Ajker Patrika

বিপদে পেছনের মানুষেরা

বিনোদন প্রতিবেদক
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১৭: ২০
বিপদে পেছনের মানুষেরা

ঢাকা: বছর দুই আগের ঘটনা। এফডিসিতে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ সিনেমার শুটিং চলছিল। এফডিসির ভেতরে গিয়ে দেখা গেল ঝরনা স্পটের সামনে শুটিং চলছে। একজন সেখানে ফ্যান হাত নিয়ে ঘুরছেন, বেশ কয়েকজন একটু পরপর সেটটিকে বিভিন্নভাবে সাজাচ্ছেন। লাইটে কাজ করছেন তিনজন। ফাইটের দৃশ্য পরিচালনা করছেন একজন, ক্যামেরায় কাজ করছেন কয়েকজন। সেই সঙ্গে স্ট্যান্টম্যানরা তো রয়েছেনই।

শুটিংয়ে কীভাবে দৃশ্য ধারণ করা হবে, তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন ফাইট ডিরেক্টর। আর ক্যামেরায় তা ধারণ করছেন প্রধান ক্যামেরাম্যান। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন চার–পাঁচজন সহকারী। শুটিংয়ে দেখা যায়, নায়ককে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে একদল লোক। সিনেমার ভাষায় তাদের পরিচয় গুন্ডা বাহিনী। শুটিংয়ের সময় চোখে পড়ে নায়ক এবং ভিলেনের গাল বেয়ে রক্ত পড়ছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে আসলেই গাল কেটে গেছে বুঝি। এর পেছনে অবদান আসলে মেকআপম্যান জামাল উদ্দিনের।

মেকআপ রুমেই জামাল উদ্দিনের পাশে দেখা গেল দুজনকে ট্রাংকের ভেতর থেকে বিভিন্ন ধরনের পোশাক বাছাই করছেন। বিভিন্ন দৃশ্যে অভিনেতা–অভিনেত্রীরা কখন কী ধরনের পোশাক পরবেন, তা ঠিক করছেন এই দুজন। ইউনিটে তাঁদের সবাই চেনে ড্রেসম্যান হিসেবে। সেখান থেকে বেরিয়ে দুজনকে দেখা গেল জেব্রা ক্রসিংয়ের মতো করে ফ্লোরে রং করছেন। এখানে সড়কের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হবে।

এ ছাড়া লাইটম্যান, স্টিল ফটোগ্রাফার, ফিল্ম এডিটর, প্লেব্যাক সিঙ্গার, সংগীত পরিচালক, নৃত্য পরিচালকসহ আরও অনেকেই থাকেন পর্দার আড়ালে। পর্দার আড়ালের মানুষগুলোর গল্প বলতে গেলে যাঁর কথা না বললেই নয়, তাঁরা প্রোডাকশন বয় হিসেবে পরিচিত। এরা না থাকলে পুরো ইউনিট যে অচল, সেটা মোটামুটি এক বাক্যেই সবাই স্বীকার করেন। কারও পানি চাই, কারও চা, কারও খাবার, আবার কারও হয়তো সেফটিপিন– সবকিছুর জোগান দিয়ে যাচ্ছে প্রোডাকশন বয়। মো হারুন ত্রিশ বছর ধরে প্রোডাকশন টিমে কাজ করছেন। পেছনে কত মানুষই না এই সিনেমাকে দর্শকের সামনে তুলে ধরেন।

করোনার প্রকোপ শুরু হলে বেশ বিপদে পড়ে যান ঢাকাই সিনেমার এই পেছনের মানুষেরা। অনেক শিল্পী ও কলাকুশলী করোনাভাইরাসের কারণে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। বিশেষ করে দিনমজুরের ভিত্তিতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা পড়েছেন বিপদে। শুটিং বন্ধ, বাইরে কাজ নেই, ঘরে তৈরি হচ্ছে খাবারের সংকট। অনেকে মুখ ফুটে সাহায্য চাইতেও পারছেন না। শুটিং হলেও অনেক অভিনয়শিল্পীই ঝুঁকি এড়াতে নিজের মেকআপ নিজেই নিয়েছেন।

বড় তারকারা চলছেন নানা নির্দেশনা মেনে। যতটা পারছেন বিপদ এড়িয়ে রাখছেন। আর্থিকভাবে সচ্ছল এই শিল্পীরা বিধিনিষেধ মেনে চলতে পারলেও ক্যামেরার পেছনের মানুষেরা আছেন ভীষণ বিপদে। কারণ, শুটিং চললেও বাজেট কমানো ও সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে পেছনের মানুষদের সংখ্যা ক্রমেই কমানো হচ্ছে।

পরিশ্রম অনুসারে পয়সা মেলে না

জামাল আহমেদ, সহকারী ফাইটার

আমরা মারামারি করি। মার খেয়ে গড়িয়ে পড়ে যাই। পাবলিক হাততালি দেয় হিরোরে। শখে আসছিলাম। শখের থেকে পেশা হয়ে গেছে। অন্য কোথাও আর যাওয়া যাবে না। পরিশ্রম অনুসারে পয়সা মেলে না। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু তখন কেউ দেখে না। বাড়ি থেকে টাকাপয়সা নিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। একটি শিফটে এক হাজার টাকা। তার মানে ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যগুলোতে কাজ করে এক একটি সিনেমায় ১৫-২০ হাজার টাকা পান এ ফাইটাররা। করোনাকালে কোনো শুটিং নেই। পরিবারের লোকেরা ছোট একটা মুদির দোকান দিয়ে দিয়েছে। সেখানে বসি। মন মানে না। গত বছর করোনা শুরু হলে এ পর্যন্ত দুটি সিনেমায় কাজ করেছি। দুই সিনেমা মিলিয়ে আয় হয়েছে বড়জোর ৩০ হাজার টাকা। তা দিয়ে কীভাবে সংসার চালাব! 

আগের মতো ডাক পাই না

জামালউদ্দিন, মেকাপম্যান

আমি একজনের সঙ্গে শুটিং দেখতে আসছি। তারপর ববিতা ম্যাডাম আর আলমগীর স্যারকে দেখে মনে মনে চিন্তা করলাম আমার এখানেই থাকতে হবে। চিন্তা করলাম মেকআপম্যান হলে তাঁদের সবচেয়ে কাছে কাছে থাকা যায়। এরপর পেরিয়ে গেছে ত্রিশটি বছর। বয়স হয়েছে এখন আর আগের মতো ডাক পাই না। তবে এ সময়ের পরিচালক-অভিনয়শিল্পীরাও আমাকে শ্রদ্ধা করেন। সেদিন এফডিসিতে নায়ক সাইমনের সঙ্গে দেখা হলো। আলাদা করে ডেকে কুশলাদি জিজ্ঞেস করে হাতে ৫ হাজার টাকা গুঁজে দিলেন। এভাবে আরও অনেকেই সাহায্য করেন। কিন্তু কাজ তো নেই। এভাবে আর কত দিন চলবে।

আমাদের পেশার সমাপ্তি ঘটছে

ফরিদ আহমেদ, সেট ডিজাইনার

দেড় শর মতো সেট ডিজাইন করেছি। নতুন করে আর সেট ডিজাইনার আসছেন না। বর্তমানে চলচ্চিত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির হাওয়া লাগায় অনেক সিনেমাতেই আর সেট বানানো হয় না। এখন সিনেমা খুব কম তৈরি হচ্ছে। তার ওপর এখন সবাই ডিজিটাল ফিল্ম বানাতে চায়। লোকজন টাকা খরচ করে আগের মতো সেট বানাতে চায় না। আস্তে আস্তে যেন আমাদের পেশার সমাপ্তি ঘটছে। অথচ সারা বিশ্বে সেট ডিজাইন সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। করোনার সময় তো সেটা ডিজাইন করে সিনেমা নির্মাণের কথা কেউ কল্পনাই করতে পারছেন না। আর্থিক অসচ্ছলতা তো আছেই। কিন্তু আমি চিন্তা করি আমাদের পেশার আসলেই ভবিষ্যৎ কী হবে।

রিলিফের লাইনে তো দাঁড়াতে পারি না

আবদুল লতিফ বাচ্চু, চিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি

চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতির সদস্য ৮০ জন। এই অবস্থায় কষ্টে আছেন ২৫ জন সদস্য। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতির তহবিলে এরই মধ্যে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতিও অনুদান দিয়েছে। এর বাইরেও কয়েকজন কিছু অর্থসহায়তা করেছেন। কবরী ম্যাম এই সংগঠনটির তহবিলে ১ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন। এরপর আরও কয়েকজন অভিনয়শিল্পী অনুদান দিয়েছেন। আমাদের সমস্যা হলো আমরা তো রিলিফের লাইনে দাঁড়াতে পারি না। হাত পাততে পারি না। যা সাহায্য পাচ্ছি আমরা অসহায় ক্যামেরা পারসন ও সহকারীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।

ফান্ডে কোনো টাকাপয়সা নেই

সোহানুর রহমান সোহান, পরিচালক সমিতির সভাপতি

চলচ্চিত্রটা পুরোটাই টিম ওয়ার্ক। এই কর্মযজ্ঞে এইসব মানুষেরা যদি না থাকে চলচ্চিত্র নির্মাণ আসলেই কঠিন হয়ে পড়বে। এখন আর লোকজন আগের মতো কাজে আসছে না। সিনেমার বাজার খুব মন্দা। কারণ শুটিং এখন এফডিসিতে সে রকম হয় না বললেই চলে। আগে কম করেও আট–দশটা পার্টির শুটিং হতো। এখন আর সে রকম কাজ নেই। চিকিৎসা সাহায্য দেওয়ার জন্য চারটি হাসপাতাল রাজি হয়েছে। হাসপাতালগুলো হচ্ছে এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ইনসাফ বারাকা কিডনি এবং জেনারেল হাসপাতাল, ইমপালস হাসপাতাল, অ্যাডভান্স হাসপাতাল। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি পরিচালক সমিতি থেকে আর্থিকভাবে অসচ্ছল সদস্যদের জন্য সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের সমিতির ফান্ডে তো ওইভাবে কোনো টাকাপয়সা নেই। এরপর যতটুকু আছে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবস্থা করে যাঁরা এ সময়ে নানাভাবে সমস্যায় ভুগছেন, আমরা তাঁদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এটা ঠিক সাহায্য না বলে আমরা উপহার বলতে চাই।

প্রণোদনা আসেনি

গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে বেকার হয়ে পড়া চলচ্চিত্রশিল্পীদের মধ্যে অসচ্ছল ২৩১ জনের তালিকা করেছিল পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি ও প্রযোজক সমিতি। সেই তালিকা এফডিসির মাধ্যমে পাঠানো হয় তথ্য মন্ত্রণালয়ে। তাঁদের জন্য চাওয়া হয় আর্থিক প্রণোদনা। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে তখনই ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়। জানানো হয় শিল্পীরা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ডিসেম্বরেই যাঁর যাঁর মোবাইলে টাকা পাবেন।

শিল্পীরাও নিজেদের নম্বরে নগদ অ্যাকাউন্ট চালু করেন। কিন্তু পাঁচ মাস হয়ে গেলেও এখনো কেউ টাকা পাননি বলে জানিয়েছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।

তিনি বলেন, ‘গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই আবার করোনার প্রকোপ বেড়েছে। শিল্পীদের হাতে কোনো কাজ নেই। আমি সরকারকে অনুরোধ করব প্রণোদনা দিয়ে অসচ্ছল শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর। এমন অনেক শিল্পী আছেন যাঁরা তিন বেলা খেতে পারছেন না। ওষুধ কেনার টাকা নেই। তাঁরা সারা জীবন ব্যয় করেছেন শিল্পের জন্য। এই খারাপ সময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো সরকারের কর্তব্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হৃদয় খানের সুরে লিজার নতুন গান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
হৃদয় খান ও সানিয়া সুলতানা লিজা। ছবি: সংগৃহীত
হৃদয় খান ও সানিয়া সুলতানা লিজা। ছবি: সংগৃহীত

সুরকার ও সংগীতশিল্পী হৃদয় খানের সুরে নতুন গান গাইলেন সংগীতশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। গানের শিরোনাম ‘নেই অধিকার’। র‍্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানটির সংগীত আয়োজনও করেছেন হৃদয় খান। চন্দন রায় চৌধুরীর নির্দেশনায় মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে কক্সবাজারে। ভিডিওতে লিজার সঙ্গে মডেল হয়েছেন মোহতারাম বিল্লাহ।

ফেসবুকে নতুন গানের খবর জানিয়ে লিজা লেখেন, ‘এ এক হারিয়ে যাওয়ার গান, এক নীরব বেদনার গল্প, যেখানে ভালোবাসা আছে, কিন্তু দাবি নেই। এ ধরনের গান নিয়ে এটি আমার প্রথম যাত্রা। আশা করি, নেই অধিকার আপনাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। অপেক্ষায় থাকুন, শিগগিরই আসছে আমাদের ভালোবাসার গান।’

নতুন এই গান নিয়ে সানিয়া সুলতানা লিজা বলেন, ‘নেই অধিকার গানটি ব্যক্তিগতভাবে আমার খুব পছন্দের। কারণ, আমি যে ধরনের গান করি, সেখান থেকে বের হয়ে ভিন্ন কিছুর চেষ্টা করা হয়েছে। র‍্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানের কথাগুলো মন ছুঁয়ে যাবে। সেই কথার ওপর দারুণ সুর বসিয়েছেন হৃদয় খান। কক্সবাজারে ধারণ করা ভিডিওটিতে সেই কথাগুলোকে জীবন্ত করে তুলেছেন পরিচালক চন্দন রায় চৌধুরী। ভিডিওতে নির্মাতা আমাকে ভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আমিও চেষ্টা করেছি তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে। সব মিলিয়ে নেই অধিকার গানটি আমার ভালো লেগেছে। আশা করছি দর্শক শ্রোতাদেরও ভালো লাগবে।’

লিজা জানান, আগামীকাল তাঁর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পাবে নেই অনুরোধ গানের মিউজিক ভিডিও।

অন্যদিকে, ছোটদের গানের রিয়েলিটি শো আরটিভি লিটল স্টারের বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন লিজা। কয়েক মাস আগে ইউরোপে সংগীত সফর করে এসেছেন তিনি। প্রবাসী বাংলাদেশিদের আমন্ত্রণে ২৫ দিনের ইউরোপ ট্যুরে লিজা সংগীত পরিবেশন করেছেন ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ইতালি ও স্পেনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নভেম্বরে আসছে ফ্যামিলি ম্যান সিরিজের তৃতীয় সিজন

বিনোদন ডেস্ক
দ্য ফ্যামিলি ম্যান সিরিজে মনোজ বাজপেয়ি
দ্য ফ্যামিলি ম্যান সিরিজে মনোজ বাজপেয়ি

ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজের তালিকায় শুরুর দিকে আছে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর নাম। শ্রীকান্ত তিওয়ারি নামের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার পারিবারিক জীবন এবং শ্বাসরুদ্ধকর মিশনের গল্প নিয়ে তৈরি সিরিজটির প্রথম সিজন এসেছিল ২০১৯ সালে। প্রথম সিজনেই জনপ্রিয়তা পায় আমাজন প্রাইম ভিডিওতে প্রচারিত সিরিজটি। শ্রীকান্ত তিওয়ারি চরিত্রে প্রশংসিত হন মনোজ বাজপেয়ি। দ্বিতীয় সিজন মুক্তি পায় ২০২১ সালে। এবার আসছে তৃতীয় সিজন।

গতকাল প্রোমো প্রকাশ করে অনেকটা কমেডির ধাঁচে প্রাইম ভিডিও জানিয়েছে ফ্যামিলি ম্যানের তৃতীয় সিজনের মুক্তির তারিখ। ভিডিওতে দেখা গেছে, গোয়েন্দাগিরি ভুলে এবার গায়ক হতে মরিয়া শ্রীকান্ত তিওয়ারি! দিনভর বেসুরো কণ্ঠে গানের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে পরিবার তো বটেই, শ্রীকান্তের ওপর বেজায় বিরক্ত তার সহকর্মীরাও। শ্রীকান্তর স্ত্রী সুচিত্রা জানায়, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সিজনের মধ্যকার এই চার বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে তাদের জীবনে। মেয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছে, ছেলেও বড় হয়েছে। কিন্তু শ্রীকান্ত সেই একই রকম থেকে গেছে।

প্রোমো দেখে আন্দাজ করা যায়, আগের মতোই যেভাবে দক্ষ হাতে মধ্যবিত্ত গোয়েন্দা শ্রীকান্ত একই সঙ্গে পরিবার ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব সামলায়; এবারও সে গল্প পাওয়া যাবে। গল্পে উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কিছু ইস্যু উঠে আসবে বলে জানা গেছে। তবে এবার কিন্তু ওয়ান ম্যান শো হবে না। আগে যেভাবে শ্রীকান্ত চরিত্রে একাই বাজিমাত করে দিতেন মনোজ, এবার এসেছে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী। এবার লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। কারণ, তৃতীয় সিজনে যুক্ত হয়েছেন জয়দীপ আহলাওয়াত। তিনি মনোজ বাজপেয়ির চরিত্র শ্রীকান্তের বিরুদ্ধে লড়বেন।

ফ্যামিলি ম্যান সিরিজের পরিচালক জুটি রাজ অ্যান্ড ডিকে বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে যেভাবে এ সিরিজের প্রতি দর্শকেরা ভালোবাসা জানিয়েছেন, তা সত্যিই অসাধারণ। তৃতীয় সিজনে থাকবে আরও অ্যাকশন, আরও চমৎকার গল্প আর অনবদ্য অভিনয়। এবারের সিজনে শিকারিই হবে শিকার। শ্রীকান্তকে এমন কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, যা আগে সে কখনো কল্পনাও করেনি। তার ক্যারিয়ার আর পরিবারও হুমকির মুখে পড়বে।’

আগামী ২১ নভেম্বর থেকে ২৪০টির বেশি দেশ থেকে প্রাইম ভিডিওতে দেখা যাবে দ্য ফ্যামিলি ম্যান সিজন থ্রি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার মঞ্চে হুমায়ূন আহমেদের ‘সাজঘর’ নিয়ে আসছে স্কেচ গ্যালারি নন্দন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘সাজঘর’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘সাজঘর’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

থিয়েটার ও থিয়েটারকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামের নাট্যসংগঠন স্কেচ গ্যালারি নন্দনের দ্বিতীয় প্রযোজনা ‘সাজঘর’। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘সাজঘর’ উপন্যাসের নাট্যরূপ এটি। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান। গত মে মাসে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়েছে নাটকটির। এরপর চট্টগ্রামে নিয়মিত প্রদর্শনী হয়েছে। এবার সাজঘর নিয়ে ঢাকার মঞ্চে আসছে স্কেচ গ্যালারি নন্দন। আগামী ১ নভেম্বর রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টায় প্রদর্শিত হবে সাজঘর।

সাজঘর মূলত একজন অভিনেতার শিল্পীসত্তা ও ব্যক্তিসত্তার দ্বন্দ্বের গল্প। পাশাপাশি এতে উঠে এসেছে গ্রুপ থিয়েটারের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, বন্ধুত্ব, প্রেম, হিংসা, নিঃসঙ্গতা এবং শিল্পের প্রতি গভীর দায়বোধের প্রকাশ। পরিচিত থিয়েটার প্রাঙ্গণ, মহড়াকক্ষ ও মঞ্চের পেছনের আলো-আঁধারিতে নাটকটি একদল স্বপ্নদ্রষ্টা মানুষের যাত্রাপথ তুলে ধরে; যারা আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও মঞ্চে আলো জ্বালানোর স্বপ্ন দেখে।

নির্দেশক শাহরিয়ার হান্নান বলেন, ‘মঞ্চে একটি সাজানো-গোছানো পরিপাটি নাটক দেখা গেলেও তা নির্মাণের পেছনে যে কত গল্প আছে, তা অজানাই থেকে যায়। এই গল্পগুলো আর সম্পর্কগুলোই গ্রুপ থিয়েটারের শক্তি। সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর সাজঘর উপন্যাসে গ্রুপ থিয়েটার ও থিয়েটারের মানুষের না-জানা গল্পগুলো তুলে এনেছেন।’

সাজঘর নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সনজিব বড়ুয়া, বিজন মজুমদার, সুচরিত দাশ খোকন, রহিমা খাতুন লুনা, শাহীন চৌধুরী, আশীষ নন্দী, বিকিরণ বড়ুয়া, মামুন নাজিম, ধীমান দাশ, সালমা জাহান, বুশরা আল মোবাশ্বেরা, মামুরা মমতাজ দীপা ও শাহরিয়ার হান্নান।

সুস্থ সংস্কৃতিচর্চা ও এর অনালোকিত দিকসমূহ উপস্থাপনের প্রয়াসে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করে স্কেচ গ্যালারি নন্দন। ২০১৯ সালে মঞ্চে আসে দলটির প্রথম প্রযোজনা ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’। ও’হেনরির গল্প অবলম্বনে নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাসপাতালে ভর্তি হাসান মাসুদ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিনেতা হাসান মাসুদ। গত সোমবার রাতে প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও খিঁচুনি অনুভব করলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, হাসান মাসুদ ইস্কেমিক স্ট্রোক করেছেন। মাইল্ড হার্ট অ্যাটাকও হয়েছে তাঁর।

মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক ইউনিটে ভর্তি আছেন হাসান মাসুদ। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমে বলেন, ‘বর্তমানে নিউরোলজিস্ট, কার্ডিওলজিস্ট ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন হাসান মাসুদ। এ ধরনের রোগীরা সাধারণত ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে থাকেন। এরপর নির্ধারণ করা হয় পরবর্তী চিকিৎসাপদ্ধতি কী হবে।’

২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ব্যাচেলর’ সিনেমা দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক হাসান মাসুদের। এরপর কাজ করেছেন অনেক নাটকে। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে আছে ‘হাউসফুল’, ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’, ‘এফডিসি’, ‘বউ’, ‘খুনসুটি’, ‘গ্র্যাজুয়েট’, ‘রঙের দুনিয়া’, ‘গণি সাহেবের শেষ কিছুদিন’, ‘বাতাসের ঘর’ ইত্যাদি। অভিনয় করেছেন ওয়েব কনটেন্টেও। অভিনয়ের আগে সাংবাদিকতা করতেন হাসান মাসুদ। এর আগে কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। ১৯৯২ সালে ৭ বছরের মাথায় ক্যাপ্টেন পদ থেকে অবসর নেন।

অনেক দিন ধরেই অভিনয়ে অনিয়মিত হাসান মাসুদ। গত মাসে পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমিরকে জড়িয়ে সংবাদের শিরোনাম হন তিনি। সে সময় অনেকটা অভিমান করে জানিয়েছিলেন, অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে চান। চাকরি খোঁজার কথাও জানান হাসান মাসুদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত