Ajker Patrika

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব: বিধি ভেঙে জুরিবোর্ড, আয়োজকের হাতে পুরস্কার

নাজমুল হক নাঈম, ঢাকা
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব: বিধি ভেঙে জুরিবোর্ড, আয়োজকের হাতে পুরস্কার

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২২তম আসর হয়ে গেল গত ২০ থেকে ২৮ জানুয়ারি। অন্যবারের তুলনায় এবারের উৎসব ছিল বেশ জাঁকজমকপূর্ণ। শর্মিলা ঠাকুর, মাজিদ মাজিদি, অঞ্জন দত্ত, মমতা শঙ্কর, স্বস্তিকা মুখার্জির মতো গুণীজন এসেছিলেন এবার। এ ছাড়া এবারের উল্লেখযোগ্য সংযোজন ছিল তিনটি মাস্টার ক্লাস। এত সাফল্যের মাঝেও শেষ পর্যন্ত ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার ও জুরিবোর্ড নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এবারের উৎসবে ফিপ্রেসির বিধিমালা ভেঙে জুরি কমিটি গঠন ও উৎসব আয়োজক কমিটির এক সদস্যের পুরস্কারপ্রাপ্তি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

প্রশ্নবিদ্ধ ফিপ্রেসি পুরস্কার
চলচ্চিত্র সমালোচকদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফিল্ম ক্রিটিকস, যা ফিপ্রেসি নামে পরিচিত। বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে নতুন চলচ্চিত্রকারদের পুরস্কার দিয়ে থাকে সংগঠনটি। ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য বাংলাদেশ প্যানোরামা থেকে দুটি বিভাগে পুরস্কার দেয় তারা। ফিপ্রেসি পুরস্কারের প্রধান উদ্দেশ্য চলচ্চিত্রশিল্পের প্রচারের পাশাপাশি তরুণ নির্মাতাদের উৎসাহিত করা।

এবারের আসরে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা বিভাগে ফিপ্রেসি পুরস্কার জিতেছে ‘লায়লা’। এ সিনেমার নির্মাতা বৈশাখী সমাদ্দার ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজক সংস্থা রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজক কমিটিরও নির্বাহী সদস্য তিনি। আয়োজক ও উৎসব কমিটির একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের এই পুরস্কারপ্রাপ্তি ফিপ্রেসির উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। হতাশ করেছে তরুণ নির্মাতাদের।

বৈশাখী সমাদ্দার। ছবি: সংগৃহীতপুরস্কার পাওয়া ‘লায়লা’ সিনেমার নির্মাতা বৈশাখী সমাদ্দার বলেন, ‘সবার মতো যথাযথ প্রক্রিয়া মেনেই আমি সিনেমাটি জমা দিয়েছি। এখানে কোনো স্বজনপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্ব হয়নি, মেধার জোরেই সিনেমাটি পুরস্কার পেয়েছে। আর উৎসব কমিটির সদস্য হিসেবে বলতে চাই, সামনে থেকে আমাদের কোনো চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা বিভাগে জমা হবে না।’

ফিপ্রেসির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ প্যানোরামা বিভাগের অন্যতম বিচারক ছিলেন মফিদুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা যে সিনেমাগুলো পেয়েছি, সেখান থেকে স্বাধীনভাবে বিচার করেছি। উৎসবসংশ্লিষ্ট কারও পুরস্কার অর্জনের প্রশ্ন উঠলে, সে বিষয়ে ফেস্টিভ্যাল ডিরেক্টর ভালো বলতে পারবেন।’

জুরি কমিটি নিয়ে বিতর্ক
ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি কমিটি গঠনেও ভাঙা হয়েছে ফিপ্রেসির বিধিমালা। ফিপ্রেসি পুরস্কারের বিধিমালার ১০ নম্বর ধারায় বলা আছে, ‘জুরি সদস্যদের ফিপ্রেসি পুরস্কারের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রযোজনা, বিতরণ কিংবা পৃষ্ঠপোষকতায় যুক্ত থাকা যাবে না। সংশ্লিষ্ট উৎসবের সঙ্গে শিল্পগতভাবে বা আর্থিকভাবে কোনো প্রকারের সম্পর্ক থাকতে পারবে না।’

মফিদুল হক। ছবি: সংগৃহীতঅথচ বাংলাদেশ প্যানোরামা বিভাগের তিনজন জুরি সদস্যের একজন ছিলেন মফিদুল হক, যিনি এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের একজন নির্বাহী সদস্য ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির উপদেষ্টা। সে হিসেবে জুরি কমিটিতে তাঁর অন্তর্ভুক্তি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তবে জুরি সদস্যরা এই দায় চাপাচ্ছেন ফিপ্রেসির ওপর। তাঁদের ভাষ্য, ‘ফিপ্রেসির অনুমতি নিয়েই এই জুরি কমিটি করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে মফিদুল হক বলেন, ‘ফিপ্রেসির নিয়ম অনুযায়ী হয়তো আমি জুরি সদস্য হতে পারি না। কিন্তু হেডকোয়ার্টার থেকেই আমাদের জুরি কমিটি নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তা ছাড়া, কোনো কিছুর ব্যত্যয় ঘটলে সে বিষয়ে ফেস্টিভ্যাল ডিরেক্টর বলতে পারবেন।’

নীতিনির্ধারক ও আয়োজকদের বক্তব্য
এ বিষয়ে জানতে কথা হয় উৎসবের আয়োজক রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামালের সঙ্গে। জুরি কমিটি গড়ার দায়ভার তিনি চাপিয়েছেন ফিপ্রেসির ওপর। তাঁর ভাষ্য, ‘এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। ফিপ্রেসি প্রেসিডেন্ট এই জুরি কমিটি তৈরি করেছেন। আমরা সে অনুযায়ী দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি।’

আহমেদ মুজতবা জামাল। ছবি: সংগৃহীতআয়োজক ও উৎসব কমিটির সদস্য বৈশাখী সমাদ্দারের পুরস্কারপ্রাপ্তির বিষয়ে আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, ‘যিনি পুরস্কারটি পেয়েছেন, তিনি ফিল্মের স্টুডেন্ট, তিনি অভিনয়ও করেন। তবে এখানে প্রশ্ন আসতে পারে, উৎসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ পুরস্কার পেতে পারে কি না। বিশ্বাস করুন, এখানে যা ঘটেছে সবই কাকতালীয়। বিচারকদের ভোট পেয়েই তিনি পুরস্কার পেয়েছেন। এখানে আমাদের কোনো হস্তক্ষেপ হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে যেহেতু প্রশ্ন উঠেছে, আমরা ভবিষ্যতে সতর্ক থাকব। আমাদের কমিটির আর কাউকে সিনেমা জমা দেওয়ার সুযোগ দেব না।’

এ বিষয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে ফিপ্রেসির কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক ক্লাউস এডা। ফিরতি মেইলে তিনি জানিয়েছেন, ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবের এই বিধিমালা ভাঙার অভিযোগ নিয়ে বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করছেন। বোর্ড সদস্য ও আইনি পরামর্শকদের সঙ্গে কথা বলে, সব দৃষ্টিকোণ বিবেচনা করে, দ্রুত এ বিষয়ে অফিশিয়াল সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করলেন সোনিয়া, জানালেন কেমন আছেন নায়ক

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সোনিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সোনিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেখানে মেয়ের সঙ্গে আছেন তিনি। গত জুলাই মাসে ইলিয়াস কাঞ্চন লন্ডন গেলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় চিত্রনায়িকা রোজিনার। ওই সময় রোজিনা ছিলেন কানাডায়। সেখান থেকে ফিরে গত সেপ্টেম্বর অভিনেতাকে দেখেতে যান তিনি। তখন রোজিনা জানিয়েছিলেন, অসুস্থতার ধঁকলে কিছুটা বিধ্বস্ত দেখালেও কাঞ্চন দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছেন নিয়মিত। ধীরে ধীরে কথা বলছেন। ব্রেনের সস্যার কারণে মাঝে মাঝে কথা ভুলে যান ইলিয়াস কাঞ্চন। ব্রেনের স্পর্শকাতর জায়গায় টিউমার হওয়ায় অস্ত্রোপচার করে সম্পূর্ণ টিউমার সরানো যায়নি। তবে কেমোথেরাপির মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসা চলবে।

সম্প্রতি ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করেছেন বাংলা সিনেমার নব্বই দশকের আরেক জনপ্রিয় নায়িকা সোনিয়া। অনেক বছর হলো স্বামী-সন্তান নিয়ে ইংল্যান্ডে স্থায়ী হয়েছেন সোনিয়া। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করে তিনি জানিয়েছেন, এখন আগের চেয়ে ভালো আছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন তিনি।

গত সেপ্টেম্বরে ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখতে যান রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত
গত সেপ্টেম্বরে ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখতে যান রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত

ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন সোনিয়া। নায়কের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্যসহ জানিয়েছেন চিকিৎসার খবর।

স্ট্যাটাসে সোনিয়া লেখেন, ‘ইংল্যান্ডের কর্মব্যস্ত জীবনের কারণে অনেকদিন ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া হয়নি। যোগাযোগ সবসময় হয়, তবে আজ প্রথম সুযোগ পেলাম তাকে দেখতে যাওয়ার। ভাইয়ার চলমান চিকিৎসায় কিছুদিনের বিরতি ছিল। আগামী সপ্তাহে আবার চিকিৎসা শুরু হবে।’

সোনিয়া জানিয়েছেন, ইলিয়াস কাঞ্চন এখন স্বাভাবিকভাবেই কথা বলছেন। সময় কাটাচ্ছেন স্বজনদের সঙ্গে। তবে শিগগির দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই তাঁর। এ বিষয়ে সোনিয়া লেখেন, ‘ভাইয়া আমার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেছেন। উনার পরিবারের সঙ্গে কাটালাম ভালো সময়। তবে আপাতত বাংলাদেশে ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই তাঁর। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া পরবর্তী কোনো সিদ্ধান্ত জানানো যাচ্ছে না।’

সোনিয়া আরও জানিয়েছেন, ইলিয়াস কাঞ্চনের চিকিৎসা বেশ ভালোভাবেই চলছে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন নায়ক। পুরো চিকিৎসাপ্রক্রিয়া শেষে চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন অভিনেতা। সোনিয়া অনুরোধ করেছেন, কোনো ধরনের গুজব না ছড়িয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের সুস্থতার জন্য দোয়া করতে।

উল্লেখ্য, ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে ‘ভয়ংকর ৭ দিন’, ‘বিদ্রোহী কন্যা’, ‘বডিগার্ড’, ‘শেষ রক্ষা’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন সোনিয়া। তবে তাঁর নায়িকা হয়ে কোনো সিনেমায় অভিনয় করা হয়নি তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাজাখস্তানে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন নিশো

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৩
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত

৮ ডিসেম্বর ছিল অভিনেতা আফরান নিশোর জন্মদিন। প্রতিবছরের মতো এবারও তাঁর ভক্তরা দিনটি উদ্‌যাপন করলেন বিশেষ আয়োজনে। তবে ‘দম’ সিনেমার শুটিংয়ে কাজাখস্তানে থাকায় অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, এই আয়োজনে উপস্থিত থাকতে পারবেন না নিশো। শেষ পর্যন্ত সবাইকে চমকে দিয়ে ভক্তদের সঙ্গে নিজের জন্মদিন উদ্‌যাপনে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষ হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। দেশে ফিরেই ভক্তদের আমন্ত্রণে নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির হন নিশো। এদিন তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দম সিনেমার পরিচালক রেদওয়ান রনি ও নায়িকা পূজা চেরি। স্বাভাবিকভাবে উঠে আসে দম সিনেমার প্রসঙ্গ। নির্মাতা জানালেন, কতটা কঠিন পরিস্থিতির মাঝে শুটিং করেছেন তাঁরা। একদিন পাহাড়ে শুটিং করতে গিয়ে হাত কেটে যায় নিশোর। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ, শুটিং হয়েছে দুর্গম এলাকায়। তবু থেমে যাননি নিশো, আহত অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যের শুটিং চালিয়ে গেছেন।

দম সিনেমার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে নিশো বলেন, ‘আমরা সবাই চাই গল্প, চাই পারফরম্যান্স। দম সিনেমার মতো একটি গল্পের দায়িত্ব আমার কাঁধে, এটা আমার কাছে আশীর্বাদের মতো। এটা যদি ঠিকমতো পালন করতে না পারি, তাহলে কীভাবে হবে? আমি জানি, একজন সিনিয়র হিসেবে টিমের স্পিড অনেকটাই আমার ওপর নির্ভর করে। তখন এই হাত কাটা, পা কাটা, সেখানে মেডিকেল সাপোর্ট এল কি এল না, এসব কোনো বিষয় না। এ ছাড়া আমাদের খুব টাইট শিডিউল ছিল। সেখানে ১০ মিনিটের একটা বিরতি মানে শিডিউল ফেল করা। আমি দাবি নিয়ে বলতে পারি, এই সিনেমায় টিমের সবাই যতটা কষ্ট নিয়ে কাজ করেছে, এত কষ্ট কোনো প্রোডাকশনে করতে হয়নি। অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল সেখানে।’

নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজাখস্তানের শুটিং শেষ করেছে দম টিম। নিশো বলেন, ‘বয়স ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বটা বেড়ে যায়। এখানে নিজেকে শুধু অভিনেতা হিসেবে ভাবিনি। ভেবেছি, আমিও নির্মাতার একটি অংশ। আমরা যে ওয়েদারে কাজ করেছি, সেখানে ২টার সময় সূর্যের আলো থাকে না। আমরা কখনোই ভাবি নাই, সানলাইট ২টার সময় চলে যায়। এত জটিলতার পরেও আমরা এক দিনও বেশি শুটিং করি নাই। নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করেছি। সিনেমাসংশ্লিষ্টদের কাছে আমরা আমাদের কথা রেখেছি।’

দম সিনেমার গল্প নিয়ে এখনই বিস্তারিত বলতে চান না এই অভিনেতা। শুধু জানালেন, বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিতে এ ধরনের গল্প নিয়ে আগে কাজ হয়নি। তিনি আশা করেন, গল্পটি সবাই উপভোগ করবে এবং সিনেমাটি দেখার পর সবাই গর্ব করবে যে এটি বাংলাদেশের সিনেমা।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষে এবার দমের শুটিং হবে দেশে। কয়েকটা দিন বিশ্রাম নিয়ে আবার লাইট, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন অভিনয়শিল্পীরা। নিশো, পূজা চেরির সঙ্গে এতে আরও অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। আগামী বছর রোজার ঈদে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে দম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংগীত নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা জানতে চান হামিন আহমেদ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
হামিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
হামিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

এই সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল। এরপর বেজে উঠবে নির্বাচনী ঘণ্টা। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পরিকল্পনা জানাচ্ছে, যা প্রকাশ করা হবে নির্বাচনী ইশতেহার হিসেবে। এমন সময়ে সংগীত নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা জানতে চাইলেন মাইলস ব্যান্ডের প্রধান সংগীতশিল্পী হামিন আহমেদ। শুধু তা-ই নয়, সংগীত ও সংস্কৃতি নিয়ে ইতিবাচক পরিকল্পনা না থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোট না দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল ফেসবুকে হামিন আহমেদ লেখেন, ‘জাতীয় নির্বাচন কিছুদিন পরেই। সংগীতস্রষ্টা, শিল্পী এবং সংগীতপ্রেমীরা জানতে চান—ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য আপনার সাংস্কৃতিক ও সংগীতভিত্তিক ইশতেহার কী? বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দল সংগীত নিয়ে তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেনি। অন্য সবকিছু নিয়ে করেছে, কিন্তু সংগীত নিয়ে নয়! আমরা জানতে চাই (সংগীত নিয়ে পরিকল্পনা)।’

আরও একটি পোস্টে হামিন তুলে ধরেন বাংলাদেশে গান শোনা মানুষের পরিসংখ্যান। সেখানে হামিন লেখেন, ‘২০২৫ সালে বাংলাদেশে রেডিও, পডকাস্ট ও অন্যান্য মাধ্যমে গান শোনা লোকের সংখ্যা জনসংখ্যার প্রায় ২৮.৪০ শতাংশ। এআই বলছে ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৫১.৯১ মিলিয়নে পৌঁছাবে; যা মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ। এই বিপুল সংখ্যক মানুষ যদি বলে, বাংলাদেশে সংগীতের বিরোধিতাকারী দল/প্রার্থীদের ভোট দেব না, তাহলে কী হবে বলে আপনার মনে হয়? এই ক্ষমতা উপলব্ধি করুন।’

বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশনের (বামবা) সভাপতির দায়িত্বে থাকা হামিন আহমেদের এই পোস্ট ইতিমধ্যে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেশের অনেক সংগীতশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, ব্যান্ড সদস্য ও সংগীতপ্রেমীরা পোস্টটি শেয়ার করে নিজেদের সমর্থন জানাচ্ছেন।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কথা হয় হামিন আহমেদের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে অনেক দিন ধরে সহশিল্পীদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। আমরা খেয়াল করলাম, রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সবকিছু আলাদাভাবে উপস্থাপন করা হলেও মিউজিক বা আর্ট কালচার নিয়ে কখনোই কিছু বলা হয় না। অথচ এমন কোনো অনুষ্ঠান নেই, যেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান-বাজনা হয় না। কেন মিউজিশিয়ানরাই বারবার সাফার করবে। এক পক্ষ বলবে বন্ধ করে দেব, আরেক পক্ষ বলবে চালু রাখব। তারা কী চাইছে, সেটা স্পষ্ট করা দরকার। সবাই তো মিউজিশিয়ানদের কাছেও ভোট চাইবে। বাংলাদেশে ২ থেকে ৩ কোটি মানুষ গান গাওয়া ও শোনার সঙ্গে জড়িত। কেউ যদি মিউজিক বন্ধ করে দিতে চায়, তাকে তো এই মানুষগুলো ভোট দেবে না। কারণ, কারও পক্ষ থেকে মিউজিক নিয়ে কোনো পরিকল্পনার কথা শোনা যায়নি।’

হামিন আহমেদ আরও বলেন, ‘এখন বাংলাদেশের যে সময়, সেটা যেকোনো সময়ের চেয়ে দুর্যোগপূর্ণ, বিভ্রান্তিকর ও চক্রান্তমূলক। বিভিন্ন শো ক্যানসেল হচ্ছে, আবার শোনা যাচ্ছে, গান-বাজনা বন্ধ করতে হবে ইত্যাদি। এখনই কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না। আমরা জানতে চাই, যে দলগুলো নির্বাচনে যাচ্ছে, আমাদের জন্য তাদের স্ট্র্যাটেজি কী? আর্ট কালচার নিয়ে তাদের চিন্তা-ভাবনা কী? সংস্কৃতি কীভাবে এগোবে, এই বিষয়ে কী ভাবছে তারা? এখনো এ বিষয়ে ঘোষণা আসেনি কোনো দলের পক্ষ থেকে। আমরা সেটাই স্পষ্ট জানতে চাইছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিজয়ের মাসে সুমীর চার গান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সুমী শারমীন,সাব্বির জামান ও প্রিয়াঙ্কা গোপ। ছবি: সংগৃহীত
সুমী শারমীন,সাব্বির জামান ও প্রিয়াঙ্কা গোপ। ছবি: সংগৃহীত

বিজয়ের মাসে নতুন চার গান নিয়ে আসছেন গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী সুমী শারমীন। চারটি গানই লিখেছেন সুমী, দুটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন, বাকি দুটি গান গেয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গোপ ও সাব্বির জামান। গানগুলো সুর করেছেন শান সায়েক ও সাব্বির জামান।

সুমী গেয়েছেন ‘রোদ্দুর কোলাহল’ ও ‘কোনো এক বিকেলে’ শিরোনামের দুটি গান। রোদ্দুর কোলাহল গানটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন শান সায়েক। কোনো এক বিকেলের সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন সাব্বির জামান। অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কা গোপ গেয়েছেন ‘বিজয় রাঙানো সুখ’ শিরোনামের গান। এটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন শান সায়েক; সাব্বির জামান গেয়েছেন নিজের সুর ও সংগীতায়োজনে ‘ভালোবাসি তোমায়’ শিরোনামের গান। সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন লোকেশনে গানগুলোর মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে।

গানগুলো নিয়ে সুমী শারমীন বলেন, ‘প্রতিটি গানেই জীবনের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। গানগুলো নিয়ে আমি ভীষণ আশাবাদী। চারটি গানেরই সুর শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যাবে—এতটুকু আমি নিশ্চিত বলতে পারি।’

প্রিয়াঙ্কা গোপ বলেন, ‘বিজয় রাঙানো সুখ গানটির কথা যেমন চমৎকার, গানের সুরও সহজ-সরল। সাধারণত এই ধরনের গান আমার গাওয়া হয় না। কিন্তু এই গান গেয়ে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।’

সাব্বির জামান বলেন, ‘সুমী আপার গানের কথাগুলো সাবলীল ও গভীরতায় পূর্ণ। তাঁর লেখনীর গুণেই সুর করাটা সহজ হয়ে যায়। এই গানগুলোর সুর সত্যিই মনে গেঁথে যাওয়ার মতো।’

প্রিয়াঙ্কা গোপের গাওয়া গানটি প্রকাশিত হবে এনিগমা টিভি ইউটিউব চ্যানেলে এবং সাব্বিরের গানটি আলফা আই ইউটিউব চ্যানেলে। সুমী শারমীনের গাওয়া গান দুটিও প্রকাশিত হবে ইউটিউবে, চ্যানেলের নাম শিগগির শ্রোতাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত