Ajker Patrika

সুস্মিতার ৪৭: ১৩ বছর ধরে এই বয়সের অপেক্ষায় অভিনেত্রী

আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২২, ০৯: ৩৪
সুস্মিতার ৪৭: ১৩ বছর ধরে এই বয়সের অপেক্ষায় অভিনেত্রী

আজ সাবেক বিশ্বসুন্দরী ও বলিউড অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনের জন্মদিন। ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২টা পেরোতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন সুস্মিতা। একটি সেলফি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘অবশেষে ৪৭ !!! এমনকি একটি সংখ্যা, যা গত ১৩ বছর ধরে আমাকে তাড়া করছে। সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বছরের পথে। দীর্ঘদিন ধরে এর অপেক্ষায়… অবশেষে এর আগমনের কথা জানাতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত!!!।’

পোস্টের নিচে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলিউড সহকর্মী থেকে ভক্তরা। অবশ্য এই ৪৭-এর মাহাত্ম্যটা কী, সেটি পরিষ্কার করেননি অভিনেত্রী।

ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দ্রাবাদ শহরে ১৯৭৫ সালের ১৯ নভেম্বর জন্ম সুস্মিতা সেনের। ভারতীয়দের মধ্যে এই বাঙালি নারী প্রথম বিশ্বস্তরের একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জেতেন। ১৯৯৪ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে সুস্মিতা সেন  ভারতের প্রথম ‘মিস ইউনিভার্স’-এর মুকুট জেতেন।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম সুস্মিতার বাবা ভারতীয় বিমানবাহিনীতে উইং কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন, মা সাধারণ গৃহিণী। এই সাধারণ পরিবারটি বিশ্বের জনপ্রিয় পরিবার হয়ে ওঠে অষ্টাদশী সুস্মিতা মিস ইউনিভার্স জিতে ভারতকে সম্মানিত করার পর। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মডেল ও চলচ্চিত্রে দোর্দণ্ড প্রতাপে কাজ করেছেন।

 ১৯৯৬ সালে ‘দস্তক’ চলচ্চিত্র দিয়ে সুস্মিতা সেনের রুপালি পর্দায় অভিষেক। ছবিটি খুব একটা দর্শকপ্রিয়তা পায়নি। কিন্তু ১৯৯৭ সালে তামিল অ্যাকশন চলচ্চিত্র ‘রাচাগান’–এ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালে ডেভিড ধাওয়ানের ‘বিবি নাম্বার ওয়ান’-এ সহ-অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন। মূলত এর পরই বলিউডে তাঁর নামডাক হয়।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম বিবি নাম্বার ওয়ানের জন্য ফিল্মফেয়ারে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রীর পুরস্কারও জেতেন সুস্মিতা। ২০০৪ সালে তাঁর সবচেয়ে হিট সিনেমাটি শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘ম্যায় হুঁ না’। এর পরে অজয় দেবগনের সঙ্গে ‘ম্যায় অ্যাইসা হি হুঁ’ ছবিতে কাজ করেন, ২০০৫ সালে ‘ম্যায়নে পিয়ার কিঁউ কিয়া’ এবং ‘আঁখে’, ‘কার্মা’, ‘হোলি’র মতো আরও কিছু জনপ্রিয় ছবিতে কাজ করেন।

সমাজের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দুই মেয়ে আলিশা ও রেনেকে দত্তক নিয়েছেন সুস্মিতা। সিঙ্গেল মাদার হিসেবে নিজের দায়িত্বে অবিচল তিনি। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে একাধিকবার শিরোনামে থাকলেও অভিনেত্রী তাঁর জীবন পরিচালনা করেছেন নিজের ছন্দেই। আজ ৪৭-এ পা রাখলেন সাবেক এই বিশ্বসুন্দরী।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম ব্যক্তিজীবনে প্রেমের কারণে অনেকবারই খবরের শিরোনাম হয়েছেন সুস্মিতা। চলচ্চিত্র প্রযোজক ইমতিয়াজ খারটির সঙ্গে সুস্মিতার প্রেম ছিল বলে বলিউডে কান পাতলে শোনা যায়। যদিও সেই প্রেমের গুঞ্জন খুব বেশি প্রচারের আলোয় আসেনি, যেমন এসেছিল আরেক নির্মাতা মুদাসসর আজিজের ক্ষেত্রে।

পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরামের সঙ্গেও সুস্মিতা সেনের প্রেমের গুঞ্জন ছিল। ছবি: সংগৃহীতগুঞ্জন আছে, ২০১০ সালে ‘দুলহা মিল গ্যায়া’র শুটিংয়ে সিনেমাটির পরিচালক আজিজের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান অভিনেত্রী। কিংবদন্তি পাকিস্তানি বোলার ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সুস্মিতা সেনের ক্যারিয়ারের অন্যতম আলোচিত ঘটনা। এমনকি তাঁদের বিয়ের গুঞ্জনও ছড়িয়েছে। পরে সুস্মিতা অবশ্য সেই খবর অস্বীকার করেন। ২০০৮ সালে একসঙ্গে একটি রিয়েলিটি শোর শুটিংয়ের সময় দুজনের প্রেমের গুজব রটে। যদিও তাঁদের সম্পর্ক ভাঙার কারণ জানা যায়নি।

চলচ্চিত্র নির্মাতা মানব মেননের সঙ্গেও সুস্মিতার প্রেমের গুঞ্জন জোরেশোরেই শোনা গেছে একটা সময়। ২০১১ সালে তাঁদের একসঙ্গে বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে দেখাও গেছে।

এরপর বলিউড অভিনেতা রণদ্বীপ হুদার সঙ্গেও তিন বছরের প্রেম ছিল সুস্মিতার। তাঁদের সখ্য ‘কার্মা অ্যান্ড হোলি’ সিনেমার শুটে। তবে প্রেম না টিকলেও বন্ধুত্ব এখনো অটুট বলে খবর।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম 

ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির ভাই ব্যবসায়ী অনিল আম্বানির সঙ্গেও সুস্মিতার সম্পর্ক ছিল বলে শোনা যায়। তাঁদের গোপন প্রেম নিয়ে খুব বেশি চর্চা না হলেও জানা যায়, সুস্মিতার সঙ্গে প্রেম নিয়ে ভীষণ সিরিয়াস ছিলেন অনিল। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদেও রাজি ছিলেন। গুঞ্জন আছে, সুস্মিতাকে ২২ ক্যারেট হিরার আংটি উপহার দিয়েছিলেন অনিল।

বলিউডের সেলিব্রিটি ম্যানেজার বান্টি সাজদিশের সঙ্গেও প্রেম ছিল সাবেক এই বিশ্বসুন্দরীর। তবে সেই প্রেমও বেশি দিন থাকেনি। কেবল সুস্মিতাই নন, বান্টির সঙ্গে অভিনেত্রী দিয়া মির্জা, নেহা ধুপিয়া, সোনাক্ষী সিনহারও প্রেম ছিল বলে শোনা যায়। বান্টি ভারতীয় তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি, শেখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মাদেরও ম্যানেজার ছিলেন একসময়।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী সাবির ভাটিয়ার সঙ্গেও নাকি সুস্মিতার সম্পর্ক ছিল। তবে তা বেশি দিন টেকেনি। এই সাবির ছিলেন ওয়েব মেইল কোম্পানি হটমেইলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। মুম্বাইয়ের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী সঞ্জয় নারাংয়ের সঙ্গেও নাম জড়ায় সুস্মিতার। বিক্রম ভাটের সঙ্গে প্রেম ভাঙার পর অল্প কিছুদিন সঞ্জয়ের সঙ্গে প্রেম ছিল অভিনেত্রীর।

প্রাক্তন আইপিএল মহাকর্তা ললিত মোদির সঙ্গে একাধিক স্থানে ঘনিষ্ঠতার ছবি প্রকাশ হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

মাস কয়েক আগেই আলোচনায় উঠেছিল এই বলিউড সুন্দরীর ব্যক্তিগত জীবন। বয়সে প্রায় ১২ বছরের ছোট রোহমান শলের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সুস্মিতার নাম জুড়েছিল প্রাক্তন আইপিএল মহাকর্তা ললিত মোদির সঙ্গে। অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছিল, শেষ পর্যন্ত ললিত মোদীর গলায় মালা দিচ্ছেন সুস্মিতা? যদিও সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে এই প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী পরিষ্কার জানিয়েছেন, তিনি একাই আছেন। দুই মেয়ের সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট করে সুস্মিতা লিখেছিলেন, ‘বিয়ে নয়। আংটিও (বাগদানের সূচক) নয়। নিঃশর্ত ভালোবাসা আমায় ঘিরে রেখেছে। অনেক ব্যাখ্যা দেওয়া হলো। এবার কাজে ফেরা যাক।’

১৪ জুলাইয়ের পর আর কোনো পোস্টে একসঙ্গে দেখা যায়নি ললিত-সুস্মিতাকে।

বিচ্ছেদের পরও রোহমান-সুস্মিতাকে একাধিক স্থানে একসঙ্গে দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে বিচ্ছেদের পর একাধিক জায়গায় একসঙ্গে দেখা গেছে রোহমান-সুস্মিতাকে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এক পরিবারের মতো দেখা গেছে দুই কন্যাসহ সুস্মিতা ও তাঁর প্রাক্তন সঙ্গী রোহমানকে।

বাবা বিমানবাহিনীতে ছিলেন, যার কারণে তিনি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা এয়ারফোর্স গোল্ডেন জুবিলি ইনস্টিটিউটে করেছিলেন। দিল্লির এয়ারফোর্স স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর তেলেঙ্গানার জনপ্রিয় কলেজ সেন্ট আনা থেকে পড়াশোনা শেষ করেন।

এসবের মধ্যেই দীর্ঘ বিরতির পর ফের পর্দায় দেখা যাবে সুস্মিতাকে। আত্মজীবনীমূলক ওয়েব সিরিজ ‘তালি’তে মহারাষ্ট্রের রূপান্তরকামী আন্দোলনের অন্যতম মুখ গৌরী সাওয়ান্তের ভূমিকায় অভিনয় করছেন তিনি। পরিচালনার দায়িত্বে মারাঠি নির্মাতা রবি যাদব। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কবিতা নিয়ে অর্ণবের নতুন গানের অ্যালবাম

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শায়ান চৌধুরী অর্ণব ছবি: সংগৃহীত
শায়ান চৌধুরী অর্ণব ছবি: সংগৃহীত

কবিতা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছাটা তাঁর অনেক দিনের। শায়ান চৌধুরী অর্ণব চাইছিলেন কবিতায় সুর দিয়ে তৈরি করবেন গান। কাজটি তিনি শুরু করেছিলেন বেশ আগে। সব গুছিয়ে উঠতে কিছুটা সময় লাগল। অবশেষে প্রায় ১০ বছর পর মৌলিক গানের পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম প্রকাশ করছেন অর্ণব। ৩০ অক্টোবর আসবে তাঁর নতুন অ্যালবাম ‘ভাল্লাগে না’। প্রকাশ করছে আধখানা মিউজিক।

জানা গেছে, ৮টি গান নিয়ে সাজানো হয়েছে এই অ্যালবাম। এর কিছু গান তৈরি হয়েছে জনপ্রিয় কবিদের কবিতা থেকে, বাকিগুলো অর্ণব ও তাঁর বন্ধুরা লিখেছেন। জীবনানন্দ দাশ, শ্রীজাত, নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়সহ দুই বাংলার বিভিন্ন কবির কবিতা নিয়ে গান তৈরি করেছেন তিনি। সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব। ভাল্লাগে না অ্যালবামের গানগুলো প্রকাশ পাবে অর্ণবের অফিশিয়াল স্পটিফাই চ্যানেলে। পরবর্তী সময়ে গানগুলো ভিডিও আকারে প্রকাশের পরিকল্পনাও রয়েছে।

অ্যালবাম প্রসঙ্গে অর্ণব বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর পর মৌলিক গানের পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম আসছে আমার। ভীষণ উচ্ছ্বসিত এই কাজটা নিয়ে। কবিতা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা ছিল অনেক দিনের। আরও আছে আমার বন্ধু তৌফিকের লেখা গান, রাজীবের লেখা গান। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।’

পূর্ণাঙ্গ অ্যালবামের চেয়ে শিল্পীরা ইদানীং একক গানই প্রকাশ করেন বেশি। কারণ, অ্যালবামের তুলনায় সিঙ্গেল গানে এখন শ্রোতাদের আগ্রহ বেশি। অর্ণবও স্বীকার করেন সেটা। তবু অ্যালবামের দিকেই তাঁর আগ্রহ বেশি। কারণ হিসেবে অর্ণব বলেন, ‘আমার মনে হয় সিঙ্গেল গানে শিল্পীকে চেনা যায় না। শিল্পীর কাজ সময়কে তুলে ধরা। অ্যালবামে সেটা ভালো হয়। অনেকেই মনে করেন, মানুষ চায় না বলে অ্যালবাম বানিয়ে লাভ নেই। তবে স্পেশাল প্রজেক্ট ছাড়া সিঙ্গেল গানের মানে নেই। একটা ছবি দিয়ে যেমন এক্সিবিশন হয় না, তেমনি শিল্পীকেও চেনা যায় না। আমি ছবি আঁকার সঙ্গে গানকে মেলাই বারবার।’

২০০৫ সালে প্রকাশ পায় অর্ণবের প্রথম অ্যালবাম ‘চাই না ভাবিস’। এরপর প্রকাশ করেছেন ‘হোক কলরব’ (২০০৬), ‘ডুব’ (২০০৮), ‘অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস লাইভ’ (২০০৯), ‘রোদ বলেছে হবে’ (২০১০), ‘আধেক ঘুমে’ (২০১২), ‘খুব ডুব’ (২০১৫), ‘অন্ধ শহর’ (নতুন-পুরোনো মিলিয়ে, ২০১৭) এবং ‘অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস ২’ (রিমেক, ২০২২)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইন্ডাস্ট্রিতে বৈষম্যের ব্যাপারে মুখ খুললেন ফারিণ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
তাসনিয়া ফারিণ ।	ছবি: সংগৃহীত
তাসনিয়া ফারিণ । ছবি: সংগৃহীত

ভিসা না পাওয়ায় দেবের সঙ্গে ‘প্রজাপতি ২’ সিনেমাটি করা হয়নি তাসনিয়া ফারিণের। সে সুযোগ হারিয়ে খানিকটা আশাহত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। তবে সুযোগ আরেকটি এসেছে। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর নতুন সিনেমায় অভিনয়ের কথা চলছে অনেক দিন ধরে। এতে চঞ্চল চৌধুরীরও থাকার কথা রয়েছে। সে সিনেমা নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে কলকাতায় গেছেন ফারিণ। এবার আর ভিসা জটিলতা হয়নি।

কলকাতায় গিয়ে কোয়েল মল্লিকের ‘স্বার্থপর’ সিনেমার প্রিমিয়ারেও চঞ্চল ও অনিরুদ্ধের সঙ্গে হাজির হয়েছিলেন ফারিণ। কলকাতায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দিচ্ছেন। সাধারণত দেশে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় না ফারিণকে। তবে আনন্দবাজার পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিতে নারী-পুরুষের বৈষম্য নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।

তাসনিয়া ফারিণ বলেন, ‘আমার লড়াই বা যাত্রাপথ খুব কঠিন ছিল। আমাদের এক টাকা পারিশ্রমিক বাড়াতে অনেকটা পথ পেরোতে হয়। তবে একটা নতুন নায়ক দুটো সিনেমা করেই পারিশ্রমিক বাড়িয়ে ফেলেন। তাঁর সেই দাবি গ্রাহ্যও হয়। কাজের সময়ের বিষয়টিও আছে। তা হলে আমরা কোথায় এগোলাম? নারীকেন্দ্রিক সিনেমার বেলাতেও নায়িকা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ, ক্লিশে। হয় নারী নির্যাতন, নয় নারীর অধিকার। তার বাইরে আমাদের কেউ বের করতেই চান না। নারীর কাজ, তাঁর লড়াই নিয়ে সিনেমা হয় না। অথচ, সেই সিনেমা ভালো ব্যবসা না করলে, তখন দোষ দেওয়া হয়—নারীকেন্দ্রিক সিনেমা বলেই চলল না। তুমি নারীকেন্দ্রিক সিনেমাকে সেই বাজেট দিচ্ছ না। হিট হওয়ার মতো গল্প দিচ্ছ না। পুরুষের ক্ষেত্রে কিন্তু এসবের বিন্দুমাত্র খামতি নেই।’

বিয়ে নিয়েও কথা বলেছেন ফারিণ। একটা সময় মনে করা হতো, বিয়ে করলেই নায়িকাদের ক্যারিয়ার শেষ। সেই পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে এখন। ফারিণ বলেন, ‘বিয়ের সঙ্গে অভিনয়ের সত্যিই বিরোধ নেই। একজন নায়িকা কত বছর বয়সে বিয়ে করবেন, সেটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে কেন? আমার সঠিক সময় কোনটা, সেটা আমি ঠিক করব। আমি তো দেখছি, বিয়ের পর আমার কাজ বেড়েছে। হলিউড থেকে শুরু করে আমাদের দেশ—নায়িকার বিয়ে নিয়ে আর কেউ মাথা ঘামান না।’

টিভি নাটক দিয়ে পরিচিতি পেলেও ইদানীং ছোট পর্দায় অনেকটাই অনুপস্থিত ফারিণ। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, নাটকে মনের মতো চরিত্র পাচ্ছেন না বলেই বড় পর্দায় মনোযোগী হয়েছেন। ফারিণ বলেন, ‘আমি যখন ছোট পর্দায় কাজ করেছি, তখন সিনেমায় এমন কোনো প্রস্তাব পাইনি যেটা রাজি হওয়ার মতো। যখন অতনু ঘোষের ‘‘আরো এক পৃথিবী’’ সিনেমায় কাজ করি, তখনো ছোট পর্দায় অভিনয় করেছি। এখন কী হয়েছে, ছোট পর্দায় নতুন করে আবিষ্কার করার কিছু নেই। সেই খিদে মেটাতে পারে বড় পর্দা। সেই জন্য দুই দেশের বড় পর্দায় নিজেকে দেখতে চাইছি। সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমারও সুযোগ আসছে। তার মানে এটা নয়, আমি আর ছোট পর্দায় অভিনয় করব না। ওই মাধ্যমই তো আমাকে তাসনিয়া ফারিণ বানিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অবশেষে আসছে শিরোনামহীনের গান ‘এই অবেলায় ২’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শিরোনামহীন ব্যান্ডের সদস্যরা	ছবি: সংগৃহীত
শিরোনামহীন ব্যান্ডের সদস্যরা ছবি: সংগৃহীত

প্রস্তুতি অনেক দিনের। গান রেডি ছিল। মিউজিক ভিডিওর শুটিংও সম্পন্ন। তবে স্পনসরের অভাবে ‘এই অবেলায় ২’ মুক্তি দিতে পারছিল না শিরোনামহীন। গত বছরের অক্টোবরে ব্যান্ডটির দলনেতা জিয়াউর রহমান জানিয়েছিলেন, স্পনসর ছাড়া এত বিশাল আয়োজনের গান প্রকাশ করা কোনো ব্যান্ডের পক্ষে সম্ভব নয়। স্পনসর পেলেই এই অবেলায় ২ মুক্তি দেবেন তাঁরা। সে সমস্যা মিটেছে এত দিনে। তাই এই অবেলায় ২ গানটির মুক্তির তারিখ জানিয়ে দিল শিরোনামহীন। আগামী ৪ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে গানটি।

২০১৯ সালে ‘এই অবেলায়’ দিয়ে নতুন করে জেগে উঠেছিল ব্যান্ড শিরোনামহীন। নতুন ভোকাল নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করতে যখন হিমশিম খাচ্ছিল দলটি, তখন এই অবেলায় গানটি ছিল শিরোনামহীনের জন্য অক্সিজেনের মতো। ছয় বছর পর এ গানের সিকুয়েল নিয়ে আসছে শিরোনামহীন। বাংলার পাশাপাশি তৈরি হয়েছে গানটির ইংরেজি ভার্সন। শিরোনামহীনের পঞ্চম অ্যালবাম বাতিঘরের শেষ গান হিসেবে মুক্তি পাচ্ছে এটি।

এই অবেলায় ২ গানটি লিখেছেন জিয়াউর রহমান, সুর করেছেন কাজী আহমেদ শাফিন। ভিডিও নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। শুটিং হয়েছে থাইল্যান্ডে। মডেল হয়েছেন নীল হুরেরজাহান। নতুন গান নিয়ে জিয়াউর রহমান বলেন, ‘এই অবেলায় প্রকাশের পর শ্রোতামহলে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। গানটির সিকুয়েল হোক, সেটা সবাই চাইছিল। এর আগে আমাদের প্রথম অ্যালবামের হাসিমুখ গানের বেলায়ও এমনটা হয়েছিল। এই অবেলায় নিয়ে শ্রোতাদের ব্যাপক চাহিদা আমরা টের পাচ্ছিলাম। বাতিঘর অ্যালবামের পরিকল্পনার সময় তাই গানটির সিকুয়েল নিয়ে ভাবি। মুক্তির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আছে গানটি। ভিডিও ধারণ করা হয়েছে থাইল্যান্ডের কো খাম, কো মাখ ও কো চ্যাং আইল্যান্ডে। দারুণ একটা গল্প আছে গানের ভিডিওতে।’

এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সন নিয়ে জিয়া বলেন, ‘এই অবেলায় গানটি বিদেশি ভাষার মানুষও পছন্দ করেছে। ইউটিউব চ্যানেলে অনেক মন্তব্য দেখেছি ইংরেজি, স্প্যানিশসহ বিভিন্ন ভাষায় লেখা—‘‘আমি গানের ভাষা বুঝতে পারছি না। কিন্তু গানটির সুর খুব ভালো লাগছে।” তাই এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সন করা।’

বাংলার সঙ্গে এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সনও মুক্তি পাবে।

অন্যদিকে ব্যান্ডটির ইউটিউব চ্যানেলে গতকাল সন্ধ্যায় মুক্তি পেয়েছে শিরোনামহীনের বাতিঘর অ্যালবামের নবম গান ‘ক্লান্ত কফি শপ’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোশাররফের সঙ্গে অভিনয়ের ইচ্ছা রুদ্রনীল ঘোষের

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
হুব্বা শ্যামল চরিত্রে রুদ্রনীল ঘোষ (বাঁয়ে) ও মোশাররফ করিম	ছবি: সংগৃহীত
হুব্বা শ্যামল চরিত্রে রুদ্রনীল ঘোষ (বাঁয়ে) ও মোশাররফ করিম ছবি: সংগৃহীত

নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে পশ্চিমবঙ্গে উত্থান ঘটে হুগলির ডন খ্যাত হুব্বা শ্যামল নামে এক গ্যাংস্টারের। হুগলি জেলার অপরাধ জগতের একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন এই শ্যামল। তাঁর জীবনকে বড় পর্দায় এনেছেন টালিউড নির্মাতা ব্রাত্য বসু। ‘হুব্বা’ নামের এ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। গত ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায় সিনেমাটি।

একই চরিত্র আবার আসছে পর্দায়। এবার সিনেমা নয়, ওয়েব সিরিজ আকারে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভ বাংলায় ৩১ অক্টোবর মুক্তি পাবে ‘গণশত্রু: বাংলার আতঙ্ক’। পাঁচজন পরিচালক পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সময়ের পাঁচজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্র নিয়ে বানিয়েছেন সিরিজটি। এতে রুদ্রনীল ঘোষ অভিনয় করেছেন হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে নির্মিত পর্বে। যেহেতু এর আগে চরিত্রটি মোশাররফ করিম করেছেন, তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠল, মোশাররফের চেয়ে এ চরিত্রে কতটা আলাদা রুদ্রনীলের অভিনয়?

রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, ‘মোশাররফ করিম যেভাবে হুব্বা শ্যামলকে পোট্রে করার সুযোগ পেয়েছেন, সেটা পরিচালক ব্রাত্য বসুর নির্দেশে। মোশাররফ করিম অন্য দেশের মানুষ। হুব্বা শ্যামলকে ব্যক্তিগতভাবে অতটা জানা তাঁর পক্ষে কঠিন ছিল। তিনি যতটা জেনেছেন, সেটা স্ক্রিপ্ট থেকে এবং পরিচালকের কথা অনুযায়ী। আর আমার এ ক্ষেত্রে সুবিধা হয়েছে, এ চরিত্রের গল্প ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। তাই স্ক্রিপ্টের বাইরেও অনেকটা ধারণা আগে থেকেই আছে। তাই দুটোর মধ্যে কোনো তুলনা চলে না। তবে গণশত্রু ওয়েব সিরিজে হুব্বা শ্যামলের উপস্থাপন অনেক বেশি তথ্যনিষ্ঠ হয়েছে।’

মোশাররফ করিম অভিনীত ‘হুব্বা’ দেখেছেন রুদ্রনীল। সিনেমাটি আরও ভালো হতে পারত বলে মত তাঁর। অভিনেতা বলেন, ‘দেখে মনে হয়েছিল, আরেকটু অন্য রকম হলে ভালো হতো। চরিত্রটি জীবন্ত করে তোলার ক্ষেত্রে, এত ভালো একজন অভিনেতাকে যদি চরিত্রের উপাদানগুলো ঠিক করে দেওয়া হতো, তাহলে হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে তৈরি সিনেমাটি ব্লকবাস্টার হতে পারত। কিন্তু হয়নি। তার মানে কোথাও একটা ফাঁক থেকে গিয়েছিল। এটা অভিনেতার দুর্বলতা নয়।’

মোশাররফ করিমকে অনেক পছন্দ করেন রুদ্রনীল। তাঁর সঙ্গে অভিনয়ের আগ্রহ প্রকাশ করে অভিনেতা বলেন, ‘মোশাররফ করিম আমার প্রিয় অভিনেতা এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমরা দেখা করেছি, কথাও বলেছি বহুবার। আমাদের দুজনেরই ইচ্ছা আছে একসঙ্গে কাজ করার। কিছু পরিচালক চেষ্টা করছেন যাতে সেটা হয়। বিভিন্ন ধরনের চরিত্র বিভিন্ন এনার্জিতে করার ক্ষেত্রে আমাদের দুজনেরই নাকি অদ্ভুত ধরনের মিল আছে। এটা লোকে বলে। আমরা কেউ কারও দ্বারা প্রভাবিত একদমই নই। দুজনে বেড়ে উঠেছি দুটি দেশে। হুব্বা সিনেমাটি করার সময় মোশাররফ ভাইয়ের প্রতি আমার শুভেচ্ছা ছিল। একই চরিত্র যখন আমি করছি, নিশ্চয়ই মোশাররফ ভাইয়েরও আমার প্রতি সমান শুভেচ্ছা থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত