মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
বাবা ড. মোহাম্মদ আবদুর রহীম দেশের একজন স্বনামধন্য ক্যালিগ্রাফার। বাবার হাত ধরে ক্যালিগ্রাফির জগতে প্রবেশ রায়হান সানির। বর্তমানে তিনি হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যালিগ্রাফিকে তিনি বেছে নিয়েছেন সৃজনশীল পেশা হিসেবে। প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলাদেশ ক্যালিগ্রাফি ইনস্টিটিউট। ২০২২ সালে ভারতের রাজস্থানের উদয়পুরে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে জুরিবোর্ডের ‘ক্রিয়েটিভ মাস্টারপিস’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জয় তাঁর অর্জনের অন্যতম সোপান।
যেভাবে শুরু
ছোটবেলা থেকেই বাবার কাজ দেখে বেড়ে ওঠা সানির। বাবা দেশ-বিদেশে ক্যালিগ্রাফি করে সম্মান বয়ে এনেছেন, সেটিই ছিল সানির অনুপ্রেরণা। ২০১৮ সালে তিনি পূর্ণাঙ্গভাবে ক্যালিগ্রাফি নিয়ে কাজ শুরু করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এ ক্ষেত্র থেকে আয়ও শুরু হয়। তিনি মনে করেন, ক্যালিগ্রাফি আয়ত্ত করতে দীর্ঘমেয়াদি চর্চা অপরিহার্য—‘কমপক্ষে ১০–১২ বছর নিয়মিত অনুশীলন ছাড়া আসল দক্ষতা অর্জন সম্ভব নয়,’ বললেন তিনি।
বাংলাদেশ ক্যালিগ্রাফি ইনস্টিটিউট
২০২০ সালে সানি আরও কয়েকজনকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ ক্যালিগ্রাফি ইনস্টিটিউট। বর্তমানে তিনি এ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী। পাশাপাশি তিনি পরিচালনা করেন ‘ক্যালিগ্রাফি শপ’ নামে একটি ফেসবুক পেজ, যেখানে ১০ হাজারের বেশি অনুসারী আছে। এখানে ক্যালিগ্রাফি-বিষয়ক তথ্য ও বিভিন্ন সামগ্রী পাওয়া যায়। নিজের ফেসবুক পেজ Raihan Sani-তেও তিনি নিয়মিত কাজ শেয়ার করেন।
কেন ক্যালিগ্রাফি
ক্যালিগ্রাফির আগে সানি যুক্ত ছিলেন কম্পিউটার অ্যাইডেড ডিজাইন ও গ্রাফিক ডিজাইনের সঙ্গে। কিছুদিন ফ্রিল্যান্সিংও করেছেন। সৃজনশীলতার প্রতি গভীর আগ্রহ থেকে ক্যালিগ্রাফিকে তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেন।
ব্যতিক্রমী কাজ
‘আমার ক্যালিগ্রাফির কিছু বিশেষত্ব আছে। যাঁরা ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে নিয়মিত আমার কাজ দেখেন, তাঁরা সহজে চিনতে পারবেন—এটা আমার কাজ,’ বললেন সানি। তিনি আধুনিক ও ক্ল্যাসিক্যাল—দুই ধারার মিশ্রণ ঘটিয়ে ক্যালিগ্রাফি করেন। ফলে তাঁর কাজে দুটি ধারা একসঙ্গে ধরা দেয়।
সফলতার সিক্রেট
সাফল্যের রহস্য জানতে চাইলে সানি বলেন, ‘মাস্টার ক্যালিগ্রাফারদের সংস্পর্শে থাকা এবং তাঁদের অনুশীলন কাছ থেকে দেখা—এই দুটি বিষয় দ্রুত উন্নতিতে সাহায্য করে।’
ক্যালিগ্রাফিতে আয়
সানির ভাষায়, ‘ক্যালিগ্রাফি কোনো পণ্য নয়, এটি হলো আর্টিস্টস এক্সপ্রেশন।’ তবু ক্যালিগ্রাফি থেকে তাঁর মাসিক গড় আয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। প্রথম আয় ছিল ১১ হাজার টাকা। বর্তমানে তিনি অফিস, ব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্ডার নিয়ে থাকেন। একটি কাজের মূল্য কখনো এক লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যায়।
অর্জন
এ পর্যন্ত জাতীয় ও অনলাইনে ১০টি প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন সানি। আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের দুটি প্রদর্শনীতে অংশ নেন। যেখানে তাঁর ক্যালিগ্রাফি প্রশংসিত হয়েছে। তিনি মিনিয়েচার ক্যালিগ্রাফির জন্য জাতীয় পর্যায়ে খুলনা শিল্পকলা একাডেমির ২০২৪ এর প্রদর্শনীতে ‘বেস্ট আর্টওয়ার্ক’ অ্যাওয়ার্ড পান।
এ ছাড়া ২০২২ সালের ভারতের রাজস্থানের উদয়পুরে ভারত সরকারের ডব্লিউজেডসিসি আয়োজিত প্রদর্শনীতে জুরিবোর্ডের ক্রিয়েটিভ মাস্টারপিস ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি।
ভারতের ‘ওয়েস্ট জোন কালচারাল সেন্টার’-এর ডিরেক্টর আইএএস অফিসার কিরান সনি গুপ্ত এবং মাক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাকসুদ আলী খান তাঁর ক্যালিগ্রাফির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
এই তালিকায় আরও আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণতম চারুকলা অনুষদের প্রধান ড. আব্দুস সাত্তার, ঢাকা ফোরামের পরিচালক এবং বিশিষ্ট লেখক
সাদ-উর-রহমান, যশোরের বিশিষ্ট লেখক ড. মহীউদ্দীন মোহাম্মদ, বগুড়ার সুপরিচিত ক্যালিগ্রাফার শিল্পী আমিনুর রহমান।
শিক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ
রায়হান সানি মনে করেন, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যালিগ্রাফি করে আয় করতে পারে। শুধু প্রচলিত ধারায় নয়, বরং আধুনিক এবং ব্যবহারিক প্রয়োগে দক্ষ হতে হবে। যেমন
লোগো, পোস্টার, কভার ডিজাইনে ক্যালিগ্রাফি; মার্চেন্ডাইজে (টি-শার্ট, ক্যাপ, পাঞ্জাবি) ক্যালিগ্রাফি। তাঁর মতে, নতুনদের সবচেয়ে বড় ভুল হলো শুরু করার পর দ্রুত উৎসাহ হারিয়ে ফেলা। ধারাবাহিক চর্চাই সফলতার মূল।
আগামীর ভাবনা
বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্যালিগ্রাফির আধুনিক ও জটিল ধারা প্রসারের স্বপ্ন দেখেন সানি। নিঃস্বার্থভাবে ক্যালিগ্রাফি চর্চা এবৎ প্রসারে কাজ করাই তাঁর ভবিষ্যৎ লক্ষ্য।
বাবা ড. মোহাম্মদ আবদুর রহীম দেশের একজন স্বনামধন্য ক্যালিগ্রাফার। বাবার হাত ধরে ক্যালিগ্রাফির জগতে প্রবেশ রায়হান সানির। বর্তমানে তিনি হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যালিগ্রাফিকে তিনি বেছে নিয়েছেন সৃজনশীল পেশা হিসেবে। প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলাদেশ ক্যালিগ্রাফি ইনস্টিটিউট। ২০২২ সালে ভারতের রাজস্থানের উদয়পুরে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে জুরিবোর্ডের ‘ক্রিয়েটিভ মাস্টারপিস’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জয় তাঁর অর্জনের অন্যতম সোপান।
যেভাবে শুরু
ছোটবেলা থেকেই বাবার কাজ দেখে বেড়ে ওঠা সানির। বাবা দেশ-বিদেশে ক্যালিগ্রাফি করে সম্মান বয়ে এনেছেন, সেটিই ছিল সানির অনুপ্রেরণা। ২০১৮ সালে তিনি পূর্ণাঙ্গভাবে ক্যালিগ্রাফি নিয়ে কাজ শুরু করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এ ক্ষেত্র থেকে আয়ও শুরু হয়। তিনি মনে করেন, ক্যালিগ্রাফি আয়ত্ত করতে দীর্ঘমেয়াদি চর্চা অপরিহার্য—‘কমপক্ষে ১০–১২ বছর নিয়মিত অনুশীলন ছাড়া আসল দক্ষতা অর্জন সম্ভব নয়,’ বললেন তিনি।
বাংলাদেশ ক্যালিগ্রাফি ইনস্টিটিউট
২০২০ সালে সানি আরও কয়েকজনকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ ক্যালিগ্রাফি ইনস্টিটিউট। বর্তমানে তিনি এ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী। পাশাপাশি তিনি পরিচালনা করেন ‘ক্যালিগ্রাফি শপ’ নামে একটি ফেসবুক পেজ, যেখানে ১০ হাজারের বেশি অনুসারী আছে। এখানে ক্যালিগ্রাফি-বিষয়ক তথ্য ও বিভিন্ন সামগ্রী পাওয়া যায়। নিজের ফেসবুক পেজ Raihan Sani-তেও তিনি নিয়মিত কাজ শেয়ার করেন।
কেন ক্যালিগ্রাফি
ক্যালিগ্রাফির আগে সানি যুক্ত ছিলেন কম্পিউটার অ্যাইডেড ডিজাইন ও গ্রাফিক ডিজাইনের সঙ্গে। কিছুদিন ফ্রিল্যান্সিংও করেছেন। সৃজনশীলতার প্রতি গভীর আগ্রহ থেকে ক্যালিগ্রাফিকে তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেন।
ব্যতিক্রমী কাজ
‘আমার ক্যালিগ্রাফির কিছু বিশেষত্ব আছে। যাঁরা ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে নিয়মিত আমার কাজ দেখেন, তাঁরা সহজে চিনতে পারবেন—এটা আমার কাজ,’ বললেন সানি। তিনি আধুনিক ও ক্ল্যাসিক্যাল—দুই ধারার মিশ্রণ ঘটিয়ে ক্যালিগ্রাফি করেন। ফলে তাঁর কাজে দুটি ধারা একসঙ্গে ধরা দেয়।
সফলতার সিক্রেট
সাফল্যের রহস্য জানতে চাইলে সানি বলেন, ‘মাস্টার ক্যালিগ্রাফারদের সংস্পর্শে থাকা এবং তাঁদের অনুশীলন কাছ থেকে দেখা—এই দুটি বিষয় দ্রুত উন্নতিতে সাহায্য করে।’
ক্যালিগ্রাফিতে আয়
সানির ভাষায়, ‘ক্যালিগ্রাফি কোনো পণ্য নয়, এটি হলো আর্টিস্টস এক্সপ্রেশন।’ তবু ক্যালিগ্রাফি থেকে তাঁর মাসিক গড় আয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। প্রথম আয় ছিল ১১ হাজার টাকা। বর্তমানে তিনি অফিস, ব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্ডার নিয়ে থাকেন। একটি কাজের মূল্য কখনো এক লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যায়।
অর্জন
এ পর্যন্ত জাতীয় ও অনলাইনে ১০টি প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন সানি। আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের দুটি প্রদর্শনীতে অংশ নেন। যেখানে তাঁর ক্যালিগ্রাফি প্রশংসিত হয়েছে। তিনি মিনিয়েচার ক্যালিগ্রাফির জন্য জাতীয় পর্যায়ে খুলনা শিল্পকলা একাডেমির ২০২৪ এর প্রদর্শনীতে ‘বেস্ট আর্টওয়ার্ক’ অ্যাওয়ার্ড পান।
এ ছাড়া ২০২২ সালের ভারতের রাজস্থানের উদয়পুরে ভারত সরকারের ডব্লিউজেডসিসি আয়োজিত প্রদর্শনীতে জুরিবোর্ডের ক্রিয়েটিভ মাস্টারপিস ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি।
ভারতের ‘ওয়েস্ট জোন কালচারাল সেন্টার’-এর ডিরেক্টর আইএএস অফিসার কিরান সনি গুপ্ত এবং মাক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাকসুদ আলী খান তাঁর ক্যালিগ্রাফির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
এই তালিকায় আরও আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণতম চারুকলা অনুষদের প্রধান ড. আব্দুস সাত্তার, ঢাকা ফোরামের পরিচালক এবং বিশিষ্ট লেখক
সাদ-উর-রহমান, যশোরের বিশিষ্ট লেখক ড. মহীউদ্দীন মোহাম্মদ, বগুড়ার সুপরিচিত ক্যালিগ্রাফার শিল্পী আমিনুর রহমান।
শিক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ
রায়হান সানি মনে করেন, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যালিগ্রাফি করে আয় করতে পারে। শুধু প্রচলিত ধারায় নয়, বরং আধুনিক এবং ব্যবহারিক প্রয়োগে দক্ষ হতে হবে। যেমন
লোগো, পোস্টার, কভার ডিজাইনে ক্যালিগ্রাফি; মার্চেন্ডাইজে (টি-শার্ট, ক্যাপ, পাঞ্জাবি) ক্যালিগ্রাফি। তাঁর মতে, নতুনদের সবচেয়ে বড় ভুল হলো শুরু করার পর দ্রুত উৎসাহ হারিয়ে ফেলা। ধারাবাহিক চর্চাই সফলতার মূল।
আগামীর ভাবনা
বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্যালিগ্রাফির আধুনিক ও জটিল ধারা প্রসারের স্বপ্ন দেখেন সানি। নিঃস্বার্থভাবে ক্যালিগ্রাফি চর্চা এবৎ প্রসারে কাজ করাই তাঁর ভবিষ্যৎ লক্ষ্য।
বিশ্ববিদ্যালয়জীবন শুধু পড়াশোনা নয়, এটি স্বপ্ন গড়ে তোলার, লক্ষ্য নির্ধারণের এবং ক্যারিয়ার তৈরির এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। প্রত্যেক শিক্ষার্থী নিজেকে প্রস্তুত করেন ভবিষ্যতের জন্য। তাঁদের মনে এমন পরিকল্পনা থাকতে পারে—আমি কী হব, আমি কী করব, আমি কী করতে চাই এবং...
১১ ঘণ্টা আগেমনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিয়েত্তি। বয়স সবে ৯ বছর। এ ছোট্ট বয়সেই রোবট বানিয়ে তাঁর অর্জনের ঝুলিতে পুরেছে গোল্ড মেডেল। শুধু কি তা-ই? সে লিখেছে গল্পের বই, শিখেছে প্রোগ্রামিং!
১২ ঘণ্টা আগেদিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ১৮ জন শিক্ষার্থী অর্জন করেছেন মর্যাদাপূর্ণ মিলেনিয়াম ফেলোশিপ ২০২৫। জাতিসংঘের ইউনাইটেড নেশনস একাডেমিক ইমপ্যাক্ট (ইউএনএআই) এবং মিলেনিয়াম ক্যাম্পাস নেটওয়ার্কের...
১৩ ঘণ্টা আগেশিক্ষাজীবন শুধু পরীক্ষার খাতা ভরাট করার জন্য নয়। এটি আসলে ভবিষ্যৎ-জীবনের প্রস্তুতির সময়। একজন শিক্ষার্থীর বড় কাজ শুধু বই মুখস্থ করা নয়; বরং এমন শেখার কৌশল আয়ত্ত করা, যা দ্রুত, গভীর ও দীর্ঘস্থায়ীভাবে জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে।
১৪ ঘণ্টা আগে