Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

আমরা আমাদের গান নিয়ে আছি, গানেই থাকব

সাইদ হাসান টিপু। ছবি: সংগৃহীত

১৯৮৫ সালে খুলনায় যাত্রা শুরু হয়েছিল অবসকিওর ব্যান্ডের। আগামী মাসে চার দশক পূর্ণ করবে ব্যান্ডটি। এ উপলক্ষে প্রকাশ পাচ্ছে অবসকিওরের ১৪তম অ্যালবাম ‘রিইনকার্নেশন’। চার দশকপূর্তি ও নতুন অ্যালবাম নিয়ে অবসকিওরের দলনেতা ও গায়ক সাইদ হাসান টিপুর সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ

শিহাব আহমেদ 

অবসকিওরের নতুন অ্যালবাম ‘রিইনকার্নেশন’ কবে আসবে?

আগামী ২৬ মার্চ বিশ্বজুড়ে রিলিজ হচ্ছে ‘রিইনকার্নেশন’। এটা আসলে কম্পাইলেশন। চার দশকের দীর্ঘ যাত্রায় আমাদের ১৩টি অ্যালবাম বের হয়েছে। সেখান থেকে বাছাই করে ১০টি গান নিয়ে সাজানো হয়েছে অ্যালবামটি। প্রতিটি গান নতুনভাবে রেকর্ডিং, কম্পোজিশন করা হয়েছে। প্রোডাকশনেও থাকছে আধুনিকতার ছাপ। শ্রোতারা হাইরাইজ সাউন্ডে গানগুলো শোনার সুযোগ পাবেন। সব মিলিয়ে এই অ্যালবাম নব্বইয়ের দশকের শ্রোতাদের তো বটেই, নতুন প্রজন্মের শ্রোতাদেরও মুগ্ধ করবে। রিইনকার্নেশন এক কথায় পুরোনো স্মৃতি আর নতুন আবেগের মেলবন্ধন। এই অ্যালবাম ব্যান্ডের জন্য এক নতুন যাত্রার শুরু, যেখানে তারা তাদের অতীতকে রোমন্থন করছে আর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

অ্যালবাম প্রকাশ ছাড়া চার দশকপূর্তি উপলক্ষে অবসকিওরের আর কোনো পরিকল্পনা আছে কি?

অবসকিওরের স্পন্সর খোঁজার সময় নেই। চার দশকপূর্তি নিয়ে বড় একটা অনুষ্ঠান করতে গেলে স্পন্সর লাগে। সেটার পেছনে দৌড়ানোর সময় নেই। সুতরাং আমরা আমাদের গান নিয়েই আছি, গানেই থাকব। আর বর্তমান সময়ে মিউজিক কেন, কোনো কিছুই তো ঠিকমতো হচ্ছে না। এই অ্যালবামের কাজ আগেই শেষ হয়েছে বিধায় প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। এই গানগুলো নিয়েই হয়তো ভাইনাল অ্যালবাম প্রকাশ পাবে এই বছরের শেষ নাগাদ।

অবসকিওরের চার দশকের পথচলাটা কেমন ছিল?

সত্যি বলতে, কখন যে সময় চলে গেল টেরই পেলাম না। মিউজিক ভালোবাসলে সময়টা বোঝা যায় না। আমাদের যে চার দশক হয়ে যাচ্ছে, সেটা ওইভাবে কখনো হিসাব করা হয়নি। কাজ করছি, নতুন কিছু করার চেষ্টা করছি। তবে চার দশক স্পর্শ করা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তির। এ কারণে বছরটি স্মরণীয় করে রাখতেই আমাদের অ্যালবামের পরিকল্পনা। চার দশকের জার্নি নিয়ে যদি বলি, দীর্ঘ এ সফরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসতে হয়েছে। তবে আমাদের মূল চালিকাশক্তি ছিল গান। সব সময় আমাদের উৎসাহ জুগিয়েছে শ্রোতাদের ভালোবাসা। ১৯৮৫ সালে খুলনায় অবসকিওরের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমি ছাড়া সেই সময়ের কেউ নেই এখন। সবাই নতুন সদস্য। দীর্ঘ এই পথচলায় প্রচুর সদস্য পরিবর্তন হয়েছে, আমাদের দুজন সদস্য মারা গেছেন। সেই অধ্যায়টাও পেরিয়ে এসেছি আমরা। এখন যে লাইনআপটা আছে, সেটা গত ১০ বছর ধরে কাজ করছে।

যে স্বপ্ন নিয়ে অবসকিওরের যাত্রা শুরু করেছিলেন, সেটা কতখানি পূরণ হয়েছে?

আমাদের গান মানুষ শুনবে, এটাই ছিল স্বপ্ন। ১৯৮৬ সালে প্রথম অ্যালবাম প্রকাশের পর শ্রোতাদের সেই ফিডব্যাক পেয়েছিলাম। বাংলাদেশের মানুষ আমাদের যে পরিমাণ ভালোবাসা দিয়েছেন, তার প্রতিদান দেওয়ার ক্ষমতা নেই। গান দিয়েই সেই প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আপনারা যখন শুরু করেছিলেন সে সময় অডিও ক্যাসেটের যুগ। সময়ের বিবর্তনে এখন গান প্রকাশ পাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া ও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে। এই পরিবর্তনটা কীভাবে দেখেন?

শুধু এই পরিবর্তন নয়, সামনের দিকে এগোতে হলে সব ধরনের পরিবর্তনকে অ্যাডাপ্ট করতে হবে। সবকিছুর ভালো দিক আছে, খারাপ দিকও আছে। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে যে পরিবর্তন হয়েছে সেটারও ভালো ও খারাপ দিক আছে। আমি যেটা মিস করি সেটা হলো সলিড একটা জিনিস হাতে পাওয়া। একটি সিডি অথবা ক্যাসেট হাতে পেলাম, উল্টে-পাল্টে দেখলাম, ক্যাসেটের কাভার পড়লাম; সেটার আলাদা মজা ছিল। এই বিষয়গুলো খুব মিস করি। এখন স্ট্রিমিং মিডিয়াতেই গান প্রকাশ হচ্ছে। বিদেশি শিল্পীরাও তাঁদের গানগুলো সিঙ্গেলস অথবা অ্যালবাম আকারে স্ট্রিমিং মিডিয়াতে দিচ্ছেন। পাশাপাশি ভাইনাল ফিরে এসেছে। বড় তারকাদের অ্যালবামগুলো ভাইনাল আকারে আসছে। সেই জন্যই আমাদের ভাইনাল নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা। সেটা মোটামুটি কমপ্লিট করেছি, এই বছরের শেষেই হয়তো প্রকাশ করতে পারব। সব মিলিয়ে আমার মনে হয় গান শোনা মানুষের জন্য এখন অনেক সহজ হয়েছে।

অবসকিওরের মতো দেশের বেশির ভাগ জনপ্রিয় ব্যান্ড ঢাকার বাইরে থেকে উঠে এসেছে। এখন ঢাকার বাইরে ব্যান্ডসংগীতের অবস্থা কেমন দেখছেন?

ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরেই ব্যান্ডচর্চা বেশি হচ্ছে। সবার চেষ্টা আছে, প্রতিভাও আছে। সময়টা ভালো নয় বলে কোনো কিছুই হয়তো জানতে পারছি না কিংবা আমাদের সামনে আসছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কবিতা নিয়ে অর্ণবের নতুন গানের অ্যালবাম

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শায়ান চৌধুরী অর্ণব ছবি: সংগৃহীত
শায়ান চৌধুরী অর্ণব ছবি: সংগৃহীত

কবিতা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছাটা তাঁর অনেক দিনের। শায়ান চৌধুরী অর্ণব চাইছিলেন কবিতায় সুর দিয়ে তৈরি করবেন গান। কাজটি তিনি শুরু করেছিলেন বেশ আগে। সব গুছিয়ে উঠতে কিছুটা সময় লাগল। অবশেষে প্রায় ১০ বছর পর মৌলিক গানের পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম প্রকাশ করছেন অর্ণব। ৩০ অক্টোবর আসবে তাঁর নতুন অ্যালবাম ‘ভাল্লাগে না’। প্রকাশ করছে আধখানা মিউজিক।

জানা গেছে, ৮টি গান নিয়ে সাজানো হয়েছে এই অ্যালবাম। এর কিছু গান তৈরি হয়েছে জনপ্রিয় কবিদের কবিতা থেকে, বাকিগুলো অর্ণব ও তাঁর বন্ধুরা লিখেছেন। জীবনানন্দ দাশ, শ্রীজাত, নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়সহ দুই বাংলার বিভিন্ন কবির কবিতা নিয়ে গান তৈরি করেছেন তিনি। সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব। ভাল্লাগে না অ্যালবামের গানগুলো প্রকাশ পাবে অর্ণবের অফিশিয়াল স্পটিফাই চ্যানেলে। পরবর্তী সময়ে গানগুলো ভিডিও আকারে প্রকাশের পরিকল্পনাও রয়েছে।

অ্যালবাম প্রসঙ্গে অর্ণব বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর পর মৌলিক গানের পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম আসছে আমার। ভীষণ উচ্ছ্বসিত এই কাজটা নিয়ে। কবিতা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা ছিল অনেক দিনের। আরও আছে আমার বন্ধু তৌফিকের লেখা গান, রাজীবের লেখা গান। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।’

পূর্ণাঙ্গ অ্যালবামের চেয়ে শিল্পীরা ইদানীং একক গানই প্রকাশ করেন বেশি। কারণ, অ্যালবামের তুলনায় সিঙ্গেল গানে এখন শ্রোতাদের আগ্রহ বেশি। অর্ণবও স্বীকার করেন সেটা। তবু অ্যালবামের দিকেই তাঁর আগ্রহ বেশি। কারণ হিসেবে অর্ণব বলেন, ‘আমার মনে হয় সিঙ্গেল গানে শিল্পীকে চেনা যায় না। শিল্পীর কাজ সময়কে তুলে ধরা। অ্যালবামে সেটা ভালো হয়। অনেকেই মনে করেন, মানুষ চায় না বলে অ্যালবাম বানিয়ে লাভ নেই। তবে স্পেশাল প্রজেক্ট ছাড়া সিঙ্গেল গানের মানে নেই। একটা ছবি দিয়ে যেমন এক্সিবিশন হয় না, তেমনি শিল্পীকেও চেনা যায় না। আমি ছবি আঁকার সঙ্গে গানকে মেলাই বারবার।’

২০০৫ সালে প্রকাশ পায় অর্ণবের প্রথম অ্যালবাম ‘চাই না ভাবিস’। এরপর প্রকাশ করেছেন ‘হোক কলরব’ (২০০৬), ‘ডুব’ (২০০৮), ‘অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস লাইভ’ (২০০৯), ‘রোদ বলেছে হবে’ (২০১০), ‘আধেক ঘুমে’ (২০১২), ‘খুব ডুব’ (২০১৫), ‘অন্ধ শহর’ (নতুন-পুরোনো মিলিয়ে, ২০১৭) এবং ‘অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস ২’ (রিমেক, ২০২২)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইন্ডাস্ট্রিতে বৈষম্যের ব্যাপারে মুখ খুললেন ফারিণ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
তাসনিয়া ফারিণ ।	ছবি: সংগৃহীত
তাসনিয়া ফারিণ । ছবি: সংগৃহীত

ভিসা না পাওয়ায় দেবের সঙ্গে ‘প্রজাপতি ২’ সিনেমাটি করা হয়নি তাসনিয়া ফারিণের। সে সুযোগ হারিয়ে খানিকটা আশাহত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। তবে সুযোগ আরেকটি এসেছে। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর নতুন সিনেমায় অভিনয়ের কথা চলছে অনেক দিন ধরে। এতে চঞ্চল চৌধুরীরও থাকার কথা রয়েছে। সে সিনেমা নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে কলকাতায় গেছেন ফারিণ। এবার আর ভিসা জটিলতা হয়নি।

কলকাতায় গিয়ে কোয়েল মল্লিকের ‘স্বার্থপর’ সিনেমার প্রিমিয়ারেও চঞ্চল ও অনিরুদ্ধের সঙ্গে হাজির হয়েছিলেন ফারিণ। কলকাতায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দিচ্ছেন। সাধারণত দেশে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় না ফারিণকে। তবে আনন্দবাজার পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিতে নারী-পুরুষের বৈষম্য নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।

তাসনিয়া ফারিণ বলেন, ‘আমার লড়াই বা যাত্রাপথ খুব কঠিন ছিল। আমাদের এক টাকা পারিশ্রমিক বাড়াতে অনেকটা পথ পেরোতে হয়। তবে একটা নতুন নায়ক দুটো সিনেমা করেই পারিশ্রমিক বাড়িয়ে ফেলেন। তাঁর সেই দাবি গ্রাহ্যও হয়। কাজের সময়ের বিষয়টিও আছে। তা হলে আমরা কোথায় এগোলাম? নারীকেন্দ্রিক সিনেমার বেলাতেও নায়িকা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ, ক্লিশে। হয় নারী নির্যাতন, নয় নারীর অধিকার। তার বাইরে আমাদের কেউ বের করতেই চান না। নারীর কাজ, তাঁর লড়াই নিয়ে সিনেমা হয় না। অথচ, সেই সিনেমা ভালো ব্যবসা না করলে, তখন দোষ দেওয়া হয়—নারীকেন্দ্রিক সিনেমা বলেই চলল না। তুমি নারীকেন্দ্রিক সিনেমাকে সেই বাজেট দিচ্ছ না। হিট হওয়ার মতো গল্প দিচ্ছ না। পুরুষের ক্ষেত্রে কিন্তু এসবের বিন্দুমাত্র খামতি নেই।’

বিয়ে নিয়েও কথা বলেছেন ফারিণ। একটা সময় মনে করা হতো, বিয়ে করলেই নায়িকাদের ক্যারিয়ার শেষ। সেই পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে এখন। ফারিণ বলেন, ‘বিয়ের সঙ্গে অভিনয়ের সত্যিই বিরোধ নেই। একজন নায়িকা কত বছর বয়সে বিয়ে করবেন, সেটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে কেন? আমার সঠিক সময় কোনটা, সেটা আমি ঠিক করব। আমি তো দেখছি, বিয়ের পর আমার কাজ বেড়েছে। হলিউড থেকে শুরু করে আমাদের দেশ—নায়িকার বিয়ে নিয়ে আর কেউ মাথা ঘামান না।’

টিভি নাটক দিয়ে পরিচিতি পেলেও ইদানীং ছোট পর্দায় অনেকটাই অনুপস্থিত ফারিণ। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, নাটকে মনের মতো চরিত্র পাচ্ছেন না বলেই বড় পর্দায় মনোযোগী হয়েছেন। ফারিণ বলেন, ‘আমি যখন ছোট পর্দায় কাজ করেছি, তখন সিনেমায় এমন কোনো প্রস্তাব পাইনি যেটা রাজি হওয়ার মতো। যখন অতনু ঘোষের ‘‘আরো এক পৃথিবী’’ সিনেমায় কাজ করি, তখনো ছোট পর্দায় অভিনয় করেছি। এখন কী হয়েছে, ছোট পর্দায় নতুন করে আবিষ্কার করার কিছু নেই। সেই খিদে মেটাতে পারে বড় পর্দা। সেই জন্য দুই দেশের বড় পর্দায় নিজেকে দেখতে চাইছি। সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমারও সুযোগ আসছে। তার মানে এটা নয়, আমি আর ছোট পর্দায় অভিনয় করব না। ওই মাধ্যমই তো আমাকে তাসনিয়া ফারিণ বানিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অবশেষে আসছে শিরোনামহীনের গান ‘এই অবেলায় ২’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শিরোনামহীন ব্যান্ডের সদস্যরা	ছবি: সংগৃহীত
শিরোনামহীন ব্যান্ডের সদস্যরা ছবি: সংগৃহীত

প্রস্তুতি অনেক দিনের। গান রেডি ছিল। মিউজিক ভিডিওর শুটিংও সম্পন্ন। তবে স্পনসরের অভাবে ‘এই অবেলায় ২’ মুক্তি দিতে পারছিল না শিরোনামহীন। গত বছরের অক্টোবরে ব্যান্ডটির দলনেতা জিয়াউর রহমান জানিয়েছিলেন, স্পনসর ছাড়া এত বিশাল আয়োজনের গান প্রকাশ করা কোনো ব্যান্ডের পক্ষে সম্ভব নয়। স্পনসর পেলেই এই অবেলায় ২ মুক্তি দেবেন তাঁরা। সে সমস্যা মিটেছে এত দিনে। তাই এই অবেলায় ২ গানটির মুক্তির তারিখ জানিয়ে দিল শিরোনামহীন। আগামী ৪ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে গানটি।

২০১৯ সালে ‘এই অবেলায়’ দিয়ে নতুন করে জেগে উঠেছিল ব্যান্ড শিরোনামহীন। নতুন ভোকাল নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করতে যখন হিমশিম খাচ্ছিল দলটি, তখন এই অবেলায় গানটি ছিল শিরোনামহীনের জন্য অক্সিজেনের মতো। ছয় বছর পর এ গানের সিকুয়েল নিয়ে আসছে শিরোনামহীন। বাংলার পাশাপাশি তৈরি হয়েছে গানটির ইংরেজি ভার্সন। শিরোনামহীনের পঞ্চম অ্যালবাম বাতিঘরের শেষ গান হিসেবে মুক্তি পাচ্ছে এটি।

এই অবেলায় ২ গানটি লিখেছেন জিয়াউর রহমান, সুর করেছেন কাজী আহমেদ শাফিন। ভিডিও নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। শুটিং হয়েছে থাইল্যান্ডে। মডেল হয়েছেন নীল হুরেরজাহান। নতুন গান নিয়ে জিয়াউর রহমান বলেন, ‘এই অবেলায় প্রকাশের পর শ্রোতামহলে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। গানটির সিকুয়েল হোক, সেটা সবাই চাইছিল। এর আগে আমাদের প্রথম অ্যালবামের হাসিমুখ গানের বেলায়ও এমনটা হয়েছিল। এই অবেলায় নিয়ে শ্রোতাদের ব্যাপক চাহিদা আমরা টের পাচ্ছিলাম। বাতিঘর অ্যালবামের পরিকল্পনার সময় তাই গানটির সিকুয়েল নিয়ে ভাবি। মুক্তির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আছে গানটি। ভিডিও ধারণ করা হয়েছে থাইল্যান্ডের কো খাম, কো মাখ ও কো চ্যাং আইল্যান্ডে। দারুণ একটা গল্প আছে গানের ভিডিওতে।’

এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সন নিয়ে জিয়া বলেন, ‘এই অবেলায় গানটি বিদেশি ভাষার মানুষও পছন্দ করেছে। ইউটিউব চ্যানেলে অনেক মন্তব্য দেখেছি ইংরেজি, স্প্যানিশসহ বিভিন্ন ভাষায় লেখা—‘‘আমি গানের ভাষা বুঝতে পারছি না। কিন্তু গানটির সুর খুব ভালো লাগছে।” তাই এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সন করা।’

বাংলার সঙ্গে এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সনও মুক্তি পাবে।

অন্যদিকে ব্যান্ডটির ইউটিউব চ্যানেলে গতকাল সন্ধ্যায় মুক্তি পেয়েছে শিরোনামহীনের বাতিঘর অ্যালবামের নবম গান ‘ক্লান্ত কফি শপ’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোশাররফের সঙ্গে অভিনয়ের ইচ্ছা রুদ্রনীল ঘোষের

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
হুব্বা শ্যামল চরিত্রে রুদ্রনীল ঘোষ (বাঁয়ে) ও মোশাররফ করিম	ছবি: সংগৃহীত
হুব্বা শ্যামল চরিত্রে রুদ্রনীল ঘোষ (বাঁয়ে) ও মোশাররফ করিম ছবি: সংগৃহীত

নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে পশ্চিমবঙ্গে উত্থান ঘটে হুগলির ডন খ্যাত হুব্বা শ্যামল নামে এক গ্যাংস্টারের। হুগলি জেলার অপরাধ জগতের একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন এই শ্যামল। তাঁর জীবনকে বড় পর্দায় এনেছেন টালিউড নির্মাতা ব্রাত্য বসু। ‘হুব্বা’ নামের এ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। গত ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায় সিনেমাটি।

একই চরিত্র আবার আসছে পর্দায়। এবার সিনেমা নয়, ওয়েব সিরিজ আকারে। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভ বাংলায় ৩১ অক্টোবর মুক্তি পাবে ‘গণশত্রু: বাংলার আতঙ্ক’। পাঁচজন পরিচালক পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সময়ের পাঁচজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্র নিয়ে বানিয়েছেন সিরিজটি। এতে রুদ্রনীল ঘোষ অভিনয় করেছেন হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে নির্মিত পর্বে। যেহেতু এর আগে চরিত্রটি মোশাররফ করিম করেছেন, তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠল, মোশাররফের চেয়ে এ চরিত্রে কতটা আলাদা রুদ্রনীলের অভিনয়?

রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, ‘মোশাররফ করিম যেভাবে হুব্বা শ্যামলকে পোট্রে করার সুযোগ পেয়েছেন, সেটা পরিচালক ব্রাত্য বসুর নির্দেশে। মোশাররফ করিম অন্য দেশের মানুষ। হুব্বা শ্যামলকে ব্যক্তিগতভাবে অতটা জানা তাঁর পক্ষে কঠিন ছিল। তিনি যতটা জেনেছেন, সেটা স্ক্রিপ্ট থেকে এবং পরিচালকের কথা অনুযায়ী। আর আমার এ ক্ষেত্রে সুবিধা হয়েছে, এ চরিত্রের গল্প ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। তাই স্ক্রিপ্টের বাইরেও অনেকটা ধারণা আগে থেকেই আছে। তাই দুটোর মধ্যে কোনো তুলনা চলে না। তবে গণশত্রু ওয়েব সিরিজে হুব্বা শ্যামলের উপস্থাপন অনেক বেশি তথ্যনিষ্ঠ হয়েছে।’

মোশাররফ করিম অভিনীত ‘হুব্বা’ দেখেছেন রুদ্রনীল। সিনেমাটি আরও ভালো হতে পারত বলে মত তাঁর। অভিনেতা বলেন, ‘দেখে মনে হয়েছিল, আরেকটু অন্য রকম হলে ভালো হতো। চরিত্রটি জীবন্ত করে তোলার ক্ষেত্রে, এত ভালো একজন অভিনেতাকে যদি চরিত্রের উপাদানগুলো ঠিক করে দেওয়া হতো, তাহলে হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে তৈরি সিনেমাটি ব্লকবাস্টার হতে পারত। কিন্তু হয়নি। তার মানে কোথাও একটা ফাঁক থেকে গিয়েছিল। এটা অভিনেতার দুর্বলতা নয়।’

মোশাররফ করিমকে অনেক পছন্দ করেন রুদ্রনীল। তাঁর সঙ্গে অভিনয়ের আগ্রহ প্রকাশ করে অভিনেতা বলেন, ‘মোশাররফ করিম আমার প্রিয় অভিনেতা এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমরা দেখা করেছি, কথাও বলেছি বহুবার। আমাদের দুজনেরই ইচ্ছা আছে একসঙ্গে কাজ করার। কিছু পরিচালক চেষ্টা করছেন যাতে সেটা হয়। বিভিন্ন ধরনের চরিত্র বিভিন্ন এনার্জিতে করার ক্ষেত্রে আমাদের দুজনেরই নাকি অদ্ভুত ধরনের মিল আছে। এটা লোকে বলে। আমরা কেউ কারও দ্বারা প্রভাবিত একদমই নই। দুজনে বেড়ে উঠেছি দুটি দেশে। হুব্বা সিনেমাটি করার সময় মোশাররফ ভাইয়ের প্রতি আমার শুভেচ্ছা ছিল। একই চরিত্র যখন আমি করছি, নিশ্চয়ই মোশাররফ ভাইয়েরও আমার প্রতি সমান শুভেচ্ছা থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত