গুঞ্জন রহমান

খালিদের প্রতিটি গানই সুরুচির পরিচায়ক। সেই যে ৮০-র পরপর শুরু করলেন গান গাওয়া। ‘চাইম’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে তাঁর গাওয়া প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে সুন্দর কথা আর হৃদয় ছোঁয়া সুরের জন্য। কীর্তনখোলার পারের ছেলে খালিদ নিজেকে বলতেন গাঁয়ের ছেলে। তাঁর ব্যান্ড চাইমও লোকগানের প্রতি বিপুল আগ্রহী ছিল। চাইমের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানটিই তো লোকজ ধাঁচের, ‘নাতি খাতি বেলা গেইলো, শুতি পারলাম না, আহারে সদরুদ্দির মা।’ এই গানটি কোনো চিরায়ত বাংলা লোকগান, নাকি তাঁদের নিজেদেরই (বা চাইমের জন্য অন্য কারও লেখা বা সুর করা) গান, তা আমার জানা নেই। রিলিজ হওয়ার সময় অ্যালবাম কভারে নিশ্চয়ই সে তথ্য লেখা ছিল, আমার এখন আর মনে পড়ছে না। কিন্তু গানের বাণী চিরায়ত লোকগীতিরই প্রমাণ রাখে।
‘বড় চাচার গরু ছুটে লাউয়ের জাংলা খাইলো
চাচা আইসে খালি খালি চাচীরে কেন্ মাইল্লো
সময় কইরে বাড়ির কেউ তো চোহি দ্যাকলো না!
আহারে সদরুদ্দির মা…’
কথাগুলো গ্রামীণ জীবনের চিরায়ত চর্চার এক শাশ্বত নিদর্শন। আবার কীর্তনখোলা নদী নিয়ে অপূর্ব সুন্দর একটি গানও সে সময় উপহার দিয়েছিল চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার অপরূপ এক নমুনা তাঁরা উপস্থাপন করেছিলেন উচ্চশিক্ষা নামের একটি গানে।
পড়ালেখা শেষ করে বেকারত্বের যুগে মোরা
এ কেমন অভিশাপ বলো
কেউ নেতা বনে যায়
কেউ প্রেমের তরী বায়
ডিমোশনে হয় টলোমলো
এ কেমন অভিশাপ বলো...
এ রকম কথার এবং কীর্তন আঙ্গিকের প্যারোডি সুরে তৈরি সেই গান সেকালে চিন্তার খোরাক জুগিয়েছিল মননশীল যেকোনো মানুষকে।
আবার, বাংলার নারীদের চিরায়ত দুঃখ শরীরের কালো রং নিয়েও যুগোপযোগী গান করেছিলেন চাইম ব্যান্ডের খালিদ। ‘কালো মাইয়া কালো বইলা কইরো না কেউ হেলা...।’ এ রকম কথার সেই গান এক দুঃসহ সামাজিক সংকটের কথা তরুণ শ্রোতাদের ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে। তাদের আরেকটি গান, ‘ও আমার হাঁসের ছাও রে...’ গ্রামীণ জীবনের আরেক নিত্য ঘটনা তুলে এনেছে হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে। এসব হলো ব্যান্ড মিউজিকের ভরা যৌবনে বাংলা লোকজ সংগীতকে দেয়া চাইমের অবদান, খালিদ সাইফুল্লাহ্র অবদান।
সোলস, ফিডব্যাক ও মাইলসের পরেই গড়ে ওঠে চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিটিভির ব্যান্ড শোতে অংশ নেয়ার মাধ্যমে রাতারাতি সারা দেশে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দলটি। সে সময়েই নজর কাড়েন খালিদ, তাঁর দরাজ কণ্ঠ আর স্টাইলিশ পারফরমেন্সের জন্য। জিনস, টি–শার্ট, কেডস, সানগ্লাসের সঙ্গে লম্বা চুলের গেটআপে নিজের একটা পারফেক্ট রকস্টার ইমেজ গড়ে তুলতে সক্ষম হন তিনি। সেই তিরাশি-চুরাশির দিকে তাঁর স্টাইলিশ পারফরম্যান্স অনুকরণ করতেন সমকালীন অনেক ব্যান্ড তারকা। কেবল দর্শনধারীই নন, তিনি ছিলেন প্রকৃত গুণবিচারীও। সে কালে সোলসের তপন চৌধুরী ও নাসিম আলী খান, ফিডব্যাকের মাকসুদ আর চাইমের খালিদ— এঁরাই ছিলেন বাংলা ব্যান্ডের আইকনিক ভোকাল। মনে রাখতে হবে, জেমস তখনো নজর কাড়তে পারেননি, আইয়ুব বাচ্চু সেভাবে গাইতে শুরুই করেননি, পার্থ বড়ুয়া এলেন আরও পরে, মাইলসের হামিন ও শাফিন তখনো বাংলা গান করছেন না। কোনো প্রকার ফাঁকি ঝুঁকিহীন, একেবারে তৈরি গলায় গান করতেন খালিদ। কণ্ঠে যেমন ছিল আবেগ, তেমনি ছিল জোর। অনেক চড়ুইয়ে উঠে যেতে পারতেন সাবলীলভাবে, নাকি সুর লাগাতেন না, গাইতেন শুদ্ধ উচ্চারণে, স্পষ্ট স্বরে।
নব্বইয়ের মাঝামাঝি সময়ে যখন মিক্সড অ্যালবামের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়তে থাকল, খালিদের যেন পুনর্জন্ম দেখলাম আমরা। একের পর এক মিক্সড অ্যালবাম, খালিদের কণ্ঠে একের পর এক হিট সিংগলস। তখনকার সময়ে জনপ্রিয় সব ব্যান্ডের ভোকালিস্টদের নিয়ে মিক্সড অ্যালবামগুলো প্রকাশিত হলেও, দশ বারোটা গান থেকে হিট করত দুই-তিনটি, বড়জোর। সেই দু-তিনটির মধ্যে খালিদের একটি গান থাকত। আর, সেকাল থেকে আজ প্রায় তিন দশক পরের অবস্থানে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, দুই-তিনটিও নয়, বড় জোর একটি করে গানই টিকে আছে, যে গানটি খালিদের গাওয়া। সরলতার প্রতিমা, যদি হিমালয় হয়ে, কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে, আবার দেখা হবে/এখনই শেষ দেখা নয়, হয়নি যাবার বেলা, আকাশনীলা ইত্যাদি গানগুলো সবই কালোত্তীর্ণ, ক্রমশ এগিয়ে চলেছে কালজয়ী বাংলা গান হওয়ার পথে। এগুলো সবই বিভিন্ন মিক্সড অ্যালবামে গাওয়া।
যে কথাটি দিয়ে শুরু করেছিলাম, খালিদের গাওয়া প্রতিটি গানের কথা ও সুরে দারুণ সুরুচির পরিচয় পাওয়া যায়। গানগুলোর খুব কমই তাঁর লেখা বা সুর করা। কিন্তু তিনি লিরিক বুঝতেন, সুর চিনতেন। তাই দশ-বারোজন শিল্পীর জন্য করা দশ বারোটা গান থেকে ঠিকঠাক বেছে নিতে পারতেন নিজের জন্য সেরা গানটাই। কিংবা কে জানে, গানের কম্পোজারেরাই হয়তো তাঁর জন্য আলাদা করে রাখতেন তাঁর সেরা কাজটা।
‘সে যে হৃদয় পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে/ হারিয়ে গেল নিমেষেই...’ ভেবে দেখুন তো, প্রেম ভেঙে যাওয়ায় প্রেমিকাকে দোষারোপ করার, তাকে রীতিমতো ভিলেন বানিয়ে দেয়ার গাজোয়ারির কালে তিনি কত নান্দনিকভাবে তুলে ধরলেন ভালোবাসা হারানোর কথা! প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করার জনপ্রিয় চর্চার কালেই তিনি স্পষ্ট স্বরে উচ্চারণ করলেন, ‘নীরা, ক্ষমা করো আমাকে/ এতটুকু সুখ তোমায় পারিনি দিতে!’ এমনটাই কি হওয়া উচিত নয় সকল ক্ষেত্রে? আবার দেখুন, ভালোবাসা হারানোর দুঃখকে কী অদ্ভুতভাবে তিনি বর্ণনা করলেন একটিমাত্র বাক্যে, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে এ হৃদয়ে, সে কিছুই নয়!’ কিংবা, ‘যাবার বেলায় শুধু সান্ত্বনা, নয় কান্না/ আবার দেখা হবে, এখনই শেষ দেখা নয়’ এভাবেও তো সম্পর্কের ইতি টানা যায়। ‘তুমি আকাশের বুকে বিশালতার উপমা/ তুমি আমার চোখেতে সরলতার প্রতিমা’–এভাবেই বুঝি কমপ্লিমেন্ট দিতে হয় প্রেয়সীকে।
খালিদ চলে গেলেন ষাট বছর বয়সে। মধ্যম গড় আয়ুর দেশে ষাট বছর তেমন বেশি না হলেও খুব কম বয়স নয়। কিন্তু ব্যক্তিগত জানাশোনা থেকে উপলব্ধি করি, তিনি হয়তো আরও কিছুদিন থাকতে পারতেন। সঞ্জীব চৌধুরীর মতো তিনিও বুঝি অপচয় করে গেলেন নিজের যোগ্যতাকে, প্রতিভাকে, জীবনটাকেই।
শেষ দশ বছরে তেমন একটা গান করেননি। নতুন গান ছিল কি না, আমার শোনা হয়নি। তাঁর জীবনযাপনও খুব সুশৃঙ্খল ছিল না। প্রবাসে স্থায়ী ঠিকানা গড়েছিলেন। তবু দেশে ছুটে আসতেন বারবার। গান করতে চাইতেন। নতুন কিছু করতে চাইতেন। থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দেশটা হয়তো ভালো, কিন্তু সে তো আমজনতার ক্ষেত্রে। একজন শিল্পীর জন্য, বাঙালি শিল্পীর জন্য কি ওই ভিনদেশ, বিজাতীয় সাংস্কৃতিক বাতাবরণ খুব অনুকূল? প্রবাস-জীবনে জীবিকার চিন্তা হয়তো তাঁর ছিল না। কিন্তু মনের খোরাক কি ডলার গুনে মেটে? তাই হয়তো দেশে আসতেন বারবার গানের টানে। সে গান করা হতো না। এ দেশে যে গানের পরিবেশটাই গেছে বদলে! এখানে এখন রুচিমান গায়কের কোথায় স্থান? উদ্ভট কিছু করতে পারা তো খালিদের মতো শিল্পীর পক্ষে সম্ভব ছিল না। যে অভিমানে নিজেই নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিলেন সাদি মহম্মদ, সেই একই অভিমান হয়তো একটু অন্যভাবে ছিল খালিদের মনেও। নয়তো এমন দরাজ কণ্ঠে বছরের পর বছর কোনো গান শোনা যায়নি কেন? দু’জনের মৃত্যু দুইভাবে হলেও, আমার কাছে তা এই অসময় যাত্রাকে অভিন্ন যাত্রাই মনে হয়।
খালিদ চলে গেলেন তাঁর আবেগমাখা দরাজ গলার গানগুলো রেখে, এক জীবনে বারবার ঘুরেফিরে শোনার জন্য যা যথেষ্ট। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ ক’জন আইকনিক শিল্পীকে হারাল আমাদের গানের জগৎ। আমাদের আধুনিক বাংলা গানের জগতে কেবল শূন্যতাই সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক। সে শূন্যতা পূরণ হচ্ছে কতটুকু? আরেকজন সুরুচিবান খালিদ সাইফুল্লাহ্ আসবেন আর কবে?
লেখক: কবি, গল্পকার, গীতিকার

খালিদের প্রতিটি গানই সুরুচির পরিচায়ক। সেই যে ৮০-র পরপর শুরু করলেন গান গাওয়া। ‘চাইম’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে তাঁর গাওয়া প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে সুন্দর কথা আর হৃদয় ছোঁয়া সুরের জন্য। কীর্তনখোলার পারের ছেলে খালিদ নিজেকে বলতেন গাঁয়ের ছেলে। তাঁর ব্যান্ড চাইমও লোকগানের প্রতি বিপুল আগ্রহী ছিল। চাইমের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানটিই তো লোকজ ধাঁচের, ‘নাতি খাতি বেলা গেইলো, শুতি পারলাম না, আহারে সদরুদ্দির মা।’ এই গানটি কোনো চিরায়ত বাংলা লোকগান, নাকি তাঁদের নিজেদেরই (বা চাইমের জন্য অন্য কারও লেখা বা সুর করা) গান, তা আমার জানা নেই। রিলিজ হওয়ার সময় অ্যালবাম কভারে নিশ্চয়ই সে তথ্য লেখা ছিল, আমার এখন আর মনে পড়ছে না। কিন্তু গানের বাণী চিরায়ত লোকগীতিরই প্রমাণ রাখে।
‘বড় চাচার গরু ছুটে লাউয়ের জাংলা খাইলো
চাচা আইসে খালি খালি চাচীরে কেন্ মাইল্লো
সময় কইরে বাড়ির কেউ তো চোহি দ্যাকলো না!
আহারে সদরুদ্দির মা…’
কথাগুলো গ্রামীণ জীবনের চিরায়ত চর্চার এক শাশ্বত নিদর্শন। আবার কীর্তনখোলা নদী নিয়ে অপূর্ব সুন্দর একটি গানও সে সময় উপহার দিয়েছিল চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার অপরূপ এক নমুনা তাঁরা উপস্থাপন করেছিলেন উচ্চশিক্ষা নামের একটি গানে।
পড়ালেখা শেষ করে বেকারত্বের যুগে মোরা
এ কেমন অভিশাপ বলো
কেউ নেতা বনে যায়
কেউ প্রেমের তরী বায়
ডিমোশনে হয় টলোমলো
এ কেমন অভিশাপ বলো...
এ রকম কথার এবং কীর্তন আঙ্গিকের প্যারোডি সুরে তৈরি সেই গান সেকালে চিন্তার খোরাক জুগিয়েছিল মননশীল যেকোনো মানুষকে।
আবার, বাংলার নারীদের চিরায়ত দুঃখ শরীরের কালো রং নিয়েও যুগোপযোগী গান করেছিলেন চাইম ব্যান্ডের খালিদ। ‘কালো মাইয়া কালো বইলা কইরো না কেউ হেলা...।’ এ রকম কথার সেই গান এক দুঃসহ সামাজিক সংকটের কথা তরুণ শ্রোতাদের ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে। তাদের আরেকটি গান, ‘ও আমার হাঁসের ছাও রে...’ গ্রামীণ জীবনের আরেক নিত্য ঘটনা তুলে এনেছে হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে। এসব হলো ব্যান্ড মিউজিকের ভরা যৌবনে বাংলা লোকজ সংগীতকে দেয়া চাইমের অবদান, খালিদ সাইফুল্লাহ্র অবদান।
সোলস, ফিডব্যাক ও মাইলসের পরেই গড়ে ওঠে চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিটিভির ব্যান্ড শোতে অংশ নেয়ার মাধ্যমে রাতারাতি সারা দেশে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দলটি। সে সময়েই নজর কাড়েন খালিদ, তাঁর দরাজ কণ্ঠ আর স্টাইলিশ পারফরমেন্সের জন্য। জিনস, টি–শার্ট, কেডস, সানগ্লাসের সঙ্গে লম্বা চুলের গেটআপে নিজের একটা পারফেক্ট রকস্টার ইমেজ গড়ে তুলতে সক্ষম হন তিনি। সেই তিরাশি-চুরাশির দিকে তাঁর স্টাইলিশ পারফরম্যান্স অনুকরণ করতেন সমকালীন অনেক ব্যান্ড তারকা। কেবল দর্শনধারীই নন, তিনি ছিলেন প্রকৃত গুণবিচারীও। সে কালে সোলসের তপন চৌধুরী ও নাসিম আলী খান, ফিডব্যাকের মাকসুদ আর চাইমের খালিদ— এঁরাই ছিলেন বাংলা ব্যান্ডের আইকনিক ভোকাল। মনে রাখতে হবে, জেমস তখনো নজর কাড়তে পারেননি, আইয়ুব বাচ্চু সেভাবে গাইতে শুরুই করেননি, পার্থ বড়ুয়া এলেন আরও পরে, মাইলসের হামিন ও শাফিন তখনো বাংলা গান করছেন না। কোনো প্রকার ফাঁকি ঝুঁকিহীন, একেবারে তৈরি গলায় গান করতেন খালিদ। কণ্ঠে যেমন ছিল আবেগ, তেমনি ছিল জোর। অনেক চড়ুইয়ে উঠে যেতে পারতেন সাবলীলভাবে, নাকি সুর লাগাতেন না, গাইতেন শুদ্ধ উচ্চারণে, স্পষ্ট স্বরে।
নব্বইয়ের মাঝামাঝি সময়ে যখন মিক্সড অ্যালবামের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়তে থাকল, খালিদের যেন পুনর্জন্ম দেখলাম আমরা। একের পর এক মিক্সড অ্যালবাম, খালিদের কণ্ঠে একের পর এক হিট সিংগলস। তখনকার সময়ে জনপ্রিয় সব ব্যান্ডের ভোকালিস্টদের নিয়ে মিক্সড অ্যালবামগুলো প্রকাশিত হলেও, দশ বারোটা গান থেকে হিট করত দুই-তিনটি, বড়জোর। সেই দু-তিনটির মধ্যে খালিদের একটি গান থাকত। আর, সেকাল থেকে আজ প্রায় তিন দশক পরের অবস্থানে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, দুই-তিনটিও নয়, বড় জোর একটি করে গানই টিকে আছে, যে গানটি খালিদের গাওয়া। সরলতার প্রতিমা, যদি হিমালয় হয়ে, কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে, আবার দেখা হবে/এখনই শেষ দেখা নয়, হয়নি যাবার বেলা, আকাশনীলা ইত্যাদি গানগুলো সবই কালোত্তীর্ণ, ক্রমশ এগিয়ে চলেছে কালজয়ী বাংলা গান হওয়ার পথে। এগুলো সবই বিভিন্ন মিক্সড অ্যালবামে গাওয়া।
যে কথাটি দিয়ে শুরু করেছিলাম, খালিদের গাওয়া প্রতিটি গানের কথা ও সুরে দারুণ সুরুচির পরিচয় পাওয়া যায়। গানগুলোর খুব কমই তাঁর লেখা বা সুর করা। কিন্তু তিনি লিরিক বুঝতেন, সুর চিনতেন। তাই দশ-বারোজন শিল্পীর জন্য করা দশ বারোটা গান থেকে ঠিকঠাক বেছে নিতে পারতেন নিজের জন্য সেরা গানটাই। কিংবা কে জানে, গানের কম্পোজারেরাই হয়তো তাঁর জন্য আলাদা করে রাখতেন তাঁর সেরা কাজটা।
‘সে যে হৃদয় পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে/ হারিয়ে গেল নিমেষেই...’ ভেবে দেখুন তো, প্রেম ভেঙে যাওয়ায় প্রেমিকাকে দোষারোপ করার, তাকে রীতিমতো ভিলেন বানিয়ে দেয়ার গাজোয়ারির কালে তিনি কত নান্দনিকভাবে তুলে ধরলেন ভালোবাসা হারানোর কথা! প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করার জনপ্রিয় চর্চার কালেই তিনি স্পষ্ট স্বরে উচ্চারণ করলেন, ‘নীরা, ক্ষমা করো আমাকে/ এতটুকু সুখ তোমায় পারিনি দিতে!’ এমনটাই কি হওয়া উচিত নয় সকল ক্ষেত্রে? আবার দেখুন, ভালোবাসা হারানোর দুঃখকে কী অদ্ভুতভাবে তিনি বর্ণনা করলেন একটিমাত্র বাক্যে, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে এ হৃদয়ে, সে কিছুই নয়!’ কিংবা, ‘যাবার বেলায় শুধু সান্ত্বনা, নয় কান্না/ আবার দেখা হবে, এখনই শেষ দেখা নয়’ এভাবেও তো সম্পর্কের ইতি টানা যায়। ‘তুমি আকাশের বুকে বিশালতার উপমা/ তুমি আমার চোখেতে সরলতার প্রতিমা’–এভাবেই বুঝি কমপ্লিমেন্ট দিতে হয় প্রেয়সীকে।
খালিদ চলে গেলেন ষাট বছর বয়সে। মধ্যম গড় আয়ুর দেশে ষাট বছর তেমন বেশি না হলেও খুব কম বয়স নয়। কিন্তু ব্যক্তিগত জানাশোনা থেকে উপলব্ধি করি, তিনি হয়তো আরও কিছুদিন থাকতে পারতেন। সঞ্জীব চৌধুরীর মতো তিনিও বুঝি অপচয় করে গেলেন নিজের যোগ্যতাকে, প্রতিভাকে, জীবনটাকেই।
শেষ দশ বছরে তেমন একটা গান করেননি। নতুন গান ছিল কি না, আমার শোনা হয়নি। তাঁর জীবনযাপনও খুব সুশৃঙ্খল ছিল না। প্রবাসে স্থায়ী ঠিকানা গড়েছিলেন। তবু দেশে ছুটে আসতেন বারবার। গান করতে চাইতেন। নতুন কিছু করতে চাইতেন। থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দেশটা হয়তো ভালো, কিন্তু সে তো আমজনতার ক্ষেত্রে। একজন শিল্পীর জন্য, বাঙালি শিল্পীর জন্য কি ওই ভিনদেশ, বিজাতীয় সাংস্কৃতিক বাতাবরণ খুব অনুকূল? প্রবাস-জীবনে জীবিকার চিন্তা হয়তো তাঁর ছিল না। কিন্তু মনের খোরাক কি ডলার গুনে মেটে? তাই হয়তো দেশে আসতেন বারবার গানের টানে। সে গান করা হতো না। এ দেশে যে গানের পরিবেশটাই গেছে বদলে! এখানে এখন রুচিমান গায়কের কোথায় স্থান? উদ্ভট কিছু করতে পারা তো খালিদের মতো শিল্পীর পক্ষে সম্ভব ছিল না। যে অভিমানে নিজেই নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিলেন সাদি মহম্মদ, সেই একই অভিমান হয়তো একটু অন্যভাবে ছিল খালিদের মনেও। নয়তো এমন দরাজ কণ্ঠে বছরের পর বছর কোনো গান শোনা যায়নি কেন? দু’জনের মৃত্যু দুইভাবে হলেও, আমার কাছে তা এই অসময় যাত্রাকে অভিন্ন যাত্রাই মনে হয়।
খালিদ চলে গেলেন তাঁর আবেগমাখা দরাজ গলার গানগুলো রেখে, এক জীবনে বারবার ঘুরেফিরে শোনার জন্য যা যথেষ্ট। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ ক’জন আইকনিক শিল্পীকে হারাল আমাদের গানের জগৎ। আমাদের আধুনিক বাংলা গানের জগতে কেবল শূন্যতাই সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক। সে শূন্যতা পূরণ হচ্ছে কতটুকু? আরেকজন সুরুচিবান খালিদ সাইফুল্লাহ্ আসবেন আর কবে?
লেখক: কবি, গল্পকার, গীতিকার
গুঞ্জন রহমান

খালিদের প্রতিটি গানই সুরুচির পরিচায়ক। সেই যে ৮০-র পরপর শুরু করলেন গান গাওয়া। ‘চাইম’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে তাঁর গাওয়া প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে সুন্দর কথা আর হৃদয় ছোঁয়া সুরের জন্য। কীর্তনখোলার পারের ছেলে খালিদ নিজেকে বলতেন গাঁয়ের ছেলে। তাঁর ব্যান্ড চাইমও লোকগানের প্রতি বিপুল আগ্রহী ছিল। চাইমের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানটিই তো লোকজ ধাঁচের, ‘নাতি খাতি বেলা গেইলো, শুতি পারলাম না, আহারে সদরুদ্দির মা।’ এই গানটি কোনো চিরায়ত বাংলা লোকগান, নাকি তাঁদের নিজেদেরই (বা চাইমের জন্য অন্য কারও লেখা বা সুর করা) গান, তা আমার জানা নেই। রিলিজ হওয়ার সময় অ্যালবাম কভারে নিশ্চয়ই সে তথ্য লেখা ছিল, আমার এখন আর মনে পড়ছে না। কিন্তু গানের বাণী চিরায়ত লোকগীতিরই প্রমাণ রাখে।
‘বড় চাচার গরু ছুটে লাউয়ের জাংলা খাইলো
চাচা আইসে খালি খালি চাচীরে কেন্ মাইল্লো
সময় কইরে বাড়ির কেউ তো চোহি দ্যাকলো না!
আহারে সদরুদ্দির মা…’
কথাগুলো গ্রামীণ জীবনের চিরায়ত চর্চার এক শাশ্বত নিদর্শন। আবার কীর্তনখোলা নদী নিয়ে অপূর্ব সুন্দর একটি গানও সে সময় উপহার দিয়েছিল চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার অপরূপ এক নমুনা তাঁরা উপস্থাপন করেছিলেন উচ্চশিক্ষা নামের একটি গানে।
পড়ালেখা শেষ করে বেকারত্বের যুগে মোরা
এ কেমন অভিশাপ বলো
কেউ নেতা বনে যায়
কেউ প্রেমের তরী বায়
ডিমোশনে হয় টলোমলো
এ কেমন অভিশাপ বলো...
এ রকম কথার এবং কীর্তন আঙ্গিকের প্যারোডি সুরে তৈরি সেই গান সেকালে চিন্তার খোরাক জুগিয়েছিল মননশীল যেকোনো মানুষকে।
আবার, বাংলার নারীদের চিরায়ত দুঃখ শরীরের কালো রং নিয়েও যুগোপযোগী গান করেছিলেন চাইম ব্যান্ডের খালিদ। ‘কালো মাইয়া কালো বইলা কইরো না কেউ হেলা...।’ এ রকম কথার সেই গান এক দুঃসহ সামাজিক সংকটের কথা তরুণ শ্রোতাদের ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে। তাদের আরেকটি গান, ‘ও আমার হাঁসের ছাও রে...’ গ্রামীণ জীবনের আরেক নিত্য ঘটনা তুলে এনেছে হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে। এসব হলো ব্যান্ড মিউজিকের ভরা যৌবনে বাংলা লোকজ সংগীতকে দেয়া চাইমের অবদান, খালিদ সাইফুল্লাহ্র অবদান।
সোলস, ফিডব্যাক ও মাইলসের পরেই গড়ে ওঠে চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিটিভির ব্যান্ড শোতে অংশ নেয়ার মাধ্যমে রাতারাতি সারা দেশে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দলটি। সে সময়েই নজর কাড়েন খালিদ, তাঁর দরাজ কণ্ঠ আর স্টাইলিশ পারফরমেন্সের জন্য। জিনস, টি–শার্ট, কেডস, সানগ্লাসের সঙ্গে লম্বা চুলের গেটআপে নিজের একটা পারফেক্ট রকস্টার ইমেজ গড়ে তুলতে সক্ষম হন তিনি। সেই তিরাশি-চুরাশির দিকে তাঁর স্টাইলিশ পারফরম্যান্স অনুকরণ করতেন সমকালীন অনেক ব্যান্ড তারকা। কেবল দর্শনধারীই নন, তিনি ছিলেন প্রকৃত গুণবিচারীও। সে কালে সোলসের তপন চৌধুরী ও নাসিম আলী খান, ফিডব্যাকের মাকসুদ আর চাইমের খালিদ— এঁরাই ছিলেন বাংলা ব্যান্ডের আইকনিক ভোকাল। মনে রাখতে হবে, জেমস তখনো নজর কাড়তে পারেননি, আইয়ুব বাচ্চু সেভাবে গাইতে শুরুই করেননি, পার্থ বড়ুয়া এলেন আরও পরে, মাইলসের হামিন ও শাফিন তখনো বাংলা গান করছেন না। কোনো প্রকার ফাঁকি ঝুঁকিহীন, একেবারে তৈরি গলায় গান করতেন খালিদ। কণ্ঠে যেমন ছিল আবেগ, তেমনি ছিল জোর। অনেক চড়ুইয়ে উঠে যেতে পারতেন সাবলীলভাবে, নাকি সুর লাগাতেন না, গাইতেন শুদ্ধ উচ্চারণে, স্পষ্ট স্বরে।
নব্বইয়ের মাঝামাঝি সময়ে যখন মিক্সড অ্যালবামের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়তে থাকল, খালিদের যেন পুনর্জন্ম দেখলাম আমরা। একের পর এক মিক্সড অ্যালবাম, খালিদের কণ্ঠে একের পর এক হিট সিংগলস। তখনকার সময়ে জনপ্রিয় সব ব্যান্ডের ভোকালিস্টদের নিয়ে মিক্সড অ্যালবামগুলো প্রকাশিত হলেও, দশ বারোটা গান থেকে হিট করত দুই-তিনটি, বড়জোর। সেই দু-তিনটির মধ্যে খালিদের একটি গান থাকত। আর, সেকাল থেকে আজ প্রায় তিন দশক পরের অবস্থানে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, দুই-তিনটিও নয়, বড় জোর একটি করে গানই টিকে আছে, যে গানটি খালিদের গাওয়া। সরলতার প্রতিমা, যদি হিমালয় হয়ে, কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে, আবার দেখা হবে/এখনই শেষ দেখা নয়, হয়নি যাবার বেলা, আকাশনীলা ইত্যাদি গানগুলো সবই কালোত্তীর্ণ, ক্রমশ এগিয়ে চলেছে কালজয়ী বাংলা গান হওয়ার পথে। এগুলো সবই বিভিন্ন মিক্সড অ্যালবামে গাওয়া।
যে কথাটি দিয়ে শুরু করেছিলাম, খালিদের গাওয়া প্রতিটি গানের কথা ও সুরে দারুণ সুরুচির পরিচয় পাওয়া যায়। গানগুলোর খুব কমই তাঁর লেখা বা সুর করা। কিন্তু তিনি লিরিক বুঝতেন, সুর চিনতেন। তাই দশ-বারোজন শিল্পীর জন্য করা দশ বারোটা গান থেকে ঠিকঠাক বেছে নিতে পারতেন নিজের জন্য সেরা গানটাই। কিংবা কে জানে, গানের কম্পোজারেরাই হয়তো তাঁর জন্য আলাদা করে রাখতেন তাঁর সেরা কাজটা।
‘সে যে হৃদয় পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে/ হারিয়ে গেল নিমেষেই...’ ভেবে দেখুন তো, প্রেম ভেঙে যাওয়ায় প্রেমিকাকে দোষারোপ করার, তাকে রীতিমতো ভিলেন বানিয়ে দেয়ার গাজোয়ারির কালে তিনি কত নান্দনিকভাবে তুলে ধরলেন ভালোবাসা হারানোর কথা! প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করার জনপ্রিয় চর্চার কালেই তিনি স্পষ্ট স্বরে উচ্চারণ করলেন, ‘নীরা, ক্ষমা করো আমাকে/ এতটুকু সুখ তোমায় পারিনি দিতে!’ এমনটাই কি হওয়া উচিত নয় সকল ক্ষেত্রে? আবার দেখুন, ভালোবাসা হারানোর দুঃখকে কী অদ্ভুতভাবে তিনি বর্ণনা করলেন একটিমাত্র বাক্যে, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে এ হৃদয়ে, সে কিছুই নয়!’ কিংবা, ‘যাবার বেলায় শুধু সান্ত্বনা, নয় কান্না/ আবার দেখা হবে, এখনই শেষ দেখা নয়’ এভাবেও তো সম্পর্কের ইতি টানা যায়। ‘তুমি আকাশের বুকে বিশালতার উপমা/ তুমি আমার চোখেতে সরলতার প্রতিমা’–এভাবেই বুঝি কমপ্লিমেন্ট দিতে হয় প্রেয়সীকে।
খালিদ চলে গেলেন ষাট বছর বয়সে। মধ্যম গড় আয়ুর দেশে ষাট বছর তেমন বেশি না হলেও খুব কম বয়স নয়। কিন্তু ব্যক্তিগত জানাশোনা থেকে উপলব্ধি করি, তিনি হয়তো আরও কিছুদিন থাকতে পারতেন। সঞ্জীব চৌধুরীর মতো তিনিও বুঝি অপচয় করে গেলেন নিজের যোগ্যতাকে, প্রতিভাকে, জীবনটাকেই।
শেষ দশ বছরে তেমন একটা গান করেননি। নতুন গান ছিল কি না, আমার শোনা হয়নি। তাঁর জীবনযাপনও খুব সুশৃঙ্খল ছিল না। প্রবাসে স্থায়ী ঠিকানা গড়েছিলেন। তবু দেশে ছুটে আসতেন বারবার। গান করতে চাইতেন। নতুন কিছু করতে চাইতেন। থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দেশটা হয়তো ভালো, কিন্তু সে তো আমজনতার ক্ষেত্রে। একজন শিল্পীর জন্য, বাঙালি শিল্পীর জন্য কি ওই ভিনদেশ, বিজাতীয় সাংস্কৃতিক বাতাবরণ খুব অনুকূল? প্রবাস-জীবনে জীবিকার চিন্তা হয়তো তাঁর ছিল না। কিন্তু মনের খোরাক কি ডলার গুনে মেটে? তাই হয়তো দেশে আসতেন বারবার গানের টানে। সে গান করা হতো না। এ দেশে যে গানের পরিবেশটাই গেছে বদলে! এখানে এখন রুচিমান গায়কের কোথায় স্থান? উদ্ভট কিছু করতে পারা তো খালিদের মতো শিল্পীর পক্ষে সম্ভব ছিল না। যে অভিমানে নিজেই নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিলেন সাদি মহম্মদ, সেই একই অভিমান হয়তো একটু অন্যভাবে ছিল খালিদের মনেও। নয়তো এমন দরাজ কণ্ঠে বছরের পর বছর কোনো গান শোনা যায়নি কেন? দু’জনের মৃত্যু দুইভাবে হলেও, আমার কাছে তা এই অসময় যাত্রাকে অভিন্ন যাত্রাই মনে হয়।
খালিদ চলে গেলেন তাঁর আবেগমাখা দরাজ গলার গানগুলো রেখে, এক জীবনে বারবার ঘুরেফিরে শোনার জন্য যা যথেষ্ট। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ ক’জন আইকনিক শিল্পীকে হারাল আমাদের গানের জগৎ। আমাদের আধুনিক বাংলা গানের জগতে কেবল শূন্যতাই সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক। সে শূন্যতা পূরণ হচ্ছে কতটুকু? আরেকজন সুরুচিবান খালিদ সাইফুল্লাহ্ আসবেন আর কবে?
লেখক: কবি, গল্পকার, গীতিকার

খালিদের প্রতিটি গানই সুরুচির পরিচায়ক। সেই যে ৮০-র পরপর শুরু করলেন গান গাওয়া। ‘চাইম’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে তাঁর গাওয়া প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে সুন্দর কথা আর হৃদয় ছোঁয়া সুরের জন্য। কীর্তনখোলার পারের ছেলে খালিদ নিজেকে বলতেন গাঁয়ের ছেলে। তাঁর ব্যান্ড চাইমও লোকগানের প্রতি বিপুল আগ্রহী ছিল। চাইমের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানটিই তো লোকজ ধাঁচের, ‘নাতি খাতি বেলা গেইলো, শুতি পারলাম না, আহারে সদরুদ্দির মা।’ এই গানটি কোনো চিরায়ত বাংলা লোকগান, নাকি তাঁদের নিজেদেরই (বা চাইমের জন্য অন্য কারও লেখা বা সুর করা) গান, তা আমার জানা নেই। রিলিজ হওয়ার সময় অ্যালবাম কভারে নিশ্চয়ই সে তথ্য লেখা ছিল, আমার এখন আর মনে পড়ছে না। কিন্তু গানের বাণী চিরায়ত লোকগীতিরই প্রমাণ রাখে।
‘বড় চাচার গরু ছুটে লাউয়ের জাংলা খাইলো
চাচা আইসে খালি খালি চাচীরে কেন্ মাইল্লো
সময় কইরে বাড়ির কেউ তো চোহি দ্যাকলো না!
আহারে সদরুদ্দির মা…’
কথাগুলো গ্রামীণ জীবনের চিরায়ত চর্চার এক শাশ্বত নিদর্শন। আবার কীর্তনখোলা নদী নিয়ে অপূর্ব সুন্দর একটি গানও সে সময় উপহার দিয়েছিল চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার অপরূপ এক নমুনা তাঁরা উপস্থাপন করেছিলেন উচ্চশিক্ষা নামের একটি গানে।
পড়ালেখা শেষ করে বেকারত্বের যুগে মোরা
এ কেমন অভিশাপ বলো
কেউ নেতা বনে যায়
কেউ প্রেমের তরী বায়
ডিমোশনে হয় টলোমলো
এ কেমন অভিশাপ বলো...
এ রকম কথার এবং কীর্তন আঙ্গিকের প্যারোডি সুরে তৈরি সেই গান সেকালে চিন্তার খোরাক জুগিয়েছিল মননশীল যেকোনো মানুষকে।
আবার, বাংলার নারীদের চিরায়ত দুঃখ শরীরের কালো রং নিয়েও যুগোপযোগী গান করেছিলেন চাইম ব্যান্ডের খালিদ। ‘কালো মাইয়া কালো বইলা কইরো না কেউ হেলা...।’ এ রকম কথার সেই গান এক দুঃসহ সামাজিক সংকটের কথা তরুণ শ্রোতাদের ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে। তাদের আরেকটি গান, ‘ও আমার হাঁসের ছাও রে...’ গ্রামীণ জীবনের আরেক নিত্য ঘটনা তুলে এনেছে হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে। এসব হলো ব্যান্ড মিউজিকের ভরা যৌবনে বাংলা লোকজ সংগীতকে দেয়া চাইমের অবদান, খালিদ সাইফুল্লাহ্র অবদান।
সোলস, ফিডব্যাক ও মাইলসের পরেই গড়ে ওঠে চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিটিভির ব্যান্ড শোতে অংশ নেয়ার মাধ্যমে রাতারাতি সারা দেশে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দলটি। সে সময়েই নজর কাড়েন খালিদ, তাঁর দরাজ কণ্ঠ আর স্টাইলিশ পারফরমেন্সের জন্য। জিনস, টি–শার্ট, কেডস, সানগ্লাসের সঙ্গে লম্বা চুলের গেটআপে নিজের একটা পারফেক্ট রকস্টার ইমেজ গড়ে তুলতে সক্ষম হন তিনি। সেই তিরাশি-চুরাশির দিকে তাঁর স্টাইলিশ পারফরম্যান্স অনুকরণ করতেন সমকালীন অনেক ব্যান্ড তারকা। কেবল দর্শনধারীই নন, তিনি ছিলেন প্রকৃত গুণবিচারীও। সে কালে সোলসের তপন চৌধুরী ও নাসিম আলী খান, ফিডব্যাকের মাকসুদ আর চাইমের খালিদ— এঁরাই ছিলেন বাংলা ব্যান্ডের আইকনিক ভোকাল। মনে রাখতে হবে, জেমস তখনো নজর কাড়তে পারেননি, আইয়ুব বাচ্চু সেভাবে গাইতে শুরুই করেননি, পার্থ বড়ুয়া এলেন আরও পরে, মাইলসের হামিন ও শাফিন তখনো বাংলা গান করছেন না। কোনো প্রকার ফাঁকি ঝুঁকিহীন, একেবারে তৈরি গলায় গান করতেন খালিদ। কণ্ঠে যেমন ছিল আবেগ, তেমনি ছিল জোর। অনেক চড়ুইয়ে উঠে যেতে পারতেন সাবলীলভাবে, নাকি সুর লাগাতেন না, গাইতেন শুদ্ধ উচ্চারণে, স্পষ্ট স্বরে।
নব্বইয়ের মাঝামাঝি সময়ে যখন মিক্সড অ্যালবামের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়তে থাকল, খালিদের যেন পুনর্জন্ম দেখলাম আমরা। একের পর এক মিক্সড অ্যালবাম, খালিদের কণ্ঠে একের পর এক হিট সিংগলস। তখনকার সময়ে জনপ্রিয় সব ব্যান্ডের ভোকালিস্টদের নিয়ে মিক্সড অ্যালবামগুলো প্রকাশিত হলেও, দশ বারোটা গান থেকে হিট করত দুই-তিনটি, বড়জোর। সেই দু-তিনটির মধ্যে খালিদের একটি গান থাকত। আর, সেকাল থেকে আজ প্রায় তিন দশক পরের অবস্থানে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, দুই-তিনটিও নয়, বড় জোর একটি করে গানই টিকে আছে, যে গানটি খালিদের গাওয়া। সরলতার প্রতিমা, যদি হিমালয় হয়ে, কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে, আবার দেখা হবে/এখনই শেষ দেখা নয়, হয়নি যাবার বেলা, আকাশনীলা ইত্যাদি গানগুলো সবই কালোত্তীর্ণ, ক্রমশ এগিয়ে চলেছে কালজয়ী বাংলা গান হওয়ার পথে। এগুলো সবই বিভিন্ন মিক্সড অ্যালবামে গাওয়া।
যে কথাটি দিয়ে শুরু করেছিলাম, খালিদের গাওয়া প্রতিটি গানের কথা ও সুরে দারুণ সুরুচির পরিচয় পাওয়া যায়। গানগুলোর খুব কমই তাঁর লেখা বা সুর করা। কিন্তু তিনি লিরিক বুঝতেন, সুর চিনতেন। তাই দশ-বারোজন শিল্পীর জন্য করা দশ বারোটা গান থেকে ঠিকঠাক বেছে নিতে পারতেন নিজের জন্য সেরা গানটাই। কিংবা কে জানে, গানের কম্পোজারেরাই হয়তো তাঁর জন্য আলাদা করে রাখতেন তাঁর সেরা কাজটা।
‘সে যে হৃদয় পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে/ হারিয়ে গেল নিমেষেই...’ ভেবে দেখুন তো, প্রেম ভেঙে যাওয়ায় প্রেমিকাকে দোষারোপ করার, তাকে রীতিমতো ভিলেন বানিয়ে দেয়ার গাজোয়ারির কালে তিনি কত নান্দনিকভাবে তুলে ধরলেন ভালোবাসা হারানোর কথা! প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করার জনপ্রিয় চর্চার কালেই তিনি স্পষ্ট স্বরে উচ্চারণ করলেন, ‘নীরা, ক্ষমা করো আমাকে/ এতটুকু সুখ তোমায় পারিনি দিতে!’ এমনটাই কি হওয়া উচিত নয় সকল ক্ষেত্রে? আবার দেখুন, ভালোবাসা হারানোর দুঃখকে কী অদ্ভুতভাবে তিনি বর্ণনা করলেন একটিমাত্র বাক্যে, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে এ হৃদয়ে, সে কিছুই নয়!’ কিংবা, ‘যাবার বেলায় শুধু সান্ত্বনা, নয় কান্না/ আবার দেখা হবে, এখনই শেষ দেখা নয়’ এভাবেও তো সম্পর্কের ইতি টানা যায়। ‘তুমি আকাশের বুকে বিশালতার উপমা/ তুমি আমার চোখেতে সরলতার প্রতিমা’–এভাবেই বুঝি কমপ্লিমেন্ট দিতে হয় প্রেয়সীকে।
খালিদ চলে গেলেন ষাট বছর বয়সে। মধ্যম গড় আয়ুর দেশে ষাট বছর তেমন বেশি না হলেও খুব কম বয়স নয়। কিন্তু ব্যক্তিগত জানাশোনা থেকে উপলব্ধি করি, তিনি হয়তো আরও কিছুদিন থাকতে পারতেন। সঞ্জীব চৌধুরীর মতো তিনিও বুঝি অপচয় করে গেলেন নিজের যোগ্যতাকে, প্রতিভাকে, জীবনটাকেই।
শেষ দশ বছরে তেমন একটা গান করেননি। নতুন গান ছিল কি না, আমার শোনা হয়নি। তাঁর জীবনযাপনও খুব সুশৃঙ্খল ছিল না। প্রবাসে স্থায়ী ঠিকানা গড়েছিলেন। তবু দেশে ছুটে আসতেন বারবার। গান করতে চাইতেন। নতুন কিছু করতে চাইতেন। থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দেশটা হয়তো ভালো, কিন্তু সে তো আমজনতার ক্ষেত্রে। একজন শিল্পীর জন্য, বাঙালি শিল্পীর জন্য কি ওই ভিনদেশ, বিজাতীয় সাংস্কৃতিক বাতাবরণ খুব অনুকূল? প্রবাস-জীবনে জীবিকার চিন্তা হয়তো তাঁর ছিল না। কিন্তু মনের খোরাক কি ডলার গুনে মেটে? তাই হয়তো দেশে আসতেন বারবার গানের টানে। সে গান করা হতো না। এ দেশে যে গানের পরিবেশটাই গেছে বদলে! এখানে এখন রুচিমান গায়কের কোথায় স্থান? উদ্ভট কিছু করতে পারা তো খালিদের মতো শিল্পীর পক্ষে সম্ভব ছিল না। যে অভিমানে নিজেই নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিলেন সাদি মহম্মদ, সেই একই অভিমান হয়তো একটু অন্যভাবে ছিল খালিদের মনেও। নয়তো এমন দরাজ কণ্ঠে বছরের পর বছর কোনো গান শোনা যায়নি কেন? দু’জনের মৃত্যু দুইভাবে হলেও, আমার কাছে তা এই অসময় যাত্রাকে অভিন্ন যাত্রাই মনে হয়।
খালিদ চলে গেলেন তাঁর আবেগমাখা দরাজ গলার গানগুলো রেখে, এক জীবনে বারবার ঘুরেফিরে শোনার জন্য যা যথেষ্ট। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ ক’জন আইকনিক শিল্পীকে হারাল আমাদের গানের জগৎ। আমাদের আধুনিক বাংলা গানের জগতে কেবল শূন্যতাই সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক। সে শূন্যতা পূরণ হচ্ছে কতটুকু? আরেকজন সুরুচিবান খালিদ সাইফুল্লাহ্ আসবেন আর কবে?
লেখক: কবি, গল্পকার, গীতিকার

সুরকার ও সংগীতশিল্পী হৃদয় খানের সুরে নতুন গান গাইলেন সংগীতশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। গানের শিরোনাম ‘নেই অধিকার’। র্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানটির সংগীত আয়োজনও করেছেন হৃদয় খান। চন্দন রায় চৌধুরীর নির্দেশনায় মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে কক্সবাজারে। ভিডিওতে লিজার সঙ্গে মডেল হয়েছেন মোহতারাম বিল্লাহ।
৭ ঘণ্টা আগে
ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজের তালিকায় শুরুর দিকে আছে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর নাম। শ্রীকান্ত তিওয়ারি নামের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার পারিবারিক জীবন এবং শ্বাসরুদ্ধকর মিশনের গল্প নিয়ে তৈরি সিরিজটির প্রথম সিজন এসেছিল ২০১৯ সালে।
৭ ঘণ্টা আগে
থিয়েটার ও থিয়েটারকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামের নাট্যসংগঠন স্কেচ গ্যালারি নন্দনের দ্বিতীয় প্রযোজনা ‘সাজঘর’। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘সাজঘর’ উপন্যাসের নাট্যরূপ এটি। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান। গত মে মাসে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়েছে নাটকটির।
৭ ঘণ্টা আগে
গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিনেতা হাসান মাসুদ। গত সোমবার রাতে প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও খিঁচুনি অনুভব করলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, হাসান মাসুদ ইস্কেমিক স্ট্রোক করেছেন। মাইল্ড হার্ট অ্যাটা
৭ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

সুরকার ও সংগীতশিল্পী হৃদয় খানের সুরে নতুন গান গাইলেন সংগীতশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। গানের শিরোনাম ‘নেই অধিকার’। র্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানটির সংগীত আয়োজনও করেছেন হৃদয় খান। চন্দন রায় চৌধুরীর নির্দেশনায় মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে কক্সবাজারে। ভিডিওতে লিজার সঙ্গে মডেল হয়েছেন মোহতারাম বিল্লাহ।
ফেসবুকে নতুন গানের খবর জানিয়ে লিজা লেখেন, ‘এ এক হারিয়ে যাওয়ার গান, এক নীরব বেদনার গল্প, যেখানে ভালোবাসা আছে, কিন্তু দাবি নেই। এ ধরনের গান নিয়ে এটি আমার প্রথম যাত্রা। আশা করি, নেই অধিকার আপনাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। অপেক্ষায় থাকুন, শিগগিরই আসছে আমাদের ভালোবাসার গান।’
নতুন এই গান নিয়ে সানিয়া সুলতানা লিজা বলেন, ‘নেই অধিকার গানটি ব্যক্তিগতভাবে আমার খুব পছন্দের। কারণ, আমি যে ধরনের গান করি, সেখান থেকে বের হয়ে ভিন্ন কিছুর চেষ্টা করা হয়েছে। র্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানের কথাগুলো মন ছুঁয়ে যাবে। সেই কথার ওপর দারুণ সুর বসিয়েছেন হৃদয় খান। কক্সবাজারে ধারণ করা ভিডিওটিতে সেই কথাগুলোকে জীবন্ত করে তুলেছেন পরিচালক চন্দন রায় চৌধুরী। ভিডিওতে নির্মাতা আমাকে ভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আমিও চেষ্টা করেছি তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে। সব মিলিয়ে নেই অধিকার গানটি আমার ভালো লেগেছে। আশা করছি দর্শক শ্রোতাদেরও ভালো লাগবে।’
লিজা জানান, আগামীকাল তাঁর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পাবে নেই অনুরোধ গানের মিউজিক ভিডিও।
অন্যদিকে, ছোটদের গানের রিয়েলিটি শো আরটিভি লিটল স্টারের বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন লিজা। কয়েক মাস আগে ইউরোপে সংগীত সফর করে এসেছেন তিনি। প্রবাসী বাংলাদেশিদের আমন্ত্রণে ২৫ দিনের ইউরোপ ট্যুরে লিজা সংগীত পরিবেশন করেছেন ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ইতালি ও স্পেনে।

সুরকার ও সংগীতশিল্পী হৃদয় খানের সুরে নতুন গান গাইলেন সংগীতশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। গানের শিরোনাম ‘নেই অধিকার’। র্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানটির সংগীত আয়োজনও করেছেন হৃদয় খান। চন্দন রায় চৌধুরীর নির্দেশনায় মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে কক্সবাজারে। ভিডিওতে লিজার সঙ্গে মডেল হয়েছেন মোহতারাম বিল্লাহ।
ফেসবুকে নতুন গানের খবর জানিয়ে লিজা লেখেন, ‘এ এক হারিয়ে যাওয়ার গান, এক নীরব বেদনার গল্প, যেখানে ভালোবাসা আছে, কিন্তু দাবি নেই। এ ধরনের গান নিয়ে এটি আমার প্রথম যাত্রা। আশা করি, নেই অধিকার আপনাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। অপেক্ষায় থাকুন, শিগগিরই আসছে আমাদের ভালোবাসার গান।’
নতুন এই গান নিয়ে সানিয়া সুলতানা লিজা বলেন, ‘নেই অধিকার গানটি ব্যক্তিগতভাবে আমার খুব পছন্দের। কারণ, আমি যে ধরনের গান করি, সেখান থেকে বের হয়ে ভিন্ন কিছুর চেষ্টা করা হয়েছে। র্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানের কথাগুলো মন ছুঁয়ে যাবে। সেই কথার ওপর দারুণ সুর বসিয়েছেন হৃদয় খান। কক্সবাজারে ধারণ করা ভিডিওটিতে সেই কথাগুলোকে জীবন্ত করে তুলেছেন পরিচালক চন্দন রায় চৌধুরী। ভিডিওতে নির্মাতা আমাকে ভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আমিও চেষ্টা করেছি তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে। সব মিলিয়ে নেই অধিকার গানটি আমার ভালো লেগেছে। আশা করছি দর্শক শ্রোতাদেরও ভালো লাগবে।’
লিজা জানান, আগামীকাল তাঁর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পাবে নেই অনুরোধ গানের মিউজিক ভিডিও।
অন্যদিকে, ছোটদের গানের রিয়েলিটি শো আরটিভি লিটল স্টারের বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন লিজা। কয়েক মাস আগে ইউরোপে সংগীত সফর করে এসেছেন তিনি। প্রবাসী বাংলাদেশিদের আমন্ত্রণে ২৫ দিনের ইউরোপ ট্যুরে লিজা সংগীত পরিবেশন করেছেন ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ইতালি ও স্পেনে।

খালিদের প্রতিটি গানই সুরুচির পরিচায়ক। সেই যে ৮০-র পরপর শুরু করলেন গান গাওয়া। ‘চাইম’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে তাঁর গাওয়া প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে সুন্দর কথা আর হৃদয় ছোঁয়া সুরের জন্য। কীর্তনখোলার পারের ছেলে খালিদ নিজেকে বলতেন গাঁয়ের ছেলে। তাঁর ব্যান্ড চাইমও লোকগানের প্রতি বিপুল আগ্রহ
১৯ মার্চ ২০২৪
ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজের তালিকায় শুরুর দিকে আছে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর নাম। শ্রীকান্ত তিওয়ারি নামের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার পারিবারিক জীবন এবং শ্বাসরুদ্ধকর মিশনের গল্প নিয়ে তৈরি সিরিজটির প্রথম সিজন এসেছিল ২০১৯ সালে।
৭ ঘণ্টা আগে
থিয়েটার ও থিয়েটারকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামের নাট্যসংগঠন স্কেচ গ্যালারি নন্দনের দ্বিতীয় প্রযোজনা ‘সাজঘর’। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘সাজঘর’ উপন্যাসের নাট্যরূপ এটি। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান। গত মে মাসে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়েছে নাটকটির।
৭ ঘণ্টা আগে
গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিনেতা হাসান মাসুদ। গত সোমবার রাতে প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও খিঁচুনি অনুভব করলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, হাসান মাসুদ ইস্কেমিক স্ট্রোক করেছেন। মাইল্ড হার্ট অ্যাটা
৭ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক

ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজের তালিকায় শুরুর দিকে আছে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর নাম। শ্রীকান্ত তিওয়ারি নামের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার পারিবারিক জীবন এবং শ্বাসরুদ্ধকর মিশনের গল্প নিয়ে তৈরি সিরিজটির প্রথম সিজন এসেছিল ২০১৯ সালে। প্রথম সিজনেই জনপ্রিয়তা পায় আমাজন প্রাইম ভিডিওতে প্রচারিত সিরিজটি। শ্রীকান্ত তিওয়ারি চরিত্রে প্রশংসিত হন মনোজ বাজপেয়ি। দ্বিতীয় সিজন মুক্তি পায় ২০২১ সালে। এবার আসছে তৃতীয় সিজন।
গতকাল প্রোমো প্রকাশ করে অনেকটা কমেডির ধাঁচে প্রাইম ভিডিও জানিয়েছে ফ্যামিলি ম্যানের তৃতীয় সিজনের মুক্তির তারিখ। ভিডিওতে দেখা গেছে, গোয়েন্দাগিরি ভুলে এবার গায়ক হতে মরিয়া শ্রীকান্ত তিওয়ারি! দিনভর বেসুরো কণ্ঠে গানের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে পরিবার তো বটেই, শ্রীকান্তের ওপর বেজায় বিরক্ত তার সহকর্মীরাও। শ্রীকান্তর স্ত্রী সুচিত্রা জানায়, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সিজনের মধ্যকার এই চার বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে তাদের জীবনে। মেয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছে, ছেলেও বড় হয়েছে। কিন্তু শ্রীকান্ত সেই একই রকম থেকে গেছে।
প্রোমো দেখে আন্দাজ করা যায়, আগের মতোই যেভাবে দক্ষ হাতে মধ্যবিত্ত গোয়েন্দা শ্রীকান্ত একই সঙ্গে পরিবার ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব সামলায়; এবারও সে গল্প পাওয়া যাবে। গল্পে উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কিছু ইস্যু উঠে আসবে বলে জানা গেছে। তবে এবার কিন্তু ওয়ান ম্যান শো হবে না। আগে যেভাবে শ্রীকান্ত চরিত্রে একাই বাজিমাত করে দিতেন মনোজ, এবার এসেছে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী। এবার লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। কারণ, তৃতীয় সিজনে যুক্ত হয়েছেন জয়দীপ আহলাওয়াত। তিনি মনোজ বাজপেয়ির চরিত্র শ্রীকান্তের বিরুদ্ধে লড়বেন।
ফ্যামিলি ম্যান সিরিজের পরিচালক জুটি রাজ অ্যান্ড ডিকে বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে যেভাবে এ সিরিজের প্রতি দর্শকেরা ভালোবাসা জানিয়েছেন, তা সত্যিই অসাধারণ। তৃতীয় সিজনে থাকবে আরও অ্যাকশন, আরও চমৎকার গল্প আর অনবদ্য অভিনয়। এবারের সিজনে শিকারিই হবে শিকার। শ্রীকান্তকে এমন কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, যা আগে সে কখনো কল্পনাও করেনি। তার ক্যারিয়ার আর পরিবারও হুমকির মুখে পড়বে।’
আগামী ২১ নভেম্বর থেকে ২৪০টির বেশি দেশ থেকে প্রাইম ভিডিওতে দেখা যাবে দ্য ফ্যামিলি ম্যান সিজন থ্রি।

ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজের তালিকায় শুরুর দিকে আছে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর নাম। শ্রীকান্ত তিওয়ারি নামের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার পারিবারিক জীবন এবং শ্বাসরুদ্ধকর মিশনের গল্প নিয়ে তৈরি সিরিজটির প্রথম সিজন এসেছিল ২০১৯ সালে। প্রথম সিজনেই জনপ্রিয়তা পায় আমাজন প্রাইম ভিডিওতে প্রচারিত সিরিজটি। শ্রীকান্ত তিওয়ারি চরিত্রে প্রশংসিত হন মনোজ বাজপেয়ি। দ্বিতীয় সিজন মুক্তি পায় ২০২১ সালে। এবার আসছে তৃতীয় সিজন।
গতকাল প্রোমো প্রকাশ করে অনেকটা কমেডির ধাঁচে প্রাইম ভিডিও জানিয়েছে ফ্যামিলি ম্যানের তৃতীয় সিজনের মুক্তির তারিখ। ভিডিওতে দেখা গেছে, গোয়েন্দাগিরি ভুলে এবার গায়ক হতে মরিয়া শ্রীকান্ত তিওয়ারি! দিনভর বেসুরো কণ্ঠে গানের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে পরিবার তো বটেই, শ্রীকান্তের ওপর বেজায় বিরক্ত তার সহকর্মীরাও। শ্রীকান্তর স্ত্রী সুচিত্রা জানায়, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সিজনের মধ্যকার এই চার বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে তাদের জীবনে। মেয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছে, ছেলেও বড় হয়েছে। কিন্তু শ্রীকান্ত সেই একই রকম থেকে গেছে।
প্রোমো দেখে আন্দাজ করা যায়, আগের মতোই যেভাবে দক্ষ হাতে মধ্যবিত্ত গোয়েন্দা শ্রীকান্ত একই সঙ্গে পরিবার ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব সামলায়; এবারও সে গল্প পাওয়া যাবে। গল্পে উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কিছু ইস্যু উঠে আসবে বলে জানা গেছে। তবে এবার কিন্তু ওয়ান ম্যান শো হবে না। আগে যেভাবে শ্রীকান্ত চরিত্রে একাই বাজিমাত করে দিতেন মনোজ, এবার এসেছে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী। এবার লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। কারণ, তৃতীয় সিজনে যুক্ত হয়েছেন জয়দীপ আহলাওয়াত। তিনি মনোজ বাজপেয়ির চরিত্র শ্রীকান্তের বিরুদ্ধে লড়বেন।
ফ্যামিলি ম্যান সিরিজের পরিচালক জুটি রাজ অ্যান্ড ডিকে বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে যেভাবে এ সিরিজের প্রতি দর্শকেরা ভালোবাসা জানিয়েছেন, তা সত্যিই অসাধারণ। তৃতীয় সিজনে থাকবে আরও অ্যাকশন, আরও চমৎকার গল্প আর অনবদ্য অভিনয়। এবারের সিজনে শিকারিই হবে শিকার। শ্রীকান্তকে এমন কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, যা আগে সে কখনো কল্পনাও করেনি। তার ক্যারিয়ার আর পরিবারও হুমকির মুখে পড়বে।’
আগামী ২১ নভেম্বর থেকে ২৪০টির বেশি দেশ থেকে প্রাইম ভিডিওতে দেখা যাবে দ্য ফ্যামিলি ম্যান সিজন থ্রি।

খালিদের প্রতিটি গানই সুরুচির পরিচায়ক। সেই যে ৮০-র পরপর শুরু করলেন গান গাওয়া। ‘চাইম’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে তাঁর গাওয়া প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে সুন্দর কথা আর হৃদয় ছোঁয়া সুরের জন্য। কীর্তনখোলার পারের ছেলে খালিদ নিজেকে বলতেন গাঁয়ের ছেলে। তাঁর ব্যান্ড চাইমও লোকগানের প্রতি বিপুল আগ্রহ
১৯ মার্চ ২০২৪
সুরকার ও সংগীতশিল্পী হৃদয় খানের সুরে নতুন গান গাইলেন সংগীতশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। গানের শিরোনাম ‘নেই অধিকার’। র্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানটির সংগীত আয়োজনও করেছেন হৃদয় খান। চন্দন রায় চৌধুরীর নির্দেশনায় মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে কক্সবাজারে। ভিডিওতে লিজার সঙ্গে মডেল হয়েছেন মোহতারাম বিল্লাহ।
৭ ঘণ্টা আগে
থিয়েটার ও থিয়েটারকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামের নাট্যসংগঠন স্কেচ গ্যালারি নন্দনের দ্বিতীয় প্রযোজনা ‘সাজঘর’। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘সাজঘর’ উপন্যাসের নাট্যরূপ এটি। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান। গত মে মাসে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়েছে নাটকটির।
৭ ঘণ্টা আগে
গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিনেতা হাসান মাসুদ। গত সোমবার রাতে প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও খিঁচুনি অনুভব করলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, হাসান মাসুদ ইস্কেমিক স্ট্রোক করেছেন। মাইল্ড হার্ট অ্যাটা
৭ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

থিয়েটার ও থিয়েটারকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামের নাট্যসংগঠন স্কেচ গ্যালারি নন্দনের দ্বিতীয় প্রযোজনা ‘সাজঘর’। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘সাজঘর’ উপন্যাসের নাট্যরূপ এটি। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান। গত মে মাসে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়েছে নাটকটির। এরপর চট্টগ্রামে নিয়মিত প্রদর্শনী হয়েছে। এবার সাজঘর নিয়ে ঢাকার মঞ্চে আসছে স্কেচ গ্যালারি নন্দন। আগামী ১ নভেম্বর রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টায় প্রদর্শিত হবে সাজঘর।
সাজঘর মূলত একজন অভিনেতার শিল্পীসত্তা ও ব্যক্তিসত্তার দ্বন্দ্বের গল্প। পাশাপাশি এতে উঠে এসেছে গ্রুপ থিয়েটারের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, বন্ধুত্ব, প্রেম, হিংসা, নিঃসঙ্গতা এবং শিল্পের প্রতি গভীর দায়বোধের প্রকাশ। পরিচিত থিয়েটার প্রাঙ্গণ, মহড়াকক্ষ ও মঞ্চের পেছনের আলো-আঁধারিতে নাটকটি একদল স্বপ্নদ্রষ্টা মানুষের যাত্রাপথ তুলে ধরে; যারা আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও মঞ্চে আলো জ্বালানোর স্বপ্ন দেখে।
নির্দেশক শাহরিয়ার হান্নান বলেন, ‘মঞ্চে একটি সাজানো-গোছানো পরিপাটি নাটক দেখা গেলেও তা নির্মাণের পেছনে যে কত গল্প আছে, তা অজানাই থেকে যায়। এই গল্পগুলো আর সম্পর্কগুলোই গ্রুপ থিয়েটারের শক্তি। সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর সাজঘর উপন্যাসে গ্রুপ থিয়েটার ও থিয়েটারের মানুষের না-জানা গল্পগুলো তুলে এনেছেন।’
সাজঘর নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সনজিব বড়ুয়া, বিজন মজুমদার, সুচরিত দাশ খোকন, রহিমা খাতুন লুনা, শাহীন চৌধুরী, আশীষ নন্দী, বিকিরণ বড়ুয়া, মামুন নাজিম, ধীমান দাশ, সালমা জাহান, বুশরা আল মোবাশ্বেরা, মামুরা মমতাজ দীপা ও শাহরিয়ার হান্নান।
সুস্থ সংস্কৃতিচর্চা ও এর অনালোকিত দিকসমূহ উপস্থাপনের প্রয়াসে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করে স্কেচ গ্যালারি নন্দন। ২০১৯ সালে মঞ্চে আসে দলটির প্রথম প্রযোজনা ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’। ও’হেনরির গল্প অবলম্বনে নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান।

থিয়েটার ও থিয়েটারকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামের নাট্যসংগঠন স্কেচ গ্যালারি নন্দনের দ্বিতীয় প্রযোজনা ‘সাজঘর’। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘সাজঘর’ উপন্যাসের নাট্যরূপ এটি। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান। গত মে মাসে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়েছে নাটকটির। এরপর চট্টগ্রামে নিয়মিত প্রদর্শনী হয়েছে। এবার সাজঘর নিয়ে ঢাকার মঞ্চে আসছে স্কেচ গ্যালারি নন্দন। আগামী ১ নভেম্বর রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টায় প্রদর্শিত হবে সাজঘর।
সাজঘর মূলত একজন অভিনেতার শিল্পীসত্তা ও ব্যক্তিসত্তার দ্বন্দ্বের গল্প। পাশাপাশি এতে উঠে এসেছে গ্রুপ থিয়েটারের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, বন্ধুত্ব, প্রেম, হিংসা, নিঃসঙ্গতা এবং শিল্পের প্রতি গভীর দায়বোধের প্রকাশ। পরিচিত থিয়েটার প্রাঙ্গণ, মহড়াকক্ষ ও মঞ্চের পেছনের আলো-আঁধারিতে নাটকটি একদল স্বপ্নদ্রষ্টা মানুষের যাত্রাপথ তুলে ধরে; যারা আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও মঞ্চে আলো জ্বালানোর স্বপ্ন দেখে।
নির্দেশক শাহরিয়ার হান্নান বলেন, ‘মঞ্চে একটি সাজানো-গোছানো পরিপাটি নাটক দেখা গেলেও তা নির্মাণের পেছনে যে কত গল্প আছে, তা অজানাই থেকে যায়। এই গল্পগুলো আর সম্পর্কগুলোই গ্রুপ থিয়েটারের শক্তি। সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর সাজঘর উপন্যাসে গ্রুপ থিয়েটার ও থিয়েটারের মানুষের না-জানা গল্পগুলো তুলে এনেছেন।’
সাজঘর নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সনজিব বড়ুয়া, বিজন মজুমদার, সুচরিত দাশ খোকন, রহিমা খাতুন লুনা, শাহীন চৌধুরী, আশীষ নন্দী, বিকিরণ বড়ুয়া, মামুন নাজিম, ধীমান দাশ, সালমা জাহান, বুশরা আল মোবাশ্বেরা, মামুরা মমতাজ দীপা ও শাহরিয়ার হান্নান।
সুস্থ সংস্কৃতিচর্চা ও এর অনালোকিত দিকসমূহ উপস্থাপনের প্রয়াসে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করে স্কেচ গ্যালারি নন্দন। ২০১৯ সালে মঞ্চে আসে দলটির প্রথম প্রযোজনা ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’। ও’হেনরির গল্প অবলম্বনে নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান।

খালিদের প্রতিটি গানই সুরুচির পরিচায়ক। সেই যে ৮০-র পরপর শুরু করলেন গান গাওয়া। ‘চাইম’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে তাঁর গাওয়া প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে সুন্দর কথা আর হৃদয় ছোঁয়া সুরের জন্য। কীর্তনখোলার পারের ছেলে খালিদ নিজেকে বলতেন গাঁয়ের ছেলে। তাঁর ব্যান্ড চাইমও লোকগানের প্রতি বিপুল আগ্রহ
১৯ মার্চ ২০২৪
সুরকার ও সংগীতশিল্পী হৃদয় খানের সুরে নতুন গান গাইলেন সংগীতশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। গানের শিরোনাম ‘নেই অধিকার’। র্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানটির সংগীত আয়োজনও করেছেন হৃদয় খান। চন্দন রায় চৌধুরীর নির্দেশনায় মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে কক্সবাজারে। ভিডিওতে লিজার সঙ্গে মডেল হয়েছেন মোহতারাম বিল্লাহ।
৭ ঘণ্টা আগে
ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজের তালিকায় শুরুর দিকে আছে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর নাম। শ্রীকান্ত তিওয়ারি নামের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার পারিবারিক জীবন এবং শ্বাসরুদ্ধকর মিশনের গল্প নিয়ে তৈরি সিরিজটির প্রথম সিজন এসেছিল ২০১৯ সালে।
৭ ঘণ্টা আগে
গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিনেতা হাসান মাসুদ। গত সোমবার রাতে প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও খিঁচুনি অনুভব করলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, হাসান মাসুদ ইস্কেমিক স্ট্রোক করেছেন। মাইল্ড হার্ট অ্যাটা
৭ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিনেতা হাসান মাসুদ। গত সোমবার রাতে প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও খিঁচুনি অনুভব করলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, হাসান মাসুদ ইস্কেমিক স্ট্রোক করেছেন। মাইল্ড হার্ট অ্যাটাকও হয়েছে তাঁর।
মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক ইউনিটে ভর্তি আছেন হাসান মাসুদ। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমে বলেন, ‘বর্তমানে নিউরোলজিস্ট, কার্ডিওলজিস্ট ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন হাসান মাসুদ। এ ধরনের রোগীরা সাধারণত ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে থাকেন। এরপর নির্ধারণ করা হয় পরবর্তী চিকিৎসাপদ্ধতি কী হবে।’
২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ব্যাচেলর’ সিনেমা দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক হাসান মাসুদের। এরপর কাজ করেছেন অনেক নাটকে। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে আছে ‘হাউসফুল’, ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’, ‘এফডিসি’, ‘বউ’, ‘খুনসুটি’, ‘গ্র্যাজুয়েট’, ‘রঙের দুনিয়া’, ‘গণি সাহেবের শেষ কিছুদিন’, ‘বাতাসের ঘর’ ইত্যাদি। অভিনয় করেছেন ওয়েব কনটেন্টেও। অভিনয়ের আগে সাংবাদিকতা করতেন হাসান মাসুদ। এর আগে কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। ১৯৯২ সালে ৭ বছরের মাথায় ক্যাপ্টেন পদ থেকে অবসর নেন।
অনেক দিন ধরেই অভিনয়ে অনিয়মিত হাসান মাসুদ। গত মাসে পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমিরকে জড়িয়ে সংবাদের শিরোনাম হন তিনি। সে সময় অনেকটা অভিমান করে জানিয়েছিলেন, অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে চান। চাকরি খোঁজার কথাও জানান হাসান মাসুদ।

গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিনেতা হাসান মাসুদ। গত সোমবার রাতে প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও খিঁচুনি অনুভব করলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, হাসান মাসুদ ইস্কেমিক স্ট্রোক করেছেন। মাইল্ড হার্ট অ্যাটাকও হয়েছে তাঁর।
মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক ইউনিটে ভর্তি আছেন হাসান মাসুদ। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমে বলেন, ‘বর্তমানে নিউরোলজিস্ট, কার্ডিওলজিস্ট ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন হাসান মাসুদ। এ ধরনের রোগীরা সাধারণত ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে থাকেন। এরপর নির্ধারণ করা হয় পরবর্তী চিকিৎসাপদ্ধতি কী হবে।’
২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ব্যাচেলর’ সিনেমা দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক হাসান মাসুদের। এরপর কাজ করেছেন অনেক নাটকে। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে আছে ‘হাউসফুল’, ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’, ‘এফডিসি’, ‘বউ’, ‘খুনসুটি’, ‘গ্র্যাজুয়েট’, ‘রঙের দুনিয়া’, ‘গণি সাহেবের শেষ কিছুদিন’, ‘বাতাসের ঘর’ ইত্যাদি। অভিনয় করেছেন ওয়েব কনটেন্টেও। অভিনয়ের আগে সাংবাদিকতা করতেন হাসান মাসুদ। এর আগে কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। ১৯৯২ সালে ৭ বছরের মাথায় ক্যাপ্টেন পদ থেকে অবসর নেন।
অনেক দিন ধরেই অভিনয়ে অনিয়মিত হাসান মাসুদ। গত মাসে পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমিরকে জড়িয়ে সংবাদের শিরোনাম হন তিনি। সে সময় অনেকটা অভিমান করে জানিয়েছিলেন, অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে চান। চাকরি খোঁজার কথাও জানান হাসান মাসুদ।

খালিদের প্রতিটি গানই সুরুচির পরিচায়ক। সেই যে ৮০-র পরপর শুরু করলেন গান গাওয়া। ‘চাইম’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে তাঁর গাওয়া প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে সুন্দর কথা আর হৃদয় ছোঁয়া সুরের জন্য। কীর্তনখোলার পারের ছেলে খালিদ নিজেকে বলতেন গাঁয়ের ছেলে। তাঁর ব্যান্ড চাইমও লোকগানের প্রতি বিপুল আগ্রহ
১৯ মার্চ ২০২৪
সুরকার ও সংগীতশিল্পী হৃদয় খানের সুরে নতুন গান গাইলেন সংগীতশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। গানের শিরোনাম ‘নেই অধিকার’। র্যাপার তওফিক আহমেদের লেখা গানটির সংগীত আয়োজনও করেছেন হৃদয় খান। চন্দন রায় চৌধুরীর নির্দেশনায় মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছে কক্সবাজারে। ভিডিওতে লিজার সঙ্গে মডেল হয়েছেন মোহতারাম বিল্লাহ।
৭ ঘণ্টা আগে
ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজের তালিকায় শুরুর দিকে আছে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর নাম। শ্রীকান্ত তিওয়ারি নামের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার পারিবারিক জীবন এবং শ্বাসরুদ্ধকর মিশনের গল্প নিয়ে তৈরি সিরিজটির প্রথম সিজন এসেছিল ২০১৯ সালে।
৭ ঘণ্টা আগে
থিয়েটার ও থিয়েটারকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামের নাট্যসংগঠন স্কেচ গ্যালারি নন্দনের দ্বিতীয় প্রযোজনা ‘সাজঘর’। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘সাজঘর’ উপন্যাসের নাট্যরূপ এটি। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন শাহরিয়ার হান্নান। গত মে মাসে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়েছে নাটকটির।
৭ ঘণ্টা আগে