Ajker Patrika

যুক্তরাজ্যে ফুল ফান্ডিংয়ে পড়তে শিভেনিং বৃত্তি

আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ১১: ৩৪
যুক্তরাজ্যে ফুল ফান্ডিংয়ে পড়তে শিভেনিং বৃত্তি

যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) শিভেনিং বৃত্তি দিয়ে থাকে। এ বৃত্তির অধীনে একজন শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে থাকা-খাওয়ার খরচ, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি, বিমান ভাড়া ও যুক্তরাজ্যে পৌঁছার পর এককালীন ভাতাসহ এক বছর মেয়াদি মাস্টার্স প্রোগ্রামে পড়ার সুযোগ পান। বৃত্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলে ভিসা ফি এবং হেলথ ইনস্যুরেন্স ফি দিতে হয় না। 

প্রতিযোগিতামূলক বৃত্তি
১৯৮৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ১৬০টিরও বেশি দেশের এ পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার স্কলার এই বৃত্তি পেয়েছেন। বিশ্বের ১৪টিরও বেশি দেশের সরকার বা রাষ্ট্রের প্রধান শিভেনিং অ্যালামনাই কমিউনিটির অংশ। প্রতি বছর অসংখ্য ভবিষ্যৎ নেতৃত্বসম্পন্ন মেধাবীরা এ বৃত্তির জন্য আবেদন করেন। ২০২৩-২৪ সালে সারা বিশ্ব থেকে ৭০ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল। এদের মধ্য থেকে শতকরা প্রায় দুই ভাগ এ বৃত্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। এর থেকেই অনুমান করা যায়, কত প্রতিযোগিতাপূর্ণ এ শিভেনিং। বৃত্তির জন্য আবেদনের কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেওয়া যাক। 

প্রার্থীর যোগ্যতা
বাংলাদেশসহ ১৬০টিরও বেশি দেশের নাগরিকদের শিভেনিং বৃত্তি দেওয়া হয়। সে জন্য সেসব দেশের নাগরিক হতে হবে। তবে কারও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলে আবেদনের জন্য বিবেচ্য হবেন না। আবেদনের জন্য কমপক্ষে স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। আবেদনকারীর ন্যূনতম দুই বছরের ২ হাজার ৮০০ ঘণ্টার কাজের অভিজ্ঞতা লাগবে। আবেদনকারীদের আবেদনের সময়েই আইইএলটিএস স্কোর জমা দিতে হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাগত দক্ষতা প্রমাণে যে স্কোর লাগবে সেটা পূরণ করলেই চলবে। এমনকি শিভেনিংয়ের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর কিছুদিন পর পর্যন্তও ইংরেজি ভাষার দক্ষতা পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শর্ত থাকে সেটি পূরণ করা যায়। 

আবেদনের সময়
এ বছর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত শিভেনিংয়ের ওয়েবসাইটে সরাসরি আবেদন করা যাবে। 

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নির্বাচন
শিভেনিংয়ের তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৫০০ স্নাতকোত্তর কোর্স থেকে আপনার পছন্দসই যেকোনো তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স নির্বাচন করতে পারবেন। আপনার পছন্দের কারণও আবেদনে উল্লেখ করতে হবে। সে কোর্সগুলো একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অথবা ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্ন ভিন্ন ৩টি কোর্সও হতে পারে। শিভেনিংয়ের আবেদনের সময়ে অথবা পরে আলাদা করে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে আবেদন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংযুক্তি হিসেবে আবেদনের সময় আপনার আগের ডিগ্রির সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট, স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি) ও কমপক্ষে দুটি রিকমেন্ডেশন লেটার জমা দিতে হয়। শিভেনিং বৃত্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলে আপনি কমপক্ষে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিনা শর্তের ভর্তির অফার লেটার জমা দিতে হবে। 

বৃত্তি পেতে যা বিবেচনা করা হয়
শিভেনিং বৃত্তি প্রার্থীর সব যোগ্যতার সমন্বিত দিকগুলো বিবেচনা করে হয়ে থাকে। শুধু ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ও ভালো ফলাফলের ওপরে এ বৃত্তি পাওয়া নির্ভর করে না। অনলাইন আবেদন ফরমে নিজের সম্পর্কে তথ্য, যোগাযোগের ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রভৃতি বিষয়ের পাশাপাশি নিজের জীবনের উদাহরণসহ ৫০০ শব্দের মধ্যে চারটি প্রবন্ধ লিখতে হয়। নেতৃত্ব ও অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা; নেটওয়ার্কিং দক্ষতা; যুক্তরাজ্যে পড়বেন এমন বিষয়ের সঙ্গে পূর্বের শিক্ষা ও পেশার সংযোগ এবং সে ব্যাপারে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা—এই চারটি বিষয়ে প্রবন্ধ লিখতে হয়। বাছাইয়ের দ্বিতীয় ধাপ ইন্টারভিউর জন্য বিবেচিত হবেন কিনা তা নির্ভর করবে এ প্রবন্ধগুলো গুছিয়ে, সংশ্লিষ্ট তথ্যসহ, সংগতিপূর্ণ ও পরিষ্কারভাবে উপস্থাপনের ওপর। 

অভিজ্ঞদের সহযোগিতা নিন
প্রবন্ধ লেখার ক্ষেত্রে পূর্বের কোনো নমুনা দেখে নিতে পারলে ভালো। তবে একান্ত নিজের অভিজ্ঞতাগুলো সাবলীলভাবে উপস্থাপনার ওপর জোর দিতে হয়। এ ছাড়া পরবর্তী ধাপে সাক্ষাৎকারের জন্য মনোনীত হলে মূলত এ প্রবন্ধগুলোই আরও অধিকতর জানতে চাওয়া হয়। প্রথম ধাপের প্রবন্ধগুলো অনেক সময় নিয়ে সচেতনভাবে লিখতে হয়। প্রবন্ধের প্রথম ড্রাফট তৈরি হয়ে গেলে অভিজ্ঞদের মতামত ও ফিডব্যাক নেওয়া ভালো। এতে করে আবেদন জমা দেওয়ার আগে প্রবন্ধগুলোকে আরও ভালো করে লিখে নেওয়া যাবে। 

অফিশিয়াল লিংক
আবেদন সংক্রান্ত আরও বিস্তারিত জানা যাবে এই ওয়েবসাইটে। 

অনুলিখন: আবিদা সুলতানা শামীমা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত