Ajker Patrika

অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিধি বৃদ্ধিসহ নেওয়া হচ্ছে একগুচ্ছ উদ্যোগ

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৪৯
অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিধি বৃদ্ধিসহ নেওয়া হচ্ছে একগুচ্ছ উদ্যোগ

ঘুরে দাঁড়াতে চায় দক্ষিণাঞ্চলের উচ্চশিক্ষার বাতিঘর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। এ লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সেশনজট, অবকাঠামো উন্নয়ন, শ্রেণিকক্ষ-সংকট শিগগিরই দূর হচ্ছে। ইতিমধ্যে আলোকিত করা হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধি দ্বিগুণ বৃদ্ধিসহ মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী উন্নয়নে নেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ উদ্যোগ।

একনজরে ববি
২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার কর্ণকাঠিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। ৫০ একর আয়তনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯ হাজারের বেশি। এখানে শিক্ষক ২০৫, কর্মকর্তা ১২১ ও কর্মচারী রয়েছেন ২০০ জন। রয়েছে দুটি একাডেমিক ভবন, দুটি প্রশাসনিক ভবন, টিএসসি ভবন, শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল চারটি, লাইব্রেরি ভবন, মসজিদ ও উপাচার্যের বাসভবন।

যেভাবে এগোচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়
২০১৬ সালে যাত্রা শুরু হয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের। বিভাগটির প্রধান শাহানাজ পারভিন রিমির সঙ্গে কথা হয় আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয় কেমন চলছে—জানতে চাইলে রিমি জানান, সাত বছর আগে বিভাগটি যাত্রা শুরু করলেও ক্লাসরুম ছিল না। অতীতে এর সমাধান না হলেও বর্তমান উপাচার্য এর ব্যবস্থা করেছেন। শিক্ষার্থীরা এতে খুশি হয়েছে। ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ তানভির কায়সার বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়াতে কাজ করছি।’

সংশ্লিষ্টদের কথা
বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক সুজয় শুভ বলেন, ‘স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ববি। এখানে পাঁচ বছরেও আবাসন, ক্লাসরুম, অবকাঠামো ও পরিবহন-সংকট দূর হয়নি। রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য চেষ্টা করছেন। তিনি সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারেন কি না, তা সময়ই বলে দেবে।’

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব)ইংরেজি বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিকা সিথী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট, শিক্ষক-সংকট, পরিবহনের সংকট, ক্লাসরুমের সংকট কাটিয়ে উঠতে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। বর্তমানে এখানে কিছু পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে হলে পরিবর্তন ঘটাতে হবে সব সেক্টরে।’ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, তাঁদের হলটি চালুই হয়েছে এক বছর মুখ থুবড়ে থাকার পর। এরপর কিছু উন্নয়ন হলেও ডাইনিংয়ের উন্নয়ন হয়নি। হলের পরিবেশেরও উন্নয়ন দরকার।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক আবদুল বাতেন চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে শিক্ষকদের চেষ্টার কমতি নেই। শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষক সমিতি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করার উদ্যোগ নিচ্ছে। আবাসন, ক্লাসরুম, পরিবহন-সংকট দূর করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আমূল পরিবর্তনে সহযোগিতা করছেন শিক্ষকেরা।’

যা জানালেন উপাচার্য
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আর পালিয়ে বেড়ানো হবে না।’ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানালেন তিনি। এ-ও জানালেন, উপাচার্যের দরজা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য সব সময় খোলা। বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে সেশনজট কমানোর উদ্যোগ নিয়েছেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। তিনি জানান, ক্লাসরুমের সংকট কাটাতে ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বহুতল একাডেমিক ভবন এবং আবাসন সৃষ্টিতে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ তলাবিশিষ্ট একটি ছাত্র হলের অনুমোদন হচ্ছে শিগগিরই। উদ্যোগের সংকট থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির উন্নয়ন মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী হয়নি। মাস্টারপ্ল্যান তৈরির চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত