বসে প্রথম অস্কার অনুষ্ঠানের আসর। ছবি: একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস১৯২৯ সালের ১৬ মে হলিউড বুলভার্ডের হোটেল রুজভেল্টে বসে প্রথম অস্কার অনুষ্ঠানের আসর। ১৯২৭ সালের ১ আগস্ট থেকে ১৯২৮ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোকে অস্কারের প্রথম আসরের জন্য বিবেচনা করা হয়। টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয় ৫ ডলার, যেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন ২৭০ জন অতিথি। অনুষ্ঠানটির ব্যাপ্তি ছিল মাত্র ১৫ মিনিট। এটি একমাত্র একাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠান যা রেডিও বা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়নি; ২য় একাডেমি পুরস্কার একটি রেডিও সম্প্রচার করা হয়েছিল।

একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের অস্কার নামকরণ নিয়ে বেশ কিছু গল্প প্রচলিত আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্পটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের গ্রন্থাগারিক মার্গারেট হ্যারিকের নাম। ট্রফির চোখমুখ ও কঠোর-কঠিন ভ্রু-জোড়া দেখে নিজের চাচার সঙ্গে মিল আছে বরে মজা করেন তিনি। ঘটনাচক্রে তার ওই চাচার নাম ছিল অস্কার। সেখান থেকেই ট্রফির নাম আসে বলে জনশ্রুতি।  

চলচ্চিত্র সমালোচক ও সমাজবিজ্ঞানী ইমানুয়েল লেভি তাঁর ‘অল অ্যাবাউট অস্কার: দ্য হিস্ট্রি অ্যান্ড পলিটিকস অব দ্য একাডেমি অ্যাওয়ার্ডস’ বইয়ে উল্লেখ করেন, ঠাট্টাচ্ছলে মার্গারেটের ওই তুলনার পর থেকে একাডেমির কর্মচারীরা মূর্তিটিকে খানিকটা আদর করেই অস্কার বলে ডাকা শুরু করেন। মার্গারেট পরে একাডেমির নির্বাহী পরিচালক হয়েছিলেন। 

ছাপার অক্ষরে প্রথম ‘অস্কার’ শব্দটি ব্যবহার করেন হলিউডের জনপ্রিয় কলামিস্ট সিডনি স্কোলস্কি। ১৯৩৪ সালে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার ক্যাথরিন হেপবার্নের ঝুলিতে যুক্ত হলে স্কোলস্কি তাঁর নিবন্ধে অস্কার শব্দটি ব্যবহার করেন। ১৯৩৯ সালে ‘একাডেমি অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট’ ট্রফির নাম হিসেবে অস্কার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃত পায়। 
 
যেভাবে তৈরি হয় কাঙ্ক্ষিত ট্রফি। ছবি: সংগৃহীত‘একাডেমি অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট’ বা অস্কার ট্রফির নকশা প্রণয়ন এবং তৈরির পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন বিখ্যাত হলিউড স্টুডিও এমজিএমের আর্ট ডিরেক্টর সেড্রিক গিবন্স ও ভাস্কর জর্জ স্ট্যানলি। গিবন্সের করা অস্কার মূর্তিটির একদম মূল নকশায় তলোয়ার হাতে এক নাইটকে ফিল্মের রিলের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সেই রিলের ৫টি স্পোক চলচ্চিত্রের ৫টি ভিন্ন অনুষঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করে। সেগুলো হচ্ছে-অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক, যন্ত্রকর্মী এবং চিত্রনাট্যকার। তলোয়ার দিয়ে এই শিল্পের অগ্রগতি রক্ষার বিষয়টিকে প্রতীকায়িত করা হয়েছে। 

গিবন্সের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মূল নকশায় বেশ কিছুটা পরিবর্তন এনে একে বর্তমান ত্রিমাত্রিক রূপ দেন জর্জ স্ট্যানলি। অনেকের ধারণা, মেক্সিকান চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অভিনেতা এমিলিও ফার্নান্দেজের দেহাবয়বের আদলে মূর্তিটি বানানো। তবে কেউ কেউ তা অস্বীকার করেন। 

আগে সাড়ে ৮ পাউন্ড ওজনের এই মূর্তিটিকে শক্ত ব্রোঞ্জে রূপান্তর করে তার ওপর ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া হত। তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে  পদ্ধতিতে পরিবর্তন এসেছে। এখন ত্রিমাত্রিক প্রিন্টারের সাহায্যে ডিজিটাল অস্কারের ছাঁচ বের করা হয়। ১৬০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে তাপে ব্রোঞ্জ গলিয়ে সেই ছাঁচের সিরামিক শেলের ভেতরে ঢালা হয়। ঠান্ডা হয়ে গেলে সেটাকে শেল থেকে বের করে ইলেকট্রোপ্লেটিংয়ের সাহায্যে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া হয়। 

প্রথম অস্কার গ্রহণ করেছিলেন জার্মান অভিনেতা এমিল জেনিংস। ছবি: একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসবিক্রি করা যায় না ‘অস্কার’
অস্কারের প্রাপকরা তাঁদের ট্রফি বিক্রি করতে পারেন না। ট্রফিটি তাঁরা বাড়ি নিয়ে যাওয়ার আগে, অবশ্যই এটি বিক্রি বা নিষ্পত্তি না করার বিষয়ে সম্মত একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হয়। এটিকে একমাত্র প্রতীকী ১ ডলারে একাডেমিতে ফিরিয়ে দেওয়া যায়।

প্রথম আসরে পুরস্কার পেয়েছিলেন যাঁরা
বর্তমান ২৪টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দিলেও উদ্বোধনী অস্কার অনুষ্ঠানে ১২টি বিভাগ ছিল। এ অনুষ্ঠানের কয়েক মাস আগেই বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। ফলে কোনও চমকই ছিল না! 

প্রথম সেরা ছবির পুরস্কার জিতে উইলিয়াম এ. ওয়েলম্যান পরিচালিত ‘উইংস’। প্রথম অস্কার গ্রহণ করেছিলেন জার্মান অভিনেতা এমিল জেনিংস। দুই নির্বাক ছবি ‘দ্য লাস্ট কমান্ড’ (১৯২৮) ও ‘দ্য ওয়ে অব অল ফ্লেশ’ (১৯২৭) তাকে এনে দেয় সেরা অভিনেতার পুরস্কার। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার গ্রহণ করেন অভিনেত্রী জ্যানেট গেনর। আর সেরা পরিচালকের পুরস্কার গ্রহণ করেন ফ্র্যাঙ্ক বোর্জেজ ও লুইস মাইলস্টোন। চার্লি চ্যাপলিন এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্নার ব্রাদার্সকে সম্মানসূচক পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। 

এবারের অস্কারের লাল গালিচায় এমা স্টোন। ছবি: এএফপিঅস্কার মঞ্চে লাল গালিচা এল যেভাবে
অস্কারে প্রথমে লাল গালিচার প্রচলন ছিল না। ৩১ বছর পর ১৯৬০ সালে প্রথমবার লাল গালিচার ব্যবস্থা রাখা হয়। তার আগে, অংশগ্রহণকারীরা খুব ধুমধাম ছাড়াই কেবল অনুষ্ঠানস্থলে চলে যেতেন। দিনদিন লাল গালিচা প্রবেশদ্বারটি চটকদার দর্শনে রূপান্তরিত হচ্ছে। এখন লাল গালিচাকে কমনীয়তা এবং প্রত্যাশার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, কারণ বিশ্বব্যাপী দর্শকেরা তাদের প্রিয় তারকাদের এক ঝলক দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি কর্মী হত্যা মামলায় ইরেশ যাকেরকে অব্যাহতির সুপারিশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইরেশ যাকের। ছবি: সংগৃহীত
ইরেশ যাকের। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর মিরপুরে গুলিতে বিএনপি কর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলা থেকে অভিনেতা ইরেশ যাকেরকে অব্যাহতির সুপারিশ করে অন্তর্বর্তী তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। ৯ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক সাজ্জাদ রোমন এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।

আজ বৃহস্পতিবার আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ মামলার আরেক আসামি ফোরথর্ট পিআরের (কনসার্ন অব এশিয়াটিক) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকরাম মঈন চৌধুরীকেও অব্যাহতির সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।

অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরেশ জাকের ও ইকরাম মঈন চৌধুরী মামলার ঘটনাস্থল উপস্থিত ছিলেন মর্মে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। ওই দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিতির স্থিরচিত্র বা কোনো ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া তাঁরা মামলার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে মামলার ঘটনা সংঘটিত করেছিল মর্মে কোনো তথ্যবহুল দালিলিক সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি বিধায় তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অপরাধের দায় থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি প্রদান করা যেতে পারে। ভবিষ্যতে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহতের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী গত ২০ এপ্রিল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন। ওই দিন আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে অভিযোগটি মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলা হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়। মামলাটিতে অভিনেতা ইরেশ যাকের ১৫৭ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তাঁর ভাই মাহফুজ আলম শ্রাবণ (২১) বিএনপি কর্মী রেনেটা কোম্পানির কর্মচারী। ঘটনার দিন গত ৫ আগস্ট দুপুরে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের চূড়ান্ত পতনের লক্ষ্যে বেলা আড়াইটার সময় ছাত্র-জনতার মিছিল মিরপুর মডেল থানাধীন মিরপুর শপিং কমপ্লেক্স ও মিরপুর মডেল থানার মধ্যবর্তী রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর ভাই গুলিবিদ্ধ হন। তখন সেখানে উপস্থিত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ ভাইকে চিকিৎসার জন্য রিকশায় করে মিরপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রেক্ষাগৃহে আসছে লোকনাট্য পালা অবলম্বনে ‘বেহুলা দরদী’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘বেহুলা দরদী’ সিনেমার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘বেহুলা দরদী’ সিনেমার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

সিনেমা মুক্তির ধুম পড়েছে ঢাকাই সিনেমায়। গত দুই মাস প্রতি সপ্তাহে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে নতুন সিনেমা। এ মাসের শেষ দিনেও মুক্তির ঘোষণা এল আরেক সিনেমার। ৩১ অক্টোবর সারা দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘বেহুলা দরদী’। টাঙ্গাইল অঞ্চলের লোকজ সংস্কৃতি ও বেহুলা নাচারি গীতিনাট্যকে কেন্দ্র করে সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন সবুজ খান। উৎসব অরিজিনালসের ব্যানারে সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন জাহিদুল ইসলাম।

টাঙ্গাইলসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় একসময় বেহুলা ও লখিন্দরের কাহিনিকে কেন্দ্র করে গীতিনাট্য বেহুলা নাচারি পালা প্রদর্শিত হতো। এমন একটি দলের সদস্যদের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমার কাহিনি। গল্পে দেখা যাবে, নাগবাড়ি বেহুলা নাচারি দলের প্রধান ভোলা মিয়া তাদের নাচারি গানের দলটিকে টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। কয়েকবার ইউনিয়নভিত্তিক প্রতিযোগিতায় হেরে দলটির সম্মান প্রায় তলানিতে। এই অবস্থায় দলটিকে প্রতিযোগিতায় জেতাতে চলে নানা চেষ্টা।

দলের প্রধান ভোলা মিয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু। আরও আছেন প্রাণ রায়, সূচনা সিকদার, আজিজুন মীম, আশরাফুল আশীষ, আফফান মিতুল, সানজিদা মিলা প্রমুখ। পুরো সিনেমার শুটিং হয়েছে টাঙ্গাইলে।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান উৎসব অরজিনালসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘একটি দেশের সব সিনেমাই দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে না। কিছু সিনেমা শুধুই বিনোদন, দর্শক চাহিদা আর বাণিজ্যিক বিষয়টি মাথায় রেখে বানানো হয়। আবার কিছু সিনেমা তৈরি হয় দেশের মাটি, সংস্কৃতি ও মানুষের জীবনযাত্রাকে আমলে নিয়ে। সে ক্ষেত্রে নির্মাতার দর্শন ও ভাবধারা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বেহুলা দরদী তেমনই একটি সিনেমা, যার পরতে পরতে মাটির ঘ্রাণ পাওয়া যাবে। আর পাওয়া যাবে এ দেশের মানুষের যাপিত জীবনের সন্ধান!’

নির্মাতা সবুজ খান বলেন, ‘বিলুপ্তপ্রায় এক সংস্কৃতিকে নতুনভাবে দর্শকের সামনে তুলে ধরাই এই সিনেমার মূল লক্ষ্য। আশা করছি দর্শকের ভালো লাগবে।’

ফজলুর রহমান বাবু বলেন, বেহুলা দরদী টাঙ্গাইল অঞ্চলের লোকজ সংস্কৃতির গল্পে নির্মিত একটি সিনেমা। সবুজ খানের পরিচালনায় দারুণ একটি কাজ হয়েছে। সব থেকে বড় কথা, আমরা কাজটি করেছি একটি দায়বদ্ধতা থেকে। কারণ আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতি বিশ্বদরবারে তুলে ধরাটা সত্যি আনন্দের।’

বেহুলা দরদী সিনেমার জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন মোশাররফ করিম, যাহের আলভীসহ অনেক অভিনয়শিল্পী। মোশাররফ করিম বলেন, ‘ভাসান গানের একটি দলের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বেহুলা দরদী। পরিচালনা করেছেন সবুজ খান। গল্পটি শুনেই আমি আনন্দিত, কারণ এটি আমাদের লোকজ সংস্কৃতির গল্প, আমাদের মাটির গল্প। সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি সিনেমাটি দেখার জন্য। আপনাদের অংশগ্রহণ আমাদের চলচ্চিত্রকে বেগবান করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বজুড়ে বাংলা গানের প্রসারে গীতিকার সুজনের উদ্যোগ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বিশ্বজুড়ে বাংলা গানের প্রসারে গীতিকার সুজনের উদ্যোগ

গানের প্রতি এনামুল কবীর সুজনের ভালোবাসা ছেলেবেলা থেকে। বন্ধুদের সঙ্গে গাইতেন, তবে গাওয়ার চেয়ে লেখাতেই মন টানত বেশি। গানের খাতা কিংবা ডায়েরির পাতাগুলো ভরিয়ে তুলতেন নিজের লেখা গান আর কবিতায়। প্রায় দেড় দশকের বেশি হতে চলল পেশাদার গীতিকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন সুজন। দেড় দশক আগে বাসুদেব বসুর সুরে সুজনের লেখা গান কণ্ঠে তুলেছেন সাবিনা ইয়াসমীন ও জেমস। সেই থেকে দেশ-বিদেশের অনেক শিল্পী গেয়েছেন এনামুল কবীর সুজনের লেখা গান।

বাংলা গানের প্রসারে নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন সুজন। দোতারা মিউজিক নামে গড়ে তুলেছেন গানের একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের বাংলাভাষী শিল্পীদের গান প্রকাশ করবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের গান নিয়ে কাজ শুরু করেছে প্ল্যাটফর্মটি। সুজন এখন কাজ করছেন প্রবাসী শিল্পীদের গান নিয়ে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পীদের সঙ্গে কথা এগিয়েছেন। এই তালিকায় আরও রয়েছে কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কিছু দেশ।

এ ছাড়া রূপকথা প্রোডাকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে সুজনের। এর ব্যানারে নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। বাংলা গানের প্রসারের কথা মাথায় রেখে এবার তিনি মন দিয়েছেন বিদেশের মাটিতে বাংলা গানের কনসার্ট আয়োজনে। এরই মধ্যে আসিফ আকবর ও আতিয়া আনিসাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজন করেছেন একাধিক কনসার্ট। বাংলাদেশের অন্য শিল্পীদের নিয়েও বিদেশে কনসার্ট করতে চান সুজন।

সুজন বলেন, ‘বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে বাংলা গানের প্রসারে নিরলস কাজ করার চেষ্টা করছি। আমাদের সমৃদ্ধ গানের ভান্ডার রয়েছে, রয়েছে মেধাবী শিল্পী। কিন্তু সময়োপযোগী উদ্যোগের অভাবে পিছিয়ে পড়ছি আমরা। সেই প্রাচীরটা ভাঙতে চাই আমি।’

এনামুল কবীর সুজনের লেখা উল্লেখযোগ্য কিছু গান কবীর সুমনের গাওয়া ‘জীবন’, নচিকেতার গাওয়া ‘শান্তি আসুক ফিরে’, আসিফ আকবরের ‘কিছু কিছু কথা’, রথীন্দ্রনাথ রায়ের ‘ভুল পথ’, আঁখি আলমগীরের ‘প্রাণের সুজন’, রেহান রসুলের ‘নীল দেয়াল’, কৃষ্ণকলির ‘একটা গন্ধ জড়ায় থাকে’, স্বরলিপির ‘একুশের গান’ ইত্যাদি। এ ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে খালিদ (চাইম), রথীন্দ্রনাথ রায়, আসিফ আকবর, পান্থ কানাই, কৃষ্ণকলি, মাহাদি, রাজীব, সন্দীপন, আঁখি আলমগীর, সালমা, কোনাল, কর্নিয়া, কিশোর, অবন্তি সিঁথি, ঐশীসহ জনপ্রিয় অনেক শিল্পীর কণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছিল সুজনের লেখা ‘বাংলাদেশ আমার’ গানটি। সুজন জানিয়েছেন, এটা এমন একটি গান যা কোনো দেশের চলতি ও সাধু ভাষায়, সব আঞ্চলিক ভাষায়, নৃতাত্ত্বিক ভাষায় এবং ইংরেজি ও সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে প্রকাশিত হয়েছে। এমন ঘটনা পৃথিবীতে বিরল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কারও সঙ্গেই সম্পর্কে নেই, বললেন ববি

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ২৪
ববি। ছবি: সংগৃহীত
ববি। ছবি: সংগৃহীত

তিন বছর আগে চিত্রনায়িকা ববির জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের সম্পর্কের কথা জানিয়েছিলেন প্রযোজক সাকিব সনেট। সে সময় প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছিলেন নায়িকা নিজেও। জানিয়েছিলেন, তাঁরা একটি সুন্দর সম্পর্কের মধ্যে আছেন। যেটা শুরু হয়েছিল ‘নোলক’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়। এরপর নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে আর কোনো কথা বলেননি তাঁরা। অনেক দিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, ভেঙে গেছে ববি ও সনেটের প্রেম। অবশেষে সনেটের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন ববি। আজকের পত্রিকাকে জানালেন, এখন কারও সঙ্গে সম্পর্কে নেই তিনি।

সাকিব সনেটের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানতে চাইলে প্রথমে কিছুটা এড়িয়ে যেতে চাইলেন ববি। বললেন, ‘এটা অনেক আগের ঘটনা। নোলক সিনেমার সময়ের কথা। তখন আমি কিছু বলেছি কি না সেটাও আমার মনে নেই।’

কারও সঙ্গে এখন সম্পর্কে আছেন কি না জানতে চাইলে, ববির স্পষ্ট উত্তর ‘না’। এরপর ববি বলেন, ‘এখন আমি কাজ নিয়ে ব্যস্ত। হ্যাঁ, একটা কিছু তো অবশ্যই ছিল। যেটা এখন নেই। তবে আমাদের যে বন্ধুত্বটা ছিল, সেটা এখনো আছে। এর বাইরে এ নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য করার নেই।’

সাকিব সনেটের পর মির্জা আবুল বাশার মামুন নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন ববি—এমন গুঞ্জনও আছে। এমনকি কয়েক দিন আগে এক ব্যবসায়ীর করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের হাতে মামুন আটক হওয়ার পর নিউজে তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় ববির ‘কথিত স্বামী’ হিসেবে।

আসলেই কি আবুল বাশারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে ববির? জানতে চাইলে ববি বলেন, ‘এ ধরনের খবর নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। কারণ, খবরটি পুরোপুরি মিথ্যা। আমি যদি এটা নিয়ে কথা বলি তাহলে ওরা হাইলাইট হবে, যেটা আমি চাই না। ওদের একটা ঝামেলায় আমার নাম ব্যবহার করে নিউজ করা হয়েছে শুধু টিআরপি বাড়ানোর জন্য। ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমার রেস্টুরেন্ট ব্যবসা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এর বাইরে আর কিছুই না। কিন্তু এ নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি করলে আমি আইনের শরণাপন্ন হব।’

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেছেন ববি। যাওয়ার আগে শুটিং করেছিলেন কে এ নিলয় পরিচালিত ‘বউ’ ও অনিক বিশ্বাসের ‘শিরোনাম’ সিনেমার। অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে ববি এখন ব্যস্ত বদিউল আলম খোকনের ‘তছনছ’ সিনেমার শুটিংয়ে। এই সিনেমায় তাঁর সহশিল্পী মুন্না খান। সিনেমাটির প্রযোজকও মুন্না খান। আরও অভিনয় করছেন মিশা সওদাগর, দীপা খন্দকার, জয়রাজ প্রমুখ।

ববি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেই তছনছ সিনেমার শুটিং শুরু করেছি। বিশাল আয়োজনে শুটিং হচ্ছে। আশা করছি ভালো একটি সিনেমা উপহার দিতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত