আশিকুর রিমেল, ঢাকা

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে গত ২৮ জুলাই। ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণার দিন থেকেই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা–উদ্বেগ ভর করে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু ইদানীংকালে এই উদ্বেগটা মনে হয় একটু বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছে। আজ থেকে দুই দশক আগেও পরীক্ষায় ফেল করে আত্মহত্যার খবর পাওয়া যেত। কিন্তু এখন জিপিএ-৫ না পাওয়ায় কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বয়ঃসন্ধিতে থাকা ছেলে–মেয়ের আত্মহত্যা নানা মাত্রায় সামাজিক অস্থিরতা–অসংগতির ইঙ্গিত দিলেও পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে গড়ে ৮০ শতাংশ নম্বর না পাওয়ায় আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া সম্ভবত অন্য কিছুরও ইঙ্গিত দেয়, যেটি আমরা উপেক্ষা করে যাচ্ছি।
এ বছর ২৯ হাজার ৭১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। এ বছর পাস ও জিপিএ–৫ দুটির হারই কমেছে।
পাসের হার কমেছে নাকি বেড়েছে, জিপিএ-৫ কমেছে নাকি বেড়েছে সেটি আজকের আলোচনার বিষয় নয়। বরং অপ্রিয় হলেও সত্য ৪ লাখ ৪৫০ জন পরীক্ষায় ফেল করেছে।
এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের দিন ঢাকায় প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ দেশের মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এর মধ্যে মোটা দাগে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ, জিপিএ-৫, পাস-ফেলের হার কেমন, কমল নাকি বাড়ল, কারা এগিয়ে, কোন বোর্ড এগিয়ে গেল, কোন বোর্ড পেছাল নানান দিক থেকে বিশ্লেষণমূলক সংবাদ প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমগুলো। এরই মধ্যে ‘জিপিএ-৫ না পাওয়ায় আত্মহত্যা’র অন্তত তিনটি খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত দুজন কিশোরীর আত্মহত্যার প্রসঙ্গেই বলা যাক।
শিক্ষার্থী দুজন হলো—ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খোঁচাবাড়ি গার্লস স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিষ্টি রায় (১৬) ও নাটোর লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মম (১৬)। দুজনই পরিবারের কাছে বলেছিল, তাদের প্রত্যাশা জিপিএ-৫ পাবে। কিন্তু মিষ্টি রায় পেয়েছে জিপিএ ৪.২৮ ও মম পেয়েছে জিপিএ-৩.৮০।
গণমাধ্যমগুলোতে খুঁজলেই মিলবে—পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জিপিএ-৫ না পাওয়া। আমাদের জন্য ‘অশনিসংকেত’ হলো প্রায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা।
গত কয়েক বছরে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিনে পরীক্ষার্থীদের আত্মহত্যার একটি হিসাব তুলে ধরা যাক—এ বছর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে ছয়জন শিক্ষার্থী আশানুরূপ ফল না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার চেষ্টা করে বেঁচে গেছে অন্তত দুজন। ২০১৮ সালে ফল প্রকাশের সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২২ জন কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে ১০ জন মারা যায়। ২০২০ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২১ জন কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার করে যাদের মধ্যে ১৯ জনই ছিল কিশোরী।
গ্রেডিং বা জিপিএ পদ্ধতি চালুর প্রথম বছর (২০০১) এসএসসিতে জিপিএ-৫–এর সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৬ জন। সে সময় কলেজে ভর্তির জন্য পরীক্ষা পদ্ধতি চালু ছিল। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে জিপিএ-৫–এর সংখ্যা প্রতি বছর বাড়তে শুরু করে। আর গত দুই দশকে এ সংখ্যা বেড়েছে কয়েক শ গুণ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিষ্টি রায় যে বিদ্যালয়ে পড়ত সেখান থেকে কোনো শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পায়নি। সেখানে অকৃতকার্য হয়েছে ২০ জন। আর লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্থাৎ মম যে বিদ্যালয়ে পড়ত সেখানে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন ও অকৃতকার্য হয়েছে ২৯ জন।
ওই দিনের পরিস্থিতি জানতে মিষ্টি রায়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন। মিষ্টি রায়ের বাবা প্রেমানন্দ রায় তাঁকে জানিয়েছেন, বান্ধবীরা তার চেয়ে ভালো ফল করেছে। এ নিয়ে সে খুব বিষণ্ন হয়ে পড়েছিল। শ্রেণিশিক্ষক জানিয়েছেন, ক্লাসে মিষ্টি রায় ছিল প্রথম। ‘আত্মসম্মানে’ আঘাত লাগায় হয়তো সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
এখন প্রশ্ন ওঠে তাহলে সমাজে বা বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে যেতে অস্বস্তি বা লজ্জাই কি প্রভাব ফেলেছে মিষ্টির ওপর?
মমর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার লালপুর প্রতিনিধি ইমাম হাসান মুক্তি। মমর বাবা মহসিন আলী তাঁকে জানিয়েছেন, ফলাফল নিয়ে মমকে কোনো চাপ বা বকাঝকা করা হয়নি। আত্মীয়স্বজনেরা কল দিয়ে জানতে চাইলে তার মা মন খারাপ করে ফলাফল জানাচ্ছিলেন। মেয়ের ফলাফল নিয়ে মাও বেশ কয়েকবার কেঁদেছেন। এর মধ্যেই মম সবার অলক্ষ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাহলে পরিবারে একটা পরোক্ষ চাপ বা প্রকাশিত অসন্তোষের প্রভাব কি পড়েছিল মমর ওপর?
আমরা ওই বয়সী শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক সংকটের বিষয়ে জানতে কথা বলেছিলাম সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনারের কাউন্সিলর অধ্যাপক সানজিদা শাহরিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রথমত পরিবার, দ্বিতীয়ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বৃহৎ পরিসরে সমাজের প্রভাবে কিশোর-কিশোরীরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীরা বয়ঃসন্ধিতে তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। এ সময় বিশেষ করে অভিভাবক, শিক্ষকেরা তাদের পরিস্থিতি অনুধাবন না করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের ওপর প্রতিযোগিতার মানদণ্ড ঠিক করে দেন। পরবর্তীতে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পেলে শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।’
কাউন্সেলর হিসেবে নিজের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে এ মনোচিকিৎসক বলেন, ‘আমার কাছে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের কাউন্সেলিং করানোর জন্য আসেন। সেখানে মূলত অভিভাবকেরা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমার কাছ থেকে পরামর্শ দাবি করেন। সেখানে ওই কিশোর-কিশোরীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা আগ্রহ প্রকাশের সুযোগ খুব কম থাকে। ফলে ওই কিশোর-কিশোরীর “ব্যক্তি সত্তার” সঙ্গে পরিচয় ও বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায় না। আমরা আসলে কখনোই সন্তানদের মন বুঝতে চাই না।’
শিক্ষণ পদ্ধতি ও শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষক, পরিবারের সুস্পষ্ট ধারণা না থাকা এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের কার্যকর নীতি প্রণয়নে দুর্বলতার কারণেও শিক্ষার্থীদের অসুস্থ প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের চেয়ে সনদ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ফলে অভিভাবকেরা সন্তানের ভালো ফলাফল নিশ্চিত করতে টাকা ঢালছেন। অপরদিকে শিক্ষকেরাও সহজ ও ‘শর্টকাট’ পথে হাঁটছেন। মুখস্থবিদ্যার ওপর ভর করে শিক্ষাজীবন পার করছে ছেলে–মেয়েরা। একে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাণিজ্য।
দেশের বাস্তবতা হলো কোচিং কিংবা প্রাইভেট টিউটর কেন্দ্রিক শিক্ষা। স্কুল-কলেজের বেশ কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন কোচিং কিংবা প্রাইভেটে শিক্ষকেরা যতটা যত্নশীল, শ্রেণিকক্ষে ওই শিক্ষকেরাই ততটা উদাসীন। কোনো বিষয়ে না বুঝতে পারলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যতটা সংকুচিত, কোচিং কিংবা প্রাইভেটে ওই শিক্ষার্থীরাই তত বেশি অকপট।
এ ছাড়া দেশের প্রসিদ্ধ, খ্যাতনামা অনেক কলেজে ভর্তির জন্য এখন ন্যূনতম যোগ্যতা ধরা হচ্ছে জিপিএ-৫।
এদিকেই ইঙ্গিত করছেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ও শিক্ষা বার্তার সম্পাদক এএন রাশেদা। তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ দায়ই শিক্ষা ব্যবস্থার, সরকার এবং রাষ্ট্রের। শুধু বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালেই হবে না। সারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতীয়করণ আর সরকারিকরণের পার্থক্যটা আলাদা করতে জানতে হবে। শিক্ষকদের যদি সঠিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া না যায়, তবে শিক্ষার্থীদের কী পড়াবে কী শেখাবে তাঁরা? কারণ এর সঙ্গে আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটও দায়ী।’
এমন পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে এমন একটা অবস্থায় নিয়ে গেছি, যেখানে আমরা জিপিএ-৫ দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে মূল্যায়ন করছি। অথচ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক চর্চা যেমন নাচ গান খেলাধুলা থাকা বাধ্যতামূলক। তাহলে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধার বিকাশটা ঘটবে। শিক্ষাজীবনে আনন্দের বিষয়গুলো থাকলে আর এমনটা ঘটত না। অথচ শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়া, গলাধঃকরণ করা, আর জিপিএ-৫ পাওয়াটাই যেন এখন শিক্ষা হয়ে গেছে। আর এই চর্চাটা পরিবার পর্যন্ত ঢুকে গেছে।’
এ থেকে তাহলে উত্তরণের পথ কী? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের অধ্যাপক শিক্ষাবিদ হাফিজুর রহমান বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ এখন সময়ের দাবি। সেই সঙ্গে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতনতার ওপরও জোর দেন তিনি।
মনোচিকিৎসক সানজিদা শাহরিয়া বলেন, ‘পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সর্বোপরি সমাজে এর বিরুদ্ধে সচেতনতাই পারে আমাদের এ সংকট থেকে উতরে যেতে। সেই সঙ্গে অবশ্যই আমাদের পরিবারগুলোকে সন্তানদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও মন বোঝার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।’
সেই সঙ্গে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাঁদের সম্মানী বাড়ানোর জন্যও সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদ এএন রাশেদা। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা খাতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। তা বাড়িয়ে বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করে দিলেই হবে না, শিক্ষকদের মান নিশ্চিত করতে হবে। আর শিক্ষা ব্যবস্থার আমলা নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তবেই ছাত্র–ছাত্রীরা ভালো কিছু শিখবে, এভাবে হতাশ হবে না, আত্মহত্যার মত পথও বেঁচে নেবে না।’

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে গত ২৮ জুলাই। ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণার দিন থেকেই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা–উদ্বেগ ভর করে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু ইদানীংকালে এই উদ্বেগটা মনে হয় একটু বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছে। আজ থেকে দুই দশক আগেও পরীক্ষায় ফেল করে আত্মহত্যার খবর পাওয়া যেত। কিন্তু এখন জিপিএ-৫ না পাওয়ায় কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বয়ঃসন্ধিতে থাকা ছেলে–মেয়ের আত্মহত্যা নানা মাত্রায় সামাজিক অস্থিরতা–অসংগতির ইঙ্গিত দিলেও পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে গড়ে ৮০ শতাংশ নম্বর না পাওয়ায় আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া সম্ভবত অন্য কিছুরও ইঙ্গিত দেয়, যেটি আমরা উপেক্ষা করে যাচ্ছি।
এ বছর ২৯ হাজার ৭১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। এ বছর পাস ও জিপিএ–৫ দুটির হারই কমেছে।
পাসের হার কমেছে নাকি বেড়েছে, জিপিএ-৫ কমেছে নাকি বেড়েছে সেটি আজকের আলোচনার বিষয় নয়। বরং অপ্রিয় হলেও সত্য ৪ লাখ ৪৫০ জন পরীক্ষায় ফেল করেছে।
এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের দিন ঢাকায় প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ দেশের মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এর মধ্যে মোটা দাগে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ, জিপিএ-৫, পাস-ফেলের হার কেমন, কমল নাকি বাড়ল, কারা এগিয়ে, কোন বোর্ড এগিয়ে গেল, কোন বোর্ড পেছাল নানান দিক থেকে বিশ্লেষণমূলক সংবাদ প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমগুলো। এরই মধ্যে ‘জিপিএ-৫ না পাওয়ায় আত্মহত্যা’র অন্তত তিনটি খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত দুজন কিশোরীর আত্মহত্যার প্রসঙ্গেই বলা যাক।
শিক্ষার্থী দুজন হলো—ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খোঁচাবাড়ি গার্লস স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিষ্টি রায় (১৬) ও নাটোর লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মম (১৬)। দুজনই পরিবারের কাছে বলেছিল, তাদের প্রত্যাশা জিপিএ-৫ পাবে। কিন্তু মিষ্টি রায় পেয়েছে জিপিএ ৪.২৮ ও মম পেয়েছে জিপিএ-৩.৮০।
গণমাধ্যমগুলোতে খুঁজলেই মিলবে—পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জিপিএ-৫ না পাওয়া। আমাদের জন্য ‘অশনিসংকেত’ হলো প্রায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা।
গত কয়েক বছরে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিনে পরীক্ষার্থীদের আত্মহত্যার একটি হিসাব তুলে ধরা যাক—এ বছর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে ছয়জন শিক্ষার্থী আশানুরূপ ফল না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার চেষ্টা করে বেঁচে গেছে অন্তত দুজন। ২০১৮ সালে ফল প্রকাশের সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২২ জন কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে ১০ জন মারা যায়। ২০২০ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২১ জন কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার করে যাদের মধ্যে ১৯ জনই ছিল কিশোরী।
গ্রেডিং বা জিপিএ পদ্ধতি চালুর প্রথম বছর (২০০১) এসএসসিতে জিপিএ-৫–এর সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৬ জন। সে সময় কলেজে ভর্তির জন্য পরীক্ষা পদ্ধতি চালু ছিল। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে জিপিএ-৫–এর সংখ্যা প্রতি বছর বাড়তে শুরু করে। আর গত দুই দশকে এ সংখ্যা বেড়েছে কয়েক শ গুণ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিষ্টি রায় যে বিদ্যালয়ে পড়ত সেখান থেকে কোনো শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পায়নি। সেখানে অকৃতকার্য হয়েছে ২০ জন। আর লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্থাৎ মম যে বিদ্যালয়ে পড়ত সেখানে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন ও অকৃতকার্য হয়েছে ২৯ জন।
ওই দিনের পরিস্থিতি জানতে মিষ্টি রায়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন। মিষ্টি রায়ের বাবা প্রেমানন্দ রায় তাঁকে জানিয়েছেন, বান্ধবীরা তার চেয়ে ভালো ফল করেছে। এ নিয়ে সে খুব বিষণ্ন হয়ে পড়েছিল। শ্রেণিশিক্ষক জানিয়েছেন, ক্লাসে মিষ্টি রায় ছিল প্রথম। ‘আত্মসম্মানে’ আঘাত লাগায় হয়তো সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
এখন প্রশ্ন ওঠে তাহলে সমাজে বা বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে যেতে অস্বস্তি বা লজ্জাই কি প্রভাব ফেলেছে মিষ্টির ওপর?
মমর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার লালপুর প্রতিনিধি ইমাম হাসান মুক্তি। মমর বাবা মহসিন আলী তাঁকে জানিয়েছেন, ফলাফল নিয়ে মমকে কোনো চাপ বা বকাঝকা করা হয়নি। আত্মীয়স্বজনেরা কল দিয়ে জানতে চাইলে তার মা মন খারাপ করে ফলাফল জানাচ্ছিলেন। মেয়ের ফলাফল নিয়ে মাও বেশ কয়েকবার কেঁদেছেন। এর মধ্যেই মম সবার অলক্ষ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাহলে পরিবারে একটা পরোক্ষ চাপ বা প্রকাশিত অসন্তোষের প্রভাব কি পড়েছিল মমর ওপর?
আমরা ওই বয়সী শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক সংকটের বিষয়ে জানতে কথা বলেছিলাম সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনারের কাউন্সিলর অধ্যাপক সানজিদা শাহরিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রথমত পরিবার, দ্বিতীয়ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বৃহৎ পরিসরে সমাজের প্রভাবে কিশোর-কিশোরীরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীরা বয়ঃসন্ধিতে তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। এ সময় বিশেষ করে অভিভাবক, শিক্ষকেরা তাদের পরিস্থিতি অনুধাবন না করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের ওপর প্রতিযোগিতার মানদণ্ড ঠিক করে দেন। পরবর্তীতে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পেলে শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।’
কাউন্সেলর হিসেবে নিজের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে এ মনোচিকিৎসক বলেন, ‘আমার কাছে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের কাউন্সেলিং করানোর জন্য আসেন। সেখানে মূলত অভিভাবকেরা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমার কাছ থেকে পরামর্শ দাবি করেন। সেখানে ওই কিশোর-কিশোরীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা আগ্রহ প্রকাশের সুযোগ খুব কম থাকে। ফলে ওই কিশোর-কিশোরীর “ব্যক্তি সত্তার” সঙ্গে পরিচয় ও বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায় না। আমরা আসলে কখনোই সন্তানদের মন বুঝতে চাই না।’
শিক্ষণ পদ্ধতি ও শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষক, পরিবারের সুস্পষ্ট ধারণা না থাকা এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের কার্যকর নীতি প্রণয়নে দুর্বলতার কারণেও শিক্ষার্থীদের অসুস্থ প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের চেয়ে সনদ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ফলে অভিভাবকেরা সন্তানের ভালো ফলাফল নিশ্চিত করতে টাকা ঢালছেন। অপরদিকে শিক্ষকেরাও সহজ ও ‘শর্টকাট’ পথে হাঁটছেন। মুখস্থবিদ্যার ওপর ভর করে শিক্ষাজীবন পার করছে ছেলে–মেয়েরা। একে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাণিজ্য।
দেশের বাস্তবতা হলো কোচিং কিংবা প্রাইভেট টিউটর কেন্দ্রিক শিক্ষা। স্কুল-কলেজের বেশ কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন কোচিং কিংবা প্রাইভেটে শিক্ষকেরা যতটা যত্নশীল, শ্রেণিকক্ষে ওই শিক্ষকেরাই ততটা উদাসীন। কোনো বিষয়ে না বুঝতে পারলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যতটা সংকুচিত, কোচিং কিংবা প্রাইভেটে ওই শিক্ষার্থীরাই তত বেশি অকপট।
এ ছাড়া দেশের প্রসিদ্ধ, খ্যাতনামা অনেক কলেজে ভর্তির জন্য এখন ন্যূনতম যোগ্যতা ধরা হচ্ছে জিপিএ-৫।
এদিকেই ইঙ্গিত করছেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ও শিক্ষা বার্তার সম্পাদক এএন রাশেদা। তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ দায়ই শিক্ষা ব্যবস্থার, সরকার এবং রাষ্ট্রের। শুধু বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালেই হবে না। সারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতীয়করণ আর সরকারিকরণের পার্থক্যটা আলাদা করতে জানতে হবে। শিক্ষকদের যদি সঠিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া না যায়, তবে শিক্ষার্থীদের কী পড়াবে কী শেখাবে তাঁরা? কারণ এর সঙ্গে আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটও দায়ী।’
এমন পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে এমন একটা অবস্থায় নিয়ে গেছি, যেখানে আমরা জিপিএ-৫ দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে মূল্যায়ন করছি। অথচ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক চর্চা যেমন নাচ গান খেলাধুলা থাকা বাধ্যতামূলক। তাহলে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধার বিকাশটা ঘটবে। শিক্ষাজীবনে আনন্দের বিষয়গুলো থাকলে আর এমনটা ঘটত না। অথচ শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়া, গলাধঃকরণ করা, আর জিপিএ-৫ পাওয়াটাই যেন এখন শিক্ষা হয়ে গেছে। আর এই চর্চাটা পরিবার পর্যন্ত ঢুকে গেছে।’
এ থেকে তাহলে উত্তরণের পথ কী? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের অধ্যাপক শিক্ষাবিদ হাফিজুর রহমান বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ এখন সময়ের দাবি। সেই সঙ্গে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতনতার ওপরও জোর দেন তিনি।
মনোচিকিৎসক সানজিদা শাহরিয়া বলেন, ‘পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সর্বোপরি সমাজে এর বিরুদ্ধে সচেতনতাই পারে আমাদের এ সংকট থেকে উতরে যেতে। সেই সঙ্গে অবশ্যই আমাদের পরিবারগুলোকে সন্তানদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও মন বোঝার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।’
সেই সঙ্গে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাঁদের সম্মানী বাড়ানোর জন্যও সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদ এএন রাশেদা। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা খাতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। তা বাড়িয়ে বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করে দিলেই হবে না, শিক্ষকদের মান নিশ্চিত করতে হবে। আর শিক্ষা ব্যবস্থার আমলা নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তবেই ছাত্র–ছাত্রীরা ভালো কিছু শিখবে, এভাবে হতাশ হবে না, আত্মহত্যার মত পথও বেঁচে নেবে না।’
আশিকুর রিমেল, ঢাকা

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে গত ২৮ জুলাই। ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণার দিন থেকেই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা–উদ্বেগ ভর করে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু ইদানীংকালে এই উদ্বেগটা মনে হয় একটু বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছে। আজ থেকে দুই দশক আগেও পরীক্ষায় ফেল করে আত্মহত্যার খবর পাওয়া যেত। কিন্তু এখন জিপিএ-৫ না পাওয়ায় কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বয়ঃসন্ধিতে থাকা ছেলে–মেয়ের আত্মহত্যা নানা মাত্রায় সামাজিক অস্থিরতা–অসংগতির ইঙ্গিত দিলেও পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে গড়ে ৮০ শতাংশ নম্বর না পাওয়ায় আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া সম্ভবত অন্য কিছুরও ইঙ্গিত দেয়, যেটি আমরা উপেক্ষা করে যাচ্ছি।
এ বছর ২৯ হাজার ৭১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। এ বছর পাস ও জিপিএ–৫ দুটির হারই কমেছে।
পাসের হার কমেছে নাকি বেড়েছে, জিপিএ-৫ কমেছে নাকি বেড়েছে সেটি আজকের আলোচনার বিষয় নয়। বরং অপ্রিয় হলেও সত্য ৪ লাখ ৪৫০ জন পরীক্ষায় ফেল করেছে।
এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের দিন ঢাকায় প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ দেশের মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এর মধ্যে মোটা দাগে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ, জিপিএ-৫, পাস-ফেলের হার কেমন, কমল নাকি বাড়ল, কারা এগিয়ে, কোন বোর্ড এগিয়ে গেল, কোন বোর্ড পেছাল নানান দিক থেকে বিশ্লেষণমূলক সংবাদ প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমগুলো। এরই মধ্যে ‘জিপিএ-৫ না পাওয়ায় আত্মহত্যা’র অন্তত তিনটি খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত দুজন কিশোরীর আত্মহত্যার প্রসঙ্গেই বলা যাক।
শিক্ষার্থী দুজন হলো—ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খোঁচাবাড়ি গার্লস স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিষ্টি রায় (১৬) ও নাটোর লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মম (১৬)। দুজনই পরিবারের কাছে বলেছিল, তাদের প্রত্যাশা জিপিএ-৫ পাবে। কিন্তু মিষ্টি রায় পেয়েছে জিপিএ ৪.২৮ ও মম পেয়েছে জিপিএ-৩.৮০।
গণমাধ্যমগুলোতে খুঁজলেই মিলবে—পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জিপিএ-৫ না পাওয়া। আমাদের জন্য ‘অশনিসংকেত’ হলো প্রায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা।
গত কয়েক বছরে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিনে পরীক্ষার্থীদের আত্মহত্যার একটি হিসাব তুলে ধরা যাক—এ বছর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে ছয়জন শিক্ষার্থী আশানুরূপ ফল না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার চেষ্টা করে বেঁচে গেছে অন্তত দুজন। ২০১৮ সালে ফল প্রকাশের সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২২ জন কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে ১০ জন মারা যায়। ২০২০ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২১ জন কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার করে যাদের মধ্যে ১৯ জনই ছিল কিশোরী।
গ্রেডিং বা জিপিএ পদ্ধতি চালুর প্রথম বছর (২০০১) এসএসসিতে জিপিএ-৫–এর সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৬ জন। সে সময় কলেজে ভর্তির জন্য পরীক্ষা পদ্ধতি চালু ছিল। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে জিপিএ-৫–এর সংখ্যা প্রতি বছর বাড়তে শুরু করে। আর গত দুই দশকে এ সংখ্যা বেড়েছে কয়েক শ গুণ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিষ্টি রায় যে বিদ্যালয়ে পড়ত সেখান থেকে কোনো শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পায়নি। সেখানে অকৃতকার্য হয়েছে ২০ জন। আর লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্থাৎ মম যে বিদ্যালয়ে পড়ত সেখানে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন ও অকৃতকার্য হয়েছে ২৯ জন।
ওই দিনের পরিস্থিতি জানতে মিষ্টি রায়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন। মিষ্টি রায়ের বাবা প্রেমানন্দ রায় তাঁকে জানিয়েছেন, বান্ধবীরা তার চেয়ে ভালো ফল করেছে। এ নিয়ে সে খুব বিষণ্ন হয়ে পড়েছিল। শ্রেণিশিক্ষক জানিয়েছেন, ক্লাসে মিষ্টি রায় ছিল প্রথম। ‘আত্মসম্মানে’ আঘাত লাগায় হয়তো সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
এখন প্রশ্ন ওঠে তাহলে সমাজে বা বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে যেতে অস্বস্তি বা লজ্জাই কি প্রভাব ফেলেছে মিষ্টির ওপর?
মমর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার লালপুর প্রতিনিধি ইমাম হাসান মুক্তি। মমর বাবা মহসিন আলী তাঁকে জানিয়েছেন, ফলাফল নিয়ে মমকে কোনো চাপ বা বকাঝকা করা হয়নি। আত্মীয়স্বজনেরা কল দিয়ে জানতে চাইলে তার মা মন খারাপ করে ফলাফল জানাচ্ছিলেন। মেয়ের ফলাফল নিয়ে মাও বেশ কয়েকবার কেঁদেছেন। এর মধ্যেই মম সবার অলক্ষ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাহলে পরিবারে একটা পরোক্ষ চাপ বা প্রকাশিত অসন্তোষের প্রভাব কি পড়েছিল মমর ওপর?
আমরা ওই বয়সী শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক সংকটের বিষয়ে জানতে কথা বলেছিলাম সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনারের কাউন্সিলর অধ্যাপক সানজিদা শাহরিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রথমত পরিবার, দ্বিতীয়ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বৃহৎ পরিসরে সমাজের প্রভাবে কিশোর-কিশোরীরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীরা বয়ঃসন্ধিতে তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। এ সময় বিশেষ করে অভিভাবক, শিক্ষকেরা তাদের পরিস্থিতি অনুধাবন না করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের ওপর প্রতিযোগিতার মানদণ্ড ঠিক করে দেন। পরবর্তীতে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পেলে শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।’
কাউন্সেলর হিসেবে নিজের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে এ মনোচিকিৎসক বলেন, ‘আমার কাছে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের কাউন্সেলিং করানোর জন্য আসেন। সেখানে মূলত অভিভাবকেরা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমার কাছ থেকে পরামর্শ দাবি করেন। সেখানে ওই কিশোর-কিশোরীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা আগ্রহ প্রকাশের সুযোগ খুব কম থাকে। ফলে ওই কিশোর-কিশোরীর “ব্যক্তি সত্তার” সঙ্গে পরিচয় ও বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায় না। আমরা আসলে কখনোই সন্তানদের মন বুঝতে চাই না।’
শিক্ষণ পদ্ধতি ও শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষক, পরিবারের সুস্পষ্ট ধারণা না থাকা এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের কার্যকর নীতি প্রণয়নে দুর্বলতার কারণেও শিক্ষার্থীদের অসুস্থ প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের চেয়ে সনদ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ফলে অভিভাবকেরা সন্তানের ভালো ফলাফল নিশ্চিত করতে টাকা ঢালছেন। অপরদিকে শিক্ষকেরাও সহজ ও ‘শর্টকাট’ পথে হাঁটছেন। মুখস্থবিদ্যার ওপর ভর করে শিক্ষাজীবন পার করছে ছেলে–মেয়েরা। একে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাণিজ্য।
দেশের বাস্তবতা হলো কোচিং কিংবা প্রাইভেট টিউটর কেন্দ্রিক শিক্ষা। স্কুল-কলেজের বেশ কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন কোচিং কিংবা প্রাইভেটে শিক্ষকেরা যতটা যত্নশীল, শ্রেণিকক্ষে ওই শিক্ষকেরাই ততটা উদাসীন। কোনো বিষয়ে না বুঝতে পারলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যতটা সংকুচিত, কোচিং কিংবা প্রাইভেটে ওই শিক্ষার্থীরাই তত বেশি অকপট।
এ ছাড়া দেশের প্রসিদ্ধ, খ্যাতনামা অনেক কলেজে ভর্তির জন্য এখন ন্যূনতম যোগ্যতা ধরা হচ্ছে জিপিএ-৫।
এদিকেই ইঙ্গিত করছেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ও শিক্ষা বার্তার সম্পাদক এএন রাশেদা। তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ দায়ই শিক্ষা ব্যবস্থার, সরকার এবং রাষ্ট্রের। শুধু বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালেই হবে না। সারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতীয়করণ আর সরকারিকরণের পার্থক্যটা আলাদা করতে জানতে হবে। শিক্ষকদের যদি সঠিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া না যায়, তবে শিক্ষার্থীদের কী পড়াবে কী শেখাবে তাঁরা? কারণ এর সঙ্গে আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটও দায়ী।’
এমন পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে এমন একটা অবস্থায় নিয়ে গেছি, যেখানে আমরা জিপিএ-৫ দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে মূল্যায়ন করছি। অথচ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক চর্চা যেমন নাচ গান খেলাধুলা থাকা বাধ্যতামূলক। তাহলে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধার বিকাশটা ঘটবে। শিক্ষাজীবনে আনন্দের বিষয়গুলো থাকলে আর এমনটা ঘটত না। অথচ শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়া, গলাধঃকরণ করা, আর জিপিএ-৫ পাওয়াটাই যেন এখন শিক্ষা হয়ে গেছে। আর এই চর্চাটা পরিবার পর্যন্ত ঢুকে গেছে।’
এ থেকে তাহলে উত্তরণের পথ কী? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের অধ্যাপক শিক্ষাবিদ হাফিজুর রহমান বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ এখন সময়ের দাবি। সেই সঙ্গে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতনতার ওপরও জোর দেন তিনি।
মনোচিকিৎসক সানজিদা শাহরিয়া বলেন, ‘পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সর্বোপরি সমাজে এর বিরুদ্ধে সচেতনতাই পারে আমাদের এ সংকট থেকে উতরে যেতে। সেই সঙ্গে অবশ্যই আমাদের পরিবারগুলোকে সন্তানদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও মন বোঝার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।’
সেই সঙ্গে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাঁদের সম্মানী বাড়ানোর জন্যও সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদ এএন রাশেদা। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা খাতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। তা বাড়িয়ে বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করে দিলেই হবে না, শিক্ষকদের মান নিশ্চিত করতে হবে। আর শিক্ষা ব্যবস্থার আমলা নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তবেই ছাত্র–ছাত্রীরা ভালো কিছু শিখবে, এভাবে হতাশ হবে না, আত্মহত্যার মত পথও বেঁচে নেবে না।’

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে গত ২৮ জুলাই। ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণার দিন থেকেই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা–উদ্বেগ ভর করে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু ইদানীংকালে এই উদ্বেগটা মনে হয় একটু বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছে। আজ থেকে দুই দশক আগেও পরীক্ষায় ফেল করে আত্মহত্যার খবর পাওয়া যেত। কিন্তু এখন জিপিএ-৫ না পাওয়ায় কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বয়ঃসন্ধিতে থাকা ছেলে–মেয়ের আত্মহত্যা নানা মাত্রায় সামাজিক অস্থিরতা–অসংগতির ইঙ্গিত দিলেও পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে গড়ে ৮০ শতাংশ নম্বর না পাওয়ায় আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া সম্ভবত অন্য কিছুরও ইঙ্গিত দেয়, যেটি আমরা উপেক্ষা করে যাচ্ছি।
এ বছর ২৯ হাজার ৭১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। এ বছর পাস ও জিপিএ–৫ দুটির হারই কমেছে।
পাসের হার কমেছে নাকি বেড়েছে, জিপিএ-৫ কমেছে নাকি বেড়েছে সেটি আজকের আলোচনার বিষয় নয়। বরং অপ্রিয় হলেও সত্য ৪ লাখ ৪৫০ জন পরীক্ষায় ফেল করেছে।
এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের দিন ঢাকায় প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ দেশের মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এর মধ্যে মোটা দাগে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ, জিপিএ-৫, পাস-ফেলের হার কেমন, কমল নাকি বাড়ল, কারা এগিয়ে, কোন বোর্ড এগিয়ে গেল, কোন বোর্ড পেছাল নানান দিক থেকে বিশ্লেষণমূলক সংবাদ প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমগুলো। এরই মধ্যে ‘জিপিএ-৫ না পাওয়ায় আত্মহত্যা’র অন্তত তিনটি খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত দুজন কিশোরীর আত্মহত্যার প্রসঙ্গেই বলা যাক।
শিক্ষার্থী দুজন হলো—ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খোঁচাবাড়ি গার্লস স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিষ্টি রায় (১৬) ও নাটোর লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মম (১৬)। দুজনই পরিবারের কাছে বলেছিল, তাদের প্রত্যাশা জিপিএ-৫ পাবে। কিন্তু মিষ্টি রায় পেয়েছে জিপিএ ৪.২৮ ও মম পেয়েছে জিপিএ-৩.৮০।
গণমাধ্যমগুলোতে খুঁজলেই মিলবে—পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জিপিএ-৫ না পাওয়া। আমাদের জন্য ‘অশনিসংকেত’ হলো প্রায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা।
গত কয়েক বছরে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিনে পরীক্ষার্থীদের আত্মহত্যার একটি হিসাব তুলে ধরা যাক—এ বছর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে ছয়জন শিক্ষার্থী আশানুরূপ ফল না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার চেষ্টা করে বেঁচে গেছে অন্তত দুজন। ২০১৮ সালে ফল প্রকাশের সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২২ জন কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে ১০ জন মারা যায়। ২০২০ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২১ জন কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার করে যাদের মধ্যে ১৯ জনই ছিল কিশোরী।
গ্রেডিং বা জিপিএ পদ্ধতি চালুর প্রথম বছর (২০০১) এসএসসিতে জিপিএ-৫–এর সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৬ জন। সে সময় কলেজে ভর্তির জন্য পরীক্ষা পদ্ধতি চালু ছিল। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে জিপিএ-৫–এর সংখ্যা প্রতি বছর বাড়তে শুরু করে। আর গত দুই দশকে এ সংখ্যা বেড়েছে কয়েক শ গুণ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিষ্টি রায় যে বিদ্যালয়ে পড়ত সেখান থেকে কোনো শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পায়নি। সেখানে অকৃতকার্য হয়েছে ২০ জন। আর লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্থাৎ মম যে বিদ্যালয়ে পড়ত সেখানে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন ও অকৃতকার্য হয়েছে ২৯ জন।
ওই দিনের পরিস্থিতি জানতে মিষ্টি রায়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন। মিষ্টি রায়ের বাবা প্রেমানন্দ রায় তাঁকে জানিয়েছেন, বান্ধবীরা তার চেয়ে ভালো ফল করেছে। এ নিয়ে সে খুব বিষণ্ন হয়ে পড়েছিল। শ্রেণিশিক্ষক জানিয়েছেন, ক্লাসে মিষ্টি রায় ছিল প্রথম। ‘আত্মসম্মানে’ আঘাত লাগায় হয়তো সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
এখন প্রশ্ন ওঠে তাহলে সমাজে বা বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে যেতে অস্বস্তি বা লজ্জাই কি প্রভাব ফেলেছে মিষ্টির ওপর?
মমর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার লালপুর প্রতিনিধি ইমাম হাসান মুক্তি। মমর বাবা মহসিন আলী তাঁকে জানিয়েছেন, ফলাফল নিয়ে মমকে কোনো চাপ বা বকাঝকা করা হয়নি। আত্মীয়স্বজনেরা কল দিয়ে জানতে চাইলে তার মা মন খারাপ করে ফলাফল জানাচ্ছিলেন। মেয়ের ফলাফল নিয়ে মাও বেশ কয়েকবার কেঁদেছেন। এর মধ্যেই মম সবার অলক্ষ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাহলে পরিবারে একটা পরোক্ষ চাপ বা প্রকাশিত অসন্তোষের প্রভাব কি পড়েছিল মমর ওপর?
আমরা ওই বয়সী শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক সংকটের বিষয়ে জানতে কথা বলেছিলাম সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনারের কাউন্সিলর অধ্যাপক সানজিদা শাহরিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রথমত পরিবার, দ্বিতীয়ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বৃহৎ পরিসরে সমাজের প্রভাবে কিশোর-কিশোরীরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীরা বয়ঃসন্ধিতে তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। এ সময় বিশেষ করে অভিভাবক, শিক্ষকেরা তাদের পরিস্থিতি অনুধাবন না করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের ওপর প্রতিযোগিতার মানদণ্ড ঠিক করে দেন। পরবর্তীতে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পেলে শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।’
কাউন্সেলর হিসেবে নিজের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে এ মনোচিকিৎসক বলেন, ‘আমার কাছে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের কাউন্সেলিং করানোর জন্য আসেন। সেখানে মূলত অভিভাবকেরা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমার কাছ থেকে পরামর্শ দাবি করেন। সেখানে ওই কিশোর-কিশোরীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা আগ্রহ প্রকাশের সুযোগ খুব কম থাকে। ফলে ওই কিশোর-কিশোরীর “ব্যক্তি সত্তার” সঙ্গে পরিচয় ও বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায় না। আমরা আসলে কখনোই সন্তানদের মন বুঝতে চাই না।’
শিক্ষণ পদ্ধতি ও শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষক, পরিবারের সুস্পষ্ট ধারণা না থাকা এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের কার্যকর নীতি প্রণয়নে দুর্বলতার কারণেও শিক্ষার্থীদের অসুস্থ প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের চেয়ে সনদ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ফলে অভিভাবকেরা সন্তানের ভালো ফলাফল নিশ্চিত করতে টাকা ঢালছেন। অপরদিকে শিক্ষকেরাও সহজ ও ‘শর্টকাট’ পথে হাঁটছেন। মুখস্থবিদ্যার ওপর ভর করে শিক্ষাজীবন পার করছে ছেলে–মেয়েরা। একে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাণিজ্য।
দেশের বাস্তবতা হলো কোচিং কিংবা প্রাইভেট টিউটর কেন্দ্রিক শিক্ষা। স্কুল-কলেজের বেশ কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন কোচিং কিংবা প্রাইভেটে শিক্ষকেরা যতটা যত্নশীল, শ্রেণিকক্ষে ওই শিক্ষকেরাই ততটা উদাসীন। কোনো বিষয়ে না বুঝতে পারলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যতটা সংকুচিত, কোচিং কিংবা প্রাইভেটে ওই শিক্ষার্থীরাই তত বেশি অকপট।
এ ছাড়া দেশের প্রসিদ্ধ, খ্যাতনামা অনেক কলেজে ভর্তির জন্য এখন ন্যূনতম যোগ্যতা ধরা হচ্ছে জিপিএ-৫।
এদিকেই ইঙ্গিত করছেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ও শিক্ষা বার্তার সম্পাদক এএন রাশেদা। তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ দায়ই শিক্ষা ব্যবস্থার, সরকার এবং রাষ্ট্রের। শুধু বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালেই হবে না। সারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতীয়করণ আর সরকারিকরণের পার্থক্যটা আলাদা করতে জানতে হবে। শিক্ষকদের যদি সঠিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া না যায়, তবে শিক্ষার্থীদের কী পড়াবে কী শেখাবে তাঁরা? কারণ এর সঙ্গে আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটও দায়ী।’
এমন পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে এমন একটা অবস্থায় নিয়ে গেছি, যেখানে আমরা জিপিএ-৫ দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে মূল্যায়ন করছি। অথচ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক চর্চা যেমন নাচ গান খেলাধুলা থাকা বাধ্যতামূলক। তাহলে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধার বিকাশটা ঘটবে। শিক্ষাজীবনে আনন্দের বিষয়গুলো থাকলে আর এমনটা ঘটত না। অথচ শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়া, গলাধঃকরণ করা, আর জিপিএ-৫ পাওয়াটাই যেন এখন শিক্ষা হয়ে গেছে। আর এই চর্চাটা পরিবার পর্যন্ত ঢুকে গেছে।’
এ থেকে তাহলে উত্তরণের পথ কী? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের অধ্যাপক শিক্ষাবিদ হাফিজুর রহমান বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ এখন সময়ের দাবি। সেই সঙ্গে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতনতার ওপরও জোর দেন তিনি।
মনোচিকিৎসক সানজিদা শাহরিয়া বলেন, ‘পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সর্বোপরি সমাজে এর বিরুদ্ধে সচেতনতাই পারে আমাদের এ সংকট থেকে উতরে যেতে। সেই সঙ্গে অবশ্যই আমাদের পরিবারগুলোকে সন্তানদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও মন বোঝার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।’
সেই সঙ্গে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাঁদের সম্মানী বাড়ানোর জন্যও সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদ এএন রাশেদা। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা খাতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। তা বাড়িয়ে বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করে দিলেই হবে না, শিক্ষকদের মান নিশ্চিত করতে হবে। আর শিক্ষা ব্যবস্থার আমলা নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তবেই ছাত্র–ছাত্রীরা ভালো কিছু শিখবে, এভাবে হতাশ হবে না, আত্মহত্যার মত পথও বেঁচে নেবে না।’

ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে (আইএসইউ) অনুষ্ঠিত হলো ফল-২০২৫ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাখালী ক্যাম্পাসে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আইএসইউ উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খানের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোর
৯ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানিয়েছেন।
১০ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকায় নিজ বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর।
১৪ ঘণ্টা আগে
বছরের পর বছর অবসর সুবিধা ভাতা না পেয়ে নিদারুণ কষ্টে ভুগছেন দেশের হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী। তাঁদের অবসর ভাতা দিতে না পারার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অর্থসংকটের কথা। অথচ অর্থসংকটের মধ্যেও গাড়ি ক্রয় ও নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার মতো বিলাসী উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড।
১৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে (আইএসইউ) অনুষ্ঠিত হলো ফল-২০২৫ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাখালী ক্যাম্পাসে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আইএসইউ উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খানের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার তাসমিয়া রহমান।
প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খান বলেন, ‘উন্নত ক্যারিয়ার গঠনে অবশ্যই শিক্ষাজীবনে যেমন পড়াশোনা করতে হবে, তেমনি ভালো মানুষ হয়েও গড়ে উঠতে হবে। জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের সব ক্ষেত্রে সেরা হতে হবে যেন পরিবার, দেশ এবং বিশ্বের জন্য অবদান রাখতে পারো। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
ছাত্র-ছাত্রীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আইএসইউর যথাযথ উদ্যোগের কথা তুলে ধরে উপাচার্য জানান, আধুনিক ক্লাসরুম, ল্যাব, মানসম্মত শিক্ষক, তাত্ত্বিক, ব্যবহারিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীবান্ধব উন্নত পরিবেশ তৈরি ও রক্ষা করার জন্য আইএসইউ বদ্ধপরিকর।
ইঞ্জিনিয়ার তাসমিয়া রহমান নবীন শিক্ষার্থীদের আইএসইউ পরিবারে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের জীবনকে এবং আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নতুন এ যাত্রায় নতুন কিছু যেমন শিখবে, তেমনি নতুন সৃষ্টিশীলতায় ও উদ্ভাবনে অগ্রগামী হতে হবে। নিজেকে গড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজের পরিবার ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তোমাদের কাজ, অভিজ্ঞতা ও জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলোই একসময় তোমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএসইউ ট্রেজারার প্রফেসর এইচ টি এম কাদের নেওয়াজ, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর মোহাম্মদ আবুল কাসেম, আইকিউএসি পরিচালক প্রফেসর ড. মো. একরামুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর মোহাম্মদ আলী এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইএসইউ রেজিস্ট্রার মো. ফাইজুল্লাহ কৌশিক। শোয়েব আহমেদ ও মাইশা আফিয়া জেরিনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারপারসন, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে (আইএসইউ) অনুষ্ঠিত হলো ফল-২০২৫ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাখালী ক্যাম্পাসে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আইএসইউ উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খানের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার তাসমিয়া রহমান।
প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খান বলেন, ‘উন্নত ক্যারিয়ার গঠনে অবশ্যই শিক্ষাজীবনে যেমন পড়াশোনা করতে হবে, তেমনি ভালো মানুষ হয়েও গড়ে উঠতে হবে। জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের সব ক্ষেত্রে সেরা হতে হবে যেন পরিবার, দেশ এবং বিশ্বের জন্য অবদান রাখতে পারো। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
ছাত্র-ছাত্রীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আইএসইউর যথাযথ উদ্যোগের কথা তুলে ধরে উপাচার্য জানান, আধুনিক ক্লাসরুম, ল্যাব, মানসম্মত শিক্ষক, তাত্ত্বিক, ব্যবহারিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীবান্ধব উন্নত পরিবেশ তৈরি ও রক্ষা করার জন্য আইএসইউ বদ্ধপরিকর।
ইঞ্জিনিয়ার তাসমিয়া রহমান নবীন শিক্ষার্থীদের আইএসইউ পরিবারে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের জীবনকে এবং আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নতুন এ যাত্রায় নতুন কিছু যেমন শিখবে, তেমনি নতুন সৃষ্টিশীলতায় ও উদ্ভাবনে অগ্রগামী হতে হবে। নিজেকে গড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজের পরিবার ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তোমাদের কাজ, অভিজ্ঞতা ও জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলোই একসময় তোমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএসইউ ট্রেজারার প্রফেসর এইচ টি এম কাদের নেওয়াজ, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর মোহাম্মদ আবুল কাসেম, আইকিউএসি পরিচালক প্রফেসর ড. মো. একরামুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর মোহাম্মদ আলী এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইএসইউ রেজিস্ট্রার মো. ফাইজুল্লাহ কৌশিক। শোয়েব আহমেদ ও মাইশা আফিয়া জেরিনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারপারসন, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

গণমাধ্যমগুলোতে খুঁজলেই মিলবে—পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জিপিএ-৫ না পাওয়া। আমাদের জন্য ‘অশনিসংকেত’ হলো প্রায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা।
০২ আগস্ট ২০২৩
আজ বৃহস্পতিবার আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানিয়েছেন।
১০ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকায় নিজ বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর।
১৪ ঘণ্টা আগে
বছরের পর বছর অবসর সুবিধা ভাতা না পেয়ে নিদারুণ কষ্টে ভুগছেন দেশের হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী। তাঁদের অবসর ভাতা দিতে না পারার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অর্থসংকটের কথা। অথচ অর্থসংকটের মধ্যেও গাড়ি ক্রয় ও নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার মতো বিলাসী উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী ৩১ ডিসেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে। এর আগের দিন অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হবে ২৭ নভেম্বর; চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
আজ বৃহস্পতিবার আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ঢাকা বোর্ড থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার জন্য স্কুলগুলোকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর থেকে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু হবে। তাই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৯টি সাধারণ ধারার শিক্ষা বোর্ডে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু হবে। অন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোও একই চিঠি পাঠাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা শিক্ষাপঞ্জি ও ছুটির তালিকায় প্রথমে ১৬ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
পরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাপঞ্জির ওই অংশে সংশোধন আনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ২৭ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী ৩১ ডিসেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে। এর আগের দিন অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হবে ২৭ নভেম্বর; চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
আজ বৃহস্পতিবার আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ঢাকা বোর্ড থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার জন্য স্কুলগুলোকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর থেকে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু হবে। তাই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৯টি সাধারণ ধারার শিক্ষা বোর্ডে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু হবে। অন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোও একই চিঠি পাঠাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা শিক্ষাপঞ্জি ও ছুটির তালিকায় প্রথমে ১৬ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
পরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাপঞ্জির ওই অংশে সংশোধন আনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ২৭ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

গণমাধ্যমগুলোতে খুঁজলেই মিলবে—পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জিপিএ-৫ না পাওয়া। আমাদের জন্য ‘অশনিসংকেত’ হলো প্রায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা।
০২ আগস্ট ২০২৩
ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে (আইএসইউ) অনুষ্ঠিত হলো ফল-২০২৫ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাখালী ক্যাম্পাসে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আইএসইউ উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খানের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোর
৯ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকায় নিজ বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর।
১৪ ঘণ্টা আগে
বছরের পর বছর অবসর সুবিধা ভাতা না পেয়ে নিদারুণ কষ্টে ভুগছেন দেশের হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী। তাঁদের অবসর ভাতা দিতে না পারার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অর্থসংকটের কথা। অথচ অর্থসংকটের মধ্যেও গাড়ি ক্রয় ও নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার মতো বিলাসী উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকায় নিজ বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
তিনি স্ত্রী, ২ কন্যাসহ অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, আত্মীয়-স্বজন ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বাদ আছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামি’আয় জানাজা শেষে মাদারীপুরের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় তিনি বলেন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গুণী শিক্ষক ও গবেষক ছিলেন। দেশের শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য অবদানের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকায় নিজ বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
তিনি স্ত্রী, ২ কন্যাসহ অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, আত্মীয়-স্বজন ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বাদ আছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামি’আয় জানাজা শেষে মাদারীপুরের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় তিনি বলেন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গুণী শিক্ষক ও গবেষক ছিলেন। দেশের শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য অবদানের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

গণমাধ্যমগুলোতে খুঁজলেই মিলবে—পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জিপিএ-৫ না পাওয়া। আমাদের জন্য ‘অশনিসংকেত’ হলো প্রায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা।
০২ আগস্ট ২০২৩
ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে (আইএসইউ) অনুষ্ঠিত হলো ফল-২০২৫ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাখালী ক্যাম্পাসে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আইএসইউ উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খানের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোর
৯ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানিয়েছেন।
১০ ঘণ্টা আগে
বছরের পর বছর অবসর সুবিধা ভাতা না পেয়ে নিদারুণ কষ্টে ভুগছেন দেশের হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী। তাঁদের অবসর ভাতা দিতে না পারার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অর্থসংকটের কথা। অথচ অর্থসংকটের মধ্যেও গাড়ি ক্রয় ও নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার মতো বিলাসী উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড।
১৮ ঘণ্টা আগেরাহুল শর্মা, ঢাকা

বছরের পর বছর অবসর সুবিধা ভাতা না পেয়ে নিদারুণ কষ্টে ভুগছেন দেশের হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী। তাঁদের অবসর ভাতা দিতে না পারার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অর্থসংকটের কথা। অথচ অর্থসংকটের মধ্যেও গাড়ি ক্রয় ও নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার মতো বিলাসী উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড।
অভিযোগ উঠেছে, মূলত বোর্ডের সদস্যসচিব অধ্যাপক মো. জাফর আহম্মদের আগ্রহের কারণেই এই দুই খাতে চলতি অর্থবছরে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অবশ্যই খোঁজ নেওয়া হবে।’
সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী আছেন সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি। এসব শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর ও কল্যাণ সুবিধার টাকা দেওয়া হয় দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এগুলো হলো—বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড।
সূত্র বলছে, বর্তমানে অবসর সুবিধা বোর্ডের অধীনে সচল দুটি গাড়ি রয়েছে। এর একটি টয়োটা নোহা ও অন্যটি মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার। এরপরও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নতুন গাড়ি ক্রয়ের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। নতুন অফিস ভাড়া বাবদ মাসে ৫ লাখ টাকা করে বছরে ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দও চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় কোটি টাকা খরচ করে নতুন সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে।
২০০২ সাল থেকে পলাশী-নীলক্ষেত এলাকায় বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) ভবনে মাসে ১ টাকা হারে বছরে ২৪ টাকা করে ভাড়া পরিশোধ করে আসছে দুই দপ্তর (কল্যাণ ট্রাস্ট এবং অবসর সুবিধা বোর্ড)। এখন হঠাৎ করে নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অবসর সুবিধা বোর্ড।
অভিযোগ উঠেছে, এক বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শিক্ষকদের পাওনা পরিশোধে তেমন মনোযোগী ছিলেন না অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্যসচিব অধ্যাপক জাফর আহম্মদ। এই কারণে একই সময়ে কল্যাণ ট্রাস্ট অনেক বেশি শিক্ষকের আবেদন নিষ্পত্তি করলেও পারেনি অবসর সুবিধা বোর্ড।
এ ছাড়া অধ্যাপক জাফর আহম্মদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা, সফটওয়্যার জটিলতা সমাধান না করা, অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে আবেদন নিষ্পত্তি করা এবং আবেদন নিষ্পত্তি করতে না পারার জন্য শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবকে দায়ী করারও অভিযোগ রয়েছে।
২৮ অক্টোবর এ প্রতিবেদকের সামনেও পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন অধ্যাপক জাফর আহম্মদ। বলেন, ‘আমার কাছে এসে লাভ নাই, আপনারা উপদেষ্টা, সচিবের কাছে যান। কারণ, সচিব বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি সভা ডাকছেন না, এতে আমার কী করার আছে?’
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে অবসর সুবিধা বোর্ডের কার্যালয়ে গেলে সদস্যসচিব অধ্যাপক জাফর আহম্মদ সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, গাড়ির প্রয়োজন বলেই বাজেটে বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর এ অফিসে কাজ করা যাচ্ছে না, তাই নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অবসর সুবিধা বোর্ডের মূল সফটওয়্যার অকেজো ছিল। এ জন্য সময়মতো আবেদন করতে পারেননি অনেক শিক্ষক-কর্মচারী। বর্তমানে অবসরের জন্য প্রায় ৬৫ হাজার এবং কল্যাণ সুবিধার জন্য প্রায় ৪০ হাজার আবেদন অনিষ্পন্ন জমা পড়ে আছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অধ্যাপক জাফর আহম্মদ বলেন, মূল সফটওয়্যার তৈরির কাজ চলছে। তবে আবেদন করার জন্য আপাতত একটি সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে। আর মূলত তহবিলসংকটের কারণে সময়মতো আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তহবিলসংকট ছাড়াও অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্যসচিবের অদক্ষতা ও অনিয়মের কারণেই শিক্ষকেরা সময়মতো প্রাপ্য পাওনা পাচ্ছেন না। কারণ, একই সময়ে কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ ৫ হাজার ৮০২টি আবেদন নিষ্পত্তি করলেও অবসর সুবিধা বোর্ড করেছে মাত্র ৪ হাজার ৩৪৮টি।
এদিকে আবারও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের (এমপিওভুক্ত) সরকারের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জানা যায়, এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন অধ্যাপক জাফর আহম্মদ। এর আগেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছিল কিন্তু শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে তা ভেস্তে যায়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কেন যে এই সময়ে আবারও এমন বিতর্কিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা রহস্যজনক। এর পেছনে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার কোনো উদ্যোগ থাকতে পারে।
অবসরপ্রাপ্ত একাধিক শিক্ষক জানান, বছরের পর বছর ভাতা না পেয়ে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ময়মনসিংহের এক শিক্ষক বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ের সময়ও নিজের টাকাটা তুলতে পারিনি। অথচ শুনি, তারা নতুন গাড়ি কেনা আর নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার পাঁয়তারা করছে?’
আরও খবর পড়ুন:

বছরের পর বছর অবসর সুবিধা ভাতা না পেয়ে নিদারুণ কষ্টে ভুগছেন দেশের হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী। তাঁদের অবসর ভাতা দিতে না পারার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অর্থসংকটের কথা। অথচ অর্থসংকটের মধ্যেও গাড়ি ক্রয় ও নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার মতো বিলাসী উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড।
অভিযোগ উঠেছে, মূলত বোর্ডের সদস্যসচিব অধ্যাপক মো. জাফর আহম্মদের আগ্রহের কারণেই এই দুই খাতে চলতি অর্থবছরে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অবশ্যই খোঁজ নেওয়া হবে।’
সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী আছেন সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি। এসব শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর ও কল্যাণ সুবিধার টাকা দেওয়া হয় দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এগুলো হলো—বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড।
সূত্র বলছে, বর্তমানে অবসর সুবিধা বোর্ডের অধীনে সচল দুটি গাড়ি রয়েছে। এর একটি টয়োটা নোহা ও অন্যটি মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার। এরপরও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নতুন গাড়ি ক্রয়ের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। নতুন অফিস ভাড়া বাবদ মাসে ৫ লাখ টাকা করে বছরে ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দও চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় কোটি টাকা খরচ করে নতুন সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে।
২০০২ সাল থেকে পলাশী-নীলক্ষেত এলাকায় বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) ভবনে মাসে ১ টাকা হারে বছরে ২৪ টাকা করে ভাড়া পরিশোধ করে আসছে দুই দপ্তর (কল্যাণ ট্রাস্ট এবং অবসর সুবিধা বোর্ড)। এখন হঠাৎ করে নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অবসর সুবিধা বোর্ড।
অভিযোগ উঠেছে, এক বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শিক্ষকদের পাওনা পরিশোধে তেমন মনোযোগী ছিলেন না অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্যসচিব অধ্যাপক জাফর আহম্মদ। এই কারণে একই সময়ে কল্যাণ ট্রাস্ট অনেক বেশি শিক্ষকের আবেদন নিষ্পত্তি করলেও পারেনি অবসর সুবিধা বোর্ড।
এ ছাড়া অধ্যাপক জাফর আহম্মদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা, সফটওয়্যার জটিলতা সমাধান না করা, অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে আবেদন নিষ্পত্তি করা এবং আবেদন নিষ্পত্তি করতে না পারার জন্য শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবকে দায়ী করারও অভিযোগ রয়েছে।
২৮ অক্টোবর এ প্রতিবেদকের সামনেও পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন অধ্যাপক জাফর আহম্মদ। বলেন, ‘আমার কাছে এসে লাভ নাই, আপনারা উপদেষ্টা, সচিবের কাছে যান। কারণ, সচিব বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি সভা ডাকছেন না, এতে আমার কী করার আছে?’
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে অবসর সুবিধা বোর্ডের কার্যালয়ে গেলে সদস্যসচিব অধ্যাপক জাফর আহম্মদ সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, গাড়ির প্রয়োজন বলেই বাজেটে বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর এ অফিসে কাজ করা যাচ্ছে না, তাই নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অবসর সুবিধা বোর্ডের মূল সফটওয়্যার অকেজো ছিল। এ জন্য সময়মতো আবেদন করতে পারেননি অনেক শিক্ষক-কর্মচারী। বর্তমানে অবসরের জন্য প্রায় ৬৫ হাজার এবং কল্যাণ সুবিধার জন্য প্রায় ৪০ হাজার আবেদন অনিষ্পন্ন জমা পড়ে আছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অধ্যাপক জাফর আহম্মদ বলেন, মূল সফটওয়্যার তৈরির কাজ চলছে। তবে আবেদন করার জন্য আপাতত একটি সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে। আর মূলত তহবিলসংকটের কারণে সময়মতো আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তহবিলসংকট ছাড়াও অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্যসচিবের অদক্ষতা ও অনিয়মের কারণেই শিক্ষকেরা সময়মতো প্রাপ্য পাওনা পাচ্ছেন না। কারণ, একই সময়ে কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ ৫ হাজার ৮০২টি আবেদন নিষ্পত্তি করলেও অবসর সুবিধা বোর্ড করেছে মাত্র ৪ হাজার ৩৪৮টি।
এদিকে আবারও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের (এমপিওভুক্ত) সরকারের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জানা যায়, এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন অধ্যাপক জাফর আহম্মদ। এর আগেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছিল কিন্তু শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে তা ভেস্তে যায়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কেন যে এই সময়ে আবারও এমন বিতর্কিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা রহস্যজনক। এর পেছনে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার কোনো উদ্যোগ থাকতে পারে।
অবসরপ্রাপ্ত একাধিক শিক্ষক জানান, বছরের পর বছর ভাতা না পেয়ে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ময়মনসিংহের এক শিক্ষক বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ের সময়ও নিজের টাকাটা তুলতে পারিনি। অথচ শুনি, তারা নতুন গাড়ি কেনা আর নতুন অফিস ভাড়া নেওয়ার পাঁয়তারা করছে?’
আরও খবর পড়ুন:

গণমাধ্যমগুলোতে খুঁজলেই মিলবে—পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে জিপিএ-৫ না পাওয়া। আমাদের জন্য ‘অশনিসংকেত’ হলো প্রায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা।
০২ আগস্ট ২০২৩
ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে (আইএসইউ) অনুষ্ঠিত হলো ফল-২০২৫ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাখালী ক্যাম্পাসে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আইএসইউ উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খানের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোর
৯ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানিয়েছেন।
১০ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকায় নিজ বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর।
১৪ ঘণ্টা আগে