Ajker Patrika

মুজিবনগর সরকারের কোন দিকটি ভালো লাগে

এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
মুজিবনগর সরকারের কোন দিকটি ভালো লাগে

বেলায়েত হোসেন ইমরোজ শিক্ষা ক্যাডার (দর্শন), ৪১তম বিসিএস (সুপারিশপ্রাপ্ত)।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী বেলায়েত হোসেন ইমরোজ। তিনি ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে (দর্শন) মেধাক্রমে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তাঁর ভাইভা অভিজ্ঞতা শুনেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।

ভাইভা হয়েছিল ১৫ মার্চ ২০২৩ তারিখ। বোথ ক্যাডারে ভাইভা দিয়েছিলাম। ভাইভা বোর্ডে প্রায় ১৪-১৫ মিনিটের মতো ছিলাম। ক্যাডার পছন্দক্রম ছিল যথাক্রমে প্রশাসন, পুলিশ, ট্যাক্স, কাস্টমস, বাণিজ্য, খাদ্য, তথ্য...শিক্ষা। ভাইভা বোর্ডে প্রবেশের আগে অপেক্ষার সময়টুকু সহজ নয়। কিন্তু আমি মোটেও উদ্বিগ্নতা অনুভব করিনি। কারণ, আমি সব সময় বিশ্বাস করি আমার হারানোর কিছু নেই। জীবনে এত দূর আসতে পেরেছি, এতেই আমি অনেক খুশি। বিসিএসের ভাইভা দিতে যাচ্ছি এটা ভেবেই আমার ভেতরে খুশি খুশি লাগছিল। বিসিএসের ভাইভা দেওয়াকেও আমি জীবনের অর্জন মনে করি। ভাইভা কেমন হবে, তা নিয়ে আমি বিচলিত হইনি। অনেক অপেক্ষার পর যখন আমার সিরিয়াল এল, তখন ভেতর থেকে বেলের ক্রিং ক্রিং শব্দে আমার ডাক পড়ল বিসিএস ভাইভা বোর্ড নামের সেই অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা অর্জনে।দরজা খুলে ‘ভেতরে আসতে পারি, স্যার?’ সম্বোধনে অনুমতি নিলাম, একটু এগিয়ে গিয়ে সালাম বিনিময় করলাম এবং চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশে চেয়ারে বসলাম। 

প্রতীকী ছবিচেয়ারম্যান স্যার: আপনি তো ফিলোসোফির। বলেন, চার্বাক দর্শন কী? 
আমি: স্যার, চার্বাক দর্শন একটি ভোগবাদী দর্শন সম্প্রদায়। ‘ঋণ করে হলেও ঘি খাও, যত দিন বাঁচো, সুখেই বাঁচো’—এগুলো তাদের দর্শনের মূল কথা। 
চেয়ারম্যান: চার্বাক দর্শনের প্রতিষ্ঠাতার বাড়ি কোথায়? 
আমি: আমি দুঃখিত স্যার, বিষয়টি আমার জানা নেই। 
চেয়ারম্যান: তাহলে কীভাবে জানা যাবে? 
আমি: স্যার, চার্বাক দর্শনের ইতিহাসবিষয়ক কোনো বই থেকে হয়তো এ বিষয়ে জানতে পারব। (এরপর চেয়ারম্যান স্যার এক্সটার্নাল-১ স্যারকে ইঙ্গিত করে বললেন, এবার আপনি প্রশ্ন করুন।)

এক্সটার্নাল-১: আপনার শখ কী? (আমি মানসিকভাবে তৈরি ছিলাম উত্তরে বই পড়া বলব না। কারণ, কোনো বইয়ের ভেতর থেকে কিছু জিজ্ঞেস করলে বলা কঠিন হতে পারে—এই ভেবে।) 
আমি: স্যার, খেলাধুলা দেখতে পছন্দ করি। 
এক্সটার্নাল-১: আর কিছু? 
আমি: স্যার, ছোটবেলা থেকে পত্রিকা পড়তে ভালো লাগে। 
এক্সটার্নাল-১: বই-টই পড়েন না? (স্যার আসলে এটাই উত্তর হিসেবে আশা করছিলেন। কিন্তু অনেক ঘুরিয়েও এড়িয়ে যেতে পারিনি।) 
আমি: জি, স্যার। 

এক্সটার্নাল-১: কার গল্প-উপন্যাস ভালো লাগে? 
আমি: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসটি আমার খুব প্রিয়। 
এক্সটার্নাল-১: শ্রীকান্ত–এর চরিত্র সম্পর্কে বলেন। 
আমি: শ্রীকান্ত, রাজলক্ষ্মী, ইন্দ্রনাথ, দিদি, রতন। 
চেয়ারম্যান: আচ্ছা, আপনি তো প্রশাসনে আসতে চান। শ্রীকান্ত উপন্যাসে নতুনদা তো প্রশাসনে চাকরি করতেন, তার সম্পর্কে বলেন। 
আমি: স্যার, নতুনদা সম্পর্কে আমার এখন তেমন কিছু মনে পড়ছে না। আমি অন্য চরিত্রগুলো সম্পর্কে 
বলতে পারব।

এক্সটার্নাল-১: আচ্ছা, ইন্দ্রনাথ সম্পর্কে বলেন। 
আমি: স্যার, ইন্দ্রনাথ অনেক সাহসী ছিলেন। অনেক রাতে নৌকায় করে মাছ ধরতে যাওয়া কিংবা একবার বাড়িতে যখন বাঘ পড়েছে ভয়ে সবাই তটস্থ, এমন পরিস্থিতিতে আমরা তার সাহসিকতার পরিচয় পাই। 
এবার এক্সটার্নাল-২ স্যারের পালা শুরু। স্যারের মোটামুটি সব প্রশ্নই ছিল ইংরেজিতে। 
এক্সটার্নাল-২: Why BCS Administration is your first choice? 
আমি: Sir, when I was a college student, once our ADC sir came and selected the best student of our college through various competitions. I was selected as the best student that day. Because of this, a fondness is created for the BCS administration. Also, during my college days, when I used to cycle past DC?s bungalow every day, I dreamed of becoming a DC. These are the reasons why BCS administration is my 
first choice.

এক্সটার্নাল-২: Who is your favourite philosopher? 
আমি: German philosopher Immanuel Kant. 
এক্সটার্নাল-২: What are his main theories? 
আমি: Sir, his main theories are categorical imperative, duty for duty?s sake and 
good will. 
এক্সটার্নাল-২: Who is your favourite Bangalee philosopher? 
আমি: Baul Lalon Shah. 
এক্সটার্নাল-২: Why?

আমি: I like the mysticism and humanism of Lalan?s philosophy. He did not underestimate anyone as a person. I see the true meaning of human life in his philosophy. That?s why I like Lalon Shah. 
এক্সটার্নাল-২: What are the Bangabandhu?s philosophy? 
আমি: The philosophy of Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman is philosophy of economic and political liberation, philosophy of peace, philosophy of development, secularism and humanism. (আমার ইংরেজি 
বলাটা মোটেও ভালো হয়নি। আমি নিজেই খুশি ছিলাম না যা বলেছি তাতে। বেশ কয়েক বার এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল বলতে গিয়ে।) 
চেয়ারম্যান: মুজিবনগর সরকারের কোন দিকটি আপনার ভালো লাগে? 
আমি: স্যার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রহমানের অনুপস্থিতিতে মুজিবনগর সরকার তথা তৎকালীন 
আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ যেভাবে দক্ষতার সঙ্গে যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন এবং বৈশ্বিক জনমত আদায় করেছেন, তাদের এই দক্ষ নেতৃত্বের দিকটি আমার ভালো লেগেছে।

চেয়ারম্যান: না, আপনি স্পেসিফিকভাবে বলেন, কোন দিকটি আপনার ভালো লেগেছে? 
আমি: স্যার, দক্ষ নেতৃত্বের দিকটি। (স্যার উত্তরে খুশি হলেন না। তিনি সম্ভবত অন্য কিছু শুনতে চাচ্ছিলেন) 
চেয়ারম্যান: Who was the defence minister of Mujibnagar government? 
আমি: খন্দকার মোশতাক আহমেদ। (এটা আমার ভুল হয়েছে। উত্তর হবে তাজউদ্দীন আহমেদ।) 
চেয়ারম্যান: আমি কিন্তু প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথা বলেছি। 
আমি: জি স্যার। 
চেয়ারম্যান: বিষয়টি একটু দেখে নেবেন। 
আমি: জি স্যার। 
চেয়ারম্যান: আপনার কাগজপত্র নিয়ে নেন, আসতে পারেন এবার। 
আমি: ধন্যবাদ ও সালাম দিয়ে বিদায় নিলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন আজ থেকে শুরু, পরীক্ষার সময়সূচি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৫৯
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন আজ থেকে শুরু, পরীক্ষার সময়সূচি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে। দুপুর ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এই আবেদনপ্রক্রিয়া চলবে আগামী ১৬ নভেম্বর (রোববার) রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।

আগ্রহী শিক্ষার্থীদের অবশ্যই অনলাইনে আবেদন করতে হবে এবং আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা। এই ফি সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী—এই চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের যেকোনো শাখায় অথবা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবা (বিকাশ, নগদ, রকেট) ব্যবহার করে জমা দেওয়া যাবে।

আবেদনের যোগ্যতা

ঢাবির ভর্তির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যেসব ছাত্রছাত্রী ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মাধ্যমিক বা সমমান এবং ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁরা বিভিন্ন ইউনিটে ভর্তির জন্য নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে আবেদন করতে পারবেন।

ভর্তি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষাগুলো ঢাকাসহ আটটি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হবে। চারুকলা ইউনিট ও আইবিএ ইউনিট ছাড়া অন্য তিনটি ইউনিটের পরীক্ষা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ/কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ত্রিশাল এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।

পরীক্ষার মানবণ্টন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি

ভর্তি পরীক্ষায় মোট ১২০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বর এবং মাধ্যমিক/সমমান ও উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষার ফলের ওপর থাকবে ২০ নম্বর।

অন্যান্য ইউনিট (বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা) :

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (MCQ): ৬০ নম্বর (সময় ৪৫ মিনিট)

লিখিত পরীক্ষা: ৪০ নম্বর (সময় ৪৫ মিনিট)

চারুকলা ইউনিট:

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (MCQ): ৪০ নম্বর (সময় ৩০ মিনিট)

অঙ্কন পরীক্ষা (লিখিত) : ৬০ নম্বর (সময় ৬০ মিনিট)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নরওয়েতে বিআই প্রেসিডেন্সিয়াল স্কলারশিপ

শিক্ষা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নরওয়েতে বিআই প্রেসিডেন্সিয়াল স্কলারশিপ বৃত্তির আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিশেষ করে যাঁরা নরওয়েতে বিনা মূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনে আগ্রহী, তাঁদের আবেদন করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এই বৃত্তির আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা নরওয়েজিয়ান বিজনেস স্কুল থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে পারবেন।

নরওয়েজিয়ান বিজনেস স্কুল ইউরোপের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি ব্যবসায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৪৩ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে নরওয়ের রাজধানী অসলোসহ কয়েকটি শহরে স্কুলটির ক্যাম্পাস রয়েছে। বিশ্বমানের পাঠ্যক্রম, গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা এবং শিল্প-বাণিজ্য খাতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততার জন্য প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

সুযোগ-সুবিধা

যেসব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বৃত্তির শর্ত পূরণ করবেন, তাঁদের প্রতিটি সেমিস্টারের সম্পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। পাশাপাশি দুই বছর পর্যন্ত জীবনযাপনের খরচের জন্য ভাতা (স্টাইপেন্ড) দেওয়া হবে।

আবেদনের যোগ্যতা

বৃত্তিটির জন্য আবেদন করতে প্রার্থীদের সর্বনিম্ন ‘এ’ গ্রেড মানের পূর্ববর্তী একাডেমিক ফলাফল থাকতে হবে। প্রার্থীদের নেতৃত্বের গুণাবলি থাকতে হবে। সম্পূর্ণ একাডেমিক ইয়ার শেষ করার মানসিকতাসম্পন্ন হতে হবে।

বৃত্তির সংখ্যা

২০২৬ শিক্ষাবর্ষের (শরৎকাল সেশন) জন্য সর্বোচ্চ ২০টি বৃত্তি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এবং ১০টি বৃত্তি নরওয়েজিয়ান শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রগুলো

নরওয়েজিয়ান বিজনেস স্কুল বেশকিছু বিভাগে পাঠদান ও গবেষণা পরিচালিত হয়। এই বিভাগগুলো ব্যবসায় শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ের ওপর। এগুলো হলো হিসাবরক্ষণ ও অপারেশন ম্যানেজমেন্ট, যোগাযোগ ও সংস্কৃতি, ডেটা সায়েন্স ও অ্যানালিটিকস, অর্থনীতি, আইন ও শাসন, নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক আচরণ, বিপণন এবং কৌশল ও উদ্যোগ।

আবেদন পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়

১ মার্চ, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইউল্যাবের ৮ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) অষ্টম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও ইউল্যাবের আচার্যের প্রতিনিধি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সমাবর্তন অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন এবং সভাপতিত্ব করেন। এবারের সমাবর্তনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘ইনফর্মড মাইন্ডস, ইন্সপায়ার পাথস’।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম।

সমাবর্তনে বক্তব্য দেন অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। এ ছাড়া ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সৈয়দা মাদিহা মোরশেদ এবং ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান সমাবর্তনে স্নাতকদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

সমাবর্তনে ভ্যালেডিক্টোরিয়ান অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন তাশিন হক; যিনি ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রোগ্রাম থেকে ৩.৮৬ সিজিপিএ অর্জন করে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

এ ছাড়া স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পর্যায় থেকে দুজন শিক্ষার্থী স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।

এ বছর ইউল্যাব থেকে মোট ১ হাজার ৫০৮ জন শিক্ষার্থী সনদ পান, যার মধ্যে ১ হাজার ১১১ জন স্নাতক এবং ৩৯৭ জন স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্লাস ফাঁকি দিয়েও ভালো নম্বর পাচ্ছেন হার্ভার্ড শিক্ষার্থীরা, দুশ্চিন্তায় শিক্ষকেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ০৯
হার্ভার্ডে প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় বাদ পড়েন প্রায় ৯৭ শতাংশ আবেদনকারী। ছবি: হার্ভার্ডের ওয়েবসাইট
হার্ভার্ডে প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় বাদ পড়েন প্রায় ৯৭ শতাংশ আবেদনকারী। ছবি: হার্ভার্ডের ওয়েবসাইট

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পাওয়া বেশ কঠিন। প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষায় বাদ পড়েন প্রায় ৯৭ শতাংশ আবেদনকারী। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, এই সুযোগ পাওয়া ৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর অনেকে ক্লাসে উপস্থিত হন না এবং নির্ধারিত পাঠ্য পড়েন না বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যাপকেরা।

‘ক্লাসরুম সোশ্যাল কমপ্যাক্ট কমিটি’ নামে সাতজন অধ্যাপকের একটি দল হার্ভার্ডের শ্রেণিকক্ষ সংস্কৃতি নিয়ে একটি প্রতিবেদনে এ কথা জানান। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত হলেও বেশির ভাগ সময় নিজের মুঠোফোন বা অন্যান্য ডিভাইসে বেশি মনোযোগ দেন। ক্লাসে চলমান আলোচনায় অংশ নিতে অনীহা দেখান। আবার অনেক সময় ভিন্নমত প্রকাশের ভয়ে চুপ থাকেন। আবার অনেক সময় হোমওয়ার্ক বা পাঠ্যবই না পড়ায় আলোচনায় অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেন না।

৭ অধ্যাপকের এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এত কিছুর পরও শিক্ষার্থীরা সহজে ভালো ফল পেয়ে যাচ্ছেন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত নম্বর প্রদান বা ‘গ্রেড ইনফ্লেশন’-এর প্রবণতা চলছে।

শিক্ষকেরা বলছেন, অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে খুব বেশি কথা না বলেই কিংবা কোনো অর্থবহ আলোচনায় অংশ না নিয়েই স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করছেন। নিজেদের মতাদর্শগত বলয়ের মধ্যে আটকে থাকায় এই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী সময়ে চ্যালেঞ্জিং বা ভিন্নধর্মী ধারণার সঙ্গে জড়াতে অনিচ্ছুক বা অক্ষম হয়ে পড়ছেন।

রক্ষণশীল সমালোচকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, হার্ভার্ড ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উদারপন্থী পক্ষপাতকে (liberal bias) ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার করতে দিয়েছে। ফলে কার্যত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়ে পড়েছে। এই উদ্বেগ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাসে পরিবর্তন আনার জন্য রিপাবলিকানদের উদ্যোগকে আরও জোরদার করেছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে, গত জানুয়ারিতে হার্ভার্ড কমিটির প্রতিবেদনটি যেন পরোক্ষভাবে এই সমালোচনার কিছু সত্যতা স্বীকার করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্লাসে উপস্থিত না থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা ভিন্ন মতাদর্শ বা দৃষ্টিভঙ্গির সহপাঠীদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ হারাচ্ছে।

অধ্যাপকদের এই কমিটির বক্তব্যের যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে বলে মনে করেন হার্ভার্ডের প্রি-মেড বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওমোসেফে নোরুওয়া। তিনি বলেন, ‘রেকর্ডেড লেকচারের কারণে সশরীরে ক্লাস ফাঁকি দেওয়া সহজ হয়েছে। ক্লাসে না গিয়েও যদি ভালো গ্রেড পাওয়া যায় বলে তাঁরা ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।’

তিনি আরও জানান, একবার এমন একটি কোর্সে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে আলোচনা হয়েছিল ‘আমরা কি এখনো গৃহযুদ্ধ লড়ছি?’ তা নিয়ে। সেই ক্লাসের আলোচনা ছিল ‘চিন্তাশীল ও শিক্ষণীয়’। তবে ক্লাসের বাইরে পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন।

নোরুওয়া বলেন, ‘আমার প্রথম দুই বছর ছিল খুবই রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনাপূর্ণ।’ তিনি জানান, হার্ভার্ডে উদারপন্থী মতাদর্শের আধিপত্য আছে। তাঁর মতো যাঁদের চিন্তাভাবনায় উদার ও রক্ষণশীল, উভয় দৃষ্টিভঙ্গির মিশ্রণ রয়েছে, তাঁদের জন্য পরিবেশটি কখনো কখনো অস্বস্তিকর হতে পারে।

এ বছর পরিস্থিতি ‘কিছুটা শান্ত ও স্বস্তিদায়ক’ বলে যোগ করেন তিনি।

হার্ভার্ডের ‘ইকোনমিকস ১০: প্রিন্সিপলস অব ইকোনমিকস’ ক্লাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় কোর্সগুলোর একটি। এই টার্মে ৭৬১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। একটি ঐতিহাসিক কাঠের প্যানেলে ঘেরা থিয়েটারে তাঁদের ক্লাস হয়। অধ্যাপক মঞ্চে এক পাশ থেকে অন্য পাশে হাঁটেন, যেন শেক্‌সপিয়ারের নাটকের অভিনেতা।

থিয়েটারে ঢুকলেই চোখে পড়ে অর্কেস্ট্রা আসনের সারি, যেগুলোর সামনে বড় অক্ষরে লেখা ‘DEVICE FREE SECTION’। অর্থাৎ মোবাইল বা অন্য কোনো ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ। সেই সারির বেশির ভাগ আসনই ফাঁকা থাকে।

অর্থনীতির অধ্যাপক ডেভিড লাইবসন হার্ভার্ডের ওই প্রতিবেদন তৈরির কমিটির সহসভাপতিও ছিলেন। তিনি বলেন, এসব সমস্যা দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। সেই ১৯৮০-র দশক থেকে। যখন তিনি নিজেও হার্ভার্ডের শিক্ষার্থী ছিলেন, তখন থেকে এ ধরনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

তাঁর ভাষায়, ‘দ্বিধা, দেরি করা এবং অতিরিক্ত সময়সূচি তৈরি করা’—তিনটি বিষয়ই হার্ভার্ডে এবং আমার ধারণা অনুযায়ী বেশির ভাগ স্কুলেই, শিক্ষাজীবনের অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য হয়ে আছে।’

এটি পরিবর্তনের সময় এসেছে বলে মনে করেন তিনি। অধ্যাপক লাইবসন বলেন, ‘যখন তুমি তোমার ফোনে মন দিচ্ছ, তখন তুমি আসলে আমার ভাবনাগুলো শুনছ না।’

কমিটির প্রতিবেদন হার্ভার্ডের শিক্ষা সংস্কৃতির কিছু কঠিন সত্য তুলে ধরেছে বলে মন্তব্য করেন হার্ভার্ডের ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের ডিন হোপি হোয়েকস্ট্রা।

এ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায়, হার্ভার্ড এবং এর অধ্যাপকেরা ফল সেশনে শিক্ষার্থীদের মুক্তমনা এবং শিক্ষাগতভাবে সক্রিয় করতে কাজ করছেন। কিছু শিক্ষক এখন উপস্থিতি নেওয়া শুরু করেছেন। শিক্ষার্থীদের ফোন বা ল্যাপটপের পরিবর্তে হাতে লিখে নোট নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।

এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা ক্লাসে মত প্রকাশ করতে ভয় পেলে তা কাটিয়ে উঠতে অধ্যাপকেরা এমন নিয়ম চালু করছেন, যেখানে অন্যদের বক্তব্য বাইরে শেয়ার করা যাবে না।

পাশাপাশি হার্ভার্ড শিক্ষার্থীদের মুক্তমনা হওয়ার দক্ষতা যাচাই করার জন্য পরীক্ষা নিচ্ছে। ২০২৪ সালে তাঁদের আবেদনপত্রে এ-সম্পর্কিত একটি নতুন প্রশ্ন যোগ করা হয়েছে। এতে প্রার্থীদের ১৫০ শব্দে কারও সঙ্গে দ্বিমত পোষণের সময়কার কথা তুলে ধরতে বলা হয়েছে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৭ অধ্যাপকের এই ‘ক্লাসরুম কমপ্যাক্ট কমিটি’ কাজ শুরু করে। সে সময় গাজায় ইসরায়েলি অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তীব্র এবং কখনো কখনো সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কমিটির দায়িত্ব ছিল সংলাপ বাড়ানোর উপায় খোঁজা এবং ‘হার্ভার্ডে শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্য কী?’ এই মৌলিক প্রশ্নের উত্তর বের করা।

কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. লাইবসন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ক্লাস এড়িয়ে গেলে তারা চ্যালেঞ্জিং বা বিতর্কিত ধারণাগুলোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ হারাচ্ছে। এমনকি যখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত থাকে, অনেক সময় দেখা যায়, তারা পড়াশোনা না করেও এমন ভান করে যেন করেছে, ফলে শ্রেণিকক্ষের আলোচনা যথাযথ ফলপ্রসূ হয় না। এভাবে সবার সময় নষ্ট হয়, আর প্রায়ই দেখা যায় একজন শিক্ষার্থীই পুরো আলোচনাকে টেনে নিয়ে যায়।’

প্রতিবেদনে কমিটি উল্লেখ করেছে, শ্রেণিকক্ষ এমন জায়গা হওয়া উচিত, যেখানে মতবিনিময়ের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। কিন্তু ২০২৪ সালের বসন্তে হার্ভার্ডের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সিনিয়র শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাঁরা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত অনুভূতি ও বিশ্বাস সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারেন, যা আগের বছরের ৪৬ শতাংশ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

শিক্ষার্থীরা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ভয়ে এ কাজ করেন। তাঁরা আশঙ্কা করেন, কথা বললে হয়তো বোকা শোনাবে। অনেকের ধারণা, ভালো গ্রেড পেতে হলে অধ্যাপকের মতামতের সঙ্গে নিজেদের অবস্থান মেলাতে হবে। আর তাঁরা কৌতূহল বা শেখার আগ্রহে নয়, বরং মূলত কোথায় ভালো গ্রেড পাওয়া সহজ হবে, সেটা দেখে ক্লাস বেছে নিচ্ছিলেন।

অন্যদিকে হার্ভার্ডের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট বিভাগের ডিন অ্যামান্ডা ক্লেবাহ জানান, গ্রেড ইনফ্লেশন, যা কোভিড মহামারির আগেই গুরুতর সমস্যা ছিল, তা এখন আরও বেড়েছে।

তিনি আরও জানান, ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট গ্রেডের প্রায় ৪০ শতাংশ ছিল ‘এ’। এখন সেই হার প্রায় ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে এবং এর অর্ধেক বৃদ্ধি পেয়েছে অনলাইনে বা রিমোট ক্লাসের সময়কালে।

ড. ক্লেবাহ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। শিক্ষকেরা সেটা বুঝতে পারেন। তাই তাঁরা কোর্সগুলোকে কম চাপযুক্ত করার চেষ্টা করেন।’

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, অনেক অধ্যাপক আশঙ্কা করেন, যদি তাঁরা কঠোরভাবে নম্বর দেন, তাহলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেতিবাচক মূল্যায়ন পেতে পারেন। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলাদা করে তুলতে বেশি ক্লাবে যোগ দিচ্ছেন, অতিরিক্ত কোর্স নিচ্ছেন বা একটি বিষয়ের বদলে দুটি বিষয়ে কনসেন্ট্রেশন (বিশেষায়ন) করছেন।

অধ্যাপকেরা লিখেছেন, ‘কেউ কেউ বহির্গামী কার্যকলাপে (extracurricular commitments) ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণকে তাদের সময়ের আরও পরিপূর্ণ, অর্থবহ ও উপকারী ব্যবহার বলে মনে করে।’

প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি শিক্ষার্থীরাই আসল সমস্যা

সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদদের উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থী অনুপস্থিতি, দৃঢ়পন্থী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং শিক্ষাগত ফল হ্রাস।

মহামারির সময়ে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অনুপস্থিতি তীব্রভাবে বেড়েছে। অধ্যাপকেরা উদ্বিগ্ন যে, শিক্ষার্থীরা পুরো বই পড়ার মতো ধৈর্য ধরে রাখতে পারছে না। জাতীয় পরীক্ষার মাধ্যমে পরিমাপ করা শিক্ষাগত অর্জনও দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।

কানসাস ইউনিভার্সিটির উচ্চশিক্ষাবিষয়ক অধ্যাপক লিসা উলফ-ওয়েন্ডেল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসা অর্থপূর্ণ হতে হবে। এটা এমন কিছু হতে হবে, যা তাঁরা কেবল তাঁদের ডর্মরুমে একাই করতে পারবে না।’

ক্লাসে লেকচার সব সময় আকর্ষণীয় না-ও হতে পারে, কিন্তু আগে শিক্ষার্থীদের যেতে হতো (বা সহপাঠীর নোট ধার করতে হতো)। এখন যেহেতু অনেক লেকচার অনলাইনে দেখা যায়, তাই অধ্যাপকেরা আরও কঠোর চেষ্টা করছেন শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে আকৃষ্ট করার জন্য, যোগ করেন ড. উলফ-ওয়েন্ডেল।

তাহলে ক্লাসে আসার পেছনে আর কি গুরুত্বপূর্ণ কারণ থাকতে পারে জানতে চাইলে ওয়েন্ডেল বলেন, ‘এটি একটি পারস্পরিক সম্পর্ক।’

হার্ভার্ডে কিছু শিক্ষার্থী এই ধারণার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। তাঁরা মনে করেন, সমস্যা মূলত তাঁদের।

তাঁরা বলেন, আইন বা ফাইন্যান্সের মতো ক্ষেত্রের ইন্টার্নশিপ এবং পরবর্তী চাকরির প্রতিযোগিতা তীব্র। তাই তাঁদের আর কোনো উপায় নেই। বরং তাঁরা ক্লাবে উল্লেখযোগ্য সময় বিনিয়োগ করতে বাধ্য, যা তাঁদের আগ্রহ ও দক্ষতা প্রদর্শন করবে এবং সেসব হার্ভার্ড শিক্ষার্থীদের থেকে আলাদা করবে যাঁরা ‘এ’ গ্রেড পাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, হার্ভার্ডে ভর্তি হওয়ার আগে থেকেই তাঁদের সবকিছু সামলানোর শিল্পে পারদর্শী হতে হয়েছিল কারণ এটিই তাঁদের এখানে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিল।

লং আইল্যান্ডের পাবলিক স্কুল উইলিয়াম ফ্লয়েড হাই স্কুলের ক্লাস ভ্যালাডিক্টোরিয়ান (সেরা একাডেমিক ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষার্থী) জোশুয়া শুল্টজার হার্ভার্ডে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এক্সট্রা-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজ এবং পড়াশোনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে বড় হয়েছি। যখন আপনি এমন একটি স্কুলে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছেন যেখানে প্রায় সবাই সহপাঠ্যক্রমিক কাজ করে। তাঁরা যে তা চালিয়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক।’

শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে হার্ভার্ডও আংশিকভাবে দোষী হতে পারে। কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা একই সময়ে দুটি ক্লাস ‘এনরোল’ করতে পারে।

ড. লাইবসন শিক্ষার্থীদের বলেন, সরাসরি উপস্থিত থেকে শেখা ভিডিও দেখে শেখার চেয়ে ভালো। তবে তিনি একই সঙ্গে ডাবল-শিডিউলিং প্রথাকে সমর্থন করেন কারণ হার্ভার্ডের অনেক ক্লাসই একই সময়ে চলে।

‘যদি আমরা একই সময়ে ভর্তি নেওয়া অনুমোদন না দিতাম, তবে অনেক শিক্ষার্থী সমস্যায় পড়ত’, যোগ করেন তিনি।

যে শিক্ষার্থীরা তাঁর লেকচারে আসে, তাঁদের জন্য ড. লাইবসন শ্রেণিকক্ষের আলোচনাকে আরও খোলামেলা করার চেষ্টা করেন। তিনি সিলেবাসে সতর্কতা অন্তর্ভুক্ত করেন, অন্য শিক্ষার্থীর ভিন্নমত থাকতে পারে এবং ক্লাসে মন্তব্যগুলো বাইরে শেয়ার করার সময় বক্তাকে চিহ্নিত করার সম্ভাবনা আছে বলে সতর্ক করেন।

শিক্ষার্থী জোশুয়া শুল্টজার বলেন, শিক্ষার্থীদের আরও মুক্তমনা হতে উৎসাহ দেওয়া একটি মহান লক্ষ্য হতে পারে, তবে হার্ভার্ডের পরিবেশ শুধু সমস্যার একটি অংশমাত্র। একইভাবে, বর্তমানের অত্যন্ত বিভক্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশও সমস্যার একটি অংশ।

তিনি আরও বলেন, ‘এটাই বিশ্বের বাস্তবতা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত