Ajker Patrika

গবেষণা ও উদ্ভাবনে আরও এগোতে চায় খুবি 

রুবায়েত হোসেন, খুবি 
আপডেট : ২১ জুন ২০২২, ২০: ০৯
Thumbnail image

১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর চারটি বিষয়ে ৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)। বর্তমানে আটটি অনুষদ ও ২৯টি ডিসিপ্লিনে (বিভাগ) শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের উন্নীত করার জন্য প্রয়োজন উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি নিরন্তর গবেষণা। বেশ কয়েকটি উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে নিজের অস্তিত্বের জানান দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরা নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষণার কাজ। সম্প্রতি ‘এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্স’ নামের আন্তর্জাতিক সংস্থায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪ জন বিজ্ঞানী ও গবেষক স্থান পেয়েছেন। সারা বিশ্বের ২০৬ দেশের ১৩ হাজার ৫৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ লক্ষাধিক বিজ্ঞানীর সাইটেশনের ভিত্তিতে বিশ্ব বিজ্ঞানীদের নিয়ে তালিকাটি করা হয়। তাঁদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন স্থান পেয়েছেন। তিনি খুবিতে ফরেস্ট্রিতে প্রথম, দেশে চতুর্থ, এশিয়ায় ১৫৪ তম ও বিশ্বে ৮৪৯ তম স্থান লাভ করেছেন।

শুধু তাই নয়, স্পেনের সিমাগো ল্যাব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্কপাস পরিচালিত বিশ্বের ৭ হাজার ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পরিচালিত (ইনডেক্স জার্নালভিত্তিক) জরিপের দিকে আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম দিকে স্থান করে নিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।

সম্প্রতি খুবির গবেষণায় দেশীয় ও গাড়ল জাতীয় ভেড়ার সংকর জাত করার সাফল্য মিলেছে। যার ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে সংকর জাতের ভেড়া পালনে দারিদ্র্য বিমোচন ও মাংসের চাহিদা পূরণের সম্ভাবনা দেখছেন গবেষকেরা। পেঁয়াজের গবেষণাতেও এসেছে সাফল্য। উদ্ভাবিত নতুন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষ করলে বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ পেঁয়াজ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া দাকোপের লবণাক্ত জমিতে বিনা চাষে সূর্যমুখী ও গমের চাষাবাদ, ক্যাপসিকাম চাষ এবং বটিয়াঘাটার ছয়ঘরিয়া গ্রামের পুকুরে গবেষণা চালিয়ে গলদা চিংড়ির পোনা উৎপাদনে সফল হয়েছেন খুবির গবেষকেরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা জানান, বর্তমানে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার দিক থেকে আরও এগিয়ে যেতে পারেন। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরা যাতে সঠিকভাবে গবেষণার কাজ বাস্তবায়ন করতে পারেন এ জন্য বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন অনুদানও প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু তা গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত নয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি (ফউটে) ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আগের তুলনায় বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার দিক থেকে অনেক এগিয়ে গেছে। কিন্তু আমরা যদি অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করি তাহলে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের অনেক অনুদানের প্রয়োজন। গবেষণার জন্য নিত্যনতুন যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। গবেষণাগার প্রয়োজন, যা আমরা এখনো পাইনি।’

অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘সরকারি অনুদানের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানেরও এগিয়ে আসতে হবে। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। একই সঙ্গে পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তাহলে গবেষণার মানোন্নয়ন করা সম্ভব হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত