Ajker Patrika

হাসিয়ে সফল যারা

রিক্তা রিচি
হাসিয়ে সফল যারা

মানুষকে হাসানোর জন্য অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন, মিস্টার বিন, জনি লিভার, পরেশ রাওয়াল, দিলদার প্রমুখ সর্বাধিক পরিচিত। রসাত্মক, হাস্যকর ও ব্যাঙ্গাত্বক নানামাত্রিক অভিনয় ও সংলাপের জোরে তাঁরা অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন; কাঁপিয়েছেন পর্দা। কমেডি চরিত্র করে নিজ নিজ দেশ তো বটেই, কেউ কেউ দেশের সীমা ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে পেয়েছেন কিংবদন্তির মর্যাদা। এ ক্ষেত্রে চার্লি চ্যাপলিন তো একেবারে অনন্য।

এই অগ্রগণ্যদের অনুসারীর সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। নতুন যুগে, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেকেই মানুষকে হাসিয়ে মাত করছেন। এই সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে নিজের হাস্যরসাত্মক অভিনয়ের ভিডিও প্রকাশ করে অসংখ্য মানুষের মন জয় করেছেন কয়েকজন নারী। এমন তিন নারীকে নিয়েই আজকের আয়োজন।

শামস আফরোজ চৌধুরী
ফেসবুক ও ইউটিউবে কন্টেন্ট ক্রিয়েট করে যে কয়েকজন নারী তরুণদের হৃদয় জয় করেছেন, তার মধ্যে থটস অব শামস–এর শামস আফরোজ চৌধুরী অন্যতম। কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে তাঁর পথচলা তিন বছর আগে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে বারবার চাকরির ইন্টারভিউ থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়া এই নারী ভিডিও বানিয়ে আয় করছেন এখন লাখ টাকার বেশি। শামস শুধু ভিডিও বানান কিংবা অভিনয় করেন, তা নয়। তিনি নিজেই স্ক্রিপ্ট লেখেন, ভিডিও এডিট করেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো তিনি একাই ৫/৬টি চরিত্র সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলেন। কুমিল্লার মেয়ে শামস ভিডিওতে কুমিল্লার আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করেন। তাঁর এই আঞ্চলিকতাই মানুষের মনকে বেশি আন্দোলিত করে।

এক সময় প্রচণ্ড হতাশায় ভোগা এই নারী এখন অনেকের কাছে আদর্শ। তাঁর ফেসবুক পেজে প্রায় ৭ লাখ লাইক এবং ১৫ লাখ অনুসারী রয়েছে। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২ লাখ ৪৮ হাজার।

পারি রুখ আল মতিনপারি রুখ আল মতিন
শুধু হাস্যরসাত্মক নয়, সমাজের বিভিন্ন অসংগতিও ভিডিওতে তুলে ধরেন পারি রুখ আল মতিন। তাঁর ফেসবুক পেজ ও চ্যানেলের নাম আনঅফিশিয়াল কমন সেন্স বাই পারি। এই প্ল্যাটফর্মে তিনি মজাদার ভিডিওর পাশাপাশি ব্যাঙ্গাত্বক ও সমাজের বদ্ধমূল বিভিন্ন ধারণার পরিবর্তন হয়—এমন ভিডিও প্রদর্শন করেন। গত দুই বছর ধরে এই কাজ তিনি মনোযোগ দিয়ে করে যাচ্ছেন। পেয়েছেন সাফল্যও। তাঁর ফেসবুক পেজে লাইকের সংখ্যা ৫ লাখ ৯৭ হাজার। আর অনুসারী রয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজারের বেশি।

পড়াশোনা, চাকরি ও সংসার সামলে অনেক আগে থেকেই জীবনযুদ্ধে জড়িয়ে পড়া পারি এখন সমাজে সম্মানের পাত্র। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে বিভিন্ন সময় প্রতিবন্ধকতার শিকারও হয়েছেন। তবে দমে যাননি। প্রচণ্ড হতাশাকে জয় করে এই নারী প্রতি মাসে আয় করছেন ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। পাচ্ছেন বিভিন্ন কোম্পানির স্পন্সরও।

কামরুন নাহার ডানাকামরুন নাহার ডানা
কামরুন নাহার ডানা; একজন সফল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও ভ্লগার। কাজ করেন রেডিও জকি হিসেবেও। বিভিন্ন সময় মজাদার, স্পর্শকাতর ও আবেগী বিষয় নিয়ে ভিডিও তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন। এসব ভিডিওতে তিনি তুলে ধরেন নানা অসঙ্গতি। তবে মানুষকে হাসানোর কাজটিই তিনি অতি যত্নের সঙ্গে করেন।

কামরুন নাহার ডানার ভাষ্যমতে, মানুষকে আনন্দ দেওয়াকে তিনি খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। কারণ, তিনি অসম্ভব রকমের মানসিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে একসময় গেছেন। প্রচণ্ড হতাশা থেকে আত্মহত্যার চিন্তাও করেছিলেন একসময়। তারপর থেকে কেবল অন্যকে আনন্দ দেওয়াই যেন তাঁর ব্রত। সেই সঙ্গে নিজেও আনন্দে থাকতে ভালোবাসেন। মানুষকে হাসিয়ে এই নারী মাসে ৫০ হাজারেরও বেশি টাকা আয় করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত